#Your_psychoPart_13+14

0
702

#Your_psychoPart_13+14
#A_Devils_Love

#Written_by_Aruhi_khan (ছদ্মনাম)

.

.

.

রাতে——★

(রশ্নি আজ ইয়াশদের বাসায় থাকবে, কারন কালকে ওর সবার আগে রেডি হতে হবে আর ওর বেশিরভাগ আউটফিটসই ইয়াশদের বাসায়

কারন ইয়াশ,কাব্য যখন বিদেশে ছিল তখন উনি বাসায় একা থাকতেন তাই রশ্নি উনার সাথে থাকতো)

★রাত ২ টা বেজে ৩৯ মিনিট★

পানি পিপাসা লাগায় রশ্নির ঘুম ভেঙে যায়।
তাই কিচেনে যাওয়ার জন্য উঠে পড়ে।

কিন্তু যখনই ইয়াশের রুম ক্রস করে যাচ্ছিল ওর কানে কিছু শব্দ ভেসে আসে!

এটা ইয়াশের কন্ঠ!
রশ্নি বুঝতে পারলো ইয়াশ কারো সাথে ফোনে কথা বলছে।

রশ্নি: এত রাতে কার সাথে কথা বলছে? কোনো গার্লফ্রেন্ড টালফ্রেন্ড নাকি?

শুনি তো কার সাথে কথা বলছে….কিন্তু কারো কথা এভাবে কান পেতে শোনা টা কি ঠিক?

ধুর…জীবনে কোন ঠিক কাজ করছি নাকি!
শুনিই কি বলে।

রশ্নি কান পেতে শুনার চেষ্টা করছে।

ইয়াশ কাওকে গম্ভীর কণ্ঠে
বলছে: হুম যা বলছি বুঝতে পারছ নিশ্চই?

যে চোখ দিয়ে আমার জানের দিকে বাজে নজরে তাকিয়েছে সে চোখগুলো উপরে ফেলবে
আর মুখে কয়লা দিয়ে এমন ভাবে পোড়াবে যেন কিছু খেতে গেলেও এই নিলাদ্রিশ আহমেদ চৌধুরী ইয়াশের কথা মনে পড়ে,

তার প্রিয়সীর দিকে বাজে নজরে তাকানোর শাস্তি এমনই নিষ্ঠুর আর ভয়াবহ হবে

ফোনের ওপাশের লোকটা কাপাকাপা কন্ঠে
বললো:- জ..জি জি স্যার……

ইয়াশ: গুড…. কাজটা শেষ হলে তোমার পেমেন্ট তুমি পেয়ে যাবে।

বলে ফোনটা কেটে বিছানায় ছুড়ে ফেলে দিলো।

ইয়াশের কথা শুনে রশ্নিরও কাপাকাপি করার অবস্থা।
এই কাপাকাপিতে হাতে থাকা কাচের জগটা ফ্লোরে পরে ঠাস করে ভেঙে গেল।

হঠাৎ এমন বিকট শব্দ শুনে ইয়াশ তাড়াতাড়ি রুম থেকে বেরিয়ে এলো।

ইয়াশ: এট রাতে তুমি এখানে?

রশ্নি: আমি? না মানে…এই যে….হ্যা..
পানি খেতে উঠেছিলাম…
আর ভুলে জগটা হাতের থেকে পড়ে ভেঙে গেল!

বলে রশ্নি কাচের টুকরো গুলো উঠাতে নীচে বসে পড়লো।

ইয়াশ: তুমি সর তোমার উঠাতে হবে না….

বলতে বলতেই একটা কাচ লেগে রশ্নির হাতটা কেটে যায়।

ইয়াশ এগিয়ে এসে ধরতে যায় দেখে রশ্নি সরে দাঁড়ায়।

রশ্নি: আমি ঔষুধ লাগিয়ে নিব….

বলেই যেই না দৌড় মারতে যায় এর আগেই ইয়াশ এসে ওকে কোলে তুলে নিয়ে।

ইয়াশ রশ্নিকে রুমে নিয়ে গিয়ে কিছু না বলেই
মলম লাগিয়ে তারপর একটা ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ
লাগিয়ে দিল।

রশ্নি: আচ্ছা তাহলে এবার আমি যাই। (দাঁড়িয়ে গিয়ে)

ইয়াশ ওর হাতের কব্জি ধরে টেনে আবার বসিয়ে দিলো।

রশ্নি: ককি কি হয়েছে?

