#সুখের_নেশায়
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব___৫৩
বৃষ্টিতে কাঁদায় মাখামাখি রাস্তা টা আজ বড্ড মিস করছে চৈত্রিকা। এ শহরের রাস্তাগুলো পাকা,বৃষ্টিতে কেবল ভিজে কিন্তু কাঁদা হয় না। পিচ ঢালা রাস্তা ধরে প্রায় অনেক কিলোমিটার অতিক্রম করল ওদের গাড়ি টা। পিছনে ফেলে এলো বার্লিনের কিঞ্চিৎ সৌন্দর্য,সেই নগরীর ফরসা মানুষগুলোকে। গাড়িটা থামিয়ে সাফারাত আগে নামল। ভিজে গেল সাদা শার্ট টা। চুল বেয়ে কপাল ছুঁয়ে পানি পড়ছে অনবরত। দৌড়ে গিয়ে পাশের একটা শপ থেকে দু’টো ছাতা হাতে নিয়ে ফিরল। চৈত্রিকা নেত্রদ্বয় পিটপিট করে তাকিয়ে রইল এক দৃষ্টে। একটা ছাতা গাড়ির উপর রেখে অন্য একটা মেলে ওর পাশের দরজা মেলল সাফারাত এক হাতে। শান্ত কন্ঠে বললো,
‘ নামুন চৈত্র। ‘
মোহাবিষ্ট হয়ে চৈত্রিকা নেমে দাঁড়াল। মৃদু যা অভিমান জমেছিল ক্ষীণ সময়ের জন্য তা সাফারাতের নরম,মায়াভরা কন্ঠে সম্পূর্ণ উবে গেল। কন্ঠ টা কেমন নেশা নেশা। অদ্ভুত এক নেশা!একজন মানুষের কন্ঠস্বর,আচরণ, চরিত্রের এত পরিবর্তন ঘটে!কখনও গম্ভীর, কঠোর,রষকসহীন। আবার কখনো নরম,যত্নশীল, মোহনীয়। এ যেন মুদ্রার এপিঠ -ওপিঠ।
চৈত্রিকাকে ছাতার নিচে নিয়ে কাছে টেনে নিল সাফারাত। এতটা কাছে নেই দু’জন , মাঝখানে দূরত্ব রয়েছে। শুধু হাত টা টেনে হাতের মুঠোয় বাঁধল,যেন চৈত্রিকার গা তার সিক্ত স্পর্শে ভিজে না যায়। হঠাৎ বৃষ্টির শিকার হয়ে ভিন্ন এক দেশে জ্বর বাঁধতে পারে অনায়সে। সেই রিস্ক নিতে নারাজ সাফারাত। আলতো করে ছুঁয়ে রাস্তা পার করে চৈত্রিকাকে অপর প্রান্তে নিয়ে এল। ওদের ফ্ল্যাটের সামনে দাঁড় করিয়ে ছাতা টা চৈত্রিকার হাতে ধরিয়ে দিয়ে পুনরায় মাথায় বিন্দু বিন্দু জল নিয়ে ফিরে এলো গাড়ির কাছে। অন্য ছাতা টা মেলে প্রিয়ন্তীকে একইভাবে অপর পাশে নিয়ে গেল। চৈত্রিকার হাতে ফ্ল্যাটের চাবি টা ধরিয়ে দিয়ে লহু স্বরে বললো,
‘ আপনারা দু’জন উপরে চলে যান। গিয়ে অবশ্যই ড্রেস পরিবর্তন করে নিবেন৷ ভিজে গেছেন। ‘
চৈত্রিকা অবাক হলো। নিজের এবং প্রিয়ন্তীর দিকে তাকালো। বৃষ্টির ছিটা পানিতে নিচের অংশ ভিজেছে শুধু। এতেই কি চিন্তা সাফারাতের! অথচ নিজে কাকভেজা হয়ে আছে তাতে মাথা ব্যাথা নেই। চৈত্রিকা মিনমিনিয়ে প্রশ্ন করলো,
‘ আপনি যাবেন না?’
