#বিষাক্তফুলের_আসক্তিপর্ব-২৪
লেখনীতেঃ তাহমিনা তমা
ধ্রুবকে বুক থেকে তুলে মুখটা বা হাতের আঁজলে নিয়ে চুমু খেতে লাগলো তাজ। আজ দু’চোখের নোনাজল গড়িয়ে পড়ছে বাঁধ ভেঙে। ধ্রুব তার ছোট ছোট হাত দিয়ে তাজের চোখ মুছে দিলো। তাজ অবাক চোখে তাকালো ধ্রুবর দিকে।
তুমি কাঁদছো কেনো বাবা ?
ধ্রুবর ছোট ছোট হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে আবারও চুমু খেলো গুটি কয়েক।
ভেজা গলায় বললো, আবার বলো বাবা।
ধ্রুব পুনরায় বললো, বাবা।
তাজ ধ্রুবকে বুকে জড়িয়ে মাথায় চুমু খেতে লাগলো। কত বছরের অপেক্ষার অবসান হয়েছে আজ।
সবুজ পেছন থেকে ডেকে বললো, স্যার ?
তাজ ধ্রুবকে এক হাতেই কোলে তুলে নিলো, সবুজ দেখো এটা আমার ছেলে। আমার ছেলে এটা তুমি দেখেছো সবুজ ?
তাজের চোখেমুখে উপচে পড়ছে খুশীর ঝলক। সবুজ অবাক হয়ে দেখছে তাজকে। গত পাঁচ বছরে এই তাজকে কখনো দেখেনি সে। সবুজ তার চেনা তাজের সাথে এই তাজের মিল পাচ্ছে না।
পেছন থেকে গম্ভীর আওয়াজে, মিস্টার খান।
ঘুরে তাকালো তাজ। আহানকে দেখে ঠোঁটের কোণের হাসি প্রশস্ত হলো তাজের।
পাখি দৌড়ে গেলো আহানের কাছে, আহান দেখো ছেলেধরা। ধ্রুবকে নিয়ে যাবে তো। তুমি নিয়ে এসো না ধ্রুবকে।
আহান পাখির দিকে তাকিয়ে বললো, উনি তো ছেলেধরা না পুতুল৷ ভালো করে দেখো চিনতে পারবে।
পাখির চোখেমুখে তখনও আতংক। তাজকে থেকে ভয় পেয়েছে সে। ভীত চোখে এতক্ষণ তাজকে দেখছিলো। পাখি গোলগাল চোখে তাকালো তাজের দিকে। পাখি তাজকে চিনতে না পারলেও তাজ চিনতে পারলো পাখিকে।
মনে মনে বললো, তোমার মতো একটা নিষ্পাপ জীবন বাঁচাতে তিতির যা করেছে তাতে অন্যায় করেনি। যদি কিছু না করে তোমার ক্ষতি হতে দিতো তাহলেই বরং অন্যায় হতো। কোথায় তুমি তিতির ? প্লিজ সামনে এসো।
তাজ আশেপাশে তাকিয়ে তিতিরকে খুঁজতে লাগলো। না আশেপাশে তার দেখা মিললো না।
আহান বললো, ভেতরে চলুন মিস্টার খান।
তাজ মুচকি হেসে বললো, তুমি তিতিরের কাজিন তাই ভাইয়া বললেই খুশী হবো। তুমি করেই বললাম কিছু মনে করো না, তুমি বয়সে অনেকটা ছোট আমার থেকে।
তাজের কথায় আহানের বুক ধক করে উঠলো। ফিরে তাকালো তাজের দিকে৷ তাজের হাসিখুশি মুখটা আহানের ভয় বাড়িয়ে দিচ্ছে। সত্যিটা জানলে কী অবস্থা হবে তাজের ভাবতেই বুক কেঁপে উঠলো।
আহান জোরপূর্বক হেসে বললো, ভেতরে চলুন ভাইয়া, সেখানে বসেই নাহয় কথা হবে। এমনিতেও আপনি অসুস্থ।
আহান কথা শেষ করে দু’কদম যেতেই তাজ বললো, তিতির কোথায় আহান ?
