তোমাকে বলার ছিল
দশম পর্ব
লেখনীতে অনিমা হাসান
– আলু পেঁয়াজের দাম নিয়ে কথা হল ?
মিথিলা অবাক হয়ে কন্ঠে বলল I
-আরে শুধু আলু-পেঁয়াজ না; অন্থন, রিক্সাভাড়া, ড্রাইভার-এর-বেতন, এসব বাদ দিচ্ছিস কেন ? বলতে বলতে হিয়া হি হি করে হেসে ফেললো I
তিন বান্ধবী মিলে অনেকদিন পর বসেছে রোকেয়া হলের বাইরের খোলা চত্বরে I মিথিলা রুম থেকে বাটি-চামচ নিয়ে এসেছে I চা ও এনেছে I একপ্রস্থ চা খাওয়া হয়ে গেছে I এখন নুডুলস খাওয়া হচ্ছে আর নুডুলস নিয়ে গল্প হচ্ছে I তৃণা হাসতে হাসতে বলল
– তোকে খুব মিস করছিলাম রে হিয়া I তুই থাকলে খেলাটা জমে যেত I
– সে আর বলতে I শালাকে কেমন শিক্ষা দিতাম I বাপের জন্মে আর মেয়ে দেখতে রেস্টুরেন্টে যেত না I যাক, তুই আবার এই চার নাম্বার কোয়ালিটি লোককে বিয়ে করার কথা ভাবছিস না তো ?
হিয়ার ফোন বাজছে I বারবার এক পলক দেখে ফোনটা উল্টো করে ঘাসের উপর রেখে দিচ্ছে I তৃণার চোখ এড়ালো না ব্যাপারটা I রাত বেশ হয়েছে I প্রায় সাড়ে এগারোটা বাজে I মিথিলা বলল
– আমার সকালে ক্লাস আছে আমি নিচে বিছানা করে ঘুমিয়ে পড়ছি I তোরা দুজন খাটে শুয়ে পড়িস I
– এই না I আমরা অনেকক্ষণ এখানে গল্প করব I তুই খাটে শুয়ে পড় I দরজাটা শুধু খোলা রাখিস I
– আচ্ছা আমি তাহলে গেলাম I চা রেখে গেলাম I
মিথিলা চলে গেলে তৃণা বলল,
-কিরে ফোন ধরছিস না কেন ?
-ইচ্ছা করছে না I
-কে?
-রাতিন I
-বিষয় কি? আবার কি ঘট পাকিয়েছিস?
হিয়া ঠোঁট উল্টে বলল
-কিছু না I মানা করে দিয়েছি আজকে I
-আবার? এখন কি করবি?
-কিছুই করব না I এবার একটু পড়াশোনা করতে হবে; তা না হলে ফেল করব I ফেল করলে মা লাথি মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেবে I
তৃণা হেসে ফেললো; তারপর নরম গলায় বলল
-তোর বিষয়টা কি বলতো আমাকে I সবকিছু খুলে বল I কিছু লুকাবি না I আমি তো সব কথাই বলি I তুই ও সবটা বল আমাকে I
-তুই সব কথা বলিস আমাকে ?
-বলি না ?
-বলিস? আজকে যে টিএসসিতে সুজন এসেছিল সেটা আমাকে বলেছিস?
তৃণা হকচকিয়ে গেল I সহসা কি বলবে বুঝে পেলোনা I একটু থেমে বলল
-আমি এটা তোর কাছ থেকে লুকাতে চাই নি I আমি তোকে বলতাম I তাছাড়া আমি ইচ্ছা করে ওকে ডাকিনি I একটা বিপদে পড়ে ডাকতে হয়েছে I
হিয়া ভুরু কুঁচকে বললো
– কি বিপদ ?
– পিয়াস খুব বিরক্ত করছিল I এত বেশি গায়ে পড়া আচরণ করেছিল যে অসহ্য লাগছিল I আমি জানতাম উল্টোদিকেই সুজন আছে লাইব্রেরীতে I তাই ওকে ডেকেছিলাম I
-রিলাক্স ! এত কৈফত দিচ্ছিস কেন? তুই কোনখানে আমার বয়ফ্রেন্ডকে ভাগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিস I
-এভাবে কথা বলছিস কেন ? তোর সাথে অনেকদিন কথা হয়না তাই বলা হচ্ছিলনা I সুজন খুব ভেঙে পড়েছিল I তাই আমি পড়ানোর কথা বলে ওকে প্রতিদিন ফোন করতাম রাতের বেলা; যে সময় কবিতা পাঠানো হতো I তবে এখন মনে হয় সামলে উঠেছে I তাই এসব আর কন্টিনিউ করার দরকার নেই I
হিয়া অনুসন্ধানী দৃষ্টিতে তৃণার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল I ওর চোখের ভাষা পড়তে কখনোই ভুল হয় না হিয়ার I হিয়া খুব আস্তে আস্তে বলল
-সুজন কি তোর প্রেমে পড়েছে?
