Love_heart💞💞,৩১,৩২

#Love_heart💞💞,৩১,৩২
লেখা- পূজা
পর্ব- ৩১
🍁
দ্বীপ বেলকনিতে পকেটে হাত দিয়ে দারিয়ে আছে আর রৃপের কথাগুলো ভাবছে। কিছুক্ষণ আগে দ্বীপ রুমে বসে কাজ করছিলো তখনি রূপের কল আসে। দ্বীপ ফোন হাতে নিয়ে দেখে ভিডিও কল। দ্বীপ কল রিসিভ করতেই দেখলো রূপ কিছু কাগজ দেখছে।
দ্বীপকে দেখে রূপ বললো,”হাই দ্বীপ।”
দ্বীপঃফোন কেনো দিয়েছো?
রূপঃতোমাকে দেখে এতটাও অবুঝ মনে হয় না। তাহলে এই সামান্য বিষয়টা বুঝতে পারছো না।
দ্বীপঃতো তুমি সব জেনে গেছো?
রূপঃজেনে তো আমি কালই গেছি।
দ্বীপঃগুড।
রূপঃআরো অনেক কিছুই জেনেছি।
দ্বীপঃকি?
রূপঃবিয়ে করতে চাও অনুকে।
দ্বীপ কিছু বললো না আর অবাকও হলো না। ওকে আটকে রাখার পেছনে দ্বীপ ছিলো এটা যখন জানতে পেরেছে তাহলে এটা জানা কোনো কঠিন কাজ না।
রূপঃসো সেড।
দ্বীপঃকেনো?
রূপঃতুমি আর আমি এক নৌকার মাঝি তাই।
দ্বীপঃইউ আর রং!
রূপ হেসে বললো,”আই এম রাইট দ্বীপ! অনুকে আমি ১বছর ধরে চিনি। ও কখনোই এই বিয়ে করতে রাজি হবে না। বিকজ অফ আদি।”
দ্বীপঃসেটা নিয়ে তোমায় ভাবতে হবে না। এটা আমার পারসনাল ম্যাটার।
রূপঃআমার পারসনাল ম্যাটারে তুমি ইন্টারফেয়ার করেছো। আমি করবো না সেটা ভাবলে কি করে।
দ্বীপঃতুমি কি অনুর থেকে আমাকে আলাদা করার প্লেন করছো?
রূপঃউহু! অনু নিজেই তোমার থেকে আলাদা হবে। আমি কিছুই করবো না।
দ্বীপঃআমি অনুকে কনভেন্স করিয়েই চারবো।
রূপঃসেই সুযোগই পাবে না।
দ্বীপঃমানে?
রূপঃকিছু না। এনিওয়ে,অল দ্যা বেষ্ট। চেষ্টা করে দেখো অনু রাজি হয়েও যেথে পারে। বাই।
দ্বীপকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রূপ ফোন কেটে দিলো। তখন থেকে দ্বীপ দারিয়ে ভাবছে কেনো রূপ এভাবে কথাগুলো বললো।
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে আবার অনুর বাসায় চলে যায় দ্বীপ। অনু আদিকে না দেখে কোনো কাজেই মন বসাতে পারে না। ড্রয়িংরুমেই পেয়ে যায় আদিকে। আদি দ্বীপকে দেখেই দ্বীপের কাছে যাবে আবার অনুর কথা ভেবে দিদার কাছে গিয়ে লুকিয়ে পরে। দ্বীপ আদির কাছে গিয়ে বললো,”আমার কাছে আসবে না?”
আদি মাথা নাড়িয়ে না বললো।
দ্বীপঃকেনো?
আদিঃমাম্মা না করেছে।
দ্বীপ দিদার দিকে তাকালো।
দিদাঃঅনু কাল আদিকে বলেছে আদি যদি তোর কাছে যায় তাহলে অনু আদির সাথে আর কখনো কথা বলবে না। আর তুই তো জানিস আদি অনুকে কতটা ভালোবাসে। মাকে ছাড়া আদি একদম থাকতে পারে না। আর অনুর সব কথা শুনে আদি। তাই তোর কাছে কখনো যাবে না বলে দিয়েছে।
দ্বীপঃআমি আদিকে ছাড়া থাকতে পারবো না দিদা। প্লিজ অনুকে এটা করতে না করো।
দ্বীপ আদির সামনে হাটু গেড়ে বললো,”বাবার সাথে কথা বলবে না?”
আদিঃনা। মাম্মা তোমাকে বাবা ডাকতেও না করেছে।
দ্বীপঃপ্লিজ বাবু বাবা ডাকা বন্ধ করো না।
দ্বীপ আদিকে জরিয়ে ধরে বললো,”খুব কষ্ট পাবো তাহলে।”
অনু নিচে এসে আদিকে দ্বীপের বুকে দেখে রেগে গেলো। রেগে বললো,”আদি?”
আদি সাথে সাথে দ্বীপকে ছেড়ে দিলো। আর দৌড়িয়ে অনুর কাছে চলে গেলো।
আদিঃআমি যাই নি মাম্মা। বাবা এসেছিলো আমার কাছে।
অনুঃতুমি আবার ওকে বাবা বলেছো?
