#গ্রামের_ছেলেটি
পর্ব-১০ম
স্বপন
আর শুরু করে দেয় ম্যাডাম আমি কান বন্ধ করে রাখি ম্যাডামের যেই গলা আমার কান শেষ। আমার এ অবস্থা দেখে পিছনে দারিয়ে রাইসা হাসতেছে। ম্যাডাম চলে গেছেন,,,
আমি শুধু নিলিমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি আর ভাবছি কি হলো এটা শুধু শুধু কতগুলো কথা শুনিয়ে দিয়ে গেলো,,
অফিস শেষে বাসায় আসতে যাবো রিকশা ডাক দিবো,তখনি নিলিমা আমাকে ডাক দিলো,,
নিলিমাঃ শিমুল দাঁড়াও কথা আছে তোমার সাথে।
আমি আর রিকশা ডাক দিলাম না। নিলিমা আমার কাছে এসে বলে চলো যেতে যেতে কথা বলি। আমি তার গাড়িতে উঠে বসি,,,,
আমি মনে মনে ভাবছি নিলিমাকে নিয়ে। যে নিলিমার কাছে যেতে ভয় পেতাম। যে আমাকে ভার্সিটিতে বসে বলেছিলো আমার কোন যোগ্যতা নেই তাকে প্রোপোজ করার। আর আজ আমাকেই সে বিয়ে করতে রাজি হয়েছেন। একথা গুলো ভাবছি আর নিলিমার দিকে তাকাচ্ছি।
সেটা অবশ্য নিলিমার চোখ এরাতে পারে নি। নিলিমাঃ কি হলো এভাবে কি দেখছো,,
আমিঃ কিছু নাহ এমনি,,
নিলিমাঃ এমনি নাকি আমাকে বলবেনা, বলতে পারও আমি কিছু মনে করবো না।(নিলিমা হয় তো ভেবেছে আমি ওকে ভালোবাসি সে কথা বলব)
আমিঃ হ্যা কিছু তো ভাবছি,,
নিলিমাঃ কি ভাবছো,,,
আমিঃ হটাৎ কিছু পরোনো দিনের কথা খুব মনে পরছে তাই ভাবছি।
নিলিমাঃ তাই কি শুনি সে কথা।
আমিঃ তেমন কিছু না ,ভাবছি আপনি যদি একটি গরিব ঘরে জন্ম। আপনি পড়াশোনা ভালো। কিন্তু আপনার পরোনে তেমন ভালো একটা পোশাক পরতে পারো না। এভাবে ভার্সিটিতে একটা ছেলে ভালো লাগলো আসতে আসতে ভালো লাগা থেকে ভালোবাসায় পরিনত হলো, দুর্ভাগ্যক্রমে আপনার সেই ছেলে এক বড়লোকে ছেলে হয়ে গেলো। তখন কি করবেন তাকে কি তার পর ও ভালো বাসবে।
নিলিমাঃ কি করতাম, আমি তাকে আমার মনে কথা গুলো বলতাম।
আমিঃ হুম, আর সে যদি তোমাকে রিজেক্ট করে তাহলে। শুধু তাই না যদি বলে, “তোমার মতো ছোটলোকের মেয়ের কি করে সাহস হয় তাকে প্রোপোজ করার। তোমার থেকে কত ভালো ভালো মেয়ে তার কাছে প্রতিদিন প্রোপোজ করে। তোমার মতো মেয়ের কি যোগ্যতা আছে ” তার বন্ধুদের সঙ্গে মিলে তোমাকে অপমান করে। তাহলে কি করবে তারপর ও কি তাকে তোমার সেই আগের মতো ভালোবাসা থাকবে,,,
আমার কথা শুনে নিলিমা ব্রেক করলো দেখলাম আমি আমার বাসার সামনে চলে এসেছি। আমি আর কিছু না বলে চলে আসি,,দেখলাম নিলিমা আমার কথার উত্তর না দিয়ে শক হয়ে বসে আছে।
আমি গেট দিয়ে ডুকতে যাবো তখনি পিছন থেকে নিলিমা ডাক দিলো,,,,
নিলিমাঃ এসব কিছু বলার মানে কি আর আমাকেই বা কেন বলছ এসব বুঝলাম না,,।
আমিঃ জানিনা কেমন জানি বলতে ইচ্ছে করলো তাই বললাম।
নিলিমাঃ আমার কেন জানি মন হয় এর মধ্যে কিছু একটা মিসিং আছে। রিজেক্ট করার পর কি হয়।
