শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
Part_34
#Writer_NOVA
❝ভাই, তোর যদি আমার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকতে মন চায় তাহলে থাকবি। না থাকতে মন চাইলে নিজ দায়িত্বে বের হয়ে যাবি। কিন্তু আমার পার্সোনাল বিষয়ে নাক গোলাইতে আসলে দুই আঙুল দিয়া ফিক্কা ব্লক লিস্টে ফালায় দিমু।❞
ফেসবুক প্রোফাইলের বায়ো তে এই কথাগুলো লিখে রাখছি। তবুও যত চুলকানি পাবলিক আমার কপালেই জুটে। একটু আগে মেয়ের নাম দিয়ে খোলা ফেইক আইডির এক ছেলে ইচ্ছে মতো জ্বালাচ্ছিলো। তাই তাকে দুই আঙুলে ফিক্কা ব্লক লিস্টে ফেলে দিছি। এবার আমার ব্লক লিস্টে আত্মীয়-স্বজনের সাথে থাকুক। একটু বই নিয়ে বসেছিলাম। কিন্তু ফলাফল জিরো। কয়েক পেজ উল্টিয়ে পাল্টিয়ে মোবাইলটা হাতে নিলাম। তারপর বাকিটা ইতিহাস। তন্বী আমার পাশে শুয়ে কার সাথে জানি চ্যাটিং করছে। মাঝে মাঝে মুচকি হাসছে। এর লক্ষ্মণ আমার ভালো ঠেকছে না। সময় এখন রাত দশটা। কিন্তু তায়াং ভাইয়া বাইরে থেকে আসেনি। তন্বীকে আবারো মুচকি হাসতে দেখে জোরে এক ঠেলা মেরে জিজ্ঞেস করলাম,
— এই তোর কি হয়েছে রে? তুই এমন মুচকি মুচকি হাসতেছিস কেন? নয়া নয়া প্রেমের লক্ষ্মণ মনে হচ্ছে।
— আরে ধূর। তুমি যে কি বলো না।
— কার সাথে চ্যাটিং করছিস?
— এক ফ্রেন্ডের সাথে।
— ওহ। আমি ভাবলাম প্রেমে পরেছিস। তন্বী!
— হু বলো।
— তোকে কিছু কথা জিজ্ঞেস করার ছিলো।
— হুম বলো।
— আমার দিকে তাকা। মোবাইল রাখ।
তন্বী হাতের মোবাইলটা রেখে উঠে বসলো। তারপর আমার চোখে চোখ রেখে বললো,
— রেখেছি এবার বলো।
— আজকে দুপুরে একটা কাহিনি হয়ে গেছে।
— কি কাহিনি?
— বলছি।
তন্বীকে ক্যাফেতে ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা খুলে বললাম। রোশানের কোন কথা লুকালাম না। এনাজের হিরোর মতো এন্ট্রির কথাও বললাম। তন্বী সব শুনে বিস্মিত চোখে বললো,
— আজ এতকিছু ঘটে গেছে!
— জ্বি হ্যাঁ। এখন আমাকে এটা বল এনাজ কি তোর কাছে গিয়েছিল? নয়তো ও জানলো কি করে আমি ঐ ক্যাফেতেই আছি?
— হ্যাঁ, এনাজ ভাইয়া তো আমার কাছে এসেছিলো। তোমার রুমে নাকি তোমাকে খুঁজে এসেছে কিন্তু পাইনি। আমাকে জিজ্ঞেস করলো তুমি কোথায়। আমি ঐ ক্যাফের নাম বলে দিলাম।
— এনাজ কেন এসেছিলো? সেই বিষয়ে কি কিছু বলেছিলো?
— আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, “হঠাৎ ভাইয়া আপনি কলেজে?” উনি বললো, “কলেজের পাশ দিয়ে যাচ্চিলাম তাই ভাবলাম তোমাদের সাথে দেখা করে যাই।” তারপর যখন তোমার কথা বললাম সে হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে গেলো।
— সত্যি উনি যদি সঠিক সময়ে না যেতো তাহলে ঐ রসুইন্না আমাকে আজ তুলেই নিয়ে যেতো। জানিস এনাজ ঐ কাহিনি ঘটার পর আমার সাথে কোন কথা বললো না। থমথমে গলায় শুধু বললো,”বাইকে উঠো।” আমি বাইকে উঠার পর একটানে বাসার গেইটে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো। ভালো-মন্দ কিছু বললো না। মাঝে মাঝে এদের কি হয় তাই আমি বুঝি না।
— এরা এমনি। কখন কি হয় তুমি কেন আমিও বুঝি না।
তন্বীর মোবাইলে টুং করে ম্যাসেজ আসতেই তন্বী মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলো। ভেবেছিলাম তায়াং ভাইয়াকে আজ রোশানের কথা সব বলে দিবো। কিন্তু তার আসার নামও নেই। সময়ও যেন কাটছে না। ও থাকলে দুজন টম এন্ড জেরির মতো লেগে কখন যে সময় পার হয়ে যায় নিজেও জানি না। আমি উঠে খালামণির রুমে চলে গেলাম। খালামণি মোবাইলে সিরিয়াল দেখছে। আমি গিয়ে পাশে বসলাম। আমাকে দেখে মোবাইল রেখে জিজ্ঞেস করলো,
— কিছু বলবি?
আমি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বুঝালাম। খালামণি বললো,
— কি বলবি বল?
— তায়াং ভাইয়া কোথায়? এতরাত হয়েছে তবুও আসে না কেন?
— এর কথা আর বলিস না। একটু আগে কল দিলাম মোবাইল বন্ধ। সন্ধ্যার দিকে নিজেই কল করে বলছিলো আসতে দেরী হবে৷ কিন্তু এখনো আসার খবর নেই। তা তুই হঠাৎ তায়াং-এর খবর নিচ্ছিস যে?
— আমার সময় কাটছে না। তায়াং ভাইয়া থাকলে শয়তানি করতে পারতাম তাই আরকি।
— ওরে ফাজিল মেয়ে। এর জন্য ভাইকে খোঁজা হচ্ছে।
— ও বাসায় না থাকলে আমার ভালো লাগে না। সময় কাটতে চায় না।আর বাসায় থাকলে ওরে জ্বালাতে জ্বালাতে কখন যে সময় চলে যায় নিজেও বুঝি না।
— খেয়ে শুয়ে থাক। অনেক রাত তো হলো।
— না তায়াং ভাইয়া আসুক। তারপর একসাথে খাবো।
— ওর আসার কোন ঠিক-ঠিকানা আছে। ওর জন্য না খেয়ে বসে থাকবি দেখবি এসে বলবে খেয়ে এসেছে। সে এখন খাবে না।
— থাক তবুও আরেকটু অপেক্ষা করি।
খালামণির রুম থেকে বের হয়ে ড্রয়িংরুমের সোফায় গিয়ে বসলাম। মাথাটা সোফার পেছনে হেলিয়ে দিয়ে দুপুরের কথা ভাবতে লাগলাম। মোবাইলে টুং করে ম্যাসেজ আসতেই মোবাইল হাতে নিলাম। দেখি ভাইয়া ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে। ওন করে দেখি ম্যাসেজে লেখা,
— কি রে শাঁকচুন্নি ঘুমাসনি?
আমি দ্রুত রিপ্লাই দিলাম।
— না এখনো ঘুমায়নি। তুই কোথায়? বাসায় কখন আসবি?
অপরপাশ থেকে সিন হলো কিন্তু রিপ্লাই এলো না। সিন করে রিপ্লাই না দিলে বিরক্ত লাগে। তাই কতগুলো এংরি রিয়েক্ট পাঠিয়ে বললাম
— ঐ পাঠা, ম্যাসেজ দেখে রিপ্লাই দেস না কেন?
