#সুখের_নেশায়
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব___৩৫
চৈত্রিকা চুপিসারে রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিল। মাথা থেকে শাড়ির আঁচল ফেলে অগ্রসর হলো সে বারান্দার দিকে। এই মুহুর্তে সাফারাতের সামনে থাকা যাবে না। হাত টার অবস্থা বেশ খারাপ। জ্বলন হচ্ছে তীব্র হতে তীব্রতর। ফর্সা মুখবিবর, চোখ, নাক কান্নার দরুন ফুলেফেঁপে,লাল হয়ে একাকার। চুল থেকে এখনও ফোঁটায় ফোঁটায় পানি ঝরছে। শাড়ির লম্বা আঁচল কিঞ্চিৎ মেঝে স্পর্শ করে চলেছে হাঁটার তালে তালে। জীবনের কঠিন পরিস্থিতি বুঝে উঠার পর অনেক ভেঙেছে চৈত্রিকা ভিতরে ভিতরে। আত্মচিৎকার করে বেড়িয়েছে অন্তর,মন। যার হিসেব সে কোনো কালে রাখে নি। সইতে সইতে কঠোর হয়েছে। সহ্যশক্তি অপার ওর। কিন্তু নিজের অভ্যন্তরে দমিয়ে রাখা নরম মনটা কাঁদে নিরবে,নিঃশব্দে।
বেলকনিতে দাঁড়াতেই সকালের স্নিগ্ধ বাতাস পুরো কায়া ছুঁয়ে দিচ্ছে অনবরত, বিরতিহীন। বাতাস যেন চৈত্রিকার মনের দুঃখ নিজের দখলে কেঁড়ে নেবার আপ্রাণ প্রয়াসে নিমগ্ন। চৈত্রিকা চায় নিজের জীবনের সকল কষ্ট উজার করে দিতে। ভারী নিঃশ্বাস বহন করে বেঁচে থাকা দুর্বিষহ হয়ে উঠছে দিনকে দিন।
‘ কি ভাবছেন আপনি?’
আচানক পাশ থেকে গম্ভীর কন্ঠধ্বনি কর্ণপাত হতেই চৈত্রিকার দেহের সর্বাঙ্গে কাঁপুনি ধরে যায়। স্থায়িত্ব বেশিক্ষণ হয় নি। তবে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া অত্যন্ত অস্বাভাবিক। পুড়ে যাওয়া হাত টা ঝটপট শাড়ির নিচে লুকিয়ে ফেলল কায়দা করে। নয়ত সাফারাতের দৃষ্টি পড়ে যাবে এতে। তারপর কি হবে বা কি ঘটবে তার জানা নেই। কিন্তু তার জন্য সম্পর্কে ফাটল ধরবে নিশ্চয়ই?সম্পর্কে দূরত্ব কতটা কষ্ট বয়ে আনে জীবনে তা চৈত্রিকা ভালো করে জানে। তাই চায় না সাফারাতের সাথে তার ফুপুর সম্পর্ক নষ্ট হোক। নিজেকে সামলে নিয়ে উত্তর দিল,
‘ কই কিছু না। আপনি ঘুমোন নি?’
‘ শাড়ির নিচে হাত লুকালেন কেন?আপনার চোখ মুখ এভাবে ফোলার কারণ?আপনি কান্না করেছেন?’
সাফারাতের রোষপূর্ণ কন্ঠে চৈত্রিকার বুকটা ভয়ে কেঁপে উঠল। নত মস্তকে হাতের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই দেখতে পায় হাত মুঠো করে রেখেছে সাফারাত। চোখ জোড়া লাল,রক্তিম। হঠাৎ এমন কেন করছে?এত রাগ কেন দেখাচ্ছে?
‘ হাত কেন লুকাতে যাবো?কি হয়েছে আপনার?’
