#অপূর্ব প্রাপ্তি পর্ব ৪৪
#নাফিসা নীলয়া!
সকলে বাড়িতে ফেরার পর জহুরা নীরাকে দেখে নিশ্চিন্ত হলেন। জহুরা সত্যিই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। নীরাকে দেখে ওনার ভয় কমলো।নীরা নিজেই জহুরার কাছে গেল। জহুরা নীরার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন।
-ঠিক আছিস মা? ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
নীরা জহুরাকে আশ্বাস দিয়ে বললো।
-ঠিক আছি খালা।
তারপর জহুরাকে সবাই সব বুঝিয়ে বললো।
নীরা চিন্তিত গলায় বললো।
-বাবাকে আবার বলোনি তো কেউ।
রেহান তিতলির দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে বললো।
-বাবা ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমাচ্ছিলো। নইলে এই গাঁধি বাবাকেও বলে দিতো।
তিতলি ইনোসেন্ট মুখ করে নীরাকে বললো।
-ভাবিমনি ছোট ভাইকে থামতে বলো। আমি ভয় পেয়েছি বলেই তো সবাইকে বলেছি।
জহুরা সবাইকে ধমকে চুপ করতে বললেন। সবার উদ্দেশ্যে বললেন।
-অনেক রাত হয়েছে। তিতলি মিলাকে নিয়ে তোর ঘরে যা। আমি ওখানেই খাবার আনছি। দেখেই মনে হচ্ছে সবাই খুব ক্লান্ত।
মিলা নীরার দিকে তাকিয়ে বললো।
-আপা তুমি তো খাওনি। খাবে চলো।
নীরা মিলাকে বললো।
-তুই তিতলির সাথে খেয়ে ঘুমা। আমি খেয়েছি রুমার সাথে।
মিলা নীরার কথায় সায় জানালো। তিতলি মিলাকে নিয়ে নিজের ঘরে গেল। আর রেহান তার নিজের ঘরে। নীরাও জহুরার সাথে কিছু কথা বলে নিজেদের ঘরে গেল। এ বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় নীরা কিছুই নিয়ে যায়নি। তাই ঘরে ঢুকেই সে আলমারি থেকে জামাকাপড় বের করে ওয়াসরুমে চলে গেল। শিহাব নীরার পেছন পেছন ঘরে এসে দেখলো নীরা ওয়াসরুমে গেছে। সে বারান্দাতে গেল। কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে সে আবার ঘরে গেল ড্রয়ার থেকে সিগারেট বের করে পুনরায় বারান্দায় গেল। লাইটার দিয়ে সিগারেট জালিয়ে সিগারেট টানতে লাগলো। সে বাড়িতে কখনোই সিগারেট খায় না। খেলেও ছাদে উঠে তারপর খায়। তিতলির জন্য সে এমনটা করতো। তিতলি জানেই না তার ভাই সিগারেট খায়। আর নীরার সাথে বিয়ে হওয়ার পর নীরার সামনেও সে কখনোই সিগারেট খায়নি। বিয়ের আগে এই সিগারেট নিয়েই অনেক ঝামেলা হয়েছিলো। ভাবলো শিহাব। সে স্ট্রেস ফিল করলেই সিগারেট খায়। এখনো তাই করছে।
নীরা ওয়াসরুম থেকে বেড়িয়ে আসার পরই হঠাত করে তার নাকে সিগারেটের বাজে গন্ধ চলে এলো। সে ভ্রু কুঁচকে এদিক ওদিক চাইলো। তারপর বারান্দা লক্ষ করে সেদিকে গেল গিয়েই শিহাবকে দেখতে পেল। শিহাব একমনে সিগারেট টেনে যাচ্ছে। তার কোনোদিকে খেয়াল নেই। নীরা কিছু না বলে আবার ঘরে চলে আসলো। শিহাব যা ইচ্ছে তাই করুক। তাতে তার কিছুই আসে যায় না। ক্ষোভে এটাই ভাবলো নীরা। তারপর চুল থেকে তোয়ালে খুলে চুল আঁচড়াতে শুরু করলো। কিন্তু তবুও তার শান্তি লাগছে না। শিহাব খেয়েছে কিনা এটাও তো জানা হলো না। মনের ভেতর খুঁতখুঁত করলো। সে পুনরায় উঠে গিয়ে বারান্দার দরজায় দাড়ালো। গলা খাঁকারি দিয়ে বললো।
-মহান কাজ শেষ হলে ঘরে আসা যাবে কি?
