#রোমান্টিক_ডাক্তার
পার্ট: ১৩
লেখিকা: সুলতানা তমা
দরজায় সবাই ধাক্কাধাক্কি করছে শুনে হঠাৎ হুশ ফিরলো, এতোক্ষণ কি অজ্ঞান হয়ে ছিলাম নাকি বুঝতে পারছি না। সবাই দরজার অপর পাশ থেকে ডাকছে আর দরজায় ধাক্কাচ্ছে শুনে আস্তে আস্তে উঠে দরজা খুললাম। সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
ভাবি: নিজের কি অবস্থা করেছিস।
আমি: তোমরা যাও তো এখান থেকে আমাকে একটু একা থাকতে দাও।
অয়ন: এতোক্ষণ তো একাই ছিলে প্রায় আধা ঘন্টা ধরে ডাকছি দরজা খুলোনি।
আমি: যাবে তোমরা।
পিছন ফিরে চলে আসতে চাইলাম তখনি মাথা ঘুরে গেলো, কাব্য এসে তাড়াতাড়ি আমাকে ধরলো। ও ধরেছে দেখে রাগ আরো বেড়ে গেলো, ধাক্কা দিয়ে ওকে ছাড়াতে চাইলাম, ও জোর করে কোলে তুলে এনে বিছানায় বসালো।
কাব্য’র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে চুপচাপ বসে আছি। চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ছে।
অয়ন: ভাবি আর কতো কাঁদবে আমাদের বাসাটা তো সাগর বানিয়ে ফেলবে।
আমি: অয়ন ঠাট্টা ভালো লাগছে না।
অয়ন: ঠিক আছে কান্না থামাও আমরা ভাইয়ার বিচার করবো।
আমি: হুহ বিচার যার চরিত্র এমন তাকে আবার…
কাব্য: তিলো আ…
আমি: একদম চুপ আমার নাম তুমি মুখে নিবে না।
ভাবি: তোরা যা তো এই রুম থেকে আমি ওকে দেখছি। (কাব্য আর অয়ন বেড়িয়ে যেতেই ভাবি এসে আমার পাশে বসলেন। ভাবিকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিলাম)
ভাবি: কাব্য এমনটা কেন করেছে আমি নিজেও বুঝতে পারছি না। তুই কান্না থামা এভাবে কাঁদতে থাকলে অসুস্থ হয়ে পরবি তো।
আমি: ওকে তো আমি ভালোবেসেছিলাম ও বললে আমি ওর কাছে চলে আসতাম ও এই কাজ করতে গেলো কেন। আর করেছে তো একবারো আমাকে বলেনি সব লুকিয়ে রেখেছে।
ভাবি: তুই শুনলে কষ্ট পাবি তাই হয়তো লুকিয়ে রেখেছিল।
আমি: যে কাজে আমি কষ্ট পাবো সেই কাজ ও করলো কেন..?
ভাবি: সেটাই তো বুঝতে পারছি না, অনেক বার জিজ্ঞেস করেছি কিছু বলছেও না।
আমি: বলতে পারো আমার মামি আর কাব্য’র মধ্যে পার্থক্য কোথায়, একজন বিক্রি করেছে আর অন্যজন কিনেছে। আমি ওদের কাছে বাজারের পণ্য হয়ে গেছি ভাবি।
ভাবি: চুপ এসব বলবি না সব ঠিক হয়ে যাবে তুই একটু ঘুমানোর চেষ্টা কর।
ভাবি আমাকে শুয়ে দিয়ে চলে গেলেন। চুপচাপ শুয়ে শুয়ে কাঁদছি। কাব্য এমন করেছে বিশ্বাসই করতে পারছি না, কেন করলো ও এমনটা। মামি না মানলে আমাকে বলতো আমি চলে আসতাম ওর কাছে আর যদি মামিকে টাকা দিতেই হতো আমাকে বলে দিলে কি হতো..?
হঠাৎ কপালে ঠান্ডা অনুভব হতেই ঘুম ভেঙে গেলো, চোখ মেলে তাকাতে পারছি না মাথা যন্ত্রণা করছে। চোখ বন্ধ রেখেই কপালে হাত দিলাম, কপালে তো জলপট্টি দেওয়া। আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম, পাশে কাব্য মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। আমি নড়াচড়া করছি বুঝতে পেরে আমার দিকে তাকালো।
কাব্য: তিলো এখন একটু ভালো লাগছে..? যা জ্বর উঠেছিল আমি তো… (কপাল থেকে জলপট্টি এনে ছুড়ে ফেলে দিলাম, সবকিছুর জন্য ও দায়ী আর এখন আসছে ডাক্তারি করতে)
কাব্য: ভুল তো আমি করেছি নিজেকে শাস্তি দিচ্ছ কেন।
আমি: (নিশ্চুপ)
কাব্য: একটু বসো আমি খাবার আর ওষুধ নিয়ে আসছি
আমি: আমার কিছু প্রয়োজন হলে ভাবির থেকে নিয়ে নিবো, আমাকে নিয়ে আপনার এতো ভাবতে হবে না।
কাব্য: ভাবি বাসায় নেই আর আমি না ভাবলে কে ভাববে শুনি।
আমি: ভাবি কোথায়..?
