তুমি_তাই
অরিত্রিকা আহানা
পর্বঃ১৬
রেজোয়ানকে ভেতরে দেখে নিলির মুখ কালো হয়ে গেলো। আবার কোন মতলবে এসেছে কে জানে। মুখ ঘুরিয়ে রান্নাঘরের দিকে চলে যেতে নিলো। তখুনি ডাক দিলো রেজোয়ান,
-‘নিলি! দাঁড়াও তোমার সঙ্গে আমার কিছু কথা আছে।’
নিলি দাঁড়ায়। বলে,’আমি তোমার কোন কথা শুনতে ইচ্ছুক নই।’
-‘কি মনে হয় তোমার? আমরা সবাই মিথ্যে কথা বলছি?’
-‘বলছো না? একটা নিরপরাধ মানুষকে তুমি আমার জন্য শুধুশুধু কষ্ট দিচ্ছো তারপরেও বলছো মিথ্যে বলছো না?’
-‘না বলছি না। যা সত্যি তাই বলেছি।’
-‘তোমার সব সত্যি আমার কাছে মিথ্যে। আমি জানি তুমি ইচ্ছে করে মি.রেজা সম্পর্কে বদনাম করছো।’
রেজোয়ানের মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। যতবার নিলিকে বোঝাতে গেছে একই টেপরেকর্ডার বাজিয়েছে নিলি। রেজা হারামজাদাটা কি বুঝিয়েছে আল্লাহই জানে।
-‘আমার কথা নাহয় তোমার বিশ্বাস হয় না। কিন্তু জাহিদ? ওকে তো তুমি বিশ্বাস করো?’
-‘না করি না। ও তোমার লোক।’
রেজোয়ান ঠোঁট দিয়ে জিহ্বা ভেজালো। শার্টের হাতা গোটালো। সোফায় বসে দু আঙ্গুলে কপাল চেপে ধরলো। বললো,
-‘ওকে ফাইন। মুখের কথায় তোমার বিশ্বাস হবে না। আমি প্রমাণ দেবো। কিন্তু তার আগে তুমি একটা কথা বলো, এই বিয়েতে তুমি সত্যিই খুশি?’
নিলির মুখটা হঠাৎ করেই চুপসে গেলো। গাঢ় বেদনায় ছেয়ে গেলো সুন্দর, সুশ্রী মুখখানা। রেজাকে সে ভালোবেসে বিয়ে করছে না। রেজা নিজেও জানে সে কথা। আর সেজন্যই নিলি মানুষটাকে এত বেশি সম্মান করে। নিঃস্বার্থভাবে শুধুমাত্র তাঁকে সাহায্য করার জন্য রেজা এত কষ্ট সহ্য করছে। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,’হ্যাঁ আমি। খুশি।’
রেজোয়ান চুপচাপ নিলির মুখের দিকে চেয়ে রইলো। নিজের বিব্রত ভাব লুকানোর জন্য মাথা নিচু করে ফেললো নিলি। ঘনঘন ওড়না ঠিক করলো।
-‘আই ক্যান সি। তুমি কেমন খুশি সেটা আমি দেখতেই পারছি।’
-‘দেখতে যখন পেরেছো এবার তাহলে বেরোও। আশাকরি আর কোন সন্দেহ নেই তোমার।’
রেজোয়ান আচমকা হাসতে শুরু করলো। অট্টহাসিতে মৃদু কেঁপে উঠলো তাঁর শরীর। হাসতে হাসতে ঠাট্টার সুরে বললো,
-‘খুশি? তুমি? বিয়েতে? ভালো। খুব ভালো।’
কথা শেষ করে আবার হাসলো রেজোয়ান। নিলির মেজাজ খারাপ লাগছে। ইচ্ছে করে এমন নাটক করছে রেজোয়ান। এমন ভাব করছে যেন নিলির মনের কথা সব বুঝে বসে আছে সে। অথচ যখন কাছে গিয়েছিলো ফিরে তাকায় নি। এখন এসেছে নাটক করতে। থমথমে গলায় বললো,
-‘কি চাও কি তুমি? শাস্তি দিতে চেয়েছিলে মাথা পেতে নিয়েছি। তোমার চোখের সামনে থেকে চলে আসতে বলেছিলে চলে এসেছি, তাহলে কেন তুমি আমাকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছো না? সমস্যাটা কি তোমার?’
-‘তুমি যেটাকে শান্তি ভাবছো সেটা আসলে শান্তি নয়। রেজার মতন মানুষ কখনো কাউকে শান্তি দিতে পারবে না।’
-‘আর তুমি? তুমি বুঝি খুব পারবে? তো কীভাবে দেবে শুনি? আবার জেলে ঢুকিয়ে? চুরির অভিযোগ দিয়ে? সারাদিন অফিসে রোবটের মতন খাটিয়ে? ভুল হলে কুকুর বেড়ালের মতন তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে নাকি বিছানায় যাওয়ার অফার দিয়ে….’