নীরার কথা শুনে শিহাবের ধ্যান ভাঙলো। সে ভ্রু কুঁচকে পেছন ফিরে নীরার দিকে তাকালো। তারপর আবার সামনের দিকে তাকিয়ে সিগারেটে শেষ টান দিয়ে ফেলে দিলো। নীরা নাক মুখ কুঁচকে দাড়িয়ে আছে। তার এই গন্ধ সহ্য হচ্ছে না। তবুও সে এটা নিয়ে কিছু বললো না। শিহাবও কিছু না বলে দাড়িয়ে আছে বলে নীরা আবার বললো।
-খাওয়া হয়েছে?
শিহাব এবার নীরার দিকে ফিরে যথাসম্ভব গম্ভীর কন্ঠে বললো।
-কার?
নীরা নরম স্বরেই বললো।
-তোমার খাওয়া হয়েছে কিনা?
শিহাব আগের মতোই নির্লিপ্ত মুখভঙ্গি তে বললো।
-হু।
নীরা বিশ্বাস করলো না। সে ভ্রু কুঁচকে বললো।
-সত্যি?
শিহাব বিরক্ত হয়ে বললো।
-এখানে মিথ্যা বলে আমার লাভ?
নীরা এই প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে আস্তে হেটে শিহাবের একদম সামনে এসে দাড়ালো। শিহাব নীরার দিকে তাকিয়ে রইলো। নীরা শিহাবের দিকে এক পলকে তাকিয়ে বললো।
-আমার স্বামী রাগী,ইগোয়িস্টিক জানতাম। এখন দেখছি সে সিগারেটখোর আর মিথ্যেবাদীও।
শিহাব নীরার কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো। নীরা শিহাবের সামনে থেকে সরে বারান্দার রেলিং এর দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো।
-ভ্রু কুঁচকানো তো আমার স্বভাব তোমার স্বভাব তো এমন ছিলো না।
শিহাব কিছুই বললো না। ওইদিনের নীরার করা অপমান সে ভোলেনি। সবার সামনে ইগো বজায় রেখে চললেও সে নীরার সামনে ইগো ধরে রাখতে পারতো না। তবে এবার নীরার ব্যবহারে তার আত্নসম্মানে যথেষ্ট লেগেছে। সেজন্য সে চুপই করে রইলো। উত্তর দিলো না। শিহাব কিছু বলছে না তাই নীরা শিহাবের দিকে কিছুক্ষন পর্যবেক্ষন করে বললো।
-এতো বিরক্ত হলে আমাকে এখানে আনার কারন কি?
শিহাব কিছুই বললো না। বিরক্ত হয়ে সামনে তাকালো। নীরা শিহাবের খুব কাছে এগিয়ে চোখে চোখ রেখে বললো।
-হিপোক্রেট।
শিহাব নীরার দিকে চোখ সরু করে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো।
-কিহ্?
নীরা আবার বললো।
-তুমি একটা হিপোক্রেট।
শিহাব এবার বিরক্ত হয়ে তাকালো নীরার দিকে। নীরা শিহাবের চাহনি দেখে খিলখিল করে হেসে বললো।
-তোমার এই চোখে আমি আমার জন্য বিরক্তি দেখছি। অথচ তুমি কথা দিয়েছিলে তোমার চোখে আমার জন্য শুধুই ভালোবাসা আর সম্মান থাকবে। তাহলে এখন বিরক্তি দেখতে পাচ্ছি কেন? কথা দিয়ে কথা রাখছো না। এটা কি হিপোক্রেসি নয়?