পা থেমে গেলো আহানের। এই প্রশ্নের ভয়েই তো তাজের সামনে যায়নি আহান। তবে এবার কীভাবে এড়িয়ে যাবে এই প্রশ্ন ?
আহান শুকনো ঢোক গিলে বললো, আগে ভেতরে চলুন তারপর নাহয় কথা বলি।
আহানের অস্থিরতা এবার নজরে এলো তাজের। আহান কেনো বারবার এই প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে চাইছে ? তবে কী তিতির আহানের কাছে নেই ? এসব প্রশ্নে তাজের ভয় হতে লাগলো। মুখের হাসি গায়েব হয়ে গেলো তার। ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে তাকে শক্ত করে বুকে চেপে ধরলো।
কাঁপা গলায় বললো, তিতির তোমার কাছেই আছে তো আহান ?
আহান বুঝতে পারলো তাজ ছাড়ার পাত্র নয়। সে এই প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে দিবে না আহানকে। আহান জিহবা দিয়ে নিজের শুকনো ঠোঁট ভিজিয়ে নিলো। সেই বা আর কতক্ষণ তাজের থেকে সত্যিটা আড়াল করবে। তাজকে তো সত্যিটা আজ না হয় কাল জানাতেই হবে।
আহান নিজেকে শক্ত করে তাজের মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ালো, তিতির আমার কাছে থেকেও নেই।
তাজের হাত-পা কাঁপছে ভয়ে, সে কী তবে তিতিরকে পেয়েও পেলো না।
ভীত গলায় তাজ বললো, মানে ?
আহান এগিয়ে এলো তাজের দিকে। ধ্রুবকে তাজের কোল থেকে নিজের কোলে নিলো। তারপর তাজের এক হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। তাজ বিস্ময় নিয়ে আহানের কাজ দেখছে শুধু। আহান বাড়ির দক্ষিণ দিকে একটু একটু করে আগাতে লাগলো। তাজ আর আহানের পিছনে যাচ্ছে কোতুহলী সবুজ আর ভীত পাখি। একেক কদম আগাচ্ছে আর তাজের ভেতরটা অস্থিরতায় ছেয়ে যাচ্ছে। আহান নিজেও অস্থিরতা অনুভব করছে। কী হবে এরপরে সেটা ভেবে ভয় হচ্ছে। পুকুরের ওপাড়ে বকুল গাছটার নিচে গিয়ে থামলো আহান। চারপাশে বকুল ফুলের সুবাস মম করছে। তাজ আশেপাশে না তাকিয়ে প্রশ্নবোধক চাহনিতে তাকিয়ে আছে আহানের দিকে।
আহান ভেজা গলায় বললো, আপনি তো জানতে চেয়েছিলেন তিতির কোথায় ?
মৃদু আওয়াজে তাজের উত্তর, হ্যাঁ।
আহান আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে সামনে তাকাতে বললো। তাজ আহানের আঙ্গুলের ইশারায় ধীরে ধীরে সামনে তাকালো। পাথরে বাঁধানো চকচকে তিনটা কবর দেখতে পেলো তাজ। প্রত্যেকটা কবরে নাম, জন্মতারিখ আর মৃত্যু তারিখ লেখা। প্রথমটায় লেখা আবির মাহমুদ, তারপর সুলতানা পারভীন।
শেষেরটা পড়তে গিয়ে তাজের গলা ধরে এলো, মুসকান মাহমুদ তিতির।
দু’কদম পিছিয়ে গেলো তাজ। মৃত্যু তারিখটা দেখলো আজ থেকে আরো পাঁচ বছর আগের। তাজের দৃষ্টি ঘোলা হয়ে গেলো। চোখেমুখে নেমে এলো অন্ধকার।
ঘোলাটে চোখে আহানের দিকে তাকিয়ে ভেঙে ভেঙে বললো, এসবের মানে কী আহান ?
