#এটা গল্প হলেও পারতো
#পর্ব ১৯
ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলার পরে ভদ্রমহিলা, কৌশিক এবং অরিন্দম কে নিয়ে একটা উবের বুক করে অর্ক বেরিয়ে পড়লো, রাস্তায় যেতে যেতে রিয়ার মা কে বললো,
শ্বশুর বাড়িতে খবর দিয়েছেন?
ভদ্রমহিলা মাথা নাড়লেন,
দিয়েছি স্যার, ওর বাবা কে ফোন করে দিয়েছি। আসবে না হয়তো, ওই মহিলা আসতে দেবে না ওকে, তবু সম্পর্কটা তো আর অস্বীকার করতে পারি না! তাছাড়া মেয়ে বাবা অন্তপ্রাণ, যদি পরে জানে বাবা কে খবর দিই নি , তাহলে বাড়িতে বিরাট অশান্তি বাধবে! আসা না আসা ওর ব্যাপার! আমি আমার কর্তব্য করেছি! যদিও বুঝতেই পারছি, বাবার সঙ্গেই কিছু গন্ডগোল হয়েছে আজ! তাও বলে দিলাম! সারাজীবন তো দোষের ভাগী ই হয়েছি সবার কাছে! শাশুড়ি, ননদ বলে স্বামী কে আটকে রাখতে পারিনি, মেয়ে বলে তোমার জন্যে আমাকে ঠাম্মা, পিসিকে ছেড়ে আসতে হয়েছে! হাসব্যান্ড বলে আমি নাকি বিলো স্ট্যান্ডার্ড! আজ যদি এই খবর টা না দি, শেষ পর্যন্ত আমার ওপরেই দোষ পড়বে!
রিয়ার মা নেমে যাওয়ার পরে কৌশিক কে থ্যাংকস জানালো অরিন্দম, অর্ক দুজনেই,
খুব ভালো একটা কাজ করলে কৌশিক, একটা মানুষের জীবন বাঁচানো! এর থেকে ভালো কিছু আর হতেই পারে না!
কৌশিক মাথা নাড়লো,
অতো ভেবে কিছু করিনি স্যার! সেই মুহূর্তে মাথায় যা এসেছে, তাই করেছি! তবে অনির্বাণের কাছে অ্যাড্রেস না পেলে কিছুই করতে পারতাম না! একটা থ্যাংকস ওরও প্রাপ্য!
তুমি রিয়া কে পছন্দ করো কৌশিক? সরি! একজন টিচার হয়ে হয়ত এই কথাটা তোমাকে জিজ্ঞেস করা আমার শোভা পায় না, তবু এই জন্যেই জানতে চাইলাম, কারণ একমাত্র তোমাকেই ও মেসেজটা করেছে! তার মানে তোমাকেই একমাত্র বন্ধু বলে মনে করে!
করি স্যার! কিন্তু ও বলে ওর বাবা আমাকে মেনে নেবে না!
অরিন্দম এর প্রশ্নে মাথা নামিয়ে নিয়ে বললো কৌশিক।
প্রথমে অরিন্দম তারপরে কৌশিক, দুজনকে পর পর নামিয়ে অর্ক যখন বাড়িতে ঢুকলো তখন প্রায় রাত দুটো। রিয়ার সুইসাইড করার চেষ্টার কারণ যে ও নয় ওর বাড়ির অশান্তি এটা ভেবেই মনে মনে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছিলো ও, বেল বাজাতেই অদিতি এসে দরজা খুললো,
মেয়েটা কেমন আছে এখন?
ভালো, কালকের দিনটা রেখে ছেড়ে দেবে হয়তো!
ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বললো অর্ক, রাত অনেক হয়েছিলো, তাই অদিতি আর কথা বাড়ালো না। অর্ক হাত মুখ ধুয়ে এসেই শুয়ে পড়লো, ঘুমোতে অনেক দেরি হওয়ায় সকালে উঠতেও দেরি হলো। অদিতি চা নিয়ে এসে অর্ক কে ঘুম থেকে ওঠালো,
ওঠো, কলেজের দেরি হয়ে যাবে!
উঠে বসেই মাথায় হাত দিলো অর্ক,
মাথাটা ধরে আছে খুব, আজ আর কলেজে যাবো না!
