Love_heart_season_2💞💞,৩৯,৪০

#Love_heart_season_2💞💞,৩৯,৪০
লেখা- পূজা
পর্ব- ৩৯
🍁
ফাকা রুমের ভেতর ব্রেঞ্চে হেলান দিয়ে একটা হকিস্টিক নিয়ে দারিয়ে আছে দিঘি। বার বার এটা ফ্লোরে টাচ করছে। আর যতবার টাচ করছে সামনে দারিয়ে থাকা তন্ময় কেপে উঠছে।
তন্ময়ঃদিঘি তুই আমাকে এখানে আসতে বললি কেনো?
দিঘিঃবলছি। তার আগে তোর ফোনটা দে তো।
তন্ময় কাপা কাপা গলায় বললো,”ফোন দিয়ে কি করবি?”
ফ্লোরে জোরে একটা বারি দিয়ে বললো,”তোকে ফোন দিতে বলেছি।”
তন্ময় ভয়ে ভয়ে ফোনটা দিঘির দিকে বাড়িয়ে দিলো। দিঘি ফোন চেক করে বললো,”লাইক করিস মৃধাকে?”
এটা শুনে তন্ময় আরো ভয় পেয়ে গেলো। কি বলবে বুঝতে না পেরে মাথা নিচু করে ফেললো।
দিঘিঃলাইফে ফাস্ট একটা ভুল করেছি আমি। যদি জানতাম তুই মৃধাকে পছন্দ করিস। কখনো এই নাটক করতে বলতাম না তোকে। বাট তুই আমার থেকেও বড় ভুল করেছিস ভাইয়াকে ইডিট করা ছবি আর স্ক্রীনশট পাটিয়ে। তুই এখনো আমাকে চিনিসনি তন্ময়। আমি কি কি করতে পারি। তার কোনো আইডিয়া তোর নেই।
তন্ময় এবার দিঘির দিকে তাকিয়ে বললো,”সবাই সবার ভালোবাসার মানুষকে পেতে চায় দিঘি। যখন জেনেছি দিপ্রভাইয়া অন্য কাউকে ভালোবাসে তখন আমার কাছে মনে হয়েছে তোর জন্য বাধ্য হয়ে মৃধাকে এক্সেপ্ট করলেও মৃধা উনার কাছে গেলে কখনো হ্যাপি থাকবে না। তাই উনি যাতে তুই জোর করলেও মৃধার কথা না ভাবেন আমি…”
দিঘিঃফেইক পিকচার আর তোর আর মৃধার ফেইক কনভারসেশন পাটিয়ে দিয়েছিস। মৃধাকে পাওয়ার জন্য?
তন্ময় আবার মাথা নিচু করে ফেললো।
দিঘিঃএকদিক দিয়ে তুই ঠিক তাই ছেড়ে দিলাম। সেকেন্ড বার এরকম ভুল করলে আমি কি করতে পারি তার একটু হলেও আইডিয়া তোর আছে।
হকিস্টিক নাড়াতে নাড়াতে। তন্ময় মাথা নাড়ালো।
দিঘিঃপরে যদি আর কোনো প্লেন করার চেষ্টা করিস আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না। মৃধার আশা ছেড়ে দে। ও ভাইয়ার-ই বউ হবে।
দিঘি তন্ময়ের ক্লাস নিয়ে মৃধার কাছে গেলো। মৃধা চুপচাপ বসে কিছু ভাবছে। দিঘি কিছু না বলে ভার্সিটি থেকেই বেরিয়ে গেলো। প্রথমে পরীর সাথে কথা বলার জন্য হসপিটাল গেলো। সেখানে সবার সাথে দেখা করে বিকেলে দিপ্রর সাথে দেখা করতে ওর বাসায় গেলো। গিয়ে দেখলো দিপ্র প্রহরের সাথে কিছু নিয়ে কথা বলছে। দিঘিকে দেখেই দিপ্র চুপ হয়ে গেলো।
দিঘিঃকি নিয়ে কথা হচ্ছিলো?
প্রহরঃআরে দিঘি। তুমি? এখানে আসো। তোমার ভাই বিয়ে করতে চায়। নিজেই প্রপোজাল নিয়ে এসেছে। দেখেছো কি নির্লজ্জ।
দিঘি ভ্রুকুচকে দিপ্রর দিকে তাকালো। দিপ্র দিঘির দিকে তাকাচ্ছেই না।
দিঘিঃতাই নাকি? বিয়ে করতে চায়?
প্রহরঃসেটাই তো বললো। একটা মেয়েকে নাকি পছন্দও করে।
দিঘিঃতুমি কি বললে আংকেল।
প্রহরঃমেয়েটিকে বাসায় নিয়ে আসতে বলেছি। মেয়ে ভালো হলে তো আমাদের কোনো প্রবলেম নেই। ছেলে বড় হচ্ছে বিয়ে তো একদিন দিতেই হবে।
দিঘিঃহুহ! ঠিক বলেছো। তা দাদাভাই কবে মেয়েকে নিয়ে বাসায় আসছিস?
দিঘির কথা শুনে অবাক হয়ে দিঘির দিকে তাকালো দিপ্র। দিপ্র ভেবেছিলো এখনি চিল্লিয়ে বাড়ি মাথায় তুলে ফেলবে। বাট ওর টেম্পার এত কুল কেনো বুঝতে পারছে না।
দিঘিঃকিরে কিছু বলছিস না কেনো?
দিপ্রঃতোমরা চাইলে কাল/পরশুই ওকে আনতে পারবো।
দিঘিঃতাহলে কালই নিয়ে আয়। শুভ কাজে দেরি করতে নেই। তাই না আংকেল?
