#অপূর্ব প্রাপ্তি পর্ব ১১

0
633

#অপূর্ব প্রাপ্তি পর্ব ১১
#নাফিসা নীলয়া।

সাইফ ওর পরিবার সহ আগেই রিসোর্টে এসে গেছে। সবাই যে যার মতো ইনজয় করা শুরু করেছে।সাইফ বসে থাকতে থাকতে অসহ্য হয়ে গেছে। রুমাদের এতক্ষনে এসে যাওয়ার কথা। কিন্তু এখনো আসছে না। সে মুখ কালো করে বসে আছে। তখনই শিহাবদের আগমন ঘটলো। এতক্ষনে সাইফের মুখ একটু উজ্জ্বল হলো। এতক্ষন তার বোরিং লাগছিলো। তার বন্ধুবান্ধব কাজিন সবাই মজা করছে। কিন্তু সে রুমা আর নীরার অপেক্ষা করছে। শিহাবদের দেখে তার একটু ভালো লাগছে এখন। সে এগিয়ে গেল শিহাবদের দিকে। শিহাবকে জড়িয়ে ধরে সে বললো।

-শিহাব ভাই এতো লেট করলেন কেন? আমি আপনাকে কতোবার করে বলেছি। আমার বিয়ের সব প্রোগ্রামে আপনাকে আগে দেখতে চাই। আর আপনি এতো লেট করলেন!

সাইফের কথায় একটু হাসলো শিহাব। তিতলি সাইফের দিকে তাকিয়ে বললো।

-ভাই তো আসতেই চাইছিলো না সাইফ ভাইয়া। রুমা আপু ফোন করায় এসেছে। নইলে ভাইকে নিয়ে আসা সম্ভবই হতো না।

তিতলির কথায় শিহাব একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল। সাইফ আর কিছু বললো না। ওদের ভেতরে নিয়ে গেল। রেহান এসে থেকে মিলাকে খুঁজছে। সে ভাবছে টিলা আসেনি নাকি। না আসলে না আসুক তাতে তার কি। ওই হারামি মেয়েটার সাথে সে আর কথা বলবে না। যা খুশি হোক তার কি!

ইতিমধ্যে রুমারা সবাই এসে গেছে। রুমাকে দেখে রেহান সাইফকে ডেকে বললো রুমা এসে পরেছে। সাইফ দৌড়ে সেদিকে গেল। দেখলো রুমা আসছে। নীরা আর মিলা রুমার দুইপাশে রুমা মাঝখানে। রুমাকে দেখে তার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার উপক্রম। এই মেয়েটা তাকে মেরেই ফেলবে। ভাবতে ভাবতে সে এগিয়ে গেল।

-এতক্ষন লাগে আসতে?

-মেয়েদের ব্যপার স্যপার তুমি বুঝবে না সাইফ ভাই। তাই অযথা ঢঙ না করে রুমা আপার হাত ধরে নিয়ে যাও। এটাও কি তোমাকে বলে দিতে হবে?

মিলার কথা শুনে সাইফ থতমত খেয়ে গেল। সে আড় চোখে রুমার দিকে তাকালো। রুমা রেগে আছে। মিলার বলে দিতে হবে কেন। সাইফ তো নিজ থেকে রুমার হাত ধরে নিয়ে যাবে ভাবলো রুমা।
নীরা দেখলো আজ ও এই দুজন ঝগড়া করবে তাই সে মিলাকে ধমক লাগালো।

-আহ্হা মিলা কি হচ্ছে টা কি। দিন দিন বেয়াদব হচ্ছিস তুই। সাইফ তোর বড় ভাই না। এভাবে বলবি কেন!

নীরার ধমক শুনে চুপ হয়ে গেল মিলা। আসলেই তো সে এটা না বললেই পারতো। সে তো জানে এই দুজন সারাক্ষন টম এন্ড জেরির মতো লেগে থাকে। রুমা তো একটু ছুতো পেলেই ঝগড়া শুরু করে।

-এখন কি এখানেই দাড়িয়ে থাকবো আমরা? ভেতরে যাবো না? আংকেল আন্টিরা সবাই ভেতরে চলে গেছে আমরাই দাড়িয়ে আছি। চল ভেতরে।

নীরার কথা শুনে ওরা ভেতরের দিকে রওনা দিলো। সাইফ রুমার হাত ধরলো। রুমা কিছু বললো না। কারন নীরা বারবার করে বলেছে বিয়ের এই কয়দিন যেনো ওরা ঝগড়া না করে। নীরা আর মিলা আগে আগে চলে গেল। সাইফ রুমার হাত ধরে হাটতে লাগলো। কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো।

