অভ্র নীল পর্ব-১৮

0
636

#অভ্র_নীল
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_১৮
______
সন্ধ্যের দিকে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হবে। এখন সবাই রেডি হচ্ছে। কাজলে সাজাতে পার্লার থেকে মেয়ে আসছে। আজ তানজু তানিয়া নীল সেম হলুদ রঙের মধ্যে লাল পাইড়ের শাড়ি পড়বে আর সাজবেও সেম।
যেমন কথা তেমন কাজ ওদের প্লেন ওরা তিনজন আজকে একটা গানে ডান্স করবে। ওইদিকে কাজলের ও সাজ শেষ।
সন্ধ্যে বেলায়____
কাজলকে স্টেজে নিয়ে বসানো হয়েছে ছেলের বাড়ি থেকে লোকজন ও চলে আসছে। সবাই হলুদ ছোঁয়াচ্ছে আর সাথে বক্সে গান বাজছে।

এখন সময় নীল তানজু আর তানিয়ার নাচের পালা।
মিউজিক_________🎶🎶🎶
🎶🎶🎶
Dekh ke tujhko Dil bole haaye haaye🎶🎶
Tere bin haal mera Bura hota jaaye jaaye🎶🎶

🎶🎶 Thodi saraarti mai Tu bhi thoda shy shy🎶

🎶🎶 Tere liye bakiyon ko🎶 Kiya meine bye 🎶

Aisa kaisa pyaar kar liya Ho saawariya aa aa🎶
Saawariya aa aa Saawariya aa aa🎶🎶🎶
Sawariya saawariya 🎶🎶🎶

Tujhpe🎶🎶 aake naina mere Jaam ho gaye
Haan tujhpe aake naina mere Jaam ho gaye🎶🎶
Samajh mein na aaye aise kaam ho gaye

Naam bohot tha tere sar ki kasam🎶🎶
Saiyan pade jo tere pyaar mein badnaam ho gaye🎶🎶🎶

Haaye reh liya duniya se bada dar dar ke
Dakhun mein bhi zara hadh se guzar ke🎶🎶
Sab kuch tere naam kar diya ho🎶🎶
saawariya aa aa🎶
Saawariya aa aa Saawariya aa aa🎶🎶🎶
Sawariya saawariya 🎶🎶🎶

