#তাসনিম_তামান্না
#প্রেমপ্রলয়
পর্ব-১৭
জিমি আগের থেকে এখন অনেক সুস্থ হয়ে গেছে। এখন অফিসেও ঠিক মতো যায়। মাঝে মধ্যে সামির সাথে রাস্তায় কিংবা বাসায় দেখা হয় তখন তাদের মধ্যে ভালো মন্দ কথার থেকে ঝগড়াঝাটি বেশি-ই হয়। সামি জিমিকে রাগিয়ে মজা পেয়ে হাসে জিমি সেই হাসি দেখে গা জ্বলে যায়।
জিমির আজ মন-মেজাজ তুংঙ্গে উঠে আছে। কিছুতেই কিছু ভালো লাগছে না মনের মধ্যে খুঁত খুঁত করছে সকাল থেকে একটা নম্বর থেকে বার বার ম্যাসেজ আসছে। কিছু ছবিও পাঠিয়েছে ভা’য়া’ন’ক। মন সাই দিচ্ছে না কোনো কিছু তেই কি করবে ভেবেও পাচ্ছে না। ম্যাসেজ দেওয়া ঠিকানাটায় কি যাবে না-কি যাবে না দ্বিধায় ভুগছে। এর মধ্যে চাচির কাছে ফোন দিয়ে শুনেছে চাচা বাসায় আছে কি না জিমির চাচি বলেছে কাল থেকে চাচা বাসায় নেই কি যেনো কাজে যশোর গিয়েছে। জিমি আর কিছু বলে নি ফোন রেখে দিয়েছিলো তখন থেকে মনের খচখচানিটা আরো বেড়ে মনকে আর বেঁধে রাখা যাচ্ছে না। না তাকে যেতেই হবে সেখানে। চায়ের দোকানে দাম মিটিয়ে বাইকে উঠতেই সামি এসে বাইকের চাবি নিয়ে বলল
-‘ কই যাও?’
জিমির মেজাজ এমনিই খারাপ ছিলো সামিকে দেখে আর কন্ট্রোল করতে পারলো না
-‘ আমি কোথায় যায় কি না যায় সেটা আপনি যেনে কি করবেন? কে হন আপনি আমার? ভাই? মামা? চাচা? না আপনি বোনের দেবর সো নিজের লিমিটের মধ্যে থাকুন’
সামি শব্দহীন হাসলো সুন্দর হাসি। কিন্তু জিমির সেই হাসি দেখে গা জ্বলে গেলো চোখ ফিরিয়ে নিলো সামি বলল
-‘ সময় বলে দিবে তুমি আমার কে? এখন প্রেমিক বা হবু বর হিসেবে ধরতে পারো কজ আই লাভ ইউ’
-‘ আপনাকে কতবার বারণ করছি এসব আমার ভালো লাগে না। আর আপনি আমাকে কত টুকু চিনেন? কত টুকুই বা জানেন? যে ভালোবাসার দাবি করেন? দেখেন আপনি আরো অনেক মেয়ে পাবেন আপনি আমার থেকে আরো ভালো মেয়ে ডিজাব করেন আমার মধ্যে কি এমন পেলেন আপনি আমাকে ভালোবাসতে হবে?’
-‘ ডিফিকাল্ট কিছু যা তোমার কাছে আসবে বারবার বধ্য করে ভালোবাসাতে মন চাই’
-‘ ওফ্ফ ভালোবাসা! ভালোবাসা! আর ভালোবাসা! আমি জাস্ট নিতে পারছি না। এই গাড়ির চাবি দেন তো আমার কাছ আছে’
-‘ না আগে বলো কোথায় যাবে? চলো আমি ও যায় তোমার সাথে’
-‘ মানে কি? আপনি আমার সাথে কোথায় যাবেন? চাবি দেন’
কথাটা বলে সামি জিমির হাত থেকে টা-ন দিয়ে গাড়ির চাবিটা নিয়ে নিলো। সামিকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে চলে গেলো। সামি দাঁড়িয়ে রইলো জিমির যাওয়ার পানে তাকিয়ে অজান্তেই একটা দীর্ঘ শ্বাস বেড়িয়ে এলো। নিজ মনেই বলল
-‘ একদিন ঠিকই আমাকে ভালোবাসতে হবে তোমার সেই দিনের অপেক্ষায় আছি থাকবো যতদিন না তুমি বলছ আমাকে ভালোবাসো। আমার কাছেই ফিরতে হবে দিন শেষে দেখে নিও’
____________________________________________
একটা পুরনো অন্ধকার আচ্ছন্ন বাড়ি। কোনো শব্দ নেই ভূ’তু’ড়ে বাড়িতে জিমির হাঁটার সময় পায়ের পাতার মড়মড়ে শব্দ। জিমি বারবার পিছিয়ে ফিরে চাইছে। জিমির মনে হচ্ছে কেউ আছে। জিমি এখানে আসার আগে লিলিকে ফোন দিয়ে বলে ছিলো বাসায় ফিরতে রাত হবে। একটা রুমে এসে ডুকতেই পিছন থেকে দরজাটা ধরাম করে বন্ধ হয়ে গেলো। জিমি দৌড়ে দরজার কাছে গিয়ে দরজা ধাক্কাতে লাগলো।
-‘ এই কে দরজা আটকালেন? দরজা খুলুন বলছি।’
কট করে দরজা খুলে গেলো। জিমি দুকম পিছিয়ে গেলো। দরজা খুলে গিয়ে আলোর ঝলকানি এসে জিমির চোখে পড়লো। জিমি চোখ বন্ধ করে নিলো হাত দিয়ে পিছন থেকে কেউ এসে জিমির মুখ চেপে ধরলো। জিমি ছাড়া পাওয়ার জন্য ছটফট করতে লাগলো। দুইটা মেয়ে এসে জিমিকে চেয়ারে বসিয়ে হাত বেঁধে দিলো। জিমি চোখ খুলে দেখলো সামনে চেয়ারে পায়ের ওপর পা তুলে একটা বয়স্ক ব্যক্তি বসে আছে। জিমি ভ্রু কুচকে বলল
-‘ আমাকে এখানে বেঁধে রেখেছেন কেনো?’
