রাজকন্যা হূরিয়া পর্ব-২১

0
355

#রাজকন্যা_হূরিয়া
#লেখা_মুহতারিযাহ্_মৌমিতা
[২১]

জঙ্গল পেরিয়ে সেই অদৃশ্য ঘরগুলোর সামনে পা রাখতেই কেউ পেছন থেকে আক্রমণ করে বসে। ঠিক মাথার মাঝখানটাতে স্বজোরে বারি বসিয়ে দেয়। রাজকন্যা টের পায়নি তার আগমন। আকস্মিক আক্রমণে কিছুই করার ছিলো না রাজকন্যার! প্রচন্ড ব্যাথায় আর্তনাদ করে লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। দম বন্ধ হয়ে এসেছে যেন! কয়েক মুহুর্ত দাঁতে দাঁত চেপে ব্যাথাটা সহ্য করার প্রয়াস চালালো। কিন্তু কতটুকু সফল হলো জানেনা সে। দম বন্ধ রাখা অবস্থাতেই চোখ বুঁজে গেলো তার। আগন্তুক বিকৃত হাসলো। হাতের মোটা লাঠিতে দূরে ছুঁড়ে মেরে তার লোভাতুর দৃষ্টি খানা বুলিয়ে নিলো রাজকন্যার গতরে। লালসায় জিহ্বাখানা ঝুলে পড়ছে কুকুরের মতো। নিশপিশ করা হাতটা বারবার ছুটে যাচ্ছে সেদিক পানে। এই মুহুর্তে নিজেকে দমিয়ে রাখাও যেন অগ্নিপরীক্ষার সমান হয়ে দাঁড়াচ্ছে তার কাছে। তবুও নিজেকে সামলে নিলো আগন্তুক। ওস্তাদজীর কঠিন আদেশ! একটু হেরফের হলে জান যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

আগন্তুক নিজের মনের অতৃপ্ত বাসনাগুলো দমিয়ে রেখে পাঁজা কোলে তুলে নিলো রাজকন্যাকে। এখন তাকে নিয়ে কুঠুরিতে ফেরা যাক। জঙ্গল পেছনে রেখে অন্যপথ দিয়ে রাজকন্যাকে নিয়ে বেরিয়ে এলো আগন্তুক। রাজকন্যার অচেতন শরীরটা ঘোড়ার পিঠে তুলে নিজেও উঠে বসলো। অতঃপর ঘোড়া ছুটিয়ে চলল ডাকাতদের কুঠুরিতে।

__

কয়েক প্রহর কেটে গেলো ঠিক এমনই করে। রাজকন্যা আর ফিরলো না প্রাসাদে। রাজকুমার সহ প্রাসাদের সকল লোক দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলো। এত সময় পেরিয়ে গেলো অথচ এখনও রাজকন্যার দেখা নেই। কোথায় আছে সে? কোথায় গেল?

রাজকুমার দুশ্চিন্তায় হাসফাস করছে। কক্ষে বসে কেবল পায়চারি করে যাচ্ছে সেই তখন থেকে। না, আর বসে থাকা সম্ভব নয়। তাকে এক্ষনি রাজকন্যার খোঁজে বের হতে হবে। রাজা সিরাদউদ্দীনের ইতিহাস পূনরায় ঘটতে পারেনা রাজকন্যার জীবনে। অসম্ভব! সে থাকতে তো কোনোদিন এই অন্যায় হতে দিবেনা।

“রাজকুমার? আপনি কি যাচ্ছেন রাজকন্যার খোঁজে?”

আদিমের বিচলিত কন্ঠ শোনা গেলো। রাজকুমার তৈরী হয়ে নিলো। আদিমকে দেখে হঠাৎ ভালো লাগলো তার। এই প্রাসাদে হয়তো এই একটা মানুষই আছে যে রাজকন্যাকে নিয়ে ভাবে। চিন্তা করে। এবং রাজকন্যার বিপদে যথাসাধ্য চেষ্টা করে তাকে সাহায্য করবার।

“হ্যাঁ, আমি যাচ্ছি রাজকন্যার খোঁজে। তুমি কি যেতে চাও আদিম?”

“নিশ্চয়ই যেতে চাই রাজকুমার। আমি ভেবেছি আপনি এখনও যেতে না চাইলে আমি একাই বেরোতাম রাজকন্যার খোঁজে।”

“বেশ। চলো তবে।”

রাজকুমার বেরোবার জন্য পা বাড়াতেই পিছু ডাকে আদিম।

“রাজকুমার?”

“হ্যাঁ।”

রাজকুমার পেছন মুড়ে জবাব দেয়। দেখতে পায় আদিমের অসহায় মণ্ডিত মুখখানা। রাজকুমারের বুকের ভেতর কেমন করে। সংকুচিত মনে প্রশ্ন করে,

“কি হয়েছে?”

