#সিঁদুর শুদ্ধি
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ৪৮
.
অভির কন্ঠ শুনে বিদ্যা প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেল। এই বুঝি সে ধরা পড়লো। ধরা পড়লে সব শেষ। বিদ্যার হাত-পা কাঁপতে লাগলো। অসহায় দৃষ্টিতে শশুড়ের দিকে চেয়ে থাকা ছাড়া ওর আর কোন উপায় নেই।
আশিষ এক দৃষ্টিতে বিদ্যার দিকে চেয়ে আছে। মেয়েটার চোঁখ দিয়ে অশ্রু ঝড়ছে। মেয়েটার কি হয়েছে! ও অভিকে দেখে এমন ভয় পাচ্ছে কেন? মেয়েটার সম্পর্কে অভিকে আগে একবার প্রশ্ন করেছিল আশিষ। কিন্তু, অভি বরাবরই ওর বাবার কথা এড়িয়ে গেছে। তাহলে এই মেয়েটার নাম বিদ্যা। কিন্তু এমন চেহারা বদলে, ও এখানে কেন এসেছে? নানান প্রশ্ন যখন আশিষের মনে ঘুরছিল তখন অন্যদিকে অভি একপা-দু’পা পায়ে এগিয়ে আসছিল বিদ্যার দিকে। অভি আবার বলল,
—” হেই গার্ল, হু আর ইউ?”
কারো রুমে আসলে নক করে আসতে হয় সেটা কি তুমি জানোনা অভি? তোমার দিদা এই ডক্টরকে এখানে এনেছে আমার চিকিৎসার জন্য। ও আমাকে চেক করেই চলে যাবে। তুমি এখন যাও। ওনার কাজ ওনাকে করতে দাও। কথা গুলো বলে আশিষ ওর ছেলের দিকে গম্ভীর হয়ে চাইলো।
বাবার এমন কথা শুনে অভি থেমে গেল। কিছু একটা বলতে চেয়েও আর বললোনা অভি। পিছন ফিরে চলে গেল রুম থেকে। তবে মনের ভিতর ওর একটা খটকা রয়েই গেল। কে ছিল সে? ড্যাড তাকে এত প্রায়োরিটি কেন দিল! অভি আর বেশি কিছু না ভেবে চলে গেল।
অভি চলে যেতেই বিদ্যা যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো। ধন্যবাদ বাবা বলে আশিষকে ভাল করে পরীক্ষা করতে লাগলো। আশিষ ভ্রু কুচকে বিদ্যার দিকে চেয়ে প্রশ্ন করলো,
—” তোমাদের ভিতর কি কোন কিছু নিয়ে সমস্যা হয়েছে! আর তুমি এখানে কবে এসেছ?”
বিদ্যা আশিষের হাত ছেড়ে দিয়ে বলল,
—” আগে বলেনতো! এগুলো কিভাবে হল?”
—“আমি কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর পাইনি মা! তাই আমি যা জিঙ্গাসা করেছি সেই প্রশ্নের ঠিক ঠিক উত্তর দাও, আর আমি এটাই পছন্দ করি।”
অভির বাবার কথা শুনে বিদ্যা কিছুক্ষন চুপ হয়ে রইলো। তারপর আস্তে আস্তে সব কিছু খুলে বলল। এমনকি জুলিয়া ওর প্রথম সন্তানটাকে কিভাবে নষ্ট করে দিয়েছে সেটাও খুলে বলল শশুড়কে। কথাগুলো বলছিল আর বিদ্যার চোখ বেয়ে জল ঝড়ছিল।
আশিষ সব কিছু শুনে বলল,
—” আমার ছেলেও তাহলে তার মত একটা অশরীকে তার জিবন সঙ্গী হিসাবে বেছে নিয়েছে। গুড…..। কিন্তু বিদ্যা, আমি বুঝতে পারছিনা, তুমি এখন কি চাও?”