-তোকে খুব সুন্দর লাগছে। একদম জলপরীর মতো।

সাইফের প্রশংসা শুনে রুমার মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। রুমার উজ্জ্বল মুখের দিকে তাকিয়ে সাইফের মুখেও হাসি ফুটে উঠলো।

শিহাব দাড়িয়ে ছিলো হঠাত তার চোখ নীরার দিকে গেল। সে তাকিয়েই রইলো মুগ্ধ চোখে। মিলা আর নীরা কথা বলতে বলতে আসছিলো। মিলা তাকে দেখে এগিয়ে আসলো। নীরা আসলো না এতে তার একটু মন ক্ষুন্ন হলো।

-আরে শিহাব ভাইয়া। কি ব্যপার আপনাকে আসার জন্য এতো রিকুয়েষ্ট করতে হলো কেন! এটা কিন্তু ঠিক না। আপনি না আসলে রুমা আপা আর সাইফ ভাইয়ের কতো মন খারাপ হতো জানেন?

মিলার কথা শুনে হাসলো শিহাব। মিলা একেবারে তিতলির মতো সারাদিন তিড়িংবিড়িং করে। এজন্যই মিলাকে তার এতো ভালো লাগে।

-আসলে কাজে ব্যস্ত ছিলাম এজন্য আসতে চাইছিলাম না। এখন তো এসেছি। রুমা কোথায়?

-আরে সাইফ ভাই তো রুমা আপাকে নিয়ে গেল ওদিকে। চলুন ওদিকটায় যাই। আচ্ছা তিতলি কই ভাইয়া?

-আছে রেহানের সাথে। এখনো বোধ হয় দেখেনি তোমরা এসেছো যে।

শিহাব আর মিলা কথা বলতে বলতে এগোচ্ছিলো। তখনই রেহান আর তিতলিও ওদের সামনে আসলো। তিতলি মিলাকে দেখে চেঁচিয়ে উঠে জড়িয়ে ধরলো। মিলাও ধরলো।

-কেমন আছো আপু? নীরা আপু,রুমা আপু কই? উফ কতোদিন পর দেখা।

কন্ঠে উচ্ছাস প্রকাশ পেলো তিতলির। রেহান ও তিতলিকে দেখলো তবে কোনো কথা বললো না। টিজ ও করলো না।

-আই এম ফাইন। তোমাকেও অনেকদিন পর দেখলাম। ওদিকেই আছে সবাই চলো। আমি আর শিহাব ভাইয়াও ওদিকেই যাচ্ছিলাম।

শিহাব হাসলো তিতলি আর মিলার এতো মিল দেখে ভালো লাগলো। দুজনই একরকম। মিলার কথায় তিতলি তাল মেলালো। ওদিকে যেতে যেতে মিলা আড়চোখে একবার রেহানের দিকে তাকালো। কি ব্যপার রেহান কোনো কথাই বললো না। টিজ ও করলো না এতো ভালো হলো কি করে। সেটাই ভাবতে ভাবতে এগোলো মিলা।

রুমা আর সাইফ একসাথে বসে আছে। ওদের ঘিরে সব ছেলে-মেয়েরা বসেছে। বড়রা সবাই নিজেদের মতো গল্প করছে। মিলারাও সেদিকে গেল।

-রুমা আপু কি সুন্দর লাগছে তোমাকে বিউটিফুল।

তিতলি রুমার প্রশংসা করলো। রুমা হাসলো হেসে বসতে বললো ওদের। রেহান নীরার কাছে গেল।

-আমাকে ভুলে গেছো তাই না আপু?

-একদম না। তোমাকে ভুলবো কিভাবে রেহান?

-হয়েছে একদিন ও তো খোঁজ নিলে না।

বাচ্চাদের মতো বললো রেহান। নীরা খিলখিল করে হেসে ফেললো।

-ব্যস্ত ছিলাম রেহান রুমার বিয়ের আয়োজন নিয়ে। এবার থেকে রেগুলার খোঁজ নিবো ঠিক আছে?

-ঠিক আছে। তবে এতোও সিরিয়াস হতে হবে না। আমি মন খারাপের ড্রামা করছিলাম।

রেহানের কথা শুনে আরেক দফা হেসে ফেললো নীরা। দাড়িয়ে দাড়িয়ে সেই হাসি দেখতে লাগলো শিহাব।