‘ না। কিছু জরুরি জিনিস কিনতে হবে রান্নার জন্য। হুট করে এলাম। বেশি কিছু নেই বাসায়। আপনারা গিয়ে ফ্রেশ হন। পাশেই গ্রোসারি সুপারশপ। আসা যাওয়ায় পঁয়ত্রিশ মিনিট ব্যয় হবে। ‘
‘ আচ্ছা। ‘
চৈত্রিকা নিজের মাথার উপরের ছাতা টা সাফারাতের মাথার উপর ধরে টুপ করে প্রিয়ন্তীর ছাতার নিচে ঢুকে পড়ল। বেশ আহ্লাদী কন্ঠে বললো,
‘ আর ভিজবেন না। অসুস্থ হয়ে পড়বেন। ‘
‘ প্রিয়ু চোখ বন্ধ কর তো। ‘
সাফারাতের কথায় প্রিয়ন্তী চমকে উঠল। দুই নেত্র খিঁচে বন্ধ করে ফেলল বিনা প্রশ্নে। সাফারাত সঙ্গে সঙ্গে চৈত্রিকার এক হাত ধরে উল্টো পিঠে চুমু খেল। দীর্ঘমেয়াদি নয়,সাময়িক সেকেন্ডের ছিল সেই অধরযুগলের আর্দ্র ছোঁয়া। তারপর চলে গেল সাফারাত। এখনও দুরুদুরু কাঁপছে বুক। চৈত্রিকা সেই কাঁপা কাঁপা বুক নিয়ে প্রিয়ন্তীর সাথে ফ্ল্যাটে আসলো। দু’জনে প্রথমে কাপড় পাল্টে ড্রইং রুমে এলো। চৈত্রিকা পুরো কক্ষের দিকে একবার চক্ষু বুলালো। যেহেতু গতকাল এসে দেখে গিয়েছে সবগুলো কক্ষই গোছালো তাই আর গুছাতে হলো না। এতে অবশ্য বেশ বোর ফিল করছে ও। একটু আকটু কাজ করতে পারলে একাকিত্বের অনুভূতি টা বোধহয় কম হতো। সিদ্ধান্ত নিল রান্না করবে দুপুরের জন্য। সকালেও ওরা নাস্তা করে বের হয় নি। তবে পথিমধ্যে একটা রেস্টুরেন্টে কফি,কেক খেয়েছে। এখানকার রেষ্টুরেন্টের খাবারগুলো বিশেষ ভালো লাগে নি চৈত্রিকার। সবকিছু কেমন যেন পানসে। চকলেট কেক টা-ই একটু মুখে রুচেছে। প্লাজুর সাথে লম্বা একটা কামিজ পড়েছে চৈত্রিকা। স্কার্ফ টা গলায় পেঁচিয়ে রান্নাঘরের দিকে আসল৷ সাফারাত বলেছে টুকটাক খাবারের জিনিস আছে। ফ্রিজ খুলে সব ফাস্ট ফুড পেল। আর একটা ঝুড়িতে পাস্তা,নুডলস, স্যুপ,চিপসের প্যাকেট। ঠান্ডার দিনে স্পাইসি স্যুপ ভালো লাগবে ভেবে বানানোর সিদ্ধান্তে উপনীত হলো। এর মধ্যে বেজে উঠল কলিংবেল। রান্নাঘর থেকে প্রিয়ন্তীকে বললো খুলে দেখতে কে এসেছে।
কথামতো প্রিয়ন্তী দরজা মেলল, ভাবল সাফারাত এসেছে কিন্তু সামনে যাকে দেখল তাতেই চোখ ছানাবড়া। বিড়বিড় করলো দাঁতে দাঁত কিটে- ‘ সাদা চামড়ার জার্মানির বাচ্চার আগমন,জ’ঘ’ন্য রকম স্বাগতম। ‘
ফাইয়াদ চুলের পানি ঝাড়তে ঝাড়তে স্বভাবসুলভ স্মিত হেসে বললো,
‘ হেই প্রিয়ন। ঢুকতে দিবে না?’