আপনার স্ত্রী আর পুত্রকে একটা উচিত শিক্ষা দিতে চাই। কথাগুলো একদম সোজা সাপ্টায় বলে দিল বিদ্যা। সে চিন্তাই করলোনা, ও যাকে কথাগুলো বলল, সে অভি আর জুলিয়ার একদম কাছের মানুষ।
বিদ্যার কথা শুনে বেশ জোড়েই শব্দ করে হেঁসে উঠলেন আশিষ ভৌমিক। তিনি যেন হাঁসি থামাতেই পারছেন না। শশুর মসাইয়ের হাঁসি দেখে বিদ্যার ভয় আর অবাক হওয়া যেন সীমানা ছাড়িয়ে গেল।
ছেলের এমন হাঁসির শব্দ শুনে কুন্তী দেবী আধা দৌড়ে রুমের ভিতর চলে আসলেন। মুগ্ধ হয়ে ছেলের দিকে তিনি চেয়ে রইলেন। এত খুঁশি তিনি কোন দিনও দেখেননি আশিষের চোখে মুখে। মাকে দেখে আশিষ হাঁসি থামিয়ে বলল,
—” মা, ডক্টরকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে। আমি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত তাকে এখানেই থাকার ব্যবস্থা করে দাও। আমার মনে হচ্ছে, হয়ত আমাকে তার খুব প্রয়োজন।”
বিদ্যা ওর প্রশ্নের কোন উত্তরই খুঁজে পেলোনা। এমন কথা শুনে কেউ এভাবে প্রান খুলে হাসে নাকি! বিদ্যা তুই কার পাল্লায় পড়লি! উনিতো দেখছি, স্ত্রী আর ছেলের থেকেও কয়েক ধাপ এগিয়ে আছেন।
ছেলের সাথে তাল মিলিয়ে কুন্তী দেবী বললেন,
—” চমৎকার প্রস্তাব। তা আশু, ওর কোন দিকটা তোর ভালো লেগেছে? আমারতো ভাল লেগেছে, ও ইংলিশ এর সাথে একদম শুদ্ধ ভাষায় বাংলা কথা বলতে পারে। বিদেশে এমন স্বদেশী পাওয়া মানে, আলাদীনের চেরাগ হাতে পাওয়া। তুই কি বলিস?”
মায়ের কথা শুনে আশিষ ভৌমিক মুখে হাসি টেনে বলল,
—” আমারতো ওর সব কিছুই ভালো লেগেছে। ভাবছি ওর সাথে অভির বিয়ে দিলে কেমন হয় মা! আমার তো ওকে বেশ লেগেছে।”
হুম আমিও সেটাই ভাবছি। এ অভির বউ হলে মন্দ হয়না। বাদ দে সে কথা, তা মেয়ে! তুমি আমার ছেলেকে কেমন দেখলে! আমার ছেলে এবার ঠিক হয়ে যাবেতো? ও আমাকে অনেক কাঁদিয়েছে। আর আমি ওর জন্য কাঁদতে চাইনা মা। তুমি ওকে জলদি ঠিক করে ফেল।
বিদ্যা বেশ অবাক হয়েই এদের মা ছেলের দিকে চেয়ে রয়েছে। কি অদ্ভুদ সম্পর্ক তাদের মা-ছেলের ভিতর।কত সহজ-সরল পরিবার এদের। কত ধনী তারা। তবুও মনে বিন্দু পরিমান অহংকার নেই। মনের কথা মনেই চেঁপে রেখে বিদ্যা মুচকি হেঁসে বলল,
—” নিশ্চয়, আপনার ছেলে যদি চায় তাহলে এখুনি তিনি ভালো হয়ে যাবেন। এমনকি হাটতেও পারবেন। কি স্যার! আমার কথা কি বিশ্বাস হয় আপনার?”
আশিষ কোন কথা না বলে মাথা নিচু করে মুচকি মুচকি হাঁসতে লাগলেন। আর কুন্তী দেবী বিদ্যার হাত ধরে বাহিরে নিয়ে এসে একটা ছেলের নাম ধরে ডাকলেন। ওনার ডাকে একটা ডাচ ছেলে এসে হাজির হয়ে ইংলিশ ভাষায় বলল,
—“ইয়েস ম্যাম!”