আদিঃসরি আর বলবো না।
অনু দ্বীপের দিকে তাকিয়ে বললো,”তোমার সাহস কি করে হলো আবার এখানে আসার।”
দ্বীপঃআমি আদির জন্য এসেছি।
অনুঃআদি আর কখনো তোমার কাছে যাবে না।
দ্বীপঃকেনো এমন করছো অনু। আমি তোমাদের ছাড়া সত্যিই থাকতে পারছি না।
অনুঃতোমার ড্রামা শেষ হলে এবার আসতে পারো।
দ্বীপ অনুর মায়ের কাছে গিয়ে বললো,”প্লিজ আন্টি অনুকে একটু বুঝান না ওদের ২জনকেই আমার চাই।”
অনুর মা অবাক হয়ে দ্বীপের দিকে তাকিয়ে আছেন।
দ্বীপঃআমি আদিকে কখনো আবহেলা করবো না। একজন বাবা তার ছেলেকে যতটুকু ভালোবাসে তার থেকে বেশি ভালোবাসবো। প্রয়োজনে আমরা কখনো আমাদের বেবি নেবো না। আদিকেই নিয়েই হবে আমাদের ছোট্ট উয়াল্ড। প্লিজ অনু একবার রাজি হয়ে যাও না।
অনুঃতোমার এসব মিষ্টি মিষ্টি কথায় অন্যকে ভুলাতে পারবে আমাকে না। চলে যাও এখান থেকে।
দ্বীপঃআই এম সিরিয়াস অনু।
অনুঃদুনিয়ায় অনেক মেয়ে আছে। তাদের একজনকে বিয়ে করে নাও। তুমি দেখতে যথেষ্ট হ্যান্ডসাম। কোনো মেয়ে না করবে না। আমি সিংগেল হলে অবশ্যই রাজি হয়ে যেথাম। বাট এখন নো চান্স।
দ্বীপঃঅনু!
অনুঃআমি একটু আসছি।
অনু আদিকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো। অনুর মা এসে বললেন,”তুমি অনুর অতিত না জেনেই কীভাবে অনুকে বিয়ে করতে চাইছো? অনুর একটা ছেলে আছে দেখেও কেনো…”
দ্বীপঃএই ছেলের জন্যই আরো বেশি করে অনুকে আমার চাই আন্টি। আদির সাথে রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও মন থেকে অন্য একটা সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে। পুরো হার্ট টাই তো আদি। আর আমার লাভ অনু। দুজনকেই আমার চাই।
অনুর মাঃঅনু কখনো মানবে না।
দ্বীপঃমানাবো। শুধু আপনারা আমার পাশে থাকবেন প্লিজ।
অনুর মাঃচেষ্টা করে দেখো। আমরাও চাই অনুকে সুখে দেখতে। একটাই মেয়ে এভাবে সব সুখ নিজের হাতে দুরে সরিয়ে দিচ্ছে তা দেখতে পারছি না।
দ্বীপঃআজ না হোক কাল অনুকে আমার কাছেই আসতে হবে।

অনু আবিরের বাসায় গিয়েছে আদিকে নিয়ে। আদিকে দেখে তিথি দৌড়িয়ে এসে আদিকে কোলে তুলে নিলো। আর সারা মুখে আদর দিলো।
অনুঃআংকেল আন্টি আবির ওরা কোথায়?
তিথিঃবাবা অফিসে মা কিচেনে। আবির রুমে। তুই আয় আমার সাথে।
তিথি অনুকে ড্রয়িংরুমে নিয়ে বসালো। আবিরা মিষ্টিকে নিয়ে নিচে আসলো।
তিথি আবিরাকে দেখে বললো,”আপু এটা আমার বোন অনু। আর অনু উনি আবিরের বড় বোন।”
আবিরাঃআর এই ছেলেটা।
অনুঃআমার ছেলে।
আবিরাঃতিথির থেকে বড় তুমি?
অনুঃহুম। বেশি না। ৩মাসের বড়।
আবিরাঃতোমার হাজবেন্ড কী করে?
অনু তিথির দিকে তাকালো। তিথি অনুর দিকেই তাকিয়ে আছে।
তিথিঃহাজবেন্ড নেই আপু।
আবিরাঃএত ছোট একটা ছেলেকে তুমি একা মানুষ করছো?
অনুঃমেয়েরা দুর্বল নয়। একজন মেয়ে চাইলে সব করতে পারে।
আবিরাঃসব দিতে পারলেও বাবার ভালোবাসা দিতে পারবে না। তোমার বয়স তো এখনো অনেক কম। চাইলে বিয়ে করতে পারো।
অনুঃআমি কখনো বিয়ে করবো না। আদিকে নিয়েই আমার ছোট্ট পৃথিবী। ওকে নিয়েই আমি বাকিটা জীবন কাটাবো।
আবিরাঃকিন্তু..
তিথিঃআপু এসব বাদ দিন। অনু আয় মায়ের সাথে দেখা করবি।
তিথি অনু আর আদিকে নিয়ে কিচেনে গেলো। অনু আবিরের মায়ের সাথে অনেকক্ষণ কথা বলে তিথির রুমে গেলো। আবির ঘুমাচ্ছে। অনু গিয়ে বেডসাইড টেবিলে পানির গ্লাস ছিলো এটা তুলে আবিরের উপর ঢেলে দিলো। আবির লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠলো।
অনুকে দেখে চোখ বড় বড় করে অনুর দিকে তাকিয়ে বললো,”এত সকাল তুমি?”
