নিজের পরিচয়ে বাঁচতে চাই।( পর্ব–১৮)
কলমে– পারমিতা মন্ডল।
এভাবে থানায় অমৃতার সাথে দেখা হয়ে যাবে ভাবেনি সুজাতা। তাই কি পালিয়ে চলে এলো ? যে কাজে গিয়েছিল সেই কাজটা যে না করেই চলে গেলো। ধরা পড়ে গেছে বলে ? কি কাজ ছিল ওর থানায় ? আমাদের সামনে তো বলতেই পারতো। কেন এমন ভাবে চলে গেল অমৃতা ? মনে মনে ভাবে সুজাতা।
আমায় ভুল বুঝিস না সুজাতা । এ লড়াই আমার একার লড়াই। আমি চাই না তুই বা অন্য কেউ এর মধ্যে জড়িয়ে পড়িস ? আমি আস্তে আস্তে কেমন যেন জড়িয়ে পড়ছিলাম সব কিছুতেই। তোর সদ্য বিবাহিত জীবনও আমার জন্য এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল। তোর সাথে যোগাযোগ রাখলে তুই আমার পাশে না দাঁড়িয়ে পারতিস না। কিন্তু আমি চাইনি তুই এভাবে বারবার তোর সব কাজ ফেলে ছুটে আসিস আমার কাছে। প্রনীলদা খুব ভালো মানুষ। জানি রাগ করবে না। তোকে সহযোগীতাও করবে। তবুও আমি চাইনি তুই সব ফেলে এভাবে আমার পিছনে ছুটিস ।ক্ষমা করে দিস বন্ধু।
তাছাড়াও আরো অনেক কারন ছিল রে তোকে না বলে চল আসার। আমি মানষিক ভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলাম বুনির কথায় । আসলে আমিও তো রক্ত মাংসের মানুষ। কত অপমান সহ্য করা যায় বিনা কারনে ? রাতুলের মৃত্যুটা একটা আ্যকসিডেন্টে । সেখানে আমার কোন হাত ছিল না। তবুও অনেক কথা শুনতে হয়েছিল আমাকে। আসলে ভুলটা আমারই ছিল। যে সম্পর্ক ভেঙে চলে এসেছিলাম তার দিকে আর পিছন ফিরে তাকানো ঠিক হয়নি। কিন্তু মন যে কোন বারন শোনেনি। রাতুলের জন্য মনের কোনে কোথাও একটু জায়গা হয়তো ছিল। তাই ছুটে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমি ভুল ছিলাম। যে মানুষটা বেঁচে থাকতে আমাকে কোন সন্মান দেয়নি , তার জন্য মনের কোনে জায়গা রাখা ঠিক নয়। আর ওখানে থাকলে বারবার মনে পড়তো ওদের কথা । তাই মনকে শক্ত করে চলে এসেছি।
তারপর সৌহার্দ্যবাবুও আমার সাথে জড়িয়ে পড়ছিলেন। ওনাকে জড়িয়ে আমার সম্পর্কে পাঁচজনে পাঁচকথা বলছিল। যার একটাও ঠিক নয়। ওনার কাছে আমি ছোট হয়ে যাচ্ছিলাম। আবার ভেবে দেখলাম , একটি অবিবাহিত পুরুষ যদি সত্যিই সব সময় আমার সাথে ঘোরে তবে লোকে তো খারাপ বলতেই পারে। যেখানে আমি একজন ডিভোর্সী। সমাজে ডিভোর্সীদের এখনো ভালো চোখে দেখা হয়না। অনেকেই মনে করেন আমার মত ডিভোর্সীরা ছেলে ধরার জন্য ওত পেতে বসে থাকে।
আবার এভাবে ঘুরতে ঘুরতে কখনো যদি সৌহার্দ্যবাবু ভেবে বসেন যে আমি ওনাকে ভালোবাসি বলেই কাছে ডাকছি, সাহায্য চাইছি সেটাও খারাপ হতে পারে। কারন আমি দ্বিতীয়বার আর বিয়ে করবো না । আমার একমাত্র লক্ষ্য নিজের পায়ে দাঁড়ানো। নিজের পরিচয় তৈরী করা । আর সেটা তো আমি করবোই। কিন্তু একটা আফসোস রয়ে গেল জীবনে। রাতুল দেখে যেতে পারলো না। যাকে সব সময় অপদার্থ, অকাজের ঢেঁকি বলে এসেছিল এতোকাল রাতুল, আজ সে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে তার যোগ্য জবাব দেবে। আর বেশীদিন নেই । একদিকে রাতুল আমার উপকারই করেছে। ওর প্রতিটি অপমান জনক কথা চাবুকের মত বুঁকে বিঁধে বিঁধে আজ আমি ঘোড়ার মত ছুটছি।খাঁটি মানুষ হয়েছি। লড়াই করতে পারছি। নিজেকে প্রমাণ করার শক্তি পেয়েছি।