ইয়াশ কিছু না বলে রশ্নির গেঞ্জির সামনের দুটো বোতাম খুলে দিল।

রশ্নির এই মুহূর্তে ইয়াশকে বাধা দেওয়াটা সাহসে কুলাচ্ছে না।

ইয়াশ সেই “Neil” লিখা জায়গাটাতে ঠোঁট ছুইয়ে দিলো।

রশ্নি কোনো রকমে নিজের ট্রাউজারের দুইদিকে খামচে ধরে নিজেকে কন্ট্রোল করে রেখেছে।

ইয়াশ তারপর মুখ তুলে রশ্নির দিকে তাকালো।

ইয়াশ: শরীরে তার মালিকের নাম লিখা হয়ে গিয়েছে এখন বাস হৃদয়টাকে দখলে নিতে হবে….

ইয়াশের ফিসফিস করে বলা কথা গুলো রশ্নিকে মাতাল করে তুলছে….

রশ্নি নিচের দিকে তাকিয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলছে।

ইয়াশ রশ্নিকে টেনে নিজের আরো কাছে আনলো।

এক হাত দিয়ে রশ্নির কোমর চেপে ধরলো আর অন্য হাতটা ওর চুলের ভিতর ঢুকিয়ে দিলো।

তারপর চুলটা হালকা করে মুঠের মাঝে নিয়ে ওর কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকালো।

রশ্নি: ভা…..
ইয়াশ: হুশশশশ…!!!

ইয়াশের গরম নিঃশ্বাস রশ্নির মুখে আছড়ে পড়ছে যা রশ্নিকে অস্থির করে দিচ্ছে
ইয়াশের নীল মনি বিশিষ্ট চোখ গুলোর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রশ্নিকে টানছে….
ইয়াশের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছে…..

ইয়াশ আস্তে আস্তে ওর ঠোঁট এগিয়ে নিয়ে যেতে লাগলো।

রশ্নিও কিছু না বলে নিজের চোখ বন্ধ করে নিলো।

কিছুক্ষন পর রশ্নি নিজের কপালে নরম কিছু অনুভব করতে পারলো।

রশ্নি চোখ খুলে দেখলো ইয়াশ ওর কপালে নিজের ঠোঁটের গভীর ছোয়া দিতে ব্যাস্ত।

কিছুক্ষন পর ইয়াশ ওকে ছেড়ে দিলো।

কিন্তু হঠাৎ ওর কি হলো কে জানে
রশ্নি কিছু বলতে যাবে তার আগেই ওর হাত ধরে টেনে রুম থেকে ধাক্কা মেরে বের করে দিলো।

একটুর জন্য আবার কাঁচটা ওর পায় লাগেনি।

রশ্নি: আহ ভাইয়া…..

ইয়াশ: অনেক রাত হয়েছে এবার গিয়ে ঘুমাও কালকে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে।

রশ্নি: সাইকো সালা!

রশ্নি একা একাই বিড়বিড় করতে করতে যাচ্ছিল..হঠাৎ ইয়াশ পিছন থেকে ডেকে উঠে!

রশ্নি পিছনে ফিরে তাকায়!

ইয়াশ: আড়ি পেতে কারো কথা শুনাটা ম‍্যানার্সলেস দের কাজ হয় সো শুধরে যাও!

বলে ঠাস করে গেট টা লাগিয়ে দেয়।

রশ্নি: মানে ভাইয়া আমাকে দেখেছিল! (শুকনো ঢোক গিলে)

রশ্নি পানি খেয়ে রুমে এসে নিলাসা বেগমের পাশে শুয়ে পড়লো।

ইয়াশের কথা শুনে রশ্নি যতটুকু বুঝতে পারলো…
ইয়াশ ওই ছেলে গুলোর কথা বলছিল।

অন্য কোনো মেয়ে হলে মেবি ওটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে ভয় আর ডিপ্রেশনের লাস্ট স্টেজে পৌঁছে যেত কিন্তু রশ্নির জন্য এগুলো স্বাভাবিক ব্যাপার!

