#__ফাগুন_প্রেম___পর্বঃ ২৯ +৩০
#_লিখাঃ Bornali Suhana
💛
-“আমরা আপনার ছেলের জন্য আমাদের মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছি।”
সজিব এসব শুনে বিশ্বাস করতে পারছেনা। এই মেয়ে এসব কি করেছে? ও তো এই পরিবারের সাথে মানিয়ে নিতে পারবে না। আমাদের সাথে সে কখনোই সুখী থাকবেনা। কেন বুঝেনা এই মেয়েটা।
বর্ণালীর চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। এখানে কি হচ্ছে কিছুই ওর মাথায় আসছেনা।
সজিবের বাবা একবার তার দিকে তাকিয়ে উনাদের উদ্দেশ্য করে বলেন,
-“মানে বুঝলাম না?”
-“আসলে আমার মেয়ে ঈশা আপনার মেয়ের বান্ধবী। আর ও সজিবকে অনেক পছন্দ করে। তাই…”
বর্ণালী প্রায় আকাশ থেকে পড়ে। ঈশা ভাইয়াকে ভালোবাসে? এটা কিভাবে সম্ভব? ও তো কখনোই এমন কিছু বলে নি। হ্যাঁ আজকে যখন রুমুর সাথে ভাইয়ার বিয়ের কথা বলেছিলাম ওর তখন মন খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। হুট করে চলেও গিয়েছিলো। কিন্তু ভাইয়াও কি ঈশাকে ভালোবাসে!!! বর্ণালীর ভাবনায় ছেদ পড়ে ওর বাবার কথায়।
-“তাই আপনারা চাইছেন আপনাদের মেয়েকে আমার ছেলের বউ করে আনবো?”
-“জ্বি ভাইসাহেব।”
-“সজিবের যদি এতে মত থাকে তাহলে আমাদের কোন আপত্তি নেই।”
সজিব এতোক্ষণ চুপচাপ শুনছিলো।
-“দেখুন আংকেল ঈশা আমার সাথে মানিয়ে চলতে পারবেনা। আমি কখনোই ওর বড় কোন চাওয়া পূরণ করতে পারবো না।”
ঈশার বাবা-মা একে অপরের দিকে তাকিয়ে খানিকটা হাসলেন। তারপর ঈশার মা বললেন,
-“আমরা কখনোই আমাদের মেয়েকে কোন কিছুর কমতি রাখিনি। আর ঠিক তোমার বলা এই কথাটাই একটু আগে আমি ওকে বলেছিলাম। কিন্তু ওর একটাই উত্তর। সে মানিয়ে নিতে পারবে।”
-“আসলে বাবা আমার মেয়েটা অনেক ধৈর্যশীল। ও কখনোই তোমার কাছে কোন দামী উপহার চাইবে না। যে মেয়ে আমাদের কাছেই কিছু চায় না সে তোমার কাছে কিভাবে চাইবে? আমি তো ওর বাবা আমি ওর মুখ দেখেই বুঝতে পারি ওর কখন কি চাই। আর আমার মেয়ে ওর জীবনে এই দ্বিতীয়বার কোন একটা জিনিস চেয়েছে। তুমিই বলো আমরা ওকে কীভাবে না করি?”
ঈশার বাবা কথাগুলো বলে একটা গভীর নিশ্বাস নিয়ে বসলেন। সজিবের উত্তরের অপেক্ষায় সবাই ওর দিকেই তাকিয়ে আছে৷ কারো বুক ধুকপুক করছে। হার্ট দ্রুত বিট করছে। কোন একটা কথা শোনার জন্য কৌতুহলী হয়ে তাকিয়ে আছে।
-“আমি ঈশাকে বিয়ে করতে রাজি কিন্তু একবার ওর সাথে কথা বলতে চাই।”
বর্ণালী খুশি হবে কি হবেনা কিছুই বুঝতে পারছেনা। ওর যতটা না খারাপ লাগছে কেন জানি মনের মাঝে একটা ভালোও লাগছে। কিন্তু ওর কোনটা উপভোগ করা উচিত তা বুঝতে পারছেনা।
ঈশার মা বললেন,
