#সুখের_নেশায়
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব___৩১
চামচের টুংটাং শব্দ কর্ণ গহ্বরে পৌঁছাতেই সাফারাত এর তুখোড়, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি অনুসরণ করে চৈত্রিকা সামনে তাকায়। চোখে পড়ে জেরিন এবং ফর্সা বর্ণের স্বাস্থ্যবান একজন মহিলা। ধুপধাপ আওয়াজ তুলে ওদের দিকেই এগিয়ে আসছে। আকস্মিক জেরিনের এমন করে আগমন চৈত্রিকার ঠিক মনে হলো না। হুট করে মনে পড়ে যায় সেদিন গোধূলি লগ্নের কথা। জেরিন কত খারাপ ভাবে হেনস্তা করতে চেয়েছিল ওকে।
‘ খাচ্ছেন না কেন চৈত্র? ‘
লহু স্বরের প্রশ্ন শুনতে পেয়ে চৈত্রিকা ঘাবড়ে যায় কিঞ্চিৎ,সামান্য। সাফারাতের দিকে তাকালো চমকিত নয়নে জোড়া নিয়ে৷ সাফারাত এই দৃষ্টির মানে বুঝে নেয়। গম্ভীর স্বরে বলে উঠল,
‘ চমকানো বন্ধ করে খাবার খান চৈত্র। কে আসল না আসল তা দেখতে গিয়ে খাবার ঠান্ডা বানিয়ে ফেলছেন আপনি। রিলেক্সে খাবার টা শেষ করুন। ‘
চৈত্রিকার ভ্রুঁ যুগল কুঁচকে এলো। সাফারাতের মতোন নির্পিল্ত অভিব্যক্তির মানুষ ও খুব কমই দেখেছে। মুখে এক লোকমা পুড়তেই জেরিন ও তার মা উপস্থিত হয় ডাইনিং টেবিলের সামনে। সুফিয়া বেগম মেয়ে ও নাতনীকে এই মুহুর্তে এখানে দেখে প্রচন্ড অবাক হন। চেয়ার ছেড়ে উঠতে নিলে মৌসুমি অর্থাৎ জেরিনের মা বাঁধা প্রদান করে। গমগমে স্বরে বললেন,
‘ উঠার প্রয়োজন নেই মা। ‘
‘ খেয়ে এসেছেন বলে মনে হয় না ফুপু। প্লিজ সিট এন্ড জয়েন আস। ‘
দুর্বোধ্য হেসে বলে উঠল সাফারাত। মৌসুমি চেয়ার টেনে বসে পড়লেন মেয়েকে নিয়ে। জেরিন আঁড়চোখে তাকায় চৈত্রিকার দিকে সাফারাতের দৃষ্টি এড়িয়ে। অলক্ষ্য অগোচরে। চোখে মুখে অজস্র ক্রুদ্ধতা ফুটে উঠে তার সঙ্গে সঙ্গে। দুই দু’বার এই মেয়ের জন্য ওকে অপমানিত হতে হয়েছে সাফারাতের নিকট। চৈত্রিকাকে দেখলেই জেরিনের ওকে খু/ন করার ইচ্ছে জাগ্রত হয়।
খাওয়ার পর্ব চুকিয়ে মৌসুমি ও জেরিন সকলের সাথে ড্রইং রুমে আসে। ফাহমিদা ইতমধ্যে বুঝেছেন মৌসুমি সাফারাতের বড় ফুপু। সুফিয়া বেগমও উনার মেয়ের পরিচয় বললেন। আগ বাড়িয়ে ফাহমিদা জিজ্ঞেস করলেন,
‘ কেমন আছেন আপা?’