সবাই মেহেদী দিতে শুরু করেছে। রুমা দুই হাত ভর্তি করে মেহেদী দিচ্ছে। তিতলি,মিলা ওরা দুজনসহ রুমার আর, সাইফের আত্মীয়, কাজিনরাও সবাই মেহেদী দিচ্ছে। নীরা বড়দের সবার তদারকি করে এক কোণায় দাড়িয়ে আছে। তার এসব কখনো ভালো লাগতো না। এখনো লাগছে না। রুমা তার বোনের মতো এজন্যই সে এসবের এতো দায়িত্ব পালন করছে। নীরা একটা গাছে হেলান দিয়ে সবাইকে দেখছিলো। তখনই খুব কাছে কারো নিঃশ্বাসের শব্দ পেলো। সে চমকে পাশ ফিরে তাকালে দেখলো শিহাব খুব কাছে দাড়িয়ে আছে। সে বিরক্ত হয়ে খানিক দূরে সরে দাড়ালো। বিরক্ত চোখে শিহাবের দিকে তাকালো। শিহাব নীরার বিরক্তমাখা চোখ দেখে ব্যথিত হলো। নীরা কি তাকে দেখলেই বিরক্ত হয়! কিন্তু সে তো নীরার বিরক্তির কারন হতে চায় না। তখনই নীরার কন্ঠ তার কানে আসলো।

-আপনি এখানে কি করছেন? সবাই তো ওদিকটায় আছে।

-এমনি ভালো লাগছিলো না। তাই এদিকে আসা। আপনিও তো এখানে একা দাড়িয়ে আছেন।

শিহাবের কথা শুনে নীরা আর কিছু বললো না। চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো।

-আপনি শাড়ি পরলেন না কেন?

নীরা চমকে শিহাবের দিকে তাকালো। আজব প্রশ্ন! নীরার প্রচন্ড বিরক্ত লাগলো এতে। তবে সে এবার আর বিরক্তি প্রকাশ করলো না।

-আমার শাড়ি পরে হাটতে অসুবিধা হয়। তাই পরিনি।

নীরার কথা শুনে শিহাবের একটু খারাপ লাগলো। একটু গিল্ট ফিল হলো তার। নীরা বোধ হয় তা বুঝতে পারলো।

-এতো গিল্ট হতে হবে না শিহাব। ইট্স ওকে।

নীরার হঠাত এমন কথা শুনে শিহাব ভয়াবহ ভাবে চমকে গেল। এই মেয়েটা সবাইকে এতো ভালো করে বোঝে কিভাবে!। তখনই নীরার ডাক পরলো। মিলা আর তিতলি দৌড়ে তার কাছে এসে পরলো।

-আপা চলো। মেহেদী দিবে তুমি। আমাদের সবার দেওয়া শেষ। এখন তুমিই বাকি চলো।

-হ্যা নীরা আপু। চলো তখন কতো করে তোমাকে ডাকলাম। তুমি কাজের অজুহাতে গেলেই না। এখন কোনো কথা শুনছি না আমরা চলো।

তিতলি ও মিলার কথায় তাল মেলালো। কিন্তু নীরার একদম ইচ্ছে করছে না মেহেদী দিতে। তার মেহেদী দিতে ভালো লাগে না। ওদিকে রুমা আর সাইফ চেঁচানো শুরু করলো। নীরাকে মেহেদী দিতেই হবে। সাইফ এসে নীরাকে টানতে লাগলো। নীরা যেতে চাচ্ছিলো না।

-সবাই যখন এতো করে বলছে আপনার যাওয়া উচিত নীরা।

শিহাবের কথা শুনে নীরা এক পলক তাকালো শিহাবের দিকে। তারপর সাইফের হাত ধরে চলে গেল। তিতলি আর মিলা দুজন আবার ও গল্প করতে করতে হাটতে লাগলো। শিহাবের ভালো লাগছে নীরা তার কথা শুনেছে। এরচেয়ে বড় কিছু আর কি হতে পারে।

হুই হুল্লোড় করে সবাই ভীষণ ক্লান্ত হয়ে গেল। বড়রা রিসোর্টের নির্ধারিত থাকার জায়গায় চলে গেল। যেহেতু হলুদ সহ যাবতীয় সব প্রোগ্রাম একইসাথে হবে। তাই রিসোর্টেই রাতে সবাই থাকবে বলে ঠিক করলো। রুমা সাইফের কাজিনরা ও চাইছিলো থাকতে। শিহাবরা থাকতে চাইছিলো না সাইফ জোর করে রেখেছে।
সবাই একসাথে গল্প হাসি মজা করতে লাগলো।