এই গানের বাকি অংশ নিজ নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন। আজ এই পর্যন্তই শুনালাম আবার সুযোগ হলে পুরোটা শুনাবো। গানের শেষে অভ্র আকাশ শুভ তিনজনও নাচের মধ্যে ডুকে যায় আর নাচ হয়ে যায় কাঁপল ডান্স!
নাচ শেষে সবাই হাত তালি দেয়।
নীল– আপনাকে কে বলছে আসার জন্য?
অভ্র– ওমা ওরা আসছে আর আমি আসবো না ব্যাপারটা খারাপ দেখা তো আর আমি আসছি বলেই তোমার নাচটা এত সুন্দর হইছে।
নীল– হয় হয় মামা বাড়ি আবদার। শুরু থেকা কষ্ট আমরা করলাম আর শেষে আইসা সব ক্রেডিট উনি নিয়ে নিচ্ছেন! ডং মুখ ভেংচি দিয়ে আবার চলে গেলো।
অভ্র– আবার!
তারপর মেয়ে বাড়ির হলুদের পালা শেষ এখন ছেলের বাড়ির হলুদ। মেয়ের বাড়ির সবাই চলে আসছে এখানেও গান বাজছে সাথে নাচানাচি হচ্ছে সবাই তন্ময় কে হলুদ ছুইয়ে চলে গেলো।
নীল কাজলের এক হাতে মেহেদী দিয়ে দিচ্ছে অভ্র তা দেখে নীল এর পাশে বসে কানে কানে ফিসফিস করে বলে।
অভ্র– আমার মেহেদী অনেক ভালো লাগে তুমি চাইলে দিতে পারো।
নীল– আপনার ভালোলাগে আসেন আপনাকেই দিয়ে দেই। ভ্রু কুঁচকে রাগী কন্ঠে।।।
অভ্র সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে।
অভ্র– না থাক আমি বরং চলে যাই।
নীল– হ্যাঁ তাই যান।
তারপর নীল কাজলের হাতে মেহেদী দেওয়া শেষ করে নিজের হাতেও দেয় যেটা অভ্র লক্ষ্য করে না।
রাতে সবাইকে ঘুমানোর আলাদা আলাদা রুম দেওয়া হয়েছে। অভ্র আর নীল যে রুমে থাকবে সে রুমে সব আছে শুধু সোফা নেই!
নীল রুমে এসে ঘুমিয়ে পরেছে। অভ্র রুমে এসে দেখো কোনো সোফা নেই কোথায় শুবে নিচে শুবে না না বিছানার এক সাইডে গিয়ে শুয়ে পরি নীল জাগার আগে উঠে পরবো। তারপর অভ্র খাটের এক সাইডে শুয়ে গভীর রুমে তলিয়ে যায় ঘুমের মাঝে দু’জনেই নড়তে নড়তে কাছাকাছি চলে আসে। নীলের মুখের উপর কারো নিশ্বাস পরছে টের পেয়ে নীলের ঘুম ভেঙে যায় চোখ মেলে অভ্র কে নীলের এত কাছে দেখে।
নীল– আহহহহহহহহহহহহহহহহ__ বুঝতেই পারছেন চিৎকার দিয়েছে। নীলের চিৎকারে লাফ দিয়ে উঠে অভ্র আর উঠেই নীলের মুখ চেপে ধরে।
অভ্র– কি করছিলে তুমি চিৎকার দিলে কেন এখুনি তো বাড়ি ভর্তি লোক সব চলে আসতো।
নীল– আসলে আসতো আপনি আমার এত এসেছিলেন কেনো সোফায় শোননি কেনো?
অভ্র– ম্যাডাম আপনি ভালো করে আখি দুটি মেলিয়া দেখুন রুমে কোথাও সোফা নেই। আর আমরা এখন আপনার বেস্টি কাজলের বাড়ি আছি। আর আমি অভ্র চৌধুরী মাঠিতে শুতে পারবো না ২/৩ দিন এডজাস্ট করতে হবে। বিছানার উপর বসে কোল বালিশ দুই হাতে জরিয়ে ধরে বললো।
নীল– হুম তা ঠিক আছে কিন্তু তাই বলে আপনি আমার এত কাছে আসবেন কেন?
অভ্র– কত কাছে গিয়েছি ওই মনে নেই তো ঘুমের ঘড়ে ছিলাম। দাঁত ৩২ টা বের করে।
নীল– এই এত কাছে ১ ইঞ্চির গেপ ছিলো আর একটু হলেই তো।
অভ্র– তো কি?
নীল– তো কি সরুন লুচ্চা একটা কোলবালিশ দিন। আমি কোলবালিশ ছাড়া ঘুমাতে পারি না।
অভ্র– আবার লুচ্চা.! না দেবো না আমিও কোলবালিশ ছাড়া ঘুমাতে পারি না রাতে হাত পা উঠে যায় ভেবে দেখো তোমার উপরে যদি….
নীল– তত কিছু জানি না জানতেও চাই না দিন আমার কোলবালিশ! (কোলবালিশের এক পাশ ধরে টানছে আর বলছে)
অভ্র– না দেবো না! (কোলবালিশের আরেক পাশ ধরে টানছে অভ্র)
দুই জনেই টানাটানি করছে বেচারা মাঝখানে কোলবালিশ ভাগ্যিস কোলবালিশ বালিশ ছিলো যদি মানুষ হতো তাহলে টানাটানি তে নাজেহাল হয়ে যেতো।
নীল অভ্রর শক্তির সাথে পেরে উঠছে না আর পারবেই না কিভাবে আসতো একটা হাতি লম্বা কিউট হ্যান্ডসাম সিক্সপ্যাক টোটাল পারফেক্ট।