-“আমরা আপনাদের কাছে আমাদের মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব রাখলাম। আর কালকে আপনাদের সবার দাওয়াত রইলো। কাল যদি আপনারা চলে আসেন আমাদের বাসায় তাহলে মনে করবো আপনাদের কোন আপত্তি নেই এই বিয়েতে। তাহলে কালকেই এনগেজমেন্ট করিয়ে বিয়ের তারিখ ঠিক করে নিবো। আমরা আপনাদের অপেক্ষায় থাকবো।”
কথাটা বলেই তারা উঠে দাঁড়ান চলে যাওয়ার জন্য। তখনি বর্ণালীর মা বলেন,
-“কোথায় যাচ্ছেন? আপনারা বসেন প্লিজ। কিছু না খেয়ে যেতে নেই।”
-“এ বাড়িতে আর নিজের মেয়েকে দিয়ে তবেই কিছু খাবো আপা। আর সবচেয়ে বেশি মিষ্টিটাই খাবো।”
সাহারা ইসলাম কথাটা বলেই একগাল হাসলেন। সজিবের কাছে এসে বললেন,
-“আমার মেয়ে অনেক ভালো বাবা। তোমাকে আর তোমার পরিবারকে অনেক সুখেই রাখবে।”
-“আমরা শুধু আমাদের মেয়ের সুখ চাই। আর আমার মেয়ের সুখ আপনাদের পরিবারের মাঝেই। বেয়াই বানানোর অপেক্ষায় রইলাম।”
ফারহান সাহেব কথাটা বলেই বর্ণালীর বাবার সাথে হাত মিলিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেলেন। সাহারা বেগমও তার পিছু পিছু বেরিয়ে গেলেন।
এই মুহুর্তে পরিবেশটা কেমন থমথমে হয়ে আছে। সজিব আর না দাঁড়িয়ে নিজের রুমে চলে যেতে চাইলেই ওর মা বলেন,
-“তুই কি ঈশাকে পছন্দ করিস?”
সজিব কোন কথাই বলছেনা চুপ হয়ে আছে। তার এই মুহুর্তে কি বলা উচিত ভেবে পাচ্ছেনা। কিন্তু সে তো ঈশাকে পছন্দ করে। তাহলে কেন বললে কি সমস্যা?
-“কি হলো কিছু তো বলো? তুমি কি ঈশাকে পছন্দ করো?”
সজিবের বাবা খুব শান্ত গলায় কথাটা বললেন। সজিব আর চুপ না থেকে বললো,
-“হ্যাঁ করি।”
-“তাহলে কাল আমরা ঐ বাড়িতে যাচ্ছি। সব রেডি করো সজিবের মা। তোমার ছেলের যে বিয়ে।”
সজিবের মা ওর মাথায় হাত বুলিয়ে হেসে খেতে চলে গেলেন। বর্ণালী ভাইয়ের দিকে এগিয়ে আসছে। ওর যে মনটা কেমন খচখচ করছে। সবটা যে জানা প্রয়োজন। রুমু বর্ণালীর দিকে তাকিয়ে হেসে আলতো করে দরজা থেকে সরে রুমের ভেতর চলে গেলো।
-“ভাইয়া কিছু কথা ছিলো।”
-“রুমে আয়।”
বর্ণালীর মা-বাবা খাবার টেবিলে বসে খাচ্ছেন আর কালকের দিন নিয়ে আলোচনা করছেন কিভাবে কি করবেন। রুমু বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে মোবাইলটা হাতে নিলো।
বর্ণালী সজিবের রুমে এসেই জিজ্ঞেস করলো,
-“এসব কবে শুরু হয়েছে?”
-“ও আমাকে ভালোবাসে আমিও ওকে ভালোবাসি। কিন্তু আমাদের মাঝে প্রেম বা ভালোবাসার কোন সম্পর্ক কখনোই তৈরি হয় নি। ওদের এতো ভালো অবস্থা দেখে আমি কখনোই এগুতে চাই নি। কিন্তু ও জোর করেছে অনেক বার। জানিনা আজ হুট করে কেন এভাবে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়ে বসলো।”
-“আমি জানি।”
-“মানে?”
-“কিছুনা। আচ্ছা ভালোই হয়েছে তোমরা দুজন দুজনকে যখন ভালোবাসো তাহলে তো হয়েই গেলো।”
-“কিন্তু আমি কি ওকে সুখী রাখতে পারবো?”
