#ভালোবাসার_সাত_গোলাপ পর্ব-১
#ঊর্মি_আক্তার_ঊষা
এমন কেন করো? আমি কি করেছি? আমার যে খুব কষ্ট হয়। কোনদিন কি বুঝবে না আমার ভালোবাসা? সেই দুই বছর ধরে আমি তোমাকে ভালোবাসি। ভয়ে কখনো বলতে পারিনি। তুমি বিদেশ থেকে আসার পর যেদিন তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম সেদিন থেকে তোমাকে আমি ভালোবাসি। আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসা তুমি। Please আমাকে ফিরিয়ে দিওনা।
তানভীর হা করে তাকিয়ে আছে……..
তানভীর : ঊর্মি Are you joking with me??
আমি : না আমি তোমার সাথে কোনো মজা করছি না। আমি সত্যি তোমাকে ভালবাসি। তোমাকে আমার চাই, খুব করে চাই। অনেক ভালবাসি তোমাকে।
ঠাসসসসসসস……
তানভীর : বেয়াদব মেয়ে তোর এতো বড় সাহস হলো কি করে? আমাকে এসব বলিস? আমার আগেই মনে হয়েছিলো তুইও ফালতু টাইপ। কি ভেবেছিস? নিজের রুপ দেখিয়ে আমাকে এই তানভীরকে পাগল করবি? আর যদি এসব বলিস আমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হবেনা।
তানভীর ছাদ থেকে নেমে চলে যায় আর আমি গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছি। আজ ভাইয়ার জন্মদিন ছিলো সেই উপলক্ষে তানভীর আমাদের বাড়ি এসেছিলো।
এবার আমার পরিচয় দেওয়া যাক…….আমি ঊর্মি। পরিবারে আব্বু-আম্মু আমি আর ভাইয়া। আব্বুর নিজের বিজনেস আছে আর ভাইয়াও আব্বুর বিজনেস সামলায়। এতোক্ষণ যার সাথে কথা বলছিলাম সে আমার মামাতো ভাই তানভীর। বিদেশ থেকে লেখাপড়া করে এখন বাবার বিজনেস সামলায়। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। কখনো আমার সাথে ভালো ভাবে কথা বলে না। আমাকে সহ্যই করতে পারে না। সবসময় আমাকে ignore করে চলে।
পরেরদিন ভার্সিটিতে…..
রিয়া : যাক এলি তাহলে?
আমি : কেন রে পাখি কি হয়েছে?
মুনা : বলে ফেলো রিয়া বাবু!
রিয়া : আচ্ছা শোন কাল তোরা সন্ধ্যায় আমার বাড়ি আসবি!
আমি : কেন?
রিয়া : কাল ভাইয়ার জন্মদিন বাড়িতে পার্টি আছে।
মুনা : কিন্তুু সন্ধ্যায় কি করে?
রিয়া : আমি আন্টি কে বলে দেবো চলে আসবি।
মুনা : আচ্ছা! আমার তো খুব মজা লাগছে!!
আমি : খেয়ে ফেল পেত্নী!
রিয়া : হাহাহা!
মুনা : ধুর!
রিয়া : ঊর্মি তুইও না!
আমি : কি হ্যাঁ?
রিয়া : কিছুনা মেরি বেহেন!
অন্যদিকে তানভীর অফিসে নিজের কেবিনে বসে ফাইল দেখছিলো এমন সময় তার বন্ধু ফয়সাল আর রায়হান আসে।
ফয়সাল : আসতে পারি?
তানভীর : আরে তোরা? আয় ভেতরে আয়।
রায়হান : কেমন আছিস দোস্ত?
তানভীর : আর বলিস না প্যারায় আছি।
ফয়সাল : কেনো কি হয়েছে?
তানভীর : কাল রাতে ঊর্মি দের বাড়ির ছাদে দাড়িয়ে ছিলাম তখন ঊর্মি বললো ও নাকি আমাকে ভালোবাসে!
রায়হান : তুই কি করলি?
তানভীর : দিলাম এক থাপ্পর!
রায়হান : কেন?
তানভীর : ও আমাকে এসব বলবে কেন?
ফয়সাল : ভালবাসা কি পাপ নাকি? ও তোকে ওর মনের কথা বলেছে তাই বলে ওকে তোর মারতে হবে?
রায়হান : এই ফয়সাল তুই সবসময় ঊর্মির হয়ে সাফাই গাস কেন?
ফয়সাল : ঊর্মি আমার বোনের Friend তাই আমি ওকে আমার বোনের নজরে দেখি!
তানভীর : আচ্ছা ছাড় এসব কথা।
রায়হান : হ্যাঁ ছাড়।
ফয়সাল : কাল আমার জন্মদিন তোরা আসবি কিন্তুু!
তানভীর : অবশ্যই তোর জন্মদিন আর আমরা থাকবো না তা কি হয়?
রায়হান : চলে আসবো দোস্ত।
ঊর্মি আর মুনা নিজেদের বাড়িতে ম্যানেজ করে রিয়াদের বাড়িতে এসেছে????
রিয়া : চল সবার সাথে দেখা করবি।
আমি : হ্যা চল!
আমরা গিয়ে সবার সাথে দেখা করলাম সবশেষে ফয়সাল ভাইয়ার সাথে।
আমি : Happy Birthday ভাইয়া।
ফয়সাল : Thank you.
সবাই Wish করলো একটু পর তানভীর এলো। তানভীরকে দেখে আবারও Crush খেলাম। ব্ল্যাক শার্ট, ব্লাক জিন্স প্যান্ট, হাতে ব্র্যান্ডের ঘড়ি আর চুলগুলো স্পাইক করা।
ঊর্মি আজ কালো একটা গাউন, কানে কালো ঝুমকো, ঠোটে হালকা লিপস্টিক আর লম্বা চুলগুলো ছেড়ে দেয়া ব্যাস এতটুকু সাজ!
রায়হান : আচ্ছা কেক কাটবি না?
তানভীর : এটা আমি কি করছিলাম? এই ফালতু মেয়েটাকে কেন দেখছিলাম? (মনে মনে)
ফয়সাল : হ্যাঁ বাবা আসুক।
কেক কাটার পর সবাই অনেক হৈ-হুল্লোড় করেছি। তানভীর, রায়হান আর ফয়সাল কথা বলছে তারপাশেই আমি, রিয়া আর মুনাও আড্ডা দিচ্ছি। হঠাৎ কোথা থেকে একটা মেয়ে এসেই তানভীর এর সামনে বসে পড়ে!
রিয়া : অনু?
আমি : এই পেত্নী আবার কে? (মনে মনে)
তানভীর : এটা কি করছেন?
অনু : I Love You. I Love You So Much. প্রথম দেখায় তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি তানভীর। Please Accept Me!
সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। অনু যথেষ্ট সুন্দরী আর মর্ডান একটা মেয়ে। সবাই তানভীরকে হ্যাঁ বলতে বলছে। তানভীর আমার দিকে এক নজর তাকিয়ে অনুর দিকে তাকালো।
আমি : Please তানভীর Accept করো না! (মনে মনে)
অনু একটা হাত বাড়িয়ে দিলো। তানভীর মুচকি হেসে আসতে আসতে ওর হাত দিচ্ছে।
চলবে??………….