অনুঃএটা সকাল? ১১টা বাজে।
আবিরঃও সিট! বুঝতেই পারি নি।
অনুঃরাতে কি তোমার ঘুম হয়না। এত লেইট হয় কেনো উঠতে।
আবির মুচকি হেসে তিথির দিকে তাকালো।
তিথিঃজলদি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো। যাওও।
আবিরঃযাচ্ছি।
আবির উঠে ওয়াশরুমে গেলো। তিথি অনুকে বললো,”পারবি তো বলতে?”
অনুঃসত্যিটা আবিরকে বলেই বের হো।
তিথিঃযেথে দেবে না। আবির রূপকে একদম সহ্য করতে পারে না।
অনুঃওকে। আজ তো সারাদিন আছিই তর সাথে। বিকেলে তকে নিয়ে বাইরে বের হবো। তুই রূপের সাথে দেখা করতে চলে যাবি। আমি বাসায় চলে যাবো।
তিথিঃওকে।
আবির ফ্রেশ হয়ে আসতেই তিথি বললো,”ব্রেকফাস্ট উপরে আনবো না নিচে যাবে?”
আবিরঃআমি আছি অনু আদির সাথে তুমি এখানেই নিয়ে আসো।
তিথিঃওকে।
তিথি চলে যেথেই অনু বললো,”আবির তোমাকে একটা কথা বলবো। একদম রাগ করবে না।”
আবিরঃকি?
অনুঃরূপ তিথির সাথে দেখা করতে চেয়েছে।
আবির চিৎকার করে বললো,”উয়াটটট? ও…”
অনুঃআবির এত হাইফার হওয়ার কিছু নেই। রূপ চলে যাবে কাল। তাই আজ দেখা করতে চেয়েছে। আমি এটা তোমাকে না জানালেও পারতাম। জানালাম কারন আমি চাই নি তুমি এটা অন্য কারো কাছ থেকে জানো আর তিথিকে ভুল বুঝো সন্দেহ করো। তিথি তোমাকে ভালোবাসে। কখনো ওকে কষ্ট দেবে না। তিথি কখনো কোনো ভুল করলে ওর সাথে ডিরেক্ট কথা বলবে আর তাতেও না হলে আমাকে জানাবে। বাট তার আগে তিথিকে উল্টো পাল্টা বলার চেষ্টাও করবে না। আমি জাস্ট তিথির খুশির জন্য তোমার সাথে বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম। নয়ত….
আবিরঃতিথির চোখের একফুটা জলও আমার জন্য অনেক ইম্পর্টেন্ট। ডোন্ট ওরি অনু এমন কোনো কাজ কখনো করবো না যাতে তিথি কষ্ট পায়।
অনুঃওকে। আর তিথি বিকেলে রূপের সাথে দেখা করতে যাবে।।একদম এই বিষয়ে কিছু বলবে না তিথিকে। রূপকে আমি অনেকদিন ধরেই চিনি। তিথির অসম্মান বা ও কষ্ট পাবে এমন কোনো কাজ রূপ কখনোই করবে না। তাই রূপকে নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারো।
আবিরঃওকে।
আরো কিছুক্ষণ গল্প করলো অনু আর আবির। তিথি আবিরের জন্য ব্রেকফাস্ট আনলে আবির খেয়ে নিলো। সারাদিন অনু তিথি আবির বসে বসে গল্প করেই কাটিয়ে দিলো।
অর্পির রুমে ভালো লাগছে না একা একা। একা একা থাকার মত শান্ত মেয়ে একদমই ও নয়। অর্পি রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। তারপর পা টিপে টিপে উপরে উঠলো। রূপের মা বাসায় নেই। রূপের রুম কোনটা অর্পি জানে। সোজা রূপের রুমের সামনে চলে গেলো। এখানে আসতেই অর্পির হার্ট বিট বারতে লাগলো। অর্পি বুকে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে দারিয়ে আছে।
অর্পিঃএমন লাগতাছে ক্যান। উনি সামনে থাকলে ও তো এমন হয় না।
অর্পি সাহস নিয়ে রূপের রুমে ডুকে গেলো। ডুকেই রূপের ইয়া বড় একটা ছবি দেখতে পেলো। ছবিটা দেখে অর্পি চোখ বড় বড় হয়ে গেছে।
অর্পিঃনায়কের মতোন লাগতাছে। উনি এতো সুন্দর ক্যান। উনার হাসিটা আরো সুন্দর। কিন্তু এই ২দিনে তো উনারে হাসতে দেখি নাই।
অর্পি পুরো রুম চোখ ভুলিয়ে দেখছে। সামনের একটা দেওয়ালে তিথির ছবি দেখতে পেলো।
অর্পিঃএই আপাটা আবার কেডা। যার কথা বাবা ছোটসাহেব কইতাছিলেন এইটা নায় তো।
অর্পি ছবিটার সামনে গিয়ে দারালো। অর্পি ছবিটার উপর হাত ভুলালো।
অর্পিঃআপাটা তো খুব সুন্দর।
অর্পি আয়নার সামনে দারালো। নিজের মুখে হাত দিলো।
অর্পিঃআমি তো কালা।
আরো কিছুক্ষণ রূপের ছবি দেখে রূপের ছোট একটা ছবি নিয়ে রূপের রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে চলে এলো অর্পি।
রূপ আবিরের বাসার সামনে দারিয়ে আছে। ৫মি পর অনু তিথি আদি ৩জন একসাথে বের হলো। অনু ওর গাড়িতে করে চলে গেলো। তিথি গেলো রূপের কাছে। রূপ গাড়ির দরজা খুলে দিলো। তিথি গাড়িতে বসলো। আবির উপর থেকে সব দেখলো।
রূপ তিথিকে নিয়ে কিছুটা দূরে একটা নির্জন জায়গায় গেলো। তিথি মনে মনে ভয় পাচ্ছে। কিন্তু সেটা বুঝতে দিচ্ছে না।
রূপ হেসে বললো,”আমাকে এখন ভয় পাও। সিরিয়াসলি তিথি?”