ওর নিজেরই কাওকে মেরে ফেলতে হাত কাঁপবে না আর এমনিও রশ্নির লেগেই ছিল ইয়াশ এমন কিছু একটা করবে। & ওরা এটা ডিসার্ভও করে।

কিন্তু রশ্নির খটকা লাগছে সেই জায়গায় যেখানে ইয়াশ ওকে নিজের প্রিয়সী বলে আখ্যায়িত করেছিল।

তাহলে কি ইয়াশ ওকে ভালোবাসে?

না বসলে ওর এতটা কাছে এসে কেন?
তার থেকেও বড় কথা রশ্নির শরীরের মাঝেও ইয়াশ নিজের নাম গেঁথে দিয়েছে….!!

এগুলো তো অকারণে হতে পারে না….!!

উফ আর ভাবতে পারছে না।
এখনের জন্য মাথা টা বেশি না ঘামানই শ্রেয় মনে হলো রশ্নির কাছে।

তাই সব ছেড়ে শুধু তন্দ্রা বিলাসেই মনোযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।

রশ্নিদের ভার্সিটি থেকে আজ শিক্ষা অভিযানে যাবে সবাই।

রশ্নি আজ অনেক এক্সাইটেড তাই সবার আগে উঠে রেডি হওয়া শুরু করে দিয়েছে।

আধা ঘন্টা পর রশ্নি রেডি হয়ে নিচে এসে সবাইকে ডাকতে শুরু করলো।

রাশিদ: আরেহ বাহ আজ আমার ঘুমের রানী দেখি সবার আগে উঠে গিয়েছে।

রশ্নি: 😎

কিছুক্ষন পর শুভও নেমে আসলো।

শুভ: সরি সরি নামতে একটু দেরি হয়ে গেল।

রশ্নি: চলো তাহলে যাওয়া যাক রহস্য উদ্ঘাটজে!

শুভ: 🙄

রশ্নি: আজকে একদম আগুন লাগাই দিমু😎

শুভ: আঙ্কেল একে এখানেই রেখে যাও নাহলে ওখানে গিয়ে সত্যি সত্যিই আগুন লাগিয়ে দিবে।

রশ্নি: Abeyyyy saale…😑

রাশিদ খান,রশ্নি আর শুভ বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন।

বাহিরে ইয়াশ আর নোভা ওদের জন্য ওয়েট করছে।
নোভাকে দেখে রশ্নির মাথায় আগুন ধরে যাচ্ছে।

রশ্নি একবার নিজেকে দেখে নিলো
(চুলে ফ্রান্স বেনি করা, সামনে দুইটা চুল বেরিয়ে আছে,
হোয়াইট টি শার্ট আর জিন্সের হাঁটুর অবধি স্কার্ট সিস্টেম ডাঙ্গারি,কালো টাইস, সাদা স্নিকার্স,
পিছনে একটা ব্যাগ ঝুলানো যার মধ্যে আজাইরা জিনিষ ছাড়া আর কিছুই নাই,
এক হাতে ওদের টিমের কালো ব‍্যাচ আর অন্য হাতে ঘড়ি
আর মুখে শুধু পাউডার
(কারন রশ্নি মেকআপ করতে পারে না🙄
যাই হোক মোটামোটি ঠিকঠাক কিউট-ই লাগছে)

তারপর নোভার দিকে তাকালো।

রশ্নি: হুম……😎
.
.
.
ওরে বেশি সুন্দর লাগতাছে……😭😭

শুভ: কিরে যাবিনা?
রশ্নিকে ঝাকিয়ে বললো।

রশ্নি: হু চল।


ইয়াশ ড্রাইভ করছে আর পাশে নোভা বসে বকবক করছে।

রশ্নি,শুভ আর রাশিদ খান পিছনে।

রশ্নি দুইহাত গুঁজে নোভাকে দেখছে, এই ইয়াশটাও না.. আজকে ইয়াশ রশ্নির সাথে কথা তো দূর তাকায়েও নাই।

নোভা: এই রশ্নি তুমি কিছু বলছো না কেন?