-কি যা তা কথা বলিস I প্রেমে পড়বে কেন ? আমি একটা সমস্যার সময় ওর পাশে ছিলাম তাই একটা সাময়িক ডিপেন্ডেন্সি তৈরি হয়েছে I এর বেশি কিছু না I
-বেশি কিছু হলে অসুবিধা কোথায় ?
-অসুবিধা আছে I আর কক্ষনো এসব কথা বলবি না I
-আচ্ছা বলবো না I এত রেগে যাচ্ছিস কেনো?
-রেগে যাচ্ছি না I এবার তোর কথা বল I
-বলছি I শোনো মনোযোগ দিয়ে I সুজনের সঙ্গে যখন প্রেম করতাম, তখন নিজেকে আমি বলে মনে হতো না I মনে হতো আমি অন্য কেউ I সারাক্ষণ নিজের অস্তিত্বটাকে চেপে রেখে ওর সঙ্গে মিশতে হত I আমি যা নই, তা ও কে দেখাতে হত I আবার আমি যা সেটা ওকে দেখানো যেত না I
-কিরকম ?
-এই যেমন ধর আমি একশন মুভি পছন্দ করি I সেটা নিয়ে ওর সঙ্গে গল্প করতে গেলে ও অন্যমনস্ক হয়ে যায়; আবার ও কবিতা নিয়ে কথা শুরু করলে আমার বিরক্ত লাগে I একদিন ওর সামনে একটা স্লাঙ্ বলে ফেলেছিলাম বলে, এমন অবাক হয়ে আমার দিকে তাকাল যেন আমি কি অপরাধ করে ফেলেছি I যেন আমি একজন অচেনা মানুষ I শেষের দিকে দম বন্ধ হয়ে আসত I ইচ্ছা করত আমি যেমন, আমাকে কেউ সেই রকম ভাবে ভালোবাসুক, সে-রকমভাবেই পছন্দ করুক I রাতিন এর সঙ্গে কোইন্সিডেন্টলি একদিন ফোনে কথা হয় I গল্প করে খুব ভালো লাগছিল I আমাদের কমন ইন্টারেস্ট অনেক I শুরু থেকেই সবকিছু খুব ক্লিয়ার ছিল I ঠিক করেছিলাম কেউ কোনো কমিটমেন্ট-এ যাব না; যতদিন ভালো লাগবে একসঙ্গে থাকব I একটু ভালো সময় কাটাবো I এই আর কি I
-তো এখন কী হলো ?
-হিসেব মতো আমি ওকে বললাম, আই এম ডান উইথ ইউ I এরপর সে কান্নাকাটি শুরু করে দিল I সে নাকি আমাকে ভালবাসে I এতোটুকু হলেও ছিলো…
-আরো আছে ?
-হ্যাঁ তো I বলেছে আমাকে বিয়ে করতে চায় I কি হাস্যকর ব্যাপার ভাব একবার I
-হাস্যকর এর কি হলো?
-আমি ওকে বলেছি আমার বেশিদিন একজনকে ভালো লাগে না I ও কি বলেছে জানিস? বলেছে ‘আমি আর কোনদিন তোমাকে অন্য কাউকে ভাল লাগতে দেব ই না’ I আমি বললাম ঠিক আছে সেটা না হয় বুঝলাম; কিন্তু তোমার যদি অন্য কাউকে ভালো লেগে যায়, আমাকে ভালো না লাগে তখন?
-তারপর কি বলল?
-তারপরই তো ঘ্যান ঘ্যানানি শুরু হলো I টু মাচ সিরিয়াস হয়ে গেছে I ইউএসএ থেকে ওর বাবা-মা এসেছে I বলছে নাকি আমাদের বাসায় পাঠাবে প্রস্তাব দিয়ে I বিয়ে করে একবারে নিয়ে যাবে ওখানে I
তৃনা বললো, এটা তো ভালো কথা তুই এরকম করছিস কেন? তোর কি ওকে ভাল লাগেনা?
-ভালো লাগে I কিন্তু….
-কিন্তু কি ?
-জানিনা I
-আচ্ছা আমাকে একটা কথা বল I এইযে ও তোর জন্য কষ্ট পাচ্ছে; এতে তোর খারাপ লাগছে না?
-হ্যাঁ লাগছে I
-তুই ওকে বিয়ে করতে চাস না?
-এতদুর ভাবতে পারছিনা I
-একদিন ওকে ডাক; আমরা তিনজন কথা বলি I
হিয়া লাফিয়ে ওঠে তৃণার হাত ধরল I তারপর বলল
-সত্যি তুই কথা বলবি?