ভাইয়া সিন করে বললো,
— আমি সিঁড়ি তে আছি৷ দরজা খোল।
আমি মোবাইল রেখে দ্রুত দরজা খুললাম। কিন্তু দরজার অপরপাশে কেউ নেই। উঁকি মেরে দেখলাম সিড়িতেও কেউ নেই। তিন মিনিট অপেক্ষা করার পর তায়াং ভাইয়া এলো। সে ভেতরে ঢুকতেই আমি দরজা আটকে ওর পাশে এসে দাঁড়ালাম। ভাইয়া ঘেমে একাকার। ওর শার্ট ভিজে গেছে। ওর মুখের থেকে ঘামগুলো নিয়ে আমার মুখে ছুড়ে মেরে বললো,
— এখনও জেগে আছিস যে?
আমি নাক,মুখ সিটকে ওর থেকে দুই হাত দূরে গিয়ে বললাম,
— ইস, খাচ্চর। সর সামনের থেকে। ওয়াক! এই খাচড়ামি গুলো কি তোর যাবে না রে পাঠা। আমার মুখে ঘামের পানি ছিটিয়ে মারতে হবে।ওয়াক থু🤮।
— এত নাক সিটকালি না দাঁড়া তুই।
ভেজা শার্ট-টা খুলে আমার মুখে ছুড়ে মারলো। ঘাম,পারফিউম মিক্সিং হয়ে বিচ্ছিরি গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। সেটা আমার মুখে ছুড়ে মারছে। ভেতর থেকে সব গুলিয়ে আসছে।এর এসব খাচড়ামি এখনো আছে। আমি ফিরতে ওর শার্ট ওর শরীরে ছুড়ে মেরে বললাম,
— সর খাচ্চড়। আমার মুখটাকেই খারাপ করে দিলো। এখন ইচ্ছে মতো ফেশওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। তোর সামনে থাকাই আমার ভুল হয়েছে।
— তোর ঐ আটা-ময়দার থেকে আমার ঘামের পানি অনেক ভালো।
— তোর ভালো নিয়ে তুই থাক।
— এগুলো হলো তোর শাস্তি। সেদিন আমাকে জোর করে মূলার তরকারি খাইয়েছিলি না তার বদলা। এখন এই ঘামে ভেজা শার্ট দিয়ে তোর মুখ মুছে দিবো। তুই শুধু একটু দাড়া।
ওর সামনে গিয়ে চুলগুলো ইচ্ছে মতো টেনে পিঠে দুটো কিল বসিয়ে ওয়াশরুমের দিকে ছুটলাম। এই শয়তান ভালো হবে না। এটা ওর ছোট বেলার অভ্যাস। মাঝে এমন করেনি বলে আমি ভেবেছিলাম অভ্যাসটা বোধহয় বদলে ফেলেছে। কিন্তু ঐ যে একটা কথা আছে না পাহাড় স্থান পরিবর্তন করেছে তা বিশ্বাস করো। কিন্তু কেউ ছোট বেলার অভ্যাস কেউ পরিবর্তন করেছে তা বিশ্বাস করো না।
💖💖💖
পূর্ব দিগন্তে রক্তিম আভায় চারিদিক আলোকিত হয়েছে। আরো একটি নতুন সকালের সূচনা। নামাজ পরে কোরাআন পরে নিলাম। এখন ঘুমালে দশটার আগে উঠতে পারবো না। তবে আজ কলেজ যেতে একটুও ইচ্ছে করছে না। কবে যে গ্রামে যাবো সেই টেনশনে আছি। ভাইয়াকে বলছিলাম হলুদের দুই দিন আগে যাবো। কিন্তু তায়াং ভাইয়া বলছে হলুদের দিন যাবে। কিন্তু সেদিন গেলে আমার আনন্দ মাটি। আমি এমনি জার্নি করতে পারি না। জার্নি করে বাসায় গেলে দুই দিন বেডের থেকে মাথা উঠাতে পারি না। মাথা ঘূর্ণায়। তাই ভাইয়া হলুদের অনুষ্ঠানের একদিন আগে যেতে রাজী হয়েছে। তাও ভালো। গ্রামের বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো শহরের মতো না হলেও আনন্দ অনেক বেশি হয়। আজ চাচাতো ভাইয়া ও বোন ঢাকায় আসবে। বিয়ের মার্কেটিং সব এখান থেকে করে নিবে। তায়াং ভাইয়া তাদের নিয়ে কোন শপিংমলে নাকি যাবে। তায়াং ভাইয়ার সাথে এনাজও যাবে। তাই ভাইয়াকে সকাল দশটার আগে ডাক দেওয়া নিষেধ। খালামণির সাথে কিচেনে হাতে হাতে কাজ করে দিতে লাগলাম। কখন যে সাড়ে নয়টা বেজে গেছে বুঝতেই পারলাম না।
