#বাবুইপাখির_অনুভূতি🕊️অন্তিম_পর্ব
#লেখিকা:#তানজিল_মীম🕊️
— পর্বঃ৫৩ #অন্তিম_পর্ব
সময় কখনোই কারো জন্য থেমে থাকে না। হোক সেটা দুরত্বে ভরপুর অথবা আনন্দের আত্মহারা। সময় চলনশীল এটা চলতেই থাকে তাই তো বলতে না বলতেই কেটে গেল পুরো ৬ মাস। এই ছয় মাসে বদলে গেছে অনেক কিছু। এই ছয় মাসে কোনোভাবেই কোনো যোগাযোগ হয় নি আহির সাথে আদ্রিয়ানের। যদিও আদ্রিয়ান মাঝে মধ্যে কল করেছে শুভ আর নিলয়ের কাছে। কিন্তু আহির সাথে কথা হয় নি তাঁর।’
রিনি শুভর সম্পর্কটাও মেনে নিয়েছে রিনির বাবা মা। কয়েকদিন আগেই আদ্রিয়ানের সাথে ভিডিও কলে কথা হয় ওনাদের। ওনারও মেনে নিয়েছে সবটা। একই তো শুভ আদ্রিয়ানের ভাই তারওপর এত বড় ডাক্তার তাই আর বারন করার কোনো রিজনই পায় নি ওনারা। তার চেয়েও বড় কথা মেয়ের সুখের জন্য সবকিছুই করতে রাজি রিনির বাবা মা। শুভ-রিনির বিয়ের ব্যাপারেও কথা বলেছিল আদ্রিয়ান, কিন্তু সে ব্যাপারে আপাতত টোটালি না করে দিয়েছে শুভ আর রিনি। কারন তাঁরা চায় তাদের আগে আদ্রিয়ানের বিয়ে হবে। যদিও আদ্রিয়ান এ বিষয়ে তেমন কিছুই বলে নি।’
অন্যদিকে, নীরব অথৈর সম্পর্কও হয়েছে খুব গভীর। নীরব একদিন নিয়ে গিয়েছিল অথৈকে তাদের বাড়িতে। নীরবের মার তো খুবই পছন্দ হয়েছে অথৈকে। যদিও নীরব তাদের সম্পর্কের কথা বলেনি তাঁর মাকে, কিন্তু না বললেও নীরবের মা ঠিকই বুঝতে পেরেছে। আর এছাড়া আহির বাহানায় এখন প্রায় অথৈ আসে নীরবদের বাড়িতে।’
আরেকদিকে আহি,
এ ছয়মাসে এর জীবনে এসেছে বিশাল পরিবর্তন। এক এক্সামের প্যারায় রোজ ভার্সিটিতে একাউন্টিং টিচারের টর্চার সাথে হসপিটাল আর দিনশেষে বাড়ি ফিরে নীরব আর অথৈর প্যারায় পুরো জীবন শেষ তাঁর। কারন এক্সামের টেনশনে দুই ইন্টালিজেন্ট বন্ধুর স্যার ম্যামের মতো সাহায্য নিতে হয়েছে তাঁকে। আর সবশেষে আদ্রিয়ানের শুন্যতা তো আছেই। এক কথায় বলতে আহির অবস্থা খুবই বাজে।’
কাল আহির লাস্ট এক্সাম। এই কয়দিন পরীক্ষার প্যারায় নাওয়া খাওয়া সবই প্রায় বন্ধ তাঁর। তারওপর নীরব আর অথৈর টর্চার তো আছেই।’
ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকাল ৪ঃ০০টা বাজে। আজ শুক্রবার হওয়াতে হসপিটালের প্যারাটা নেই আহির। বসন্তের বাতাসে,খোলা বারান্দার দক্ষিণা বাতাসের মাঝে বইয়ের নিচে মাথা লুকিয়ে ঘুমিয়ে আছে আহি। এমন সময় কিছুটা গম্ভীর মুড নিয়ে তাঁর দুইপাশে নীরব আর অথৈ এসে দাঁড়ালো। অথৈ তো তাঁর চোখের চশমাটা ঠিক করে আহির গায়ে খোঁচা দিয়ে বললো,
‘ আহি উঠ?’