শিহাব কিছু বলতে গিয়েও বললো না। নীরা শিহাবের পাশে দাড়িয়ে বাইরে আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো।
-আমি ছোট থেকে শুনে এসেছি প্রতিবন্ধী হয়ে জীবনে কিছুই করতে পারবো না। শুধু শুধু বাবা মায়ের টাকা নষ্ট করছি। বাবা মা ভালো ঘরে বিয়ে দিতে পারবে না আমাকে। অনেক টাকা যৌতুক দিয়ে তারপর আমাকে পার করতে হবে। আমার কপালে ভোগান্তি আছে কখনো সুখী হবো না। সবাই এসবই বলতো। আর আমার আব্বা সবার কথাতে প্রভাবিত হয়ে আমাকে অবহেলা করলেন। আদর করতেন না স্নেহ করতেন না। চাইলেও প্রভাবিত হওয়ার কারনে পারতেন না। সেসব আমি মানিয়ে নিতাম। এরপরও আমি স্বপ্ন দেখতাম বড় হওয়ার স্বপ্ন। ভাবতাম আমার জন্যও রাজপুত্র আসবে। আমার এতো এতো দুঃখের মধ্যে আমার জীবনের আরো একটা দুর্ঘটনা ঘটলো। টিউশন টিচারের কাছে আমি মলেস্ট হলাম। সেদিন ঝুম বৃষ্টিতে পড়তে গিয়েছিলাম। সব উপেক্ষা করে পড়তাম। কারন আমাকে বড় হতে হবে আমার আম্মার আমাকে নিয়ে অনেক আশা স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন তো ভাঙতে পারি না। তাই যথা সম্ভব চেষ্টা করতাম। কিন্তু পড়তে গিয়েই আমার সাথে সবচেয়ে জঘণ্য ঘটনা ঘটলো। আমি ডিজেবল আমার এই সুযোগই নিতে চাইলো টিচাররূপী অমানুষ। আমার দূর্বলতা নিয়েও নোংরা নোংরা কথা বললো। বললো আমাকে কেউ বিয়ে করবে না। আমার স্বাধ কখনো পূরণ হবে না। আর আমার স্বাধ পূরণ করার জন্যই উনি আছে। আমার সেদিন নিজের প্রতি খুব ঘৃণা হলো। কষ্টে অপমানে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম। আমি খুব কষ্টে সেদিন নিজেকে রক্ষা করলাম। কম্পাস গেঁথে দিয়েছিলাম অমানুষটার হাতে। তারপর কোনোরকম ঝুম বৃষ্টিতেই বেড়িয়ে এসেছি। সেদিন আমার কান্না কেউই দেখেনি। বৃষ্টিতে রাস্তার মাঝে বসে চিৎকার করে কেঁদেছি। সেদিন প্রথম সৃষ্টিকর্তাকে অভিযোগ করেছি। বাড়িতে এসেও কেঁদেছি। কিন্তু আম্মাকে বা মিলাকে কাউকেই বুঝতে দেইনি। আমি এই ঘটনা কাউকে বলিনি। বললে তো আমার ওপর আরেকটা দোষ চাপতো। এরপর থেকে মনে হলো আমার মতো মেয়ে কারো স্নেহ ভালোবাসা কখনোই পাবে না। কখনোই না। খুব বেশি হলে কারো প্রয়োজন হতে পারে। তারপর থেকে পুরুষ মানুষের ছায়াও অসহ্য লাগতো। সবাইকে এক মনে হতো। এরপর বড় হলাম। কাউন্সেলিং করলাম। সাইফ আর রুমার সাথে পরিচয় হলো। সাইফের সাথে দেখা হওয়ার পর মনে হলো সব পুরুষ সমান হয় না। অনেকে পবিত্র ও হয়। আব্বা আর সাইফ ই আমার ভরসার স্থান ছিলো। আব্বা আমাকে ভালোবাসে না বললেও লুকিয়ে খেয়াল রাখতো। আমার জীবনে এমন অনেক গল্প আছে যা কাউকে বলা হয়নি। আর আজকে তার একটা গল্প তোমাকে সংক্ষেপে বললাম।