কাব্য: হসপিটালে গেছে, ভাবির আম্মু অসুস্থ। (দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকালাম সন্ধ্যা সাতটা বাজে তারমানে আজকে আর তিশার কাছে যাওয়া সম্ভব না)
কাব্য: চুপচাপ শুয়ে থাকো আমি আসছি।
আমি: বললাম তো আমাকে নিয়ে আপনার এতো চিন্তা করতে হবে না।
কাব্য: আবার আপনি করে বলছ।
আমি: হ্যাঁ কারণ আমি তো আপনার কেনা…
কাব্য: তিলো তুমি অসুস্থ এসব নিয়ে এখন কোনো কথা বলতে চাই না আগে সুস্থ হও সব ঠিক করে নিবো।
আমি: আর কিছুই ঠিক হবে না কাব্য চৌধুরী।
কাব্য: ডাক্তারবাবু থেকে কাব্য… বাদ দাও চলো।
আমি: কোথায় যাবো..?
কাব্য: তোমাকে রুমে একা রেখে যেতে পারবো না।
আমি: মানে..?
আমার কথার উত্তর না দিয়ে আমাকে কোলে তুলে নিলো, কি অদ্ভুত মানুষ।
কাব্য খাবার গরম করছে আর আমাকে ওর কাছে একটা চেয়ারে বসিয়ে রেখেছে, ও হয়তো ভাবছে আমি পালিয়ে যাবো। যাবো তো ঠিকি তবে পালিয়ে না ওকে ছেড়ে চলে যাবো আর সকালেই।
কাব্য: তিলো বসে থাকতে কষ্ট হচ্ছে..?
আমি: আমার কষ্ট নিয়ে ভাবতে হবে না, খাবার কার জন্য গরম করছেন..?
কাব্য: তোমার জন্য।
আমি: খাবো না আমি।
কাব্য: তুমি অসুস্থ তাই ওষুধ খেতে হবে আর ওষুধ খেতে হলে আগে খাবার খেতে হবে (আসছে এখানে দরদ দেখাতে ইচ্ছে হচ্ছে ওকে…)
কাব্য: চলো।
টেবিলে মাথা রেখে বসে আছি, কাব্য খাবার নিয়ে বার বার খেতে বলছে। অসহ্য লাগছে ওর এসব ভালোবাসা।
কাব্য: তিলো মাথা তুলো তাকাও আমার দিকে।
আমি: (নিশ্চুপ)
কাব্য: খেয়ে নাও প্লিজ।
আমি: বলেছি তো খাবো না।
কাব্য: খাইয়ে দিচ্ছি চুপচাপ খেয়ে নাও।
আমি: বললাম না খাবো না (খাবারের প্লেট ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলাম)
কাব্য: তিলো…(থাপ্পড় দেওয়ার জন্য হাত উপরে তুলে আবার নামিয়ে নিলো)
অয়ন: বাহ্ ভাইয়া বাহ্ এইটাও দেখতে হলো (অয়নের কথা শুনে দরজায় তাকালাম, রাগি চোখে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে)
অয়ন: একে মেয়েটা অসুস্থ তার উপর আবার তুমি এমন করছ।
কাব্য: কি করবো ও আমার কোনো কথাই শুনছে না।
অয়ন: যা করেছ তারপর কি ভাবির রাগ করাটা স্বাভাবিক না..?