আহি চুপ।’
‘ আহি ওঠ বলছি কাল তোর লাস্ট এক্সাম এখনো পড়তে না বসে পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিস।’
আহি এখনো চুপ।’
আহিকে এখনো ঘুমাতে দেখে নীরব অথৈর দিকে এক পলক তাকিয়ে কড়া কন্ঠে বললো,
‘ আহি তুই কি উঠবি নাকি তোর একাউন্টিং টিচারকে ডেকে আনবো।’
সঙ্গে সঙ্গে লাফ মেরে উঠে বসলো আহি। তারপর আশেপাশে তাকিয়ে চোখবুলিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো সে,
‘ হুম না না তাঁকে ডাকার দরকার নেই তোমরা এমন কেন শান্তিতে একটু ঘুমাতেও দেওয়া না।’
‘ কাল এক্সাম দিয়ে এসে যত ইচ্ছে ঘুমাস, তোকে কেউ ডাকবে না। (অথৈ)
‘ হা ঠিক আছে ঠিক আছে।’
বলেই অগোছালো চুল আর চোখ মুখ বাঁকিয়েই বইয়ের পাতায় চোখ রাখলো আহি। আহিকে পড়তে দেখে ওর সামনেই দুটো চেয়ার টেনে পাশাপাশি বসলো অথৈ আর নীরব। এটা নতুন কিছু নয় বিগত ছয় মাস যাবৎ রোজ শুক্রবার বিকালেই একসাথে পড়তে বসে অথৈ নীরব আহি আর রিনি। আজ হয়তো কোনো কারনে রিনি আসে নি। এছাড়া সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে রোজ রাতে একসাথে পড়তে বসতো নীরব অথৈ আর আহি। মাঝে মাঝে এমনও গেছে অথৈ বাড়ি ফেরেনি আহিদের বাসায় থেকে গেছে। অবশ্য এতে ভালোই হয়েছে নীরবের সাথে একটু বেশি সময় কাটাতে পেরেছে অথৈ। আদ্রিয়ানের বিষয়টা মোটামুটি সবাই জানে, আহিও যে আদ্রিয়ানকে ভালোবাসে এটাও সবাই জানে। কিন্তু আহি সবাইকে বারন করেছে বিশেষ করে শুভ আর নিলয়কে যেন এই বিষয়ে আদ্রিয়ানকে কেউ কিছু না বলে। এখন যা বলার সব আহি নিজেই বলবে। কিন্তু আফসোসের একটা বিষয় হলো আদ্রিয়ানের বলা সেই জায়গাটার খোঁজ এখনো পায় নি আহি। বাউলের সাথেও সেদিনের পর আর দেখা হয় নি আহির। আহি অবশ্য এখনো মাঝে মধ্যে খোঁজ করতে যায় সেই বাউলের কিন্তু বাউল আর আসে না সেই গাছতলায় গান গাইতে। বাউলের দুঃখ ভেজা গান আর সুরেলা কণ্ঠ যেন এখনো আহির কানে বাজে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে আহির ওই বাউলের গান শুনতে। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও যে উপায় নেই।’
____
সকালে ঘড়ির এলাম বাজতেই ধড়ফড়িয়ে ঘুম থেকে উঠলো আহি। ঘাড় মাথা সব ব্যাথা করছে তাঁর। আহি কিছুক্ষন এপাশ ওপাশ করে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। খরগোশছানাটা তখন বেঘোরে ঘুমিয়ে ছিল বিছানায়। আহি কিছুক্ষন পড়ার টেবিলে মুখ লুকিয়ে চলে যায় ওয়াশরুমে গোসল করতে। তাঁরপর গোসল সেড়ে একটা সুন্দর ওয়াইট রঙের জর্জেট থ্রি-পিচ পড়ে নেয়, চুলগুলো ভিজে থাকায় খুলে দিয়েছে সেগুলো। চোখে হাল্কা কাজল, আর হাল্কা লিপস্টিক দিয়ে তৈরি সে। আজ খুব খুশি খুশি লাগছে নিজেকে। হুট করে এমন কেন লাগছে ঠিক বুঝতে পারছে না আহি। হয়তো আজ পরীক্ষা শেষ সেই খুশিতে। অথৈ সাইন্সের স্টুডেন্ট হওয়ায় তাঁর এক্সাম শেষ হয়েছে আরো দু’দিন আগে। এখন শুধু তাঁর আর রিনিরই বাকি। তারপর ফুলটু বিন্দাস থাকবে কিছুদিন। যদিও আদ্রিয়ানের জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে আহি। নিলয় তো বলেছিল আর কিছুদিনের মধ্যেই ফিরবে আদ্রিয়ান। কিন্তু কবে যে ফিরবে কে জানে? জোরে নিশ্বাস ফেললো আহি। তারপর খরগোশছানাকে একটুখানি আদর করে চললো আহি ভার্সিটির উদ্দেশ্যে। আর এর মাঝখানে ব্রেকফাস্ট করতে হবে তাঁকে।’
চটজলদি ব্রেকফাস্ট সেড়ে বাবা মাকে বিদায় জানিয়ে চললো আহি। আহির বাবা-মাও কিছুদিন চিন্তিত ছিল মেয়ের জন্য। যদিও রিনি আহিকে না জানিয়েই ওনাদের সব বলে দিয়েছে। প্রথমে আহির বাবা একটু রেগে গেলেও পরক্ষণেই আহির মা বোঝানোর পর উনিও বুঝেছেন। এখন শুধু অপেক্ষা আদ্রিয়ানের ফেরার। তবে এসব বিষয়ে আপাতত আহি কিছুই জানে না।’
সকাল ৯ঃ৩০টা…
ভার্সিটির করিডোরে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে আহি আর রিনি। আর আধ ঘন্টা পরই তাদের এক্সাম। হঠাৎই রিনি বলে উঠল,
‘ এক্সাম শেষে তোর জন্য একটা সুখবর আছে আহি?’