বলতে বলতে ঝরঝর করে কেঁদে ফেললো নিলি। কি অসহ্য বেদনায় তাঁর দিনগুলো কেটেছিলো এটা কেবল সে-ই জানে। বিনাদোষে দিনের পর দিন তাঁকে অপমান করেছে রেজোয়ান। একবারও নিলির কষ্টটা বোঝার চেষ্টা করে নি। এখন এই মানুষটা এসেছে ভালোবাসার কথা শোনাতে। বিশ্বাস করে না নিলি। একফোঁটাও বিশ্বাস করেনা।
রেজোয়ান অনুশোচনায় মাথা নিচু করে ফেললো। বুকের ভেতর পিনপিন ব্যথা অনুভব করলো। রাগে, অভিমানে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলো সে। সত্যি মিথ্যে যাচাই করার প্রয়োজন মনে করে নি। নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে পাহাড়সম ব্যথা দিয়েছে। হাটুমুড়ে নিলির সামনে বসে পড়লো সে। ছলছল চোখে চেয়ে থেকে বললো,’ভুল হয়ে গেছে নিলি। অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে। না জেনে আমি তোমার সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছি। অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে। এরজন্য তুমি আমাকে যা শাস্তি দেবে আমি মাথা পেতে নেবো। কিন্তু বিশ্বাস করো,আমি এখনো তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে কষ্ট দিয়ে আমি ভালো থাকতে পারি নি। নিজের অজান্তেই সেই একই কষ্ট আমার বুকে এসে লেগেছে। আমাকে আর একটা বার সুযোগ দাও। প্লিজ নিলি।’
নিলির চোখ মুছে মলিন হাসলো। বললো,’তোমার কি মনে হয় রেজোয়ান? আমি তোমার হাতের পুতুল? যখন যা খুশি বলবে, যখন যা খুশি করবে আমি মেনে নেবো? আমার কোন আত্মসম্মান নেই? মি.রেজা আমার জন্য অনেক করেছেন। তাঁকে আমি অপমানিত হতে দিতে পারি না।’
রেজোয়ানের ক্লান্ত লাগছে। কি করলে সে নিলিকে বোঝাতে পারবে রেজা তাঁর সঙ্গে অভিনয় করছে। কোন মন্ত্রবলে নিলিকে সত্যিটা বোঝাতে পারবে।
-‘তুমি কি আমার কোন কথাই বিশ্বাস করবে না?’
-‘না।’
-‘বেশ। তাহলে আমি আমার যা করার করবো। জেনেশুনে তোমাকে তো আমি ঐ লম্পটটার হাতে তুলে দিতে পারি না।’
-‘মুখ সামলে কথা বলো। তুমি কাকে কি বলছো?’
-যা সত্যি তাই বলছি।’
বেরিয়ে গেলো রেজোয়ান। নিলি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। রেজোয়ান মিথ্যেবাদী, প্রতারক, নিষ্ঠুর। নিলি অনেক কষ্ট দিয়েছে, অনেক অপমান করছে। কিন্তু তারপরেও একেই ভালোবাসে নিলি। নিজের প্রতি রাগ হয় কিন্তু সত্যিটা অস্বীকার করতে পারে না। তবে এই সত্যিটা কোনদিন রেজোয়ানকে জানতে দেবে না সে। রেজাকেও কোন মতে রেজোয়ানের কাছে ছোট হতে দেবে না।
★
জাহিদ এতক্ষণ বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলো। রেজোয়ানকে শুকনো মুখে বেরোতে তাঁর নিজেরও মুখ কালো হয়ে গেলো। বললো,’উনি বিশ্বাস করে নি তাই না স্যার। আমি জানতাম। কিন্তু এবার কি হবে? আমরা কি সত্যিই সত্যিই রেজাকে কিডন্যাপ করবো?’
-‘ঐ হারামিকে কিডন্যাপ করে কি হবে? উল্টে নিলি খেপে যাবে।’
-‘তাহলে? বিয়ে আটকাবো কি করে?’
জাহিদকে অবাক করে দিয়ে রেজোয়ান হাসলো। ফিসফিস করে বললো,’আমরা নিলিকে কিডন্যাপ করবো!’