আমিঃ মেয়েটা মানে তুমি কোন কারনে সেই ছেলেটার খুব কাছের মানুষ হয়ে গেলো। একসময় তাকে বিয়ে করার কথা বলে তখন তুমি কি করবে।
নিলিমাঃ তখন আবার সেই ছেলেকে তার কথার উচিত জবাব দিতাম,,
আমিঃ হাহাহাহ বুঝে বলছ তো নাকি,,
নিলিমাঃ হ্যা,,,যখন আমি তাকে সত্যিকারে ভালোবাসতাম তখন সে তার অহংকার দেখিয়েছে। সেই অহংকারের পালটা যবাব দেয়া উচিৎ।
আমিঃ হুম ঠিক বলেছ,,
নিলিমার ফোনটা বেজে উঠল,,নিলিমা ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ির কাছে চলে যায়। আমিও বাসার ভিতরে চলে গেলাম,,,নিলিমা ফোন্টা কাটতে দেখে আমি নেই তখনি তার মনে পরে যায়। সে আমার কাছে কিছু একটা জিজ্ঞেস করার জন্য এসেছিলো।
আমাকে ডাকতে ডাকতে তারাহুরো করে ভিতরে ঢুকে সিরি দিয়ে উটতেই একজনে সাথে ঢাক্কা খায়।
নিলিমাঃ সরি আসলে একটু তারাহুরো করতে গিয়ে খেয়াল করি নি।।সরি সরি( ছেলেটা কিছু বলছেনা ছেলেটা শুধু নিলিমার দিকে তাকিয়ে আছে। নিলিমা এতো কথা বলছে সে তার কোন কথাই শুনছে না।
নিলিমা সরি বলে উপরে চলে আসে, আমি দরজা খুলে ভিতরে যেতে যাবো তখনি নিলিমা ডাক দিলো,,
নিলিমাঃ শিমুল,,,,( উঠতে গিয়ে হাপিয়ে গেছে তাই একটু জিরিয়ে নিচ্ছে)
আমিঃ তুমি কি হয়েছে এতো হাপাচ্ছ কেন??
নিলিমাঃ আমি যে কথা গুলো জিজ্ঞেস করব তা তো ভুলেই গেছি।
আমিঃ ও হ্যা তা কি জিজ্ঞেস করবে,
নিলিমাঃ বাবা কিছু বলেছে তোমাকে,,,
আমিঃ হুম,,,আর আমি তো তাকে আমার জবাব বলে দিয়েছি। কেন কিছু বলেনি কিছু।
নিলিমাঃ নাহ আমি তোমার মুখে শুনতে চাই,,,
আমিঃ আমি স্যারকেও বলেছি এবং তোমাকেও বলছি। আমি পারবো না তোমাকে বিয়ে করতে।আর তোমার বাবাকে আমি সরাসরি বলতে পারিনি যে আমি পারবো না, তাই বলেছি ভেবে দেখবো।
নিলিমাঃ কেন,,,কেন পারবে না,,,
আমিঃ আমার বিষয় কতটুকু জানো তোমরা,?
নিলিমাঃ মানে,,,,,
আমিঃ বলছি আমি কে আমার পরিবার কেমন, বংশ পরিচয়, আমি কোথায় থাকি। তার কিছু জানা নেই তোমাদের তাহলে কি দেখে রাজি হলে তুমি।
নিলিমাঃ সেটা তো তোমার সাথে একয়দিন থেকেই বুঝেছি তুমি কেমন ছেলে। আর রইলো তোমার পরিবারের কথা তা দেখে আমার কাজ নেই আমি তোমাকে বিয়ে করবো।
আমিঃ ওকে আমাদের বিয়ে পরে তুমি কোথায় থাকবে ,আমার বাড়ি নাকি তোমাদের বাড়ি,,
নিলিমাঃ কেন আমার বাড়িতে থাকবো আমার বাবার এতো বড় বাড়ি ব্যবসায় এসব তো আমাদেরই হবে।
আমিঃ হুম ঠিক এর জন্যই আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবো না। আমি তোমার সাথে থাকলে আমার মা বোনের কি হবে। এর জন্য বলেছি আমাদের মধ্যে কিছুই হতে পারে না। না তুমি তোমার বাবার সব কিছু ছেড়ে আসতে পারবে না আমি। তাই বলছি তুমি তোমার লেভেলের একটা ছেলে পছন্দ করে বিয়ে করে নেও। তাতে তুমিও সুখে থাকবে আমিও আমার মতো কাউকে খুজে নেব।
রাকিব চলে আসে,,,,
রাকিবঃ বাইরে দাঁড়িয়ে কার সাথে কি কথা বলছিস?