“রেদোয়ানকে কেউ মুক্ত করেছে! এবং আরহামকে পাহারা দেওয়া প্রহরীসহ অপহরণ হয়েছে সে। রাজকন্যা আমায় প্রশ্ন করলে আমি কি জবাব দিবো তাকে?”

রাজকুমারের মুখের ভঙ্গিমা খুবই স্বাভাবিক,শান্ত। এ-কথার পৃষ্ঠে আদিমের আশংকা করা রাজকুমারের আচরণ তেমন কিছুই হলোনা। বরং খুবই স্বাভাবিক রইলো। আদিম সন্দেহজনীতে দৃষ্টিতে তাকায় রাজকুমারের দিকে। তবে সন্দেহ টা মনে মনেই রাখে। বাইরে প্রকাশ করেনা।

“এই মুহুর্তে আমাদের রাজকন্যাকে খুঁজে পাওয়াটা বেশি দরকার আদিম। আরহাম আর রেদোয়ানকে আমরা পরেও খুঁজে বের করতে পারবো।”

“যথাআজ্ঞা রাজকুমার।”

রাজকুমার আর আদিম বেরিয়ে পড়ে রাজকন্যার তালাশে। রাজপ্রাসাদের বাকি সদস্যরা ওখানেই পড়ে থাকে। তাদের দায়িত্ব দিয়ে যাওয়া হয় মন্ত্রী মশাইয়ের উপর। রাজকন্যা ব্যতীত এই প্রাসাদ আজ শূন্য। বেশ অনুভব করেছিলো রাজকুমার। তাই যেকোনো মূল্যেই হোক সে রাজকন্যাকে ফিরিয়ে আনবে এই প্রাসাদে। এই রাজপ্রাসাদে রাজ করার অধিকার একমাত্র রাজকন্যা হূরিয়ারই আছে। আর কারোর নেই! আর কারোর না।

__

রেদোয়ান পাহাড়া দিচ্ছে তার ভাইকে। একটু আধটু সেবাও করছে। সে ততটাও খারাপ নয় যতটা তার ভাই তাকে ভাবে। ছোট বেলায় যেটাই হয়েছিলো সেটা কেবলই হিংসের কবলে পড়ে করেছিলো সে। আব্বাজানের ভালোবাসা কম পড়ায় সে এমনটা ভেবে নিয়েছিলো তার ভালোবাসায় ভাগ বসিয়েছে আরহাম। কেবল এতটুকুই ছিলো! কিন্তু বড় হয়ে যখন ওস্তাদজীর প্ররোচনায় পড়ে ভাইয়ের সঙ্গে এতোবড় একটা অন্যায় করেছিলো তখন ঠিকই কষ্ট হচ্ছিলো। তবে মুখে বলে কি হতো? কে শুনতো ওর কথা? কে বারন করতো এই অন্যায় না করতে। যাই হয়ে যাক না কেন, সে তো এদেরই খেয়ে-পড়ে এতো দিন বেঁচেছিলো।

দু’জন আহত ব্যক্তি শুয়ে আছে পাশাপাশি। একজন আরহাম আর অন্যজন…

আর ভাবার সুযোগ হলো না রেদোয়ানের। বিকট শব্দে চমকে উঠলো সে। আরহামের পাশ থেকে উঠে দৌঁড়ে এলো বাইরে। ভোর হয়েছে অনেক্ষন। চারপাশে প্রকৃতির আলোয় ঝলমল করছে। একটু দূরেই কয়েকটা লা/শ পড়ে আছে। তাঁদের শরীরের তাজা র’ক্তে বনবাদাড় ভিজে উঠেছে প্রায়। রেদোয়ানের কপাল কুঁচকে এলো। এঁদের খু/ন করলো কে? তার মস্তিষ্ক সতর্ক বার্তা দিচ্ছে। বিপদ নয়তো? সরদারও যে নেই এখানে? আরহাম আর ঐ মানুষটাকে নিয়ে কি এক্ষনি প্রস্থান করা উচিৎ তার?

___

অন্ধকার পাতালপুরীতে বন্দী রাজকন্যা। তার হাতেপায়ে শিকল পড়ানো। মাথার পেছনটায় র’ক্ত শুঁকিয়ে আছে। শরীরের ব্যাথায় নড়াচড়া দায়। এখানে এমন বন্দী হয়ে ঠিক কত সময় ছিলো হিসেব করতে পারলো না সে। হুঁশ ফিরলে যখন চোখ মেলে তাকালো তখন এই অন্ধকার পাতালপুরীকে কবরস্থান বলেই বোধ হয়েছে তার। হঠাৎ মনে পড়লো জঙ্গলের কথা। কেউ তাকে আক্রমণ করেছিলো! আর তারপর..