হাত টা টেনে শাড়ির নিচ থেকে বের করে আনল সাফারাত। পুড়ে যাওয়া স্থানে একটুখানি লাগতেই চৈত্রিকা নিজেকে ধাতস্থ রাখতে পারল না। জ্বলনে মৃদু চিল্লিয়ে উঠলো ও চোখ মুখ কুঁচকে। হাত টা সামনে এনে হতভম্ব হয়ে যায় সাফারাত। ফর্সা চামড়ায় লালের আস্তরণ। পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন স্পষ্ট। সাফারাত দ্রুত কোলে তুলে নিল ওকে। হুট করে এমন করায় বিমূঢ়তায় বাকহারা চৈত্রিকা। কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই সাফারাত বড় বড় পা ফেলে সিঁড়ি ভেঙে ওকে কোলে করে নিচে নিয়ে এলো। ড্রইং রুমে উপস্থিত মৌসুমি,মিনা,সুফিয়া সবাইকে এড়িয়ে বাড়ির বাহিরে এনে গাড়িতে বসিয়ে দিল চৈত্রিকাকে। প্রিয়ন্তী পিছন পিছন দৌড়ে এলো। জোর গলায় ডেকে উঠল,
‘ কি হয়েছে ভাইয়া?ভাবী কে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো?’
‘ হসপিটালে। ‘
সাফারাতের নির্লিপ্ত জবাব শুনে চক্ষু বৃহদাকার ধারণ করলো চৈত্রিকা ও প্রিয়ন্তী উভয়েরই। প্রিয়ন্তী হ্যাবলাকান্তের ন্যায় চৈত্রিকার দিকে এক পলক তাকিয়ে সাফারাতের দিকে চেয়ে মৌনতা ভাঙল। অবাক স্বরে প্রশ্ন করলো,
‘ কেন? ‘
‘ তোর ভাবী আমার হৃদপিণ্ড জ্বালিয়ে দিয়েছে তাই। ‘
সোজাসাপ্টা উত্তর দিয়ে গাড়িতে বসে পড়ল সাফারাত। ড্রাইভিং করতে করতে চৈত্রিকার দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ রেডি থাকুন জবাবদিহিতা করতে। ‘
‘ কিসের জন্য? আর এই একটুখানি পুড়ার জন্য আমার ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। বাড়িতে চলুন। সবাই কি ভাবছে?এভাবে সবার সামনে দিয়ে কোলে করে নিয়ে আসলেন?ছিঃ!’
সাফারাত এক হাতে নিজের ভেজা চুলগুলো পিছনের দিকে ঠেলে দেয়। দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
‘ ছিঃ! এর কি আছে চৈত্র? কোলে নিয়েছি। সবার সামনে কিস তো করি নি। এটা আমি বদ্ধ রুমেই করবো। অস্থির হলে নিজের উপর কন্ট্রোল রাখতে পারব না। তাই বদ্ধ রুমই সেফ। ‘
সাফারাতের কথা শুনে কান দিয়ে গরম ধোঁয়া বের হচ্ছে চৈত্রিকার। উদ্ভ্রান্তের ন্যায় ছোটাছুটি করছে বেহায়া অনুভূতিরা। মনে থাকলে ও আর কখনও এমন কিছু বলতে যাবে না সাফারাতকে। লাল বর্ণে ছেয়ে থাকা মুখ আরো রক্তিম হয়ে উঠেছে। নিয়ন্ত্রণহীন বক্ষস্পন্দন। না জানি ঠিক কখন স্বাভাবিক হয়!
