শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
Part_47
#Writer_NOVA
হঠাৎ করে একটা ঘুষি এসে পরলো রোশানের নাক বরাবরি। রোশান ছিটকে দূরে পরে গেল। আমি চমকে সেদিকে তাকাতেই দেখতে পেলাম। এনাজ ও তায়াং ভাইয়া দুজনে আগ্নি দৃষ্টিতে রোশানের দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে আজ ওকে ভস্ম করে দিবে। ঘুষিটা সঠিক কে মেরেছে তা আমি জানি না। আমি নিচে মাটিতে বসে জোরে শ্বাস নিতে লাগলাম।এনাজ আমার দিকে এগিয়ে এলো। আর তায়াং ভাইয়া রোশানের দিকে।
— তুমি ঠিক আছো টিডি পোকা?
— হুম। আরেকটু হলে ও আমায় মেরেই ফেলতো। আমি চোখ, মুখে অন্ধকার দেখছিলাম।
তায়াং ভাইয়া রোশানকে নিচ থেকে উঠিয়ে মুখে কয়েকটা পাঞ্চ মারলো। তারপর জোরে চেচিয়ে বললো,
— একবার আমার বোনের জীবন নষ্ট করে তোর কি সুখ হয়নি? আবার কেন এসেছিস?
রোশান কোন উত্তর দিলো না। জোরে জোরে পাগলের মতো হাসতে লাগলো। ওর হাসিতে এনাজ, তায়াং দুজনেই চটে গেল। এনাজ আমাকে ছেড়ে রোশানের দিকে এগিয়ে গিয়ে ওর কলার ধরে বললো,
— তোর সাহস কি করে হয় ওর গলা চেপে ধরার? তোকে জ্যান্ত পুঁতে ফেলবো আমি। তুই ওর গায়ে হাত তুলেছিস কোন সাহসে?
এনাজ মারার জন্য হাত উঠাতে নিলেই আমি দৌড়ে গিয়ে ওর হাত ধরে বললাম,
— প্লিজ আপনারা এখানে কোন ঝামেলা করেন না। এখন ঝামেলা হলে পুরো বিয়ের অনুষ্ঠানটা নষ্ট হয়ে যাবে। এতে আমাদের বাড়ির মান-সম্মান নষ্ট হবে। ওকে আজকের মতো ছেড়ে দিন। পরে একদিন ওকে উদোম কেলানি দিয়েন। তায়াং ভাইয়া প্লিজ কোন ঝামেলা পাকাস না। ওকে আপতত ছেড়ে দে।
তায়াং ভাইয়া হুংকার দিয়ে বললো,
— তুই ওকে ছেড়ে দিতে বলছিস। তুই কি পাগল হইছিস? ও আবার তোর ক্ষতি করতে আসবে।
— সেই চান্স তোরা না দিলেই তো হয়। এখন তোরা মারামারি করলে ওর বাবা শুধু শুধু ঝামেলা পাকাবে। তখন বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানটাই মাটি। সব দোষ হবে তোদের, আমার। তাই আজকের মতো ছেড়ে দে। ভালোই ভালোই অনুষ্ঠান শেষ হোক তারপর একদিন চিপা গলিতে নিয়ে চিপা মাইর দিস।
এনাজ রোশানের কলার ছেড়ে বললো,
— হ্যাঁ তায়াং, নোভা ভুল বলেনি। এখন আপাতত ছেড়ে দে। ঢাকায় ওকে যদি পাই তাহলে মেরে হসপিটালে ভর্তি করবো।
তায়াং ভাইয়া ওকে ছেড়ে শাসিয়ে বললো,
— ভাগ্যক্রমে আজ বেঁচে গেলি। কিন্তু পরেরবার বাচতে পারিস কিনা তাতে সন্দেহ আছে।
রোশান এতগুলো মার খেলো তবুও শিক্ষা হলো না। বেহায়ার মতো হেসে কোর্ট ঠিক করে ঝাড়তে ঝাড়তে বললো,