-“কেন পারবে না? আর আমি যতদূর ঈশাকে চিনেছি ও ওইসব মেয়েদের মতো না যাদের দামী গিফট, দামী রেস্টুরেন্টে খাওয়া, সপ্তাহে একদিন ঘুরাঘুরি আর তিনদিনে একদিন শপিং এসব কিছুই ওর মাঝে নেই। ও অনেক ভালো তুমিও সুখী হবে আর ঈশাও আমার ভাইকে পেয়ে অনেক সুখী হবে। আমি জানি আমার ভাই তার বউকে কখনোই কোন অপ্রাপ্তিতে রাখবে না।”
সজিব চুপ করে তার বোনের কথা শুনে গেলো। তার বোনটা অনেক বড় বড় কথা বলতে শিখে গেছে। যত দেখছে ততোই অবাক হচ্ছে ও। বর্ণালী একগাল হেসে নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায়। আজ ওর মনটা বড় অশান্ত। কিছুতেই বুঝাতে পারছেনা। ঈশাকে নিজের ভাইয়ের বউ হিসেবে কেন যেনো মানাতে পারছেনা। ও তো রুমুকে ওর ভাইয়ের বউয়ের সাজে দেখতে চেয়েছিলো। ভাবী হিসেবে রুমুর প্রতিচ্ছবিই এঁকেছিলো।
⬇
-“নতুন জীবনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো।”
সজিব মোবাইল হাতে নিতেই এমন একটা মেসেজ ভেসে আসলো সেই আননউন নাম্বার থেকে। অনেক বেশি অবাক হলো সজিব। কে এই মানুষ? সবসময় আমার এতো খবর রাখে কিভাবে? কেন এই মানুষটা আমাকে সবসময় মেসেজ করে? কেন কল দেয়?
কল দিলেও তো কথা বলেনা। নানা ধরনের প্রশ্ন ঘুরঘুর করছে সজিবের মাথায়। ঠিক তখনই কল আসে। ফোনের স্ক্রিনে ঈশার নাম দেখে সজিব রিসিভ করে। দুজনেই এই মুহুর্তে নিশ্চুপ হয়ে আছে। কেউ কারো সাথে কথা বলছেনা। কিছুক্ষণ পর নিশ্চুপতাকে মুছে দিয়ে সজিবই হলে,
-“কেমন আছো?”
কথাটা বলতেই ঈশা হাউমাউ করে কেঁদে দেয়। সজিব অনেক কথাই বলছে ওকে চুপ করানোর জন্য। এবার একটু রেগেই বললো,
-“এই মেয়ে চুপ করবে নাকি কল কেটে দিবো?”
ঈশা কান্না বন্ধ করে হেচকি তুলতে তুলতে বলে,
-“আয়ায়ামি আসলে কাল ওই কথা এমনি বলেছিলাম। সরি।”
-“হুম আমিও তোমাকে না বুঝে মারাটা উচিত হয় নি। ভুল আমারো হয়েছে সরি।”
-“না তুমি কেন সরি বলবে ভুল তো আমার হয়েছে।”
-“আচ্ছা যাও দুজনেই সরি। এখন এসব বাদ দিয়ে ঘুমাও।”
-“সজিব তুমি আসবে তো কাল?”
-“খেয়ে ভালো মেয়ের মতো এখন ঘুমাবে তুমি। যাও বলছি।”
-“আমি অপেক্ষা করবো সজিব।”
-“শাড়ি পড়ো কেমন?”
-“আচ্ছা।”
ঈশা কথাটা বলেই ৪৪০ ভোল্টের শক খায়। বসা থেকে উঠে চোখ বড় বড় করে আবারো জিজ্ঞেস করে,
-“কি বললে? সত্যি তুমি আসবে সজিব?”
-“হুম আসবো। না এসে যাবো কোথায়?”
-“আই লাভ ইউ সজিব আই লাভ ইউ সো মাচ।”
-“হুম এবার ঘুমাও।”
-“তুমি বলবে না?”
-“কি?”
-“আমার কথার জবাব?”
-“কাল সামনে এসে বলবো। রাখছি এখন তুমি খেয়ে ঘুমাবে।”
ঈশা লজ্জায় লাল হয়ে উঠে। কাল ওর স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। মোবাইলটা রেখে চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ে ঈশা। আজকে রাত ৩জন মানুষের ঘুম হবে না। ঈশার ঘুম হবেনা এই ভেবে,
কখন কাল ওর সজিব এসে ওকে ভালোবাসি কথা বলবে।
সজিবের ঘুম হবেনা এই ভেবে,
কখন সকাল হবে আর কখন ওর ভালোবাসার মানুষকে ভালোবাসি কথা বলবে।
আরেকজন সেই অপরিচিতা,