জাহিদ হাঁ করে রেজোয়ানের মুখের দিকে চেয়ে রইলো। সে ভেবেছিলো নিলিকে কনভিন্স করতে না পেরে রেজোয়ান বুঝি হাল ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু এখন তো দেখছে রেজোয়ান পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ গতিতে মাথা খাটিয়েছে। অতঃপর হাসিমুখে দুজনেই নিলি বাসার সামনে থেকে প্রস্থান করলো।
★
পরেরদিন আবার জাহিদকে নিয়ে নিলির বাসায় রওনা হলো রেজোয়ান। জাহিদ কোথায় যাচ্ছি জিজ্ঞেস করতেই বললো, ‘নিলিকে জ্বালাতন করতে’।
ভেতরে ঢুকে রেজোয়ান নিলিকে দেখে হাসলো। প্রতিউত্তরে নিলি ভ্রু কুঁচকালো। গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করলো,’আবার কেন এসেছো তুমি?’
-‘তোমার খোঁজখবর নিতে। কেমন আছো?’
নিলি রেজোয়ানের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলো,’আমার খোঁজখবর নিতে?’
-‘হ্যাঁ। কেন নিতে পারি না?’
-‘না পারো না। দুদিন বাদে আমার বিয়ে। এইমুহূর্তে তোমার এত ঘনঘন এই বাসায় আসা আমার এবং মি.রেজার দুজনের জন্যই বিব্রতকর এবং অস্বস্তিকর!’
-‘রেজা আমার আসা নিয়ে কিছু বলেছে তোমাকে?’
-‘কি বলবে? আমি নিজে থেকেই তোমাকে আসতে বারণ করছি।’
-‘কেন?’
-‘কেন মানে? মি.রেজা নাহয় আমার মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলছে না কিন্তু আমি তো অবিবেচক নই। তুমি আমার হবু স্বামীকে কিডন্যাপ করার হুমকি দিয়েছো, তোমাকে নিশ্চয়ই আমি আমার বাসায় সাদরে আমন্ত্রণ করতে পারি না?’
রেজোয়ানের অসহ্য লাগছে। নিলি তাঁর গালে দুঘা বসিয়ে দিলেও বোধহয় এত কষ্ট লাগতো না যতটা রেজার পক্ষ নিয়ে কথা বলায় লাগছে। তার ওপর আবার বলছে হবু স্বামী! অসহ্যকর। কাছে এগিয়ে গেলো সে। নরম হাতে আলতো করে ছুঁয়ে দিতে চাইলো নিলিকে। নিলি চট করে সরে গেলো। কঠিন গলায় বললো,’কথায় কথায় আমার গায়ে হাত দেবে না।’
-‘কেন? অশুচি হবে? রেজা দিলে হবে না?’
-‘তিনি কখনো আমার গায়ে হাত দেন নি।’
-‘তিনি? বাহ! রেজা এখন তিনি। তা তোমার এই তিনি আর কি কি করেন না?’
-‘তোমার মতন মিথ্যাচার, আরেকজনের ক্ষতি করা, মানুষকে কষ্ট দেওয়া, মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা এসব তিনি করেন না।’
বাধা দেওয়ার পূর্বেই রেজোয়ান নিলিকে কাছে টেনে নিয়ে এলো। দুহাতে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে বললো,’তবে তো তিনি সন্ন্যাসী। সন্ন্যাসীর আবার বিয়ের প্রয়োজন কি? আমি রক্তমাংসে গড়া মানুষ আমার বিয়ে প্রয়োজন।’
নিলির গলা কাঁপছে। রেজোয়ান শক্ত করে ধরেছে ওকে। মৃদু নিশ্বাস ফেলছে মুখের ওপর। অদ্ভুত ভাবে হাসছে।
এদিকে তার অবস্থা দেখে রেজোয়ানের হাসি পেয়ে গেলো। নতুন প্রেমে পড়া কিশোরীর মত ছটফট করছে নিলি। দেখতে বেশ লাগছে।
-‘এমন ছটফট করছো কেন? আমি তো কিছুই করছি না?’
নিলির জবাব দেওয়ার জন্য মুখটাও খুলতে পারছে না। অসভ্যটা একেবারে ঠোঁটের কাছে মুখ নিয়ে এসেছে। ঠোঁট বন্ধ করে চোখ দিয়ে শাসালো সে। এরমানে ‘আমাকে ছাড়ো।’
রেজোয়ান ফুঁ দিলো ওর মুখের ওপর। বললো,’ছাড়তে পারি এক শর্তে। স্বেচ্ছায় আমাকে একবার জড়িয়ে ধরতে হবে। জড়িয়ে ধরে বলতে হবে,’রেজা একটা হিজড়া। ওকে আমি ভালোবাসি না। আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি।’
দুম করে তাঁর পিঠের ওপর কিল বসালো নিলি। ত্যাক্ত গলায় বললো,’অসভ্য! মুখে কিছু আটকায় না তোমার?’
