তোমাকে বলার ছিল
দ্বাদশ পর্ব
লেখনীতে অনিমা হাসান
পরের জন্মে বয়স যখন ষোলোই সঠিক
আমরা তখন প্রেমে পড়বো,
মনে থাকবে ?
বুকের মধ্যে মস্তো বড় ছাদ থাকবে
শীতলপাটি বিছিয়ে দেব,
সন্ধে হলে বসবো দু’জন।
একটা দুটো খসবে তারা
হঠাৎ তোমার চোখের পাতায়
তারার চোখের জল গড়াবে,
কান্ত কবির গান গাইবে
তখন আমি চুপটি ক’রে
দুচোখ ভ’রে থাকবো চেয়ে
মনে থাকবে?
এই জন্মের দূরত্বটা পরের জন্মে চুকিয়ে দেবো
এই জন্মের চুলের গন্ধ পরের জন্মে থাকে যেন
এই জন্মের মাতাল চাওয়া পরের জন্মে থাকে যেন
মনে থাকবে ?
আমি হবো উড়নচন্ডি এবং খানিক উস্কোখুস্কো
এই জন্মের পারিপাট্য সবার আগে ঘুচিয়ে দেবো।
তুমি কাঁদলে গভীর সুখে
এক নিমেষে সবটুকু জল শুষে নেব
মনে থাকবে ?
এই নিয়ে কবিতাটা মোট এগারো বার পড়ল তৃণা I প্রতিবার শেষ করেই মনে হয় আবার পড়ি I এই কবিতাটা কাল রাতে পাঠিয়েছে সুজন I গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন রাতে একটা করে কবিতা পাঠায় I প্রথমদিকে তৃণা রাগ করত I কয়েকবার ফোন করে নিষেধ ও করেছে I কিন্তু আজকাল সুজন এমন লাগামছাড়া কথাবার্তা বলে ভয়ে এখন আর ফোন করে না তৃণা I এই যেমন সেদিন তৃণা ফোন করে বলল
– তুমি আর কতদিন আমাকে এভাবে কবিতা পাঠাবে ?
– সারা জীবন I বুড়ো হয়ে গেল ও পাঠাবো I কোনদিন যদি পাঠাতে ভুলে যাই তাহলে বুঝতে হবে….
– কি বুঝতে হবে ?
– যে সম্পর্কের ধুলো জমে গেছে
– তখন কি করবে ?
– নেক্সট হানিমুন প্ল্যান করব
– কি করবে !!?
– তোমাকে নিয়ে পাহাড়ে জঙ্গলে চলে যাব I আমার বাবা-মা ও তাই করে জানো তো I যখন দেখে বেশি ঝগড়া হচ্ছে তখন দুজন মিলে কোথাও বেড়াতে চলে যায় I সপ্তাহ দুয়েক ঘুরে রিলেশনশিপ রিচার্জ করে আসে I দারুন আইডিয়া না ? আমরাও তাই করব I
তৃণার কান গরম হয়ে গেল I ও কোনমতে বলল
– তোমাকে ফোন করাই আমার ভুল হয়েছে
– ঠিক বলেছ I এরপরে আর ফোন করো না আমাকে বলো আমি দেখা করতে চলে আসব I
তৃণা ভয়ে ফোন রেখে দেয় I এই ছেলের মাথা খারাপ হয়ে গেছে I কিন্তু আজকের এই কবিতাটা পড়ে কেন যেন রাগ হচ্ছে না অসম্ভব ভালো লাগছে I
কাল রাতে ভাল ঘুম হয়নি I বারবার ঘুম ভেঙে যাচ্ছিল I কি সবএলোমেলো স্বপ্ন দেখছিল I খুব ভোরে ঘুম ভেঙে গেছে I তৃণা হাত মুখ ধুয়ে এক কাপ চা নিয়ে ছাদে চলে এসেছে I তখনো ভোরের আলো ফুটে নি ভালোমতো I তৃণা অনেকক্ষণ ছাদে হাটলো I রেলিঙে ভর করে দাঁড়িয়ে থাকলো অনেকক্ষণ I আড়মোড়া ভেঙে জেগে ওঠা শহরটাকে দেখলো I প্রতিটি শহরেই ভোরবেলাকার একটা নিজস্ব চরিত্র আছে I খুব ইচ্ছা করে এইরকম ভোর গুলোতে নতুন নতুন শহরে হাঁটতে I তৃণা