#ভালোবাসার_সাত_গোলাপ পর্ব-৩
#ঊর্মি_আক্তার_ঊষা
এক সপ্তাহ হলো ভার্সিটিতে যাই না রা কারণ হলো সেদিন ভার্সিটি থেকে আসার পর বেশিক্ষণ শাওয়ার নেওয়ার ফলে জ্বরে ভুগেছি। এই পর্যন্ত তানভীর এর সামনে যাইনি। যে আমি তানভীরকে এক পলক দেখার জন্য প্রতিদিন একবার হলেও মামার বাড়িতে গিয়ে দেখে আসতাম সেই আমি আজ এক সপ্তাহ হলো মামার বাড়িতে যাই না।
অন্য দিকে তানভীর আর অনুর ব্রেকআপ হয়ে যায়। তানভীর যে অনুকে ভালোবাসে এমনটাও না। ঊর্মিকে দেখানোর জন্য অনুর সাথে রিলেশন এ গিয়েছিলো। এই সাতদিন তানভীর ঊর্মিকে খুব মিস করেছে। ঊর্মির ভালোবাসার পাগলামি গুলোকে খুব মিস করেছে।
এক সপ্তাহ পর আজ ভার্সিটি আসলাম। এসেই দেখি তানভীর গেইটের সামনে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছে। পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে তানভীর আমার হাত ধরে ফেলে।
তানভীর : আমাকে ক্ষমা করে দাও।
আমি : তুই থেকে তুমি? বাহ!
তানভীর : প্লিজ ঊর্মি আমাকে ক্ষমা করে দাও!
আমি : আপনি কেনো ক্ষমা চাইছেন? আপনি তো কোনো দোষ করেন নি! দোষ তো ছিলো আমার তাই তো আপনাকে ভালোবেসেছি এতো অপমানের পরেই আপনার পিছু ছুটেছি।
তানভীর : এভাবে বলো না! আমি তোমাকে ভালোবাসি।
আমি : হাহা! এক সপ্তাহেই ভালোবেসে ফেললেন?
তানভীর : সত্যি আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে আমার প্রয়োজন।
আমি : আমি আপনাকে ভালোবাসি না। হাত ছাড়ুন আমার।
বলেই ঊর্মি তানভীর এর থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে সেখান থেকে চলে যায়। তার মধ্যেই রিয়া এসে দেখতে পায় ঊর্মি তানভীর এর থেকে হাত ছাড়িয়ে চলে যাচ্ছে।
রিয়া : ভালোবাসেন ঊর্মি কে?
তানভীর রিয়ার দিকে ছলছল দৃষ্টিতে তাকায়….
রিয়া : কি হলো বলুন ভাইয়া? ভালোবাসেন ঊর্মি কে?
তানভীর : আগে কেন বুঝলাম না ওর ভালোবাসা?
রিয়া : ঊর্মি একদিন বলেছিলো মনে আছে? আপনিও একদিন ওকে ভালোবাসবেন কিন্তুু হয়তো দেরি হয়ে যাবে!
তানভীর : প্লিজ এভাবে বলো না। আমি ঊর্মি কে ভালোবেসে ফেলেছি আর আমি জানি ঊর্মিও আমাকে ভালোবাসে।
রিয়া : এটাই নিয়তি ভাইয়া। কিছুদিন আগেও এই জায়গায় ঊর্মি ছিলো আর আজ আপনি!
এভাবে প্রায় বেশ কিছুদিন চলে যায়। তানভীর অনেকবার ঊর্মিকে বোঝানোর চেষ্টা করে। আজ তানভীর দের বাড়িতে ঊর্মির বাড়ির সবাই এসেছে কিন্তুু ঊর্মি আজও আসেনি। তানভীর এর মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। সে কাউকে না বলে ঊর্মিদের বাড়ি চলে এলো। দু’বার কলিং বেল বাজানোর পর ঊর্মি দরজা খুললো।
আমি : আপনি কেন এসেছেন?
তানভীর দরজা বন্ধ করে ঊর্মিকে নিয়ে রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।
আমি : আরে কি হয়েছে?
তানভীর : আর কতবার ক্ষমা চাইতে হবে? আমি আর এভাবে থাকতে পারছি না। আমার মনে তোমার প্রতি ভালবাসা জাগিয়ে এখন তুমি কেন দুরে সরে আছো? হয় তুমি আজ আমাকে মেনে নেবে নয়তো আমি নিজেকে শেষ করে দেবো…..
আমি : এই আপনি যান তো!
কিছুক্ষণের মধ্যেই তানভীর পকেট থেকে একটা ব্লেড বের করলো। এটা দেখে ঊর্মি ভয় পেয়ে গেলো।
আমি : এ…..এ….এটা দিয়ে কি করবেন?
তানভীর : হাত কাটবো!
আমি : এসব নাটক বন্ধ করুন।
তানভীর সত্যি সত্যি হাতে টান দিলো আর সাথে সাথে হাত কেটে ঝরঝর করে রক্ত পড়তে লাগলো।
তানভীর : বলো তুমি আমাকে ভালবাসো নাহলে আমি সত্যি নিজেকে এখানেই শেষ করে দেবো।
ঠাসসসসসসসসসসস
আমি : তোমার কি আমাকে মানুষ মনে হয়না? কেন বোঝোনা? ভালবাসি আমি তোমাকে! (কান্না করে)
তানভীর ঊর্মিকে শক্ত করে জড়িয়ে আছে। ঊর্মি পরম শান্তিতে তানভীর এর বুকে মুখ লুকিয়ে আছে দুজনেই কান্না করছে।
তানভীর : প্লিজ এবারের মতো ক্ষমা করে দাও। কথা দিচ্ছি আর কোনো দিন তোমাকে কষ্ট দেবো না। আমি বুঝতে পারিনি কখন যে তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি। আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না।
আমি : কে বলেছে আমাকে ছাড়া বাঁচতে? আমরা একসাথেই বাঁচবো!
তানভীর : হ্যাঁ সারাজীবন।
আমি : এরকম কেউ করে?
তানভীর : আর করবো না।
ঊর্মি তানভীর এর হাত সুন্দর করে ব্যান্ডেজ করে দিলো।
চলবে??……………………