সুখের_নেশায় #পর্ব___১৬

0
812

#সুখের_নেশায়
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব___১৬

চৈত্রিকা চমকে উঠে নিজের হাতের দিকে তাকাল। সাফারাতের হাতের বাঁধনে আঁটকে আছে হাত টা। চোখের সামনে চকচক করছে স্বর্ণের আংটি। চৈত্রিকা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। সাফারাতের বাহুতে বন্দী শরীর টা ক্ষীণ কাঁপছে তার। সাফারাত কি করে জানল সে এখন অন্য কারো বাগদত্তা? এই আংটি টা দেখেই কি?আর এতো অনায়সে মনের কথা কি করে পড়ে নিল মানুষ টা?কি করে বুঝল চৈত্রিকার কান্নার কারণ?কত সহজে পূরণ করে দিল অসমাপ্ত বাক্য, না বলা কথাটুকু। আঙ্গুলে শোভাময় আংটি টার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সাফারাত ল্যাম্পপোস্টের নিয়ন হলদে রশ্মিতে। চৈত্রিকা সেদিকে চেয়ে ধরা গলায় বললো,
” হুট করে হয়ে গেছে। কাউকে জানানোর সুযোগ হয় নি। ”
” আমি তো তা জানতে চাই নি চৈত্র। আমি শুধু জানতে চাই আপনি কেন অন্যকারো বাগদত্তা হলেন?”
কি চাপা রাগ,ক্রোধ সাফারাতের কন্ঠে! চৈত্রিকার বুক টা কেঁপে উঠল। পেশিগুলো কঠিন হয়ে উঠেছে সাফারাতের। এহেন ক্রোধান্বিত রূপে চৈত্রিকার গলা শুকিয়ে এলো। অন্য কারো বাগদত্তা হয়েছে বলেই কি সাফারাতের এতো রাগ!চৈত্রিকার মাথা ভো ভো করছে। হুট করে খেয়াল করে আংটি টা টেনে আঙ্গুল থেকে খুলে ফেলছে সাফারাত। চৈত্রিকা ভড়কে যাওয়া কন্ঠে বলে উঠল,
” কি করছেন এসব?”
সাফারাত আন্টি টা হাতের মুঠোয় ধরিয়ে দিল। চৈত্রিকাকে নিজের সাথে চেপে ধরল শক্ত করে।
” এটা ফিরত দিয়ে দিবেন। ”
একটুখানি পিছিয়ে গেল চৈত্রিকা। অবাক স্বরে জিজ্ঞেস করে,
” মানে?”
” একদম ইজি। আপনি করছেন না বিয়েটা। ”
চৈত্রিকা বিস্ফোরিত দৃষ্টি নিক্ষেপ করল সঙ্গে সঙ্গে। ঠোঁট দুটো নড়ে উঠল অস্ফুট,
” কি বলছেন আপনি?”

মৃদু মৃদু বাতাসে চৈত্রিকার চুল উড়ে এসে কপালে পড়ছে। পুরো স্থান জুড়ে নিরবতা। সাফারাত হাত বাড়িয়ে চুলগুলো কানের পিঠে গুঁজে দিল। গভীর, স্থির চাহনি তার সামনে উপস্থিত নারীর মুখপানে। হাত বাড়িয়ে আলতো করে কাছে টেনে নিল ক্ষীণ। কপালে উষ্ণ এক পরশ ছুঁয়ে দিতেই থরথর করে কেঁপে উঠল নরম,কোমল দেহখানি। হয়ত আকস্মিক ধাক্কা, ভালোবাসাময় পরশ সামলাতে ব্যর্থ সে। সাফারাত অত্যন্ত শান্ত কন্ঠে কিন্তু মাদকতা নিয়ে বললো,
” আপনি আমার সুখ চৈত্র। নিজের সুখ কে কি করে অন্যকে দিয়ে দেই? ”

ভালোবাসা,প্রণয়,অনুরাগ। এগুলো প্রকাশ করতে মুখে ‘ ভালোবাসি ‘ শব্দটা বলা কি অধিক জরুরি? না একদমই প্রয়োজন নেই। ‘ আপনি আমার সুখ চৈত্র ‘ এই নেশার্ত বাক্য ‘ ভালোবাসি’ বলার চেয়েও অধিক ভালোবাসাময়। যেই ভালোবাসার কাঙ্গাল চৈত্রিকা তা যেন আজ তার আঁজলা তে ধরা দিয়েছে। মুঠো পুড়ে আঁকড়ে নিতে ইচ্ছে করছে চৈত্রিকার। চোখের কার্নিশ বেয়ে গড়িয়ে গেল এক ফোঁটা নোনতা,তপ্ত জল। বহু প্রতিক্ষার পর সুখ যেন স্বয়ং হেঁটে এসে তার দুয়ারে কড়া নাড়ছে।