এই ডক্টরকে তার রুম দেখে দাওতো! সব কিছু ঠিকঠাক ভাবে কাজ করবে কিন্তু! ডক্টরের কাছ থেকে যেন কোন অভিযোগ না আসে। আগেই তোমাকে সাবধান করে দিলাম।
ইয়েস ম্যাম বলেই ছেলেটি বিদ্যাকে নিয়ে গেল একটি রুমে। বিদ্যা রুমে ঢুকেই প্রথমে ব্যালকোনিতে চলে গেল। দুরে তার সর্প সন্তানগন মায়ের ইশারার অপেক্ষায় আছে। বিদ্যার মাথায় অনেক চিন্তা। সাপেরা খুব ঠান্ডা সহ্য করতে পারেনা। ওরা এই ঠান্ডায় শীত ঘুমের মধ্য হারিয়ে যেতে পারে। আর সেখানে যদি কোন শত্রু ওদের আক্রমন করে তাহলে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত হবে। এখন কি করি আমি! ওদের ফিরে যেতে বললেও ওরা ফিরে যাবেনা। তাছাড়া ওদের এখনো বয়স হয়নি যে তারা নিজেদের মানুষ রুপে উপস্থাপন করতে পারবে। কি করি এখন! এখানেও নিয়ে আসা যাবেনা। কেউ যদি ঘুনাক্ষরে টের পায় তাহলে সমস্ত প্লান ভেস্তে যাবে।
এসব কথা ভাবতেই অভি এসে বিদ্যাকে জোড়ে একটা টান দিয়ে ওর দিকে মুখ করিয়ে ধমকের সাথে বলল,
—” তুমি আবার এখানে এসেছ?”
অভির স্পর্শে বিদ্যা চোখ বন্ধ করে ফেলল। কতদিন পর এই স্পর্শ সে পেল। কিছু একটা মনে হতেই বিদ্যা অপরিচিতি কণ্ঠে বলে উঠলো,
—” স্যার, কি সব বলছেন? আমি এখানে আবার আসবো মানে! আমিতো আপনাকে চিনিনা। তাহলে এসব কথা কেন আমাকে বলছেন! আর আমাকে এমন ভাবে হার্ড করার অধিকার কে দিয়েছে আপনাকে? আপনাদের বাসায় বুঝি অতিথিদের সাথে এমনই ব্যবহার করা হয়!”
বিদ্যার মিথ্যা কথা শুনে অভি প্রচন্ড রেগে গেল। কিন্তু ও রাগটাকে দমন করে শান্ত ভাষায় বলল,
—” অহ্ রেলি! তুমি কি সত্যিই আমায় চিনোনা! ”
—” নাহ্, আমিতো আপনাকে কোন দিন দেখিইনি!”
গুড,, কিন্তু আমার মনে হয় আমাকে আপনার চেনা উচিত ছিল বলেই অভি ওকে টেনে রুমের ভিতর নিয়ে আসলো। তারপর নিজের সামনে দাড় করিয়ে অভি ওর জ্যাকেট, হাতের গ্লাভস্ একটা একটা করে খুলতে লাগলো। অভির এমন অদ্ভুদ আচরনে বিদ্যা চোখ ফ্যার ফ্যার করে দেখতে লাগলো অভির কান্ডগুলো । তারপর অভি যখন ওর শার্টে হাত দিলো তখন বিদ্যা ভয় পেয়ে বিছানার এক ধারে গিয়ে বড় বড় শ্বাস ফেলতে লাগলো। অহ্ গড অভির কাছে যেন ধরা না পড়ি। আমাকে রক্ষা করো। এমনিতেই ও আমাকে সন্দেহ করে ফেলেছে।
অভি ওর শার্টেরর সব বোতাম খুলে বিদ্যার দিকে চেয়ে বলল,
—” আপনি কি এখনো আমায় চিনতে পারেননি?”