তিতলির ফোনে কল আসলে সে একটু দূরে গিয়ে দাড়ালো দেখলো তার বাবা কল করেছে। সে হাসলো রাত বিরাতে তার বাবা তাকে ফোন করে কথা বলে। যেটা তার ভালো লাগে। সে যতোই ঘুমে থাকুক বাবার ফোন এলে সে ঘুম থেকে উঠে ফোন ধরবেই। তিতলি তার বাবার সাথে কথা বলতে বলতে রিসোর্টের অনেকটা দূরে এসে পরেছে। রিসোর্ট টা খুব বড় এরিয়া নিয়ে করা। আর এদিকটা একটু নিড়িবিলি। কথা বলা শেষ করে সে যাওয়ার জন্য ঘুরতেই দেখলো একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে। এটা সেই ছেলেই যে কিনা তার কলেজের সামনে দাড়িয়ে থাকে। সে একটু ঘাবড়ে গেল। কারন এই ছেলেটা আজ বারবার তাকে উওক্ত্য করেছে। ছেলেটা সাইফের দূর্সম্পর্কের কাজিন। তাই তিতলি এই ব্যপারে কউকে কিছু বলেনি। সে চায়নি এই কারনে এই বিয়ের আমেজটা নষ্ট হোক। কারন শিহাব আর রেহান একবার জানতে পারলে সব লন্ডভন্ড করে দিতো। আদরের বোনকে কেউ ফুলের টোকা দিলেও তাদের সহ্য হয় না। তিতলি এই কারনেই কাউকে কিছু বলেনি। তিতলি ছেলেটার পাশ কাটিয়ে যেতে চাইলেই ছেলেটা হাত ধরে ফেললো তার।

-হাত ছাড়ুন এটা কি ধরনের অসভ্যতা? আপনি সাইফ ভাইয়ের আত্মীয় বিধায় আমি আপনাকে কিছু বলিনি। এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে।

তিতলির কথা শুনে হাসলো ছেলেটা।

-তো কতক্ষন ধরে বলছিলাম তোমার নাম্বার দিতে। তখন গায়ে লাগেনি। আর আমাকে দেখলে ওমন মুখ বাঁকাও কেন? সুন্দরী বলে খুব অহংকার না তোমার? কলেজের সামনে তোমার ভাই তোমাকে নিতে আসে। নইলে তোমাকে কবেই পটিয়ে নিতাম।

ছেলেটার কথা শুনে রাগে গা রি রি করে উঠলো তিতলির। সে স্বভাবে ভীষণ রাগী। হাত ঝাড়া দিয়ে সে ঠাস করে চড় মেরে দিলো ছেলেটার গালে। এতে ছেলেটা খুব রেগে গেল। সে চেয়েছিলো এর সাথে প্রেম করতে তারপর ইউজ করে ফেলে দিতে। কিন্তু এই মেয়ের সাহস তো কম না তাকে থাপ্পড় দেয় তাও আবার সামান্য হাত ধরায়। সে রেগে তিতলির হাত মুচড়ে ধরলো। তিতলি ব্যথায় চিৎকার করে উঠলে মুখ হাত দিয়ে চেপে ধরলো।

-খুব রূপের অহংকার তোর তাই না? আজ তোর সব অহংকার ভেঙে দিবো।

তিতলি ছোটার জন্য ছটফট করতে লাগলো। পা দিয়ে লাথি দিলো ছেলেটার পায়ে। তবুও সুবিধা করতে পারলো না।

নীরা সবার মাঝখান থেকে উঠে গেল। সবাই গল্প করছে শিহাব রেহান সাইফ হেসে হেসে গল্প করছে। নীরা লক্ষ্য করলো সবাই এখানে আছে, কিন্তু তিতলি নেই। সে আস্তে আস্তে হেটে তিতলিকে খুঁজতে শুরু করলো। নীরা ভেবেছিলো তিতলি ওয়াশরুমে গেছে সেজন্য সে ওয়াশরুমের দিকে যেতে চাইলো। কিন্তু হঠাত তার মনে পরলো তিতলির ফোনে কল আসার পরই সে উঠে ওদিকে গিয়েছিলো। তারপর আর তিতলিকে দেখেনি নীরা। তাই ওয়াসরুমে পরে খুঁজবে ভেবে ওদিকটায় আগে দেখতে গেল। নীরা যখন সেখানে পৌছালো তখন দেখলো একটা ছেলে তিতলিকে টেনে হিঁচড়ে বাইরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। নীরার থেকে ওরা কয়েক হাত দূরে ছিলো। ওরা কেউই নীরাকে দেখেনি। নীরা প্রথমে চিৎকার করলো। কিন্তু তখনই উচ্চস্বরে গানবাজনার আওয়াজের ফলে কারো কানে তার আওয়াজ পৌছালো না। তারপর নীরা যথাসম্ভব দৌড়ে ওদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলো। তবে নিজের পায়ের জন্য ঠিকভাবে দৌড়াতে পারলো না সে। ওই অবস্থাতেই নীরা নিজের ফোনটা দিয়ে শিহাবের নাম্বারে ডায়াল করলো।