তিথি চমকে উঠে বললো,”ভয় পাবো কেনো?”
রূপঃগাড়ি থেকে নামো।
তিথিঃমানে?
রূপঃএসে গেছি।
তিথিঃওহ!
তিথি আস্তে আস্তে গাড়ি থেকে নামলো। একটু সামনে পকেটে হাত দিয়ে দারালো রূপ। তিথি রূপের পাশে গিয়ে দারালো।
রূপ চোখ বন্ধ করে বললো,”২বছর আগে ইউনিভার্সিটিতে তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম। একটা ওকেশনে। আমাকে ইনভাইট করা হয়েছিলো। এত মর্ডান মেয়েদের ভীরে তোমার সিম্পল সাজ আমাকে মুগ্ধ করেছিলো। সেদিন বাসায় গিয়েই লোক লাগিয়ে দিয়েছিলাম তোমার সব খবর বের করার জন্য। পেয়েও যাই। তারপর থেকেই তোমার পেছনে ২জন লোক অলওয়েজ থাকতো তুমি কি করো কোথায় যাও সব পেয়ে যেথাম। তারপর ড্যাডকে বলে তোমার বাসায় বিয়ের প্রপোজাল পাটাই। তোমরা রাজিও হয়ে যাও। তোমাকে লুকিয়েই ভালোবেসে গেলাম। আমি অন্য ছেলেদের মত না তিথি। ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারি না। আর এজন্যই তোমাকে হারালাম।”
তিথি অবাক হয়ে রূপের দিকে তাকিয়ে আছে। আর চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে। রূপ পেছন ঘুরে তিথিকে কাদতে দেখে বললো,”তুমি কাদছো কেনো? তুমি তো তোমার ভালোবাসা পেয়েই গেছো।”
তিথিঃতোমাকে সরি বলার কোনো মুখ আমার নেই রূপ। তোমার নামের মতোই তোমার অন্য একটা রূপ ছিলো আর আমি জানতেই পারলাম না।
রূপঃতোমাকে বলতেও হবে না সরি। ফল্ট আমার। তোমাকে টাইম দিতে পারি না।
রূপ তিথির চোখের দিকে তাকিয়ে বললত,”তোমাকে একবার জরিয়ে ধরতে পারবো? প্লিজ। জানি তোমাকে স্পর্শ করার কোনো রাইট আমার….।”
তিথি কিছু না বলে নিজেই রূপকে জরিয়ে ধরলো। আর জোরে জোরে কাদতে লাগলো। রূপ তিথির মাথায় হাত ভুলিয়ে দিয়ে বললো,”আমি চাই নি তুমি কখনো আমাকে ভুলে যাও। তাই এগুলো বললাম। আমি কখনোই তোমাকে ভুলতে পারবো না…..”
তিথিঃপ্লিজ রূপ কাউকে বিয়ে মুভ অন করে নিও প্লিজ।
রূপঃআই উইল ট্রাই।
তিথি রূপকে ছেড়ে বললো,”আর আসবে না?”
রূপঃআসবো। ১বছর পর।
তিথিঃপ্লিজ মাপ করে দিও আমায়।
রূপঃচলো।
রূপ তিথিকে বাসায় ড্রপ করে দিয়ে একটা ক্লাবে গেলো। রূপ কখনো ড্রিংকস করে নি। বাট আজ নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না। যাদের বাইরের দিকটা শক্ত তাদের ভিতরটা খুব সফট। রূপ যতই সবার সামনে নিজেকে স্ট্রং মনে করার চেষ্টা করোক। কিন্তু ভেতরে ভেতরে তো নিজেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।

চলবে….

#Love_heart💞💞
লেখা- পূজা
পর্ব- ৩২
🍁
সবাই খেয়ে ঘুমিয়ে পরেছে বাট রূপ এখনো বাসায়ই আসে নি। অর্পি ড্রয়িংরুম আর নিজের রুম পায়চারি করছে। রাত ১১টা হয়ে গেছে রূপ এখনো আসছে না কেনো বুঝতে পারছে না। কেউ খুজও রাখে নি। রাত ১টার কাছাকাছি হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠে। অর্পি গিয়ে দরজা খুলে দিতেই দেখে রূপ।
অর্পিঃআপনে!