— তোর বোনকে আমার হাত থেকে বাচিয়ে রাখিস। ও আজ আমার গালে দুটো থাপ্পড় মেরেছে। এর শোধ আমি অবশ্যই তুলবো। আমিও দেখবো ওকে আমার হাত থেকে কি করে বাঁচাস তোরা।
এনাজ ওর সামনে এসে বললো,
— একদম ঠিক করেছে। তোকে দুইটার বদলে চারটা কেন মারলো না।
আমি তায়াং ভাইয়া ও এনাজকে টেনে দালানের পেছন দিক থেকে নিয়ে অনুষ্ঠানের প্যান্ডেলে নিয়ে এলাম। দুজনেই রাগে ফুঁসছে। আমি আজ না আটকালে এতক্ষণে বিয়ে বাড়ি বিচারের সালিশ বসে যেতো। গলাটা এখনো ব্যাথা করছে। হারামজাদাকে যদি কষিয়ে আরো দুটো মারতে পারতাম। এখন আফসোস লাগছে। কেন যে আরো দুটো বেশি মারিনি। নিজের ওপর রাগও হচ্ছে। এই অমানুষটাকে ভালোবাসতাম আমি। এর জন্য নিজের ক্ষতি করেছি। ছিঃ ধিক্কার জানাই নিজেকে। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম,লজ্জা থাকলে আমি এর কথা জীবনে আর মনে করবো না। এই ঘটনা আমরা তিনজন কাউকে বললাম না। জানলে অসুবিধা হবে। তায়াং ভাইয়া বিশাল এক ধমক দিয়ে আমায় ঘরে পাঠিয়ে দিলো। আর বললো বাইরে যেন না দেখে আমায়। মেয়ে পক্ষের মানুষ আসতেই তারা দুজন খাবারের তদারকি করতে লেগে পরলো। আমি রুমে চলে গেলাম।
💖💖💖
পরেরদিন……..
তাজপুরের নিরিবিলি রাস্তায় হাঁটছি আমরা। আমি ও এনাজ আগে আর অনন্যা, অর্থি, ইভা,তন্বী, নূর আপি, তায়াং ভাইয়া পেছনে। সবাই অটো দিয়ে চলে এসেছি।কেউ বাইক আনিনি। উপজেলার মোড় থেকে তায়াং ভাইয়া সবাইকে চকবার আইসক্রিম কিনে দিয়েছে। সবাই মনোযোগ দিয়ে সেটা খাচ্ছে। এনাজের দিকে তাকাতে দেখতে পেলাম সে খাওয়া রেখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম,
— কিছু বলবেন?
— উহু, তুমি খাও।
— কেউ এভাবে হা করে তাকিয়ে থাকলে কি খাওয়া যায়? নজর দিয়েন না কিন্তু আবার। আমার যদি পেট ব্যাথা করে তাহলে আপনার দোষ।
— একটু তাকাতেই এতকিছু। তোমার খাওয়া দেখতে ভালো লাগছিলো তাই তাকিয়ে ছিলাম।
— নিজেরটা রেখে অন্যেরটার দিকে তাকিয়ে থাকলে তো ভাববোই নজর দিচ্ছেন।
— হইছে আর তাকাবো না। খাও তুমি।
আমি কোন কথা না বলে খাওয়ায় মনোযোগ দিলাম। উনি আইসক্রিমে কামড় দিয়ে এদিক সেদিক দেখতে লাগলো। আজকে সকালে তায়াং ভাইয়া ও এনাজ দুজনেই ঢাকা যাওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করছিলো। বাসার সবাই জোর করে রেখেছে। সামাদ ভাইয়া শ্বশুরবাড়ি। তার সাথে গতকাল আশা ও ঐশী গিয়েছে। অনন্যা,অর্থি, ইভাকে যেতে বলেছিলো। কিন্তু ওরা