সঙ্গে সঙ্গে খুশি হয়ে বললো আহি,
‘ আদ্রিয়ান আসবে রিনি?’
আহির খুশি দেখে রিনি মাথা নিচু করে বললো,
‘ না সে ব্যাপার নয় অন্যকিছু।’
সাথে সাথে মন খারাপ করে বললো আহি,
‘ ওহ ঠিক আছে।’
‘ তুই আদ্রিয়ানকে প্রচন্ড ভালোবেসে ফেলেছিস তাই না আহি?’
উওরে ছলছল চোখে রিনির দিকে তাকিয়ে উপর নিচ করে মাথা নাড়ালো আহি। আহির কথা শুনে কিছুটা উদাসীন কন্ঠে বললো রিনি,
‘ চিন্তা করিস না শুভ আমায় বলেছে আদ্রিয়ান ভাইয়া আগামী মাসেই চলে আসবে।’
রিনির কথা বিস্ময় ভরা কন্ঠে বললো আহি,
‘ আরো একমাস অপেক্ষা করতে হবে রিনি?’
‘ হুম।’
উওরে আহি আর কিছু বললো না এরই মধ্যে এক্সামের ঘন্টা বেজে উঠলো। সঙ্গে সঙ্গে আহি আর রিনিও চললো এক্সাম হলের ভিতরে। কিছুক্ষনের মধ্যেই টিচার ঢুকলো রুমে। আহি জোরে নিশ্বাস ফেলে মনোযোগ দিলো এক্সামের দিকে।’
পাক্কা দু’ঘন্টার এক্সাম শেষ করে এক্সাম হল থেকে বের হলো আহি। মনটা হাল্কা খারাপ থাকায় কিছুক্ষন বসে রয়ে ছিল সে। রিনি অনেক আগেই বেরিয়েছে এক্সাম হল থেকে।’
জোরে নিশ্বাস ফেলে এক পা এক পা করে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলো আহি। আশেপাশে কোথাও রিনিকে দেখছে না আহি হয়তো গেটের বাহিরে চলে গেছে। আহি আস্তে আস্তে ভার্সিটির করিডোর ছেড়ে সিঁড়ি বেয়ে মাঠ টপকে চলে আসলো গেটের বাহিরে। সকালের ফুড়ফুড়ের মনটা যেন হুট করেই হারিয়ে গেল তাঁর। আহি গেটের বাহিরে বের হতেই একসাথে শুভ-রিনি, নীরব অথৈকে দেখে যেন চমকে উঠলো। একসাথে চারজন কি করছে এখানে?’ আহি অবাক চোখেই এগিয়ে গেল ওদের দিকে। আহি যেতেই ওর হাতে ওর ফোনটা দিলো রিনি, আহি বেশ অবাক হয়েই নিলো ওর ফোন, উপরে একটা মেসেজ দেখতেই যেন চোখেমুখে হাসি ফুটে উঠলো তাঁর। খুশি মনে তাকালো সে নীরব অথৈ আর শুভ রিনির দিকে। ওঁরা চারজনই খুশি হয়ে একসাথে চেঁচিয়ে বললো,
‘ সারপ্রাইজ!’ যা আহি অবশেষে তোর অপেক্ষার অবসান ঘটলো।’
উওরে আহি চারজনকে একসাথে জড়িয়ে ধরে ওর ফাইলপত্রগুলো রিনির হাতে গচিয়ে দিয়ে বললো,
‘ থ্যাংক ইউ, আমি আসছি!’
