#_ফাগুন_প্রেম শেষপর্ব

0
768

#_ফাগুন_প্রেম শেষপর্ব

লেখনীতে: Bornali Suhana
💛
💛
ইভান বর্ণালীর কোমড় চেপে ধরে চোখ মারে। তার ঠোঁটের কোণে দুষ্টুমির হাসি লেগে আছে। দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে আসে। বর্ণালী এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে। লোকে দেখলে কি বলবে! রুমু বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরের কোলাহলে ভরপুর শহরকে দেখছিলো। ইভান ও বর্ণালীকে এভাবে একসাথে দেখে ওর ঠোঁটের কোণে প্রশস্ত হাসি ফুটে উঠে। ফোনটা কানেই লাগানো ছিলো ওদের এদিকে আসতে দেখে পরে কথা হবে বলেই কল কেটে দেয়।
-তাহলে সব ঠিকঠাক?
– হ্যাঁ আলহামদুলিল্লাহ, চলো।
-চলো মানে?
-তোমাকেও তো যেতে হবে। নাহলে যাচ্ছিনা।
বর্ণালীর ইভান ও রুমুর কথায় কোন মাথা ব্যথা নেই, ওর তো সম্পূর্ণ মাথা ব্যথা এখন আশেপাশের লোকজনের প্রতি। লোকজন কেমন বাঁকা চোখে ওদের দিকে তাকাচ্ছে।
-ইভান আমাকে নামাও, আশেপাশের সবাই দেখছে।
-তুমি চুপচাপ বসো তো আমি রুমুর সাথে কথা বলছি দেখো না? আর সবসময় লোকজন দেখছে তা দেখতেই ব্যস্ত থাকো কখনো নিজের এই বেচারা জামাইটাকেও তো দেখতে পারো।
বর্ণালী ভ্রু কুঁচকে তাকায়। রুমুর চোখ স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হয়ে আসে। জামাই! এই কথাটা ওর মাথায় ঢুকে না। কথাটা সে আর মনের ভেতর পুষে রাখতে পারেনা।
-জামাই মানে?
-আসলে আমরা একা একা বিয়ে করে ফেলেছি।
-কিহ! বর্ণ এসব কী?
-আরে ওইটা মজা করে তিনবার কবুল বলেছি শুধু তাতেই সে জামাই হয়ে বসেছে আমার।
রুমু বুকের উপর হাত রেখে হাসিতে ফেটে পড়ে, এ এক প্রানবন্ত হাসি। ঠিক কতদিন পর এভাবে হাসছে সে নিজেও জানেনা। বর্ণালীর রুমুর এই হাসিটা দেখে অনেক শান্তি লাগছে।
-আমি নিচে গাড়িতে যাচ্ছি তুমি তাড়াতাড়ি ব্যাগ গুছিয়ে আসো।
-ইভান আমার ছুটি নেই আমি আসতে পারবো না।
-তাহলে আমরাও যাচ্ছিনা। তোকে রেখে যাবো এটা তোর ভুল ধারণা। ইভান আমায় রুমে রেখে আসো।
-বর্ণালী প্লিজ বোঝার চেষ্টা কর।
-আমার যা বোঝার বুঝে গেছি। এবার সিদ্ধান্ত তোর।
রুমু কিছুক্ষণ ফোনের দিকে তাকিয়ে বললো,
-আচ্ছা তোরা যা আমি বসকে ইমেইল করে ছুটির জন্য এপ্লিকেশন করে আসছি।
-তাড়াতাড়ি আয়।
ইভান বর্ণালীকে নিয়ে গাড়িতে ওঠে।
-তুমি গাড়ি করে ঢাকা থেকে সিলেট আসছো?
– হ্যাঁ তাড়াতাড়ি আসার জন্য গাড়ি করেই আসলাম।
-আচ্ছা তুমি কি করে জানলে আমি এখানে এসেছি?