যার ঘুম হবেনা এই ভেবে যে ও যাকে ভালোবাসলো তাকে তো ভালোবাসি কথাটাও বলতে পারলো না। এর আগেই অন্য কেউ এসে তার থেকে তার ভালোবাসাটা চুরি করে নিয়ে গেলো।
⬇
বর্ণালী ফোন দিয়ে স্কুল থেকে ছুটি নিয়েছে। আজকে তার ভাইয়ের এনগেজমেন্ট তাকে তো যেতেই হবে। রুমু থাকায় ভালোই হলো ওকেও সাথে নিয়ে যাবে। কিন্তু বর্ণালী একটুও আঁচ করতে পারছেনা আজকে ওর জন্য কত বড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে।
আর এই সারপ্রাইজটা যে ওর জন্য একটা বড় ধরনের ধাক্কা হবে তা তো ও কখনো স্বপ্নেও ভাবেনি।
💛
#______চলবে………
#___ফাগুন_প্রেম___
#_লিখাঃ Bornali Suhana
#_পর্বঃ ৩০
💛
বর্ণালী ফোন দিয়ে স্কুল থেকে ছুটি নিয়েছে। আজকে তার ভাইয়ের এনগেজমেন্ট তাকে তো যেতেই হবে। রুমু থাকায় ভালোই হলো ওকেও সাথে নিয়ে যাবে। কিন্তু বর্ণালী একটুও আঁচ করতে পারছেনা আজকে ওর জন্য কত বড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে।
আর এই সারপ্রাইজটা যে ওর জন্য একটা বড় ধরনের ধাক্কা হবে তা তো ও কখনো স্বপ্নেও ভাবেনি।
👇
সজিব অনেকদিন পর আজ পাঞ্জাবী পড়েছে। ভালো করে পারফিউম মেরে নিজেকে আরেকবার আয়নায় দেখে নিলো। হুম খারাপ লাগছেনা ওকে।
ঈশা সেই কখন থেকেই শাড়ি পড়ে সেজেগুজে বসে আছে। নিজেকে ঠিক কতবার আয়নায় দেখেছে তার কোন হিসেব নেই। সব ঠিক হওয়া চাই ওর।
সজিবের ফোনে ঈশা সেই কখন থেকে কল মেসেজ করে যাচ্ছে কিন্তু সজিব একটা কল বা মেসেজের রিপ্লে দিচ্ছে না। সে গিয়েই একেবারে সারপ্রাইজ দিতে চায়। সজিব বাসার এড্রেস জানে তাই আর বাসা চিনতে কোন প্রবলেম হয় নি। সবাই বাসা দেখে কিছুক্ষণের জন্য থমকে যায়৷ রুমু আর বর্ণালী একে অপরের দিকে তাকিয়ে দুজনেই একসাথে বলে উঠে,
-“ঈশা এত্তো বড়লোক!!!!”
বর্ণালী রুমুর দিকে তাকিয়ে আবার বলে,
-“ঈশাকে তো দেখে বুঝা যায় না রে ও যে এত্তো বড়লোক।”
-“হ্যাঁ আসলেই সবসময় কেমন সাদাসিধে থাকে।”
সজিবের বাবা এগিয়ে এসে বলেন,
-“চলো ভেতরে যাওয়া যাক।”
সবাই ভেতরে ঢুকতেই দরজা খুলে দেয় একটা মেয়ে। বর্ণালী মনে মনে ভাবছে মনে হয় এই মেয়েটা ঈশার বোন হবে। কিন্তু ওর কথা বলার ধরন শুনে ওর ধারণা পালটে গেলো।
-“আসেন আপনেরা ভেতরে আসেন। আমি আম্মারে ডাকতাছি।”
এবার বর্ণালী পুরো ক্লিয়ার। মেয়েটা কাজের মেয়ে। কিন্তু এতো সুন্দর আর গোছানো মেয়ে দেখলে প্রথমবার কেউই বুঝবে না যে ও কাজের মেয়ে।
রানু দৌড়ে গেলো ঈশার রুমে। দরজা খুলতেই,
-“রানীসাহেবা ওরা এসেছে?”
রানু একগাল হেসে হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে বললো,
-“হ্যাঁ গো বুমনি। আমাদের দুলাভাই ও তার পরিবারের সবাই আসছে।”
ঈশার মুখের হাসিটা অনেকগুন বড় হয়ে যায়। রানুকে উদ্দেশ্য করে বলে,
-“সুন্দরভাবে কথা বলবে কিন্তু সবার সামনে।”
রানুর হাসিটা গায়েব হয়ে যায়। একটু আগেই নীচে ও যে ভাবে কথা বলে এসেছে এটা ঈশা জানতে পারলে ওকে আস্ত রাখবে না।
-“মা, বাবা আর ইভু কোথায়?”