নীরা কথা শেষ করে শিহাবের দিকে তাকালো। শিহাবের চোখে পানি এসে পরেছে। নীরার কথাগুলো শুনে বুকে রক্তক্ষরন হচ্ছে। সে নীরার দিকে এক পলকে তাকিয়ে রইলো। নীরা শিহাবের হাত ধরে বললো।
-এরপর আমার জীবনে তুমি এলে। আমি ওইসময় ভাবতাম আমার মতো মেয়েকে তুমি কেন ভালোবাসবে! কোনো কারন তো নেই। তারপর তোমার পাগলামি দেখে মনে হলো ভালোবাসতে কোনো কারন লাগে না। তোমার আমার বিয়ে হলো৷ সম্পর্কে ভালোবাসা,বিশ্বাস সম্মান সবই এলো। আমার প্রথম মনে হলো ভরসা করার মতো আমাকে আগলে রাখার মতো মানুষটা তুমি। আমি ঠিক করেছিলাম আমি কখনো বিয়ে করবো না। কিন্তু তুমি আমাকে বাধ্য করলে আমার সিদ্ধান্ত বদলাতে। আমি জীবনে এতো কষ্টের পর আমি তোমাকে পেয়েছি। সেই তোমাকে অন্য কারো সাথে দেখার ক্ষমতা আমার নেই। আর আমি জানি তুমি আমাকে ছাড়া কাউকে ভাবতেও পারো না। তবুও যখন ছবিটা দেখলাম খুব কষ্ট হলো। বিশ্বাস করিনি। তবে মানতেও পারছিলাম না। আমি অমন বউ নই যে স্বামীকে অন্য মেয়ের কথা ধরে অবিশ্বাস করবো। কিন্তু কেন যেনো আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো শিহাব। খুব কষ্ট হচ্ছিলো।
এই পর্যায়ে নীরা কেঁদে ফেললো। শিহাব আর দেরি না করে নীরাকে জড়িয়ে ধরলো। নীরা শিহাবের বুকে মাথা রেখে কেঁদে চলেছে। শিহাব নীরাকে সযত্নে আগলে রেখে বললো।
– আমি স্যরি। আর কখনো আমি তোমাকে কষ্ট দিবো না। স্যরি। আমাকে এসব আগে বললে কি হতো?
নীরা শিহাবকে ছেড়ে দাড়িয়ে বললো।
-বলতে চেয়েছিলাম। বলা হয়নি। তবুও যা কখনোই কাউকে বলা হয়নি। সেটা তোমাকে বলেছি। কেন বলেছি বলো তো?
শিহাব নীরার এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাইলো না। কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে নেই। সে নীরার হাত ধরে বললো।
-আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি তোমার সবই ভালোবাসি। তোমার সাথে জড়িত সবকিছু আমার কাছে মূল্যবান। কখনো আমাকে অবিশ্বাস করবে না। কারো কথা শুনে তো না ই। নিজের সব কথা আমাকে বলবে। সব কথা। আমাকে নিয়ে ইনসিকিউরড হবে না।
শিহাবের কথা শুনে নীরা হেসে ফেললো এবার। বললো।
-আর তুমি? আসাদকে নিয়ে কি বলেছিলে মনে আছ? আর আমার সাথে কি ব্যবহার করেছো মনে করিয়ে দিবো?
