#বাবুইপাখির_অনুভূতি🕊️পর্বঃ৩০

0
555

#বাবুইপাখির_অনুভূতি🕊️পর্বঃ৩০
#লেখিকা:#তানজিল_মীম🕊️

_________________

বিষন্নমাখা মুখ নিয়ে আস্তে আস্তে এগিয়ে চলছে অথৈ তাঁর ডাইরিটার দিকে। সাথে অনেক পুরনো কিছু স্মৃতি নিগড়ে বের হচ্ছে তাঁর। বুকের ভিতর ধুকপুকানি যেন কয়েকশত বেড়ে চলছে তাঁর। অথৈ এঁকে এঁকে নিচে পড়ে থাকা সব জিনিসপত্রগুলো গুছিয়ে রাখলো বাক্সের মধ্যে। তাঁরপর বাক্সটাকে নিচে রেখেই এগিয়ে যায় সে তাঁর পড়ার টেবিলের দিকে। আনমনেই চেয়ার টেনে বসে পড়ে টেবিলের পাশ দিয়ে। দুপুরের রৌদ্রময়ী বাতাস আসছে জানালার কার্নিশ বেয়ে সাদা পর্দা ভেদ করে। অথৈই খুব আগ্রহ নিয়ে ডাইরির প্রথম পাতাটা খুললো। শুরুতেই ডাইরির প্রথম পাতায় একটা সুন্দর ছবি আঁকা। যেখানে রয়েছে,,

একটা অল্প বয়সের ছেলে সাইকেল নিয়ে এগিয়ে আসছে সামনে। প্রকৃতিরা দুলছে বারংবার। চারপাশের গাছেরা ভর্তি করে আঁটকে রেখেছে তাঁকে। ফুলেরাও ঝরছে বেশ।’

‘ বয়সটা তখন খুবই অল্প অথৈর। দশ কি এগারো বছর হবে তখন। প্রিয় কাকিমার বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল সে। পরন্ত বিকেল বেলা চারিদিকে বাতাস বইছে ভীষণ, রাস্তার চারপাশ জুড়ে ফুলেরা দুলছিস বারংবার। রাস্তার পাশেই এঁকে বেঁকে চলছিল একটা নদী। নদীর তীরেই ছিল বসার জন্য ছোট্ট একটা বেঞ্চ, নদীর তীরের রাস্তার দিকটা জুড়ে ছিল রেলিং। এসবের ভিড়েই রাস্তার অন্যদিক জুড়ে ছিল একটা ছোট্ট টংয়ের দোকান। হাতে পাঁচ টাকা নিয়ে কিছু লজেন্স কিনতে এসেছিল অথৈ। পরনে তাঁর পেস্ট আর সাদার মিশ্রণের সুন্দর একটা ফ্রর্ক। লম্বা চুলগুলো খুলে সাদা রঙের হেয়ার বেন্ট দেওয়া। অথৈ সেদিন একাই এসেছিল টংয়ের দোকানে। কিন্তু ভাগ্য ক্রমে সেদিন দোকানটা বন্ধ ছিল। বেশ নিরাশ হয়েই উল্টোদিক মুখ করে বাড়ির পথের দিকে হাঁটা দিচ্ছিস সে। এমন সময় সাদা টিশার্ট, এস কালার ট্রাউজার সাথে চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা পড়ে ছোট্ট সাইকেল চালিয়ে আসছিল একটা ছেলে। চারদিকে প্রকৃতিরা যেন মেতে উঠেছিল ভীষণ চারদিকে বাতাস বইছে খুব, বাতাসের তীব্রতায় গাছের ফুলেরা ঝরে পড়ছিল চারদিক জুড়ে। এমন সময় সামনের ছেলেটির চোখে কিছু একটা পড়তেই সাইকেলের বেলেন্স হারিয়ে ধারাম করে পড়ে যায় নিচে। হুট করে এমন কিছু দেখে খিল খিল করে হেঁসে ফেলে অথৈ। অন্যদিকে অথৈকে হাসতে দেখে ছেলেটি সাইকেল নিয়ে আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ালো তারপর বললো,

‘ এত হাসার কি আছে?’