চা খেয়ে কৌশিক কে ফোন করে রিয়ার খবর নিয়ে, অরিন্দম কে কলেজে না যাওয়ার কথা জানিয়ে দিয়ে আবার শুয়ে পড়লো ও। অদিতিও ছেলে কে সমরেশের কাছে দিয়ে এলো, যাতে অর্কর অসুবিধা না হয়। বেলা প্রায় বারোটা নাগাদ দরজার বেল বাজলো, অদিতি দৌড়ে এসে দরজা খুললো, দরজার ওপারে দাঁড়িয়ে একজন আধুনিকা অল্প বয়সী মহিলা, অদিতি কে দেখেই হাত তুললেন,
নমস্কার, মিস্টার মিত্র আছেন?
অদিতি একটু অবাক হলো, প্রতি নমস্কার জানিয়ে ভেতরে সোফার দিকে ইঙ্গিত করলো,
বসুন, ডেকে দিচ্ছি! শরীরটা একটু খারাপ ওর, ঘুমাচ্ছে!
ভদ্রমহিলা ঘাড় নাড়লেন,
স্বাভাবিক! যা চলছে আপনাদের! এই অবস্থায় মানুষ আর সুস্থ থাকবে কি করে!
অদিতি অবাক চোখে তাকালো,
মানে? কি চলার কথা বলছেন আপনি?
এই পিংকি মানে রিয়ার কথা বলছি! শান্তিতে থাকতে দেয় কাউকে! আমার জীবনটাও তো জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করছে একদম!
রিয়া কে আপনি চিনলেন কি করে?
ভদ্রমহিলা হাসলেন,
বলতেও খারাপ লাগে, তবু সম্পর্ক তো অস্বীকার করতে পারিনা কিছুতেই! সুবোধ আমার খুব ক্লোজ, একসঙ্গেই থাকি আমরা। যতোই হোক সুবোধের মেয়ে তো! আমার মেয়ে বলেও মনে করি আমি! কিন্তু ও আমাকে মায়ের জায়গা দেয় কই আর!
দিতি তাড়াতাড়ি থামিয়ে দিলো মহিলা কে,
আপনি একটু বসুন, আমি ওকে ডেকে দিচ্ছি!
ঘরে গিয়ে দেখলো অর্ক খাটে এপাশ ওপাশ করছে, সম্ভবত বেলের আওয়াজ এই ঘুম ভেঙে গিয়েছে। ওকে দেখেই বললো,
কার সঙ্গে কথা বলছিলে? এই সময় কে বেল বাজালো?
শোনো না! একজন মহিলা এসেছেন! কথা শুনে মনে হলো তুমি বলেছিলে না রিয়ার বাবা একজন মহিলার সঙ্গে থাকেন! ইনিই সম্ভবত সেই মহিলা!
নিচু গলায় বললো অদিতি, অর্ক লাফ দিয়ে খাটে উঠে বসলো,
এখানে! কি করতে!
দ্রুত পাঞ্জাবি পাজামা গলিয়ে ড্রইংরুমে এসে অর্ক দেখলো, ভদ্রমহিলা বসে আছেন, ওকে দেখেই নমস্কার জানিয়ে হাসলেন। উল্টোদিকের সোফায় বসতে বসতে গম্ভীর গলায় বললো অর্ক,
আপনি আমার বাড়ি চিনলেন কি করে?
মহিলা হাসলেন,
আপনি স্টুডেন্টদের মধ্যে যথেষ্ট পপুলার স্যার, আপনার ঠিকানা পাওয়া খুব কঠিন নাকি!
বলুন কি জন্যে এসেছেন?
অর্কর গম্ভীর গলা বোধহয় মহিলার নজর এড়ালো না, মুখের হাসি মিলিয়ে গেলো। অর্কর চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন,
কিছুটা আমার প্রয়োজনে, বাকিটা আপনার!
অর্কর ভ্রু কুঁচকে গেল, দিতি চা করতে যাবে কিনা মনস্থির করতে না পেরে এক গ্লাস জল টেবিলে রাখলো। ভদ্রমহিলা জলের গ্লাস তুলে চুমুক দিলেন, গ্লাস টেবিলে নামিয়ে রেখে বললেন,
শুনেছি প্রমাণের অভাবে কিছু করতে পারছেন না আপনারা!! কল টা রেকর্ড করে রাখেন নি তো তখন! আমাকেও ফোন করে মাঝে মধ্যেই উল্টোপাল্টা কথা বলে অপমান করে ও! আমি সব কল রেকর্ড করে রাখি, আপনি চাইলে আমার রেকর্ডগুলো দিতে পারি, আপনি ওগুলো পুলিশ কে দিয়ে বলতে পারেন যে এই জিনিস ও আরো অন্যের সঙ্গেও করেছে!