রূপঃসরো।
রূপ অর্পিকে হাত দিয়ে সরিয়ে ভেতরে ডুকে গেলো। ভালো করে দারাতেও পারছে না। আস্তে আস্তে হেটে উপরে উঠে গেলো। অর্পি দরজা বন্ধ করে রূপের রুমের দিকে গেলো। গিয়ে দেখে রূপ অর্ধেক পা নিচে রেখেই বিছানায় পরে গেছে। অর্পি রূপের পা বিছানায় তুলবে। তখনি রূপ বললো,”ডোন্ট টাচ মি।”
অর্পিঃঠিক হয়ে ঘুমান।
রূপঃঘুমাবো না। কি করবে?
অর্পিঃআপনি ড্রিংকস করেছেন?
রূপঃহুম করেছি তো?
অর্পিঃআপনি তো এগুলো খান না। তাহলে…
রূপঃআজকেই ফাস্ট খেলাম। ইউ নোউ খুব টেষ্টি। আমি আরো খাবো। এনে দাও।
অর্পির হাত শক্ত করে দারিয়ে আছে। কিছুক্ষণ রূপের দিকে তাকিয়ে অর্পি রূপের কাছে গিয়ে পা থেকে জুতা খুলে দিলো জোর করে বিছানায় নিয়ে শুয়ে দিলো।
রূপঃএই মেয়ে তুমি তো…
অর্পিঃআপনি এখানে বসুন। আমি এক্ষণি আসছি।
রূপঃতোমার কথাগুলো এমন শুনাচ্ছে কেনো? আমি কি ভুল শুনছি?
অর্পিঃমদ খাইছেন ঠিক কেমনে শুনবেন। আমি আইতাছি আপনে উঠবেন না।
অর্পি তারাতারি নিচে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর তেতুলের জল নিয়ে আসলো।
অর্পিঃএইটা খাইয়া নেন।
রূপঃএটা কি?
অর্পিঃমদ।
রূপঃরিয়েলি?
অর্পিঃহো।
রূপ উঠে অর্পির হাত থেকে টেনে টাস করে গ্লাসটা নিয়ে নিলো। আর একটানে পুরোটা খেয়ে ফেললো। আর খাওয়ার সাথে সাথে মুখে হাত দিয়ে ওয়াশরুমে। বমি করে দিলো।
রূপঃওয়াক! এই মেয়ে এটা কি খাইয়েছো?
অর্পি রূপের কাছে গিয়ে পিটে হাত ভুলিয়ে দিলো। রূপ বমি করে যা যা খেয়েছিলো সব বের করে ফেলেছে। রূপ দুর্বল হয়ে অর্পির উপরই পরে গেলো।
অর্পিঃআমার মতো বাচ্চা মেয়ের উপর এত বড় ছেলে।
অর্পি অনেক কষ্টে রূপকে বিছানায় এনে শুইয়ে দিলো। আর নিজে রূপের পাশে বসে রূপকে দেখতে লাগলো।
অর্পিঃকাল তো চলে যাবেন!
অর্পি রূপের পুরো মুখে হাত ভুলিয়ে দিলো। অনেকক্ষণ রূপকে দেখে নিজের রুমে চলে গেলো।
সকালে ঘুম থেকে উঠে অনু পাশে তাকিয়ে দেখে আদি নেই। অনু তারাতারি বিছানা থেকে নেমে যায়। চারদিক খুজে। কোথাও আদিকে খুজে পায় না।
অনু চিৎকার করে সবাইকে ডাকলো। তিথির মা কিচেন থেকে বেরিয়ে এসে বললেন,”কি হয়েছে?”
অনুঃমনি আদি কোথায়?
তিথির মাঃকোথায় মানে? এত সকাল আদি তো ঘুমিয়েই থাকে।
অনুঃআমি ঘুম থেকে উঠে আমার পাশে আদিকে পাই নি।
তিথির মাঃমানে এটা কি বলছিস তুই। আদি তো তকে ছাড়া ঘুম থেকে উঠে না।
অনুঃআমার রুম থেকে আদি কোথায় চলে গেলো।
অনু মা এসে বললেন,”কি হয়েছে?”
তিথির মাঃআদিকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অনুর মাঃকিই? বাড়ি থেকে কোথায় হারিয়ে যাবে। ভালো করে খুজে দেখ। বাড়িতেই কোথাও আছে।
অনুঃআমি সব জায়গা দেখেছি মা। কোথাও নেই।
অনু মাটিতে বসে পরে। মুখে হাত দিয়ে কাদছে। কোথায় চলে গেলো আদি।
কিছুক্ষণ পর অনুর দাদু দ্বীপ আর আদি একসাথে গল্প করতে করতে বাসায় ডুকেন। সবাই অবাক হয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। অনু দৌড়িয়ে গিয়ে দ্বীপের কোল থেকে আদিকে নিয়ে নিলো।
অনুর মাঃবাবা আদি তোমার সাথে ছিলো।
দাদুঃহ্যাঁ। দ্বীপ বললো একটু হাটতে তাই আদিকে নিয়ে চলে গেলাম।
অনুর মাঃবলে যাবে না। অনু তো খুব টেনশন করছিলো। কেদেই দিয়েছিলো।
দাদুঃকাঁদার কি আছে। বাড়ি থেকে তো হারিয়ে যাবে না।
অনু চোখের পানি মুচে দ্বীপের দিকে তাকিয়ে বললো,”তুমি ইচ্ছে করেই এমনটা করেছো। তাইনা? আমাকে কষ্ট দিতে ভালো লাগে।”
দ্বীসঃএসব কি বলছো অনু। তোমাকে কষ্ট দেওয়ার কথা ভাবতেই পারি না। আমি তো জাস্ট আদির সাথে একটু টাইম স্পেন্ড করতে চেয়েছিলাম। তুমি তো…
অনু কিছু না বলে আদিকে নিয়ে উপরে চলে যায়। দ্বীপও অনুর পিছু পিছু যায়।
দ্বীপঃঅনু কি করলে বিশ্বাস করবে আমি তোমাদের দুজনকে সত্যিই খুব ভালোবাসি।
অনুঃআমি বিশ্বাস করতে চাই না। কেনো এভাবে আমার পেছনে পরে আছো। তোমার জন্য কি মেয়ের অভাব পরেছে? প্লিজ দ্বীপ আমাকে মুক্তি দাও। আমাদের লাইফ থেকে চলে যাও।
দ্বীপঃতুমি আদিকে কখনো ছারতে পারবে?