ভাবতে ভাবতে বাড়ির কাছে চলে আসে অমৃতা । হ্যাঁ, আজ এটাই তার বাড়ি। পরিযায়ী পাখির মত আজও তাকে বাসা বদল করতে হচ্ছে। মেয়েরা সত্যিই পরিযায়ী পাখি। তাদের নিজেদের কোন বাসস্থান হয়না। আমিও পারিনি এখনো কোন স্থায়ী ঠিকানা গড়ে তুলতে । তবে আর বেশিদিন মনে হয় অপেক্ষা করতে হবে না। এবার গড়বো নিজের স্থায়ী ঠিকানা। আর মেয়েরা পরিযায়ী পাখি হয়ে থাকবে না। বাবা, স্বামী আর ছেলের অধীনে নয়। নিজের পায়ে দাঁড়াতেই হবে মেয়েদের। তবেই আসবে সমাজের পরিবর্তন।
“দিদি তোমার এতো দেরী হলো কেন ? ম্যাডাম তোমাকে খুঁজছিলেন। জানোই তো উনি রাগী মানুষ। একটু তো বলে গেলেই পারতে। এতোক্ষণ বাইরে থাকবে ? আমি এটা ওটা বলে ম্যানেজ করেছি।”–বলে ছুটকি।
খুব ভালো কাজ করেছিস। এই না হলে আমার বোন ?, আসলে আমার এতো দেরী হবে আমিও বুঝতে পারিনি। একটি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলাম। আর ওনাকে বলে গেলে তো বেরতেই দিতেন না। চোখে মোটা চশমা এঁটে বলতেন ” দেখো অমৃতা , এখানের একটা নিয়ম আছে। যখন তখন কাউকে বাইরে বেরতে দিতে পারিনা। আশা করি তুমিও সেই নিয়ম মেনে চলবে।”
এমন ভঙ্গি করে বলল অমৃতা যে দুজনেই হো হো করে হেসে লুটিয়ে পড়লো একেবারে। আর ওদের হাসির আওয়াজে সেই রাগী ম্যাডাম এসে হাজির হলেন। সর্বনাশ ! এখন উপায় ?
“ছুটকি তাড়াতাড়ি চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়। নাহলে এখনই এসে হাজারটা প্রশ্ন জিঞ্জাসা করবেন। সুপার নয় তো যেন একেবারে লেডি দারোগা ?” বলে অমৃতা।
কি ভাবছেন ? অমৃতা এসব আবার পেলো কোথায় ? কোথায় রয়েছে সে ? লেখিকা কিসব ভুলভাল বকছে ? না ,না ভুল নয়। তবে বলি শুনুন।
অনেক দিন অমৃতাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা তো ধরেই নিয়ে ছিলাম সে মারা গেছে। সবাই যখন তার কথা ভুলতে বসেছে ঠিক তখনই তার আবির্ভাব। তাকে থানায় দেখা যায়।
সেদিন রাতুলদের বাড়ি থেকে তীব্র অপমানিত হয়ে এক মুহূর্তের জন্য অমৃতার মনে হয়েছিল এ জীবন আর রাখবে না সে। একটা মানুষ এতো লড়াই করতে পারে না। তাই এখানেই জীবনের ইতি টেনে দেবে। তাই মনে করে তার জমানো টাকা পয়সা ও কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাড়িওয়ালার নামে একটি চিঠি লিখে বেরিয়ে আসে অমৃতা। মনকে শান্ত করার জন্য পুজো দিতে যায় দক্ষিনেশ্বরের কালী মন্দিরে। ওখানে বসে ভাবে যদি আমি মরতেই চাই তাহলে তাহলে টাকা পয়সা কাগজ পত্র এসব নিয়ে এলাম কেন ? আমি তো খালি হাতে বেরিয়ে গঙ্গায় ঝা়ঁপ দিতে পারতাম অথবা রেল লাইনে গলা। সেসব না করে টাকা পয়সা নিয়ে বেরিয়েছি। তাহলে মন তো চায় না আমি মরে যাই । পৃথিবীর মায়া তো ছাড়তে পারছি না। আর কেনই বা মরবো ? কিছু মানুষের কিছু খারাপ আচরনের জন্য ? আমি মরে গেলেই কি তারা শুধরে যাবে ? যাবে না তো ? বরং আবার অন্য কারো মৃত্যুর কারন হবে। তার চেয়ে বেঁচে থেকে ওদের উপযুক্ত জবাব দিতে হবে।
তাছাড়া সেই প্রোমোটারকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। যে আমার কষ্টে উপার্জনের টাকা মেরে দিয়েছে। সেসব আদায় না করে আমি ময়দান ছেড়ে পালিয়ে যাবো ? এতো ভীতু তো আমি নয়। আমাকে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। কিন্তু এবার অন্য উপায়ে । একটু গা ঢাকা দিয়ে আড়াল থেকে লড়তে হবে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো হাতে তেমন টাকা পয়সাও নেই। ঘরভাড়া দিয়ে ওখানে আর ফিরে যেতে মন চাইছে না। কি করি এখন ?