রশ্নি: মুখে ঠাডা পড়ছে তাই!😒

নোভা: হাহা হাহা তুমি তো খুবই ফানি।

রশ্নি: হ তারেক মেহেতা কা উল্টা চাশমার স্ক্রিপ্ট রাইটার তো আগে আমিই আছিলাম!😒

নোভা: হাও ফানি😆

নোভার হাসিটা রশ্নি গা জ্বালিয়ে দিচ্ছে।

রশ্নি: এর থেকে ভালো তো বাইক নিয়ে আসতাম😒

রশ্নি এগুলা মনে মনে ভেংচি কাটলো…

তারপর ওর চোখ ফ্রন্ট মিররে পড়াতে ইয়াশের সাথে চোখাচোখি হয়ে গেল।

রশ্নির কালকে রাতের ঘটনা মনে পড়াতে তাড়াতাড়ি করে চোখ সরিয়ে নিলো।


গাড়ি এসে থামলো বাস স্টপের কাছে।
সেখানে আগের থেকেই সবাই উপস্থিত ছিল।

রশ্নি দৌড়ে ওর ফ্রেন্ডসদের কাছে গিয়ে গ্রূপ হাগ করলো।

রশ্নি: কিরে টোকাই টা কই?
কাশিকা: কইলো তো আইতাছে।
রাতুল: ওর নাম “অনু”
রশ্নি: chal chal apne baap ko maat sikha.

কিছুক্ষনের মধ্যেই অনু এসে উপস্থিত হলো।
আর এসেই শুভর সাথে চোখাচোখি অতঃপর দুজনেই ব্লাশড🙈

কিন্তু কিছু বললো না।

রশ্নি: Aye Bitch!😒
অনু: ক খারাপ মহিলা।
রশ্নি: এতক্ষন কি রাস্তার ময়লা টোকাইতাছিলি?
অনু: 😒
রশ্নি: কথায় না পারলে এমন মুখই বানাইতে হয়!

শুভ: তোরা বাসে উঠবি নাকি এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবি।

সবাই গিয়ে বাসে উঠে পড়ল।

শুভ অনুকে নিজের পাশে বসিয়েছে।
রাতুলও ওর সাথে বসতে চেয়েছিল কিন্তু তার আগেই শুভ টেনে বসিয়ে দেয়।

দিপু আর সুপ্তি একসাথে (কারন এ দুইটা সারাক্ষন খাওয়া দাওয়া নিয়ে থাকে সো একসাথে বসে খেতে পারবে😐)

কাশিকার সিট একটা কিউট ছেলের সাথে পড়েছে তাই সেও খুশি😂

তবে এবার ঝামেলা ইয়াশকে নিয়ে।
ইয়াশ কার সাথে বসবে?

.
#Your_psycho
#A_Devils_Love
#Part_14

#Written_by_Aruhi_khan (ছদ্মনাম)

.

.

.

নোভা সেই কখন থেকে ইয়াশকে তার সাথে বসার জন্য ডাকছে কিন্তু ইয়াশ যেন ব্ল্যাংক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

তখনই রশ্নির বাবা আসলো।

রাশিদ: আরেহ ইয়াশ তুমি এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছো? চলো
টিচার্সদের জন্য আলাদা বাস আছে।

ইয়াশ খেয়াল করে দেখল পাশের বাস টা থেকে ডায়না ম্যাম কেমন কেমন ভাবে যেন ইয়াশের দিকে তাকিয়ে আছে আর ইশারায় ডাকছেও।

ইয়াশ এখনো কিছু বলছে না।

রাশিদ: কি হলো?

কিন্তু এদিকে রশ্নি আছে ওর ড‍্যাম কেয়ার এ্যাটিটিউড নিয়ে…তার কিছু আসে যায় না ইয়াশ কার সাথে বসলো না বসলো নিয়ে।

রশ্নি ইয়াশকে পাশ কেটে চলে যাচ্ছিল তখন ইয়াশ ওর হাত ধরে আটকায়।

ইয়াশ: না মানে আমার এই বাসে থাকা টা ইম্পরট্যান্ট,
আসলে আপনি তো জানেনই রশ্নির বাসএ উঠলে ভমিট প্রবলেম হয় আর ওর হাতটাও কেটে গিয়েছে সো ওর সাথে কারো থাকা টা দরকার।

ইয়াশের কথা শুনে নোভা মুখটা যেন একদম শুকিয়ে গেল😑

রাশিদ খান কিছু বললেন না শুধু মুচকি হেসে সম্মতি দিলেন।
তারপর টিচার্সদের বাসে উঠে পড়লেন।

রশ্নি: আমি আপনার সাথে বসবো না।

ইয়াশ এমন একটা ভাব করলো যেন ও শুনেই নি রশ্নি কি বলেছে।

টেনে নিয়ে গিয়ে ওর সাথে বসিয়ে দিলো।

রশ্নি: অসহ্য!