প্রহরঃএকদম ঠিক বলেছো।
দিপ্রর চিন্তা হচ্ছে। দিঘির মাথায় কি চলছে বুঝতে পারছে না দিপ্র। এত ঠান্ডা দিঘিকে কখনো দেখেনি।
দিপ্রঃআচ্ছা আমি দেখছি।
দিপ্র উঠে এখান থেকে রুমে চলে গেলো। দিঘির রাগ উঠলেও রাগটা গিলে ফেললো। যা করার কালই করবে। আজ চুপ থাকাটাই ভালো।

আজ রাজ আদি মোহর ড.দুর্যয় আর রাজের মা দীনা মিষ্টিকে দেখতে যাবে। অন্যদিকে দিপ্ররও আজ রুশাকে বাসায় নিয়ে আসার কথা। আজ ফ্রাইডে তাই এই দিনটাই চুজ করেছে।
আদি রাজের ড্রেস চুজ করে দিলো। ব্লু জিন্স ব্লু কোট আর উয়াইট শার্ট। রাজ দেখতে ফর্সা আর মায়াবী চেহারা হওয়ায় ব্লুটা দারুন সুট করেছে রাজের শরিরে।
আদিঃবাহ! দারুন লাগছে। মিষ্টি একবার দেখেই তোকে পছন্দ করে ফেলবে।
রাজ কিছু না বলে মুচকি হাসলো।
মোহর রাজের রুমে ডুকে বললো,”ওয়াও রাজ তোকে তো দারুন লাগছে। এত সুন্দর কেনো রে তুই?”
রাজঃনজর দিচ্ছিস কেনো?
মোহরঃদারাও। তু তু দিচ্ছি।
রাজঃছি:! একদম আমার কাছে আসবি না।
মোহর হেসে দিলো। মোহর এবার আদির দিকে তাকালো। আদিকে দেখলেই মোহরের বুকে চিনচিনে ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। আদির থেকে চোখ সরিয়ে মোহর বললো,”জলদি আয়। বাবা আন্টি তোর জন্য ওয়েট করছেন।”
রাজঃযা আসছি।
মোহর চলে যায়। রাজ চুল ঠিক করে নেয়।
আদিঃপার্ফেক্ট চল।
গাড়িতে বসতেই রাজের মা দীনা বললো,”আদি তোমার বাবা মাকেও আসতে বলতে। তাহলে ভালো হতো।”
আদিঃমাম্মা তো বাসা থেকে এখন তেমন বের হন না। তাই আমি জোর করে বাবা আর মাম্মাকে বাইরে পাটিয়েছি। আলাদা সময় কাটানোর জন্য। মাম্মার আমার আর বোনের কথা ভাবতে ভাবতেই তো সময় কেটে যায়। নিজের কথা একদম ভাবেন না।
দীনাঃখুব ভালো করেছো। তুমিও বিয়ে করে ফেলো এখন। তাহলে উনাদের একটু চিন্তা কমবে।
আদি কিছু না বলে শুধু মৃদু হাসলো। ২ঘন্টা পর মিষ্টির বাসার সামনে এসে গাড়ি দার করালো। গাড়ি থেকে ড.দুর্যয় দীনা মোহর আগে নামলো। তারপর রাজ আর আদি। উনারা আগে ভেতরে গেলেন। মিষ্টির বাবা মিহির এসে এগিয়ে নিয়ে গেলো। আবির তিথি আর তিতিরও এসেছে। উনাদের নিয়ে ড্রয়িংরুমে বসানো হলো। আবিরা মিহির সবার সাথে কথা বললো। রাজকে দেখলো। আবিরা রাজের ছবি আগে দেখেছিলো। ছবির থেকেও বাস্তবে রাজকে বেশি সুন্দর লাগছে। আবিরার খুব ভালো লাগলো রাজকে। আর রাজের কথা-ভার্তা খুব সুন্দর মার্জিত।
তিতির মিষ্টির পায়ে ধরেও শাড়ি পরাতে পারলো না। মিষ্টির এক কথা। আমি ওদের সামনে আমার নকল রূপ নিয়ে যেথে পারবো না। শাড়ী না এই ইউনিফর্মই আমার রিয়েল রূপ।
তিতিরঃআমি জানি দিদিভাই। তাই বলে হবু শ্বাশুড়ি মামা শ্বশুড়ের সামনে এই পুলিশ ইউনিফর্ম পরে যাবি।
মিষ্টিঃআমাকে আর দেড় ঘন্টা পর পুলিশ স্টেশনে যেথে হবে। একটা এটেম্প টু মার্ডার কেস নিয়ে ইনভেস্টিগেশন করতে। আমার হাতে টাইম নেই। উনাদের সাথে দেখা করেই আমাকে বেরিয়ে যেথে হবে। পরে চেন্জ করারও টাইম পাবো না। আর আমি চাই আমাকে এভাবে দেখেই উনারা পছন্দ করুক।
তিথি ভেতরে এসে মিষ্টিকে ইউনিফর্ম পড়া দেখে অবাক হয়ে বললো,”একি মিষ্টি এখনো রেডি হওনি। উনারা তো তোমার জন্য ওয়েট করছেন।”
মিষ্টিঃমামি আমি এভাবেই যাবো। শাড়ি পরবো না।
তিথিঃপ্লিজ মিষ্টি। জাস্ট আজকের দিনটা। আর কখনো শাড়ি পরতে বললো না। এভাবে গেলে ওরা কি ভাববে। বলোতো?