প্রিয়ন্তী মাথা উঁচিয়ে কিছুটা চেপে দাঁড়াল। চৈত্রিকা কিচেন রুম থেকে বেরিয়ে এসে ফাইয়াদকে দেখে অধর কার্নিশ প্রসারিত করে বললো,
‘ ভাইয়া বসুন। বৃষ্টি কমলেই আসতে পারতেন। এত তাড়া ছিল না। ‘
ফাইয়াদ সোফায় বসল। আঁড়চোখে একবার চাইল দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা প্রিয়ন্তীর দিক। কেমন মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মেয়েটা। ঠোঁটে ঠোঁট চেপে হাসল ফাইয়াদ। বললো,
‘ পিচ্চি মেয়েকে স্কুলে দিটে হলে আগে সিটিজেনশিপ লাগবে। এখনই কাগজ জমা দিয়ে রাকতে হবে। টুমার টা নিয়ে ভয় নেই। এই ধরো দু’মাসের মঢ্যে পেয়ে যাবে টুমি। ‘
প্রিয়ন্তী তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল। ‘ত’ ট উচ্চারণ করে, বাংলা ভাষার খু*ন করছে আবার ওকে পিচ্চি বলা হচ্ছে! ইচ্ছে করে মজা করছে ফাইয়াদ ওকে নিয়ে তা দিব্যি বুঝতে পারছে ও। নাক ফুলিয়ে দরজা লাগিয়ে রুমের দিকে যেতে নিলে চৈত্রিকা ডেকে উঠল,
‘ প্রিয়ু ভাইয়ার জন্য একটা তোয়ালে নিয়ে আসো। আর তোমার পাসপোর্ট,প্রয়োজনীয় কাগজ গুলো দাও ভাইয়াকে। সাফারাত গতকাল বলেছিল,খুব শীগ্রই তোমার পড়ালেখার ব্যপার টা নিশ্চিত করতে হবে। ‘
‘ আচ্ছা ভাবী। ‘
‘ ভাইয়া কফি চলবে?’
ফাইয়াদ চৈত্রিকার প্রশ্নে মাথা নাড়িয়ে বললো,
‘ হুম। ‘
চৈত্রিকা চলে যেতেই প্রিয়ন্তী হাতে তোয়ালেও কাগজপত্র নিয়ে বেরিয়ে এলো। হাতের কাগজগুলো সামনের টি টেবিলে রেখে তোয়ালে টা এক প্রকার ছুঁড়ে মারল। ফাইয়াদ সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেলল। কপালে চিন্তার ভাঁজ স্পষ্ট। অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,
‘ কি হয়েছে প্রিয়ন?’
‘ আপনি আমাকে পিচ্চি বললেন কেন?’
‘ টুমি কি পিচ্চি না?হাউ ওল্ড আর ইউ?’
‘ আজ রাত পেরুলেই ষোলো হবে। ‘
ফাইয়াদ সুপ্ত হেসে, কন্ঠ খাদে নামিয়ে ফিসফিস করে বললো,
‘ বিয়ের জন্য রেডি?ছেলে দেকব?ঠিকঠাক কিস করতে পারো টো প্রিয়ন?’
এমন ঠাট্টার স্বর কর্ণপাত হতেই প্রিয়ন্তীর সারা অঙ্গে স্ফুলিঙ্গ হতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে উঠল যেন। রাগান্বিত স্বরে ঈষৎ চিল্লিয়ে উঠল,
‘ আপনি আমাকে আপনার মতো অসভ্য মনে করেন?’