সদর দরজায় বেশ কয়েকবার খটখটানির শব্দ পেয়ে দ্রুত সেদিকে ছুটলাম। এই কাজটা হলো বিচ্ছু দুটোর। মাঝে মাঝে দরজায় জোরে থাপড়িয়ে কিংবা কোলিং বেল বাজিয়ে দৌড় মারে। আজ হাতে পেলে মোয়া বানাবো। দরজা খুলে বাইরে উঁকি মেরে কাউকে দেখতে পেলাম না৷ নেংটি ইদুরটা নিশ্চয়ই বাসায় ঢুকে গেছে। আমি কিছু সময় দরজা আবজিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে রইলাম। হঠাৎ খট করে ইফাতদের বাসার দরজা খুললো। আমি ঘাপটি মেরে দাঁড়িয়ে রইলাম। ভেবেছিলাম বিচ্ছু দুটোর একজন হবে। কিন্তু না। ওদের আম্মু এক বালতি জামা-কাপড় নিয়ে বের হলো। মাঝারি সাইজের বালতিটা নিয়ে উনি হাঁপিয়ে গেছে। বালতি মেঝেতে রেখে উনি দুই হাতে কোমড় ধরে দাঁড়ালেন। বোঝাই যাচ্ছে উনার খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি বাইরে বের হয়ে তাকে বড় করে এক সালাম দিলাম।
— আসসালামু আলাইকুম শাশুড়ী আম্মা।
— ওয়া লাইকুমুস সালাম।
— কেমন আছেন?
— এই তো মা আছি আলহামদুলিল্লাহ। তুমি?
— আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি এই বালতি নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন?
— এই তো ছাদে রোদ দিতে।
তার কথা শুনে আমার চোখ চড়কগাছ। বলে কি উনি? এই ৮ মাসের প্রেগন্যান্ট অবস্থায় উনি এই বালতি নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে যাবে। আমি চেচিয়ে বললাম,
— আপনি পাগল হইছেন? কি বলেন এসব? আল্লাহ না করুক সিঁড়ি থেকে স্লিপ কেটে যদি নিচে পরেন তাহলে কোন উপায় আছে? এই অবস্থায় কোন ভারী জিনিস নেওয়ায় উচিত না। আর আপনি সেটা নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে যাবেন? বিপদ ডেকে আনতে ইচ্ছে করছে?
উনি আমার কথায় হাসলেন। তবে তার হাসিতে আমি লুকানো কষ্ট খুঁজে পেলাম। মুখে হাসি হাসি ভাব রেখেই বললো,
— এতগুলো ধুতে পারলে ছাদে দিতে সমস্যা কি?
তার কথা শুনে আরেকদফা অবাক। ৮ মাসের পেট নিয়ে উনি নাকি এগুলো ধুয়েছেন। কিছুটা রাগী গলায় বললাম,
— আপনাদের কাজের বুয়ার হয়েছে কি? এর দুই দিন পরপর কি হয়? আর আপনার শাশুড়ী কোথায়?
— কাজের বুয়া বললো আজ আসতে পারবে না। কোন কারণ বললো না। আর শাশুড়ী অসুস্থ।
— সত্যি অসুস্থ? নাকি অসুস্থ হওয়ার ভান করছে?