কাব্য: (নিশ্চুপ)
অয়ন: আর ভাবি কি শুরু করেছ দুজনে..? একটা ভুল হয়ে গেছে দুজনে কথা বলে মিটিয়ে নাও। তা না করে এভাবে কান্নাকাটি করে নিজেকে শাস্তি দিচ্ছ কেন..? এই কয়েক ঘন্টায় জ্বর বাধিয়ে নিজের কি অবস্থা করেছ দেখেছ একবার..? ভাইয়া ভাবিকে নিয়ে রুমে যাও, বড় ভাইয়া আর ভাবি আজকে বাসায় ফিরতে পারবে না (অয়ন নিজের রুমে চলে গেলো, কাব্য’র জন্য আজ এতো গুলো কথা শুনতে হলো আমাকে)
কাব্য: হয়েছে শান্তি ছোট ভাইয়ের থেকে আমাকে বকা শুনালে, চলো এবার।
আমি: একাই যেতে পারবো আমি।
কাব্য: হ্যাঁ যাও আর সিড়ি থেকে পড়ে গিয়ে…
আমি: মারা যাবো তাই তো।
কাব্য: তিলো প্লিজ আমি ভুল করেছি যা শাস্তি দিতে হয় দাও তবুও এসব কথা বলোনা, তোমাকে হারানোর কথা তো আমি ভাবতেও পারিনা। (ওর কথার কোনো জবাব না দিয়ে আস্তে আস্তে রুমে চলে আসলাম)
বিছানায় শুয়ে আছি আর কাব্য সোফায় বসে ল্যাপটপ টিপছে। হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো, তাকিয়ে দেখলাম আমার ফোন।
কাব্য: তোমার উঠতে হবে না আমি দেখছি। (কাব্য ফোন হাতে নিয়ে একবার আমার দিকে তাকালো তারপর ফোন নিয়ে বারান্দায় চলে গেলো। অনেকক্ষণ পর কাব্য রুমে আসলো)
আমি: কে ফোন দিয়েছিল..?
কাব্য: তিশা।
আমি: তো ফোন নিয়ে বারান্দায় যেতে হলো কেন..?
কাব্য: এমনি। (আর কিছু না বলে চুপচাপ শুয়ে রইলাম)
কাব্য: খাবার, ওষুধ কিছুই তো খাওনি রাতে যদি জ্বর বেড়ে যায় তখন বুঝবে আমি কতোটা খারাপ হতে পারি (আমার পাশে এসে শুয়ে পড়লো)
আমি: যে টাকা দিয়ে মেয়ে কিনে এনে বিয়ে করে সে কোতোটা ভালো তাতো বুঝতেই পারছি।
কাব্য: কতোবার বলবো এই বিষয়ে কথা বলতে চাই না তুমি সুস্থ হও আগে তারপর নাহয় ইচ্ছেমতো ঝগড়া করো। (কিছু না বলে বিছানার এক পাশে এসে শুয়ে রইলাম)
সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখি কাব্য’র বুকে ঘুমিয়ে আছি আর ও আমাকে দুহাত দিয়ে জরিয়ে ধরে রেখেছে। ওর ঘুমন্ত মুখটা দেখতে কি মায়াবী কিন্তু ও…
কাব্য’র হাত দুটু সরিয়ে দিয়ে উঠে পড়লাম। একটু ফ্রেশ হয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে বাসা থেকে বেড়িয়ে পড়লাম।
তিশার সামনে দাঁড়িয়ে আছি, ও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি: তোর আবার কি হলো..?
তিশা: তুই কান্নাকাটি বন্ধ কর বলছি।
আমি: ওহ ও তোকে সব বলে দিয়েছে।
তিশা: আসলে তমা আমি সবকিছু জানতাম।
আমি: কি..?
তিশা: প্লিজ রাগ করিস না পুরো কথাটা আগে শুন।
আমি: তিশা তুইও আমাকে ঠকালি।
তিশা: এইটাকে ঠকানো বলে না তুই…
আমি: থাক আর কিছু শুনতে চাই না।
তিশা: কোথায় যাচ্ছিস..? একটা কথা শুনে যা প্লিজ তোর ফোনটা একবার দেখিস (তিশার ডাকে সাড়া না দিয়ে দৌড়ে বাসায় চলে আসলাম। কলিংবেল চাপতেই মামি দরজা খুলে দিলো)
আমি: এমন হা করে তাকিয়ে আছ কেন, আশা করনি আমি যে আসবো।
মামি: না মানে…
আমি: সবাই তো ঠকালে আমাকে শান্তি পেয়েছ তো।
মামি: (নিশ্চুপ)
আমি: ওহ হ্যাঁ আমাকে বিক্রি করে কতো টাকা পেয়েছ মানে কাব্য চৌধুরী তোমাকে কতো টাকা দিয়েছে..?
মামি: (নিশ্চুপ)
আমি: বলছ না কেন, আমি শুনতে চাই কতো টাকার বিনিময়ে তোমরা আমাকে কেনাবেচা করেছ।
মামি: তমা…
আমি: বলো কতো টাকা…
মামি: এক কোটি (আমার ধমকে ভয়ে বলে দিলো। বাহ্ কাব্য’র কাছে আমার মূল্য এক কোটি টাকা)
আমি: মামি আর মায়ের মধ্যে পার্থক্য কি বলতো..? মা হয়ে মেয়েকে বিক্রি করতে পারলে তুমি..?