আমাদের জন্য যায়নি। আগামীকাল ভাবীদের বাড়িতে জামাই বাজার। সেই উপলক্ষে আমাদের জোর করে রেখে দিয়েছে। আগামীকাল গিয়ে সামাদ ভাইয়া ও ভাবীকে এই বাড়ি থেকে ২৫ জন গিয়ে নিয়ে আসবো। আজকের দিনে তাই ঘরে বসে না থেকে বিকেলবেলায় তাজপুর ঘুরতে চলে এলাম। আমার পছন্দের রাস্তায় প্রিয় মানুষটার পাশাপাশি হাঁটছি। আইসক্রিম খাওয়া শেষ হতেই পেছনে ঘুরে ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম,
— তায়াং ভাইয়া সামনে দুটো মঠ আছে। দেখতে যাবি? হাঁটতে হাঁটতে ঐদিক থেকে ঘুরে আসি।
তায়াং ভাইয়া বললো,
— কতটুকু সময় লাগবে? বেশি সময় লাগলে যাবো না। খালামণি, আম্মু বাকি সবাই বারবার বলেছে সন্ধ্যা করতে না। সন্ধ্যার আগে ফিরে যেতে হবে।
— বেশি সময় লাগবে না। এই ইটের রাস্তা শেষ মাঠেই কাঁচা রাস্তা গিয়েছে দক্ষিণ দিকে। সেই রাস্তা অল্প একটু হাঁটলেই মঠ।
— আচ্ছা চল তাহলে।
— আমরা হাঁটতে থাকি। তোরা আমাদের পেছনে আয়।
ভাইয়ার উত্তরের আশা না করে আমরা সামনের দিকে হাঁটতে লাগলাম। এদিকে গাড়ি খুবই কম চলে। কিছু সময় পর পর দু-একটা রিকশার দেখা পাওয়া যায়। ইটের রাস্তা হওয়ায় কিছু সময় পর আঁকাবাঁকা ইটে আমি কয়েকবার জুতা বেজে পরে যেতে নিয়ে বেঁচেছি। দুইপাশে সারি সারি ইয়া মোটা কড়ই গাছ। রোদের মধ্যেও এই রাস্তা ঠান্ডা থাকে। এনাজ গলা ঝেড়ে আমায় বললো,
— এখানে তুমি আগে কতবার এসেছো?
— বেশি আসা হয়নি। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসে স্কুল থেকে প্রতিবার উপজেলা মাঠে আসতাম। তখন এই দিকে হাঁটতে চলে আসতাম। কখনো বা উপজেলা পরিষদের সামনে যে বিশাল বড় পুকুর দেখলেন সেই পুকুরের পাকা সিঁড়ি ঘাটলায় বসে সময় পার করতাম। পারফরম্যান্স দেখার থেকে এদিক সেদিক ঘুরতে বেশি পছন্দ করতাম আমি।
— মঠ দেখোনি?
— মঠ দুটোকে খুব ছোটবেলায় একবার দেখেছিলাম। এক বান্ধবীর সাথে তাজপুর স্কুলে এসেছিলাম। তখন দেখেছিলাম। তারপর আর দেখা হয়নি। এদিকে আসলে দূর থেকে তার মাথা দেখা যেতো। মঠ দুটো অযত্নে, অবহেলায় এখন ধ্বংসপ্রায়। আমাদের বিক্রমপুরে অনেক ঐতিহাসিক, পুরনো ঐতিহ্য আছে। যত্নের অভাবে যা কালের গর্ভে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে।
— বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসুর বাড়িও তো তোমাদের মুন্সিগঞ্জে।
— হ্যাঁ, শ্রীনগরের রাঢ়ীখালে।
— তুমি দেখতে গিয়েছো?
— না, নিয়ে যাওয়ার মানুষ নেই। কে নিয়ে যাবে?