বলেই উল্টোদিক ঘুরে দিতে নিলো দৌড়। আহিকে দৌড়াতে দেখে রিনি বলে উঠল,
‘ আরে দৌড়াচ্ছিস কই? তোর জন্য গাড়ি আছে ওটায় করে যা। আদ্রিয়ানের বলা জায়গাটাও তো খুঁজতে হবে তোর।’
উওরে আহিও বেশি কিছু না ভেবে এক্সাইটিং হয়ে বললো,
‘ হুম থ্যাংক ইউ দোস্ত।’
বলেই সামনের কালো গাড়িতে উঠতে নিলো আহি। সাথে সাথে ওর সামনের গাড়িটা থেকে নিলয় বের হয়ে বললো,
‘ ওটায় নয় ভাবিজান এটায়।’
সাথে সাথে চমকে উঠলো আহি, তাঁর সামনের গাড়িটা ছেড়ে গিয়ে বসলো নিলয়ের আনা গাড়িটায়। আহির কান্ড হাসলো সবাই। মেয়েটা পুরোই পাগল হয়ে আছে আদ্রিয়ানের সাথে দেখা করার জন্য। আহি বসতেই নিলয় সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো,
‘ তাহলে যাচ্ছি গাইস আমাদের আহি নামক রাজকুমারীকে আদ্রিয়ান নামক রাজকুমারের সাথে দেখা করাতে।’
উওরে সবাই খুশি হয়ে বললো,
‘ সাবধানে যাবেন ভাইয়া।’
উওরে নিলয় কিছু বলার আগেই আহি বলে উঠল,
‘ তাড়াতাড়ি চলুন না ভাইয়া।’
‘ হুম আসছি।’
বলেই তাড়াতাড়ি গাড়িতে বসে গাড়ি স্ট্যার্ট দিলো নিলয়। নিলয় গাড়ি চালাতেই আহি গাড়ির জানালা থেকে মুখ বের করে বললো,
‘ মাকে বলেদিস তাদের জন্য জামাই আনতে যাচ্ছি আমার জন্য যেন আর কোনো ছেলে না দেখে।
উওরে রিনি বলে উঠল,
‘ সেটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না, যা ভাবা বা করার সব করে ফেলেছি আমরা আন্টি এখন তোর আর আদ্রিয়ানের জন্য ভালো ভালো খাবার রান্না করছে। নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করে সোজ বাড়িতে আসিস সবাই মিলে একসাথে সেলিব্রেট করবো।’
রিনির কথা শুনে আহিও খুশি হয়ে বললো,
‘ ঠিক আছে।’
আহির পাগলামিতে হাসলো চারজনই। তারপর শুভ রিনিকে আর নীরব অথৈকে জড়িয়ে ধরে বললো,
‘ ভীষণ ভালোবাসি তোমাদের।’
উওরে ওঁরা দুজনও খুশি হয়ে বললো,
‘ আমরাও।’
তারপর চারজন একে অপরের বুকে মাথা রেখেই তাকিয়ে রইলো আহির যাওয়ার পানে। হয়তো এখান থেকেই শুরু হবে তাদের জীবনের নতুন উপন্যাসের রঙিন সূচনা।’❤️
____
পাক্কা আধ ঘন্টা যাবৎ গাড়ির মধ্যে মোচড়ামুচড়ি করছে আহি। অস্থিরতা ফিল হচ্ছে তাঁর আদ্রিয়ানের সাথে দেখা হলে সর্বপ্রথম কি বলবে এটা ভাবতে ভাবতেই শেষ আহি। আহি অস্থিরতা নিয়ে বলে উঠল,
‘ আমরা কখন পৌছাবো নিলয় ভাইয়া, আপনি ওই জায়গাটা চিনেন তো। যেখানে আছে একঝাঁঝ শালিক, সবুজের মাঠ, নদী, শাপলা, মাঝি, বাবুইপাখি, ফুল চিনেন তো নিলয় ভাইয়া।’
‘ তুমি একটু শান্ত হও আহি,এতগুলো প্রশ্ন একসাথে করলে কি করে হবে?’
‘ আপনি বুঝতে পারছেন না আদ্রিয়ান যে জায়গার কথা বলছে সেটার হদিস আমি ছয়মাস যাবৎ করছি কিন্তু কোথাও পাইনি। গুগলেও সার্চ করেছি পাইনি জায়গার নাম না জানলে কি করে হবে বলুন। আদ্রিয়ানের ছন্দ লিখে গুগলে সার্চ দিলে তো গুগলের লোকেরা আমায় পাগল ভাব্বে বলুন।’
‘ তুমি টেনশন নিও না দেখবে ঠিক পেয়ে যাবে।’
বলেই গাড়িতে টান দিলো নিলয়। এরই মধ্যে নিলয়ের পাশের সিট থেকে মুখ বের করে বললো আরিশা,
‘ তুমি বড্ড ভালোবাসে আদ্রিয়ানকে তাই না?’
হুট করেই অপরিচিত একটা মেয়ের কন্ঠ চমকে উঠলো আহি। ফ্যাল ফ্যাল চোখে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে থেকে বললো,
‘ তুমি কে?’