উওরে সেদিন কিছুই বলে নি অথৈ শুধু হাসতে হাসতে ছেলেটির দিকে তাকাতে তাকাতে চলে গিয়েছিল সে। তবে অথৈ সেদিন অতোশতো না বুঝলেও এতটুকু বুঝতে পেরেছিল ছেলেটি খুব রাগ করেছিল তারওপর।’

এমনই প্রকৃতি ঘিরে সাইকেলে করে চড়ে আসা ছেলেটির ছবি এঁকেছিল অথৈ। যদিও সেটা খুব অস্পষ্টনীয় কিন্তু প্রকৃতিটা রিয়েল ছিল কারন বেশ কয়েকবারই সেখানে গিয়েছিল অথৈ। তাই ছেলেটির ফেঁসের দিকটা অগোছালো হলেও চোখের চশমাটা আর প্রকৃতিটা বেশ এঁকেছে অথৈ। পুরো ছবিটায় একবার হাত বুলিয়ে মুচকি হাসলো অথৈ। অথৈ ছোট বেলা থেকেই ছবি আঁকতে ভীষণ পারদর্শী ছিল এর মধ্যে প্রকৃতির ছবি ছিল তাঁর খুব প্রিয়। সুন্দর প্রকৃতি দেখলেই সেটা নিমিষেই এঁকে ডাইরি ভর্তি করতে ভীষণ পছন্দ করে সে।’

এরপর বেশ কয়েকটা পাতা উল্টালো অথৈ। হঠাৎই আর একটা আঁকা ছবির দিকে চোখ আঁটকে পড়লো অথৈর।’

সাইকেল থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনার ঠিক দু’দিন পড়েই। অথৈ তাঁর কিছু মেয়ে বন্ধুদের সাথে একটা আম গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছিল চুপচাপ আর তাঁর বন্ধুরা গাছের ওপর ঝুঁলে থাকা আমের দিকে ঢিল ছুঁড়তে ছিল।’

এমন সময় কিছু ছেলেদের নিয়ে জড়ো হয় সেই চশমা পড়া ছেলেটিও। চশমা পড়া ছেলেটির পাশে থাকা ছেলেদের মধ্যে একজন বলেছিল,

‘ ঢিল ছুঁড়ে আম ফেলা তোদের কাজ নয় বলেই সেই ছেলেটি চটপট উপরে উঠে গাছে চড়ে বসে। তারপর বলে,

‘ দেখলি এইভাবে গাছে উঠে আম পাড়তে হয়।’

এমন সময় সেখানে উপস্থিত হয় গাছের মালিক ব্যাস সব কয়টায় ভয়ের চোটে পালালো। এদের মধ্যে অথৈ ছিল চুপচাপ দাঁড়িয়ে কারন সে বুঝতে পারে নি সবাই কেন দৌড়াচ্ছিল। অথৈকে দৌড়াতে না দেখে চশমা পড়া ছেলেটি এগিয়ে এসে বললো অথৈকে,

‘ কি হলো তুমি দৌড়াচ্ছো না কেন?’

ছেলেটির কথা শুনে অথৈ বলে উঠল,

‘ আমি দৌড়াবো কেন, আমি তো কিছু করি নি?’

এরই মধ্যে হাতে লাঠি নিয়ে এগিয়ে এসে বললো গাছের মালিক,

‘ এই বদমাইশ বাচ্চারা আমার গাছের আম চুরি করোস খাঁড়া আইজ তোগো একদিন কি আমার একদিন।’

বলেই তেঁড়ে আসতে নিলো মালিক। মালিককে আসতে দেখে চশমা পড়া ছেলেটিও বেশি কিছু না ভেবে অথৈর হাত ধরে দিল দৌড়। ততক্ষণে গাছের উপরে থাকা ছেলেটি তিনটা আম পেড়ে গাছ থেকে নেমে ঝড়ের গতিতে দিল দৌড়। অথৈর সেদিন প্রথম ভালো লাগা কাজ করছিল সেই চশমা পড়া ছেলেটির ওপর। অথৈই সেই থেকে প্রায় দাঁড়িয়ে থাকতো সেই চশমা পড়া ছেলেটার জন্য কিন্তু ছেলেটি আর আসতো না।’

আম গাছের নিচে হাত ধরে দৌড়ে যাওয়া এমনই এক দৃশ্য এঁকে ছিল অথৈই।’