তীর্যক দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন মৌসুমি। ফাহমিদার কথার জবাব তো দিলেনই না উল্টো মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এতে বেশ কষ্ট অনুভব করে ফাহমিদা সহ চৈত্রিকা ও মিম। সুফিয়া ও প্রিয়ন্তী বাকি সকলের মুখে থমথমে। সুফিয়া বেগম ভাবেন নি মেয়ে এমন ব্যবহার করবেন। তখনই শোনা গেল সাফারাতের রোষপূর্ণ,ধারালো, গম্ভীর কন্ঠস্বর।
‘ কারো কথার পৃষ্ঠে জবাব না দেওয়াকে অভদ্রতা বলে। তুমি কি ফুপু কে ভদ্রতা শিখাতে পারো নি দাদি?নাকি তোমার দেওয়া শিক্ষা অতিক্রম করে উনি অতি শিক্ষিত এর তকমা পেয়েছেন?’
সাফারাতের কন্ঠে রাগ,ক্রুদ্ধতা। নিমিষেই কালো আঁধার নেমে আসে মৌসুমির মুখবিবরে,চেহারায়। তিনি প্রশ্ন করলেন,
‘ তুৃমি নাকি বিয়ে করে ফেলেছো?’
‘ হ্যাঁ। আপনি যার সাথে কথা বলেন নি তিনি আমার শাশুড়ী। বাই দ্যা ওয়ে শুনলেন কিভাবে?’
‘ কথা পাঁচ কান হতে সময় নেয় নাকি?’
‘ বাড়ির সদস্য যদি পাঁচ কান করে তাহলে সময়ের প্রশ্নই আসে না।–প্রিয়ন্তীর মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে উঠল সাফারাত।
কথাটা শুনেই চাচীর প্রায় মুখ লুকানোর উপক্রম। তিনিই বলেছেন মৌসুমি বেগম কে ফোন দিয়ে সবটা। তাছাড়া এটাও বলেছেন সুফিয়া বেগম জেরিনের সাথে সাফারাত এর বিয়ের কথা দিয়ে কি করে চৈত্রিকার মতো নিম্ন পরিবারের একটা মেয়েকে নাতবউ হিসেবে মেনে নেন?আগুনে ঘি ঢালার কাজ টা বেশ দক্ষ ভাবেই সম্পন্ন করেছেন তিনি।
‘ বাহিরের মানুষের সামনে এভাবে না বললেই হয় না?’
‘ বাহিরের কেউ নেই। আমার শাশুড়ী, বউ,শালী সবই আমার আপনজন। স্যরি টু সে,রক্তের সম্পর্কের হয়েও আপনি সেই আপনজন হতে পারেন নি। ‘
ফাহমিদার মনে হচ্ছে মৌসুমি বিশেষ পছন্দ করছেন না উনাদের উপস্থিতি এখানে। তাই তিনি তাড়া দিয়ে বললেন,
‘ আমাদের এখন ফিরতে হবে। পরশু তো আপনারা যাবেনই। আজ তাহলে আসি আমরা। ‘
না চাইতেও সায় দেন সুফিয়া বেগম। কারণ উনাদের সামনে পরিবারের কোনো ধরনের রং তামাশা চাইছেন না উনি। সাফারাত অনিমেষ নেত্রে চেয়ে থাকে চৈত্রিকার মুখের দিকে। মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে ঠিক পুতুলের ন্যায়। ফাহমিদা সবার কাছ থেকে বিদায় নিলেন। চৈত্রিকা সাফারাতের কাছে গিয়ে ছোট্ট করে বললো,
‘ আসি। ‘
তার এই ছোট্ট কথার জবাবে প্রতিউত্তর করলো না সাফারাত। উল্টো ফাহমিদার সাথে টুকটাক কথা বলে ব্যস্ত পায়ে উপরে চলে গেল। চৈত্রিকা থমকালো। তব্দা খেয়ে গেল। এই লোক একটু আগে নিজের ফুপু কে কথার জবাব না দেওয়ার ফলে বলছিল এটা অভদ্রতা অথচ এখন নিজেই কিছুই বললো না। ও অবশ্য কোনো প্রশ্ন করে নি ছোট্ট করে আসি বলেছে। এই ছোট্ট কথাটা বুঝি সাফারাতের শ্রবণ হয় নি?নাকি সে ও অভদ্র?