উওরে নিলয় বলে উঠল,
‘ ও হলো আমার গার্লফ্রেন্ড আর এই সেই মেয়ে যে তোমাকে ঝড়বৃষ্টির রাতে আদ্রিয়ানদের বাড়িতে বসে তোমার ট্রিটমেন্ট করেছিল। কয়েক মাস আগে কিছু কাজের জন্য দেশের বাহিরে গিয়েছিল ও যাঁর কারনে তোমার সাথে পরিচয় করাতে পারে নি। কালই দেশে ফিরেছে। তাই ভাবলাম তোমার সাথে একবার মিট করাই।’
উওরে অবাক দৃষ্টিতে কিছুক্ষন মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো আহি,
‘ ওহ ভালো আছো আপু তুমি?”
‘ হুম তুমি কেমন আছো?’
‘ জ্বী ভালো।’
এর বেশি আর কিছু কথা হয় নি আহি আর আরিশার মধ্যে।’
অনেকক্ষণ পর,
হঠাৎই নিলয় গাড়ি থামালো। নিলয়কে গাড়ি থামাতে দেখে আহি উত্তেজিত কন্ঠ নিয়ে বললো,
‘ কি হলো ভাইয়া গাড়ি থামালেন কেন?’
উওরে আরিশা মুচকি হেঁসে বললো,
‘ কারন আমরা চলে এসেছি।’
‘ সত্যি?’ (বিস্মিত হয়ে)
‘ হুম।’
বলেই নিলয় আর আরিশা বের হলো গাড়ি থেকে। আহিও চটজলদি বের হয় গাড়ির থেকে। গাড়ি থেকে বের হতেই আশেপাশে তাকাতেই আরো অবাক আহি। কারন এই জায়গাটা হলো সেই জায়গাটা যে জায়গাটায় আহি ভুল করে আদ্রিয়ানের সাথে এসেছিল। এটা হলো সেদিনের জায়গাটা যে জায়গাটায় আদ্রিয়ান আহি ধুলো নিয়ে মারামারি করেছিল। যেদিন আহি ভুল করে আদ্রিয়ানের মুখোমুখি হবে না বলে আদ্রিয়ানের গাড়িতেই লুকিয়ে ছিল। আর লুকিয়ে থাকার ন্যায় তাঁকে আসতে হয়েছিল আদ্রিয়ানের সাথে এখানে। আর সামনেই রয়েছে খোলা সবুজের ঘেরা ফসলের মাঠ। কিন্তু শালিকের ঝাঁক তো দেখতে পারছে না আহি। আহিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে উঠল নিলয়,
‘ কি হলো আহি কি ভাবছো যাও ওই দূর সীমানায় এগিয়ে গেলেই খোঁজ পাবে তুমি তোমার ভালোবাসার।’
উওরে আহিও বেশি কিছু না ভেবে মুচকি হেঁসে নিলয় আর আরিশার দিকে একপলক তাকিয়ে দৌড় দিলো সে। শহরে উঁচু রাস্তা থেকে আস্তে আস্তে নেমে দৌড়ে এগিয়ে গেল আহি সামনে।’
আর এদিকে গাড়ির সামনে হেলান দিয়ে তাকিয়ে রইলো নিলয় আর আরিশা আহির যাওয়ার পানে। হঠাৎই আরিশা নিলয়ের বুকে মাথা রেখে বললো,
‘ আহি ভীষণ ভালোবাসে আদ্রিয়ানকে তাই না নিলয়?’
‘ হুম আদ্রিয়ানও খুব ভালোবাসে আহিকে যেমন তুমি আমি একে অপরকে ভালোবাসি।’
উওরে মুচকি বললো আরিশা,
‘ বাবা তোমায় মেনে নিয়েছে নিলয়?’
সঙ্গে সঙ্গে অবাক হয়ে বললো নিলয়,
‘ সত্যি তোমার হিটলার বাবা মেনে নিয়েছে আমায়?’
‘ হুম। এখন বলো আমরা বিয়ে কবে করবো?’
‘ এই তো আদ্রিয়ান আর আহির বিয়েটা হয়ে গেলেই তুমি আমি, নীরব অথৈ আর শুভ রিনি একসাথে করে ফেলবো।’
‘ তারপর আমরা সবাই একসাথে খুশি মনে দিন কাটাবো।’
‘ হুম।’
বলেই একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো নিলয় আর আরিশা। আর তাকিয়ে রইলো ওই দূর সীমানায় দৌড়ে এগিয়ে চলা আহির দিকে।’
হয়তো এখান থেকেই শুরু হবে আরিশা নিলয়ের নতুন জীবনের সূচনা।’❤️
____
সময়টা তখন প্রায় দুপুর দুটো পেরিয়ে গেছে। সূর্য্যিমামা তাঁর সমস্ত আলো ঢেলে দিয়েছে প্রকৃতির মাঝে। আর এই গরম উত্তাপের মাঝ দিয়েই দৌড়ে এগিয়ে চলছে আহি। শহর থেকে অনেকটা দূরে এগিয়ে এসেছে সে। হঠাৎ একটা গাছের পাশ দিয়ে দৌড়ে যেতেই গাছের ডালে বসে থাকা এক ঝাঁক শালিক পাখি উড়ে গেল আকাশ পথে আহি মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রইলো সেদিকে সাথে দাঁড়িয়ে দেখলো তৎক্ষনাৎ সেখাই। পুরো এক ঝাঁক শালিকের মাঝে যেন সবুজের মেলা দেখতে পেল সে। কারন আশেপাশে পুরো জায়গাটাই সবুজ দিয়ে ঘেরা। আহি কিছুক্ষন চুপ থেকে মনে করতে লাগলো আদ্রিয়ানের বলা সেই ছন্দটা,
‘ দেখা হয় নি সেথায় আমাদের,
যেথায় আছে এক ঝাঁক শালিকের মাঝে সবুজের মেলা?’