এরপর নানা ভাবেই দেখা হতো দুজনের। কখনো পুকুর পাড়ে একসাথে বসে মাছ ধরতে, তো কখনো একসাথে খেলাধুলা করতে। এইরকমেরই ছোট বেলার ছবি এঁকেছে অথৈই। আর ছবিগুলোই ছিল অথৈরই অনুভূতির প্রমান। এমনই করতে করতে একদিন বিদায় জানিয়ে চলে আসলো অথৈই নিজের বাড়িতে। আর সেই ছেলেটাও চলে গিয়েছিল তার নিজেদের বাড়িতে। এরপরই যতবারই অথৈ গিয়েছিল তাঁর কাকিমার বাড়িতে একবারও দেখা হয় নি সেই ছেলেটার সাথে। সেই থেকে অথৈ এখনো অপেক্ষায় আছে সেই ছেলেটার। যদিও সে জানে না ছেলেটি এখন দেখতে কেমন? কি ছিল তাঁর নাম আর থাকতোই বা কোথায়?’

আর ধীরে ধীরে তাঁর সেই অনুভূতি মেশানো অপেক্ষাগুলো ভালোবাসায় বদলে গেল কখন বুঝতে পারে নি অথৈ। এঁকে এঁকে সব স্মৃতিগুলো মনে পড়তেই দীর্ঘ শ্বাস ফেললো অথৈ। কে জানে আধও আর কোনোদিন দেখা হবে কি না তাদের। এমন সময় দরজায় নক করলো অথৈর মা বললেন তিনি,

‘ কি রে গোছানো হয় নি তোর?’

হুট করে মায়ের কন্ঠ কানে আসতেই হকচকিয়ে উঠলো অথৈ চটজলদি ডাইরিটাকে টেবিলের উপর রেখে বললো সে,

‘ এই তো মা হয়ে এসেছে তুমি তৈরি হও আমিও তৈরি হয়ে আসছি।’

অথৈর কথা শুনে অথৈর মাও বলে উঠল,

‘ ঠিক আছে তুই তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে আয়। তাড়াতাড়ি না বের হলে তোর কাকিমার বাড়ি যেতে দেরি হয়ে যাবে তো।’

‘ কিছু হবে না তুমি গিয়ে তৈরি হও?’

‘ ঠিক আছে তুইও তৈরি হয়ে বেরিয়ে আয়?’

‘ ঠিক আছে মা।’

উওরে আর অথৈর মা কোনো জবাব দিলো না। মাকে আর কিছু বলতে না দেখে অথৈ বুঝতে পেরেছে তাঁর মা চলে গেছে। তাই আর বেশি কিছু না ভেবে সেও চটজলদি ব্যাগগুছিয়ে হাল্কা তৈরি হয়ে চোখে চশমাটা লাগিয়ে বেরিয়ে গেল রুম থেকে। আর রয়ে গেল টেবিলে ওপর তাঁর অনুভূতি মিশ্রিত ডাইরিটা। দুপুরের রোদ্দুরেরা চলে যাচ্ছে এখন সাথে হাল্কা হাল্কা তাদের ছোঁয়া দিয়ে যাচ্ছে অথৈর অনুভূতি মিশ্রিত ডাইরিটাকে।’

_____

বাচ্চাদের সাথে হুড়োহুড়ি সাথে কানামাছি খেলছে আহি আর আদ্রিয়ান। কয়েক মুহূর্ত আগেই এক বাচ্চার ডাক শুনে আহি আদ্রিয়ান দুজনই চলে আসে ওদের সামনে। তারপর আর বেশি কিছু না ভেবে তাঁরাও খেলতে শুরু করলো৷ বর্তমানে আহির চোখ বাঁধা আর বাকিরা ছোটাছুটি করছে আহির চারপাশ জুড়ে। এমন সময় আদ্রিয়ানের ফোনটা বেজে উঠল তাই সেও সবার থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলতে লাগলো। আর আহি বেচারি চারপাশে ঘুরতে লাগলো কারন সে কাউকেই ধরতে পাচ্ছে না।’

হঠাৎই আহি হাঁটতে হাঁটতে চলে যায় আদ্রিয়ানের কাছে। কারো উপস্থিতি টের পেতেই আহি ঝাপটে জড়িয়ে ধরলো আদ্রিয়ানকে তারপর হাসি মাখা মুখ নিয়ে বললো সে,

‘ ধরে ফেলেছি?’