গাড়ি থামে হসপিটালের সামনে। সাফারাত গাড়ির দরজা মেলে দিতেই চৈত্রিকা দ্রুত পায়ে নেমে পড়ে। বলা তো যায় না যদি আবারো কোলে নিয়ে বসে?সাফারাতের পিছু পিছু হসপিটালে ঢুকে পড়লো। সকাল হলেও হাসপাতালের করিডোর জুড়ে মানুষের গিজগিজ। রিসিপশনে কথা বলে একজন মহিলা ডাক্তার এর সিরিয়াল কাটে সাফারাত। কিন্তু ওনাকে দেখাতে দেখাতে লেট হয়ে যাবে। মেয়েটা বলেছিল একজন পুরুষ ডাক্তার এখন ফ্রি আছে গেলেই দেখাতে পারবে তৎক্ষনাৎ তবুও সাফারাত নারাজ। কোনো পুরুষ ডাক্তার দেখাবে না ও। যেই মহিলা ডাক্তার এভেইলেবল আছেন এই মুহুর্তে ওনার কাছেই যেন এখন দেখানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। মেয়েটা বাধ্য হয়ে শেষমেশ ওদের সিরিয়াল ইমারজেন্সি বলে সামনে দেয়। একপাশে জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে চৈত্রিকা কেবল দেখেই গেল। সবসময়কার মতো করে আজও এক ভিন্ন সাফারাত দেখতে পাচ্ছে সে। অদ্ভুত তার ব্যবহার। অত্যাধিক পসেসিভ যেন। সামান্য একটু হাত জ্বলেছে এতেই তার কত অস্থিরতা,কত ব্যাকুলতা!
ডাক্তার চৈত্রিকার হাত টা পর্যবেক্ষণ করে বললেন,’ তেমন একটা খারাপ অবস্থা হয় নি। কিভাবে পুড়লেন? ‘
চৈত্রিকা মিনমিনে স্বরে জবাব দিল,’ গরম পানি পড়ে গিয়েছিল ভুলবশত। ‘
‘ আচ্ছা কেয়ারফুল থাকবেন। আর কয়েকদিন এই হাত টা ভেজাবেন না। আমি মেডিসিন দিয়ে দিচ্ছি ঠিক হয়ে যাবে। ‘
‘ জ্বি। ধন্যবাদ। ‘
সাফারাত এতো সময় অব্দি পাশে বসে ছিল। ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেড়িয়ে গাড়িতে এসে বসল। চৈত্রিকাও বসল পাশের সিটে।
‘ গরম পানি করতে গিয়ে ভুলবশত আপনার হাতে পড়েছে এটা আমার বিশ্বাস হয় নি চৈত্র। সত্য আপনি বলবেন নাকি আমি আমার নিয়মে বের করবো?একসঙ্গে কাটানোর প্রথম সকালেই আপনি আমার সাথে মিথ্যে বলছেন?’
চৈত্রিকা ভড়কে গেলো। আমতাআমতা করে বললো- ‘ আপনি ভুল বুঝছেন। আমি সত্যি..’
এতটুকু বলে থেমে গেল চৈত্রিকা। সাফারাতের দৃষ্টি লুকিয়ে মিথ্যে বলার মতো সাহস করে উঠতে পারল না আর। মুখস্থের মতো করে আনতস্বরে জানালো-‘ আমি গরম পানি নিয়ে ড্রইং রুমে আসছিলাম ফুপুর ধাক্কায় গ্লাস থেকে সম্পূর্ণ পানি হাতে পড়েছে। আপনি ফুপু কে কিছু বলবেন না দয়া করে। ‘
সাফারাত মুখ ফিরিয়ে নিল। স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে সে। পুরো রাস্তায় ফিরে অব্দি তাকালো না চৈত্রিকার দিক। চোখে মুখে অন্ধকার ছেয়ে গেল চৈত্রিকার। বুঝতে পারে ও প্রথমে লুকিয়ে রাখার ফলস্বরূপ সাফারাত এর রাগের আভাস। বাড়ির দীর্ঘ বড় গেট অতিক্রম করে গাড়ি ভিতরে ঢুকল। ডিরেক্ট পার্কিং এর জায়গায় নিয়ে এলো গাড়িটা সাফারাত। নেমে গটগট করে ভিতরে ঢুকে পড়ল। চৈত্রিকা চেয়েও তাল মিলিয়ে হাঁটতে পারে নি তাগড়া লম্বাচওড়া সাফারাতের সঙ্গে।
সাফারাত ড্রইং রুমে এসে মিনার উদ্দেশ্যে বললো- ‘ নাস্তা রেডি করো মিনা। আর অন্য একজন সার্ভেন্ট কে ফুপুর রুমে পাঠাও প্যাকিংয়ে হেল্প করতে। ‘
আশ্চর্যান্বিত হয় চৈত্রিকাসহ ড্রইং রুমে উপস্থিত সকলে। মৌসুমি সোফা ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন। কন্ঠে একরাশ বিস্ময় নিয়ে বলে উঠলেন,
‘ কেন?’