ঠিক করেছে বিসিএস দেবে I বদলির চাকরি করলে বেশ হবে I বিভিন্ন শহর ঘুরে দেখা যাবে I কিন্তু মাঝখান থেকে এরা এই বিয়ের ঝামেলা টা যে কেন পাকাচ্ছে বুঝতে পারছেনা তৃণা I সব গন্ডগোল বেধে যাবে I দাদি কে একটু বুঝিয়ে বলতে হবে এভাবে রাগ করে থেকে লাভ হবে না I হিয়াটার ও বিয়ে ঠিক হয়ে গেল I এ শহরে আর কিবা রইল ওর I বদলির চাকরি নিয়ে অন্য শহরে চলে যাবে বরং I সেই সব দিক থেকে ভালো I যতদিন বিসিএস না দিচ্ছে কোন একটা স্কুলে চাকরি নিয়ে ঢাকার বাইরে চলে যাবে I চট্টগ্রামের দিকে হলে ভালো I দাদির কাছাকাছি থাকা যাবে I আর একটা বছর কোনমতে ওদেরকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাখতে হবে I
তৃণা কবিতাটা আরেকবার পড়ল I কবিতার নিচে একটা দু লাইনের ম্যাসেজ দিয়েছে সুজন I লিখেছে
আমি পরের জন্মে বিশ্বাস করি না তৃণা I তোমাকে আমার এই জন্মেই চাই I
কেন যে এরকম পাগলামি শুরু করেছে ছেলেটা বুঝতে পারছে না তৃণা I মাঝে মাঝে মনে হয় কি হতো যদি ওর জীবনটা আর দশটা মেয়ের মত স্বাভাবিক হত I যদি ওর ও বাবা মা থাকতো কোনদিন তৃণা ও ওর ভালবাসার মানুষটিকে ওর বাবা-মার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পারতো I সবকিছু কত সুন্দর হতো Iতৃণা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চায়ের কাপটা মেঝে থেকে তুলে নিল নিচে নামবে বলে I তখনই সুজনের ফোনটা এলো I তৃণা বলল
-তুমি এত সকালে
– একটু নিচে আসবে তৃণা
– নিচে কোথায় ?
– তোমাদের বাসার নিচে
-কেন?
– তোমাকে কোথাও নিয়ে যাবো I কিছু দেখাতে চাই
– তুমি কোথায় সুজন ?
– তোদের বাসার নিচেই
তৃণা আকাশ থেকে পড়ল I এই ছেলের সমস্যা কি ? বাসা অবধি চলে এসেছে I সুজন তাড়া দিয়ে বলল
– তুমি নামবে, না আমি উপরে ছাদে চলে আসব ?
– না দাঁড়াও আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসছি
– পাঁচ মিনিট কেন লাগবে ? সিঁড়ি দিয়ে নামতে বড় জোর চল্লিশ সেকেন্ড লাগা উচিত
– আমাকে চেঞ্জ করে বের হতে হবে
– চেঞ্জ করার দরকার নেই I গোলাপি তে তোমাকে খারাপ লাগছে না
তৃণা ভয় পাওয়া চোখে এদিক ওদিক তাকালো Iসুজন ওকে কি করে দেখল ও বুঝতে পারছে না I তৃণা গম্ভীর গলায় বলল
– বললাম তো পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসছি
– আচ্ছা এসো
তৃণা ঘরে ঢুকে চেঞ্জ করে একটা বাসন্তী রঙের সুতির জামা পরলো I সকাল সকাল গোসল করাতে চুল এখনো ভেজা I ভেজা চুলটা আঁচড়ে নিল I বাঁধলো না আর I ব্যাগটা কাঁধে তুলে বেরিয়ে যাবার সময় রেহানার সঙ্গে দেখা I রেহানা অবাক গলায় বলল
– এত সকালে কোথায় যাও ?
