#অভ্র_নীল
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_৪০
______
শাওন- এই এই কি বললে তুমি.?
তোয়া- কি বললাম!
শাওন- তুমি আমাকে ভাইয়া বলছো?
তোয়া- ভাইয়াকে ভাইয়া বলবো না তো কি বলবো হুহহহ?
শাওন- আমি তোমার কোন জন্মের ভাইয়া হুহ?
তোয়া- আপনি.!
শাওন- এই আগে এই আপনি বলা বন্ধ করো পর পর লাগে।
তোয়া- আপনি আমার বড় তো আপনাকে আপনিই বলবো আর আপনি আমার ভাইয়া কারণ শুভ ভাইয়া আমার ভাই আর আপনি তার ভাই সো আপনিও ভাই।
শাওন- আমি আর শুভ এক না আমি তোমাকে ভালোবাসি।
তোয়া- আমি আপনাকে ভালোবাসি না ভাইয়া..!
শাওন- তোয়া ভাইয়া বলবা না।
তোয়া আর কিছু বলতে যাবে তখনই তোয়ার ফোন বেজে উঠে ফোন চোখের সামনে ধরে দেখে জুনায়েদ এর নাম্বার।
শাওন- কে কল দিচ্ছে তোমাকে এত রাতে?
তোয়া- জুনায়েদ! (ফোনের দিকে তাকিয়ে নাম বলে দিলো এখন কি হবে)
তোয়া ফোন রিসিভ করতে যাবে তখনই শাওন পোনটা তোয়ার হাত থেকে কেঁড়ে নিয়ে একটা আছাড় মারে।
তোয়া- শাওন ভাইয়া এটা কি করলেন আপনি আমার ফোন আমার কলিজার টুকরা টাকে ভেঙে ফেললেন? হায় হায়.!
শাওন রেগে ফায়ার হয়েগেছে তোয়ার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের দিকে ঘুরালো।
শাওনের চোখ অগ্নিকাণ্ডের লাভার মতো লাল হয়ে আছে।
শাওন- তোয়া আমি তোমাকে ভালোবাসি।
তোয়া- ছাড়ুন আমাকে”!
শাওন- ছাড়তেই তো চাই না তোমাকে তোয়া অনেক বেশি ভালোবাসি প্লিজ মাফ করে দাও আমাকে প্লিজ তোয়া।
তোয়া- আমি আপনাকে মাফ করে দিয়েছি।
শাওন- উঠে দাঁড়িয়ে তোয়াকে জরিয়ে ধরে তোয়া ও শাওন কে জরিয়ে ধরে তারপর তোয়া শাওনকে দিয়ে প্রমিজ করায় তোয়া ছাড়া অন্য মেয়ের কথা যেনো আর কখনো ভাবেও না তাহলে সেদিন আর ক্ষমা করবে না আর তোয়া এখনও ছোটো তাই বিয়ের জন্য আরও ২বছর ওয়েট করতে হবে।
শাওন ও তোয়ার সব শর্তে রাজি হয়ে যায়।
তারপর শীতে কাঁপতে শুরু করে দু’জনেই শাওন তোয়ার কপালে চুমু দেয় তারপর দু’জনেই হাত ধরে নিচে চলে আসে আর যার যার রুমে চলে যায়।
তারপরের দুই সপ্তাহ পর শাওন আমেরিকা চলে যায় কিন্তু তোয়ার সাথে ফোনে কথা হয়। শাওন এখন পুরো চেঞ্জ হয়েগেছে কোনো মেয়েকে পাত্তা দেয় না। শাওনের সবটুকু জুড়ে এখন তোয়া বসবাস করে
৩মাস পর……..
অভ্র নীল বেলকনিতে দোলনার উপর বসে বসে দুলছে অভ্র নীলকে বুকের সাথে মিশিয়ে রাখছে।
নীল- অভ্র আমাদের কি হলে তুমি খুশি.!
অভ্র- আল্লাহ খুশি হয়ে যা দিবেন তাতেই তাতেই আমি খুশি।
নীল- তারপরেও একটা ইচ্ছা তো থাকে তাই বলো কি চাও.
অভ্র- উমমম্মাহ.! (নীল এর কপালে চুমু দিয়ে)
অভ্র- আমার জানপাখির মতো আমার একটা মেয়ে চাই। আর তোমার?
নীল- আমার ও একটি মেয়ে চাই..!