-বলবো না কেন?
-আহ কি যে শান্তি লাগছে আমার; তোকে বলে বোঝাতে পারবো না I তুই পাশে থাকলে আর কোন সমস্যা হবে না I
তৃণা একটু গম্ভীর হয়ে গেল I তারপর বলল আমি কিন্তু সুলতানা আন্টির সঙ্গেও কথা বলব I
-সে তুই যার সাথে ইচ্ছা তার সাথে কথা বলিস I তুই আমার সাথে আছিস, আমার আর কোন টেনশন নেই I
পরীক্ষা প্রায় চলে এসেছে I সেদিনের পরেও সুজনের সঙ্গে প্রায়ই কথা হয়েছে তৃণার I তবে তৃণা ইচ্ছা করে একটু কাটকাট আচরণ করেছে I পড়াশোনার বাইরে খুব একটা কথা বলেনি I ঝড়ের মত পরীক্ষাটা হয়ে গেল I পরীক্ষা শেষ করে তৃণা দাদা বাড়ি যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে I এর মধ্যে অবশ্য একদিন রাতিনের সঙ্গেও বসা হয়েছে I ছেলেটাকে বাইরে থেকে দেখতে যেমন মনে হয়; কথাবার্তায় সেরকম নয় I বেশ ভদ্র I ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড ও ভালো I কথা বলে মনে হলো হিয়ার ব্যাপারে বেশ সিরিয়াস I ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যারোলিনাতে এডমিশন হয়ে গেছে রাতিনের I ওর বাবা-মা চাইছে ওকে বিয়ে দিয়ে তারপর পাঠাতে I হিয়ার ব্যাপারে সবই বলেছে ও বাসায় I ওদের ইচ্ছে আর এক বছর পর হিয়ার অনার্স কমপ্লিট হলে তখন ওকে নিয়ে যাবে I বিয়েটা এখন হয়ে গেলে কাগজপত্র তৈরি করা সহজ হবে I সুলতানা আন্টির সঙ্গেও একদিন কথা বলল তৃণা I হিয়ার বাবা মা দুজনেই খুব খুশি I পরীক্ষার পর তারা আসছে হিয়াদের বাসায় I কথাবার্তা ফাইনাল করতে I হিয়া বলে দিয়েছে তার আগেই যেন তৃণা দাদা বাড়ি থেকে ফিরে আসে I পরীক্ষা শেষ করে তাই আর বেশী দেরী করলো না তৃণা I পরদিনই দাদা বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিল I দুপুর দেড়টার সময় ট্রেন ধরবে সন্ধ্যা নাগাদ পৌছে যাবে I চট্টগ্রাম শহর থেকে খুব বেশি দূরে নয় ওর দাদা বাড়ি I নেমে একটা বাস ধরতে হয় I তারপর রিক্সা নিলেই পৌঁছে যায় I
পরদিন সকালবেলা তৃণা গোছগাছ করা নিয়ে ব্যস্ত I সেই সময়ই সুজনের ফোন এল I
-কেমন আছো তৃণা ? তুমি যে আমাকে আর ফোন দিলে না?
-আসলে একটু ঝামেলার মধ্যে ছিলাম I আজকে চট্টগ্রামে যাচ্ছি দাদা বাড়ি I তুমি কেমন আছো?
-ভালো
-কী করছো এখন পরীক্ষার পর ?
-বাসা রেনোভেশন করছি I
-ওয়াও I
-শেষ হয়ে গেলে তোমাকে নিয়ে এসে দেখাবো একদিন I
তৃণা একটু ম্লান হাসলো I তারপর বলল আচ্ছা I
-কবে ফিরছো তুমি?