— জানি না মা।
— আচ্ছা আপনাকে না বলছি কোন দরকার হলে নিঃসংকোচে আমাকে ডাকবেন। আপনি একটু কষ্ট করে ইফাতকে কিংবা সিফাতকে পাঠাবেন। তাহলেই তো আমি চলে আসি। আর কাজের বুয়া আজ আসেনি। কাল তো আসবে। কাল এগুলো তাকে দিয়ে ধুইয়ে নিতেন। আপনাকে অসুস্থ শরীরে এসব কাজ করতে বলছে কে?
উনি আমার কথা শুনে চোখের পানি ফেলে বললেন,
— মা গো সবার কপালে তো সুখ জোটে না। আমিও সেই হতভাগী। গরিবের মেয়ে বলে আমার খারাপ লাগার কোন দাম নেই। আল্লাহ আমাকে নিয়ে গেলেই ভালো হবে। আর ভালো লাগে না এই সংসার জীবন।
তার প্রতিটা কথার মাঝে একরাশ বিষন্নতা ও চাপা কষ্টের আঘাত খুঁজে পাচ্ছি আমি। সামনে গিয়ে দুই চোখের পানি মুছে দিয়ে বললাম,
— বাচ্চাদের মতো কান্না করেন না তো। নিশ্চয়ই আল্লাহ কষ্টের পর সুখ রেখেছে।
আমার কথায় উনি তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে আফসোসের সুরে বললো,
— আর সুখ!
— আমাকে বালতিটা দিন। আমি ছাদে জামা-কাপড় মেলে দিয়ে আসি। আর কখনো এসব ভারী বালতি নিয়ে ছাদে যাওয়ার কথা চিন্তাও করবেন না। দরকার পরলে কোন লজ্জা না পেয়ে আমাকে ডাকবেন। শাশুড়ীর এতটুকু সাহায্য না করতে পারলে কেমন বড় বউ হলাম?
আমার কথা শুনে উনার কান্নামাখা মুখে এক চিলতে প্রশান্তির হাসি ফুটে উঠলো। সেটাই আমাকে মুগ্ধ করলো। আমি তার হাতের কাছ থেকে বালতিটা নিয়ে হাসিমুখে বললাম,
— যান, নিজের রুমে গিয়ে বিশ্রাম করুন। আমি ছাদে জামা-কাপড় রোদ দিয়ে আসছি। আপনার শাশুড়ীর সাথে আমার কিছু কথা আছে। ভেবেছিলাম কিছু বলবো না। কিন্তু এখন দেখছি চুপ করে থাকাটাই আমার সবচেয়ে বড় ভুল।
— না না তুমি তাকে কিছু বলো না।
— আপনি ভয় পেয়েন না। আমি এমন করে তাকে বলবো যে সাপও মরবে লাঠিও ভাঙ্গবে না।
উনি বাসার ভেতরে ঢুকে পরলেন। আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বালতি নিয়ে ছাদে চলে গেলাম। জামা-কাপড় দড়িতে মেলে খালি বালতি নিয়ে ইফাতদের ফ্লাটে চলে গেলাম। দরজা আগের থেকে খোলা ছিলো। আমি বালতিটা ওয়াশরুমের সামনে রেখে ইফাতের দাদীর রুমে গিয়ে উঁকি দিলাম। ইফাতের দাদা এমন সময় বাসায় থাকে না। চালের আড়তে ঢু মারতে যায়। ওর দাদী সম্ভবত ওয়াসরুমে গিয়েছে। আমি তাই চুপটি করে খাটে বসে এদিক সেদিক দেখতে লাগলাম। হঠাৎ পেছন থেকে ইফাত আমাকে নাম ধরে ডাকলো,
— নুবা!
আমার নামের বিকৃত উচ্চারণ শুনে কপাল কুঁচকে ইফাতের দিকে তাকালাম। দিলো রে দিলো, এই নেংটি ইদুর শেষ পর্যন্ত আমার নামটারও মান-ইজ্জ্বত মেরে দিলো।
#চলবে