— সময় করে একদিন আমি নিয়ে যাবোনি।
— ওকে। আড়িয়াল খাঁ বিলও কিন্তু মনোমুগ্ধকর। বিলে নৌকা দিয়ে ঘুরলে আপনার মন নিমিষেই ভালো হয়ে যাবে। তারপর জনশন রোড। এই রোডটা অনেক সুন্দর। আপনার মনে হবে কোন সবুজ বনের ভেতর দিয়ে আপনি যাচ্ছেন।আমি নামে বিক্রমপুরের মেয়ে। কোন জায়গায় আজ অব্দি ঘুরিনি। শুধু অন্যের মুখ থেকে শুনে আফসোস করেছি।
— মুন্সীগঞ্জ আলুর জন্য বিখ্যাত।
— হ্যাঁ আলুর জন্য। তাছাড়া ভাগ্যকুলের মিষ্টিও আছে। রামপালের কলা, মাওয়ার ইলিশ, সিরাজদিখানের পাতক্ষীর,শীতল পাটি আরো বহু কিছু আছে। এগুলো ততটা জনপ্রিয় না হলেও বেশ কদর আছে।
— তোমাদের মুন্সিগঞ্জ আমার ছোট মনে হয়।
আমি কপাল কুঁচকে চোখ দুটো ছোট ছোট করে তার দিক তাকিয়ে বললাম,
—কোন দিক দিয়ে ছোট মনে হয়? আমাদের মুন্সিগঞ্জ বড় আছে। আমাদের জেলার ছয়টা উপজেলা। তার মধ্যে আমাদের উপজেলা সবচেয়ে বড়। ১১৪ টা গ্রাম ও ১৩ টা ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে আমাদের উপজেলা গঠিত। ১১৪টা গ্রাম কি কম কথা? একেকটা গ্রামও কম বড় নয়।
— তাহলে তো ভালোই বড়। তা মাওয়া কি তোমাদের উপজেলায়?
— না, লৌহজং উপজেলায় পরেছে। কুচিয়ামোড়া ব্রিজ বলে না সেটা আমাদের উপজেলায় পরেছে। মাওয়ার আগে যে বাসের কন্ডাক্টর নিমতলা, নিমতলা বলে চেঁচায় সেটাও আমাদের উপজেলায়।
— মুন্সিগঞ্জের নামই কি বিক্রমপুর?
— হ্যাঁ, বিক্রমপুর নামটা আগে ছিলো। পরে পাল্টিয়ে মুন্সিগঞ্জ রাখা হয়। এখনো অনেক জায়গায় মুন্সিগঞ্জ বললে চিনে না। যদি বলি বিক্রমপুর তাহলে চিনবে। তায়াং ভাইয়াদের মাদারীপুরের মানুষ তো আমাদেরকে বিক্রমপুরের মানুষ হিসেবে চিনে। মুন্সিগঞ্জ বললে বলবে এটা কোন জায়গা।
— তোমাদের এদিকে নদী নেই? দেখলাম না তো। তাই জিজ্ঞেস করলাম।
— আমাদের হাই স্কুলের যে রাস্তা দিয়ে আসলেন সেটার উত্তর পাশে আছে। ইছামতী নদী। আগে বিশাল বড় ছিলো। লঞ্চ চলাচল করতো। কিন্তু এখন চড় পরে নদী মৃত নদীতে পরিণত হয়েছে। বর্ষা এলে যাও একটু প্রসারিত হয়। গ্রীষ্মে পুরো শুকিয়ে খালে পরিণত হয়। আগের মতো মাছও নেই। আগে স্কুলে থাকতে টিফিন পিরিয়ডে নদীর পাড়ে গিয়ে বসে থাকতাম। এখন নদীর দুই পাশের জমিগুলো বালি দিয়ে ভরাট করে নদীটাকে আরো সংকীর্ণ করে দিয়েছে। মুন্সিগঞ্জ সদরে আছে ধলেশ্বরী নদী। সেটা মোটামুটি ভালো অবস্থায় আছে।
এনাজ আমার কথা শুনে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
—মাঝে মাঝে ভাবি আমরা যতটা প্রাকৃতিক পরিবেশে বড় হয়েছে তা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম চোখেও দেখবে না। ওদের কাছে এগুলো রুপকথার গল্পের মতো লাগবে। এসব নষ্ট কিন্তু আমরাই করছি। ভবিষ্যত প্রজন্মকে হুমকির মুখে সম্মুখীন আমরাই করছি।
আমি তার কথার সাথে তাল মিলিয়ে বললাম,
— ঠিক বলেছেন। হাই স্কুলের পেছনে দেখেছেন বিশাল বড় এক মাঠ। কিন্তু কোন ছেলে সেখানে খেলছে না। তারা মাঠের কোণে গোল করে বসে হয় ফেসবুক চালাচ্ছে কিংবা কারো সাথে চ্যাটিং করছে। কিন্তু ছোট বেলায় এই মাঠে খেললে তার হৈচৈ আমাদের বাসায় শুনতে পেতাম। বিশাল বড় মাঠ আছে কিন্তু খেলার মানুষ নেই। পৃথিবীর মানুষগুলো যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে।
— আমরা বোধহয় চলে এসেছি। ঐ যে মঠ দেখা যাচ্ছে। ভেতরে ঢোকা যাবে?