-ঠিক করিনি এখনও I দেখি কতদিন থাকা যায় I
-ঠিক আছে সাবধানে যেও I ফোন করবো আমি I
-ঠিক আছে ভালো থেকো I
তৃণা ভেবেছিল দাদা বাড়িতে আসলে ওর মন ভালো হয়ে যাবে I কিন্তু এবার উল্টো হলো I মন ভালো হবার বদলে আরো খারাপ হয়ে গেল I দাদি সারাক্ষণ বিয়ের কথা বলতে লাগলো I ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই একই কথা I ছেলেটা ভালো; তৃণার ব্যাপারে সব জেনেশুনেও বিয়ে করতে রাজি হয়েছে I ছেলে একটু হিসেবে-স্বভাবের এটা ঠিক আছে; তবে এ ধরনের ছেলেদের সাথে সংসার করে শান্তি I কখনো অভাবে থাকতে হয় না I ওর বাবা দুহাতে খরচ করত; তাই তো ব্যবসা করে ডুবলো I তারপর সংসারে অশান্তি শুরু হল Iপালিয়ে বাঁচল বউ বাচ্চা ফেলে Iএইসব নানান কথা শুনতে হল সারাক্ষণ I
তৃণা টিকিট বুক করে ফেলেছে I কাল দুপুরেই রওনা দিয়ে দেবে I এখানে আর ভালো লাগছে না I বিকেল থেকে হঠাৎ করেই আকাশ অন্ধকার করে বৃষ্টি নামল I কেমন মন খারাপ করা আবহাওয়া I ছোট বেলায় এখানে থাকতে তৃণা খুব বৃষ্টিতে ভিজতো I আজ বৃষ্টি টা যেন ঠিক ভেজার মতন নয় I কেমন ঠান্ডা বাতাস দিচ্ছে I তবুও আর হয়তো অনেকদিন আসা হবে না, এই ভেবে তৃণা নেমে গেল পিছনের উঠোনে বৃষ্টিতে ভিজবে বলে I খুব একটা ভেজা হলো না I শীত করতে লাগলো ভীষণ I তাড়াতাড়ি করে দোতালায় চলে গেল চেঞ্জ করতে I ভেজা কাপড় ছেড়ে মাথায় তোয়ালে পেঁচিয়ে ঘরে ঢুকতেই টের পেল ফোন বাজছে I
সুজনের বাসার রেনোভেশন এর কাজ শেষ I মজিদ চাচার সঙ্গে মিলে এবার ও নিজ হাতে সব করেছে I মজিদ চাচা বেশ অবাক হয়েছে I সাধারণত এসব কাজে সুজন কখনো মাথা ঘামায় না I সব সময় দূরে দূরে থাকে বইপত্র নিয়ে I এবার ও নিজেই বলে দিয়েছে কিভাবে কি করতে হবে I নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সব করিয়েছে I সব শেষ হয়ে যাবার পর হঠাৎ করেই খুব ফাঁকা ফাঁকা লাগছে সুজনের I দুপুরে খাবার পরে একটু ঘুমিয়ে পড়েছিল I অবেলায় ঘুমানোতে উঠার পর মাথা ধরে আছে I সুজন কফি নিয়ে বারান্দার দরজা খুলেই টের পেল বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে I বাধ্য হয়ে ঘরে এসেই বসতে হলো I কেমন মন খারাপ করা বিকেল I কিছু ভালো লাগছেনা I ইচ্ছে করছে কেউ একজন খোঁজ নিক I কেউ বলুক বারান্দার দরজাটা বন্ধ করে দাও, ঠান্ডা লাগছে না; কিংবা এখন ছাদে যেও না শরীর খারাপ করবে I সুজন ফোনটা তুলে নিয়ে তৃণাকে ফোন দিল I
-কেমন আছো তৃণা?
-ভালো তোমার গলা এরকম শোনাচ্ছে কেন? শরীর খারাপ?
সুজন একটু হাসল I জবাব দিল না I তারপর বলল
-তুমি কবে ফিরবে?
-কাল I
-আমার সঙ্গে একবার দেখা করবে I তোমাকে কয়েকটা কথা বলার ছিল I
-বল I
-এখনই শুনতে চাও?
-বল সমস্যা নেই I
-অনেক দিন ধরে তোমাকে একটা কবিতা শোনাতে চাই I শুনবে আজকে?
তৃণার মনটা অসম্ভব খারাপ হয়ে ছিল; তাই ও আর না করলো না I বলল শোনাও I
-শোনো তাহলে
তুমি শুদ্ধ করো আমার জীবন, আমি প্রতিটি ভোরের মতো
আবার নতুন হয়ে উঠি,
হই সূর্যোদয়
আমার জীবন তুমি পরিশুদ্ধ করো, আমি প্রস্ফুটিত হই
আমি বহুদিন ঝরা ব্যথিত বকুল অন্ধকারে, আমি বহুদিন
বিষন্ন বিধুর ;
একবার আমার মাথায় হাত রাখো, সুপ্রসন্ন হও
এই দগ্ধ বুকে করো শ্রাবণের অঝোর বর্ষণ
আমি শ্যামল সবুজ বৃক্ষ হয়ে উঠি ।
আমার জীবন তুমি শুদ্ধ করো, আমি হই নতুন সবুজ
কোনো দ্বীপ,
আমি হই বর্ষাকাল, আমি হই বরষার নব জলধারা
আমি বহুদিন ব্যথিত বিষাদ, আমি বহুদিন একা
ঝাউবন ।
তুমি শুদ্ধ করো আমার জীবন, আমি হয়ে উঠি সদ্যফোটা ফুল
আমি হয়ে উঠি সকালের ঘুমভাঙ্গা চোখ ।
চলবে……