#তোমাতেই পূর্ণ আমি
#বোনাস পার্ট
#লেখিকাঃআসরিফা সুলতানা জেবা
প্লিজ আমায় একটু সময় দেন আভাস।বিয়েটা এতো তাড়াহুড়োয় হয়েছে আমার একটু সময় প্রয়োজন প্লিজ। একটু সময় দেন।শয়তানি হাসি হাসল আভাস।চোখের পলকেই আমায় চেপে ধরল দেয়ালের সাথে।নিজের শক্ত হাত দুটো চেপে ধরল আমার বাহুতে।ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠলাম।বাহু দুটো আরো জোরে শক্ত করে মুখে কঠিন ভাব এনে বলল,,,,
–কেন বিয়ে তো বসেছিস টাকা আর দেহের চাহিদা মিটানোর জন্য। তো সময় কেন প্রয়োজন তোর?আমার সহজ সরল মাকে ফাঁসিয়ে বিয়ে করেছিস আর এখন নিজেকে সতী নারী প্রমাণ করতে চাইছিস?তোর সতীত্ব এখন ধুলোয় মিশিয়ে দিব আমি।
কথাটা বলেই আভাস ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিল আমায়।ভয়ে আঁতকে উঠলাম আমি।কাঁদতে কাঁদতে বললাম,,,
—প্লিজ আভাস সময় দেন।জোর করে কিছু হয় না।জোর করবেন না প্লিজ।মাতাল আপনি।আমায় ছেড়ে দিন দয়া করে।আমি তো আপনার বউ।এমন করবেন না দয়া করে।
কোনো আকুতি মিনতি শুনল না আভাস।আমার উপর ঝাপিয়ে পড়তেই চিতকার দিয়ে উঠলাম আমি।
আমার চিতকারে রীতি আপু দৌড়ে আসল।রীতি আপুকে দেখেই বুঝতে পারলাম স্বপ্ন দেখছিলাম আমি। সারা শরীর ঘেমে একাকার।রীতি আপু পানি এগিয়ে দিতেই খেয়ে নিলাম তাড়াতাড়ি করে।গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছিল। আবার সেই স্বপ্ন। কেন অতীত পিছু ছাড়ে না আমার।আমার মাথায় হাত বুলালেন রীতি আপু।
–কি হয়েছে শ্রেয়া খারাপ স্বপ্ন দেখছিলে?
—আআআআভাস,,,কথাটা বলেই ঝাপিয়ে পড়লাম রীতি আপুর বুকে।
—রিলেক্স শ্রেয়া।আভাস তো বেঁচে নেই। এতো মাস যা সহ্য করেছ তা তো শেষ।এখন আর আভাস পৃথিবীতে নেই। পৃথিবীতে বাঁচতে নিজেকে আরো স্ট্রং করতে হবে।ঘুমিয়ে পড়।
—হুম।
রীতি আপু যেতেই শুয়ে পড়লাম।কিন্তু ঘুম আর চোখে ধরা দিচ্ছে না।হঠাৎ চিরকুটার কথা মনে পড়ল।লিখা গুলো আমার অতি পরিচিত। আমার সেই অসমাপ্ত স্মৃতির অংশ।উঠে দাঁড়ালাম আমি।মোবাইলে ফ্লাশ জ্বালিয়ে নিজের বড় ব্যাগটা থেকে বক্সটা বের করে নিলাম।এই বক্সে বন্দি হয়ে আছে আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসার স্মৃতি। আজকের সেই চিরকুট টা মেলে ধরলাম পুরোনো চিরকুট গুলোর সাথে।স্তব্ধত হয়ে গেলাম আমি।সারা হৃদয়ে বয়ে গেল শীতল স্রোত। মনের মধ্যে অজানা ঝড় এসে হানা দিচ্ছে বার বার।একই লেখা। তার মানে অতীতের মানুষ টা ও ক্যাম্পাসের মানুষটা একই ব্যাক্তি!!!আয়ুশ ভাইয়াই আমার স্মৃতিতে জড়ানো মানুষ টা??না এটা অসম্ভব। যদি আয়ুশ ভাইয়া হতো তবে আমার মন কেন মানতে চাইছে না।কে আপনি?কেন এসেছেন আমার জীবনে আবার ফিরে?আমি জানি আপনি কখনও আয়ুশ ভাইয়া হতে পারেন না।আপনি অন্য কেউ তবে আমার খুব কাছাকাছি থাকেন।
যাকে স্মৃতির পাতায় বন্দী করে রাখলাম সে কেন আবার ফিরে এলো?আমি চাই না তাকে।চাই না আমি এই বিধবা জীবনে কাউকে।চাই না আপনার জীবনটা নষ্ট হোক।প্লিজ ফিরে যান আপনি।একা বাঁচতে দিন আমায়।চিরকুট গুলো হাতে নিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলাম আমি।
চলবে,,,