-রুমুর ভাইয়া যে অফিসে চাকরি করেন ওই কোম্পানিটা আমাদের। আর তুমি তার কাছে গিয়েছিলে। বাবা যখন জরুরী মিটিংয়ের জন্য অফিসে যান তখন ভাইয়া তোমার কথা বলে বাবাকে। সে সজিব ভাইয়াকে ফোনে ট্রাই করেছিলো কিন্তু পায়নি। সজিব ভাইয়ার ফোন নাকি অফ ছিলো। বাবা সাথেসাথে আমাকে তোমার এড্রেস মেসেজ করে কল দেয়। আমি খবর পেয়ে আর একটুও দেরি করিনি। তোমার কাছে আসার জন্য বের হয়ে পড়ি। এয়ারপোর্টে গিয়েছিলাম কিন্তু আর্জেন্ট টিকেট পাইনি তাই গাড়িতে করেই আসতে হলো।
-এতো কেন ভালোবাসো তুমি আমায়?
ইভান মৃদু হেসে বর্ণালীর হাতের তালুতে চুমু এঁকে বললো,
-আমার বাসন্তীটা যে ভালোবাসারই। সে আমায় ভালোবাসতে বাধ্য করেছে।
-কিন্তু ইভান আমাদের সম্পর্ক কি সবাই মেনে নিবে? আমাদের সমাজে একসাথে চলাটা কি সহজ হবে?
-হুস! তুমি, আমি আর আমাদের পরিবার সাথে থাকলে এই সমাজের কাউকে কোন জবাব দিতে হবে না।
বর্ণালী আর কোন কথা না বলে ইভানের একটা হাত জড়িয়ে ধরে বসে। ইভান আলতো করে তার কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দেয়। রুমু এসে পেছনের উঠে সিটে বসে।
-এতো দেরি হলো যে?
– হ্যাঁ ব্যাগ গোছাতে দেরি হয়েছে।
ইভান গাড়ি স্টার্ট দেয়। ওর ঠোঁটের ভাঁজে হাসি লেগেই আছে। কিন্তু বর্ণালীর কপালে চিন্তার সূক্ষ্ম রেখা। রুমুর মনটা অজানা কোন কারণে অনেকটা ফুরফুরে। আজকে যেনো সবকিছুই সুন্দর মনে হচ্ছে।
👇
বাসায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে৷ ইভান কল দিয়ে বলছে ওরা প্রায় পৌঁছে গেছে। আত্মীয় স্বজনরা কেউ নেই শুধু বর্ণালীর পরিবার ও ইভানের পরিবার। কাজী সাহেব অপেক্ষা করছেন কখন বর-বধু আসবে। আজকেই বিয়ে হচ্ছে তাদের। কিন্তু বড় কোন আয়োজন হচ্ছে না। এই সারপ্রাইজটা ইভানের মা-বাবার করা। ইভান নিজেও জানেনা আজকে ওর বিয়ে হতে যাচ্ছে তার বাসন্তীর সাথে। বর্ণালীর বাবা হাবিব হাসান হয়তো আগে হলে এই সম্পর্ক মেনে নিতেন না। কিন্তু এখন বর্ণালীর অনেক বড় একটা খুঁত তৈরি হয়েছে। ও একটা অঙ্গহীন হয়ে গেছে। কোন ভালো পরিবার বা ভালো ছেলে বর্ণালীকে এই অবস্থায় মেনে নিবে না। তাই চুপচাপ মেয়ের খুশি আর অবস্থা ভেবে রাজি হয়ে গেছেন। শারমিন বেগম আর সজিব তো আগে থেকেই রাজি। ঈশার ব্যস্ততার শেষ নেই। দীপু হাঁপাতে হাঁপাতে ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করে। রানু ভয়ে দৌড়ে আসে।
-কি হইছে তোমার? এইভাবে হাঁপাইতাছো ক্যান?
ঈশা ওর সামনেই ছিলো। চোখ বড় বড় করে তাকাতেই রানু গলা ঝেড়ে বললো,
-কি হয়েছে তোমার? এভাবে হাঁপাচ্ছো কেন?