বিদ্যা নিজেকে পুরোপুরি সংযত করে মাথা নাড়িয়ে বলল,
—” নাহ্, আমিতো বলেছি আপনাকে আমি একদম চিনিনা। আর এসব কি করছেন? আমি কিন্তু বাসার সবাইকে ডাকবো।”
অভি মুখটি বেঁকিয়ে তাচ্ছিল্য সহকারে একটা হাঁসি দিয়ে বলল,
—” আরেপ বাব্বা! আপনি তো দেখছি সত্যিই আমাকে চিনেন না। একটু ধর্য্য ধরুন, এক্ষুনি আমাকে চিনানোর ব্যবস্থা করছি।”
—” এটা কেমন রিতি চেনানোর হ্যা! আপনি কিন্তু অসভ্যতামির সীমা ছাড়িয়ে ফেলছেন? আমি কিন্তু সত্যি সত্যিই কাউকে এবার ডাকবো।”
বিদ্যার কথায় অভির আক্রোশ যেন বেড়েই চলল। গায়ের শার্টটিও শরীর থেকে খুলে ফ্লোরে ছুড়ে মারলো। তারপর এক দৃষ্টিতে বিদ্যার দিকে চেয়ে বলল,
—” এত কষ্ট করছি আমাকে চেনানোর জন্য।
আর আপনি কোথায় আমাকে ধন্যাবাদ দিবেন, তানা করে আপনি বাসার সবাইকে ডাকতে চলছেন? ভেরি ব্যাড…..।”
বিদ্যা এবার খাটের উপর উঠে দাড়িয়ে বেশ জোড়েই চিৎকার দিয়ে বলল,
—” দেখেন, ভালো করে বলছি। এবার যদি না শোনেন তাহলে আপনার বিরুদ্ধে কিন্তু বড়ধরনের স্টেপ নিব। তাই ভালয় ভাল বলছি রুম থেকে বের হয়ে যান। নাহলে কিন্তু…..!”
নাহলে কিন্তু কি হুম! দেখিনা আপনি আমায় আজ কিভাবে না চিনে থাকতে পারেন বলে অভি ওর হাতের ইশারা করতেই দরজা বন্ধ হয়ে গেল। তারপর তড়িৎ গতিতে বিদ্যার কাছে গিয়ে ওর পা দুটো বেঁধে ফেলল। গা থেকে সুয়েটার টেনে খুলে ফেলল। বিদ্যাকে একদম উন্মুক্ত করে ফেলল অভি। তারপর নিজের নিচে ফেলে দিয়ে বিদ্যাকে এক নিমিষেই কাবু করে ফেলল।
এদিকে বিদ্যা ওকে অপিরিচিতার মত হাত জোড় করে বলছে তাকে ছেড়ে দিতে। কিন্তু অভি ওকে ছেড়ে দিচ্ছেনা। অভি ওর শেষ চ্যাল বিদ্যার উপর প্রয়োগ করতেই বিদ্যা আস্তে আস্তে ওর নিজের রুপে চলে আসে। বিদ্যার গাল দিয়ে চোখের জল গড়িয়ে বিছানায় টপ করে পড়তেই অভি উঠে পড়ে। তারপর ওর হাত ও পায়ের বাঁধন খুলে দিয়ে বিদ্যার চুল শক্ত করে ধরে বলল,
—” ফার্দার যদি বলিস তুই আমাকে চিনিসনা, তাহলে সেদিন তোর কি হাল করবো সেটা তুই নিজেও কল্পনা করতে পারবিনা।”
কথাগুলো বলে বিদ্যাকে ছেড়ে দিয়ে ওর শার্ট পড়তে লাগলো। এদিকে বিদ্যা ছাড়া পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ওর জামা পড়ে সুয়েটার গায়ে দিতে দিতে কান্না কন্ঠে বলল,
—” আপনি প্রচন্ড বাজে ধরনের একটা মানুষ। আপনার সাথে কথা বলতেও আমার রুচিতে বাঁধছে।আপনি বুঝি সব অপিরিচিত মেয়েদের সাথে এমনই ব্যবহার করেন?”
অভি হাতের গ্লাভস্টা পড়ে রাগে দাঁত কটমট করে বলল,
—” সবাইকে করিনা, তবে আপনার মত স্পেশাল কেউ, যে আমাকে চিনেও বলে চিনিনা! অবশ্যই তাদের সাথে একটু বেশিই করি। এমনকি এর থেকেও বেশি কিছু করে ফেলি। আয়নায় নিজেকে একবার দেখে আর একবার বলুনতো, আমায় চিনেন কিনা?”