পুজো দিয়ে মন্দিরে প্রসাদ খেয়ে নেয় অমৃতা। কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে । এবার তাকে উঠতে হবে। কিন্তু মন যেন কিছুতেই সায় দিচ্ছে না ঐ চেনা পরিবেশে ফিরে যেতে। ওকে এভাবে বসে থাকতে দেখে মন্দির কতৃপক্ষের নজরে পড়ে। এখানে যেমন অনেক ভিক্ষারী থাকে ভবঘুরে থাকে তেমনি কোন উগ্রপন্থী সিকিউরিটির চোখ এড়িয়ে ঢুকে পড়াও অস্বাভাবিক নয়। তাই পাহারাদারের চোখে পড়ে। কারন অমৃতাকে দেখে ভিখারি বা ভবঘুরে মনে হয়নি। বেশ ভালো ঘরের মেয়ে মনে হয়েছে। কিন্তু উদ্দেশ্যহীন ভাবে বসে থাকার অর্থ তারা খুঁজে পায়নি। তাই ডেকে পাঠানো হয় মন্দিরের অফিসে।
তারা অমৃতার সব কথা শুনে এই আশ্রমে পাঠিয়ে দেয়। যেখানে অনাথ মেয়েরা থাকে। এটি রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন। এখানে অনাথ মেয়েদের বিভিন্ন রকম কোর্স করিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। হাতে কলমে অনেক কাজ শেখানো হয়। এখানে খুব অল্পদিনের মধ্যে অমৃতা সবার প্রিয় হয়ে যায়। এখানে ছোট ছোট অনাথ ছেলে মেয়েরাও থাকে। অমৃতা নিজের অজান্তে তাদের যেন মা হয়ে ওঠে। এই অল্প সময়ের মধ্যে। আসলে ভিতরে তো একটা মাতৃত্বের ক্ষিদে ছিলই। এখানে এসে সেটা আরো বেড়ে যায়। সবাই অমৃতাকে খুব ভালো বাসে। আর এখানের সুপার ম্যাডাম খুব রাগী। কিন্তু এটাও ওনার মুখোশ। একটু শক্ত না হলে এতোগুলো মেয়েকে সামলানো বড় কষ্ট হয়ে পড়ে।
এখানে এসে অমৃতা খুব খুশি। থাকা খাওয়ার জন্য চিন্তা এই মুহূর্তে আর করতে হচ্ছে না। তাই মনের মধ্যে যে ইচ্ছাটা ছিল সেটাই আবার জেগে ওঠে। জীবনে তার এতো ওঠাপড়া গেছে যে , সে এটা বুঝতে পেরেছে শিক্ষার বিকল্প কিছু নেই। আজ যদি সে আরো লেখাপড়া জানতো তবে যে কোন একটা কাজ যোগাড় করা তার পক্ষে অনেক সহজ হতো। কিন্তু সে তো গ্রাজুয়েশনই কমপ্লিট করেনি। তাই এখানে যখন লেখাপড়ার সুযোগ মিলে গেল তখন অমৃতা আবার ভর্তি হলো গ্রাজুয়েশনে। ডিসট্যান্সে পড়াশোনা করবে আর দিনের বেলায় কাজ করবে। আশ্রম থেকে অমৃতাকে পারমিশন দেওয়া হয়। কিন্তু বহুদিন লেখাপড়া থেকে দূরে থাকার ফলে পড়াশোনা করতে খুব অসুবিধা হয়। তার থেকে বড় কথা এখন বয়স হয়ে গেছে অনেক। কিছুই মনে থাকে না ।মনের মধ্যে হাজারটা চিন্তা। আবার ভাবে এই বয়সে বি এ পাশ করে কি আর হবে ? চাকরির বয়স তো চলে গেছে।