শুনেছেন! কার কাছে শুনেছেন? আর এতে আপনার লাভ?
অর্কর কথায় মহিলা মাথা নাড়লেন,
এসব খবর কি আর চাপা থাকে! বাতাসে ছড়ায়! তবে লাভের কথা বলছিলেন না? নাহ! লাভ কিছু নেই! জাস্ট খারাপ লাগা থেকে হেল্প করতে চাইছি বলতে পারেন!! আসলে এই অপমান তো আমিও সহ্য করি রোজ, তাই আপনাদের কেমন লাগছে বুঝতে পারছি!!
আপনি পুলিশে যান না কেন?
যেতে তো চাই! কিন্তু ওই যে সুবোধ! মেয়ে অন্ত প্রাণ! শুধু মেয়ে মেয়ে করেই তো এতো বছরেও ডিভোর্স দিতে পারলো না বউ কে! অথচ বউ কে দেখুন, ওকে পাত্তাই দেয় না! ওর টাকা নিতে ঘেন্না লাগে, নিজের মুখে বলে গেছে আমার ফ্ল্যাটে এসে! তারপরেও মেয়ের হাতে লুকিয়ে টাকা দিয়ে আসে! আর মেয়েও তেমনি, বাবার সঙ্গে থাকে না, কিন্তু টাকা, পয়সা নিতে ছাড়ে না! মায়ের আর কতো টাকা আছে! ওই তো একটা প্রাইভেট স্কুলের প্রাইমারি সেকশনের টিচার! সব আবদার তো বাবাই পূরণ করে! মাঝে মাঝেই দেখুন না বাবার কাছে গাড়ি চেয়ে পাঠায়, এককথায় ড্রাইভার সমেত গাড়ি দেয় বাবা, কোনোদিনও না বলে না!
অর্ক মহিলা কে থামিয়ে দিলো,
আপনাদের ব্যক্তিগত কথা আলোচনায় আমার কোনো রুচি নেই!
মহিলা মুখ শক্ত করলেন,
ব্যক্তিগত নয় এগুলো! আপনি পুলিশে না যাওয়ার কারণ জানতে চাইলেন, তাই বলছিলাম! এই যে আমাকে ফোনে এতো অপমান করে, তাও ওর বাবা কিছু করে না! আমার সহ্যেরও তো সীমা আছে বলুন! কাল দুপুরে এসে বলে কিনা বাবার সঙ্গে থাকবে! মায়ের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছে না, তো ঠাকুমার সঙ্গে থাক, তা না! আমার প্রাইভেসি বলেও তো কিছু আছে নাকি!! নিজের একটা মেয়ে আছে আমার, আবার আর একজনের দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব বলুন? সুবোধ প্রায় রাজি হয়ে যাচ্ছিলো, আমি তখন আপত্তি করেছি! যে আমাকে প্রতি নিয়ত আজেবাজে কথা বলে ফোনে অপমান করে তাকে আমি কিছুতেই আমার কাছে রাখবো না! চলে যেতে বলেছি বলে সে তার কি রাগ! সুবোধ কিছু টাকা দিয়েছিলো, সেগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে চলে গেলো, ও নাকি আর কখনো বাবার টাকা ছোঁবে না!
এবার অদিতি এগিয়ে এলো,
এগুলো আপনার ব্যক্তিগত কথাই! আপনাদের সম্পর্কের জটিলতায় আমরা ঢুকতে চাই না! যার সম্পর্কে এই কথাগুলো বলছেন, সে যে কাল সুইসাইড করার চেষ্টা করেছিলো সেটা জানেন নিশ্চয়ই! জেনেশুনেও মেয়েটার ওপরে আপনার কোনো সিম্পথী আসছে না! এতদিন আমার রিয়ার ওপরে সত্যি খুব রাগ হচ্ছিলো, মনে হচ্ছিলো সত্যি ওর শাস্তি চাই! কিন্তু আজ আপনাকে এখানে দেখে ওর জন্যে খারাপ লাগছে! একটা অল্পবয়সী মেয়ে, যার জীবনে এখনো অনেক কিছু করার আছে, সে কতো কষ্ট পেলে পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবতে পারে সেটা এখন বুঝতে পারছি!