চৈত্রিকা লোভী হয়ে উঠল। পারল না ফিরিয়ে দিতে। সাফারাতের বুকে লাফিয়ে পড়ল, আছড়ে পড়ল সমুদ্রের ঢেউয়ের মতোন। গলা জড়িয়ে ধরে চুপ করে রইল কিয়ৎক্ষণ,কয়েক মুহুর্ত। শূণ্যে অনুভব করল নিজের দেহটাকে। কোমড় আঁকড়ে ধরে সাফারাত চৈত্রিকার শরীরটাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল। ঠোঁট দুটো ছুঁয়ে দিল চৈত্রিকার গাল,কপাল,চিবুক। এ যেন বহু দিনের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে সাফারাত। লজ্জায় মিইয়ে গেল চৈত্রিকা শক্ত বুকের মাঝে। সাফারাতের গায়ের মন মাতাল করে তোলা গন্ধ তার নাসারন্ধ্রে প্রবেশ করছে হুড়মুড়িয়ে। নেশা লেগে আসছে। অতীব প্রখর নেশা। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাফারাতের বুকে আঁকড়ে ধরল হাত। তখনই কোমরে রাখা বলিষ্ঠ হাত শক্ত হয়ে এলো। চৈত্রিকার মনে হচ্ছে কোনো এক গভীর স্বপ্নে ডুবে আছে সে। বঞ্চিত হতে চাই না সে এই বুকের উম থেকে। মনে মনে প্রার্থনা করে স্বপ্ন যেন ভেঙে না যায়। তার প্রার্থনা বোধ হয় কবুল হলো না। ব্যাগে অবস্থান করা মোবাইল টা বেজে উঠল। অসহ্য শব্দ ছড়িয়ে দেয় শব্দহীন পরিবেশে। কল্পনা থেকে যেন জাগতিক বাস্তবতায় ফিরে আসে চৈত্রিকা। সাফারাতের বুকের উষ্ণতা, পরম সুখ ত্যাগ করে ঝটপট ছিটকে সরে যায়। মোবাইল বের করে কানে দিতেই অপরপাশ থেকে ভেসে এলো ফাহমিদার কর্কশ,রাগমিশ্রিত কন্ঠস্বর।

” কোথায় তুই? এখনও আসছিস না কেন?তাহাফ এসেছে। তোর জন্য অপেক্ষা করছে। তোর কি আসতে দেরি হবে?তাহাফ বলছে ও গিয়ে আনবে তোকে। ”
” না। কোনো দরকার নেই। আসছি আমি। ”
চৈত্রিকার কন্ঠ কঠিন হলো। ফোন রেখে সাফারাতের দিকে তাকিয়ে উত্তেজিত সুরে বললো,
” আমার যেতে হবে সাফারাত। ”

মৌন মুখে গাড়ির দরজা মেলে দিয়ে চৈত্রিকাকে বসতে ইশারা করে সাফারাত। চৈত্রিকা বসলো না। নিস্তব্ধ,নিরব এই রাস্তায় সাফারাতের খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি যুক্ত ফর্সা গালে ওষ্ঠের প্রলেপ এঁকে দিল সাহস জুগিয়ে। নিম্নস্বরে বললো,

” আজ সন্ধ্যে বেলায় আপনার অধরযুগলের স্পর্শ আমার গালে পড়েছিল। তখন উপলব্ধি করতে না পারলেও এখন স্পর্শটুকু পরিচিত হয়ে গেল। ”

আজ গাড়িতে গালের সেই উষ্ণ আর্দ্র ছোঁয়াটা ছিল সাফারাতের যা এখন বুঝতে পারে চৈত্রিকা। লজ্জায় তার মুখ আরক্ত হয়ে গেল কথাটা বলে। ঠোঁট দুটো হালকা প্রসারিত হলো সাফারাতের। বললো,

” বাহ্!খুব ইনটেলিজেন্ট তো আপনি। ”

সাফারাত কি পরিহাস করল চৈত্রিকা কে নিয়ে?কথায় তো এমনই ঠেকল। চৈত্রিকা লজ্জা অনুভব করল। রক্তিম আভায় সিক্ত মুখখানা লুকিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসল। সাফারাতও বিনা শব্দে গাড়ি ড্রাইভ করতে শুরু করে।
_________________