অভ্র নীল এর কপালের চুলগুলো এক হাত দিয়ে সরিয়ে দিলো। অভ্র নীল এর দুই গালে হাত দিয়ে নীল এর দিকে তাকিয়ে আছে।
নীল- অভ্র একটা কথা বলবো।
অভ্র- বলো নীলপরী!
নীল- আমার ডেলিভারির ডেট প্রায় চলেই আসছে।
অভ্র- হুমমমমমম।
নীল অভ্রর এক হাত নিজের পেটের উপর রাখে
নীল- আমি অনেক মেয়েকে দেখেছি বাচ্চা হওয়ার সময় মারা যায় যদি আমার কিছু হয়ে যায়।
অভ্রের নীলের কথা শুনে অটোমেটিক চোখের কার্নিশ বেয়ে পানি গড়িয়ে পরে। নীল এর চোখও পানিতে টলমল করছে।
অভ্র নীলকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে।
অভ্র- নীল প্লিজ নীল এইসব বলো না নীল তুমি ছাড়া যে বাঁচতে পারবো না তুমি যে আমার নিশ্বাসে মিশে গেছে নীল প্লিজ নীল কখনো আমাকে ছেড়ে যেও না তুমি আমাকে একা করে চলে যেও না নীল আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না নীল। অভ্র কথা বলতে বলতে কেঁদেই ফেলে নীল ও অভ্রর সঙ্গে কাঁদতে শুরু করে দু’জনেই দু’জনের গলা ধরে কাঁদতে থাকে। দু’জনেরই আত্মা যে দু’জনের সাথে মিশে আছে।
নীল অভ্রর চোখের পানি মুছে দিচ্ছে অভ্র নীল এর চোখের পানি মুছে দিচ্ছে।
অভ্র- আমার বাচ্চা চাই না নীল আমও শুধু আমার নীলকে চাই আমি সারাজীবন বাচ্চা ছাড়া থাকতে পারবো নীল তোমাকে ছাড়া বাঁচবে পারবো না কখনো আমাকে ছেড়ে চলে যেওনা নীল ছাড়া অভ্র মরে যাবে নীলল😭
নীল অভ্রর কথা শুনে কেঁদেই যাচ্ছে দু’জনেই কেঁদেই যাচ্ছে বেশি কান্না করছে কারণ আজই প্রতিবেশীর একটা মহিলার বাচ্চা হওয়ার সময় মহিলা মারা যায় আর সন্তান বেঁচে যায়। আর সেজন্যই নীল আজ অভ্রকে এই কথা অভ্রকে জিজ্ঞেস করে।
আর দু’জনেই দু’জনকে এত বেশি ভালোবাসে দু’জন দু’জনকে জরিয়ে ধরে।
অভ্র- তোমার কিচ্ছু হবে না নীল আমার জানপাখি আমার নীলপরীর যে আল্লাহ আমার থেকে কেড়ে নিবেন না আল্লাহ আমার নীলপরীকে আমার বুক ফাঁকা করে নিয়ে নিবেন না। কাঁদতে কাঁদতে নীল এর কপালে চুমু দেয়।
২দিন পর সকালে অভ্রর আজ অফিস যেতেই হবে অনেক জরুরি মিটিং আছে অভ্রর না গেলে চলবেই না..!
আর আজই নীল এর শরীর খারাপ লাগছে। নীল অভ্রকে অফিস যেতে বারণ করে কিন্তু অভ্রর অফিস যেতেই হবে। অভ্র নীল এর কপালে চুমু দেয় আর বলে যায় খুব তারাতাড়ি চলে আসবে।
অভ্র চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই নীল এর লিভারপেইন উঠে..!
নীল ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে চিৎকার করে।
নীল এর রুমের সামনে দিয়েই একজন স্টাফ যাচ্ছিল আর নীলকে এভাবে চিল্লাতে দেখে রুমে যায় আর গিয়ে দেখে নীল ফ্লোরে পরে কাঁদছে সাথে পেট ধরে আছে।
স্টাফ সঙ্গে সঙ্গে দৌঁড়ে নিচে চলে আসে আর মিসেস ও মিস্টার চৌধুরী কে ডেকে তাদের বললেই তারা দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নীল এর রুমের দিকে যায়।
তোয়া স্কুল যাওয়ার জন্য বেরি হচ্ছিল আী সবাইকে নীল টর রুমের দিকে যেতে দেখে তোয়া ও পেছন পেছন আসে।
নীল ফ্লোরে শুয়ে পেট ধরে কাঁদছে মিসেস চৌধুরী নীল এর কাছে গিয়ে ওর মাথা নিজের কোলের উপর রাখে।
নীল এর ডেলিভারির এখনও ১৫ দিন বাকি আছে। তাই তারা একটু শকট টাইমের আগেই লিভারপেইন কিভাবে সম্ভব আর এটা কি লিভারপেইন নাকি অন্য কিছু।
মিস্টার চৌধুরী- কি ভাবছো কি তুমি?