মুগ্ধতায় পরিপূর্ণ আঁখিদ্বয় বড়সড় করলো ফাইয়াদ। বিস্ফোরিত কন্ঠস্বর তার,
‘ আমি কি করলাম? ‘
‘ কি করেন নি?গত রাতেই তো জাইফাকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়েছিলেন। ‘
‘ কি বলছো?ওই মেয়ে টো উড়ে এসে আমার বুকে পড়েছিল।’
‘ একদম ভালো সাজার চেষ্টা করবেন না। আপনারা তো রাস্তা ঘাটে, মানুষের সামনে লিপ কিস করতেও দ্বিধাবোধ করেন না। নির্লজ্জ! ‘
ফাইয়াদ সবটা বুঝল একটা শব্দ বাদে। প্রশ্ন করলো,
‘ দিটাবোত কি প্রিয়ন?এন্ড জাইফা!শি ইজ নট মাই গার্লফ্রেন্ড। হোয়াই শুড আই কিস হার?কিস লাইফে একবারই করেসিলাম ‘ অ্যালেক্স ‘ কে। ‘
প্রিয়ন্তীর বুক ধরফর করে উঠল। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে আওড়ালো,
‘ হু ইজ অ্যালেক্স? ‘
‘ মাই এক্স গার্লফ্রেন্ড। লাইফের পথম প্রেম। ‘
‘ এক্স হলো কেন?’
ফাইয়াদ নির্বিকার অভিব্যক্তি ধারণ করে প্রতুত্তর করলো,
‘ ও আমায় লিভিং এর জন্য অফার করেছিল। আমি ভাবটে সময় নিই,ভেবে ডিসিশন নিলাম আমি পারব না। দ্যাটস হোয়াই শি লেফট মি ফর লাইফ। ‘
প্রিয়ন্তীকে স্তব্ধতা, অবাকতা আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিতে ব্যর্থ হলো।কারণ এদেশে এসব কমন বিষয়। ফাইয়াদের প্রতি প্রথমদিন থেকেই একটা পজিটিভ ভাব আসে। ক্ষণিকের জন্যও মনে হয় নি এটা এক ভিন্ন দেশের ছেলে। যথেষ্ট ভদ্রতা বজায় রাখে ছেলেটা। এছাড়া কম বয়সে যেই ধাক্কা টা পেয়েছে প্রিয়ন্তী জীবনে এখন ছেলেদের সান্নিধ্যে ভয় হয়, ভীষণ ভয়। একমাত্র ভাই ছাড়া কাউকেই বিশ্বাস হয় না। তবুও ফাইয়াদের কাছে অকপটে মনের ভাষা ব্যক্ত করছে পারছে সে। মুখে হাসি ফুটছে। নিত্যনতুন অনুভূতির সঙ্গে সাক্ষাৎ হচ্ছে। কথার বিপরীতে কিছু না বলে উঠে দাঁড়াল ও। ফাইয়াদ উত্তেজিত সুরে বলে উঠল,
‘ কোথায় যাচ্ছো?’
প্রিয়ন্তী হাস ফাঁস করতে লাগল। কিছু বলতে পারছে না। ফাইয়াদ ওর চোখের দিকে তাকালো। গলা ঝেড়ে বললো,
‘ প্রিয়ন!আমি কিন্তু খারাপ নই, আবেগি বয়সের ভুল মাত্র। ভালোবাসা টো এখন অনুভব করতে শিকেছি।’
প্রিয়ন্তীর হৃদস্পন্দন থমকে গেল। ফাইয়াদের বাক্য টাকে স্বীকার করে বলে উঠল,
‘ জানি। আপনি খারাপ নন। ‘
নিজের কাজে নিজেই হতভম্ব প্রিয়ন্তী। কি হলো ওর?কেন এত পজিটিভ অনুভূতি হচ্ছে এই বিদেশি সাদা চামড়ার ছেলে টার জন্য? আবারও আবেগ বশীভূত করা আরম্ভ করলো না-কি! চৈত্রিকা হাতের ট্রে টা টেবিলের উপর রাখল। স্যুপ,পাস্তা, কফি এসব রেডি করতে দেরি হয়ে গেল ওর। স্থির হয়ে থাকা প্রিয়ন্তীর দিক চেয়ে জিজ্ঞেস করলো,
‘ দাঁড়িয়ে আছো কেন?’