আহান উদাস গলায় বললো, তুতুল আমার কাছে থেকেও নেই তাজ ভাইয়া। আমি চাইলেও আর কোনোদিন তুতুলের সাথে আপনার দেখা করাতে পারবো না। চাইলেও ফিরিয়ে দিতে পারবো না ধ্রুবকে তার মা। কারণ তুতুল আরো পাঁচ বছর আগে ধ্রুবকে এই পৃথিবীর আলো দেখিয়ে নিজেই হারিয়ে গেছে পৃথিবীর বুক থেকে। তাকে আপনি আর কোনোদিনই খোঁজে পাবেন না তাজ ভাইয়া।
ধৈর্যের বাঁধ ভালো তাজের। কেউ বুঝে উঠার আগেই তাজ জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়লো বকুল ফুল ছড়ানো ঘাসের বিছানায়।
সবুজ চিৎকার করে উঠলো, স্যার।
আহান হতভম্ব হয়ে তাকালো তাজের দিকে। আহান জানতো তাজ শক খাবে কিন্তু সেটা সামলে উঠতে পারবে না সেটা বুঝতে পারেনি। সবুজ দৌড়ে এসে তাজের সামনে বসে পড়লো।
৩০.
তিতিরের রুমেই শুয়ে আছে তাজ। ছোটবেলায় এটাই তিতিরের রুম ছিলো। যদিও একা কখনো থাকতো না এই রুমে। রুমটা আগের মতো নেই। বাড়িটা আগের হলেও অনেক কিছুই পরিবর্তন করতে হয়েছে৷ অনেক বছরের অযত্নে নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো অনেকটাই। আহানই সব ঠিকঠাক করিয়েছে। তাজের পাশে বসে আছে ধ্রুব। রুমে সকলেই উপস্থিত সাথে তাজের বাবা-মাও। সবুজের মাধ্যমে তাদেরও খবর দিয়ে এনেছে আহান। তাজের এখনো জ্ঞান ফিরেনি। এক্সিডেন্টের আঘাতই সামলে উঠতে পারেনি এখনো, তার মধ্যে এতবড় মানসিক আঘাত সহ্য করতে পারেনি। আহান দেখেছে তাজকে, এমনি প্রবেলম নেই তবে জ্ঞান ফিরতে একটু সময় লাগবে। ইরিনা ধ্রুবর সাথেই তাজের পাশে বসে নিঃশব্দে কান্না করছে আর মাঝে মাঝে ধ্রুবকে বুকে টেনে নিচ্ছে। সোফায় হতভম্ব হয়ে বসে আছে ইকবাল খান। আহানের থেকে তিতিরের মৃত্যুর কথা শুনে তারা সত্যি হতভম্ব।
ইকবাল খান তাকালো ধ্রুবর দিকে। তার বংশধর তার সামনে সহিসালামত বসে আছে একটা মেয়ের আত্মত্যাগের ফল হয়ে। যে মেয়েটাকে কিনা সে সবসময় অপছন্দ করে গেছে। সব সত্যিটা জানার পরও স্বার্থপর বসে আখ্যায়িত করে গেছে নির্দ্বিধায়। নিজের কাজে নিজেকে ধিক্কার জানাতে ইচ্ছে করছে ইকবালের। অর্থ, প্রতিপত্তি আর বংশমর্যাদার অহংকারে সবসময় ছোট করা মেয়েটার বংশপরিচয় তাকে আরো বেশি লজ্জিত করছে নিজের কাজে। অপরাধবোধ তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে কিন্তু তার থেকে মুক্তি পাওয়ার পথও নেই। কারণ মেয়েটার কাছে মাফ চেয়ে নিজের অপরাধবোধের বোঝা কমাতে পারবেন না কোনোদিন। বাকি জীবন এই অপরাধবোধের বোঝা মাথায় নিয়ে কাটাতে হবে। এসব ভেবে ইকবালের চোখ গেলো বিছানায় পড়ে থাকা ছেলের ক্লান্ত মুখশ্রীর দিকে। ইকবাল আজ বুঝতে পারছে তাজের কষ্ট। ছেলেটা যে গত প্রায় ছয়টা বছর ধরে এই অপরাধবোধ বয়ে বেড়াচ্ছে আর বাকি জীবনটাও বয়ে বেড়াতে হবে। নিজের ছেলের জন্য কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে ইকবালের। সহ্য করতে না পেরে এবার বের হয়ে গেলো রুম থেকে। ইরিনা ধ্রুবকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
ধ্রুব হঠাৎ বললো, বাবা কী ঘুমাচ্ছে ?