-“আম্মাজান আর আব্বাজান গিয়েছেন নীচে আর দাভাই বাসায় আসেনি এখনো।”
-“আচ্ছা তুমি যাও আমায় ডাকলে নিতে এসো।”
-“আচ্ছা বুমনি।”
রানু আবারো দ্রুত পায় নীচে নেমে আসে। ড্রয়িংরুমে সবাই গল্পে মেতে উঠেছে। সকাল থেকেই রান্না শুরু করে এখন শেষ হয়েছে রানুর। সবাইকে নাস্তা দেয়ার জন্য রান্নাঘরে চলে যায় রানু।
👇
নানারকম নাস্তা সজিবদের সামনে সাজিয়ে দেয়া হয়েছে। একটু-আধটু খাচ্ছে। কেন জানি এই পরিবেশের সাথে কেউ মানাতে পারছেনা। নিজের চাইতে উচ্চবিত্তদের মাঝে গেলে এমনি হয়। নিজেকে কেমন ছোট ছোট মনে হয়। যদিও ঈশার পরিবার অনেক ভালো। কত সুন্দর করে ওদের সাথে কথা বলছেন। মনে হচ্ছে কত জীবনের পরিচয়। বর্ণালী আর রুমুর চোখ ঈশাকে খুঁজছে। বর্ণালী জিজ্ঞেস করেই বসে,
-“আন্টি ঈশা কোথায়?”
-“ও তো রুমেই আছে। তোমরা বরং ওর রুমে যাও। রানীসাহেবা ওদের ঈশার রুমে নিয়ে যাও তো।”
বর্ণালী অনেকটা অবাক হয়। বাহ!!! এই মেয়েটাকে তো ভারী সুন্দর নামে ডাকা হয়। রানীসাহেবা!!! এরকম নামও কেউ দেয়!!!
বর্ণালী আর রুমু উঠে দাঁড়ায়।
-“আসেন আপু।”
রানুর কথায় এখন বেশ পরিবর্তন লক্ষ্য করছে বর্ণালী। রানুর পেছন পেছন তারা এগিয়ে যাচ্ছে। রুমের দরজা খুলতেই ঈশা দৌড়ে আসে।
-” আমায় ডেকেছে?”
রানু থমকে গেছে ঈশার কথা শুনে। পেছনে রুমু আর বর্ণালী আছে সেটা যে ঈশা দেখে নাই তা ভালো করেই বুঝতে পারলো রানু। চোখ দিয়ে ইশারা করে পেছনের কথা কিছু একটা বুঝাতে চেষ্টা করলো। ঈশার সেদিকে কোন খেয়ালই নেই।
-“কি হলো বলো না রানীসাহেবা।”
-“কি বলবে?”
পেছন থেকে বর্ণালী সামনে এসে কথাটা বলে। ঈশা চোখ তুলে তাকিয়ে বর্ণালীকে দেখে ভয়ে ওখানেই জমে যায়। এবার বর্ণালীকে কি জবাব দেবে ও!! রানু মাথা নেড়ে ওদের দেখিয়ে বাইরে চলে যায়।
ঈশার চোখে তীব্র ভয় এসে জমেছে। বর্ণালী তা স্পষ্ট বুঝতে পারছে।
-“ভালোই তো খেলা খেললি।”
বর্ণালীর এমন কথা শুনে ঈশার চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়লো। এটা দেখে বর্ণালী মনে মনে নিজেকে বকছে। কেন এমন মজা করতে গেলো। এখন মেয়েটাকে কাঁদিয়ে দিলো।
-“বি…..বিশ্বাস কর বর্ণ আ….আমি কোন খেলা খ…..খেলিনি। আসলে আ…আমি সজিবকে…..।”
ঈশা কান্নার জন্য কথা বলতে পারছেনা। বর্ণালী ব্রু কুচকে ঠোঁট চেপে হেসে ঈশাকে এসে জড়িয়ে ধরে।
-“হুস পাগলী কোথাকার। আমি জাস্ট মজা করছিলাম রে। তুই আগে কেন বললি না? এতোই পর ভেবেছিলি?”
-“কি বলতাম বল? সজিব যে আমায় ভালোইবাসতো না। আমি একাই ওকে ভালোবাসতাম। সেদিন যখন তুই….”
-“আচ্ছা চুপ কর এবার। সব মেকাপ তো নষ্ট করে দিচ্ছিস।”
রুমু ঈশাকে কথাটা বলে থামিয়ে দেয়।
-“সরি আসলে তোদের বলাটা উচিত ছিলো।”
-“হুম তোর সরি বলাটা উচিত আবার বল প্লিজ শুনতে ভালো লাগছে।”
ঈশা আর বর্ণালী রুমুর এমন কথায় হেসে দেয়। রুমু গিয়ে ঈশার বিছানায় বসে বলে,
-“কিরে তোরা এতো বড়লোক সেটাও তো আগে বললি না। তা তোর ভাই কই?”
রুমু ঈশাকে চোখ মেরে কথাটা বলে। ঈশা এবার আরো ভয় পেয়ে যায়। বর্ণালী এমনিতেই রেগে আছে সেটা না বললেও ঈশা বুঝতে পারছে। কিন্তু যখন জানবে ইভান ওর ভাই আর এটা ও বলেনি তখন কি করবে সেটা ভেবেই ঈশার কলিজার পানি শুকিয়ে আসছে।
-“কিরে বললি না যে তোর ভাই কোথায়?”