অন্তর কানে ইয়ার ফোন লাগিয়ে গান শুনছিলো হঠাৎ কারো ডাকে তার দিকে তাকালো।

অধরাকে দেখে কান থেকে ইয়ারফোন খুলে এক ঝটকায় দাঁড়িয়ে গেল।

অন্তর: জি?

অধরা: আমি কোনো সিট পাচ্ছি না তোমার পাশে একটা খালি সিট দেখলাম তাই…..

অন্তর: জি জি জি আপনি বসতে পারেন…

অধরা: না মানে জানালার পাশে যদি….

অন্তর: জি অবশ্যই..

অন্তর তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে অধরাকে জানালার সাথের সিটে বসতে দিলো….

অধরা: কি হলো? তুমি বসো!

অন্তর: জি!

অন্তরও পাশে বসে পড়লো…

কিন্তু অন্তরের এমন লাজুক ব্যবহারে অধরার বেশ হাসি পাচ্ছে।

সানা: দেখি তো লিপস্টিক টা কেমন লাগছে…

বলে ব্যাগের থেকে ছোট আয়নাটা বের করে মুখের সামনে ধরলো।

সানা: হুম ঠিকঠাকই আছে তবে আরেকটু ঘষে নেই..

যেই ভাবা সেই কাজ…ব্যাগের থেকে লিপস্টিক বের করে আবার ঠোঁটে ঘষা শুরু করে…

এত লিপস্টিক লাগানোর দরকার নেই, আমি অল্পতেই সন্তুষ্ট….

হঠাৎ কারো এমন ফিসফিসিয়ে কথা শুনে সানা আতকে উঠে পাশে তাকায়….

সানা: সেহের আপনি?

সেহের: ইয়াহ…

সানা: এখানে কিভাবে?

সেহের: আমি কি বলেছিলাম মনে নেই?

সানা: কিন্তু…..

সেহের: হুশশশশ…..

এদিকে বাস চলার কিছুক্ষনের মধ্যেই রশ্নির বমি স্টার্ট…(🤢)

কিন্তু ইয়াশ কোনো ঘৃণা ছাড়াই ওকে সামলাচ্ছে…

শেষে ক্লান্ত হয়ে রশ্নি ইয়াশের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো..

রশ্নির প্রতি ইয়াশের এত কেয়ার দেখে নোভার কেন যেনো খুব কষ্ট হচ্ছে…

ওকে রাতুলের সাথে বসতে হয়েছে!

রাতুল চোখ বন্ধ করে বাসের সিটের সাথে মাথা ঠেকিয়ে রেখেছে।

শুভ আর অনু টুকটাক কথা বলতে বলতে যাচ্ছে

আর দিপু & সুপ্তি….🐸

দিপু: দোস্ত পাও ভাজিটাতে আরেকটু লবন লাগতো!

সুপ্তি: চুপচাপ যা পাইসস তা খা নাহলে কপালে এইটাও জুটবো না।

দিপু: 😒

প্রায় দের ঘন্টা পর সবাই গন্তব্যে এসে পৌঁছায়.!!

গ্রাম টাইপের একটা জায়গা..

ঘুমানোর কারনে রশ্নির এখন ফ্রেশ লাগছে তাই উঠেই বন্ধুদের সাথে লাফালাফি শুরু করে দিয়েছে।

কিছুক্ষন পর সবাইকে লাঞ্চ করার জন্য ডাকা হলো।

রশ্নির হাত কাটা তাই ইয়াশকেই খাইয়ে দিতে হচ্ছে,
আর রশ্নির ইয়াশের হাতে খাওয়ার অভ্যেস আছে তাই আর ঝামেলা করলো না।

.

বিকালে–★

রাশিদ: চলো তাহলে যাওয়া যাক শিক্ষা সফরে…

রশ্নি: এই গাছ পালা দেইখা আবার কি শিখমু..🥴

রাশিদ চোখ রাঙিয়ে তাকালেন..
রশ্নি:..🤫

এক এক করে সব টিচার রা বিভিন্ন জিনিসের/জায়গার ব্যাপারে জ্ঞান দিচ্ছে, যার এক আনাও রশ্নি আর ওর টিমের মাথায় ঢুকছে না।

সুপ্তি: এর থেকে তো মশার ঘ‍্যানঘ‍্যান শুনাও অনেক ভালো।

কাশিকা: এরা কবে চুপ করবো?