ইরিনা মুগ্ধ হয়ে শুনলো ধ্রুবর কথা। আসছে পরে ধ্রুব এই প্রথম কথা বললো। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, আসলের চেয়ে সুদ মিষ্টি। নাতিকে পেয়ে ইরিনার অবস্থাও তেমন।
,,,,,,
শুভ্র রঙের শাড়ি গায়ে জড়ানো, মাথায় সদ্য ফোঁটা সাদা গোলাপের ব্যান্ড। সাদা গোলাপের বাগানের মাঝে হেঁটে যাচ্ছে এক রমণী, কোমর ছাড়িয়ে যাওয়া লম্বা চুলগুলো বাতাসে দোল খাচ্ছে।
দাঁড়াও কে তুমি ?
রমণী ফিরে তাকালো না তাজের কথায়। তাজের কানে বারি খেলো খিলখিল হাসির আওয়াজ। সে হাসিতে তাজের বুক কেঁপে উঠলো। তাজকে উপেক্ষা করে সেই রমণী চলে যেতে নিলে তাজ পেছন থেকে তার হাত টেনে ধরলো।
“বুঝবে তুমি বুঝবে
যেদিন সব বুঝবে
হারিয়ে আমায় খুঁজবে
তবে দিনশেষে শূণ্য হাতে
নিজের নীড়ে ফিরবে
বিষাক্তফুল নেই আপন করতে
তার ঘ্রাণেও যে হবে প্রাণনাশ”
রমণী না হাত ছাড়ালো আর না তাজের দিকে ফিরে তাকালো। ছন্দ ছন্দে কথাগুলো বলে আবার খিলখিলয়ে হাসতে লাগলো। সে রমণীর হাত ছেড়ে দিলো তাজ।
অস্ফুটস্বরে বললো, তিতির ?
এবার ঘুরে তাকালো সে-ই রমণী, বাহ্ চিনে নিয়েছেন তবে।
তিতিরের চোখ ঝলসানো রুপে চোখ বন্ধ করে নিলো তাজ। তিতির এতটা সুন্দর হয়ে উঠেছে তাজের চোখ যেনো ঝলসে যাবে তার রুপের আগুনে। তবু আবারও তাকালো তাজ।
আমি তো আপনাকে ভালো থাকার জন্যই ছেড়ে এসেছিলাম তাজ। তবু আপনি কেনো আমাকে খুঁজছেন ? আমি তো আপনার সাথে সব হিসেব নিকেশ চুকিয়ে এসেছি তাজ।
তাজ অসহায় গলায় বললে, সত্যি কী সব হিসেব নিকেশ চুকানো হয়ে গেছে তিতির ?