মহিলা মাথা নাড়লেন,
আপনাদের অভিরুচি! তবে আর একটা ছোট্ট প্রস্তাব ছিলো, ফ্ল্যাট টা খুব ছোটো আপনাদের, বাবা, মাও তো সঙ্গে থাকেন দেখছি! ছেলে বড়ো হচ্ছে, এবার ওরও একটা ঘর লাগবে, এতো লোক একসঙ্গে থাকতে অসুবিধা হয় নিশ্চয়ই। আমার ভগ্নিপতির প্রমোটিং এর বিজনেস, যদি চান তাহলে একটা বড়ো ফ্ল্যাট অনেকটা সস্তায় করে দিতে পারি, বাইপাসের ওপরে বড়ো একটা কমপ্লেক্স করছে ও!
রাগে গা রি রী করে উঠলো অদিতির, মহিলা সরাসরি ঘুষ দিচ্ছে!
ফ্ল্যাট কেনার মতো ক্ষমতা আমাদের আছে, এ ব্যাপারে অন্যের সাহায্যের দরকার নেই! আপনি সম্ভবত আমাদের ঘাড় ভেঙে নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করতে চাইছেন, যে কাজটা আপনি ওর বাবার জন্যে করতে পারেন নি এতদিন সেটা আজ এই সুযোগে আমাদের দিয়ে করিয়ে নিতে চাইছেন, তাই না? আর ঠিকই বলেছেন, আগের বার কল রেকর্ড করে রাখিনি বলেই কিছু প্রমাণ করতে পারিনি আমরা, কিন্তু আজ আর সে ভুল করিনি। আপনার সব কথাই ভিডিও করে রেখেছি আমি, আপনি যে আমাদের ফ্ল্যাটের লোভ দেখিয়ে একটি বাচ্চা মেয়ে কে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন এটাই পুলিশে অভিযোগ জানানোর জন্যে যথেষ্ট, হাতের মোবাইল টা মহিলার দিকে তুলে ধরে বললো অদিতি।
মহিলা চুপ করে গেলেন, ভয়ে, অপমানে মুখ লাল হয়ে উঠলো, অর্ক সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো, নমস্কারের ভঙ্গিতে হাত জোড় করে ভদ্রমহিলার দিকে তাকিয়ে বললো,
আমার স্ত্রী কি বলেছেন সেটা বুঝতে পেরেছেন আশাকরি! রিয়া আমার ছাত্রী, ব্যক্তিগত ভাবে ওকে না চিনলেও একজন স্টুডেন্ট হিসেবে গত তিন বছর ধরে চিনি! যথেষ্টই হাসিখুশি মেয়ে, ওর জীবনে এতো জটিলতা আছে আগে কোনোদিনও বুঝিনি! এতো কিছু জানার পরে একজন শিক্ষক হিসেবে ওর আর কোনো ক্ষতি করতে চাই না। ভবিষ্যতে আপনি এরকম কোনো প্রস্তাব নিয়ে আর আমার বাড়িতে আসবেন না আশা রাখি, যদি আসেন তাহলে এই ভিডিও টা আমরা পুলিশের কাছে দিতে বাধ্য হবো!
ভদ্রমহিলা থমথমে মুখে বেরিয়ে গেলেন, এতক্ষনে সমরেশ আর রুমাও বেরিয়ে এসেছিলেন কথা কাটাকাটির আওয়াজ শুনে, অদিতি ধপ করে সোফায় বসে পড়লো,
কি সাংঘাতিক মহিলা! নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্যে কোথা থেকে অ্যাড্রেস নিয়ে এখানে চলে এসেছে! মেয়েটা কে ফাঁসাতে চায়! কি অদ্ভুত এই দুনিয়া, তাই না! আমার এখন রিয়ার জন্যেই খারাপ লাগছে! বেচারা মেয়েটা জানেও না ও আর একটু হলেই কতো বড় বিপদে পড়তে যাচ্ছিলো! এই যাহ! মহিলার নামটাই তো জানা হলো না!
