#গ্রামের_ছেলেটি
পর্ব-৭ম
স্বপন
নিলিমাঃ তোমার ছোট বেলার কথা শুনে মনে হচ্ছে এ জিবনে অনেক কিছু মিস করেছি,,যা তুমি উপভোগ করেছো,,,
আমিঃ তোমার ছোট বেলার কথা বলো শুনি।
নিলিমাঃ ছোট বেলায় মাকে হারিয়ে নিজেকে খুব একা একা লাগে। বাবা সারাদিন ব্যবসায়ী কাজে বাইরে থাকতেন। কাজের লোক শুধু সারা ক্ষন এই সমস্যা ওই সমস্যা। আমাকে দেখতেই পারতো না,। আমি যদি বলতাম আমি যদি কোন একটা খাবারের কথা বললে তাহলেই শুরু হয়েছে তার গ্যান গ্যান। সেখান থেকেই আমি আসতে আসতে নিজের অজান্তেই গরিবের উপর একটা রাগ চলে আসে। আমাকে তো আর কেউ ছিলো না যে বুঝাবে, না কেউ ছিল বাহিরে ঘুরতে নিয়ে যাবে,,না ছিলো খেলার সাথি। একা একা এই চার দেয়ালের মধ্যে নিজেকে কেমন যে খাচায় বন্ধি পাখির মত লাগতে শুরু করে। তারপর স্কুলে যাওয়া শুরু করে দেই ,সেখানে ভালোই লাগে অনেক খেলার সাথি পেলাম। আসতে আসতে বাড়ি থেকে বাইরেই ভালো লাগতে শুরু করে। লেট নাইট পার্টি করা ড্রিংক করা এসবের একপ্রকার নেশা হয়ে যায়। বাবার টাকা থাকায় আমার খুব সহজেই অনেক বন্ধু মিলে যায়। সবাই তার চাহিদা পুরোন করার জন্য আমার সাথে বন্ধুত্ব করে বুঝতে পারলেও কখনো কাউকে কিছু বলি নি। কিন্তু সবাই তার সার্থর জন্য আমার সাথে বন্ধুত্ব করে, সার্থ পুরোন হয়েছে তো বন্ধুত্বও শেষ। তাই এইসব মানুষের উপর একপ্রকার ঘৃণার সৃষ্টি হয়।
এইবলে থেমে যায়।
আমিঃ দেখো কিছু মানুষের জন্য তো আর সব মানুষ খারাপ হতে পারে না। হয় তো তোমার এই ঘৃণার কারণে যারা তোমার ভালো চেয়েছে তাদের কেউ দূরে রেখেছ।
নিলিমাঃ হয় তো,,,,
আমরা কথা বলছি আর হাটতেছি,
পরেদিন অফিসে গেলাম,,অফিসে কাজ করতেছি। ম্যাডাম আমাকে পিওনকে দিয়ে আমাকে ডাক দিলেন,,,
আমিঃ ম্যাডাম আসতে পারি,,
ম্যাডামঃ হুম আসুন,,,,
আমিঃ জি ম্যাডাম,,,,
ম্যাডামঃ আপনি এটা কি করেছেন,,(আমার কাছে একটা ফাইল দিয়ে বলে,)
আমিঃ কেন ম্যাম সব তো ঠিক আছে,, তাহলে সমস্যা কোথায়,,।(আমি ফাইলটা দেখে বলি)
ম্যাডামঃ আপনি এগ্রিমেন্ট এর কন্ডিশন গুলো ভালো ভাবে চেক করেছে। এখানে যে কন্ডিশন দেয়া আছে পরে গিয়ে তো আমার কোম্পানির বিরাট বড় ক্ষতির মধ্যে পরতে হবে।
আমিঃ কিন্তু ম্যাম,,, (আমাকে আর বলতে না দিয়ে)
ম্যাডামঃ দেখুন কোম্পানির কোনও প্রকার ক্ষতি আমি সহ্য করবো না।😠😠
এভাবে অনেক কিছু বলতে থাকি আমি শুধু শুনেই যাচ্ছি। রাইসা আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আমি ওর দিকে তাকাতেই চোখ সরিয়ে নেই। নিজের কাছে অনেক লজ্জাজনক মনে হচ্ছে।
আমিঃ সরি ম্যাম আর ভুল হবে না, আমি একক্ষনি ঠিক করে নিয়ে আসতেছি।
ম্যাডামঃ কিভাবে করবেন,, হুম আর আজ যে মিটিং আছে সেটা। আপনি যান আমিই দেখছি কি করা যায়।
রাইসা আমাকে ইসারায় কি যেন বলছে,
আমিও ইসারায় বলি কিছু বুঝতে পারছি না। ম্যাডাম আমার দিকে তাকিয়ে বলে,,,
ম্যাডামঃ কি হয়েছে এরকম করছেন কেন,,,,আপনাকে না যেতে বললাম।
আমিঃ কিছু না, যাচ্ছি।
আমি বের হয়ে এলাম।
একদিন আমি বসে কাজ করছি আর এরি মধ্যে রাইসা আমার কাছে চলে আসে,,,
রাইসাঃ অই কি করছি,,ব্যস্ত নাকি,,।
আমিঃ হুম তোর মতো তো ম্যাডামের পিছু ঘুরা না এটা কাজ।
রাইসাঃ আমি শুধু ঘুরি কাজ করি না,( আমার ডেক্সের উপর বসে আমার দিকে তাকিয়ে বলে)
