শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
Part_38
#Writer_NOVA
— নোভা, will you be my পোলাপাইনের আম্মা?
আমার কথা শেষ হতেই এনাজ আবারো তার বিখ্যাত উক্তিতে আমাকে জিজ্ঞেস করলো। আমি একবার সবার দিকে কটমট করে তাকিয়ে এনাজের দিকে তাকালাম। এতদিন আমি জানতাম প্রপোজ করে ডু ইউ লাভ মি, উইল ইউ ম্যারি মি বলে। আজ প্রথম এমন আজব স্টাইলের প্রপোজ দেখলাম। সোজা পোলাপাইনের আম্মা। আমার সাথে থাকতে থাকতে কি তারও মাথা খারাপ হয়ে গেলো নাকি🤔? আসলেই ভাববার বিষয়। আমি মুখ বাঁকিয়ে বললাম,
— ভালোবাসা, বিয়ের কথা না বলে সোজা বাচ্চা-কাচ্চার চিন্তা? এত এডভান্স হতে কে বলেছে?
এনাজ মুখটা কুচোমুচো করে বললো,
— গতকাল ইফাতের যা কান্ড দেখলাম তাতে আমি আর দেরী করতে চাইনি। সোজা প্রপোজ করে দিলাম। ঐ পিচ্চি পোলা তোমার পেছনে যেভাবে আঠার মতো লেগেছে তাতে আমার তো ভয় হচ্ছিলো তুমি আবার ওকে মেনে না নাও। তাহলে আমার কি হবে বলো তো?
আমি কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম,
— আপনার যখন ভালোবাসা, বিয়ে ছাড়া বাচ্চার দরকার তাহলে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে নিন।নয়তো অনলাইন থেকে অর্ডার করুন। কিংবা আল্লাহর কাছে চান। উপর থেকে টুপ করে ফেলে দিবে।
তায়াং ভাইয়া আমাকে ধমক দিয়ে বললো,
— এতো কথা পেঁচাচ্ছিস কেন? ও যা জিজ্ঞেস করেছো তার উত্তর দে।
আমি ডান হাতের নখ কামড়িয়ে তায়াং ভাইয়ার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,
— বাচ্চা যে আকাশ থেকে টুপ করে পরে তা তোরা জানিস না? কেন ঐ গল্পটা শুনিস নি?
সবাই আমার দিকে বিস্মিত চোখে তাকালো। আমার এমন আজব কথাবার্তা শুনে তারা যে অবাক প্লাস রেগে যাচ্ছে তা আমি জানি। তবে আজ আমি কিছুতেই এনাজের প্রপোজ এক্সেপ্ট করবো না। আমার আনন্দ মাটি করে সারপ্রাইজ দিলো।আরেকটু হলে আমি কান্না করে দিতাম। এবার বুঝবে মজা।আগে থাকতে একটু জানালে কি হতো? সবাই একসাথে জিজ্ঞেস করলো,
— কোন গল্প?
আমি হাই তুলে বললাম,
— বলছি। তবে আগে একটু বসে নেই। দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যাথা করছে। (এনাজের দিকে তাকিয়ে) নৌকার মাচা ভালো তো?
এনাজ একবার রেগে তাকালো। আমি তার দৃষ্টি উপেক্ষা করে আরাম করে দুই পা মুড়ে নৌকার ওপর বসে পরলাম। তারপর বললাম,
— তোমরা চাইলে বালিতে বসতে পারো। যদি তোমাদের ইচ্ছে হয় আরকি। এত মানুষ তো আর এই ছোট নৌকায় জায়গা হবে না।
রওনক মুখটাকে নিস্তেজ করে বললো,
— আমি আগেই বলছিলাম তায়াং ভাই আপনার বোন দেখেন আজকের এত সুন্দর একটা মোমেন্টকেও তেরটা বাজিয়ে দিবে। এবার বিশ্বাস হলো তো?
শারমিন বিরক্তির সাথে বললো,
— নোভা তুই কি শুরু করছিস?