নিলিমাঃ এটাই কি তোমার শেষ কথা,,,
আমিঃ হুম আর তুমি যদি তোমার সব ছেড়ে আমার গ্রামের গরিবের বউ হতে তাহলে আমার কোন আপত্তি নেই। ভেবে দেখো কি করবে।
আমি আর রাকিব রুমে ভিতরে চলে গেলাম নিলিমাও চলে গেলো।।
রাকিবঃ নিলিমা কি বললে এসে, আর তুই ওকে বাইরে দাড় করিয়ে রেখেছিস কেন ভিতরেও তো আনতে পারতি।
আমিঃ ছাড় বাদ দে ভালো লাগছে না,,
রাকিবঃ কেন শরির খারাপ নাকি আবার,,
আমিঃ মাথা ধরে গেছে নিলিমার সাথে কথা বলে।।
রাকিবঃ চা খাবি দাড়া আমি করে নিয়ে আসতেছি।
রাকিব চলে গেলো চা করতে আমি একা বসে আছি। ভাবছি নিলিমার কথা যে একদিন আমাকে গ্রামের গাইয়াভুত বলে অপমান করেছে আজ সেই নিজের বিয়ে করার জন্য বলছে। আল্লাহ কখন কার সাথে কি করেন তা ঠিক নেই।
রাকিব চা নিয়ে চলে এসেছে, আমার কাছে দিয়ে বলে,,
রাকিবঃ চল ছাদে গিয়ে খাই,,,
আমিঃ নাহ ছাদে যাওয়া নিষেধ আছে,,,
রাকিবঃ তাতে কি আমরা কি সব সময় যাবো নাকি। মাঝে মাঝে একটু না গেলে ভালো লাগে। এখন ছাদের সময়টা ভালো উপভোগ যাবে।
আমিঃ কিন্তু,,
রাকিবঃ কোন কিন্তু নেই আর তারা বুঝবে কি করে আমরা ছাদে গিয়েছি,,চল,,,
তারপর গেলাম ছাদে গিয়েই হা হয়ে গেলাম এতো সুন্দর করে সাজানো ছাদ। ফুল গাছে গেড়া নানা ধরনের ফুল ফুটে রয়েছে। এক পাশে একটা বড় দোলনা।ভালোই লাগলো ছাদে কিছুক্ষন থেকে চলে আসলাম আমরা।
রাকিবঃ এতো সুন্দর ফুল গাছ কে এসবের দেখা শোনা করে। সে যানি আরাও কত সুন্দর,।
আমিঃ বলব কি করে হয় তো বাড়িওয়ালির মেয়ে শুনেছি তার দুই ছেলে এক মেয়ে ছেলেরা নাকি এখানে থাকে না। সে আর তার মেয়ে থাকে, তাই হয়তো ছাদে যেতে নিষেধ করেছিল,,
রাকিবঃ যাই বলিস ভাই কাল সকালে আমি আবার ছাদে যাবো যা হবার হবে।
আমিঃ ভাই যাই করস বাসা জানি তোর কারনে না ছাড়তে হয়।
রাকিবঃ আর ধুর কিছু হবে না কাল সকালে।দেখিস কি হয়,,,(এই বলে একটা ফুল বের করে)
আমিঃ এই ফুল পেলি কোথা থেকে,,,
রাকিবঃ হাহাহা,,ছাদের গাছের থেকে নিয়েছি যদি ভালো তোর কথা সত্যি হয় তাহলে কাল সকালেই তাকে প্রোপোজ করবো এটা দিয়ে।।
আমিঃ ভাই দেখ ভাই এমন কিছু করিস না তাইলে আমরা শেষ।
রাকিবঃ আরে কিছু হবে না, সকালেই গুড নিউজ পেয়ে যাবি।
এতো মনে হয় বাসা পাল্টিয়েই ছারবে,,।
সকালে উঠে দেখি রাকিব নেই মনে হয় চলে গেছে,,আমি ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখি রাকিব হাজির । দেখে মনে হচ্ছে কিছু হয়েছে আমি গিয়ে জিজ্ঞেস করি,,,
আমিঃ কি হয়েছে তোকে এরকম দেখাচ্ছে কেন ।
রাকিবঃ কই কিছু না তো,,,