হুট করে আহির এমন কাজে চমকে উঠলো আদ্রিয়ান। পরক্ষণেই আহির হাসিমাখা মুখ দেখে চোখ আঁটকে যায় তাঁর। আনমনেই তাকিয়ে রয় সে আহির মুখের দিকে। এমন সময় সব বাচ্চারা ওদের দিকে এগিয়ে এসে লাফাতে লাফাতে বলে উঠল,

‘ কি মজা কি মজা আহি আপু আদ্রিয়ান ভাইয়াকে ধরে ফেলেছে?’

বাচ্চাদের কন্ঠ কানে আসতেই নিজের ভাবনা দেখে বেরিয়ে আসলো আদ্রিয়ান। এর মধ্যে আহিও তাঁর চোখে বাঁধা রুমালটা খুলে তাকালো আদ্রিয়ানের দিকে। দুজনই দুজনের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন।’

হঠাৎই নিজের খেয়াল আসতেই আহি তাড়াতাড়ি আদ্রিয়ানকে ছেড়ে দিয়ে দু’কদম পিছনে চলে গেল। আদ্রিয়ান আহির দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,

‘ আমাকে এখন যেতে হবে?’

আদ্রিয়ানের কথা শুনে আহিও বলে উঠল,

‘ আমাকেও যেতে হবে হসপিটালে?’

উওরে আদ্রিয়ান আর তেমন কিছু না বলে বাচ্চাগুলোর কাছ থেকে বিদায় জানিয়ে সাথে কিছু চকলেট কিনে দিয়ে চলে যায় সে।’

আর আহিও আদ্রিয়ানকে যেতে সেও চলে যায় তাঁর গন্তব্যের দিকে। তবে আজ ভীষণ ভালো লাগছে তাঁর আদ্রিয়ানের সাথে সময় কাটিয়ে।’

_____

রাত_৮ঃ০০টা….

গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে রিনি। সন্ধ্যা থেকেই মনটা তাঁর ভিষণ খারাপ বার বার মন চাইছিল অথৈকে একটা ফোন করতে কিন্তু কোথাও যেন একটা আঁটকে পড়ছিল সে, সাথে নিজের ওপর নিজেরই রাগ হচ্ছিল তাঁর। হয়তো শুধু শুধুই অথৈর ওপর রেগে গিয়েছিল সে। সত্যি তো ওর তো কোনো দোষ ছিল না। অথৈ তো আর নীরব ভাইয়াকে গিয়ে প্রপোজ করে নি, নীরব ভাইয়া নিজে এসে ওকে প্রপোজ করেছিল। এই রকম নানা কিছু ভাবতে ভাবতে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিল রিনি, আজ সে একাই ড্রাইভ করছে কোথায় যাচ্ছে নিজেও জানে না। এমন সময় আচমকা একটা সাইকেল সামনে আসাতে রিনি ঘাবড়ে গিয়ে জোরে ব্রেক কষলো কিন্তু তারপরও সেই তাঁর গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগে সামনের ছেলেটি পড়েই গেল রাস্তায়। ঘটনাটা হুট করে হয়ে যাওয়াতে রিনি ঘাবড়ে গিয়ে চটজলদি গাড়ি থেকে বের হলো তারপর দৌড়ে সামনের ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ আপনি ঠিক আছেন?’

বলেই শুভকে দেখে বলে উঠল সে,

‘ আপনি?’

অনেকদিন পর রিনির ভয়েস শুনে অবাক দৃষ্টিতে শুধু তাকিয়ে রইলো শুভ। তবে কিছু বললো না।’

__

খোলা এক উঁচু মাঠের কিনারায় বসে আছে রিনি আর শুভ। তাদের পিছনেই রাস্তার কিনারায় রিনির গাড়ি আর শুভর সাইকেল রাখা। কিছুক্ষন আগেই এদিকে এসেছে তাঁরা। শুভ নিচে পড়ে গিয়ে হাতে আর পায়ে ব্যাথা পেয়েছে একটু। বর্তমানে রিনি শুভর হাতে মলম লাগিয়ে দিতে দিতে বলে উঠল,

‘ ওইভাবে কেউ হুট করে গাড়ি সামনে চলে আসে নাকি যদি কিছু হয়ে যেত তবে?’

উওরে শুভ রিনির মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ আমি বুঝতে পারি নি যে আপনি চলে আসবেন।’

শুভর কথা শুনে রিনি শুভর মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ আই এক্সট্রিমলি সরি আসলে ভুলটা আমারই বেশি ছিল মনটা একটু খারাপ থাকায় অন্যমনস্ক হয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলাম তাই আর কি?’