মিষ্টিঃযা ভাবার ভাবুক। আই ডোন্ট কেয়ার। আমি এভাবেই যাবো।
তিথিঃতুমি কেয়ার না করো। আমরা তো করি। প্লিজ আমাদের জন্য…
মিষ্টিঃমামি!
তিথিঃপ্লিজ!
মিষ্টি বিরক্ত হয়ে বললো,”ওকে ফাইন।”
তিথি খুব সুন্দর করে মিষ্টিকে শাড়ি পরিয়ে দিলো। তারপর সাথে করে নিয়ে নিচে নামলো। পিছু পিছু তিতিরও এলো।
তিথি মিষ্টিকে সবার সামনে এনে দার করালো। মিষ্টি মাথা নিচু করে আছে। কারণ তিথি বলেছে মাথা উচু করতে পারবে না উনারা বলার আগ পর্যন্ত। রাজ মিষ্টির দিকে তাকালো। শাড়িতে চেহারাই চেন্জ হয়ে গেছে। একদম বউ বউ লাগছে।
দীনাঃবসো মা। আমার পাশে এসো।
তিথি মিষ্টিকে দীনার পাশে বসিয়ে দিলো। মিষ্টির মাথা তুলে ছেলেকে দেখতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু দেখতেই পারছে না।
দীনা মিষ্টির থুতনি ধরে মুখ উচু করে তুললো। এবার মিষ্টি সবাইকে দেখতে পারছে। সামনের দুজনকে দেখে মিষ্টির চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। বর কে বুঝতে পারছে না মিষ্টি। কারণ আদিকে দেখেনি এখনো। রাজের দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকালো। রাজ মিষ্টি একটা হাসি দিলো।
দীনাঃমেয়েকে খুব পছন্দ হয়েছে আমার।
আদিঃআংকেল মিষ্টির সাথে আলাদা কথা বলতে চাই আমরা।
মিহিরঃনিয়ে যাও। তিতির যাও মিষ্টিকে নিয়ে।
আদিঃবাইরে চলো।
মোহরঃআমিও আসি?
আদিঃআসো।
তিতির মিষ্টিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। মিষ্টি ফিসফিস করে বললো,”তিতির আমার খুব বিরক্ত লাগছে। বাই দ্যা ওয়ে, ছাগল কোনটা?”
তিতির হেসে বললো,”মি.ব্লু এন্ড ড.রাজ। পাশের জন আদি দিদিভাই।”
মিষ্টিঃকিই? এটা আদি?
তিতিরঃহুম।
মিষ্টি কিছুক্ষণ ভেবে বললো,”এজন্য চেনা চেনা লাগছিলো।”
বাগানে নিয়ে গেলো ওদের তিতির। মিষ্টি এখন আর মাথা নিচু করে নেই। সরাসরিই রাজের দিকে তাকিয়ে আছে।
মিষ্টিঃআপনি আমাকে বিয়ে করতে চান?
মিষ্টির কথা শুনে রাজ ভ্যাবাছ্যাকা খেয়ে গেলো। কি উত্তর দেবে।
আদিঃকেনো? চাইতে পারে না?
মিষ্টিঃঅফ-কোর্স পারে। এক্ষেত্রে আমারও চাইতে হবে।
আদিঃকেনো? তুমি চাও না?
মিষ্টি কিছু বলার আগেই তিতির ফিসফিস করে বললো,”একদম না বলবি না। তাহলে খুব খারাপ হবে কিন্তু।”
মিষ্টিঃআচ্ছা! আমার কথা বাদ দাও। উনার কথা বলো। উনি আমার সম্পর্কে সব জানেন?
আদিঃকি কি জানার কথা বলছো?
মিষ্টিঃএজ লাইক, আমার স্বভাব। আমি কি ধরনের মেয়ে।
আদিঃতুমি নিজেই বলো।
মিষ্টিঃতুমি সব জানতে চাইছো কেনো? উনি বোবা নাকি। কিছু বলছেন না কেনো?
মিষ্টির কথা শুনে রাজ এবার ভ্রুকুচকে তাকালো।
রাজঃআমি কথা কম বলি। এনিওয়ে, আপনি বলুন আপনার সম্পর্কে।
মিষ্টিঃশুনুন, আমি খুব রাগি একটা মেয়ে। আমার কাছে আবেগ ভালোবাসার কোনো দাম নেই। বলতে পারেন আমার মন পাথর। কথা না শুনা বা কথার অবাধ্য হওয়া মানুষ একদম পছন্দ না আমার। আমার কাজে ইন্টার ফেয়ার করা মানুষকেও আমি পছন্দ করি না। আই হোপ, আপনি বুঝতে পারছেন আমি কেমন প্রকৃতির মেয়ে। আমি আপনার যোগ্য…
তিতির মিষ্টির হাতে একটা চিমটি দিলো। মিষ্টি ভ্রুকুচকে তিতিরের দিকে তাকালো।
রাজঃহুম সব বুঝতে পারছি। আপনি কি জানেন বাইরের থেকে যারা স্ট্রং তারা ভেতরে তার থেকেও বেশি সফট। ভালোবাসা গুলো তারা প্রকাশ করতে পারে না। কিন্তু মনে মনে ঠিকই পাগলের মতো ভালোবাসে। আপনি ঠিক সেরকমই একজন মানুষ।
মিষ্টি অবাক হয়ে রাজের দিকে তাকিয়ে আছে।
মিষ্টিঃনাইস স্পিচ।
আদিঃমিষ্টি তুমি কি রাজকে তাড়ানোর প্লেন করছো?
মিষ্টি হেসে বললো,”সেরকম কিছুই মাথায় ঘুরছে।”
আদিও হেসে বললো,”কি মনে হয় প্লেন সাকসেসফুল হবে?”