গাড়ি থেমে গেছে চৈত্রিকাদের বাসা থেকে কিছু দূরে। চৈত্রিকাই জোর করে এখানে থামিয়েছে, পাছে যদি কেউ দেখে ফেলে সেই ভয়ে। দারোয়ান দেখলেই তো পুরো বিল্ডিংয়ে রটিয়ে ফেলবে। তখন কি করে বাবা-মা’র সামনে মুখ দেখাবে চৈত্রিকা?তাছাড়া বাবা?বাবা তো এখনও ক্ষমা করে নি তাকে। ভালোবেসে মাথায় হাত রাখে নি এখনো। আজ চৈত্রিকা ভালোবাসার মানুষ পেল। বাবার ভালোবাসাও কি পেয়ে যাবে এমন করে হুট করে, অপ্রত্যাশিত ভাবে!সকল ভাবনা দূরে ঠেলে গাড়ির দরজা মেলতে গিয়ে দেখল লক করা। সাফারাত লক করেছে কি?ঘাড় ঘুরিয়ে ছোট্ট করে উচ্চারণ করল–” খুলে দেন। ”

সাফারাত চোখ বুঁজে সিটে মাথা এলিয়ে রেখেছে। মুখে বিরক্তি ভাব। চোয়াল শক্ত। আকস্মিক এমন করার কারণ ধরতে পারছে না চৈত্রিকা। অস্ফুটস্বরে প্রশ্ন করে–” খুলবেন না?”

চোখ মেলে চাইল সাফারাত। মায়াবী গড়নের মেয়েটাকে একদম ছাড়তে ইচ্ছে করছে না তার। মেয়েটার সামান্য ঠোঁটের ছোঁয়ায় তার ভিতরটায় তোলপাড় হচ্ছে সেই কখন থেকে। বুকের যন্ত্রণা লুকিয়ে চৈত্রিকা কে কাছে টেনে গাঢ় একটা চুমু খেল কপালে। বেশ তৃপ্তি নিয়ে। আবেগে চোখ বুঁজল চৈত্রিকা।
গাড়ির দরজা মেলে দিতেই নেমে পড়ল মন্থরগতিতে। কয়েক মুহুর্ত আগেই তো হলো দু’জনের প্রণয়ের সূচনা,আরম্ভ। অথচ সামান্য দূরত্ব যেন দু’জনকে পুড়িয়ে ছাড়খাড় করে দিচ্ছে। এর থেকে অপ্রকাশিত সম্পর্ক, বন্ধুত্বই যেন ঢেড় ভালো ছিল। চৈত্রিকা একবার পিছনে তাকিয়ে দেখল সাফারাত চেয়ে আছে নির্নিমেষ দৃষ্টি ফেলে। সময় কতকিছু বদলে দেয়। আজ থেকে বন্ধুত্বর সম্পর্ক পেরিয়ে নতুন এক সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে গেল দু’জন। কিন্তু নামছাড়া সেই সম্পর্ক।
.
.
সিঁড়ি অতিক্রম করে উপরে উঠে দরজা অবধি আসতেই চৈত্রিকার হাত টা চেপে ধরল কেউ। কিছু বুঝে উঠার আগেই টেনে হিঁচড়ে ছাদে নিয়ে এলো। ঘৃণায় রি রি করে উঠল চৈত্রিকার সমগ্র দেহ,অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। চাপা আত্মস্বরে চিৎকার করে উঠল,

” আপনার সাহস হলো কি করে আমাকে এভাবে টেনে হিঁচড়ে আনার?”

” আর তোর?তোর সাহস হয় কি করে আমার বাগদত্তা হয়ে অন্য একটা ছেলের গাড়ি করে আসার?তার সাথে মেলামেশা করার? রাস্তায় না গেলে তো দেখতেই পেতাম না তোর রূপ। ”

চমকিত নয়নে তাকাল চৈত্রিকা তাহাফের মুখের দিকে। হুট করে তাহাফের কথাগুলো তার মস্তিষ্ক তরঙ্গ হতেই জ্বলতে শুরু করল ভেতর। কারো বাগদত্তা হওয়ার আগে সে একজন মানুষ। তার নিজস্ব মতামত,স্বাধীনতা আছে। কন্ঠস্বর যথেষ্ট ঠান্ডা রেখে বললো,

” আপনি আমাকে এভাবে বলতে পারেন না তাহাফ ভাই। ছাড়ুন আমাকে। বাসায় যাবো। ”

তাহাফের মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেল। প্রচন্ড জোরে চেপে ধরল চৈত্রিকাকে দেয়ালের সাথে। ব্যাথায় চৈত্রিকার মুখের ভাব করুন হলো। তাহাফ থেকে যত ছুটতে চেষ্টা করছে ততই যেন চেপে ধরছে সে। চৈত্রিকা কাঁদতে গিয়েও কাঁদল না। মুহুর্তেই চোখ মুখে অগ্নিশিখার ন্যায় জ্বলে উঠল। তাহাফ কে সরিয়ে সপাটে এক চড় বসিয়ে দিল গালে। তাহাফের চক্ষু হতে আগুনের ফুলকি ঝরছে। তার পুরুষালী অহংকারে যেন আ*ঘাত হেনেছে সহজ সরল মোমের মতো মেয়েটা। চৈত্রিকার হাত টা পিছনে নিয়ে মুচড়ে ধরল। ব্যাথায় ককিয়ে উঠে সে। তাহাফ দাঁতে দাঁত পিষে বলে উঠল,