শিহাবের ফোনে কল আসলে সে উঠে গেল। এখানে গান বাজনার অনেক আওয়াজ হচ্ছে এখন। তাই এখানে কথা বলা যাবে না। সে দেখলো নীরা ফোন করেছে নীরা তাকে কেন কল করবে। সে নীরাকে আশেপাশে চোখ বুলিয়ে খুুঁজতে খুঁজতে ফোন রিসিভ করলো।

-শিহাব রিসোর্টের পূর্ব পাশে জলদি আসুন। একদম শেষ প্রান্তে প্লিজ তাড়াতাড়ি আসুন। অনেক বড় বিপদ হয়ে গেছে।

নীরার ভয় মিশ্রিত হাপানো কন্ঠস্বর শুনে শিহাবের বুক ধ্বক করে উঠলো। নীরার কোনো বিপদ হলো না তো। সে কয়েক সেকেন্ডের জন্য শ্বাস নিতে ভুলে গেল। সে তাড়াতাড়ি উৎকন্ঠিত হয়ে নীরাকে প্রশ্ন করলো।

-কি হয়েছে নীরা? প্লিজ বলুন আমি এখনই আসছি আপনি ফোন কাটবেন না।

বলতে বলতেই শিহাব দৌড়াতে শুরু করলো।
নীরা ফোনে আর কিছু না বলে দৌড়ে তিতলির কাছে গেল। যেই ছেলেটা তিতলিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে তাকে সে চিনে। এই ছেলে সাইফের দূর্সম্পর্কের কাজিন। ছেলেটার চরিএ একদম ভালো না। সৌজন্যতা রক্ষার্থেই একে দাওয়াত করেছে সাইফ। নীরাকে দেখে তিতলির দেহে প্রান ফিরে আসলো। নীরা চেঁচিয়ে ছেলেটাকে থামতে বললো। ছেলেটা নীরাকে দেখে রাগে দিশেহারা হয়ে পরলো। নীরা হাত ধরে ছেলেটাকে থামাতে গেলে ছেলেটা নীরাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো। নীরা নিজেকে সামলাতে না পেরে পরে গেল। তখনই শিহাব দৌড়ে এসে পরলো। সে তাড়াতাড়ি নীরাকে উঠিয়ে দাড় করালো। ইতিমধ্যে সে বুঝে গেছে এখানে কি হতে যাচ্ছিলো। ছেলেটা শিহাবকে দেখেনি তাই তখনো সে তিতলির হাত ধরে টানছিলো। কিন্তু বেশিক্ষন তিতলির হাত ধরে রাখতে পারলো না। শিহাব ইতিমধ্যে ছেলেটার ওপর ঝাপিয়ে পরেছে।

তিতলি ভয়ে জড়সড় হয়ে দৌড়ে নীরার কাছে চলে আসলো। নীরাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পরলো। আজ নীরা সঠিক সময়ে না আসলে তার কি পরণতি হতো ভেবেই তার বুক কেপে উঠছে। সে নীরাকে জড়িয়ে ধরে শব্দ করে কাঁদতে লাগলো। নীরা তিতলিকে ধরে রাখলো।

শিহাব ছেলেটাকে ইচ্ছে মতো কিল ঘুসি,লাত্থি দিতে লাগলো। রাগে শিহাব অন্ধ হয়ে গেল। সে এমনিতেই রাগী। আর এই ছেলে তার বোনের সাথে কি করতে যাচ্ছিলো ভাবতেই তার মাধায় আরো রক্ত উঠে গেল। সে ক্রমাগত ছেলেটাকে মারতে লাগলো। আর অকথ্য ভাষায় গালি দিতে লাগলো।

-শিহাব রেজার বোনের দিকে হাত বাড়াস! আমার বোনের দিকে হাত বাড়াস। আবার নীরার গায়ে হাত তুলিস? এতো সাহস? কোন হাত দিয়ে ধরেছিলি যেনো তুই।

বলতে বলতেই ছেলেটার ডান হাত মুচড়ে ধরলো। তারপর ইচ্ছে মতো হাতে লাত্থি দিতে লাগলো।

শিহাবের এমন রূপ দেখে নীরা হতভম্ব হয়ে গেল। এদিকে তিতলিও কেঁদেই যাচ্ছে। ছেলেটাকে ও রক্তাক্ত করে ফেলেছে শিহাব। নীরা দেখছে পরিস্থিতি বিগড়ে যাচ্ছে। তাই সে তিতলিকে ধরা অবস্থাতেই সাইফকে কল করলো। যতোটুকু সম্ভব পরিস্থিতি বলে রেহানসহ সাইফকে আসতে বললো সে। নীরা তিতলিকে ছেড়ে শিহাবকে থামাতেও পারছে না। তিতলি ভয়ে নীরাকে জড়িয়ে ধরে আছে। এভাবে চললে তো ছেলেটা মরেই যাবে।

-তোর শরীরের হাড়গোড় সব ভেঙ্গে দিবো আমি। এতো সাহস তোর!