মিষ্টি এবার রাজের দিকে তাকালো। রাজ মিষ্টির থেকে চোখ সরিয়ে নিলো।
মিষ্টিঃতোমার ফ্রেন্ড খুব লাজুক। মেয়েদের মতো।
রাজঃউয়াট?
আদিঃনা। ও কারো চোখের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে কথা বলতে পারে না। আর লজ্জা কি শুধু মেয়েদের জন্যই। ছেলেদের জন্য না।
মিষ্টিঃসেটা বলিনি…
আদিঃআমরা লাইন থেকে সরে যাচ্ছি। বিয়ের কথা বলতে এসেছি। তোমার ওপিনিউন দাও।
মিষ্টি এবার মাথা একটু নিচু করে বললো,”একটু টাইম পেতে পারি? একচুয়েলি, আমি এই বিয়েতে সরাসরি না করতে পারবো না। কারণ উনাকে না দেখেই সবার পছন্দ করে ফেলেছে। আর এখন দেখে মনে হয় আমাকে জোর করে হলেও উনার সাথেই বিয়ে দেবেন। যদি না উনি এই বিয়েতে ‘না’ বলেন। আমার একটু সময় লাগবে নিজেকে এই বিয়ের জন্য প্রিপেয়ার করতে।”
রাজঃটেইক দ্যা টাইম।

দিপ্র একটা শপিং ব্যাগ নিয়ে রুশার বাসায় ডুকলো। রুশার মা দিপ্রকে দেখে খুব খুশি হলেন।
ম্যালেনিয়াঃদিপ্র? উয়াট এ প্রেসেন্ট সারপ্রাইজ!
দিপ্র মৃদু হাসলো।
দিপ্রঃউয়ার ইজ রুশা আন্টি?
ম্যালেনিয়াঃইন হার রুম। বাট তুমি ওকে খুজছো কেনো?
দিপ্রঃআমি ওকে নিয়ে একটু বের হবো।
ম্যালেনিয়াঃওকে।
দিপ্র আস্তে আস্তে উপরে উঠলো। একবার হাতে ব্যাগের দিকে তাকালো। আরেকবার সামনের দরজার দিকে। ওর এসব করতে একদম ইচ্ছে করছে না। জেদে করছে। দিপ্র চোখ বন্ধ করে জোরে একটা শ্বাস ফেলে দরজা খুলে ভেতরে ডুকলো। রুশা বিছানায় আধশুয়া হয়ে ফোন টিপছিলো। দিপ্রকে দেখে লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নামলো।
রুশাঃহেই দিপ্র তুমি?
দিপ্র মুচকি হেসে বললো,”তোমাকে এক জায়গায় নিয়ে যাবো।(শপিং ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে)এই ড্রেসটা পরে নাও।”
রুশা খুশি হয়ে দিপ্রর হাত থেকে ব্যাগটা নিলো। আর জলদি ওয়াশরুমে ডুকে গেলো। কিছুক্ষণ পর ড্রেসটা পরে বাইরে বের হলো। রুশাকে দেখে দিপ্রর চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। এই থ্রী-পিসে রুশাকে আরো দারুন লাগছে। রুশাকে এখন দেখে যেকোনো ছেলে পাগল হয়ে যাবে। দিপ্র নিজেকে কন্ট্রোল করে নিলো।
রুশাঃওয়াও দিপ্র। ড্রেসটা খুব সুন্দর।
দিপ্রঃচুল ছেড়ে দাও। আর কপালে ছোট একটা টিপ দাও। চোখে হালকা কাজল। ঠোটে হালকা লিপস্টিক। পার্ফেক্ট সাজ।
রুশা দিপ্রর কথা মতো সব করলো। তারপর আয়নায় নিজেকে দেখে নিজেই চমকে উঠলো। অন্যরকম সুন্দর লাগছে। চোখ ফেরানো যাচ্ছে না।
দিপ্রঃচলো।
রুশাঃবললে না তো আমায় কেমন লাগছে।
দিপ্র মৃদু হেসে বললো,”খুব সুন্দর।”
দিপ্র রুম থেকে বেরিয়ে এলো। রুশাও বের হলো। ম্যালেনিয়া রুশাকে দেখে চমকে উঠলেন।
ম্যালেনিয়াঃওয়াও। ইউ আর লোকিং সো গর্জিয়াস মাই প্রিন্সেস।
রুশাঃথ্যাংকস মম।
দিপ্রঃআসি আন্টি। বাই।
দিপ্র রুশাকে নিয়ে বেরিয়ে পরলো। দিপ্রর হাত কাপছে ড্রাইভ করতে। অনেকক্ষণ পর ওর বাসার সামনে এসে গাড়ি দার করালো।
রুশাঃএটা কার বাসা দিপ্র?
দিপ্রঃআমার।
রুশাঃদ্যাট মিনস তুমি…
দিপ্র মৃদু হেসে বললো,”হুম।”
রুশা খুশির টেলায় দিপ্রকে জরিয়ে ধরে বললো,”থ্যাংক ইউ। থ্যাংক ইউ সো মাচ দিপ্র। টুডে আই এম সো হ্যাপি।”
হঠাৎ কিছু একটা ভেবে রুশার মুখ কালো হয়ে গেলো।
দিপ্রঃউয়াট হ্যাপেন্ড?
রুশা মৃদু হেসে বললো,”নাথিং।”
দিপ্রঃচলো।
রুশা গাড়ি থেকে নামলো। দিপ্র রুশার হাত ধরেই বাড়ির ভেতরে ডুকলো।

চলবে….