– একটু লাইব্রেরীতে যাচ্ছি
– পরীক্ষা তো শেষ
– একটা বই ছিল ফেরত দিতে হবে
– আচ্ছা যাও
রেহানা আজকাল চোখে চোখে রাখে তৃনাকে I কি জানি কখন আবার কি করে ফেলে I
তৃনা নিচে নেমে দেখলো সুজন একটা ছোট ছেলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে গল্প করছে I দুজনের মুখই হাসি হাসি I ছেলেটার পরনে হাফ প্যান্ট গায়ে কোন জামা নেই I হাতে একটা বড় আইসক্রিম I তৃণা বুঝলে আইসক্রিমটা সুজনই কিনে দিয়েছে I সুজন এক পলকে তৃনাকে দেখে চোখ নামিয়ে নিল I কাছাকাছি আসার পর দুজন হাঁটতে লাগলো পাশাপাশি I কেউ কোন কথা বলল না I হাঁটতে হাঁটতে বড় রাস্তা পর্যন্ত যাবার পর রিক্সা নিল I তৃনার অনেক কিছু জানতে ইচ্ছে করছে এই যেমন সুজন কেন এসেছে, কখন এসেছে ওকে কেমন করে দেখলো আবার এখন কোথায় নিয়ে যাচ্ছে কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা করছে না I এই ব্যাটা নিজের থেকেও কিছু বলছে না I কোন কথাই বলছে না একবার শুধু জিজ্ঞেস করল তোমার বসতে কষ্ট হচ্ছে তৃনা I রিক্সার হুড তুলে দেবো I তৃণা জবাব দেয়নি I রিক্সা নীলক্ষেত পার হয়ে ইউনিভার্সিটি চত্বরে ঢুকছে I
-আমরা কোথায় যাচ্ছি ?
– আমার বাসায় I তোমাকে বলেছিলাম না বাসা রেনোভেট করেছি I সেটাই দেখাতে নিয়ে যাচ্ছি
সুজনদের বাসায় আগে গেছে তৃণা I মনে আছে ফার্স্ট ইয়ারের রেজাল্ট এর পর সবাই খুব করে ধরল সুজনকে খাওয়ানোর জন্য Iক্লাসে প্রায় পঞ্চাশ জনের মত স্টুডেন্ট Iএতজন মিলে কোন রেস্টুরেন্টে গেলে আরাম করে খাওয়া যাবে না I তাই ঠিক হল সুজনের বাড়িতেই অনুষ্ঠান করা হবে I যেহেতু এটা ওর নিজের বাসা এবং ও একাই থাকে পুরো একটা ফ্লোর নিয়ে I বিশাল আয়োজন করেছিল সুজন I বিয়ে বাড়ির ভোজ এর মত I সুজনের বইয়ের কালেকশন দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল তৃণা I ওর একটা বই কিনতে হলে দশবার ভাবতে হয় কত হিসেব মেলাতে হয় টাকার I ভীষণ ঈর্ষা হয়েছিল সেদিন তৃনার I
রিক্সা থেকে নেমে সুজন কোন রিক্সা ভাড়া দিল না I তৃণা বেশ অবাক হয়ে নিজে ভাড়া দিতে গেলে সুজন বলল
– নিতে হবে না I আমি মাসের শুরুতে দিয়ে দেই I
তৃণা আশ্চর্য হয়ে গেল
মাসের শুরুতে দিয়ে দাও মানে ?