মনে করতে পারলো না রাজকন্যা। মাথার পেছনটা কেমন ব্যাথায় টানটান করে উঠলো। মুখ থেকে অস্পষ্ট স্বরে আর্তনাদ করলো। কোথায় আছে সে? কে বন্দী করলো তাকে? ডাকাতদল?

রাজকন্যার মনে শঙ্কা ভর করলো। প্রথমে খানিকটা ভয় পেলেও ধাতস্থ করলো নিজেকে। এখন প্রভাত না রজনী বোঝার চেষ্টা চালালো। অতঃপর একাই হাসলো। মনেমনে বাক্য আওড়ালো,

“স্বাগতম ওস্তাদজী। সু-স্বাগতম।”

বলতে বলতে নড়ার চেষ্টা করলো সে। নড়তে পারছেনা! এই শিকল ভাঙ্গবে কেমন করে সে?

একটু দূরেই কারোর পায়ের আওয়াজ ভেসে এলো। রাজকন্যা সতর্ক দৃষ্টিতে তাকালো। কেউ আসছে এদিকে! ওস্তাদজী নয়তো? নাকি নাজিমউদ্দীন? যেই হোক। দুর্বল হলে চলবেনা। শক্ত হও রাজকন্যা। দৃঢ় মনোবল জোগাড় করো।

হারিকেনের আলো প্রজ্বলিত হলো ধীরেধীরে। একখানা অচেনা মুখ ভেসে উঠলো ক্রমশ। রাজকন্যা কোনোদিন দেখেনি তাকে। তাকে দেখতেই কেন যেন বুকের ভেতর কেমন মোচড় দিয়ে উঠলো। তার প্রত্যাশা অনুযায়ী ইনি ওস্তাদজী নন! অন্যকেউ। অল্প বয়সের এক যুবক। তবে কি সে ভুল ভেবেছে? ডাকাতদলের হাতে সে বন্দী হয়নি? হয়েছে এই অচেনা যুবকের কাছে? কে এই যুবক?

রাজকন্যার দৃষ্টি কুটিল হয়ে এলো। ডাকাতদল ব্যাতীত এতো বড় স্পর্ধা কেউ করবেনা বলে সে জানতো। কিন্তু এ আবার কোন দল এলো?

যুবকটি রাজকন্যার কাছে এসে দাঁড়ালো। হাতের হারিকেনটা উঁচিয়ে ধরলো মুখের কাছে। কেমন অদ্ভুত কিসিমে’র হাসি দিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,

“সুপ্রভাত রাজকন্যা।”

বলেই খ্যাকখ্যাক করে হাসলো। বিকৃত হাসি। রাজকন্যার মন কু-ডাকলো। এ কোন নতুন বিপদ জুটলো কপালে।

“ইশশ! একি দশা হয়েছে রাজকন্যা তোমার? এলোমেলো পোশাক,কা/টা/ছেঁ/ড়া হাত,পা। র/ক্তে ভেজা কপাল,মাথা! শিকল বন্দী! কষ্ট হচ্ছে খুব তাই না?”

যুবকের কৌতুক স্বরে রাজকন্যার দৃষ্টি বিস্ফোরিত হয়ে উঠলো। দাঁতে দাঁত চেপে কটাক্ষ করে উঠলো সে,

“কাপুরুষ!”

যুবকের হাসি উবে গেলো। সঙ্গে সঙ্গে উধাও হলো তার কৌতুক আচরণ। চোয়াল শক্ত করে বলে উঠলো,

“কি বললে তুমি?”

রাজকন্যা গুরুত্ব দিলোনা তার কথার। সে এক বাক্যেই যেন সবটা বুঝিয়ে দিয়েছে যুবককে। যুবক রাজকন্যার চুপ থাকায় যেন আরও ক্ষেপে গেলো।

“এতো বড় স্পর্ধা তোমার তুমি আমায় কাপুরুষ বলো? শুনে রাখো,তোমাকে এই পাতালে আমি বন্দী করেছি৷ এই আমি। মেরাজ। কই,তখন তো তোমার হুঁশই ছিলো না! হাহা। আটকাতে পারলেনা আমায়?”

রাজকন্যা তাচ্ছিল্যের সহিত হাসলো। মেরাজের গা পুড়িয়ে বলল,

“তুমি যে কাপুরুষ তার আরও একটা প্রমান দিয়ে আমায় ধন্য করলে তুমি। এক কন্যাকে কেবল বন্দী করতে এতো কৌশল? তাকে কাপুরুষের মতো পেছন থেকে আঘাত করলে। এতোই যখন পুরুষত্বের অহংকার তোমার তবে কেন লড়লে না আমার সঙ্গে? কেন পরাজিত করে আমায় বন্দী করলেনা হে অধম?”