আমি ঠোঁট উল্টিয়ে বললাম,
— আমি আবার কি করলাম? আমিতো একটা গল্প বলতে চাইছিলাম। কিন্তু তোরাই শুনছিস না।
তায়াং ভাইয়া রেগে বললো,
— তোর গল্পের গুষ্টি কিলাই। এনাজের প্রপোজালের উত্তর দে।
আমি হুমকির সুরে বললাম,
— একদম আমার সাথে রাগ দেখাবি না। চুপচাপ আমার গল্প শোন। নয়তো তোর বন্ধুকে কিন্তু রিজেক্ট করে দিবো।
এনাজ তায়াং ভাইয়াকে বললো,
— চুপ কর তায়াং। ওকে বলতে দে। ওকে দিয়ে বিশ্বাস নাই। তারপর যদি সত্যি আমায় রিজেক্ট করে দেয় তখন কি হবে? টিডি পোকা তুমি বলো।
আমি অনুমতি পেয়ে খুশি হয়ে গেলাম। তায়াং ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি দিয়ে বলতে শুরু করলাম।
— এক ছোট বাচ্চা ছেলে তার মা কে জিজ্ঞেস করলো, “আম্মু আমি কিভাবে হলাম?” তার মা মুচকি হেসে বললো, “আমি একটা টবে ছোট একটা বীজ বুনেছিলাম। তারপর সেটাকে প্রত্যেকদিন পানি দিতাম, যত্ন নিতাম আর আল্লাহর কাছে একটা ছেলে বাবু চাইতাম। একদিন গিয়ে দেখি টবের মধ্যে তুমি শুয়ে শুয়ে কাঁদছো। আল্লাহ তোমাকে আমার কাছে এভাবেই পাঠিয়েছে।” ছোট বাচ্চাটা এসব কথা মনোযোগ সহকারে শুনলো। সেদিন বিকেলেই তাদের বারান্দায় থাকা টবে একটা ছোট বীজ লাগিয়ে দিলো। পরেরদিন বিকেলে সে পানি দিতে গেলো। গিয়ে দেখে টবের ওপরে মাঝারি সাইজের একটা ব্যাঙ বসে আছে। তাকে দেখে বাচ্চাটা রেগে বললো,” ইচ্ছা করতাছে তোরে আছাড় দিয়া মাইরা ফালায়। কিন্তু কেমনে মারি? তুই তো আমার পোলা। বাবা হয়ে তো আমি সন্তানকে মারতে পারি না।” আমার গল্প এখানেই শেষ। এনজিও সংস্থা আপনি এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। তাহলে আপনার আর পোলাপাইনের আম্মাকে খুঁজতে হবে না।
আমার গল্প শুনে সবাই মুচকি হাসতে লাগলো। শারমিন, তন্বী হো হো করে হাসছে। তন্বী বললো,
— এটা কি ছিলো নোভাপু? টবে বীজ বুনলে বাচ্চা হয়। আজকে প্রথম জানলাম। এসব গল্প তোমার দ্বারাই সম্ভব।
আমি দাঁত বের করে শয়তানি হাসি দিয়ে বললাম,
— ধন্যবাদ।
তন্বী হাসি থামিয়ে বললো,
— আমি সিউর ঐ পিচ্চি ছেলেটা ইফাত। কারণ ঐ পিচ্চি এতো এডভান্স।
এনাজের দিকে তাকিয়ে দেখি সে এক হাত মাথায় দিয়ে দুই পা ছড়িয়ে নৌকার ওপর বসে আছে। তায়াং ভাইয়া সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো,
— চল তো সবাই। ওদের একটু একা কথা বলতে দে।
ভাইয়ার বলতেই সবাই একে একে চলে গেল। কিছু সময় কেউ কোন কথা বললাম না। আমি নৌকার ওপর থেকে একটা গোলাপ ফুল নিয়ে মনোযোগ সহকারে তার পাপড়ি ছিঁড়তে লাগলাম। নীরবতা ভেঙে এনাজ প্রথমে আমাকে ডাকলো।
— টিডি পোকা!
— হুম বলুন।
— আমাকে এক্সেপ্ট করে নাও না প্লিজ?