আমার মাঝে মাঝে রিক্সা করে ঘুরতে ইচ্ছা করে I তাই এরকম বন্দোবস্ত করেছি আর কি I
সুজন দের বাড়িটা তিন তলা I ও তিন তলাতেই থাকে I দরজায় তালা দেয়া I সুজন তালা না খুলে উপরের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগল I তৃনা একটু থমকে গেল I ওকে থামতে দেখে সুজন পেছন ফিরে বলল
– কি হলো এস
তৃনা পেছনে পেছনে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগল I ছাদের দরজার পাশে একটা সু রেক রাখা Iসুজন জুতো খুলে রেখে দরজার তালা খুললো I তৃণা ও স্যান্ডেল খুলে রেখে পেছনে পেছনে এগিয়ে গেল I ভেতরের দিকে তাকিয়ে তৃণার পা দুটো জমে গেল I মনে হচ্ছে এটা বাস্তব নয় কোনো রূপকথা I বিশাল লম্বা একটা ছাদ I মেঝেটা পাথরের I এক পাশে একটা বড় দোলনা রাখা I তৃনাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সুজন ওর একটা হাত ধরে বলল ভেতরে এসো I তৃণা ভেতরে ঢুকলো I চারিদিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলো I এক পাশে একটা ঘর তার সামনে বারান্দা সবুজ ঢেউ খেলানো টিনের সেড দেয়া I বারান্দায় দুটো চেয়ার রাখা I মাঝখানে একটা টি টেবিল I টেবিলের উপর কয়েকটা বই I কেমন স্বপ্ন স্বপ্ন পুরোটা I তৃণা আস্তে আস্তে এগিয়ে গেল I বিশাল একটা ঘর I ঘরের মধ্যে একটা খাট ছাড়া আর কোন আসবাব নেই I এক পাশের দেয়াল জুড়ে বইয়ের আলমারি I পুরোটা বিভিন্ন রকমের বই দিয়ে ভরা I সুজন বলল
চা খাবে ?
তৃণা কোন জবাব দিল না I ওর এখনো ঘোর কাটেনি I সুজন বললো আচ্ছা ঠিক আছে চা খেতে হবে না চলো বসি I ওরা দুজনে দোলনার মধ্যে বসলো দুই পাশে I কাল শেষ রাতের দিকে বৃষ্টি পড়েছে I ছাদটা একটু ভেজা ভেজা রোদের তেমন তেজ নেই I বাতাসে ঠান্ডা ভাব I তৃণার একটু একটু শীত করছে I ওর ভেজা চুল শুকিয়ে গেছে বাতাসে I বাঁধতে ইচ্ছা করছে না I তৃণা নিচের দিকে তাঁকিয়েই টের পেল সুজন ওর দিকে দিকে তাকিয়ে আছে অপলক I সেই দৃষ্টিতে আছে একরাশ মুগ্ধতা Iতৃণা চুপ করে বসে আছে নিচের দিকে তাকিয়ে I কোন কথা বলছে না I কেন জানি হঠাৎ করে ওর মনটা খুব খারাপ লাগছে I সুজন বলল
চলো তোমাকে রান্নাঘরটা দেখিয়ে আনি
রান্নাঘরে ঢুকে তৃণা আরেকদফা অবাক হল I একপাশে একটা ইন্ডাকশন চুলা I তারা একদিকে মাইক্রোওয়েভ I অন্যদিকে কফি মেকার আর তার পাশে একটা ওয়াটার হিটার আর একটা তাকে চায়ের সরঞ্জাম I কৌটো গুলোর মধ্যে সুন্দর করে নাম লেখা I তৃণা ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখেছিল I হঠাৎই টের পেল সুজনের একেবারে ওর পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে I এত কাছে যে ওর কাঁধে নিঃশ্বাস টের পাওয়া যাচ্ছে I তৃণা হঠাৎ করেই ঘুরে দাঁড়ালো I সুজন একটু চমকে দু পা পিছিয়ে গেল I তারপরও লজ্জা পেয়ে বলল
সরি তোমাকে আনকম্ফোর্টেবল করতে চাইনি I আসলে এই টি স্টেশনটা আমি শুধু তোমার জন্য বানিয়েছি I আমি বিশেষ একটা চা খাইনা I
তারপর আস্তে আস্তে বেরিয়ে গেল রান্নাঘর থেকে Iতৃনার খুব হাসি পেল I ছেলেটা একদম বাচ্চাদের মতন I বের হয়ে পুরো ছাদটা ঘুরে দেখল তৃনা I অনেক ফুলের টব রাখা মাটি দিয়ে ভরা কিন্তু কোন গাছ লাগানো হয়নি I তৃণা একটু অবাক হলো I
– তুমি কি এখন এখানেই থাকো ?