রশ্নি: এগোরে ফাস ট‍্যাহা দিয়া কেউ চুপ করা😑
.

রাশিদ: তোমরা এবার নিজেদের মতো ঘোরাফেরা করতে পারো তবে তোমাদের সঙ্গে যমাদের টিচাররাও থাকবেন।

রশ্নি: আবার আরেক ভেজাল😑

.

অন্তর: দোস্ত তাড়াতাড়ি নাম! কেউ আইসা পড়বো।

রশ্নি: হ তুই এই লাস্ট আম টা ধর।

বলেই হাতে থাকা আম টা নীচে ফেলে দিলো আর অন্তর তা ক্যাচও করে নিলো।

তারপর তাড়াতাড়ি করে গাছ থেকে নেমে গেল রশ্নি।

— এই কে রে আমার গাছের আম পারে!!

কারো ভারী কন্ঠ শুনে রশ্নি আর অন্তর একে অপরের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকায়।

রশ্নি: খাইসে রে!!

অন্তর: Jaan bachani hain toh vag…..

ওদের আর পায় কে…এক দৌড়েই ভ্যানিশ..!!

.

রশ্নি: আমার এই গাছে উঠতে পাড়ার প্রতিভার জন্য আজ তোরা আম খেতে পারবি।

অন্তর: রবীন্দ্র নাথের নোবেল টা তোরে আইনা দিমু নে।

রশ্নি: দোস্ত ওই দেখ সিএনজি…

অন্তর: ওহ আমি তো মনে করছিলাম ক্যাটরিনা কাইফ দাঁড়ায় আছে!

রশ্নি: আজাইরা কথা রাখ আর আমার সাথে আয়।

অন্তর: তুই আবার কি করবি? দেখ আম পাড়া শেষ এবার স্পটে ফিরা চল।

রশ্নি: চুপ থাক তো।

অন্তর: 😒

রশ্নি: চাচা যাবেন? (সিএনজি ওয়ালা আঙ্কেলের উদ্দেশ্যে বললো)

— কই যাইবা?

রশ্নি: আমরা না আপনি যাবেন😁

— মানে😨

রশ্নি: আমগো রে দেইখা কি আপনার কিডন্যাপার মনে হয় নাকি? এমন লুক দেন কিনু😤

আচ্ছা যাই হোক মেইন পয়েন্টে আসি!

— 🙄

রশ্নি: তো আমার ছোট থেকেই শখ ছিল সিএনজি ওয়ালি হওয়ার কিন্তু আব্বু কিনে দিলো বাইক😭

তাই বলছিলাম কি😚👉👈

দোনোজন একসাথে: 🙄

রশ্নি: আপনার সিএনজি টা যদি এই নিরীহ মেয়েটাকে একটু চালাতে দিতেন!🥺

অন্তর: মামা তুই সিএনজিও চালাইতে পারোস?🤔

রশ্নি: পড়ালেখা ছাড়া এমন কোনো কাজ নাই যা রশ্নি পারে না😎

অন্তর: পড়ালেখার সাথে রান্নাটাও এ্যাড কর! তুই ঐটাও পারোস না।

রশ্নি: সালা মিথ্যুক…ওইদিন না কাপ নুডুলস রান্না কইরা খাওয়াইলাম!😤

অন্তর: 🙂💔

এতক্ষনে এই সিএনজি ওয়ালা আঙ্কেল বুঝে গিয়েছে যে এদের মাথায় সমস্যা আছে তাই উনি সুযোগ বুঝে কেটে পড়ছিলেন…..

রশ্নি: আরেহ চাচা আপনি আবার যান কই?

অন্তর: তোর নানীর…..

রশ্নি: 😡

অন্তর: জাস্ট কিডিং!☹️

শেষে অনেক রিকুয়েস্ট এর পর গিয়ে চাচা মানলো।

রশ্নি ভুম ভুম করে সিএনজি চালাচ্ছে, আর পিছনে অন্তর আর সিএনজি ওয়ালা চাচা আতঙ্ক নিয়ে বসে আছেন।🤣

.