রেজোয়ান হাসতে হাসতে বললো,’সিরিয়াসলি আমার কাছে প্রমাণ আছে।’
লজ্জায় অস্বস্তিতে নিলির চোখমুখ লাল হয়ে গেলো। রেজোয়ান এমন নির্লজ্জ, অসভ্য হলো কবে থেকে সেটা ও বুঝতে পারছে না। আবার বলছে প্রমাণ আছে। ছিঃ ছিঃ ছিহ!
-‘তোমার লজ্জা করছে একটা মেয়ের সামনে দাঁড়িয়ে এধরণের অসভ্য কথা বলতে?’
রেজোয়ানের হাসি থামে না। ক্ষিপ্ত নিলিকে আরেকটু রাগানোর জন্য চট করে চুমু খেয়ে নিলো সে। বললো,’তোমার মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। চুমু খেলে মাথা ঠাণ্ডা হয়।’
নিলি প্রথমে কয়েক সেকেন্ডের জন্য হতবম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। তারপর রাগত মুখে গর্জে উঠে বললো,’অসভ্য,বর্বর। বেরোও আমার বাসা থেকে।’
-‘যাবো না।’
-‘যাবে না মানে?’
-‘যাবো না মানে যাবো না।’
-‘আমি তোমাকে পুলিশে দেবো।’
-‘দাও। শোধবোধ হয়ে যাবে।’
নিলির রাগে মাথার চুল টেনে ধরলো। রেজোয়ান ইচ্ছে করে তাঁকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। কিছুক্ষণ দম নিয়ে, রেজোয়ানের কলার চেপে ধরলো সে। সোফা থেকে টেনে তুললো বের করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তুলে আর নড়াতে পারলো না। রেজোয়ান স্ট্যাচুর মতন শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। নিলি হাজার চেষ্টা করেও একচুল নড়াতে পারলো না।
-‘ছেড়ে দাও নিলি। পরপুরুষের কলার টানাটানি ভালো দেখায় না। ঘাড়ের কাছে নখের দাগ বসে গেছে। লোকে দেখলে অন্য কিছু মনে করবে।’
নিলি রাগে ঠাটিয়ে চড় মারলো গালে। চড় খেয়েও রেজোয়ান দমলো না। বললো,’সুন্দরী মেয়েদের হাতে চড় খেলে আয়ু বাড়ে। আরো দুটো মারো।’
নিলির অবস্থা কাহিল। ঠোঁট চেপে হতাশ গলায় বললো,’তুমি ব্যবসা ছেড়ে কমেডি শুরু করলে কবে থেকে?’
-‘যবে থেকে রেজা সন্ন্যাসী ছেড়ে বিয়ের কথা ভাবছে তবে থেকে।’
নিলির আর টানাটানি করার শক্তি নেই। হাঁপিয়ে গেছে। হাতপা ছড়িয়ে সোফার ওপর বসে পড়লো সে। রেজোয়ান টাইয়ের নট ঠিক করে নিয়ে বললো,’গা থেকে ওড়নাটা খুলে দাও। বাতাস লাগবে।’
নিলি সোফার পাশের টেবিল থেকে ছোট ফুলদানীটা নিতে যাচ্ছিলো ছুঁড়ে মারার জন্য। রেজোয়ান খপ করে তাঁর হাত ধরে ফেললো। মুচকি হেসে বললো,’তোমার ভালোর জন্যই তো বলছিলাম। তাই বলে এত রাগ করতে হয়? আচ্ছা ঠিক আছে আর বলবো না।’
-‘তুমি বেরোও আমার বাসা থেকে।’
-‘না গেলে হয় না?’
নিলি আবার চোখ রাঙালো। রেজোয়ান মুখে প্রচ্ছন্ন হাসি ঝুলিয়ে বললো,’ঠিক আছে যাচ্ছি। রাতে আবার দেখা। ডিনার করবো একসাথে।’
নিলির জবাবের অপেক্ষা না করেই বেরিয়ে গেলো সে। নিলি উপুড় হয়ে সোফায় শুয়ে রইলো। রেজোয়ানের বলে যাওয়া কথাটা নিয়ে মাথা ঘামালো না। কারণ সে জানে রেজোয়ান মোটেও রাতের বেলা বাসায় আসবে না। দুজনের সম্পর্ক থাকাকালীন সময়েও প্রায়ই রেজোয়ান তাঁকে রাতে দেখা করার কথা বলে সারারাত অপেক্ষা করিয়ে রাখতো। ফোন দিলে বলতো আসছি। কিন্তু পরে আর আসতো না। এই নিয়ে কত মান অভিমান হতো দুজনের। সব এখন স্মৃতি। রেজোয়ান হয়ত দেখতে চাইছে রাত জেগে এখনো তাঁর জন্য অপেক্ষা করে কিনা নিলি। নিলিকে পরীক্ষা করতে চাইছে।