‘ কারণ আপনি চলে যাচ্ছেন?’- কাঠ কাঠ গলায় প্রতুত্তর করে সাফারাত।
‘ চলে যাচ্ছি মানে?’
‘ আপনি আপনার বাড়িতে যাচ্ছেন। ‘
সুফিয়া বেগম কন্ঠে তেজ আনার চেষ্টা করে বলে উঠলেন- ‘ কি হচ্ছে এসব সাফারাত?কি চাইছো তুমি?’
‘ চাওয়া টা একদম স্বাভাবিক দাদি। নাস্তা করে যেন চলে যায় ফুপু।’
রাগে থরথর করে কেঁপে উঠলেন মৌসুমি। চৈত্রিকার দিকে তীক্ষ্ণ চাউনি নিক্ষেপ করলেন। বললেন,
‘ এখন কি তোমার বউয়ের জন্য এই বাড়িতে থাকা নিষেধ? এই মেয়ের জন্য আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট করবে?’
সাফারাত দূরে জড়ো হয়ে অবস্থান করা চৈত্রিকার দিকে এক নজর চেয়ে দৃষ্টি সরিয়ে আনলো। রাগ সংবরণের চেষ্টায় দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠল,
‘ আপনি যদি ইচ্ছে করে আমার বউকে আঘা’ত করতে পারেন। তাহলে আমিও আমার বউয়ের সেফটির জন্য আপনাদের মতো বিপদকে দূরে সরিয়ে রাখতে জানি। আর আত্মীয়তার সম্পর্কের কথা বলছেন?কিসের সম্পর্ক?দাদি ও প্রিয়ন্তী বাদে কারো সাথে আমার সম্পর্ক নেই। একটা সময় এই সম্পর্কের টানে এসেছিলাম আপনাদের কাছে আম্মুর মৃত্য’র পর। জার্মানি থেকে ফিরে এই বাড়ুিতে ঢুকতে পর্যন্ত দেওয়া হয় নি আমাকে। দারোয়ান দিয়ে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছিল। কিছুই ভুলি নি আমি। ভাগ্য ভালো এখনও আপনাদের মতো কালসাপ কে আমি আমার সান্নিধ্যে আসতে দেয়। নাস্তা করেই বেড়িয়ে যাবেন। আপনাকে আর আপনার মেয়েকে এই বাড়ির ত্রিসীমানায় যেন না দেখি। কোনো অধিকার নেই আপনাদের এ বাড়িতে। ‘
সাফারাত চলে যেতে নিলে মৌসুমি তেঁতে উঠলেন। চৈত্রিকার সামনে নিজের অপমান সইতে না পেরে কর্কশ গলায় বলে উঠলেন,
‘ সব অস্বীকার করলেও যার রক্ত শরীরে বহন করছিস তাকে অস্বীকার করে দেখা। একবার মুখে বলে দেখা তুই জাফর ভাইয়ের ছেলে না। না-কি তোর মা আমার ভাইকে ঠকিয়েছে?’