– হ্যাঁ Iতোমার পছন্দ হয়েছে?
– খুব সুন্দর হয়েছে I দেখানো তো শেষ এবার আমি যাই
– এখন কেন যাবে I আমিতো ভাবলাম আমরা একসঙ্গে লাঞ্চ করব I আমি তোমার জন্য রান্না করতে চাইছিলাম I
তৃনা হাসতে হাসতে বলল
– তুমি রান্না ও করতে পারো ?
– না পারি না I ভেবেছিলাম তুমি দেখিয়ে দেবে
– বাহ I তুমি আমাকে ইনভাইট করে আমাকে দিয়েই রান্না করবে ? তোমার অবস্থা তো দেখি মামুন ভাইয়ের চেয়েও খারাপ I
সুজন হঠাৎ গম্ভীর হয়ে গেল I তারপর বলল
– মামুন ভাইটা কে ?
– কেউ না
– সেই নুডুলসওয়ালা নাকি ?
তৃণা হতভম্ব হয়ে গেল I বলল
– তুমি কি করে জানলে ?
– ইচ্ছা করলেই জানা যায় I খিদে পেয়েছে I চলো কিছু বানাই I
তৃনার কেন যেন ফিরে যেতে ইচ্ছা করছে না I হঠাৎই মনে হলো একটা দিন না হয় হোক সবকিছু নিয়ম ভেঙ্গে I তৃণা রান্নাঘরে ঢুকে পরল
দেখি কি আছে তোমার রান্না ঘরে I ফ্রিজের ভেতর থেকে ডিম পাউরুটি ধনেপাতা পেঁয়াজ মরিচ সবই পাওয়া গেল I উপরের তাকে মশলাপাতি চালডাল নুন সবি আছে I তৃনা বললো
– বাহ ভালই তো সংসার পেতেছে I তা কি রান্না করবো বলো খিচুড়ি না বোম্বাই টোস্ট ?
– তোমার যেটা ইচ্ছা I আমি দুটোই খাই
চুলায় খিচুড়ি বসানো হয়েছে I তৃণা ডিম ভাজির আয়োজন করছে I সুজন বলল
তৃণা একটা কবিতা শোনাও না
অবশ্যই শোনাবো I এই মুহুর্তের জন্যে একেবারে পারফেক্ট একটা কবিতা মাথায় এসেছে I শোনো
ভালবাসার সময় তো নেই
ব্যস্ত ভীষন কাজে,
হাত রেখো না বুকের গাড় ভাজে।
কাজের মাঝে দিন কেটে যায়
কাজের কোলাহল
তৃষ্নাকে ছোয় ঘড়ায় তোলা জল।
নদী আমার বয় না পাশে
স্রোতের দেখা নেই,
আটকে রাখে গেরস্থালির লেই।
তোমার দিকে ফিরবো কখন
বন্দী আমার চোখ
পাহারা দেয় খল সামাজিক নখ।
কবিতা শেষ করার আগেই তৃণা হি হি করে হেসে ফেললো I সুজন করুন মুখ করে তাকিয়ে আছে I হঠাৎ করেই ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বুকের ভেতরটা মুছড়ে উঠলো তৃণার I মনে হলো এই মুহূর্তটা কি সত্যিই না স্বপ্ন I এরকম একটা স্বপ্ন দেখা কি ওর জন্য অনেক বড় অপরাধ ?
চলবে….