তবুও মনের অদম্য ইচ্ছা নিয়ে আবার নতুন ভাবে শুরু করে অমৃতা। তবে তার এই নতুন ঠিকানা একজনই জানতো। তিনি হলেন আগের বৃদ্ধাশ্রমের রমাদি ।তাকে সব বলা ছিল শুধুমাত্র প্রতিমাদেবীর জন্য । কারন এতোকিছুর পরেও অমৃতা তার বিবেককে বিসর্জন দিতে পারেনি। যে শাশুড়িমার জন্য সে ঘর ছাড়া, স্বামী ছাড়া সেই শাশুড়ির অসহায় অবস্থায় তার প্রতি ভালোবাসা নাথাকাটাই স্বাভাবিক । কিন্তু অমৃতা ভুলতে পারেনা একজন বৃদ্ধা অসহায় মানুষের আকুতি। সে জানতো বুনি ওনাকে নিয়ে যাবে না। বাড়িটাও বিক্রি করে দেবে যেভাবেই হোক। আর ওনাকে জোর করে ঐ আশ্রমে আবার পাঠিয়ে দেবে। তাই অমৃতা লুকিয়ে রমাদিকে দিয়ে আশ্রমের কতৃপক্ষের সাথে কথা বলায়। ওদের বলে বাড়িটা কিনে নিতে। যদি সামর্থ থাকতো তবে অমৃতাই কিনে নিতো। কারন ঐ বাড়িতে তার ও অনেক স্মৃতি পড়ে আছে। যাইহোক অবশেষে অমৃতা সফল হয়। আশ্রম কতৃপক্ষ বাড়িটা কিনে নেয়। আর প্রতিমা দেবীকেও নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে হয় না।
এইসব কাজের জন্য তাকে গা ঢাকা দিতে হয়েছিল। অন্যদিকে টাকা মেরে দেওয়া প্রমোটর যখন দেখলো অমৃতা থেমে গেছে। আর তাকে খুঁজছে না । বা এখানে দেখাও যাচ্ছে না। তখনই সে তার গোপন ডেরা থেকে বেরিয়ে আসে। ঘুরতে থাকে সবার সামনে। মনে মনে ভাবে বিপদ কেটে গেছে। আর ঠিক তখনই তাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে তার গোপন ডেরার খোঁজ নিয়ে দেখা করতে গিয়েছিল থানায় বড়বাবুর সাথে। এর আগে অনেকবার অভিযোগ করলেও কেউ গুরুত্ব দিয়ে কেসটা দেখেনি। তাই এবার সরাসরি সে বড়বাবুর সাথে কথা বলতে চেয়েছিল। কিন্তু ওখানে যে এভাবে সুজাতা আর সৌহার্দ্যবাবু চলে আসবে ভাবতে পারেনি অমৃতা। তাই তো তাড়াতাড়ি পালিয়ে আসতে গিয়ে যে কাজে থানায় গিয়েছিল সে কাজ না করেই ফিরে আসে সে। বড় ভুল হয়ে গেল। আবার একদিন যেতে হবে।
জীবনটা এবার একটু স্থির হয়েছে। এবার চেষ্টা করতে হবে আবার নতুন ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে। আশ্রমের এই নির্মল পরিবেশে আর ছোট ছোট বাচ্চাদের সান্নিধ্যে অমৃতা আজ অন্য মানুষ। সে চেষ্টা করছে তার উপর হওয়া সব অন্যায় ভুলে গিয়ে নতুন ভাবে জীবন শুরু করতে। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে তার পিছু ছাড়ছে না কিছুতেই।
এতোদিন অমৃতা মোবাইলের সিমটাও বদলে ফেলেছিল। কেউ ফোন করলে পেতো না। শুধু রমাদির সাথে ফোন করার সময় পুরনো সিমটা ব্যবহার করতো। আজ আবার পুরনো সিমটা ভরলো অনেকদিন পর। একটু ফোন করি রমাদিকে এই ভেবে। কিন্তু সিম ভরতেই সুজাতার ফোন নাম্বার ভেসে উঠলো। পনেরোটা মিস কল। তারপর একটি মেসেজ।” ভীষণ জরুরী দরকার। প্লিজ একবার ফোন কর। না হলে সারা জীবনের জন্য আফসোস করবি। ”
কি হলো আবার সুজাতার ? প্রনীলদার কিছু হয়নি তো ?কিসের কথা বলছে সুজাতা ? ওর কি খুব বিপদ ? জানতে চোখ রাখুন আগামী পর্বে।
চলবে—-
All rights are reserved by paramita mandal.