-খালাম্মা দাভাই আসছে।
সাহারা ইসলাম প্রশস্ত হাসি মুখে রান্নাঘর থেকে শাড়ির আঁচলে হাত মুছতে মুছতে দৌড়ে আসেন। তার উৎসুক চোখজোড়া শুধু ইভান ও বর্ণালীকে একসাথে দেখার আশায়। ইভান বর্ণালীকে কোলে করে ভেতরে প্রবেশ করে। তাদের দুজনকে এভাবে দেখে সবার চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলছে। বর্ণালী সবার সামনে ইভানের কোলে চড়ে বসে আছে এই বিষয়টা নিয়ে অনেকটা ইতস্তত অনুভব করছে। ফিসফিস করে ইভানের কানে বললো,
– এখন নামাও ইভান।
ইভান ওর কোন কথা না শুনে শারমিন বেগমের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
শারমিন বেগম শব্দ করে কান্না করে দেন। বর্ণালীর চোখের জলও বাঁধ মানে না। মায়ের বুকে নিজেকে ছেড়ে দেয়। মা পরম আদরে তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেন।
-কীভাবে পারলি তুই আমাদের ছেড়ে যেতে? তোর কি একটুও কষ্ট হলো না? একটাবারের জন্যেও তোর এই মায়ের কথা ভাবলি না?
-সরি মা, আমি তোমাদের উপর বোঝা হয়ে থাকতে চাইনি। তাই সবাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম।
কান্নার জন্য কথা বলতে পারছে না বর্ণালী। ভেঙে ভেঙে আওয়াজ বের হচ্ছে। কান্না করতে করতে হিচকি তুলছে। বাবা, সজিব, ঈশা সবার সাথে কথা বলে বর্ণালী। পেছনে যে আরেকজন দাঁড়িয়ে আছে সেদিকে কেউ খেয়ালই করে নি। ঈশার চোখ সবার আগে রুমুর উপর গিয়ে পড়ে। ঈশা রুমুর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বেখেয়ালিভাবেই বললো,
-রুমু!
সবাই পেছনে তাকায়। রুমুকে তাদের সাথে দেখবে কেই আশাই করেনি। ঈশা দৌড়ে গিয়ে রুমুকে জড়িয়ে ধরে। চোখের জল যেনো বাঁধা মানছে না।
-অ্যাম সরি রুমু, অ্যাম সরি।
-তুই কেন সরি বলছিস?
-আমার জন্যই সব হয়েছে।
-ঈশা চুপ কর সবাই শুনলে কী ভাববে?
ঈশা চুপ হয়ে যায়। সজিব দূরে দাঁড়িয়ে রুমুর সাথে মৃদু হাসি বিনিময় করে। শারমিন বেগম রুমুর কাছে এসে জড়িয়ে ধরেন।
-এতোদিন কীভাবে থাকতে পারলি আমাদের ছাড়া? জানিস বর্ণের কি অবস্থা হয়েছিলো তুই যখন ছিলি না? তোকে কি বলবো তোরা দুজনই তো এক পথের পথিক। তুইও সবাইকে না জানিয়ে হুট করে চলে গেলি আর আমার এই পাগলী মেয়েটাও ঠিক একই কাজ করেছিলো। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানী তোদের আবারো আমার বুকে ফিরে পেয়েছি।
সাহারা ইসলাম খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে আবেগঘন ভালবাসার মুহুর্তটাকে মন দিয়ে দেখছেন। আজ তার জন্যই বর্ণালীর এই অবস্থা। তিনি নিজেকে কোনদিনই ক্ষমা করতে পারবেন না। ইভান তার মাকে দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললো,
-মা এখানে এসো। দেখো, তোমার বউমাকে নিয়ে এসেছি।
সাহারা ইসলাম ধীর পায়ে বর্ণালীর কাছে আসেন। তার হাত দু’টো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললেন,
-আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না রে মা?
-ছিঃ ছিঃ আন্টি এসব কি বলছেন? আপনি আমার মায়ের সমান। আমার সাথে এভাবে কথা বলে ছোট করবেন না।
সাহারা ইসলাম কান্না করে দেন। কাঁপা কাঁপা হাতে বর্ণালীকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরেন। রুমুকেও বুকে নিয়ে ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করেন।
-ঈশা আর রুমু তোরা আমার বউমাকে নিয়ে যা, তৈরি করে নে। আর সজিব তোমার বোনের জামাইকে নিয়ে গিয়ে তৈরি করে দাও।
বর্ণালী ও ইভান দুজনেই অবাক চোখে সাহারা ইসলামের দিকে তাকায়।
-মা কিসের জন্য তৈরি হবো?