‘ সবুজ পেরোতেই নদীর মালা,
এতটুকু মনে পড়তেই আহি আবারও দৌড়ে এগিয়ে গেল সামনে নদী খুঁজতে হবে তাঁকে। আর কিছুক্ষনের মধ্যে পেয়েও গেল সে এক বিশাল নদীর মেলা। আবারো চোখ বন্ধ করে করে ফেললো আহি মনে করলো আদ্রিয়ানের বলা পরের লাইন,
‘ নদীর বুকে টগরের ভিঁড়ে শাপলার ছড়াছড়ি,
আহি সামনে তাকাতেই যেন মুগ্ধ কারন তাঁর সামনেই নদী জুড়ে টগর আর শাপলার ছড়াছড়ি। অপলক ভাবে তাকিয়ে রইলো আহি প্রকৃতির দিকে। সাথে মনে পড়লো আদ্রিয়ান বলা কথা,
‘মুগ্ধ হবে তুমি প্রকৃতির অপলক সৌন্দর্যের মায়ায়।’
আনমনেই বলে ফেললো আহি,
‘ সত্যি আমি মুগ্ধ আদ্রিয়ান। কিন্তু আপনি কই?’
কথাটা মাথায় আসতেই উত্তেজিত হয়ে এদিক সেদিক খুঁজতে লাগলো আহি আদ্রিয়ানকে কিন্তু পেল না। এমন সময় নৌকায় চড়ে এক মাঝি এসে বললো তাকে,
‘ তুমি যাবে কই?’
সঙ্গে সঙ্গে আঁতকে উঠলো আহি। সাথে মনে পড়লো তাঁর আদ্রিয়ানের বলা কথা,
‘ উত্তেজিত হয়ে যখন আশেপাশে খুঁজবে আমায়
তখনই ঢেউয়ের ভিড়ে নৌকা মেলে মাঝি বলবে তোমায় ‘যাবে কই?’
‘ তুমি বলবে, দূর সীমানায় সবুজের মাঝে বেঞ্চের পাড়ায়, যেথায় আছে বাবুইপাখির ভয়ংকর উড়াউড়ি।’
কথাটা মাথায় আসতেই আহি নদীর তীরের দিকে হাত দেখিয়ে বলে উঠল মাঝিকে,
‘ ওই দূর সীমানায় যাবো, যেখানে আছে সবুজের মাঝে বেঞ্চ, সাথে বাবুইপাখির উড়াউড়ি।’
আহির কথা শুনে মাঝি বলে উঠল,
‘ ওহ তুমি বাবুইপাখি পাখি খুঁজতে এসেছো?’
উওরে আহিও বেশি কিছু না ভেবে মাথা নাড়ালো। আহিকে মাথা নাড়াতে দেখে বললো মাঝি,
‘ আসো আমি নিয়ে যাচ্ছি তোমায়।’
উওরে আহিও উত্তেজিত হয়ে বসলো নৌকায়। আহি বসতেই মাঝি নৌকা চালাতে শুরু করলো। একটু একটু করে এগিয়ে যেতে লাগলো আহি টগরে ঘেরা শাপলাদের ছেড়ে। আনমনেই মুচকি হেঁসে মনে করলো আহি আদ্রিয়ানের বলা লাস্ট কথাগুলো,
– যদি পেয়ে যাও সন্ধান,
‘ তবে তীরে এসে খুঁজবে আমায়, আর বলবে এসেছি আমি?’
‘ উতলা হয়ে খুঁজো না খুব, চলে এসো ফুলের ভিঁড়ে পাপড়ির মায়ায়!’
আমিও অপেক্ষায় থাকবো তোমার।’
কথামতো তীরে এসে নৌকা থামালো মাঝি তারপর আহিকে উদ্দেশ্য করে বললো,
‘ ওই সামনে এগিয়ে যাও তাহলেই খুঁজে পাবে তোমার বাবুইপাখি।’
উওরে আহি কিছু না বলে নৌকা থেকে নেমে পড়লো তারপর বললো,
‘ ভাড়া?’