আমিও কাজ বন্ধ করে ওর সাথে কথা বলতে থাকি।
আমিঃ তুই এখানে ম্যাডাম কোথায়,,
রাইসাঃ ম্যাডাম একটু বাইরে গেছে আমাকে বললো যাওয়া লাগবে না। একাই যাবে কার সাথে নাকি দেখা করতে যাবে।
আমিঃ কি ম্যাডাম তোকে বলেছে একথা,,
রাইসাঃ না, ফোনে বলছিলো তাই শুনে মনে হলো।
ও আমার মাথার চুল ধরে ঠিক করে দিচ্ছিলো আর কথা বলছিলাম আমরা। এরি মধ্যে ম্যাডাম চলে আসে,,,রাইসা দেখে তারাতাড়ি করে চলে গেলো,, ম্যাডামের পিছনে,,,মাসুদ সাহেব বলে উঠলো,,,
মাসুদঃ শিমুল সাহেব আজকে মনে হয় এর চাকরি গেছে।
আমিঃ কেন,, চাকরি যাবে কেন কি করেছি আমরা ওর কাজ নেই তাই আমার এখানে এসেছে । এতে চাকরি যাবার মতো কিছু দেখছি না।
,,,,
ম্যাডানঃ কি করছিলে তোমরা দুজনে হুম। এটাকি প্রেম করার জায়গা, অফিস কি এসব করতে আসো। তাহলে আর কাল থেকে আসতে হবে না।😠😠
রাইসাঃ সরি ম্যাডাম আসলে,,😢😢(কথা বলতে না দিয়ে,। তার সামনে থেকে চলে যেতে বলল,,)
রাইসা চলে এলো আমি ওর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করি কি হয়েছে, কোন উত্তর দিলো না। বিশ্রামের রুমে চলে গেলো আমিও গেলাম ওর কাছে। সোফায় বসে আছে আমি গিয়েকে জিজ্ঞেস করি কি হয়েছে। কিছু বলছে না শুধুই কান্না করে যাচ্ছে।
রাইসাঃ কিছু হয় নি তুই এখান থেকে যা তা না হলে সমস্যা হবে,,😭😭
আমিঃ কি বলছিস,,ম্যাডাম কি বলল আমি না শুন যাচ্ছি না।
তারপর আমাকে সবকিছু বলে,,আমি বলি,,,
আমিঃ কি বলছিস তুই এখানে থাক আমি আসছি,,,
ওই বলে উঠে আসতে যাবো তখনি রাইসা আমার হাত ধরে বলে,,,
রাইসাঃ না তুই এখন যাস না দেখা গেলো সব রাগ তো উপর দেখাবে।শুধু শুধু তুই ঝামেলায় জড়াইস না।
আমিঃ ঠিক আছে আগে তুই কান্না থামা বলছি।
রাইসাঃ থামাতে পারি যদি আজকে তুই আমাকে ডিনার করাছ আর সেটা তুই রান্না করে,।
আমিঃ আমি রান্না করে তোকে খাওয়াবো তুই কান্নাই করতে থাক আমি যাই,,😀😀
রাইসাঃ এই দাড়া শয়তান,,,,,
আমরা এসে দেখি ম্যাডাম চলে গেছেন। আমরা এসে জিজ্ঞেস করি যে আমাদের কারো কথা কিছু বলেছে কি না। সবাই বলে না।
তাই আমরা আর কিছু না ভেবে কাজে লেগে পরলাম,,,
অফিস শেষে বাসায় যাবার সময় আমি রাইসাকে ডাক দিয়ে। রাইসাকে আমার রিকশা নিয়ে যাই। আমাকে বলে ওকে নিয়ে ঘুরতে যেতে আমিও রাজি হয়ে যাই।
রাইসাঃ তাহলে কোথায় যাবো আমরা এখন।
আমিঃ চল আজ শহরটা দেখা যাক,,,,
আমরা দুজনে রিকশা করে ঘুরে বেড়ালাম। রাইসা আইসক্রিম খেতে চাইলে আমরা গিয়ে দুইজনে দুইটা আইসক্রিম নিলাম। আইসক্রিম খাচ্ছি আর হাটতেছি, তখন রাইসা বলে উঠলো,,
রাইসাঃ আন্টির কেমন আছেরে আর সুমা
আমিঃ ভালোই আছে তারা।
রাইসাঃ আচ্ছা তোর কোন গাল্ফ্রেন্ড নেই।
আমিঃ কেন,,,
রাইসাঃ নাহ,,,
রাইসাঃ শিমুল তুই কি কখনো কাউকে ভালোবেসেছিস।
আমিঃ হুম বেসেছিলাম একজনকে।
রাইসাঃ কাকে, কখন, কবে, তাকে কি বলেছিলি তোর মনের কথা,।
আমিঃ আসতে আসতে। সব প্রশ্ন একসাথে করলে উত্তর দিবো কি করে,। মেয়েটা এক ধনির দুলালিছিলো টাকা আর রুপের অনেক অহংকার ছিলো। আমি ছিলাম গরিব গায়ে তখন ময়লা জামা কাপড়, পায়ে ছিলো ছেড়া জুতা পট্টি দেয়া। এই দুই কখনো মিল খায় না। সেটা তখন বুঝেছি, কিন্তু আমি বুঝলেও আমার এই মনটা বুঝেনাই।
,,,,,,চলবে,,,,,,
বিঃ দ্রঃ লেখায় কোন ভুল থাকলে ক্ষমা করে দেবেন 🙏🙏🙏🙏🙏