‘ ইট’স ওকে। কিন্তু আপনার মন খারাপ কেন?’

‘ আসলে আমার প্রিয় একটা বন্ধু আমার উপর অভিমান করে চলে গেছে আমাকে সরির বলার সুযোগটাও দেয় নি তাই আর কি?’

রিনির কথা শুনে এক মুহূর্তের জন্য হলেও আদ্রিয়ানের কথা মাথা আসলো শুভর। শুভ আনমনেই বলে উঠল,

‘ অভিমানকে বেশি দূরে যেতে দিবেন না, এতে দুরত্ব বাড়বে বই কমবে না।’

শুভর কথা শুনে রিনি অবাক দৃষ্টিতে শুভর দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ মানে?’

‘ মানে এটাই প্রিয় মানুষ হোক বা প্রিয় বন্ধু কারো সাথেই বেশিদিন অভিমান করে থাকবেন না আর তাঁকেও থাকতে দিবেন না। কারন এতে প্রিয় মানুষটা আজীবনের জন্য আপনার থেকে দূরে চলে যাবে,হয়তো আর কখনো ফিরেও আসবে না।’

‘ তাহলে আমার কি ওঁকে ফোন করে সরি বলা উচিত?’

রিনির কথা শুনে শুভ খোলা আকাশের দিকে একপল তাকিয়ে বললো,

‘ যেহেতু ভুলটা আপনার ছিল তাই সরি বলাই উচিত। একটা সরি আপনার মুড অন বা মন খারাপ যেটাই বলুন কমিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। আর আপনার বন্ধুও যদি আপনাকে মন থেকে বন্ধু ভেবে থাকে তাহলে নিমিষেই আপনার সরি সে গ্রহণ করবে।’

‘ তাহলে আপনি বলছেন আমি ফোনটা করবো ওঁকে?’

‘ হুম।’

শুভর কথা শুনে রিনি জোরে নিশ্বাস ফেলে বললো,

‘ জানেন তো সেই বিকেল থেকে এই বিষয়টা নিয়ে ডিপ্রেসড ছিলাম আমি, ধন্যবাদ আপনাকে।’

উওরে শুভ মুচকি হাসলো তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে আবারো বলে উঠল সে,

‘ আজকে আকাশটা খুব সুন্দর তাই না।’

শুভর কথা শুনে রিনিও তাকালো আকাশটার দিকে। চারদিকে তাঁরারা ভড় করেছে ভীষন। রিনি আনমনেই বলে উঠল,

‘ হুম,খুব সুন্দর।’

রিনির কথা শুনে শুভ তাকালো রিনির মুখের দিকে,

আজ অনেকদিন পর শুভ দেখলো রিনিকে। সেদিন বাড়ি যাওয়ার পর থেকেই রিনিকে নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে তাঁর, ওর সময় কাটাতে ইচ্ছে করে। বার বার ইচ্ছে করছিল একবার দেখা হোক রিনির সাথে তাঁর। জ্বরে ঘোরেও বার বার রিনির কথাই মনে পড়ছিল শুভ। সেই শুভর মুখ চেপে ধরা মুহূর্তটা যেন বার শুভর চোখের সামনে ভাঁসে। যেন রিনিতে পাগল হয়ে যাচ্ছিল সে। প্রচন্ড বিরক্ত তার অস্থিরতা নিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল।
অন্যমনস্ক হয়ে সাইকেল নিয়ে যাচ্ছিল শুভ। কিন্তু তাঁর এই অন্যমনস্কই যে রিনির সাথে দেখা করাবে এটা ভাবতে পারে নি শুভ।’

শুভ আনমনেই রিনির মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ আমি কি তবে আপনায় ভালোবেসে ফেলেছি,রিনি?’

হুট করেই শুভ মুখে কিছু শুনে রিনি শুভর দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ কি?’

সাথে সাথে ঘাবড়ে গেল শুভ। মাথায় একটা কথাই বাজছে তার,

‘ শুনে ফেললো নাকি?’
!
!
!
!
!
#চলবে…..

[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ। গল্প কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে। তিন জুটি দেখে একটু কম বেশি হয়ে যাচ্ছে মুহূর্তগুলো। ধৈর্য নিয়ে পড়বে সবাই, ধীরে ধীরে সবটা গুছিয়ে দিবো]

#TanjiL_Mim♥️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here