অভির কথা শুনে এবার বিদ্যার টনক নড়লো। সে দ্রুত আয়নার সামনে দাড়িয়ে যা দেখলো, তাতে ও প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেল। অভির কাছে থাকার শেষ আশ্রয়টুকুও বুঝি শেষ হয়ে গেল। এখন ও লজ্জায় অভির দিকে চাইতেও পারছেনা। নিজের চেহারা প্রকাশ হয়ে গেছে অভির সামনে। বুকের ভিতর মনে হয় তড়াস্ তড়াস্ করে হৃদপিন্ডটা নড়েই চলছে। সব শেষ হয়ে গেল। কিন্তু আজব, অভি ওকে আজ কিছু বলছেনা কেন! আবার অভি কোন প্লানে মেতে উঠেছে। বিদ্যা লাজ-লজ্জ্বা ভুলে দৌড়ে গিয়ে অভিকে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরতেই বিদ্যাকে এক ঝটকায় পিছন দিক থেকে সামনের দিকে এনেই কঠিন গলায় বলল,
—” একই ভুল তুমি বার বার কিভাবে করতে পারো! তুমি আবার আমার ড্যাডের কাছে এসেছ! তোমার সাহসতো কম নয়! তুমি ড্যাডের কাছে কোন সাহসে গেছ? তোমাকে আমি নিষেধ করিনি, আমার পরিবার থেকে দুরে থাকবে! তাহলে কেন আবার সেই একই ভুল করলে!”
অভির এমন ব্যবহারে বিদ্যা ক্ষিপ্ত হয়ে চট করে বলে ফেলল,
—” তোমাদের মা-ছেলেকে চিতায় তুলে জ্বালাতে এসেছি। তাই আমার সাথে ভুলেও এরকম ব্যবহার করবেনা।”
বিদ্যার এমন কথা শুনে অভি থম মেরে গেল। সে হয়ত আশা করেনি, বিদ্যা এমন একটা কঠিন কথা অনায়াসেই বলে ফেলবে। ভিতরের কষ্ট বিদ্যাকে বুঝতে না দিয়ে অভি মুচকি হেসে বলল,
—” তা চিতায় তুলতে পেরেছ আমাকে? না নিজেই সেই চিতার আগুনে জ্বলে পুরে মরছো!”
বিদ্যা আর কথা বলতে পারলোনা। অভির নিষেধ থাকা স্বত্ত্বেও অভিকে আবার জড়িয়ে ধরে চুপ করে রইলো। মনে হচ্ছে ও ওর নিজের ভিতরে জ্বালা মিটাচ্ছে অভির স্পর্শ দিয়ে। অভিও আর কিছু বললোনা। আর কত! ওর যা ইচ্ছা ও তাই করুক। অভিও চুপ করে রইল। বিদ্যা অভির বুকে একটা কিস করতেই অভি বলল,
—” যদি তুমি আমার কথা শুনতে আর নিজের ইচ্ছাচারিতাকে প্রশ্রয় না দিতে, তাহলে আজ যেভাবে তোমায় স্পর্শ করলাম সেটা হয়ত খুঁশি মনেই করতাম। তোমার ভিতর আমি আমার সুখ খুঁজে নিতাম। কিন্তু তুমি সব কিছু শেষ করে দিয়েছ। তাই তুমি আমার কাছে আর কিছুই পাবেনা। তোমার জন্য আমার মনের দরজা বন্ধ করে দিয়েছি। তুমি যখন আমার বাসায় এসেই পড়েছ, তখন যতদিন ইচ্ছা থাক। আমি এ বিষয়ে কিছুই বলবোনা। কিন্তু আমার ড্যাডের কাছ থেকে একদম দুরে দুরে থাকবে। আমাকে আর কঠোর করোনা বিদ্যা। আমি যদি সম্পূর্ন তোমার উপর কঠোর হয়ে যাই তাহলে সেটা তোমার জন্য অত্যান্ত খারাপ হয়ে যাবে। তাই সাবধান….।”
অভি বিদ্যাকে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল। কিন্তু অভির কথায় বিদ্যার কোন কষ্ট হলোনা। জিবনে এর থেকেও অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছে সে । সেই কষ্টের কাছে এই কষ্ট তুচ্ছ ছাড়া কিছুই নয়।
আজ বরং সে একটু বেশিই খুঁশি হয়েছে অভির দুষ্ট-মিষ্টি ভালোবাসা দেখে। কে বলে অভি বিদ্যাকে ভালোবাসেনা! বরং ও খুব ভালোবাসে বিদ্যাকে।
[চলবে…….]
সরাসরি ওয়েবসাইট এ পড়ুন: https://nafisarkolom.com/2020/12/sidur-suddhi-47/