রশ্নি: আপনি সবসময় সবাইকে আপনার সিএনজিতে উঠিয়ে তার গন্তব্যে পৌঁছে দেন, তাই আজ আমিও আপনাকে একটা রাইড চড়ালাম!😁

আর থ্যাংক ইউ সো মাচ আমার ড্রিম টা ফুলফিল করার জন্য!

তাই আপনার জন্য থাকছে কেয়া কসমেটিকস থুক্কু টিম তুফানের পক্ষ থেকে এই ব‍্যাচ টা আর এই ২ টা আম….

আচ্ছা আমরা এবার আসি…চল অন্তর

রশ্নি আর অন্তর চলে আসলো…

সিএনজি ওয়ালা আঙ্কেলের কেন যেন রশ্নির বিহেভিয়ারটা খুব ভালো লাগলো…

.

সানা: কিরে তোরা আমগোরে রাইখা কই গেছিলিগা?😤

অন্তর: আম পারতে!
আর তোরা জানোস আমগো রশ্নি আফা মুনি সিএনজিও চালাইতে পারে।

রাতুল: এর জন্যই ও আমাদের গ্রূপের লিডার!

রশ্নি: 😎

সুপ্তি: ওসব কথা পরে আগে বল আম কই😀

সবাই: 🤦🏻‍♀️

গাছে উঠা থেকে শুরু করে, সি এন জি চালানো,
ফল চুরি করা, মারপিট, কানা মাছি, চোর পুলিশ খেলা
মানে যত ধরনের বাঁদরামি আছে সব করে ফেলেছে।

ওদের কাছে যেন এটা শিক্ষা সফর না কোনো পিকনিক।

আর এতে ইয়াশও এতে কিছু বলে নি।

.

রাতে—★

সবাই ক্যাম্প এর বাহিরে গোল করে একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে!

সুপ্তি: এমনে আজাইরা বইসা থাকতে ভাল্লাগে না…কিছু একটা ভাব।

অন্তর: সুখে থাকলে ভূতে কিলায়!

সুপ্তি: ইউ ইচটুথপিক শেট আপ!

দিপু: টুথপিক😅

সুপ্তি: ইন্সপায়ার্ড বাই; বাংলা সিনেমা।

তখন রশ্নি খেয়াল করলো ডায়না ম্যাম ইয়াশের টেন্ট থেকে হাসতে হাসতে বের হয়ে নিজের টেন্টএ ঢুকে গেলো।

কি ভেবে রশ্নি একটা টেডি স্মাইল দিলো।

রশ্নি: রোজ এই আমাদের ক্লাস নেয় না, চল আজকে আমরা এই ডায়নির ক্লাস নিমু..(বাঁকা হেসে)

.

ডায়না ম্যাম তার টেন্ট এর ভিতর বসে ছিল তখনই হঠাৎ মনে হলো কে যেন তাকে পর্যবেক্ষণ করছে..!!

তাই তিনি উঠে বাহিরে গিয়ে একবার দেখে আসলেন..
কিন্তু কাওকে দেখতে পেলেন না…

তাই তিনি আবার নিজের টেন্ট এর ভিতর চলে যাচ্ছিলেন। তখনই মনে হলো যেন তার পাশে দিয়ে দ্রুত বেগে কিছু একটা গেল! যার ফলে তার শরীরের কিছুটা অংশ ক্ষণস্থায়ীভাবে শীতল হয়ে উঠলো।

কিন্তু এবারও কাওকে দেখতে পেলেন না…

মনের ভুল ভেবে আবার নিজের টেন্টএ ফিরে যাচ্ছিলেন…. হঠাৎ কে যেন পাতলা,বিকট স্বরে তার নাম ডেকে উঠলো….

এখন তার ভয় হচ্ছে…গলা শুকিয়ে আসছে!

— কি রে ডাইনি তোকে ডাকছি কানে যাচ্ছে না?

ডায়না: কক..ককে কে?

— তোর জীবনের কাল..☠️

হঠাৎ কাঁধের উপর কারো হাতের শীতল স্পর্শ পড়ায় ডায়না ম্যাম কেঁপে উঠেন…

ডায়না: 😨

.

.

.

To be continued……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here