— উহু এত সহজে না। খুব সহজে আমাকে পেয়ে গেলে আমার মূল্য বুঝবেন না। আগেরজনের মতো অবহেলাও করতে পারেন। আপনাকে আমি এক্সেপ্টও করবো না। আবার রিজেক্টও করবো না। আপনি ঝুলে থাকবেন। বাদুড়ের মতো ঝুলতে থাকুন। দেখি আপনি আমাকে কতটা ভালোবাসেন। আপনার ভালোবাসার পরীক্ষাও হয়ে যাবে।
— দেখো আমি কিন্তু তোমার অতীতের সবকিছু জানি। আমার তোমার অতীত নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। তুমি শুধু আমার হলেই চলবে।
— পাওয়ার আগে সবাই এরকম ডায়লগ ছাড়ে।
— আমি ডায়লগ ছাড়ছি না। সত্যি বলছি। আচ্ছা একটা সত্যি কথা বলবে।
— হুম বলেন।
— তুমি কি আমায় একটুও পছন্দ করো না?
— সত্যি বলবো নাকি মিথ্যে বলবো?
— অবশ্যই সত্যি বলবে।
— আপনাকে আমার ভালো লাগে। তবে সেই ভালো লাগাটা ভালোবাসায় পরিণত হয়েছে কিনা তাতে আমার ডাউট আছে।
— তাহলে এক্সেপ্ট করতে সমস্যা কি?
— ঐ যে বললাম খুব সহজে পেয়ে গেলে আমার মূল্য বুঝবেন না। বরং আমাকে সস্তা ভাববেন। তাছাড়া আরো দুটো কারণ আছে।
— কি?
— আপনি যেদিন দেশে আসছেন সেদিন এয়ারপোর্টে কিন্তু আমাকে ইনসাল্ট করেছিলেন। অনেক এটিটিউড দেখিয়েছেন। যেটা আমার ভীষণ খারাপ লেগেছিলো। আমি মনে মনে সেটা জমিয়ে রেখেছি।
এনাজ শুকনো মুখ করে জিজ্ঞেস করলো,
— কি করছি আমি?
— এখুনি ভুলে গেছেন। আপনি হ্যান্ডশেক করার জন্য হাত বাড়িয়ে ছিলেন। তখন আমি হাত মেলানোর আগে আপনি তন্বীর সাথে হাত মিলিয়ে ফেলছেন। আমার সেটা অনেক খারাপ লাগছে।আমার প্রেস্টিজে লেগেছে।তাছাড়া আপনি একবার আমার দিকে তাকাননি। বাপরে কি এটিটিউড! এখন থাকেন আপনার এটিটিউড নিয়ে। আমি আপনাকে এক্সেপ্ট করবো না তো।
— সেই মাসখানেক আগের কথা এখনো মনে রেখেছো?
— মেয়েরা এমনি। যেই বিষয়টা তাদের প্রেস্টিজে লাগে সেটা সারাজীবন মনে রাখে। আর সুযোগ পেলে সেটার সুদসুদ্ধ উসুল করে।
— আমি তোমার সাথেই হাত মিলাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মনে হঠাৎ শয়তানি বুদ্ধি জাগলো। তাই তোমার সাথে না মিলিয়ে তন্বীর সাথে হাত মিলালাম। আর তোমার দিকে আমি তাকাইনি তা কে বলেছে? গাড়িতে না হলেও বিশ-ত্রিশবার আমি তোমার দিকে তাকিয়েছি। সেটা কি তুমি দেখছো?