-“ভা….ভাই বাইরে আছে। চলে আসবে।”
বর্ণালী এসব কথায় ভ্রুক্ষেপহীন হয়ে বলে,
-“আচ্ছা ঈশা চল বাইরে চল। মা-বাবা তোকে দেখার জন্য অপেক্ষা করছে আর ভাইয়ার কথা না হয় নাই বললাম।”
-“কিন্তু কেউ তো ডাকলো না।”
-“আমরা কেন আসছি?”
ঈশা কিছুটা লজ্জা পেলো।
-“হয়েছে হয়েছে আগে তো নির্লজ্জ হয়ে নিজের বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিস আর এখন লজ্জা পাচ্ছিস।”
ঈশা বর্ণালীর দিকে অসহায়ভাবে তাকায়। বর্ণালী রুমুর দিকে তাকিয়ে বলে,
-“ইস রুমু তুইও না আর জ্বালাস নে ওকে।”
-“হুম আর জ্বালাবো না।”
-“বারেহ!!! তুই আবার রাগও করিস?”
-“রাগ করবে আমার ঠ্যাং।”
কথাটা বলেই রুমু উঠে দাঁড়ায়।
বর্ণালী আর রুমু ঈশাকে নিয়ে নিচে আসতে দেখে সবাই এক পলক ঈশার দিকে তাকায়। কিন্তু সজিব হা করে তাকিয়ে আছে। হালকা আকাশী রঙের শাড়ি পড়ে মাথায় ঘোমটা টেনে আছে। ঈশাকে ওর কাছে এতো মায়াবী কখনোই লাগে নি। বর্ণালী তার ভাইয়ের অবস্থা খুব ভালোভাবেই খেয়াল করছে। ঈশাকে সোফায় বসিয়ে সে ভাইয়ের পাশে গিয়ে বসে। ইচ্ছে করে সজিবের সাথে মজা করার জন্য একটু কাশি দেয়।
-“উহুহুহুম উহুহুহুম।”
সজিব চোখ নামিয়ে মৃদু হেসে একটু নড়েচড়ে বসে।
-“এভাবে তাকাতে নেই ভাইয়া। লোকে কি বলবে? একটু লজ্জা পাও।”
-“পেকে গেছিস না? দাঁড়া তোকে বিয়ে দেয়ার ব্যাবস্থা করতে হবে।”
বর্ণালী ভাইয়ের মুখ নিজের বিয়ের কথা শুনে একটু জোরেই কেশে উঠে। পাশ থেকে শারমিন বেগম বলে উঠেন,
-“তোরা কি ফিসফিস করছিস?”
-“না মা কিছুনা।”
বর্ণালী কথাটা এড়িয়ে গেলো।
-“তা বেয়াই সাহেব আপনারা বললে এবার আমরা এনগেজমেন্টের কাজ শেষ করে ফেলতে চাই।”
হাবিব হাসান কথাটা বলেই শারমিন বেগমের দিকে তাকান। শারমিন বেগম ইশারায় মাথা নাড়েন। ঈশাকে উনাদের পছন্দ না হওয়ার কিছুই নেই।
-“জ্বি আমরাও আজকে এনগেজমেন্ট সেরে ফেলতে চাই। আমার ছেলেটা আসার অপেক্ষায় আছি। সেই কখন বললো আসছে এখনো আসছে না কেন? সাহারা একটু কল দাও তো।”
-“হ্যাঁ দিচ্ছি।”
সাহারা ইসলাম তাকে কল দিতে নিলেই ইভান এসে ড্রয়িংরুমে ঢুকে।
-“কিরে এতো দেরি করলি? তুই তো জানিস আজ তোর বোনের এনগেজমেন্ট তাহলে এতো দেরি কীভাবে করলি?”
-“আর বলো না মা রাস্তায় বাইক এক্সিডেন্ট করে ফেলেছি।”
-“আরে কি বলছিস এসব? দেখি তোর কি হয়েছে? কোথায় কি হয়েছে বাবা?”