মুচকি হাসলো তিতির, না একটা হিসেব এখনো বাকি রয়ে গেছে।
তিতির নিজের পেছন থেকে হাত ধরে বের করে আনলো ছোট্ট ধ্রুবকে। ছোট্ট ধ্রুবর ঠোঁটের কোণে ঝুলে আছে মিষ্টি হাসি।
এই হিসেবটা বাকি থেকে গেছে তাজ। মনে পরে সেই রাতের কথা ? সেই রাতের প্রমাণ আমার জীবনের ধ্রবতারা এই তাহিয়ান খান ধ্রুব। ও শুধু আপনার সন্তান নয় তাজ। আপনার সারাজীবনের শাস্তি, অনুশোচনা, অপরাধবোধ। আপনি যতবার ওর দিকে তাকাবেন নিজের অনুশোচনার আগুনে পুড়বেন। আপনি তো বলেন আমি আপনার জীবনের বিষাক্তফুল। যেখানে বিষাক্তফুলের ঘ্রাণেও হয় প্রাণনাশ সেখানে ধ্রুব এই বিষাক্তফুলের একটা অংশ তাজ। তাজ পারবেন তো বিষাক্তফুলের এই অংশ আগলে রাখতে।
তাজ কাঁপা গলায় বললো, পাড়বো।
তিতির ধ্রুবর ছোট হাতটা তাজের হাতে তুলে দিলো, তবে নিন আপনার শাস্তি।
ধ্রুবকে তাজের হাতে দিয়ে তিতির সামনে হাঁটতে লাগলো আবার।
তাজ পেছন থেকে চিৎকার করে বললো, দাঁড়াও তিতির যেও না। আমাকে একবার সুযোগ দাও মাফ চাওয়ার, একবার ফিরে এসো আমার জীবনে।
ধীরে ধীরে কুয়াশায় মিলিয়ে গেলো তিতির, তাজের হাতে রেখো গেলো তাজের শাস্তি।
তিতির বলে হুড়মুড়িয়ে উঠে বসলো তাজ। ঘামে সারা শরীরে ভিজে গেছে। জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো তাজ। অনেকটা সময় লাগলো নিজেকে সামলাতে। আশেপাশে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করলো কোথায় আছে৷ নিজের পাশে বেডে চোখ পড়তেই দেখতে পেলো ধ্রুব ঘুমিয়ে আছে তার পাশে। ফ্লোরে বসে বেডে মাথা রেখে ঘুমিয়েছে ইরিনা আর সোফায় ইকবাল। ধীরে ধীরে সব মনে পড়ে গেলো তাজের। অস্থির হয়ে উঠলো তাজ। পাশ থেকে ধ্রুবকে একহাতে কোলে তুলে নিলো। বের হয়ে গেলো রুম থেকে। দরজায় ধরাম করে শব্দ হলে ঘুম ভেঙে গেলো ইরিনার। বেডে তাজ বা ধ্রুব কাউকে না দেখে চোখের ঘুম উধাও হয়ে গেলো।
ওগো শুনছো ছেলেটা কোথায় গেলো আবার ?
ইরিনার কান্নারত চিৎকারে ঘুম ছুটলো ইকবালের। ইরিনার থেকে শুনে রুম থেকে বের হয়েই তাজকে ডাকতে লাগলো জোরে জোরে। আহান ঘুমায়নি তাই বের হয়ে এলো নিজের রুম থেকে। ইকবালের থেকে সবটা জেনে ছুটলো তিতিরের কবরের দিকে।
ঘুমন্ত ধ্রুবকে বুকে জড়িয়ে কবরের পাশে ধপ করে বসে পড়লো তাজ। কৃত্রিম আলোয় চারপাশ আলোকিত, তবে অন্ধকার নেমে এসেছে তাজের জীবনে। আদৌও কী আর কখনো কাটবে এই অন্ধকার ? না এ অন্ধকার কাটার নয়। তাজের চোখের পানি টপটপ করে পড়ছে তিতিরের কবরে।
প্লিজ ফিরে এসো তিতির। একবার মাফ চাওয়ার সুযোগ দাও। একটা ভুলের এতবড় শাস্তি তুমি কীভাবে দিতে পারো আমাকে ? একবার ফিরে এসো, তোমাকে অভিযোগ করার সু্যোগ দিবো না আর কোনোদিন।
ডুকরে কেঁদে উঠলো তাজ। তিতিরের কী একটুও মায়া হচ্ছে না তাজের উপর ?
চলেব,,,,