আমি ওর মুখ ধরে গাল এপাশ ওপাশ করে দেখি, ও আমার হাত সরিয়ে দেয়,,
আমিঃ তাহলে তোর গালে এসব কি,,,
দরজা কেন যে আমি গিয়ে দরজা খুলি, আর রাকিব আমাকে নিষিধ করে দরজা খুলতে আমি না শুনে দরজা খুলি।
আমিঃ হ্যা কাকে চাই,,(একটা মেয়ে)
মেয়েটাঃ আপনার নাম কি শিমুল,,
আমিঃ হুম,,,
মেয়েটাঃ আপনি ফুল ছিড়েছেন কেন রাতে,,,
আমিঃ আমি ফুল ছিড়েছি আপনাকে কে বলল। আর ছিড়লেই বা কি হয়েছে।
মেয়েটাঃ না ছিড়তে পারেন না, আর আপনাদের ছাদে যেতে কে বলেছে। আপনাদের ছাদে যেতে নিষেধ করা হয়েছে না,,। তারপর কেন গিয়েছিলেন, গিয়েছেন ঠিক আছে আমার গাছের ফুল ছিড়েছেন কেন,,
আমি কি বলব কিছু বুঝতে পারছি না পিছনে রাকিবের দিকে রাগিভাবে তাকিয়ে দেখি ও গালে হাত দিয়ে রেখেছে,,,এদিকে এমেয়ের যেই রাগ দেখাচ্ছে। কি বলব আর,,,
আমিঃ আসলে আমাদের ভুল হয়ে গেছে আর হবে না। আর ছাদে যাবো সরি না বুঝে হয়ে গেছে।
রাকিব আসে বলে, ” তুই সরি কেন বলছিস সরি তো এনার বলা উচিত একটু ছাদে উঠেছি বলে আমাকে চর মেরেছে ”
আমিঃ কি বলিস,,আপনি সামান্য ফুলের জন্য আমার বন্ধুকে মেরেছেন কেন,,
মেয়েটাঃ একে তো অপরাধ করেছে তার উপর আবার বড় গলায় কথা বলছেন,।দাড়ান আজকেই আপনাদের বাসা ছাড়ার ব্যবস্থা করছি।
আমিঃ যান আমরা বলব যে আপনি শুধু শুধু আমাদের নামে মিথ্যা কথা বলছেন,,
মেয়েটাঃ আমি মিথ্যা কথা বলছি,,ঠিক আছে আমি এখনি মাকে বলছি। আপনাদের যদি বাসা থেকে বের না করিয়েছি।
এই বলে চলে গেলো আমিও দরজা লাগিয়ে দেই। এবার কি হবে এই মেয়ে যদি সত্যি তার মায়ের কাছে গিয়ে বলে তাহলে তো শেষ এই সময় বাসা ছেড়ে দিলে বাসা পাবো কোথায়।
এই ভেবে রুমে যাই। গিয়ে দেখি রাকিব বসে ফোন টিপছে আমি গিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি,, দেখছি কি করছে। মেয়েটা যা বলে গেলো তা শুনে দেখি ওর একটুও কিছু যায় আসে না।
আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে রাকিব বলে,,,
রাকিবঃ কি হয়েছে তুই আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন,,
আমিঃ তুই সত্যি করে বল দি ঠিক কি হয়েছে। সামান্য ফুলের কারনে তো তোকে মারবে না। তুই নিশ্চয়ই কিছু করেছিস। কি করেছিস বল,,
রাকিবঃ কই আমি কিছু করিনি।
আমিঃ তুই বললেই হলো তুই কিছু করিস নি আমি নিশ্চিত তুই কিছু করেছিস। রাতে বললি যে তুই নাকি মেয়েকে প্রোপোজ করবি করেছিলি তাই না।
দেখি রাকিব মাথা নিচু করে বসে আছে, আমি ওকে বার বলার পর বলল,,