#Love_heart_season_2💞💞
লেখা- পূজা
পর্ব- ৪০
🍁
দিঘি দুগালে হাত দিয়ে রুশার দিকে তাকিয়ে আছে। রুশাও তাকিয়ে আছে। বাট আজ রুশা দিঘিকে দেখে একদম খুশি না। সেদিনের অপমানের কথা ভুলেনি রুশা।
দিঘি দাত কেলিয়ে বললো,”বাহ! ইউ লুকিং সো হট।”
দিয়াঃদিঘি এগুলো কি ভাষা?
দিঘিঃওহ! পিপি আমি হট মানে দুর্দান্ত বুঝাচ্ছি। উনাকে তো ভয়ানক সুন্দর লাগছে। রাইট?
দিয়া হেসে বললো,”হুম। মেয়েটা সত্যি দারুন। বাট…।”
দিপ্রঃকি মা?
দিয়াঃএকচুয়েলি আমি চেয়েছিলাম তোর জন্য এখানকার কোনো মেয়েকে চুজ করতে।
দিপ্র রুশার দিকে তাকালো। রুশা মাথা নিচু করে আছে।
রুশার মন খারাপ দেখে দিয়া আবার বললো,”বাট তুই যখন এই মেয়েকে চুজ করেছিস আমার কোনো আপত্তি নেই। সব দিক দিয়েই তো পার্ফেক্ট। দেখতে কত মিষ্টি।”
দিঘি চোখ ছোট ছোট করে বললো,”ইউ আর রাইট পিপি। একদম পার্ফেক্ট। শুধু…”
দিপ্রঃশুধু কি?
দিঘিঃতোর সাথে ম্যাচ হয়নি। তোদের দেখতে একদম সেইম। আই মিট এইজ। সেইম এইজের কোনো মেয়েকে বিয়ে না করে ছোট কাউকে করলে ভালো হয়। কেনো? আই ক্যান এক্সপ্লেইন, দেখ ছোট কাউকে বিয়ে করলে ও তোকে সম্মান করবে। তোর সব কথা মেনে চলবে। ভাববে তুই তো বড়। তুই-ই রাইট। বাট সেইম এইজের কাউকে করলে ও তোর কথা শুনবে না। নিজের মতো করে চলবে। উল্টো তোর তার কথা শুনে চলতে হবে। কারণ এইজটা তো সেইম। সো ততটা সম্মান পাবি না যতটা ছোট কেউ তোকে করবে। এক্সামফুল হিসেবে স্কুল কলেজ ভার্সিটিকেই ধরতে পারিস। মনে করে দেখ ছোটরা তোর সাথে কেমন বিহেভ করেছে আর তোর সাথের এরা। আরেকটা প্রবলেম আছে। সেটা দুজনেরই।
সবাই ভ্রুকুচকে দিঘির দিকে তাকিয়ে আছে। আর রুশা হা করে।
দিঘিঃবলছি প্রবলেমটা কি। আগে দাদাভাইয়ের দিক থেকে বলি? কোসা আই মিন রুশা আমেরিকান। রাইট? কিছুদিন পর ওর মা বাবা চলে যাবে ওদের দেশে। বাট রুশা তোকে বিয়ে করে কিন্তু এখানেই থেকে যাবে। রাইট? তুই জামাই আদর পাবি না দাদাভাই। জামাই আদর পেতে হবে ৭সমুদ্র ১৩নদী। না ৭সমুদ্র বাদ ১৩নদীই পারি দিতে হবে। শ্বশুড় শ্বাশুড়ির সাথে দেখা করতে হলে। বাংলাদেশ ছেড়ে আমেরিকা যেথে হবে। ভাবতে পারছিস। অন্যদেশে। আর বিয়ে করে জামাই আদর মিস করবি? তাহলে বিয়ে করে লাভ কি? এবার রুশার দিকটা বলি। শুনো রুশা, বিয়ের পর ঝগড়া অশান্তি এগুলো কমন ব্যাপার। তবে আমি সিরিয়াস কোনো ঝগড়ার কথা বলছি না। নরমালই বলছি। দাদাভাইয়ের সঙ্গে হঠাৎ তোমার ঝগড়া লাগলো। ধরো ঝগড়ার টপিক কোনো মেয়ে। যেমন, তুমি দেখেছো দাদাভাইকে কোনো মেয়ের সাথে ঘুরতে। তো বাসায় এসে ভাইয়াকে আস্ক করলে মেয়েটা কে? ভাইয়া মিথ্যে বললো বা বললো মেয়েটা ওর ফ্রেন্ড। তুমি বিশ্বাস করলে না। তোমার রাগ উঠে গেলো। ঝগড়া লেগে গেলে। এখন তুমি কি করবে?
রুশা কিছু না বলে হা করে দিঘির দিকে তাকিয়েই আছে। সাথে বাকিরাও। মানে কি বলবে কেউ খুজে পাচ্ছে না।
দিঘিঃতুমি জানো আমাদের দেশের মেয়েরা কি করে?