মামি: ভুল হয়ে গেছে মা মাফ করে দে।
আমি: আব্বুর রেখে যাওয়া সম্পত্তির দলিল গুলো দাও।
মামি: কেন..?
আমি: সবকিছু বিক্রি করে এই শহর ছেড়ে চলে যাবো, না তোমার কাছে থাকবো না কাব্য’র কাছে।
মামি: পাগলামি করিস না ঠান্ডা মাথায় আমার কথাটা শুন।
আমি: চুপচাপ আমার কথা শুনো নাহলে আমাকে কেনাবেচা করার কারণে তোমাকে আর ওই কাব্য চৌধুরীকে জেলে পাঠাবো।
মামি: তমা…
আমি: যাও দলিল গুলো নিয়ে এসো।
জানালার কাছে দাঁড়িয়ে আছি, কতোদিন পর নিজের রুমে দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু আজ কোনো কিছুই নিজের মনে হচ্ছে না কারণ আমি যে…(হঠাৎ কাব্য এসে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো, ওর স্পর্শ যে খুব চেনা তাই না দেখেই বুঝতে পারি এখন। কিন্তু কাব্য কোথা থেকে আসলো)
আমি: ছাড়ুন।
কাব্য: না আগে বলো আমাকে না বলে চলে এসেছ কেন..?
আমি: ইচ্ছে হয়েছে তাই।
কাব্য: জানো তোমাকে না পেয়ে কতোটা ভয় পেয়েছিলাম, সারা বাসা খুঁজেছি কিন্তু পাইনি তারপর তিশা ফোন করে বললো তুমি এখানে।
আমি: তিশার সাথে দেখছি আপনার ভালোই যোগাযোগ আছে।
কাব্য: তিশার জন্যই তো তোমাকে আমার করে পেয়েছি।
আমি: হ্যাঁ দুজন মিলেই তো আমাকে মামির থেকে কিনলেন।
কাব্য: উফফ তিলো…
আমি: ছাড়ুন বলছি (ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম, মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে)
মামি: তমা এইযে দলিল।
কাব্য: দলিল দিয়ে কি করবে..?
মামি: ও বলছে সবকিছু বিক্রি করে এই শহর ছেড়ে চলে যাবে।
কাব্য: মানে, তিলো পাগল হয়ে গেছো তুমি।
আমি: পাগল তো এতোদিন ছিলাম তাই তো তোমাদের কাউকে চিনতে পারিনি।
কাব্য: তাই বলে এমন সিদ্ধান্ত নিবে..?
আমি: হুম। (কাব্য আর মামি চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে গেলো)
কিছু ভালো লাগছে না একবার বিছানায় বসছি তো আবার জানালার কাছে যাচ্ছি খুব অস্থির অস্থির লাগছে। ফোনটা হাতে নিয়ে শুভ্রাকে ফোন দিলাম।
শুভ্রা: কি ব্যাপার তিলোত্তমা আমাকে নিজে থেকে ফোন করেছে।
আমি: আমার নাম্বার তুমি চিনো..?
শুভ্রা: আমি জানবো না তোমার নাম্বার তা কি কখনো হয়।
আমি: ওহ আমার উপকার করেছ তো তাই তোমাকে কিছু গিফট করতে চাই।
শুভ্রা: আমার তো গিফট চাই না চাই শুধু কাব্য’কে।
আমি: কাব্য’কেই তো গিফট দিবো।
শুভ্রা: মানে?
আমি: কাব্য’কে আমি ডিভোর্স দিবো আর আজকেই। তুমি তো আমার এতো বড় উপকার করেছ তাই নিজের হাতে কাব্য’র হাতটা তোমার হাতে তুলে দিতে চাই।
শুভ্রা: সত্যি বলছ তুমি..?
আমি: হ্যাঁ আমাদের বাসায় চলে আসো, মামির বাসায় কিন্তু।
শুভ্রা: আমি এক্ষণি আসছি।
ফোন রেখে পিছন ফিরে তাকাতেই দেখি কাব্য দাঁড়িয়ে আছে।
কাব্য: এই সিদ্ধান্ত তুমি নিতে পারলে তিলো (কাব্য কাঁদতে কাঁদতে ফ্লোরে বসে পড়লো)
যতো খুশি কাঁদো কাব্য চৌধুরী আমি যা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা তো করবোই। তোমাদের মতো মুখোশ পড়া আপন মানুষদের চেয়ে একা থাকা অনেক ভালো।
চলবে😍