— না, বড় মঠটার সদর দরজা মাটির নিচে ঢাকা পরে গেছে। ছোটটার অর্ধেক আছে আর বাকি অর্ধেক মাটির নিচে। সেটায় বড় তালা মেরে রাখা হয়। বাইরে থেকে দেখে আসতে পারবো। অনন্যাদের গ্রামে একটা মঠ আছে।সেখানে অনেক টিয়ে পাখি বাসা করে থাকে। ভেতরে কেউ যায় না।
— কেউ পাখি ধরে না?
— না, কেউ ধরে না। উপরের দিকে ছোট ছোট ছিদ্র আছে।ওরা সেখানে ওদের মতো মঠে বাসা বানিয়ে থাকে। সেটার দরজায়ও বহু বছর আগের বড় তালা ঝুলানো। লোকমুখে শোনা যায় ভেতরে সাপের বসবাস। একেকটা ঐতিহ্য নিয়ে নানা কাহিনি আছে। আদোও সেগুলো সত্যি কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। আমার রামপাল যাওয়ার ভীষণ ইচ্ছে। সেখানে এক বিশাল দীঘি আছে। যেটার নাম রামপালের দীঘি।ঐ দিঘী নিয়ে লোকমুখে একটা গল্প আছে। দীঘিটা বিশাল বড়। সেটাকে কখনোই মেশিন দিয়ে সেঁচে পানিশূন্য করতে পারে না।
— দীঘি কি?
—দীঘি পুকুরের মতোই। তবে তার থেকে বড় ও অনেক বেশি গভীর।
— রামপাল দীঘির গল্পটা বলো।
— আজ নয় আরেকদিন। সব আজ বলে দিলে আকর্ষণ থাকবে না। এখানে দাঁড়ান। ওরা আসুক তারপর একসাথে যাবো।
— মুন্সিগঞ্জ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম।
— এই সামান্য কিছু জেনে বলছেন অনেক কিছু। পুরোটা জানলে তো মাথা এলোমেলো হয়ে যাবে। আরো বহুকিছু আছে। সময় করে আরো অনেক কিছু বলবোনে।
— ওকে।
আমরা কাঁচা রাস্তার সামনে দাঁড়িয়ে রইলাম। সবাই একসাথে হয়ে মঠের সামনে গেলাম। লাল মঠের অনেক জায়গা ভেঙে ভেঙে নিচে পরে রয়েছে। একসময় এখানে পূজো হতো। কি পূজো তা আমি জানি না। অবহেলায়,অযত্নে এগুলো এখন কোনরূপ দাঁড়িয়ে আছে। কোনদিন জানি ভেঙে নিচে পরে যাবে।অথচ এদের যত্ন নিলে যুগ যুগ ধরে এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতো। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আর রূপকথার গল্প হতো না।
#চলবে
আমার জেলার ইতিহাস বললাম। তার জন্য কেউ আবার আমার ওপর রাইগেন না😵।