নড়েচড়ে উঠল প্রিয়ন্তী। ফাইয়াদ ওর দিকে নির্নিমেষ,পলকহীন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রেখেছে। ঠোঁটের কোণে হাসি। পেট টা গুড়গুড় করে উঠল প্রিয়ন্তীর। ঢোক গিলে বললো,
‘ আমি রুমে যাচ্ছি ভাবী। ‘
বলতে দেরি করলেও সুড়সুড় করে প্রস্থান করতে বিলম্বিত করলো না মেয়েটা।
_____________
হঠাৎ চৈত্রিকার পেট ব্যাথা শুরু হয়েছে ভোরের দিকে। বিছানায় কাকড়ার মতোন বালিশ আঁকড়ে ধরে পড়েছিল সে। সেই সময় থেকেই সাফারাতের চোখে ঘুম নেই, ভিতরটা ছটফট করছে। শ্বাস ফেলতে কষ্ট হচ্ছে। অনলাইনে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে কিছু স্টেপ নিয়েছে। ঘড়িতে এখন সাড়ে ছয়টা। নয় টার দিকে বেরোবে ওরা ডক্টর দেখানোর উদ্দেশ্যে। চৈত্রিকা গাঢ় নিদ্রায় ডুবে আছে। টুল পেতে বসে ওর ঘুমন্ত, তৈলাক্ত বদনের দিক চেয়ে আছে সাফারাত এক দৃষ্টে। দৃষ্টি টা করুণ। মন টা অস্থিরতায় বিষিয়ে যাচ্ছে মুহুর্তে মুহুর্তে। হঠাৎ কর্ণে ভেসে আসে কলিংবেলের শব্দ। সাফারাত ঘড়ির দিকে দৃষ্টি স্থির করলো। চৈত্রিকার গায়ে কাঁথা জড়িয়ে দিয়ে দরজার কাছে আসল। খুলতেই ওর দুই হাঁটু জড়িয়ে ধরল পিচ্চি পিচ্চি দুটো হাত। আয়মান কে কোলে তুলে নিল সাফারাত। সামনে দাঁড়ানো মানুষটা কে দেখে ঘৃণায়, রাগে মুখ ফিরিয়ে নিল। আলো বেগম অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলে উঠলেন,
‘ ঢুকতে দিবি না খালামণি কে?কেন আমাকে ছেড়ে আসার সিদ্ধান্ত নিলি?তোকে ছাড়া আমার কষ্ট হয় সাফারাত। কথা বল আমার সাথে। ‘
আয়মানকে কোল থেকে নামিয়ে দিল সাফারাত। আঙ্গুল দিয়ে নিজেদের রুম টা দেখিয়ে বললো,
‘ তোমার মামি মনি ও সুখ ঐ রুমে ঘুমাচ্ছে। ‘
আয়মান দৌড়ে চলে গেল। আলো বেগম এক গাল হেসে বললেন,
‘ কাল থেকে ছেলেটা মনমরা হয়েছিল। তুফান করেছে বাড়িতে। নিজের সব প্রিয় জিনিস ভেঙে ফেলেছে। বার বার বলছিল সুখ না থাকলে ওর কিছুই লাগবে না। শুধু সুখ চায় ওর। তাই নিয়ে এলাম।’
এটুকু বলে তিনি ছোট্ট নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। কন্ঠে গম্ভীরতা এঁটে বললেন,
‘ তোর সাথে আমার কথা আছে সাফারাত। কেন এমন করছিস তুই?’
সাফারাত রোষপূর্ণ কন্ঠে গর্জে উঠল,
‘ আমার মা’য়ের খু*নের পরিকল্পনাকারীর সাথে আমার কোনো কথা নেই। মুখোশের আড়ালে নিকৃষ্ট এক নারী আপনি যে কিনা পুরো দুনিয়ার সামনে মমতাময়ী, নরম স্বভাবের সেজে থাকেন। প্রকৃতপক্ষে আপনি একজন ছলনাময়ী। গেট আউট ফ্রম হেয়ার। ‘
আলো বেগম ধপ করে দরজায় বসে পড়লেন। টুপটুপ করে চক্ষু কোল থেকে জল গড়াতে শুরু করলো।
#চলবে,,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)