-“ইস মা এতো ব্যাস্ত হতে হবে না। আমার কিছুই হয় নি। এই দেখো তোমার ছেলে পুরো সুস্থ। আচ্ছা তুমি যাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।”
-“আচ্ছা তাড়াতাড়ি আয়। তারা অনেক্ষণ ধরে বসে আছেন।”
-“হ্যাঁ আসছি।”
ইভান নিজেও আঁচ করতে পারছে না তার জন্য কতবড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে। ঈশা যে ওকে কিছুই বলে নি। ইভানও কিছু জিজ্ঞেস করেনি। করলে হয়তো আগেই খবর পেয়ে যেতো। ড্রয়িংরুমে কারো দিকে না তাকিয়েই অন্য পাশ দিয়ে ইভান দ্রত উপরে উঠে যায়।
👇
ইভান ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে এসে সবার সাথে পরিচিত হতে এগিয়ে যায়। সজিবের মা-বাবাকে সালাম করে মাথা তুলে উপরে তাকাতেই বর্ণালীর উপর চোখ যায়। ইভান ওখানেই থমকে যায়। বর্ণালী ঈশার সাথে কথা বলতে এতোই ব্যাস্ত ছিলো যে ইভান ওর সামনে তা খেয়ালই নেই। হঠাৎ করেই ঘাড় ঘুরিয়ে সজিবের দিকে তাকাতেই ওর চোখ কপালে উঠে যায়।
ইভান!!!!
ইভান এখানে কি করছে?
ও এখানে কীভাবে?
বর্ণালীর হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। দুজন দুজনের দিকেই অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ঠিক তখনি সাহারা বেগমের কথায় বর্ণালী ও ইভানের ঘোর কাটে।
-“ইভান আমার ছেলে। এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ঈশার ছোট ভাই।”
কথাটা শুনে বাকি সবাই হাসলেও সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় বর্ণালী। ওর চোখে জল টলমল করছে। একবার ইভানের দিকে তাকালো আরেকবার ঈশার দিকে। ইভানের ও ঈশার চোখে অপরাধবোধ দেখতে পাচ্ছে বর্ণালী। কেমন অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে দুজনেই। বর্ণালী চোখের পলক ফেলছে না। চোখের পলক ফেললেই ওর চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়বে। ও নিজেকে কিছুটা সামলে বললো,
-“আ….আন্টি ওয়াশরুম কোথায়?”
-“এই তো মা নীচেও আছে উপরেও আছে। তুমি বরং ঈশার রুমের ওয়াশরুমে চলে যাও।”
-“জ্বি।”
-“আসছি আমি।”
বর্ণালী নিজের চোখের জল লুকিয়ে ইভানের পাশ কাটিয়ে উপরের দিকে পা বাড়ায়।
ইভান এখন কী করবে?
কীভাবে মানাবে বর্ণালীকে?
বর্ণালী কী ওকে ক্ষমা করবে?
ইভান মাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
-“আমি আসছি মা।”
ঈশা রুমুকে ফিসফিস করে বলে ওকে রুমে নিয়ে যাওয়ার জন্য। না জানি বর্ণালী কেমন অবস্থায় আছে।
-“আন্টি আমরাও একটু আসছি।”
-“সবাই কোথায় যাচ্ছো?”
-“আসছি আন্টি এইতো একটু সময়।”
-“আচ্ছা তাড়াতাড়ি ফিরে এসো। এনগেজমেন্টটা সেরে ফেললেই শান্তি।”
ঈশা আর রুমু ইভানের পিছু পিছু উপরের দিকে পা বাড়ায়।
👇
ইভান কেন এমন করলো?
আর ঈশা! ও কেন আমার সাথে মিথ্যে বললো? ওকে তো আমি আমার ফ্রেন্ড ভেবেছিলাম।
কেন ঈশা কেন এমন করলি?
ইভান কেন তুমি এমন করলে?
তোমাকে যে আমি আমার বেস্ট একটা ফ্রেন্ড ভাবতাম। কীভাবে পারলে আমার থেকে সত্যিটা লুকাতে?
ভাই-বোন দুজন মিলে আমার সাথে এতো বড় নাটক কীভাবে করলে?
কী এমন ক্ষতি করেছিলাম আমি তোমাদের?
বর্ণালী আয়নার দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলছে আর কাঁদছে। এত কষ্ট কেন হচ্ছে তার?
নাহ তাকে কষ্ট পেলে হবে না। বর্ণালী চোখে মুখে পানি দিয়ে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে। ওয়াশরুম থেকে বের হতেই ইভানের সামনে পড়ে। বর্ণালী পাশ কাটিয়ে যেতে চাইলেই ইভান বর্ণালীর পথ আটকে ধরে। তখনই ঈশা আর রুমু এসে ঢুকে রুমে। ঈশা দৌড়ে এসে বর্ণালীর দু’বাহুতে হাত রেখে বলে
-“বর্ণালী বিশ্বাস কর আমি তোকে আগেই বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সঠিক সময়ের অপেক্ষায় ছিলাম।”
ইভান অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বর্ণালীর দিকে। বর্ণালী ঈশার দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বললো,
-“কি হয়েছে? তোমরা সবাই উপরে কেন এলে?”
সবাই বর্ণালীর এমন কথায় অনেকটা অবাক হয়।
-“মানে কি?”