উওরে মাঝি কিছু না বলেই এগিয়ে চললো তাঁর গন্তব্যের দিকে। আহিও আর বেশি কিছু না ভেবে আস্তে আস্তে এগিয়ে চললো সামনে। হঠাৎই চোখ পড়লো তাঁর ফুলের পাপড়ি দিয়ে ঘেরা রাস্তার দিকে আহি খুশি মনে এগিয়ে গিয়ে বললো,
‘ আমি এসেছি আদ্রিয়ান আপনি কোথায়? প্লিজ তাড়াতাড়ি সামনে চলে আসুন আপনাকে যে আমার অনেক কিছু বলার আছে।’
বলতে বলতে এগিয়ে গেল আহি। এরই মাঝে হঠাৎই থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো আহি কারন তাঁর থেকে আর কিছুটা দূরত্ব নিয়েই উল্টোদিক ঘুরে কালো কোট প্যান্ট পড়ে দাঁড়িয়ে আছে কেউ এটা নিশ্চয়ই আদ্রিয়ান। তাঁর পাশেই রয়েছে সাদা রঙের একটা বেঞ্চ চারপাশে শুধু সবুজের ঘাস আর গাছপালা। গাছের পাতাতে পুরো তলিয়ে রয়েছে আশপাশ। আহি উত্তেজিত কন্ঠ নিয়ে বললো,
‘ আদ্রিয়ান?’
সঙ্গে সঙ্গে সামনের ব্যক্তিটি আস্তে আস্তে পিছন ঘুরে তাকালো আহির। আজ টানা ৬ মাস পর আহি আদ্রিয়ানকে আর আদ্রিয়ান আহিকে দেখতে পেল। একরাশ মুগ্ধতা, একরাশ অস্থিরতা, একরাশ ভালোলাগা আর অফুরন্ত ভালোবাসা এসে গ্রাস করলো তাদের। আদ্রিয়ান আহির দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে তাঁর আগেই আহি দৌড়ে এসে ঝাপটে জড়িয়ে ধরলো আদ্রিয়ানকে। তারপর কান্নাভেজা কন্ঠ নিয়ে বললো,
‘ আপনি খুব বাজে আদ্রিয়ান, আপনি খুব বাজে।’
উওরে আদ্রিয়ানও আহিকে জড়িয়ে ধরে বললো,
‘ যাহ বাবা আমি কি করলাম?’
‘ কি করলেন মানে, ভালোবাসার মানুষকে ছেড়ে এতদিন কেউ দূরে থাকে বুঝি।’
‘ দূরে ছিলাম বলেই না তুমি আমার শূন্যতা ফিল করে আমার কাছে এসেছো আহি?’
‘ তাঁর মানে আপনি আগে থেকেই সবটা জানতে তাই না যে আমি এখানে আসবো।’
‘ একটু-আধটু।’
এরপর আর কোনো কথা হয়নি দুজনের মাঝে। নীরবে শুধু দাঁড়িয়ে রইলো দুজন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে। হয়তো নীরবতাই অনেক কিছু বলে দিচ্ছে তাদের। আদ্রিয়ান অনেক আগেই জেনেছিল আহির মনের অবস্থা কারন নিলয় তাঁকে বলেছিল। আদ্রিয়ান সেদিন বিশ্বাস করতে না পারলেও আজ একদম পুরোপুরি পরিষ্কার। তাইতো সুইজারল্যান্ড থেকে প্লেন বাংলাদেশে ল্যান্ড করতেই আহিকে মেসেজ দিয়েছে সে,
‘ আসছি আমি।’
আর সেই মেসেজ দেখেই আহি ছুটতে ছুটতে চলে আসলো এতদূর।’
🍁🍁🍁
পাশাপাশি সেই সাদা রঙের বেঞ্চটাতে বসে আছে আহি আর আদ্রিয়ান। আদ্রিয়ানের বুকে মাথা দিয়ে ওর হাত ধরে চুপটি করে বসে আছে আহি। হঠাৎই আহি বলে উঠল,
‘ আপনাকে ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছি আমি কখনো ছেড়ে যাবেন না কিন্তু।’
‘ তোমার ‘বাবুইপাখির অনুভূতি’র থেকেও বেশি।’
‘ হুম। এই ছয় মাসে আমি বুঝতে পেরেছি আদ্রিয়ান, নীরব ভাইয়ার প্রতি যে অনুভূতি গুলো ছিল তা ছিল স্বল্প সময়ের জন্য আর আপনার প্রতি যে অনুভূতি আছে তা হলো অনন্তকালের জন্য। যা আমি চাইলেও মুছে ফেলতে পারবো না।’
‘ হুম বুঝলাম।’