বাহিরে এসে গাড়িতে উঠতে নিলেই চোখ দুটো আপনা আপনি সাফারাত এর বেলকনিতে চলে যায়। রেলিংয়ে দু হাত রেখে নির্নিমেষ চেয়ে আছে সাফারাত। দৃষ্টি স্থির। চৈত্রিকার সারা শরীর জুড়ে হিম শীতল পবন ছুঁয়ে যায়। কেন যেন মনে হচ্ছে ওর চলে যাওয়া টা বিশেষ পছন্দ হচ্ছে না সাফারাত এর। চৈত্রিকা চোখ সরিয়ে ঝটপট দিহানের গাড়িতে বসে পড়ে।
.
.
রাগে ফুঁসছেন মৌসুমি। জেরিন ভাবলেশহীন হয়ে বসে মা ও নানীর কার্যকলাপ দেখে যাচ্ছে। কারণ ফুটন্ত তেলে পানি ঢালার কাজটা ও করে ফেলেছে। এখন শুধু ছ্যাৎ করে উঠবার পালা। একটু আগেই সুফিয়া বেগমের রুমে এসে উনার কোলে মাথা রেখে হাউমাউ করে কেঁদেছে জেরিন। সাফারাত কে ও ভালোবাসে। সাফারাতকে ছাড়া বাঁচবে না এসব বলে এক নাগাড়ে কাঁদতে থাকে। সুফিয়া বেগম মেয়ের হাত ধরে পাশে বসালেন। রুমের দরজা টা লাগিয়ে এসে কন্ঠে মলিনতা এঁটে বলে উঠলেন,
‘ দেখ যা হবার হয়ে গিয়েছে। আমি তো চেয়েছি জেরিন কে সাফারাতের বউ করতে। কিন্তু ওর নিজস্ব চাওয়া,মতামত আছে। ও কোনোদিনই আমাদের উপর নির্ভরশীল ছিল না। তাই আমরাও ওর উপর কোনো মতামত চাপিয়ে দিতে পারব না। ওর সামনে নিজেদের আর খারাপ প্রমাণ করিস না মা। ভুলে যাস না ওর মাধ্যমেই আজ উঁচু মানের চলাফেরা করতে পারছিস। সাফারাত যদি জামাইকে বিজনেসে টাকা দিয়ে হেল্প না করত তাহলে আজ রাস্তায় নামতে হতো তোর ছেলেমেয়ে নিয়ে। তাই যা হয়েছে মেনে নে। জেরিনকে আমি অনেক ভালো জায়গায় বিয়ে দিব। ‘
মৌসুমি বেগম কিয়ৎক্ষণ ভাবলেন। এটা সত্যি আজ সাফারাতের কারণেই উনাদের রাস্তায় নামতে হয় নি। প্রায় দু’বছর আগে উনার স্বামীর ব্যবসায় প্রচুর লসের দেখা মিলেছিল। ব্যাংক থেকে আনা লোনও পরিশোধ করতে পারছিলেন না। সাফারাতই তখন সাহায্য করে। আপাতত মায়ের কথায় সায় মিলালেন তিনি। জেরিন কটমট চোখে তাকায় মায়ের দিক। সুফিয়া বেগম চামড়া কুঁচকে যাওয়া মুখে হাসি ফুটিয়ে বেরিয়ে যেতেই মৌসুমি বলে উঠলেন,
‘ রাগিস না। সায় জানিয়েছি, নিজেদের লক্ষ্য ছাড়ি নি। তুই চেষ্টায় লেগে থাক। পুরুষ মানুষ একদিন না একদিন তো কাবু হবেই। ‘
জেরিন বাঁকা হেসে প্রতুত্তর করে,
‘ হবে না মা। সাফারাত এহমাদ ওই ফালতু মেয়ের জন্য উম্মাদ,পাগল। ‘
মৌসুমি অধর কোণ বাঁকিয়ে বললেন,
‘ পাগলও সুস্থ হয়। মন বদল হতে কতক্ষণ! ‘
________________
মধ্যরাতের প্রহর। হুট করে চৈত্রিকার ঘুম ছুটে যায়। প্রচন্ড শব্দে শোয়া থেকে লাফিয়ে উঠল তড়িৎ গতিতে। পাশে চেয়ে দেখে মিম ঘুম ঘুম চোখে মোবাইল ধরে আছে হাতে। মোবাইল বেজে থেমে যায় একবার। কিছু সেকেন্ডের জন্য থামলেও পুরো উদ্যমে বেজে উঠে আবারও,পুনর্বার। চৈত্রিকা বুকে হাত রেখে রাগান্বিত চোখে তাকায় মিমের দিক। মিম নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে বলে উঠল,