-আজকে আমার ছেলের বিয়ে তাই তৈরি হবে। আমার ছেলে বর সাজবে আর আমার মেয়েকে বউ করে ঘরে নিয়ে আসবে। নাহ বউ হয়ে না তুমি আমার মেয়ে হয়েই থাকবে।
বর্ণালীর চিবুকে হাত রেখে কপালে চুমু এঁকে দেন সাহারা বেগম।
-কিহ!
-হ্যাঁ আজ তোমাদের বিয়ে। আমরা সবাই এজন্যই একত্রিত হয়েছি।
বর্ণালী তার মা-বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। দুজিনে হেসে চোখের পলক ফেলে হ্যাঁ সূচক ইশারা করেন। ইভান চট করে বর্ণালীকে কোলে তুলে নেয়। বর্ণালীর চোখজোড়া স্বাভাবিকের চাইতে বড় করে নেয়।
-কি, কিহ করছো ইভান!
-হুস! আমার বউকে আমি নিয়ে যাচ্ছি উপরে। বুমনি আজ আমার বাসন্তীকে এমনভাবে সাজাবে যেনো নজর না সরাতে পারি। আর সজিব ভাইয়া আমাকে এমনভাবে তৈরি করবে যেনো আমার বাসন্তী তার বসন্তপথিকের থেকে নজর না সরাতে পারে।
বর্ণালী লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। এই ছেলেটা তাকে সবার সামনে এভাবে লজ্জায় না ফেললেও পারতো। বিয়ের পর তাকে দেখে নেবে।
ইভান বর্ণালীকে ঈশার রুমে এনে নামায়। রুমু ও ঈশা রুমে ঢুকতে চাইলেই তাদের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে বললো,
-৫মিনিট আমার বউয়ের সাথে কথা বলে নেই তারপর আসবে তোমরা।
-ইভান এসব কী করছো?
বর্ণালীকে বিছানায় বসিয়ে ইভান তার পাশে বসে।
-আজকে ইসলামিক নিয়মে আমাদের বিয়ে হতে যাচ্ছে।
– হ্যাঁ তো?
ইভান বর্ণালীর আরেকটু কাছে ঘেঁষে বসে। ওর গালের উপর হাত রেখে বৃদ্ধাঙুলি দিয়ে ঠোঁটের উপর স্পর্শ করে। বর্ণালী চোখ বন্ধ করে নেয়। ওর ঠোঁট ভীষণভাবে কাঁপছে।
-বিয়ের আগের শেষ চুম্বনটা হয়ে যাক? আজকের পর তো তোমাকে আর প্রেমিকা হিসেবে পাবো না। বউ হিসেবে কাছে পাবো। শেষবার প্রেমিকা হিসেবে কাছে পেয়ে নেই?
বর্ণালী কোন কথা না বলে ডান হাত ইভানের কোমড়ের পাশে রাখে। ইভান মৃদু হেসে বর্ণালীর কম্পিত ঠোঁটজোড়া নিজের দখলে নিয়ে নেয়। নিশ্বাসের সাথে পাল্লা দিয়ে ঠোঁটের চলন গভীর হচ্ছে।
👇
বর্ণালী ইভানের রুমে তার বউ সেজে বসে আছে। এখন সে ইভানের অর্ধাঙ্গিনী। কিছুক্ষণ আগেই তারা দ্বিতীয়বার কবুল বলে একে অপরকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে। সজিব আর ঈশা থেকে গেছে এখানে শুধু বর্ণালীর মা-বাবা বিদায় নিয়েছেন। যেখানে বর্ণালী বিদায় হয়ে স্বামীর বাড়ি আসার কথা ছিলো সেখানে ওর বিয়েই স্বামীর বাড়িতে হয়েছে। বিদায়ের কোন সুযোগ পায়নি। কিন্তু মা-বাবাকে বিদায় দেয়ার সময় সে অনেক কান্না করেছে। বিদায় না হলেও বিদায়ের কষ্টটা ঠিকই উপলব্ধি করতে পেরেছে। ঈশা বর্ণালীর পাশেই বসে আছে। রুমু তার ফোন রেখে ওয়াশরুমে গেছে। সেই কখন থেকে তার ফোন বারবার বেজে যাচ্ছে। বর্ণালী ফোনের স্ক্রিনে তাকাতেই “Ainan” নামটা ভেসে ওঠে। আইনান ভাইয়ার রুমুর সাথে কথা হয়! বর্ণালী কিছুটা অবাক হয়েই ফোন রিসিভ করলো।
-পাগলী কোথায় তুমি? এখনও কি আমার অপেক্ষার পালা শেষ হয়নি?