— হুহ😏! ভালো করছেন। এবার বসে থাকেন।
—এবার ২য় কারণ বলো।
— আমাকে এতবড় সারপ্রাইজ দিবেন তা আগে বললেন না কেন? আমি মন খারাপের জন্য কোনকিছু উপভোগ করতে পারিনি। আমি ভেবেছি আপনি হয়তো অন্য কাউকে পছন্দ করেন। আমার ভীষণ খারাপ লাগছিলো।যখন আপনি বললেন আপনার ভালোবাসার মানুষকে প্রপোজ করবেন। তখন আমার অনেক কান্না পাচ্ছিলো।
💖💖💖
আনমনে যে আমি কি বলে দিয়েছি নিজেও জানি না। যখন হুশ এলো তখন জিহ্বায় কামড় দিয়ে একহাতে মুখ ঢেকে ফেললাম। এনাজ মুচকি হেসে আমার দিকে এগিয়ে এলো। তাকে এগিয়ে আসতে দেখে আমি পেছন দিকে হেলে পরলাম। উনি মিটমিট করে হাসতে হাসতে বললো,
— তুমিও আমাকে ভালোবাসো। আগে ডাউট ছিলো এখন সিউর হলাম।
— একটুও না। আপনাকে আমার ভালো লাগে। ভালো লাগা আর ভালোবাসা এক নয়।
— তুমি আমাকে ভালো না বাসলে প্রপোজের কথা শুনে কখনই মন খারাপ করতে না। কিংবা তোমার চোখ পানিতে টলমল করতো না। আমি কিন্তু বাইকের আয়নায় দেখেছিলাম তুমি উপর দিকে তাকিয়ে চোখের পানি নিচে না পরার ব্যর্থ চেষ্টা করছিলে।
— একদম না। আমি আপনাকে ভালোবাসি না। দূরে যান। অস্বস্তি লাগছে।
— তুমি আমাকে ভালোবাসো। সেটা তুমি স্বীকার না করলেও আমি জানি। আর যদি ভালো নাও বাসো তাতেও সমস্যা নেই। খুব শীঘ্রই আমাকে ভালোবেসে ফেলবে৷ তোমার মুখ থেকে আমি ভালোবাসার কথাটা স্বীকার করিয়েই ছাড়বো। যাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।
— এত সোজা নয়।
— এত কঠিনও নয়।
— হু হু আমিও দেখবো।
— ওকে দেখে নিও।
এনাজ আমার থেকে দূরে সরে গেলো। আমি বড় করে হাফ ছাড়লাম। এতক্ষণ ধরে মনে হচ্ছিলো কেউ নিঃশ্বাস বন্ধ করে রেখেছে। হঠাৎ একটা কথা খেয়াল হতেই আমি এনাজকে বললাম,
— চলুন নৌকা দিয়ে ঘুরি।
— আমি নৌকা চালাতে পারি না।
— তাহলে পারেনটা কি?
— তোমাকে অনেক ভালোবাসতে।
— ইস!
— তায়াং, ইমারনদের ডাকি। দেখি ওরা কেউ পারে কিনা।
এনাজ সবাইকে ডাকলো। একে একে সবাইকে জিজ্ঞেস করা হলো। কিন্তু কেউ নৌকা চালাতে পারে না। আমি ভেবেছিলাম নৌকায় ঘুরবো। কিন্তু সেই আশায় গুড়ে বালি। রেগে বললাম,
— কেউ যখন নৌকা চালাতে পারেন না তাহলে এই নৌকা রাখার মানে কি? মনে হচ্ছে মাশরুমের বদলে ব্যাঙের ছাতা সাজিয়ে রেখেছে। যাও সবাই মিলে এই নৌকাকে জাদুঘরে সাজিয়ে রেখে আসেন। কেউ যদি জিজ্ঞেস করে এই নৌকার সাথে কি ইতিহাস জড়িত,তাহলে সাথে লিখে দিয়েন এই নৌকায় এনজিও সংস্থা তার টিডি পোকাকে প্রপোজ করেছে। তাই এই নৌকা এত স্পেশাল। একটাও কাজের না সব নিষ্কর্মা।
এনাজ মুখ গোমড়া করে বললো,
— আমার কোন দোষ নেই। এই পুরো প্ল্যান ওরা সবাই মিলে করেছে।
আমি জোরে চেচিয়ে বললাম,
— এই নৌকার আইডিয়া কার?
সব বন্ধুরা একসাথে ইমরান হাশমি ভাইয়ার দিকে তাকালো। ভাইয়া হে হে করে হেসে বললো,
— নৌকায় বসে প্রপোজ করার আইডিয়া আমার ছিলো। কিন্তু তোমার যে নৌকা দিয়ে ঘুরতে মন চাইতে পারে সেটা আমার খেয়াল হয়নি। নয়তো সেই ব্যবস্থাও করে রাখতাম।
আমি দাঁতে দাঁত চেপে বললাম,
— যেমন ঘাটোরা মানুষ তেমন তার ঘাটোরা আইডিয়া। একটাও কাজের নয়। ধূর, মুডটাই নষ্ট করে দিলো।
আমি নৌকা থেকে নেমে গেলাম। এনাজও নেমে এলো। সে নামতেই তার সব বন্ধু তাকে ঘিরে ধরলো। তওহিদ ভাইয়া জিজ্ঞেস করলো,
— কি এনাজ এক্সেপ্ট করেছে?