অনুঃমরে গেলেও না। একদম এসব কথা বলবে না।
দ্বীপঃতাহলে তুমি কেনো তোমাদের ছাড়ার কথা বলছো আমাকে? আমিও তোমাদের ছারতে পারবো না। কখনো না। তোমাদের সাথে সারাজীবন কাটাতে চাই আমি। প্লিজ অনু একবার রাজি হয়ে যাও।
অনু আদিকে বিছানায় বসিয়ে দ্বীপের হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে আসে তারপর দরজা লাগিয়ে দেয়।
দ্বীপঃঅনু!
অনুঃচলে যাও। প্লিজ আর এসো না।
দ্বীপঃযতদিন না তুমি রাজি হচ্ছো ততদিন আসবো।

রূপের ফ্লাইট ১২টায়। তাই ব্যাগ পেক করে ১০:৩০এ নিচে নামে রূপ। ব্রেকফাস্ট করে নেয় সবার সাথে। অর্পি একসাইডে দারিয়ে দেখছে রূপকে।
ব্রেকফাস্ট করে সবাই ড্রয়িংরুমে আসলো। রূপ ওর মাকে জরিয়ে ধরে বললো,”জলদি চলে আসবে। মিস করবো তোমাদের।”
রূপের মাঃথেকে যা না। আমরা আর কবে যাবো জানি না।
রূপঃআমি আসবো তো ১বছর পর। তার আগে আসতে পারবো না।
রূপের মাঃএত দিন তকে না দেখে থাকবো কি করে।
রূপঃদেখবো তো। ভিডিও কল।
রূপের মাঃআমি লাইভ দেখতে চাই।
রূপঃখুব তারাতারি দেখা হবে।
রূপের মাঃহুম।
রূপের বাবাঃরাগটা কন্ট্রোলে এনো। এখন যেভাবে নিজেকে সামলে নিয়েছো ফিউচারে যেনো এরকমটা হয়।
রূপঃহুম।
রূপ ওর বাবাকে জরিয়ে ধরে লাগেজ নিয়ে চলে গেলো। রূপের বাবা গেলেন অর্পির রুমে। উনি যা ভেবেছিলেন তাই হলো। অর্পি নিজের হাত কেটে ফেলেছে।
রূপের বাবাঃঅপুউ!
অর্পি লাল চোখে রূপের বাবার দিকে তাকালো।
রূপের বাবা অর্পির হাত ধরে বললেন,”এটা কি করলি।”
অর্পিঃউনি চলে গেলেন।
রূপের বাবাঃতাই বলে হাত কেটে ফেলবি। তুই রূপের কাছে থাকতে চেয়েছিলি তাই আমি এত নাটক করলাম। শুধু তর জন্য রূপকে প্রথম মিথ্যে কথা বললাম। আমি তো তকে আগেই বলেছিলাম রূপ এখানে পার্মানেন্ট থাকতে আসে নি চলে যাবে আবার।
অর্পি মাথা নিচু করে ফেললো।
রূপের বাবাঃতুই এখনো অনেক ছোট। কেনো এমন পাগলামি করছিস বলতো।
অর্পিঃআমার উনাকে চাই।
রূপের বাবাঃতোর বাবাকে কথা দিয়েছিলাম তকে কখনো কষ্ট পেতে দেবো না। তাই তর সব অন্যায় আবদার পূরন করি। কিন্তু এই আবদার আমি পূরন করতে পারবো না।
অর্পিঃকেনো?
রূপের বাবাঃতোর বয়স কত আর রূপের? তদের এইজ ডিফারেন্সটা দেখেছিস? রূপের 28 আর তোর 17। কেনো বুঝতে চাইছিস না মা রূপ তকে এক্সেপ্ট করবে না।
অর্পিঃতাহলে বলো না কীভাবে আমি বয়স বারাবো। তুমি জানো না আমি কত ছোট থেকে উনাকে আমার চাই।
রূপের বাবাঃরূপ জাস্ট তর জেদ। কেনো আমার কথা বুঝতে চাইছিস না।
অর্পিঃআমি আর কিছু বুঝতে চাই না। আমার উনাকে চাই। আমি উনাকে ভালোবাসি।
রূপের বাবাঃওকে। তকে এখন মন দিয়ে পড়াশুনা করতে হবে। রূপের যোগ্য হতে হবে। রূপ তিথিকে ভুলতে ইউএস চলে গেছে। যখন নিজেকে পুরোপুরি সামলে নিতে পারবে তখনি এখানে চলে আসবে। রূপের রাগ রীধির থেকে দিগুন। আজ শুধু আবিরের বাবার জন্য রূপ কিছু করতে পারে নি। নয়ত…
অর্পিঃকেনো?