‘ আমাকে চোখ রাঙাও কেন আপু?আমি তোমার ঘুম ভাঙ্গি নি। তোমার ভাঙা মোবাইল কি আবারও পটল তুলেছে? ভাইয়া কল দিয়ে বন্ধ পাচ্ছে বিধায় আমাকে কল দিয়ে বললো তোমাকে যেন জাগিয়ে দেয়। নাও ধরো। ‘
এই বলে নিজের মোবাইল চৈত্রিকার হাতে ধরিয়ে গটগট পায়ে রুম হতে প্রস্থান করে মিম। চৈত্রিকা বালিশের নিচ থেকে নিজের ভাঙা মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখি সত্যিই এবার এটা চিরতরে হারিয়ে গিয়েছে। অল্প সল্প কষ্ট অনুভব করল চৈত্রিকা। তার অনেক বছরের সঙ্গী ছিল ছোট্ট এই বাটন ফোন। মিমের মোবাইল টা পুনরায় বেজে উঠতেই রিসিভ করে নেয় বিলম্ব না করে।
‘ আমি আপনাদের বিল্ডিং এর সামনে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছি। দারোয়ান কিছু বলবেন না কারণ উনি জানেন আমি আপনার হাসবেন্ড। জলদি নিচে আসুন। অর্ধ রাত্রি নির্ঘুম কেটে গেল আপনাকে দেখার আশায়। ‘
চৈত্রিকাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সাফারাত কল কেটে দেয়। একদম বুঝে পায় না চৈত্রিকা সাফারাত এমন কেন?সবসময় মধ্য রাতে এসে হাজির হয়। তাও বিনা বার্তায়। ঘড়ির কাটা বরাবর দুইটার ঘরে। শরীরের কুঁচকানো জামা টা ঠিক করে মাথায় সুতি ওড়না চাপায় চৈত্রিকা। মিমের ঘরে উঁকি দিয়ে মিহি গলায় বললো,
‘ আমি একটু নিচে যাচ্ছি মিমু।’
‘ ঠিক আছে। ‘
গেইটের কাছে আসতেই দেখল দারোয়ান আগে থেকেই গেইট খোলা রেখেছে। ধীরস্থির ভঙ্গিতে হেঁটে দূরে দাঁড়ানো কালো গাড়িটার সামনে উপস্থিত হতেই এক পাশের দরজা মেলে দেয় সাফারাত ভিতর থেকে। চৈত্রিকা ভিতরে গিয়ে বসতেই সাফারাত সোজা হয়ে বসে। চোখ দুটো ফুলে আছে তার। গাড়ির মৃদু আলোতে চৈত্রিকা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে টকটকে লাল নেত্রযুগল। লাল বর্ণের এই চক্ষুদ্বয় নিঃসন্দেহে সাফারাতের নির্ঘুম রাতের সাক্ষী। চৈত্রিকা বিহ্বল দৃষ্টিতে চেয়ে অতি ক্ষীণ ও নিচু স্বরে প্রশ্ন করলো,
‘ আপনি হঠাৎ এখানে কেন?’
‘ আপনাকে দেখতে ইচ্ছে করছিল তাই। ‘
সাদামাটা,নির্ভেজাল উত্তর সাফারাত এর। চৈত্রিকা ফিরিয়ে আর প্রশ্ন করবার সাহস পেল না। সাফারাত পিছনের সিট থেকে হাত বাড়িয়ে একটা বক্স এনে চৈত্রিকার হাতে তুলে দিল। চৈত্রিকা আখিঁপল্লব ঝাঁকিয়ে তাকাতেই দেখে এটা একটা মোবাইলের বক্স।
‘ মোবাইল কেন?’