রুশা মাথা নাড়িয়ে না বললো।
দিঘিঃবাপের বাড়ি চলে যায়। দুদিন রাগ করে থাকে। বরের সাথে কথা বলে না। পরে বর সরি টরি বলে হাতে পায়ে ধরে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায়। কত দাম বেড়ে যায় বউয়ের ভাবতে পারছো? আর যতদিন বাবার বাড়ি থাকে ততদিন মা বাবার আদর তো আছেই ফ্রি। কারণ অনেকদিন পর বাবার বাড়ি গেছে তো মেয়ে। মা বাবা মাথায় তুলে রাখে মেয়েকে। ভালো ভালো ডিস নিজের হাতে রান্না করে খাওয়ায় মা। আরো কত কি? বাট তোমার ভাইয়ার সাথে ঝগড়া লাগলে তো বাবার বাড়ি যেথে পারবে না। সেই ভাইয়ার কাছেই পরে থাকতে হবে তোমাকে। কতটা অসহায় হবে তুমি ভেবে দেখেছো? ভাইয়ার উপর ডিপেন্ডেড হয়ে যাবে। ভাইয়ার কথায় তোমাকে উঠতে হবে বসতে হবে। কারণ এই দেশে তোমার হয়ে কথা বলার মতো তোমার পাশে থাকার মতো তোমার বাবা মা নেই তো।
দিপ্র মনে মনে কপাল চাপরাচ্ছে। কেনো দিঘির সামনে রুশাকে এখানে আনার কথা বলতে গেলো। রুশার ভালোই ব্রেন উয়াশ করছে দিঘি। রুশার যেহেতু এই দেশ সম্পর্কে কোনো আইডিয়া নেই তাই এসব অনাহায়ে বিশ্বাস করে নেবে।
দিয়া কিছু বলতে যাবে আবার দিঘি বললো,”পিপি তুমি কিচেনে গিয়ে রুশার জন্য কোল্ড কিছু নিয়ে আসো যাও। আই থিংক ওর গরম লাগছে।”
দিয়া কিছু বলবে আবার দিঘি ইশারা দিয়ে চলে যেথে বললো। দিয়া চলে যায়।
দিঘিঃতো রুশা কিছু বলছো না কেনো? আমার কথা বুঝতে পেরেছো তো? তুমি জানো একটা মেয়ের জন্য বাবা মা পাশে থাকাটা কতটা জরুরি। আমাদের দেশে প্রতিদিনই অনেক মেয়ের ডিবোর্স হয়। কিছু তো বিয়ের ১\২মাস পরেই ডিবোর্স হয়ে যায়। তখন বাবা মা মেয়ের পাশে এসে দারায়। ডিবোর্স হওয়ার আগ পর্যন্ত বাবা মা পাশে থেকে মেয়ের শক্তি সাহস যোগায়। বাবা মা কাছে না থাকলে একটা মেয়ে কতটা অসহায় ইউ হ্যাভ নো আইডিয়া। তোমার তো এই দেশ সম্পর্কে কোনো আইডিয়া নেই। এই দেশ আমেরিকার মতো ক্লিন না। এই দেশে রাতে একা কোনো মেয়ে বের হতে পারে না। কিছু জানোয়ার তুলে নিয়ে গিয়ে রেপ করে ফেলে। এই দেশে একা একটা মেয়ে সেইফ না। তোমাকে কিছু ডেমো দেখাবো?
রুশা কিছু বলার আগেই দিপ্র বললো,”দিঘি তুই…”
দিঘিঃচুপ! কোনো কথা না। কাম উইথ মি রুশা।
দিঘি নিজেই রুশার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেথে লাগলো। দিপ্র সাথে আসবে দিঘি বললো,”তুই আসবি না। আর চিন্তা করিস না। আমি ওর সাথে খারাপ কিছু করবো না। আর আমি কি কি করবো এতক্ষণে আইডিয়া করে নিয়েছিস।”
দিঘি রুশাকে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো। দিঘি বের হতেই দিয়া জুস নিয়ে ফিরে এলো।
দিয়াঃদিপ্র! দিঘি আর রুশা কোথায়?
দিপ্র দু হাত দিয়ে মাথা চাপ দিয়ে বললো,”নিয়ে গেছে রুশাকে দিঘি। ব্রেন উয়াশ করতে। তোমার ভাইঝি আমার বিয়ে ভেস্তে দিয়েই আসবে মা।”
দিয়াঃদিঘি কি এই বিয়েতে রাজি না?
দিপ্র মাথা নাড়িয়ে না বললো।
দিয়াঃভালোবাসিস রুশাকে?
দিপ্রঃজানি না মা। ভালো লাগে ওকে। সেই প্রথম থেকেই ওর সাথে স্টাডি করে আসছি। বাট দিঘি রুশাকে একদম পছন্দ করে না।
দিয়াঃতাহলে এই বিয়ের আশা ছেড়ে দে বাবা। তুই তো দিঘিকে চিনিস। ওর যখন রূশাকে পছন্দ না। কখনোই রুশাকে তোর বউ হতে দেবে না। দিঘি তো তোকে খুব ভালোবাসে। আর ও যাদের পাগলের মতো ভালোবাসে তাদের সবসময় নিজের কাছে রাখতে চায়। ওর থেকে দুরে চলে যাওয়াটা ও সহ্য করতে পারে না। হয়ত দিঘি ভেবেছে রুশা তোর জন্য পার্ফেক্ট না। রুশা এই দেশের কালচার ট্রেডিশন সম্পর্কে একদম জানে না। ওর এগুলো সম্পর্কে জানতে বুঝতে এখানের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে অনেক টাইম লাগবে। তুই নিজেই দেখ, আমাদের দেশের সাথে ওই দেশের ডে নাইট ডিফারেন্স। রুশা এখানের সাথে মানিয়ে নিতে পারবে না।
দিপ্রঃবুঝেছি মা।

দিঘি রুশাকে নিয়ে প্রথমে একটা নিউজপেপার অফিসে গেলো।
দিঘিঃবাংলা পরতে পারো?