” তোকে অনেক ছাড় দিয়েছি। প্রথম যেদিন তুই আমাকে প্রত্যাখান করেছিস সেদিনই ঠিক করে নিয়েছিলাম তোকে আমার করেই ছাড়ব আমি। তোর ফর্সা, নরম দেহে শুধু আমার স্পর্শ থাকবে। তোর মন বুঝার অহেতুক সময় আমার নাই। তোর সৌন্দর্যর প্রতিই আমি আকৃষ্ট। এটাই আমার ভালোবাসা। ”

মানুষ এতো নিকৃষ্ট হয়!চৈত্রিকার দমবন্ধ হয়ে আসছে তাহাফের নোংরা বাক্যে। তাহাফ মুখ এগিয়ে এনে গলায় ছোঁয়াতেই মনে হলো কেউ তার শরীরে কলংক লেপে দিয়েছে। না পেরে ভয়ংকর এক কাজ করে বসল চৈত্রিকা। হাঁটু দিয়ে আ*ঘাত করল পুরুষাঙ্গ বরাবর। সাথে সাথেই ছেড়ে দিয়ে সরে যায় তাহাফ। চৈত্রিকা এক দলা থুতু ফেলল ছাদের মেঝেতে। আঙ্গুল উঁচিয়ে রাগান্বিত, কম্পয়ান গলায় বললো,

” তোর মতো জানোয়ার খুন করতেও হাত কাঁপবে না আমার। ”

চৈত্রিকা উদভ্রান্তের মতো ছুটে এসে ঘরে ঢুকে সরাসরি রুমে চলে এল। দরজা বন্ধ করে ঠেস দিয়ে রইল। ঠিক কতক্ষণ তার হিসেব নেই। ঘন ঘন শ্বাস ফেলে সামনে তাকাতেই বিব্রত হয়ে পড়ে। মিম ভ্রুঁ কুঁচকে, কপালে চিন্তার ভাজ ফেলে তাকিয়ে আছে নিষ্পলক। চৈত্রিকা চক্ষু মেলতেই হন্য হয়ে এগিয়ে আসল। কন্ঠে প্রবল উৎকন্ঠা,

” কি হয়েছে আপু?”
” কই কিছু হয়নি তো। ”
” তাহলে এভাবে এলে কেন?এতো ঘাবড়ে আছো কেন?”

চৈত্রিকা নিজেকে ধাতস্থ করে বললো–” ক্লান্ত লাগছে। আমি একটু রেস্ট নিব মিমু। তুই যা এখন। ”
তৎক্ষনাৎ ফুলদানিতে নজর যেতেই জিজ্ঞেস করল,

” নতুন জারবেরা কে এনেছে?”
” তাহাফ ভাই এনেছে আপু। ”
এটুকু বলে থেমে মিম আবার বললো,
” আপু আমার মনে হয় তাহাফ ভাইয়া-ই সে ব্যক্তি যে বিগত কয়েকদিন ধরে তোমায় ফুল দিয়ে যাচ্ছে। ”

কথাগুলো বলে মিম চলে গেল। চৈত্রিকা ফুলগুলো হাতে তুলে তীব্র ঘৃণা নিয়ে ছুড়ে মারল জানালা দিয়ে। কোনো অসভ্য ব্যক্তির দেওয়া জিনিস থাকতে পারবে না এখানে। মিমের কথাগুলোও ফেলে দেবার নই। তাহাফ ছুটিতে এসেছে প্রায় অনেকদিন হয়ে গেছে। ঠিক তার আসার পর থেকেই আড়ালে কেউ সারাক্ষণ চৈত্রিকার উপর নজর রেখে যাচ্ছে। ফুল দিচ্ছে, বাবার চিকিৎসার টাকা দিচ্ছে,কেয়ার করছে। কিন্তু তা যে কোনোভাবে মিলে না তাহাফের ব্যক্তিত্বের সাথে। হয়ত সমীকরণ মিলেও যায়। চৈত্রিকা শুকনো জারবেরা গুলো ছুঁয়ে বিড়বিড় করে,

” এই ব্যক্তি কখনও হতে পারে না, যার কাছে ভালোবাসা কেবলই শারীরিক চাহিদা। ”

#চলবে,,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here