ছাড়ো তো! ইচ্ছে করেই জিজ্ঞেস করিনি! ওই রকম নোংরা একজন মহিলার নাম জানার কোনো ইচ্ছেই আমার নেই!
অর্ক পাশ থেকে বলে উঠলো, রুমা মাথা নাড়লেন,
সত্যিই নোংরা মহিলা! একটা সন্তান সম মেয়ের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে! নাই বা হলো নিজের, তাই বলে একটা বাচ্চা মেয়ের জন্যে কোনো ফিলিংস থাকবে না! আর বাবা, মায়ের সম্পর্কের জটিলতা কিভাবে সন্তানদের ওপর প্রভাব ফেলে দ্যাখ! রিয়া একটা বাচ্চা মেয়ে, কোথায় হেসে খেলে আনন্দ করে বেড়াবে, তা নয়, উল্টোপাল্টা কাজে সময় নষ্ট করছে! কি বলবো কিছুই বুঝতে পারছি না! কার দোষ দেবো! বাবা, মায়ের!! নাকি সন্তানের!!
সমরেশ দীর্ঘশ্বাস ফেললেন,
দোষ কারো নয় রুমা, দোষ পরিস্থিতির! বাবা, মায়েরও হয়ত নিজেদের মতো বাঁচার অধিকার থাকে! কে ভালো, কে মন্দ এগুলো তো তর্ক সাপেক্ষ! আমরা তার বিচার করার কেউ নই! কিন্তু খারাপ লাগা একটাই যে ওরা কেউই হয়ত ভালো নেই! মেয়ের এই ডিসিশন নেওয়ার কথা জানার পরে মায়ের মতো বাবারও তো খারাপ লাগছে নিশ্চয়ই! তিনিও যে মেয়ে কে যথেষ্টই স্নেহ করেন সেটা তো এই মহিলার কথা থেকেই পরিষ্কার!
অর্ক সায় দিলো,
ঠিকই বলেছো বাবা, বাঁচার অধিকার সবারই আছে হয়তো! এবং সেটা তো রিয়ারও আছে! এরকম পরিস্থিতি যে হতে পারে সেটা হয়ত ওনারা বুঝে উঠতে পারেন নি! তবে মেয়ে যে খুব উদ্ধত, কথা শোনে না, এগুলো কিন্তু কাল ওর মা নিজেই বলছিলেন আমাদের! এগুলো দেখেও তো ওনাদের সতর্ক হওয়া উচিত ছিলো তাই না! আজ ক্ষতি হয়নি মানেই যে ভবিষ্যতে এরকম আবার করার চেষ্টা করবে না তার তো কোনো গ্যারান্টি নেই!
হ্যাঁ,রে, ওর একটা কাউন্সিলিং করা উচিত তাই না?
রুমার প্রশ্নে অর্ক ঘাড় নাড়লো,
হ্যাঁ, করাই তো উচিত! দেখা যাক ডক্টর কি বলেন! আর আমরা চাইলেই তো হবে না, ওর বাবা, মা কি ঠিক করেন সেটার ওপরেই সবটা নির্ভর করছে! যা সম্পর্ক দুজনের! এ ডাইনে গেলে ও বাঁয়ে যায়!
মোটেই না! ভদ্রমহিলার কথা শুনে তো আমার রিয়ার মা কে ভালোই লেগেছে! যে কোনো আত্মসম্মান সম্পন্ন মহিলা এরকমই ডিসিশন নেবে! হাজব্যান্ডের অবৈধ রিলেশন আছে জেনেও তার সঙ্গে থাকবে!
নিশ্চয়ই না! তুমি একশ শতাংশ ঠিক কথা বলেছো, আমি সেকথা বলিনি! আমি বললাম মেয়ের ব্যাপারেও ওনারা সহমত হবেন কিনা সন্দেহ আছে!
দিতি র কথার উত্তরে বললো অর্ক। বেলা হয়ে গিয়েছিলো, অর্ক উঠে পড়লো,
চলো খেয়ে নিই, বিকেলে একবার হসপিটালে যেতে হবে আমাকে!
মহিলা কে যা দেখলাম, সত্যিই রিয়ার বাবা তো কোনো দায়িত্ব নেবে না মনে হয়!
ক্রমশ