রাকিবঃ রাতে যেমন বলেছিলাম ওকে গিয়ে প্রোপোজ করব সেটা করতে গিয়েছিলাম। ছাদে গেছি, দেখি গাছে পানি দিচ্ছে, আমি গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলাম। ভালোই যাচ্ছিলো আমার নাম বলাম কতালায় থাকি সেটাও বললাম,,ভালোই চলছিলো,,
আমিঃ তারপর,,
রাকিবঃ যখনি ফুলটা বের করে ওর সামনে ধরি, সাথে সাথে,,,,
আমিঃ হাহাহহাহা,,,,তারপর কি বলল,,
রাকিবঃ তারপর আর কি বলে, “আমার গাছের ফুল ছিরে আবার আমাকে প্রোপোজ করোছ।” তখন কি করবো ভয়ে তোর নাম বলে দেই যে তুই ফুল রাতে ছিড়েছিস,,। তোর নাম বলতেই চিনে ফেলেছে মেয়ে, তোকে মনে হয় ফলো করে।
আমিঃ সালা আকাম করে এখন আবার আমাকে ফুলানো হচ্ছে চলেন,।
রাকিবঃ কোথায় যাবো তুই যা আমার ভালো লাগছে না,,
আমিঃ ভালো লাগছেনা না ভেজাল করার সময় তো ঠিকি করেছিলেন এখন চলেন বাসা খুজতে হবে। বের করে দিলে কোথায় যাবেন,,
রাকিবঃ আরে যখন বের করবে তখন দেখা যাবে,,,আর তুই অফিস যাবি না,,
আমিঃ অফিস যাবো না,,
রাকিবঃ কিন্তু কেন,, অফিসে যানিয়েছিস যাবিনা।
আমিঃ নাহ,,দাড়া রাইসাকে ফোন করি,,
রাকিবঃ রাইসাকে,,,, ( রাকিব উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো,,)
আমিঃ তোর আবার কি হলো,,নাম্বার লাগবে,,
রাকিবঃ আমি কি চেয়েছি নাকি,,প্লিজ ভাই নাম্বাটা দে না,,,
আমি হাসি দিয়ে ফোন কানে নিয়ে চলে গেলাম, আর রাকিব আমার পিছনে পিছনে ঘুরছে নাম্বারের জন্য।
রাইসা ফোন রিসিভ করলে ওকে বলি আমি আজ অফিসে আসবো না। যদি নিলিমা জিজ্ঞেস করে কেন তাহলে বলবে আমি অসুস্থ তাই আসতে পারিনি।
কথা বলে ফোন রাইসা কেটে দেয় আমি একটু রাকিবের সাথে মজা করার জন্য মিথ্যা কথা বলি।
আমিঃ রাইসা রাকিব তোর নাম্বার চায় কি করবো দেবো,। হুম,কি বলিস দেবো না কেন। দেখ রাকিব তোকে পছন্দ করে।
রাকিব আমার দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে,
আমিঃ কি বলিস না ও ওরকম ছেলেই না তুই ভুল ভাবছিস। রাকিব অনেক ভদ্র একটা পোলা। (রাকিব দেখি কি খুসি হয়েছে ভদ্র বলছি দেখে যদি জানতে পারে আমি মিথ্যা মিথ্যা ফোনে কথা বলেছি)
এরি মধ্যে আমার ফোন বেজে উঠল রাকিব আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি আর কিছু না বলে দিলাম এক দৌড় রাকিব আমার পিছনে পিছনে আমাকে ধাওয়া দিলো,,,
,,,৷
অফিসে রাইসা নিলিমাকে বলেছে যে আমি অসুস্থ। নিলিমা শুনে রাইসাকে বলে অফিসে থাকতে। নিলিমা বেরিয়ে এলেন অফিস থেকে।
আমি আর রাকিব দুজনেই বাসায়,,,,
রাকিবঃ আজকে যেহেতু দুজনেই বাসায় চল আজকে ভালো কিছু রান্না করে খাওয়া যাক,,