রুমু টুক করে বর্ণালীর হাত থেকে ফোন নিয়ে বললো,
-আমি তোমায় পরে কল দিচ্ছি।
ভয়ার্ত চোখে বর্ণালীর দিকে তাকায় রুমু।
-তাহলে এতোদূর?
-আসলে আমি তোকে বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু সুযোগ পাইনি।
বর্ণালী রুমুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ওর গালে চুমু এঁকে দেয়।
-উফ! রুমু আমি তোর জন্য অনেক খুশি রে। কবে বিয়ে খাচ্ছি?
– ইনশাআল্লাহ সব ঠিক থাকলে আগামী মাসেই।
ইশা এগিয়ে এসে তাদের দুজনকে একসাথে জড়িয়ে ধরে বললো,
-আমিও অনেক খুশি।
তাদের কথার মাঝেই ইভান এসে হাজির হয়।
-শেষ হলো তোমাদের? এবার তো আমাদের একা ছেড়ে দাও।
রুমু ও ঈশা “অল দা বেস্ট” বলে বের হয়ে আসে রুম থেকে। ইভান বর্ণালীকে কোলে তুলে ব্যালকনিতে যায়। সোফায় বসিয়ে সে তার কোলে মাথা রাখে। বর্ণালী মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগে।কপালে আলতো করে চুমু এঁকে দেয়। ইভান চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। পাশ ফিরে বর্ণালীর শাড়ি সরিয়ে মুখ গুজে দেয় পেটে। ঠোঁট চেপে ধরে তার পেটের ভাঁজে। বর্ণালী শিউরে উঠে ইভানের চুল খামচে ধরে। ইভান ব্যথা পেয়ে চোখ কুঁচকে বন্ধ করে মুখ সরিয়ে নেয়। বর্ণালীর চেহারা চাঁদের আলোয় আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। মনে হচ্ছে কোন এক পরী নেমে এসেছে আজ ইভানের ঘরে৷
-এই বাসন্তী আজও বলবেনা ভালোবাসো? এখন তো বিয়েও হয়ে গেলো আমাদের। পার্মানেন্ট হাজবেন্ড ওয়াইফ এখন আমরা।
বর্ণালী চোখ খুলে ইভানের মাথা কোল থেকে তুলে। ইভান উঠে বসে। তার বুকে মাথা রাখে বর্ণালী। ইভানের বুকের উপর কয়েকটা বোতাম খুলে আলতো করে চুমু এঁকে বললো,
-ভালোবাসি বসন্তপথিক।
আজ প্রথম বর্ণালী ইভানকে ভালোবাসি বললো তাও বসন্তপথিক ডেকে৷ তার উষ্ণ নিঃশ্বাস গভীর ভালোবাসার জানান দিচ্ছে। ইভান আরেকটু শক্ত করে বর্ণালীকে তার বুকের মাঝে চেপে ধরে। এভাবেই তার বাসন্তীকে বুকে নিয়ে সারাটি জীবন কাটিয়ে দিতে পারবে।
💛
💛
#_____সমাপ্ত_____
[বিঃদ্রঃ “ফাগুন প্রেম”-একটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক কাহিনী ও চরিত্র অবলম্বনে তৈরি। কারো জীবনের সাথে মিলে গেলে এটি একান্তই কাকতালীয়। বাস্তবতার ছোঁয়া উপন্যাসে রয়েছে। অনেক জায়গায় ভালো-মন্দ দু’দিকই লিখতে হয়েছে। তাই ভালো জিনিসগুলোকে গ্রহণ করুন এবং খারাপ জিনিসগুলোকে বর্জন করুন। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ভালো ও সুস্থ থাকুন। ভালোবাসা নিবেন❤। আল্লাহ হাফেজ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here