বলতে বলতে এবার মুখে লাত্থি দিতে লাগলো শিহাব। সেইসময় মিলা,রুমা রেহান সহ সবাই সেখানে এসে পরলো। রেহান এসে তিতলির কাছে গেল। তিতলি তখনো কাঁপছে নীরাকে ছাড়তে চাইছে না। সব শুনে রেহানের ও ইচ্ছে করছে ছেলেটার জান নিয়ে নিতে। সে ও মারতে উদ্যত হলে সাইফের বাকি বন্ধুগুলো তাকে আটকালো। কিন্তু শিহাবকে আটকানো যাচ্ছে না। সাইফ নিজেও শিহাবকে টানছে কিন্তু কিছুতেই শিহাবকে সরানো যাচ্ছে না। মিলা আর রুমাও ভয় পেয়ে গেল শিহাবের এমন রূপ দেখে। মারতে মারতে আঁধমরা করে ফেলেছে শিহাব ছেলেটাকে।

-আপা,শিহাব ভাইকে থামাতে হবে। নইলে মরে যাবে তো ছেলেটা।

মিলার কথায় হুস ফিরলো নীরার। সে তিতলিকে কোনোমতে ছাড়িয়ে মিলাকে ওর খেয়াল রাখতে বলে নিজেই শিহাবের কাছে গেল।

-শিহাব প্লিজ থামুন এবার। শিহাব প্লিজ।

শিহাব কোনো কথাই শুনছে না।

-শিহাব মরে যাবে ছেলেটা। শিহাব।

বলতে বলতেই শিহাবের দুই হাত একসাথে ধরলো নীরা। শিহাব নিজের হাত ধরা দেখে অগ্নি দৃষ্টি তে তাকালো। নীরার মনে হলো ওই দৃষ্টি দিয়েই শিহাব তাকে ভস্ম করে দিবে। শিহাব ভেবেছিলো অন্য কেউ। কিন্তু নীরাকে দেখে তার দৃষ্টি শীতল হলো। হাত থেমে গেল আপনাআপনি। ছেলেটাকে ছেড়ে দিলো সে। নীরা শিহাবের এক হাত ছেড়ে আরেক হাত ধরেই রাখলো। তারপর হাত ধরেই সে শিহাবকে সেখান থেকে সরিয়ে আনলো। শিহাবের অবস্থা পাগল পাগল। মাথার চুল সব এলোমেলো। ঘেমেনেয়ে পরনের পাঞ্জাবি ভিজে গেছে। হাত দিয়ে রক্ত পরছে। নীরা শিহাবকে সরিয়ে এনে হাত ছেড়ে দিলো।

ছেলেটার অবস্থা করুন রেহান আবার মারতে চাইছে ছেলেটাকে। মিলা রেহানকে ধমক দিলো।

-তুমি কি পাগল রেহান? এখন যদি তুমিও মারো তাহলে তো এই ছেলে মরেই যাবে। হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে একে।

-হ্যা মারবো ওর সাহাস কি করে হয় তিতলির সাথে এমন করার। ওকে আমি মেরেই ফেলবো।

মিলার কথা অগ্রাহ্য করে আবার মারতে চাইলো রেহান। কিন্তু মিলা,রুমা সবাই ওকে বোঝালো যে আবার মারলে ছেলেটা মরে যাবে। তাই সে থেমে গেল।

বিয়ে বাড়ির জমজমাট অবস্থা মুহূর্তেই পাল্টে গেল। চারদিকের পরিবেশ থমথমে হয়ে গেল। ছেলেটাকে হসপিটালে পাঠানো হয়েছে। সাথে ছেলেটার পরিবার ও গেছে। তারা যাওয়ার আগে বলেও গেছে শিহাবের নামে কেস করবে। তাদের ছেলে নাকি কিছুই করেনি। তাদের কথা শুনে শিহাব আরো রেগে গেল। নিজেই তার পুলিশ বন্ধুকে কল করে বললো ছেলেটার বিরুদ্ধে এটেম্প্ট টু রেপ, এটেম্প্ট টু মার্ডারের চার্জ লাগাতে। ছেলেটা আগে ও এসবের জন্য জেলে ছিলো। ছাড়া পেয়ে সেই একই কাজ করলো।