রুশাঃনা।
দিঘি একটা ইংলিশ নিউজপেপার এনে রুশার হাতে দিলো।
দিঘিঃপড়ো।
রুশা একবার দিঘির দিকে তাকিয়ে পরতে শুরু করলো।
লেখা:মধ্যরাতে স্বামীর সাথে ঝগড়া করে শ্বশুড়বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলো মেয়েটি। উদ্দেশ্য বাবার বাড়ি। কিন্তু মেয়েটির দুর্ভাগ্য কিছু বখাটে ছেলে মেয়েটিকে একা পেয়ে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রেপ করে সকালে বিবস্ত্র অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দেয়।…
আর কিছু পরতে পারেনি রুশা। দিঘির দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো।
দিঘিঃএটা পরো।
এখানে লেখা:৭বছর প্রেম করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলো ছেলে-মেয়ে। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন যেথে না যেথেই মেয়েটির উপর থেকে ভালোবাসা উঠে যায় ছেলেটির। কথায় কথায় ঝগড়া গায়ে হাত তুলা লেগেই থাকতো। তারপর একদিন ডিবোর্স চায় ছেলেটি। কিন্তু মেয়েটি ডিবোর্স দিতে মানা করে দেয় কারণ মেয়েটি ২মাসের প্রেগন্যান্ট ছিলো। অনেক বলার পরো যখন মেয়েটি নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। রাগে ক্ষোভে হত্যা করে নিজের প্রেগনেন্ট স্ত্রীকে ছেলেটি। ছেলেটির বাবা অনেক বড় বিজন্যাসম্যান হওয়ায় কোনো শাস্ত্রী পায়নি ছেলেটি। টাকা দিয়ে….
রুশাঃদিঘি তুমি এসব আমাকে দিয়ে কেনো পড়াচ্ছো?
দিঘিঃতোমাকে এই দেশ সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছি রুশা।
দিঘি আরো অনেক ভয়ংকর কিছু নিউজ শুনালো রুশাকে।
দিঘিঃতোমাকে এতকিছু বলার কারণ হলো। যেখান থেকে এসেছো সেখানেই চলে যাও। তুমি এই দেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে না। সারা জীবন একসাথে থেকেও অনেক সময় সামনের মানুষকে চেনা যায় না। আর তুমি মাত্র ৪বছর দাদাভাইর সাথে থেকে কি করে চিনবে দাদাভাইকে। বিয়ের পর যে ও তোমাকে ছেড়ে দেবে না। তার কোনো নিশ্চয়তা আছে। তোমার এই দেশে কেউ নেই রুশা। তোমাকে যে মেরে গুম করে দেবে না তার কোনো গ্যারেন্টি আছে? আর এখানে যে এগুলো প্রতিনিয়ত ঘটে তার প্রমাণ তোমার হাতে। আমি মিথ্যে বলছি না।
রুশাঃতুমি তোমার ভাই সম্পর্কে এসব কি বলছো?
দিঘিঃরিয়েলিটি বলছি রুশা। নিজের ভাই বলে যে সাত খুন মাপ সেটা একদম না। আমি একটা মেয়ে হয়ে অন্য মেয়ের কথা ভাববো না? আমি একটা মেয়ে হয়ে অন্য মেয়ের ক্ষতি হোক সেটা অবশ্যই চাইবো না। এখনো সময় আছে। দাদাভাইকে ছেড়ে দাও। তুমি তোমার দেশের কাউকে বিয়ে করো। হ্যাপি থাকবে। ছেলেটি তোমাকে ছেড়ে দিলেও তোমার বাবা মা তোমার পাশে থাকবে। কিন্তু এখানে তোমার পাশে কেউ থাকবে না।
দিঘি আরো অনেক কিছু বলে রুশার ব্রেন উয়াশ করলো। দিঘি প্রমাণসহ বলেছে আর যেভাবে ব্রেন উয়াশ করেছে যে কেউ বিশ্বাস করতে বাধ্য।
রুশাঃআই আন্ডারস্টোড এভরিথিং।
দিঘিঃগুড জব। চলো তোমাকে তোমার বাসায় পৌছে দেই। এড্রেস দাও।
দিঘি মনে মনে ভাবলো,”এই বিদেশির ব্রেন তো ভালোই উয়াশ করেছি। মনে হয়না এই দেশে আর থাকতে চাইবে। এবার দাদাভাইর ব্রেন উয়াশ করতে হবে। কত্ত সাহস আমার এগেনস্ট গিয়ে বিয়ে করবে? করাচ্ছি তোকে বিয়ে।”
রুশাকে বাসায় পৌছে দিয়ে দিঘি দিপ্রর কাছে আসলো। দরজায় টোকা মারতেই দিপ্র চোখ বন্ধ করেই বললো,”নাটক না করে ভেতরে চলে আয়।”
দিঘি দিপ্রর পাশে গিয়ে বসলো। দিপ্র ফোন বের করে রুশার ৫মি আগে পাটানো মেসেজটা দেখালো।
রুশা-আই এম সরি দিপ্র। আম গোয়িং বেক টু আমেরিকা দ্যা ডে আফটার টুমোরু। হ্যারি অলসো লাভস মি। আই উইল এক্সেপ্ট হিম। এগেইন আই এম সরি।
মেসেজটা দেখে দিঘির হাসি এলেও মুখে দু:খি একটা ভাব ফুটিয়ে তুললো।
দিঘিঃও মাই গড। দাদাভাই এসব কি?
দিপ্রঃতুই যা চেয়েছিলি তাই তো হয়েছে। এখন নাটক করছিস কেনো?
দিঘিঃএই ফালতু মেয়েকে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছিলি? আমি তোর নেগেটিভে বললাম আর আমার কথা বিশ্বাস করে নিলো? এই তোর প্রতি ওর ভালোবাসা?