চক্ষুদ্বয় জ্বলে উঠল সাফারাত এর। হাত মুঠো করে পাশে সৌন্দর্য বিলীন করা ফুলদানি টা সজোরে আঘা’ত করে ফ্লোরে ফেলে দিল। ধ্বক করে উঠল চৈত্রিকার বুক। অকস্মাৎ থরথর করে কাঁপতে লাগল পা দুটো। ফ্লোরের দিকে নজর যেতেই দেখে কাঁচের ফুলদানি টা ভেঙে খন্ড দ্বিখণ্ডিত হয়ে পড়ে আছে। চৈত্রিকা ভাবতেই পারে নি জল এতদূর গড়াবে। এহেন পরিস্থিতির জন্য নিজেকে দোষী মনে হচ্ছে ওর। সব দোষের মূলে ও নিজেই। সাফারাত চোয়াল শক্ত করে বললো,
‘ আপনার ভাই চরিত্রহীন ব্যক্তি, আমার মা নই। গেট লস্ট। নয়ত আপনাদের অবস্থা খুব বাজে করবো আমি। নিঃশেষ করে দিব আপনাদের। আমার মায়ের টাকায় মুখে যেই খাবার তুলছেন তা আর জুটবে না। মাইন্ড ইট। ‘
এক মুহুর্তও না দাঁড়িয়ে সাফারাত চলে গেল রুমে। চৈত্রিকা সেদিকে তাকিয়ে রইল নিষ্পলক। মৌসুমি তেড়ে এসে কটমট করে বলে উঠলেন- ‘ বাহ!তুই তো অনেক ভালো খেলোয়াড়। দেহ,সৌন্দর্য দিয়ে ভুলিয়ে ফেললি সাফারাতকে। তুই কিভাবে শান্তিতে থাকিস দেখে নিব আমি৷ এই মিনা আমার সাথে আয়। ব্যাগ গুলো গুছিয়ে দিবি। ‘
সুফিয়া বেগম থম মেরে বসে রইলেন। ছোট ছোট শ্বাস ফেলছেন তিনি। বৃদ্ধ বয়সে সম্পর্কের এতো দূরত্ব ওনার আর ভালো লাগছে না। প্রিয়ন্তীর মা সুফিয়া বেগম কে উদ্দেশ্য করে চৈত্রিকার দিকে তাকিয়ে বললো- ‘ জাত-পাত না দেখে বিয়ে করে এমন মেয়ে ঘরে তুললে সম্পর্ক তো ছিন্ন ভিন্ন হবেই মা। সবে তো শুরু। এই মেয়ের জন্য আপনার নাতি আমাদের না আবার ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। ‘
তাচ্ছিল্যের সহিত কথাগুলো শুনিয়ে তিনিও ড্রইং রুম ছাড়লেন। চৈত্রিকা মলিন মুখে সুফিয়ার বেগমের দিকে এগিয়ে যেতে নিলে তিনি হাত দেখিয়ে নিষেধ করলেন। কিছুক্ষণ নিরব থেকে বললেন- ‘ সাফারাতের কাছে যাও। ‘
সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে পা ভেঙে আসছে চৈত্রিকার। কি থেকে কি হয়ে গেল এসব?ও তো এমন কিছুই চায় নি। বিয়ের পর সুন্দর একটা সংসার চেয়েছে সব মেয়েদের মতোই। শশুর -শাশুড়ী না থাকুক যারা আছে তাদের নিয়েই সুখের নেশায় ছুটতে চেয়েছে। কিন্তু সবকিছু যেন ভাবনার উল্টো। সবটা অন্যরকম। জীবনের নতুন মোড়ে নতুন করে যেন নব্য এক গোলকধাঁধায় ফেঁসে গেল ও। সাফারাতের বাবা কেন দূরে থাকে?কেন এ বাড়ির সবার সাথে সাফারাতের সম্পর্ক খারাপ? এছাড়া কষ্ট দেখেছে চৈত্রিকা সাফারাতের রাগান্বিত দু চক্ষে। কি এমন হয়েছিল অতীতের মাঝের সেই সময়গুলো তে?
রুমের সামনে আসতেই চৈত্রিকা বাকরুদ্ধ, স্তব্ধ হয়ে পড়ল। টালমাটাল এর ন্যায় পিছিয়ে গেল দু’ পা। একি হাল করেছে সাফারাত!
#চলবে,,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)