নীল ও কোনো দিকে কম নয় দুজনেই মেড ফর ইচ আদার।
নীল উঠে বিছানার উপর দাঁড়িয়ে যায় বসে বসে আর পারছে না এখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে টানছে অভ্র বেশ মজাই পাচ্ছে।
অভ্র সর্ব শক্তি দিয়ে কোলবালিশ দিলো নিজের দিকে টান। নীল তাল সামলাতে না পেরে কোলবালিশ নিয়েই পরে যায় অভ্রর উপর অভ্র বেচারা বসে ছিলো বিছানার একদম সাইডে নীলের হঠাৎ করে ওর উপরে পরায় অভ্র নিজেও নীল সহ কোলবালিশ নিয়ে বিছানা থেকে নিচে মাটিতে পরে যায়। অভ্র নীচে নীল অভ্রর উপরে কোলবালিশ অভ্রর পায়ের কাছে।
অভ্র– ওরে আল্লাহ গো আমি শেষ৷ কি বুটকি রে বাবা।
নীল– মোটেও না আমি বুটকি না। (অভ্রর উপর শুয়ে আছে)
অভ্র– বুটকি কি না সেটা আমি হারে হারে টের পাচ্ছি উঠো ধম বাহির হয়ে যাইবো এখন উঠো।
নীল– ওও হ্যা হ্যা উঠছি।
বলেই নীল উঠতে যাবে একটু উঠতেই আবার ধুপ করে অভ্রর উপরে পরে যায়।
অভ্র– আআআহহহহহ ওরে বুটকি রে। কাল থেকে কম কম খাবি। আল্লাহ গো আমি নাই।
নীল- সরি সরি সরি। বলে উঠে গেলো।
অভ্র উঠে দাঁড়ায় বুকে হাত দিয়েই আল্লাহ কোলবালিশ নিচে থেকে উঠিয়ে অভ্রর দিকে কোলবালিশ দিয়ে এই না-ও তোমার জামাই এটার জন্য আমাকে এত কষ্ট দিলা। আল্লাহ গো।
নীল– কিসের জামাই? এটা আমার জামাই হতে যাবে কেন? আমার জামাই আছে হুহহ। কোলবালিশ জরিয়ে ধরে।
অভ্র– আচ্ছা কে জামাই শুনি।
নীল– ওই যে যার হাড্ডি গুড্ডি ভাঙলাম একটু আগে সেই।
অভ্র– আচ্ছা তাহলে জামাইকে জরিয়ে না ধরে কোলবালিশ কে ধরছো কেন? ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে। নীলের দিকে এগিয়ে আসছে।
নীল– ইহহহহ লুচ্চা! বলে কোলবালিশ নিয়ে অন্য দিকে দিলো দৌঁড়।
অভ্র সেখানে দাঁড়িয়ে হাসছে।
তারপর দু’জনেই শুয়ে পরে নীল কোলবালিশ দু’জনের মাঝখানে রেখে দিছে।
নীল অন্য দিকে ঘুরে শুয়ে আছে অভ্র নীলের দিকে ঘুরে শুয়ে আছে।
অভ্র– নীল?
নীল– জী বলুন!
অভ্র– ঘুমাওনি?
নীল– হুম।
অভ্র– তো কথা বলছে কে তোমার ভূত নাকি?
নীল– হ্যাঁ….!
অভ্র– কিহ তোমার সাথে ভূত আছে?
নীল– হ্যা আছে আর একটা না ৭ / ৭ টা আছে।
অভ্র শুয়া থেকে একটু উঠে বসার মতো শুয়ে পরে।
অভ্র– আল্লাহ কি বলো?
নীল– হ্যা আর বেশি কথা বললে ৭টাই আপনার ঘাড় মটকে দিবে।
অভ্র– তাহলে তোমার থেকে বেঁচে থাকতে হবে।
নীল– ঠিক তাই।
অভ্র– তুমি বিয়ের আগে বলো নাই কেন তাহলে তোমাকে বিয়েই করতাম না।
নীল– তো কি হইছে এখনো দেরি হয় নাই। ছেড়ে দেন।
অভ্র এতক্ষণে ফানি মুডে থাকলেও এখন সিরিয়াস মুডে চলে আসে। নীলের হাত ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে।
অভ্র– যতক্ষন আমি বেঁচে থাকবো তোমাকে ছাড়বো না আর না তোমাকে ছাড়তে দেবো না তুমি শুধুই আমার তুমি চাইলেও আমার আর না চাইলেও আমার আর কখনো ভুলেও ছাড়ার কথা বলবে না। (কথা গুলো শেষ করেই অভ্র নীল এর হাত ছেড়ে দিয়ে অন্য দিকে ঘুরে শুয়ে পরে)
নীল অভ্রর দিকে তাকিয়ে আছে মানে অভ্রর পিঠের দিকে তাকিয়ে আছে কি বললো। সব মাথার উপর দিয়ে গেলো। ঠিক সেই ভাবে গুরুত্ব না দিয়ে নীল ও অন্য দিকে ঘুরে শুয়ে ঘুমিয়ে পরে।

পরের দিন সকালে___!
বিয়ের দিন___!
.
.
.

#চলবে …..?

রি-চেইক করা হয়নি ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন!
ভালো থাকবেন সবাই!
“হ্যাপি রিডিং”

“কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ” ❌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here