শিহাব অনুতপ্ত হয়ে বললো।
-আই এম এক্সট্রেমলি স্যরি। ওরকম আচরণের জন্য আমি মন থেকে স্যরি বলছি। তবে তোমাকে স্পর্শ করার জন্য আমি স্যরি বলবো না।
নীরা ভ্রু কুঁচকে বললো।
-ব্যথা দিয়েছিলে। এবিউজিং হাজবেন্ডের মতো আচরণ করেছো। আবার বলছো স্যরি বলবে না।
শিহাব গম্ভীর স্বরে বললো।
-ওটা তোমার শাস্তি আমাকে ইগনোর করার। আর আমার কাছে সব শেয়ার না করার জন্য।
নীরা হতাশ হয়ে বললো।
-ওইজন্য তুমি একটুও অনুতপ্ত না?
শিহাব মাথা নেড়ে বললো।
-না তুমিও আমাকে বেড়িয়ে যেতে বলেছিলে শোধবোধ।
নীরা হাল ছেড়ে বললো।
-আর কি করার।
নীরা হঠাত শিহাবের কাছ থেকে ছিটকে গেল। শিহাব হতভম্ব হয়ে বললো।
-হোয়াট হ্যাপেন্ড?
নীরা নাক মুখ কুঁচকে বললো।
-তোমার গা থেকে সিগারেটের গন্ধ আসছে। ও আল্লাহ আমি ঘরে যাচ্ছি। যা খুশি করো।
বলেই নীরা ঘরের দিকে চলে যেতে ধরলো ওমনিই শিহাব নীরাকে টেনে আবার নিজের কাছে আনলো। কোমড়ে হাত রেখে নিজের আরো কাছে টেনে আনলো। নীরা মোচড়ানো শুরু করে বললো।
-কি দূর্ঘন্ধ ইয়াক!
নীরার কথা শুনে শিহাব গম্ভীর কন্ঠে বললো।
-এমন করছো কেন?
নীরা ধমকে বললো।
-তুমি এমন করছো কেন? ছাড়ো। আর হসপিটালে সবার সামনে কি করেছিলে৷ ইশ নির্লজ্জদের মতো কান্ড।
শিহাব একগুঁয়ে হয়ে বললো।
-ছাড়বো না। আমার বউকে আমি জড়িয়ে ধরেছি তো কার কি। আমি কাউকে পরোয়া করি না।
নীরা নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেই বললো।
-বাজে গন্ধ সরো।
শিহাব হাতের বাধন আলগা করে বললো।
-আচ্ছা আর সিগারেট খাবো না। কিন্তু এখন আমাকে সহ্য করতেই হবে।
নীরা শিহাবের হাতে চিমটি দিলো কিন্তু তবুও কাজ হলো না। নীরা আসমানি রঙের সালোয়ার কামিজ পরেছে। চুলগুলো ছেড়ে রেখেছে। শিহাব মুগ্ধ হয়ে তাকিয়েই রইলো নির্মিশেষ। নীরা শিহাবের তাকানো দেখে শিহাবের গালে হাত দিয়ে ওদিকে ফেরালো। শিহাব পুনরায় নীরার দিকে তাকালো। নীরা আবার নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো। শিহাব এবার নীরার দিকে গম্ভীর চোখে তাকিয়ে বললো।
-আমাকে এখনো দেখতে পারো না তুমি। ঠিক বিয়ের আগের মতোই আছো।
নীরা এবার রেগে গিয়ে বললো।
-তুমি ছাড়বে? কিসব আজগুবি কথা। তোমাকে আমি দেখতে পারবো না কেন আশ্চর্য!
শিহাব আগের মতো করেই বললো।
-সেটা তুমিই জানো। তবে শুনে রাখো তোমার আজীবন আমাকে এভাবেই সহ্য করে যেতে হবে ডার্লিং।
নীরা রাগত স্বরে বললো।
-অসহ্য ঘাড়ত্যাড়া একটা। শেষমেষ আমার কপালেই জুটলো।
শিহাব চোখে হেসে বললো।
-কিচ্ছু করার নেই।
-চলবে!