রূপের বাবাঃরূপে আইডল হিমেল। রূপ আজ এত বড় বিজন্যাসম্যান জাস্ট হিমেলের জন্য। আমি কিছুই করি নি। তাই রূপ এমন কোনো কাজ কখনো করতে পারবে না যেখানে হিমেল অসম্মানিত হবে। তুই রূপকে দেখতে চেয়েছিলি তাই হিমেলের হেল্প নিয়ে রূপকে এই দেশে আনিয়েছি। তুই রূপের কাছে থাকতে চেয়েছিলি তাই ওদিন রূপের গাড়ি লোক দিয়ে ফলো করিয়ে এক্সিডেন্ট এর নাটক করিয়েছি। এসব রূপ জানতে পারলে ৩য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করে দেবে। রূপ মিথ্যে একদম সহ্য করতে পারে না।
অর্পি মাথা নিচু করে আছে। রূপের বাবা অর্পির মাথায় হাত ভুলিয়ে দিয়ে বললেন,”তকে রূপের যোগ্য হতে হবে। পড়াশুনা মন দিয়ে করতে হবে। তর বাবার স্বপ্ন পূরন করতে হবে। তকে যেনো কেউ না বলে তুই ডনের মেয়ে। সবাই যেনো বলে অপরাজিতার বাবা জয়। তকে নিজেকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে তোর বাবার খারাপ দিকগুলো মুচে দিতে পারিস।”
রূপের বাবা হাত বেন্ডেজ করতে করতে আবার বললেন,”জানিস তোর বাবার সাথে আমার পরিচয় কীভাবে হয়েছিলো?”
অপুঃকিভাবে?
রূপের বাবাঃরূপের বয়স যখন ৪তখন আমরা ইউএস স্যাটেলড হয়ে যাই। মাঝে মাঝে কাজের জন্য এই দেশে আসতে হতো মাকে দেখতেও আসতাম। এরকমই একদিন কাজের জন্য এই দেশে আসা। রাত ১০টা এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়েছি। জলদি বাসায় যাবো বলে জঙ্গলের রাস্তা ধরে বাসায় ফিরছিলাম। তখন হঠাৎ দেখি একটা লোককে ২জন মিলে মারার চেষ্টা করছে। আমি গাড়ি থেকে নেমে ওই লোকটাকৈ বাচাই। আমার কাছে সেফটির জন্য সবসময় রিভালবার থাকতো। সেটা দেখেই ওরা ভয়ে চলে যায়। লোকটার পেট থেকে রক্ত পরছিলো। আমি হসপিটাল নিয়ে যাই।
ডাক্তার লোকটাকে দেখেই বলেন,”উনি আপনার কে হন?”
রূপের বাবাঃকেউ না।(রাস্তার সব ঘটনা ডক্টরকে বললেন।)
ডক্টরঃআপনি জানেন উনি দেশের একজন বড় ডন জয়।
রূপের বাবাঃউয়াটট?
ডক্টরঃহুম। আপনি এখনি চলে যান। উনাকে এভাবেই মরতে দিন। বেচে থেকে কারো কোনো উপকার তো করবেন না ক্ষতি ছাড়া।
রূপের বাবাঃএটা কি বলছেন? আপনি একজন ডক্টর হয়ে একজনের মৃত্যু কামনা করছেন। সেইম অন ইউ। জলদি উনার ট্রিটমেন্ট এর ব্যবস্থা করুন। উনি যাই হোন। সবার আগে উনি একজন মানুষ।
ডক্টরঃআমরা কেউ উনার ট্রিটমেন্ট করবো না। আপনি চলে যান।
রূপের বাবাঃকরবেন না মানে? আপনি জানেন আমি কে? আমি চাইলে এখনি আপনার ডাক্তারি লাইসেন্স ক্যান্সেল করতে পারি। আর উনার ট্রিটমেন্ট না করলে আমি সেটাই করবো।
ডক্টরঃমানে?
রূপের বাবা একটা কার্ড বের করে বললেন,”উত্তম রয়। আই হোপ চিনেছেন।”
ডক্টরঃনার্স ওটি রেডি করো।
ডক্টর আর কিছু না বলে জয়কে নিয়ে চলে যায়। ওর ট্রিটমেন্ট শুরু করে। পরেরদিন জয়ের সেন্স ফিরে। আর রূপের বাবাকে ডেকে পাটান। উনিও সাথে সাথে রুমে ডুকেন।
জয়ঃকাল তোমার আর ডক্টরের পুরো কথা শুনেছি। সেন্স ছিলো। আমি জানতাম না আমার জান বাচাতেও কেউ এতকিছু করতে পারে। আমি শুধু জানতাম অধরা ছাড়া আমার কথা ভাবার মতো আর কেউ নেই।
রূপের বাবাঃঅধরা কে?