দিপ্রঃওর এই দেশ সম্পর্কে ১%ও আইডিয়া নেই দিঘি। তাহলে বিশ্বাস না করে আর কি করবে?
দিঘিঃএই কারণেই এভাবে তাড়ানোর প্লেন করেছি😉। এই দেশের মেয়ে হলে মেয়ে ভাগানোটা ডিফিকাল্ট হয়ে যেতো। ওদের বুদ্ধি থাকলেও নিজেকে খুব ভালোবাসে।
দিপ্রঃনাউ হ্যাপি? এখন এখান থেকে যা।
দিঘিঃযাবো তো। তার আগে তোকে কিছু কথা বলে নেই।
দিপ্রঃতোর সব কথা পরে শুনবো। এখন যা।
দিঘিঃজাস্ট ৫মি। প্লিজ।
দিপ্রঃ১সেকেন্ডও না। পরে শুনবো। যা।
দিঘিঃএজ ইউর উইস।
দিঘি রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। গাড়িতে উঠেই ড্রাইভার আংকেলকে বললো একটা রেষ্টুরেন্টের সামনে নিয়ে যেথে। দিপ্রর কাছে আসার আগে দিঘির মনে হলো কাব্যকে একটা মেয়ের সাথে এখানে ডুকতে দেখেছে। একটু চেক করে নিলে ভালো হয়। দিঘি রেষ্টুরেন্টের ভেতর গিয়ে দেখলো শুধু কাব্য আর মেয়েটা না আরো ২জন ছেলে এখানে আছে। লাঞ্চ করছে কথা বলছে। দিঘি গিয়ে কাব্যর সামনে দারালো। কাব্য কথা বলতে বলতেই দিঘির দিকে চোখ গেলো।
চামচ প্লেটে রেখে বললো,”দিঘি তুমি?”
দিঘি সুন্দর একটা হাসি দিয়ে বললো,”আইসক্রিম নিতে এসেছিলাম। হঠাৎ আপনাকে দেখলাম। ভাবলাম দেখা করে যাই।”
কাব্যঃতুমি একা এসেছো?
দিঘিঃড্রাইবার আংকেল আছেন।
এখানের মধ্যেই একজন ছেলে বললো,”হু ইজ সি মি.কাব্য?”
কাব্য কিছু বলবে তার আগেই দিঘি বললো,”আই এম হিজ ফিয়ন্সে।”
দিঘির কথা শুনে কাব্যর মুখ অটমেটিক্যালি হা হয়ে গেলো। ঠিক শুনছে তো নাকি স্বপ্ন দেখছে?
দুজন একসাথেই বললো,”কনগ্রেস কাব্য।”
ওদের কথা শুনে কাব্য বুঝতে পারছো স্বপ্ন না সত্যি। কাব্য জোরপূর্বক হাসি এনে বললো,”থ্যাংকস।”
মেয়েটি বললো,”স্যার আপনার বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমরা কেউ তো শুনিনি।”
দিঘিঃআপনি উনার কে হন? হুহ? আপনাকে সব বলে করতে হবে? কাব্য চলুন তো আমার সাথে। বাসায় যাবো।
“বাট স্যারের মিটিং।”
দিঘিঃকাজের থেকেও উনার কাছে আমি বেশি ইম্পর্টেন্ট। রাইট?(কাব্যর দিকে তাকিয়ে)
কাব্য মুখে কিছু না বলে মাথা ঝুকালো।
“ইটস ওকে মিস ঝুমু। আমি সাইন করে দিচ্ছি। আপনি পেপার নিয়ে যান। আর মি.কাব্য আপনি যেথে পারেন। উই উন্ট মাইন্ড।”
কাব্য উঠে উনাদের সাথে হ্যান্ডশেক করে দিঘির সাথে রেষ্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে গেলো। দিঘির দিকে অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে আছে। কিন্তু দিঘির সেদিকে কোনো খেয়াল নেই।
গাড়িতে উঠেই কাব্য বললো,”দিঘি তুমি তখন কি বললে?”
দিঘিঃকি বলেছি?
কাব্যঃতুমি আমার ফিয়ন্সে?
দিঘি ভ্রুকুচকে বললো,”হুম।”
কাব্যঃরিয়েলি?
দিঘিঃহতে কতক্ষণ।
কাব্যঃতার মানে তুমি…
দিঘি কাব্যর চোখে চোখ রেখে বললো,”শুনুন মি.কাব্য আমি অন্য মেয়েদের মতো ন্যাকা না। যা বলার ডিরেক্ট বলতে পছন্দ করি। আমি ছাড়া অন্য কোনো মেয়ের দিকে যদি তাকান চোখ তুলে ফেলবো।”
কাব্যঃভালোবাসো আমাকে?
দিঘি কাব্যর থেকে চোখ সরিয়ে নেয়।
দিঘিঃগাড়ি স্টার্ট দিন।
কাব্যঃউত্তর দাও।
দিঘিঃসময় এলে পেয়ে যাবেন।
কাব্যঃকবে আসবে?
দিঘিঃসেটা আপনি জানেন।
কাব্যঃমানে?
দিঘি কাব্যর একদম কাছে গিয়ে কানে ফিসফিস করে বললো,”এতকিছু প্লেন করেছেন আমাকে উইক করার জন্য। এখন আমার মুখ থেকে ভালোবাসি শুনার জন্য আর কি কি করবেন সেটা তো আমার জানার কথা না।”
কাব্য বিস্ফুরিত চোখে দিঘির দিকে তাকালো।

চলবে….