-“নীচে চল। এংগেজমেন্ট করে নিলেই হলো। দেরি হয়ে যাচ্ছে চলো।”
-“আই এম সরি বর্ণালী আসলে….”
-“আরে রাখ তো। এতো সরি দিয়ে আমি কি করবো? চল নিচে চল।”
-“তুই কি কিছুই মনে করিস নি?”
-“কিছু কি হয়েছে মনে করার মতো? চল তো নিচে চল। সবাই অপেক্ষা করছে।”
বর্ণালী নিচে যেতে চাইলেই ইভান বলে,
-“তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।”
-“আমার কারো সাথে কোন কথা নেই।”
-“প্লিজ বর্ণালী একবার আমার কথা শুনো।”
-“আচ্ছা বলো শুনছি।”
ইভান ঈশা ও রুমুর দিকে তাকাতেই ওরা রুম থেকে বেরিয়ে যায়। না জানি কি হবে! বর্ণালী যে ভেতরে ভেতরে অনেকটা রেগে আছে তা ভালোভাবেই বুঝতে পারছে রুমু। বর্ণালী সবসময় রাগে না। হুট করেই রেগে বসে। আর তখন উদ্ভট সব ব্যাবহার করে।
👇
দুজনেই চুপ হয়ে আছে। কেউ কোন কথা বলছে না। নীরবতা ভেঙে ইভান বললো,
-“আই এম সরি।”
-“কেন?”
-“প্লিজ বর্ণালী এমন কিছু ব্যবহার করো না আমার সাথে। আমি নিতে পারবো না।”
-“আমি কি তোমার সাথে খারাপ কোন ব্যাবহার করেছি?”
-“এভাবে কথা বলেই তো তুমি আমাকে আরো বেশি চিন্তায় ফেলে দিচ্ছো।”
-“ইভান আমাদের নিচে যাওয়া উচিত। এনগেজমেন্ট হতে দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
-“না যাবো না নিচে। যতক্ষণ না তুমি আমায় ক্ষমা করছো।”
-“ঠিকাছে তাহলে থাকো তুমি। আমায় যেতে দাও।”
ইভান চট করে ওর হাত ধরে ফেলে। বর্ণালীর হৃদস্পন্দন যেনো দ্রুত বেড়ে যায়। বুকের ধুকপুকানিটা নিজেই শুনতে পাচ্ছে। ইভান কাছে আসলেই ওর এমন হয়। কিন্তু কেন হয় তা সে আজও বুঝতে পারেনি। ইভান বর্ণালীর হাতে টান দিয়ে নিজের বুকের উপর নিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। বর্ণালীর পুরো শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। হৃদস্পন্দন যেনো ওখানেই থমকে গেছে। ইভনের ঠিক বুকের পাশে এসে ওর মাথা ঠেকেছে। ওর প্রতিটি হৃদস্পন্দনের শব্দ গুনতে পারছে। ইভান ছাড়া এতো কাছ থেকে কারো হৃদস্পন্দন শুনেনি বর্ণালী। কোন এক অজানা টানে ওর চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। নিজের অজান্তেই ইভানের কোমড়ের দু’পাশে হাত রাখে। বর্ণালীর নিশ্বাস ভারী হয়ে আসছে। উষ্ণ নিশ্বাস এসে ইভানের বুকে ছড়িয়ে পড়ছে।
-“আই এম রিয়েলি সরি বর্ণালী। আই এম রিয়েলি সরি।”
ইভানের কথায় বর্ণালী চোখ খুলে তাকায়। ও এত শান্ত হয়ে কীভাবে ইভানের বুকে ছিলো? নিজেই অবাক হয়ে গিয়েছে। ও একটু নড়ে উঠে ইভানের কোমড় থেকে হাত সরিয়ে বলে,
-“ছাড়ো ইভান।”
-“নাহ তুমি এভাবেই থাকবে আমার বুকে। বিশ্বাস করো আমি শুধু তোমার ভালোবাসা চেয়েছি। আর তা যেকোন মূল্যেই হোক আমি পেয়েই ছাড়বো।”
-“ছাড়ো ইভান কেউ এসে পড়লে সমস্যা হয়ে যাবে। নিচে যেতে হবে ছাড়ো।”
-“ইভান তোমাকে ধরেছে ছাড়ার জন্য নয়। সারাজীবন এভাবেই আগলে রাখার জন্য।”
ইভান আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নিজের শরীরের সাথে একেবারে মিশিয়ে নেয় বর্ণালীকে। এতোটাই কাছে যে ইভানের দু’পায়ের ফাঁকে বর্ণালীর দু’পায়ের স্থান হয়েছে।
💛
#_____চলবে…….