রাজকন্যার ভাবলেশহীন কথায় গায়ে ফোস্কা পড়লো মেরাজের। সাপের ন্যায় ফোঁস ফোঁস করছে। এই পুঁচকে মেয়ের এতো দুঃসাহস? কি করতো সে সামনাসামনি লড়াই করে? তার তলোয়ারের এক আঘাতে তক্ষনি তো ঘাড় থেকে মাথাটা আলাদা হয়ে যেতো। আর সে কিনা তাকে কাপুরুষ বলছে? তাকে অধম বলছে?

হঠাৎ মস্তিষ্কে ভর করলো বিকৃত চিন্তা। তাকে কাপুরুষ বলছে তো? তাহলে এখন সেও দেখাবে তার পুরুষত্ব। বন্দী রাজকন্যা কেমন করে আটকাবে তাকে? সেও দেখতে চায়।

মেরাজের ঠোঁটের কোনের ওমন বিকৃত হাসিতে বুক কেঁপে উঠলো রাজকন্যার। সে যেন বুঝে ফেললো মেরাজ কি পরিকল্পনা করছে মনেমনে। রাজকন্যা সতর্ক হলো। মেরাজ তার দিকে পা বাড়ালেই বন্দী অবস্থাতেই আক্রমণ করবে তার উপর। কিন্তু তা সম্ভব হলো না! তার হাত-পা যেমন করে বাঁধা আছে তাতে সে এক ইঞ্চিও নড়তে পারবেনা।

মেরাজ হাত থেকে নামিয়ে রাখলো হারিকেনটা। বিকৃত হাসতে হাসতে বসলো রাজকন্যার পায়ের কাছে। কেমন অদ্ভুত দৃষ্টি বোলাতে লাগলো রাজকন্যার শরীরের প্রতি ভাঁজে ভাঁজে। রাজকন্যার গা গুলিয়ে উঠলো। মনেমনে আর্তনাদ করছে সে। এই পশুকে কি করে আটকাবে এই মুহুর্তে?

“রাজকন্যা বন্দী আজ,
ডাকাত-পুরীর ডেরায়!
রাজকুমার কি আসবে ফিরে?
এটাই তো তার কাজ!
হায় রে কপাল পোড়া,
রাজকুমার তো সেই কবে মরা!
কি করে সে আসবে নিতে?
বন্দী যে ঐ ধরণীতে।

নাটকীয় সুরে বলতে বলতে বিকৃত শব্দে হেসে ওঠে মেরাজ। রাজকন্যা আতংক গলায় চেঁচায়,

” অসম্ভব! আ্ আমার রাজকুমার কিছুতেই বন্দী হতে পারেনা।”

“তুমি বড় বোকা রাজকন্যা। বড্ড বোকা।”

ফিসফিসিয়ে বলতে বলতে মেরাজ হাত বাড়িয়ে দেয় রাজকন্যার শরীরের দিকে। রাজকন্যা হুংকার ছাড়ে,চেঁচায় কিন্তু কোনে কিছুতেই থামেনা মেরাজ। সে তার কুচিন্তায় নিমজ্জিত। রাজকন্যাকে ছুঁবে প্রায় ঠিক এমন মুহুর্তে বাতাসের তীব্র তেজে ছিটকে পড়ে দূরে। কেউ তাকে পেছন থেকে লাথি মেরেছে। আর এমন জোরে মেরেছে যে তার বসে থাকার জো হলো না। ছিটকে একদম শেষ মাথায় পড়লো। চাপা আর্তনাদ করে সামনের দিকে তাকিয়ে হুংকার ছাড়ার পূর্বেই সে হুংকার করে উঠলো,

“জা/নো/য়া/র! তোর এতো বড় দুঃসাহস হয়েছে যে তুই..”

রাজকন্যা চমকে উঠলো। ভয়ার্ত দৃষ্টিতে মুখ উঁচিয়ে তাকাতেই দেখতে পেলো তার প্রত্যাশার মুখ খানা। আনন্দে তার মনটা ছটফট করে উঠলো। না চাইতেও ঠোঁটের কোনে এসে জড়ো হলো প্রশান্তির হাসি। হা করলো ব্যাক্তিটার নাম উচ্চারণ করবেই বলে। কিন্তু ঠিক সেই মুহুর্তে তাকে থমকাতে হলো। তার আনন্দ, প্রশান্তি সব একসাথে ধামাচাপা পড়লো এই পাতালপুরী। মেরাজ আক্রোশ নিয়ে নাম জপ করলো তার,

“আয়াস! তুই এখানে কি করছিস?”

#চলবে__

[ গঠন মূলক মন্তব্য আশা করছি। ]

[ কবিতা ভালো লিখতে পারিনা! গল্পের খাতিরে চেষ্টা করলাম। কথা গুলো ঠিক মিললো কিনা জানাবেন সবাই]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here