‘ আচ্ছা আপনি আমায় এটা বলুন আপনি বলেছিলেন এখানে বাবুইপাখি আছে সেগুলো কোথায় দেখছি না তো।’
উওরে আদ্রিয়ান হাত দিয়ে তাঁর থেকে মাত্র দু’কদম দূরত্বে বিশাল এক গাছের দিকে ইশারা করলো। আহিও তাকালো সেদিকে, পুরো গাছ ভর্তি করা বাবুইপাখির বাসা সাথে পাখিদের ছড়াছড়ি আহি মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রইলো সেদিকে। ছোট্ট বেলার বাবুইপাখিগুলোর কথা মনে পড়লো তাঁর। এমন সময় হঠাৎই সেই গাছ থেকে দুটো বাবুইপাখি উড়ে এসে বসলো আহিদের বেঞ্চটাতে। আহি পাখিদুটোর দিকে তাকিয়ে থেকেই আদ্রিয়ানের বুকে আর একবার মাথা রেখে বললো,
‘ আজ থেকে আপনিই আমার ‘বাবুইপাখির অনুভূতি’ আদ্রিয়ান। এমনি এক অনুভূতি যে অনুভূতিকে আমি কখনোই আমার কাছ থেকে আলাদা করতে পারবো না। ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি আপনায়।’ আই রিয়েলি লাভ ইউ আদ্রিয়ান। কখনো ছেড়ে যাবেন না আমায়।’
উওরে আদ্রিয়ানও মুচকি হেঁসে বললো,
‘ কখনোই ছেড়ে যাবো না তোমায় কারন আমিও যে তোমায় বড্ড ভালোবাসি আহি। আর কিছুদিনের মধ্যেই তোমায় বিয়ে করে পুরোপুরি আমার করে নিবো আহি।’
‘ হুম আর আপনার সেই অসুখের কি হবে?’
‘ সেটা তো তুমি রোজ রাতে আমায় জড়িয়ে ধরে ঘুমালোই সেড়ে যাবে, ধরবে তো জড়িয়ে।’
উওরে লজ্জা মিশ্রিত চেহারা নিয়ে আদ্রিয়ানকে জড়িয়ে ধরে বললো আহি,
‘ হুম, এখনো তো জড়িয়ে ধরেই আছি। আর এভাবেই সারাজীবন জড়িয়ে ধরে থাকবো আপনায়।’
অতঃপর একঝাঁক বাবুইপাখিদের ভিড়ে, সবুজের সমারোহের মাঝে শুঁকনো বেঞ্চে বসে একে অপরের ভালোবাসার আদান প্রদান করলো আহি আর আদ্রিয়ান। আর এখান থেকেই শুরু হবে তাদের নতুন জীবনের সূচনা। যে সূচনায় রয়েছে আনন্দের রেশ আর অফুরন্ত ভালোবাসা।’❤️
‘ সকল দুঃখ ভুলে আসলো সুখের ধারা,
আহি আদ্রিয়ান যেন আজ আনন্দে আত্মহারা!’
‘ হাসিরা মেতেছে সুরে,
বাবুইপাখিরা উড়ছে ডানা মেলে,
যেন আনন্দেরা ছুটছে ভবঘুরে!’
‘ নদীরা দুলছে টেউয়ের তালে তালে
শাপলারা ফুটেছে নদী আর খাল বিলে!’
মাঝি ছুটছে নৌকা চড়ে
শালিকেরা উড়ছে হাওয়ার মাঝে সবুজের বুক চিঁড়ে!’
অতঃপর অবশেষে,
এই ছোট্ট ছন্দ মেলানো কবিতা দিয়েই শেষ হলো আহি আদ্রিয়ান,নীরব অথৈ আর শুভ রিনির কাহিনী। ওরোফে, ‘বাবুইপাখির অনুভূতি’ মিশ্রিত উপন্যাসের।’
~ সমাপ্ত…🌹
[অবশেষে শেষ হলো তোমাদের ‘বাবুইপাখির অনুভূতি’ উপন্যাসের। প্রথমেই বলে দেই পুরো গল্পটাই ছিল কাল্পনিক। টানা দু’দিন বসে এই লাস্ট পার্টটা লিখেছি। আশাকরি তোমাদের ভালো লেগেছে পুরো উপন্যাসটা কার কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে। আজ যেহেতু গল্প শেষ তাই সবাই সবার অনুভতি প্রকাশ করবে কিন্তু। আর এতটা পথ একসাথে আসার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তোমাদের সাথে দেখা হবে আবার নতুন কোনো উপন্যাস বা গল্প নিয়ে ততদিন সবাই ভালো থাকো সুস্থ থাকো]
~ আল্লাহ হাফেজ🌸
#TanjiL_Mim♥️