এমন জঘণ্য ঘটনায় সবাই মর্মাহত হলো। সাইফের পরিবার শিহাবদের কাছে বারবার মাফ চাইতে লাগলো। সাইফের আত্মীয়রাও জানতো ছেলেটার ব্যপারে তাই তারাও আর কিছু বললো না। তিতলির অবস্থা শোচনীয়। তাকে ঘরে পাঠানো হলো। নীরা আর মিলা তাকে খাইয়ে দিয়ে ঘুমাতে বললো। কিন্তু সে এখনো ভয়ে কুঁকড়ে আছে। একটা মেয়ে এমন ইন্সিডেন্ট এর সম্মুখীন হলে তার প্রতিক্রিয়া এমনই হবে স্বাভাবিক। রেহান তিতলির অবস্থা জানার জন্য এসে দেখলো মিলা তিতলির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু তিতলি ভয়ে এখনো কুুঁকড়ে আছে। নীরা অনেক কথা বলে তিতলিকে স্বাভাবিক করতে চাইছে। তবে তিতলি কিছুতেই ভয় থেকে বের হতে পারছে না। সে নীরার হাত শক্ত করে ধরে আছে। রেহান তিতলির কাছে গেল। রেহানকে দেখে মিলা সরে গেল। রেহানকে বসার জায়গা করে দিলো। রেহান বসে তিতলির হাত ধরলো।

-তিতলি, যে অপরাধ করেছে সে তার শাস্তি অবশ্যই পাবে। তুই তো কিছু করিসনি তবে তুই কেন ভয়ে কুুঁকড়ে আছিস। তিতলি তুই না আমাদের সাহসী বোন তুই তো কোনোকিছু তে ভয় পাস না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর সাহস আছে তোর। তবে এখন কেন এমন করছিস।

রেহানের কথা শুনে তিতলি উঠে তার কোলে শুয়ে পরলো।

-মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পারিয়ে দে তো ছোট ভাই।

তিতলির কথা শুনে একটু স্বস্তি পেলো রেহান। সে তিতলির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।

নীরা ভাবলো সে একবার শিহাবকে দেখে আসবে। তখন হাত কেটে গেছিলো। কি জানি এখন কি অবস্থা। তাই সে মিলাকে ও এখানে একটু থাকতে বলে বেড়িয়ে গেল।

তিতলি ঘুমিয়ে গেলে মিলা রেহানকে বললো

-ওকে বালিশে শুইয়ে দাও। এভাবে থাকলে তো তিতলিরও সমস্যা হবে তোমার ও সমস্যা হবে।

-সমস্যা নেই। বরং আমার কোল থেকে বালিশে শুইয়ে দিলেই তিতলির ঘুম ভেঙে যাবে।

মিলা আর কিছু বললো না। দুই ভাই বোনের ভালোবাসা দেখতে লাগলো।

শিহাবের জন্য যেই ঘর ঠিক করা হয়েছে। নীরা সেই ঘরের সামনে দাড়িয়ে রইলো। যাবে কি যাবে না ভাবতে থাকলো। সাইফ আর রুমাকেও সে ডাকতে পারছে না। কারন ওদের বিয়ের আয়োজনেই এতো সমস্যা হলো। আবার কাল ওদের হলুদ ও আছে। এখন ওরা একটু রেস্ট নিচ্ছে। তাই আর ওদের বিরক্ত করলো না নীরা। দোনামোনা করতে করতে নিজেই ঘরে ঢুকে পরলো। শিহাব তখন খাটে বসে রক্তমাখা হাত দিয়ে মাথা চেপে বসে আছে। নীরা আস্তে আস্তে এগোলো। শিহাবের অবস্থা সেরকমই। এখনো হাতটা ও ড্রেসিং করেনি সে।
ঘরে একটা মিষ্টি ঘ্রাণের আভাস পেলো শিহাব। সে বুঝলো নীরা এসেছে। কারণ এই মিষ্টি ঘ্রাণটা সে নীরা আশেপাশে থাকলেই পায়। সে মাথা উচু করে নীরাকে দেখলো। নীরা শিহাবের চোখ মুখের অবস্থা দেখে চমকে গেল।তবে দ্রুত নিজেকে সামলে নিলো। সে ফার্স্ট এইড বক্স নিয়েই এসেছিলো। ভেবেছিলো ড্রেসিং করলে ভালো। আর নইলে সে নিজেই ব্যান্ডেজ করে দিবে। যাক ফার্স্ট এইড বক্স এনে তাহলে ভালোই হয়েছে। ভাবলো নীরা। সে একটা টুল টেনে শিহাবের সামনে বসলো। শিহাব তখনো নীরার দিকে তাকিয়ে আছে। এতে নীরার একটু অস্বস্তি হলো। একটা মানুষ পলক না ফেলে তাকিয়ে থাকলে তো অস্বস্তি হবারই কথা। সে বারকয়েক কাশি দিলো তবুও শিহাব চোখের পলক ফেললো না তাকিয়েই রইলো। নীরা কি করবে বুঝতে পারছে না। মনে হচ্ছে এসেই ভুল করেছে সে।