জয়ঃআমার জান। আমার উয়াইফ।
রূপের বাবাঃআমার জায়গায় যে কেউ থাকলেই এটা করতো।
জয়ঃনা। সবাই আমাকে মরার জন্য ছেড়ে দিতো।
রূপের বাবা কিছু বললেন না। জয় আবার বললো,”তুমি না চাইতেও আমার জীবনের সাথে জরিয়ে গেছো। আমার বন্ধু হবে?”
রূপের বাবা অবাক হয়ে জয়ের দিকে তাকালেন।
জয়ঃবাট এটা সিক্রেট থাকতে হবে। কেউ জানলে তোমার লাইফ রিক্স হয়ে যাবে।
রূপের বাবা হেসে বললেন,”নো প্রবলেম। যখন মৃত্যু আসবে সবাইকেই যেথে হবে। সেটা নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নেই।”
জয় হাত এগিয়ে দিয়ে বললো,”ফ্রেন্ড?”
রূপের বাবাও হাত মেলালেন। সেদিন থেকেও উনাদের বন্ধুত্ব।
অপু অবাক হয়ে রূপের বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। রূপের বাবা অপুর দিকে তাকিয়ে বললেন,”অধরা আর জয়ের বিয়ের ৮বছর পর তোর জন্ম হয়। সেদিন আমি এই দেশে এসেছিলাম তকে দেখতে। একদম মায়ের মতো হয়েছিলি। তোর আসাতেই জয় আস্তে আস্তে ওই সব কাজ ছেড়ে দিয়েছিলো। জয় চারলেও জয়কে কাজগুলো ওকে চারে নি। জয়ের অনেক শত্রু ছিলো। তদের উপর অনেকবার এটাক হয়। তাই জয় ভয় পেয়ে তকে আর অধরাকে আমার হাতে তুলে দিয়েছিলো তদের দেখে রাখতে বলেছিলো।
অপুঃআর ৪বছর আগে বাবার মৃত্যুর খবরের সাথে মাও আমাকে ছেড়ে চলে গেলো। তারপর থেকেই তুমি আমার বাবা মা হয়ে গেলে।
রূপের বাবাঃজয়ের আমানত তুই। কীভাবে ছেড়ে দেই। রূপের মতো তকেও যে আমার আরেকটা সন্তান মনে করি।
অপুঃএসব কথা বাদ দাও বাবা। এবার যে তুমি আর উনি ছাড়া আমার আর কেউ নেই। তোমার ফোনেই প্রথম উনার ছবি দেখেছিলাম। তারপর থেকে উনাকে আমার চাই। তুমি আমাকে বলেছিলে উনাকে এনে দেবে। তাহলে দাও না কেনো?
রূপের বাবাঃদেবো। কিন্তু তার আগে তকে মন দিয়ে স্টাডি করতে হবে। তকে রূপের যোগ্য হয়ে উঠতে হবে।
অপুঃউনার জন্য আমি সব করতে পারবো।
রূপের বাবাঃগুড। আর কখনো নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা করবি না। আমি আছি তর সাথে।
অপুঃওকে।
রূপের বাবাঃএকদম বাবার মতো হয়েছিস। তোর মধ্যেই জয়কে দেখতে পাই। এত জেদ রাগ।
অপু মুচকি হেসে রূপের বাবাকে জরিয়ে ধরলো। রূপের বাবা বললেন,”তৈরি হয়ে নে। এখানে আর তুই থাকবি না। রীধি জানলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। এ সব কিছু রীধিও জানে না।”
অপুঃওকে।
রূপের বাবা অপুকে আবার ওর আগের জায়গায় রেখে এলেন। অপরাজিতার পুরো নাম অপরাজিতা চৌধুরি অর্পি। বাট রূপের বাবা আর ওর বাবা মা আদর করে অপু বলে ডাকতেন। এখন জাস্ট রূপের বাবাই ডাকেন।
এদিকে অপুর মন দিয়ে পড়াশুনা অন্যদিকে দ্বীপের অনুকে মানানো এভাবেই কেটে গেলো অনেকদিন।
দ্বীপ অনেক চেষ্টা করেও অনুকে রাজি করাতে পারলো না।এতদিন তো যাও দ্বীপের কথা শুনতো অনু। এখন অনু দ্বীপকে দেখলেই রুমে দরজা বন্ধ করে বসে থাকে। দ্বীপকে ফেইস করতে চায় না। আর দ্বীপ আদির সাথে অনেকক্ষণ কাটিয়ে চলে যায়। এখন দ্বীপের অভ্যাস হয়ে গেছে আদি। আদির সাথে কথা না বললে দেখা না করলে দ্বীপ কোনো কাজ করতে পারে না। রাতে ঘুমও আসে না।
একদিন দ্বীপ অফিস থেকে বাসায় ফিরে দেখে ড্রয়িংরুমে একজন লোক আর একটা মেয়ে বসে আছে সাথে ওর বাবা মা। মেয়েটাকে দ্বীপের কাছে খুব চেনা চেনা লাগছে। দ্বীপ এসবে নজর না দিয়ে ওর রুমে চলে গেলো। তারপর ওয়াশরুমে। ওয়াশরুম থেকে বেরতেই কেউ দ্রুত গতিতে এসে দ্বীপকে জরিয়ে ধরলো। হঠাৎ এমন হওয়ার দ্বীপ অবাক হয়ে স্ট্রেট দারিয়ে আছে। কি করবে ও বুঝতে পারছে না।

চলবে…..