আমিঃ কে রান্না করবে তুই,,, বাসায় বাজার নেই,, ওখন আবার বাজার করবে কে তার থেকে বাইরে খাওয়াই ঠিক হবে।
রাকিবঃ না হোটেলে খেতে খেতে আর ভালো লাগে না চল বাজার করে এনে রান্না করেই খাওয়া যাক,,,।
তারপর আমি আর রাকিব চলে গেলাম বাজারে কিছু কিনে আনতে,,, এদিকে নিলিমা আমাদের বাসায় এসে দরজা সামনে দারিয়ে আছে। অনেক ক্ষন হলো সে দাড়িয়ে আছে বাসায় তালা লাগানো রয়েছে। আমাকে ফোন করছে আমি ফোটা উঠাচ্ছি না , কিনা কি বলেন আবার সেই ভয়ে।
আমরা থাকি ৩ তলায়, উপর থেকে একটা ছেলে এসে তাকে বলে,,,
ছেলেটিঃ আপনি কার কাছে এসেছেন,,,,
নিলিমাঃ শিমুল এই বাসায় যে থাকে তার কাছে।
ছেলেটিঃ তা কি হয়েছে দরজা খুলছে না নাকি।
নিলিমাঃ সেই কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছি, দরজায় তালা দেয়া, ফোন করছি তাও ধরছেনা।
ছেলেটিঃ তাহলে মনে হয় ফোন বাসায় রেখে বাইরে গেছে।
নিলিমাঃ কিন্তু ওতো অসুস্থ বলে আজ অফিস বন্ধ দিয়েছে, তাহলে বাইরে কি করে যাবে।
ছেলেটিঃ হয় তো কোন কাজে বাইরে গিয়েছে
আপনি এক কাজ করুন আমার বাসায় চলুন,,,।
নিলিমাঃ আমি আপনাকে চিনিনা যানিনা আপনার বাসায় কেন যাবো,,
ছেলেটীঃ আরে ভয়ের কিছু নেই আমি এবাড়ির মালিকের মেজোছেলে না রাজিব,। চলুন যতক্ষন না আসছে তক্ষন না হয় আমার বাসায় গেস্ট হিসেবে থেকেন চলুন,,,
নিলিমা কিছু একটা ভেবে তার সাথে চলে গেলো,,
রাজিবঃ আপনার নামটা কিন্তু এখনো জানা হলো না,,,?
নিলিমাঃ আপনি আমার নাম জেনে কি করবেন,।
রাজিবঃ আমি যদি আপনার নাম না জানি তাহলে বাসার লোক জিজ্ঞেস করলে কি বলব,সেই জন্য আর কি আপনার নামটা যানতে চাইলাম,,
নিলিমাঃ নিলিমা,,,
রাজিবঃ শিমুল কি হয় আপনার,,,?
নিলিমাঃ আপনি এতো কিছু দিয়ে কি করবেন,,,
তাদের বাসার দরজা সামনে এসে কলিং বেল বাজিয়ে বলেন,,
রাজিবঃ এমনি যদি না বলতে চান তো বলতে হবে না।
নিলিমাঃ আমার অফিসে চাকরি করে।
এরি মধ্যে দরজা খুলে দিলো,,,,
রাজিবঃ এতোক্ষন লাগে নাকি দরজা খুলতে,,এই হলো আমার ছোট বোন তামান্না( নিলিমাকে বলেছে) তামান্না এনাকে ভিতরে নিয়ে যা৷
তামান্নাঃ আসুন ভিতরে আসুন,,,
নিলিমা ভিতরে চলে গেলো,,,
তামান্না ফিস ফিস করে জিজ্ঞেস করে,,
তামান্নাঃ মেয়েটা কে ভাইয়া,,,
রাজিবঃ ওর নাম নিলিমা নিজের ভারাটের বাসায় এসেছিলো তারাকেউ বাসায় নেই। দেখলাম দাঁড়িয়ে রয়েছে তাই আমাদের বাসায় নিয়ে আসলাম,,( ভিতরে যেতে যেতে বললো)
তামান্নাঃ এর জন্য নাকি কাহিনি অন্য কিছু ভাইয়া.।
রাজিবঃ চুপ আসতে সুনে ফেলবে তো।
,,,,,চলবে,,,,,,,,