-হাতটা দেখি।

নীরার কথায় শিহাব হাত বাড়িয়ে দিলো। নীরা খুব যত্ন করে শিহাবের হাত পরিষ্কার করলো। তারপর ব্যান্ডেজ করে দিলো। শিহাব পুরোটা সময় নীরার দিকে তাকিয়ে ছিলো। এবার নীরার অস্বস্তির পাশাপাশি চরম বিরক্ত লাগছে।

-এভাবে কারো দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে থাকা চরম অভদ্রতা।

নীরা উঠতে উঠতে বললো। উদ্দেশ্য সে এখন এখান থেকে চলে যাবে। সে উঠে দাড়াতেই শিহাব তার হাত ধরে ফেললো। নীরা অবাক হয়ে গেল। শিহাব নীরাকে হ্যাচকা টান দিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিলো। নীরা অবাকের চরম পর্যায়ে পৌছে গেল। শিহাব নীরার হাত ধরেই রাখলো ছাড়লো না। এবার নীরার রাগ উঠে গেল।

-এসব কেমন অভদ্রতা হচ্ছে? হাত ছাড়ুন। আমি ভাবতে পারছি না শিহাব। আপনি এমন অভদ্রতা করবেন! আমি সত্যিই ভাবতে পারছি না।

-শুধু তো হাতই ধরেছি।

এতক্ষনে কথা বললো শিহাব। তাও আবার এমন কথা। নীরার আরো রাগ উঠে গেল।

-এসব কি হচ্ছে?

নীরার ধমক শুনেও হাত ছাড়লো না শিহাব।

-অনেক ধন্যবাদ নীরা। তুমি না থাকলে আজ কি হতো আমি ভাবতে পারছি না। তিতলি আমাদের খুব আদরের। আমার নিজের সন্তানের মতো। ওর কোনো কষ্ট আমি সহ্য করতে পারি না।

শিহাবের এমন কথা শুনে নীরার রাগ পরে গেল।

-তিতলি আমারও বোনের মতো। ওর কোনো ক্ষতি হোক তা আমি কখনোই চাইবো না। আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও তো এটাই করতো। এখন আপনি আমার হাত ছাড়ুন। আমি রুমার কাছে যাবো।

-আচ্ছা তুমি ব্যথা পাওনি তো? রাস্কেলটা তো তোমাকে ধাক্কা দিয়েছিলো। ওকে আমার টুকরা টুকরা করতে ইচ্ছে করছে। কোথায় ব্যথা পেয়েছো বলো তো?

নীরার কথা সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে বললো শিহাব। নীরার মনে পরে না জীবনে এতো অবাক সে আর কোনোদিন হয়েছে কিনা। শিহাব তাকে তুমি করে বলছে। প্রথমে সে ভেবেছিলো শিহাব হয়তো ভুলে বলে ফেলেছে। কিন্তু এ তো তুমি করেই বলে যাচ্ছে।

-না ব্যথা পাইনি। আর একমিনিট আপনি আমাকে তুমি করে বলছেন কেন? আশ্চর্য!!

-তুমি আমার থেকে বয়সে ছোট হবে। তাই তুমি করে বলেছি সমস্যা আছে?

-অবশ্যই আছে। আপনি আমাকে তুমি বলবেন না। আমার পছন্দ না।

-আচ্ছা সবার সামনে আপনি করে বলবো। একান্তে তুমি করে বলবো।

এবার নীরা ভয়াবহ ভাবে রেগে গেল শিহাবের হাত ঝাড়া দিয়ে সে উঠে গেল। এতে শিহাব একটু বেশি ব্যথা পেলো। ব্যথা পেয়ে আওয়াজ করে উঠলো। নীরা তরিঘরি করে শিহাবের হাতের দিকে ঝুঁকে গেল। হাত ধরে অস্থির কন্ঠে বললো।

-কি হয়েছে? দেখি। আমি স্যরি আসলে বুঝতে পারিনি। এক্সট্রেমলি স্যরি।

-অনেক কিছু হয়েছে।

হাসতে হাসতে বললো শিহাব। শিহাবের হাসি দেখে নীরা আবার রেগে গেল। তবুও হাত ধরে দেখতে লাগলো। আরো ব্যথা পেয়েছে কিনা। কারন সে রাগের বশে খুব জোরে শিহাবের হাত ঝাড়া দিয়ে ফেলেছে।

-তুমি খুব কেয়ারিং নীরা।

নীরা শিহাবের কথা অগ্রাহ্য করে শিহাবের হাত দেখতে থাকলো। আর শিহাব অপলকভাবে দেখতে থাকলো নীরাকে।

–চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here