-‘ কুল কুল মিস. জিমি কাম ডাউন এতো হাইপার হওয়ার কিছু নাই তোমাকে জাস্ট একটা সাইন করতে হবে দেন তোমাকে আমি ছেড়ে দিবো’
-‘ সাইন? কিসের সাইন?’
-‘ সেটা তোমার না জানায় শ্রেয়। আর তুমি পিচ্চি মেয়ে এতো জেনে কি করবে?’
-‘ কে আপনি? চাচু কোথায়? কি করেছেন চাচুকে? কি হলো কথা বলছেন না কেনো?’
-‘ তোমার চাচু আমার সাথে বি’শ্বা’স-ঘা’ত’ক’তা করেছে। আমাকে ঠ’কি*য়ে’ছে তার মূল্যত তাকে চুকাতেই হবে’
-‘ মানে কি করেছে চাচু? ‘
-‘ সহ্য করতে পারবে তো?’
-‘ মানে? কি বলতে চাইছেন আপনি?’
-‘ যদি বলি তোমার বাবার খু*নি তোমার চাচা’
জিমি শান্ত কন্ঠে বলল
-‘ আপনি ও তো ছিলেন সাথে’
সামনে বসা লোকটা ঘাবড়ালো! চমকালো! ঘামতে শুরু করে তুতলিয়ে বলল
-‘ মা মানে তু তুমি সব জানো?’
-‘ না জানার কি আছে। আপনিই যে আমার চাচাকে উশকে নিজের দলে টেনে আমার বাবাকে খু*ন করেছেন।’
সামনে বসা লোকটা অবাক না হয়ে পারছে না। বাবার খু-নি কে যেনেও মেয়েটা শান্ত কন্ঠে সেগুলা আবার বলছে। আশ্চর্য বিষয়! লোকটা যতদূর যানে মেয়েটা এভাবে শান্ত ভাবে মেনে নেওয়া মেয়ে নয়। গভীর চিন্তার ভাজ পড়লো কপালে। জিমি হেসে উঠে বলল
-‘ আরে আঙ্কেল ভ-য় পাচ্ছেন নাকি? ভ-য় পেলে আপনাকে যে কি কিউট লাগে কি বলবো’
লোকটা আরো চমকালো। জিমি লোকটার এমন ফেস দেখে বলল
-‘ আচ্ছা আঙ্কেল একটা আমার বাবা কে মে*রে আপনার প্র’তি*শো’ধ নেয়া শেষ না-কি এখনো বাকি আছে? আমাকে মে-রে শোধ তুলবেন কি আবার?’
-‘ ক কি বলছ এসব তোমাকে কেনো মা-র-বো তুমি একটা সাইন করে নিজের কাজে চলে যাও তোমাকে আর বাঁধা দিবো না’
-‘ আমাকে ভ-য় পাচ্ছেন?’
-‘ তো তোমাকে ভ-য় পাওয়ার কি আছে?’
-‘ সেটাই তো আমিও বুঝতে পারছি না আমাকে ভ*য় পাওয়ার কি আছে?’
লোকটা উঠে দাড়িয়ে জিমির দিকে গা-ন তাক করলো। জিমিও শান্ত ভাবে বসে রইলো।
-‘ অনেক বেশি কিছু জেনে গেছিস মেয়ে। তোকে বাঁ’চি’য়ে কি লাভ?’
তখনি পিছন থেকে কেউ বলে উঠলো
-‘ ইউ আর আন্ডার এরেস্ট মিস্টার. সালাম’
চলবে