এনাজ মুখটাকে একটুখানি করে মাথা নাড়িয়ে না বললো। তারপর কান্নার অভিনয় করে রায়হান ভাইয়ার কাঁধে মুখ গুঁজে বললো,
— এক্সেপ্টও করেনি আবার রিজেক্টও করেনি। ঝুলিয়ে রেখে দিয়েছে😵।
শাহেদ ভাইয়া বললো,
— এই মেয়েরা না এরকমি। ছেলেদেরকে তাদের পিছনে না ঘুরিয়ে কখনও এক্সেপ্ট করে না। একটা ছেলেকে তার পেছনে ঘুরিয়ে কি মজা পায় তা আল্লাহ আর মেয়েরাই জানে। আজ অব্দি আমি বুঝতে পারলাম না।
তাদে কথা শুনে আমি মিটমিট করে হাসতে লাগলাম। সবাই বেচারাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে। আর তায়াং ভাইয়া আমার দিকে রেগে খাইয়া ফালামু লুক দিচ্ছে। মিনিট দশেকের মধ্যে সেখান থেকে সবাই বের হয়ে গেলাম। একটা ছোট টং দোকান থেকে সবাই একসাথে আনন্দ করে চা খেলাম। চায়ের বিলটা অবশ্য এনাজই দিয়েছে। তারপর যার যার বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। শারমিনকে তওহিদ ভাইয়া পৌঁছে দিবে। তন্বী তায়াং ভাইয়ার বাইকে আর আমি এনাজের বাইকে উঠলাম। নদীর পাড়ে যাওয়ার সময় যতটা খারাপ লাগছিলো এখন তার দুই ডবল বেশি ভালো লাগছে। ইস, এনজিও সংস্থা আমাকে ভালোবাসে🙈। এই কথাটা মনে আসতেই মনে লাড্ডু ফুটছে। আমি এনাজকে মেনে নিবো। তবে একটু দেরী করে। বাসার গেইটের সামনে আসতেই আমরা নেমে গেলাম। তায়াং ভাইয়া, তন্বী ভেতরে ঢুকে গেছে। এনাজ বাইকের সামনে থেকে প্রপোজ করার সেই গোলাপগুলো আর এক বক্স চকলেট আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
— এগুলো তোমার জন্য। রিজেক্ট যেহেতু করোনি এগুলো নিতে তো কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
— একসেপ্টও কিন্তু করিনি।
— করোনি তো কি হয়েছে? খুব শীঘ্রই করে নিবে।তাছাড়া এতদিন অপেক্ষা করতে পেরেছি আর কয়েকটা দিন কি করতে পারবো না? অবশ্যই পারবো। ইফাতের মতো আমিও একটা কথা বলছি তুমি ভালো করে মাথায় ঢুকিয়ে নিও। এই এনাজ বিয়ে করলে তার টিডি পোকাকেই করবে। টিডি পোকা শুধু এনাজের। আর কারো নয়।
কথাটা বলেই এক চোখ মারলো। আমরা দুজন একসাথে হেসে উঠলাম। আমি চকলেট বক্সটা আর গোলাপগুলো তার হাত থেকে নিয়ে নিলাম। সে বাইক ঘুরিয়ে স্টার্ট করতেই আমি কিছুটা জোরে চেচিয়ে বললাম,
— আমার বাবা-মাকে রাজি করান। তারা রাজী হলে আমার কোন আপত্তি নেই। আপনার পোলাপাইনের আম্মা হতে আমি রাজী আছি।
এনাজ চোখ দুটোকে রসগোল্লা বানিয়ে চাবি ঘুরিয়ে বাইক বন্ধ করে আমার দিকে তাকালো। আমি হাতে থাকা গোলাপগুলো দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললাম। গোলাপ সরাতেই দেখতে পেলাম সে খুশি হয়ে ঠোঁটে হাত দিয়ে ফ্লাইং কিস দেখালো। আমি লজ্জা পেয়ে বাসার ভেতরে দৌড় দিলাম। পেছনে তাকানোর মতো অবস্থায় আমি নেই।
#চলবে