নীল- আম্মু আব্বু আমি আর সহ্য করতে পারছি না প্লিজ কিছু করো আমি মরে যাবো প্লিজ কিছু করো তোমরা সাথে চিল্লাচ্ছে।
মিস্টার চৌধুরী- ওকে হাসপাতালে নিতে হবে। সরো তো তোমরা বলেই মিস্টার চৌধুরী নীল কে কোলে তুলে নেয়। প্রেগনেন্ট মহিলা কে কোলে নেওয়া একটু টাফ ! নীল এর ওজন এখন বার্তি তাই কোনো রকম সিঁড়ি দিয়ে নেমে তারা গাড়ি পর্যন্ত আসে আর নীল তো পেট ধরে কেঁদেই যাচ্ছে।
তোয়া আর স্কুল যায় না গাড়িতে উঠে পরে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য..!
নীল- ব্যাথা সহ্য করতে পারছে না কেঁদেই যাচ্ছে।
নীল- আম্মু আমার যদি কিছু হয়ে যায় তখন প্লিজ তোমরা আমার সন্তান কে দেখে রেখো কখনো মায়ের অভাব বুঝতে দিও না।
মিসেস চৌধুরী- কি বলছিস তুই নীল তোর কিছু হবে না আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখ মা।
তোয়া- তোমার কিছু হবে না ভাবি প্লিজ এমন করে বলো না।
মিস্টার চৌধুরী যত স্পিডে পারছে গাড়ি চালাচ্ছেন।
তোয়া- ভাইয়া ভাইয়া ভাইয়াকে সব বলতে হবে এখনই বলতে হবে।
তোয়া ফোন হাতে নিয়ে অভ্রর নাম্বারে কল দেয়।
আগের বারের মতে অভ্র আর কোনো ভুল করতে চায় না। তাই যত ইমপোর্টেন্ট মিটিংয়েই থাকুক না কেনো এখন ফোন নিজের সাথেই রাখে।
একবার কল বাজতেই অভ্র ফোন টা হাতে নেয় আর দেখে কে কল দিয়েছে বেশি ইমপোর্টেন্ট কল হলে রিসিভ করবে ভেবে।
অভ্রর তোয়ার নাম্বার থেকে কল এসেছে দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকায় আর ভাবে।
অভ্র- এখন তো তোয়ার কলেজে থাকার কথা আর এখন কল দিচ্ছে ভাবতে ভাবতেই কল কেটে যায় তোয়া কল কাটার পর আবার ও কল দেয়।
এইবার অভ্র কল রিসিভ করে।
অভ্র- হ্যালো তোয়া।
তোয়া- ভাইয়া এত কিছু বলার সময় নেই ভাবির চিৎকার নিশ্চয়ই শুনতে পাচ্ছিস ভাবির লিভারপেইন উঠেছে আমরা ভাবিকে নিয়ে হাসপাতাল যাচ্ছি আর হাসপাতালের কাছাকাছি চলেও আসছি তুই প্লিজ তারাতাড়ি চলে যায়।
অভ্র- নীলললললল আমার নীলললল…! বলেই মিটিং রুম থেকে দৌঁড়ে বেরিয়ে আসে।
অভ্রর চলে আসার পর আকাশ আর শুভ মিটিং ক্যানসেল করে দেয় আর বলে মিটিং দুইদিন পর হবে।
তারাও চলে যায়। আকাশ শুভ নিলয় অভ্রর পিছনে পিছনে বেরিয়ে পরে গাড়ি নিয়ে অভ্রকে ফলো করছে। নিলয়- অভ্র স্যারের ফোনে তোয়ার কল আসে আর তারাহুড়া করে ওইভাবে বেরিয়ে পর। নিলয় অভ্রর পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো তাই দেখেছে।
শুভ- আমি তোয়াকে কল দিয়ে দেখছি।
আকাশ- তারাতাড়ি দে।
.
.
#চলবে …..?
.
“হ্যাপি রিডিং”………
.
“কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ”……… ❌