‘ আপনার জন্য। ‘
‘ আমার লাগবে না। ‘
‘ আমার লাগবে। শালী সাহেবা কে বাকি এক দিন তো ফোন দিয়ে ডিস্টার্ভ করা পসিবল না আমার পক্ষে। ‘
এক দিন?ওহ হ্যাঁ চৈত্রিকা ছোট এই বিল্ডিংয়ে মা,বোন ও বাবার স্মৃতি নিয়ে আর একটা দিন থাকবে কেবল। তারপর সাফারাতের বাড়িতেই থাকতে হবে সারাজীবন।
‘ কিন্তু এটা তো আই ফোন। আমি তো কখনও টাচ মোবাইল চালায় নি। আর এতো দামি মোবাইল আমার পক্ষে চালানো সম্ভব না। ‘
চৈত্রিকার কম্পনরত কন্ঠে সহজ সরল স্বীকারোক্তি শুনে বিরক্ত হলো সাফারাত। বলা নেই কওয়া নেই অকস্মাৎ সুপুষ্ট শক্ত হাতে চৈত্রিকার কোমল দেহ টা টেনে এনে নিজের প্রশস্ত বক্ষে বেঁধে নেয়। তিরতির করা ঠোঁট দুটো তে ছুঁয়ে দিতে থাকে সাফারাত নিজের অধর যুগল। ক্রমশ গভীর হয় ঠোঁটের আলিঙ্গন। চৈত্রিকার হৃদযন্ত্র বন্ধ হওয়ার জোগাড়। শ্বাসরদ্ধকর অবস্থা। মোবাইলের বক্স টা শক্ত হাতে চেপে ধরে ও। কিছু সময় বাদে সাফারাত ছেড়ে দেয়। রাশভারি গলায় বলে,
‘ আপনি কি এতে অভ্যস্ত ছিলেন পূর্বে?ছিলেন না। আস্তে আস্তে হবেন। তেমনি মোবাইল চালানো টাও অভ্যেসে পরিণত হবে। ‘
চৈত্রিকার বুকে বজ্রপাত হলো যেন। কি করে থামাবে ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গের শিউরে উঠা?বিমূঢ়তায় বাক হারা প্রায় মেয়েটা। উদাহরণ দেওয়ার জন্য সাফারাত এই পদ্ধতি টাই খুঁজে পেল?মাথা টা ভীষণ ফাঁকা ফাঁকা লাগছে ওর। সাফারাত দুই গালে হাত রেখে কপালে ওষ্ঠের পরশ আঁকে। চৈত্রিকা যেন এখনও ঘোরের মাঝে। রাত বিরেতে হঠাৎ হামলা হৃদয়স্থের হৃদস্পন্দন বেসামাল করে তুলেছে।
‘ সাবধানে যাবেন৷ ঘুম পেয়েছে । বাসায় গিয়ে ঘুমাবো। ‘
চৈত্রিকা কিংকর্তব্যবিমুঢ়!একটু আগেই বলছিল ওকে দেখা ছাড়া ঘুম আসছে না এখন আবার ঘুমানোর তাড়া। গাড়ি থেকে নেমে জানালা দিয়ে ঝুঁকে রিনঝিনে স্বরে বলে উঠল,
‘ বাসায় পৌঁছে একটা কল দিবেন। ‘
সাফারাত মাথা নাড়ায়। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে,
‘ আপনার নাম টা পার্ফেক্ট ও সার্থক চৈত্র। ‘
তৎপরে চৈত্রিকার দিক গাঢ় দৃষ্টি মেলে বললো,
‘চৈত্র মাসের অসহনীয় রোদ্দুরে কঠিন ভাবে তৃষ্ণার্ত আমি। ‘
#চলবে,,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)