#অভ্র_নীল
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_৪১
______
শুভ- আমি তোয়াকে কল দিয়ে দেখছি।
আকাশ- তারাতাড়ি দে।
শুভ কয়েকবার কল দেওয়ার পর তোয়া কল রিসিভ করে।
শুভ- কিরে তুই অভ্র কে কি এমন বললি অভ্র যে হন্ন হয়ে মিটিং রুম থেকে বেরিয়ে আসলো?
তোয়া- শুভ ভাইয়া ভাবিকে নিয়ে আমরা হসপিটাল আসছি ভাবিকে আইসিইউতে নিয়ে গেছে।
শুভ- কি বললি আচ্ছা রাখ আমরাও আসছি।
শুভ- নীল এর লিভারপেইন হয়েছে ওকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।
আকাশ- কি বললি? তাহলে তো আপনাদের ওদের কেউ জানানো উচিত।
নিলয়- কাদের স্যার?
আকাশ- শুভ তানজু, তানিয়া আর কাজলকে কল দিয়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে বল।
শুভ- হ্যাঁ হ্যাঁ বলছি।
শুভ এক এক করে ওদের তিনজনকে কল দেয় আর ওরাও তিনজন তারাতাড়ি করে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরে।
মিস্টার চৌধুরী মিসেস ও মিস্টার সরকার কে কল দিয়ে হাসপাতালে আসতে বলেন তারাও চলে আসে।
হাসপাতাল…!
অভ্র দৌঁড়ে হাসপাতালের রিসিপশনে জিজ্ঞেস করে নীলাঞ্জনা নীল নামের পেসেন্ট কোথায় আছে।
রিসিপশনের মেয়ে অভ্রকে আইসিইউর দিকে যেতে বলে।
অভ্র আইসিইউর সামনে এসে দেখে সবাই সেখানে অপেক্ষা করছে অভ্র ওদের কাছে গিয়ে দাঁড়ায় সবাই অপেক্ষা করছে ভালো খবরের জন্য ততক্ষণে ওরা সবাই চলে আসে।
সবাই আইসিইউর সামনে দাঁড়িয়ে আছে কেউ কেউ বসপ আছে। অভ্র হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসে আর সামনের মসজিদে গিয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে মোনাজাতে শুধু আল্লাহর কাছে নীল এর সুরক্ষার দোয়া করে নীল আর বাচ্চা দু’জনই জেনো সুস্থ থাকে।
অভ্র নামাজ শেষ করে আবার হাসপাতালে ফিরে আসে এখনও আইসিইউ থেকে কোনো খবর নেই কেউ বের হয়নি।
৩০মিনিট পর আইসিইউ থেকে বাচ্চার কান্নার শব্দ ভেসে আসছে।
সবাই এক আরেকজনকে জরিয়ে ধরছে আনন্দের সীমা নেই।
সবাই বাহিরে অপেক্ষা করছে ডাক্তার বের হওয়ার।
ডাক্তার তো বের হলো না এখনো কিন্তু দু’জন নার্স বেরিয়ে আসলেন।
সবাই তাদের দিকে অবাক দিয়ে তাকিয়ে আছে।
নার্সদের আাসার ৫মিনিট পরপরই ডাক্তার বেরিয়ে আসে আইসিইউ থেকে.!
নার্স- Congratulations..! আপনাদের বউমা দুই জমজ মেয়ে সন্তানের জন্ম দিয়েছে।
দুইজন নাতনি কে মিসেস চৌধুরী ও মিসেস সরকার এসে কোলে নেয়।
মিসেস চৌধুরী- পুরো অভ্র নীল এর মতো দেখতে হয়েছে।
মিসেস সরকার- অভ্র নীল কে উল্টিয়ে নিয়ে আসছে দুইবোন।
সবাই বাচ্চাদের কাছে গিয়ে ছুঁয়ে দেখছে অতি ছোটো বলে কেউ কোলে নেওয়ার সাহস পাচ্ছে না।
মিসেস চৌধুরী- অভ্র দেখ একদম তোদের মতো দেখতে হয়েছে।
অভ্র সেদিকে পাত্তা না দিয়ে ডাক্তারের সামনে গিয়ে বললো।
অভ্র- ডাক্তার আঙ্কেল আমার ওয়াইফ কেমন আছে আমি ওর সাথে কখন দেখা করতে পারবো?
ডাক্তার ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে।
ডাক্তার- নিশ্চুপ.!
অভ্র- ডাক্তার আঙ্কেল চুপ করে আছো কেনো বলো কি হয়েছে আমার নীল ঠিক আছে তো বলো আঙ্কেল আমার জানপাখির কোনো বিপদ হয়নি তো আবার বলো না ডাক্টার আঙ্কেল।
ডাক্তার- We Are Sorry.! অভ্র আমরা তোর দুই বাচ্চা কে তো বাঁচাতে পেরেছি কিন্তু তোর ওয়াইফ নীল কে…!
ডাক্তার কে আর কিছু বলতেই দিলো না অভ্র..!
অভ্র এক চিৎকার দিয়ে ফ্লোরে বসে পরল।
অভ্র- নীললললললল নীলললললল
নীলললললললললল😭
আমাকে তুমি প্রমিজ করেছিলে জানপাখি তুমি কখনো আমাকে ছেড়ে যাবে না তাহলে কেনো চলে গেলে নীল।
নীললললল আমার জানপাখি আমাকে ছেড়ে চলে গেলে আমি কাকে নিয়ে বাঁচবো আমার নীললললল ও আল্লাহ তুমি কেনো আমার নীলকে আমার থেকে কেঁড়ে নিলে একবারও কি আমার জন্য তোমার দয়া মায়া হয় নাই আমি কি করে বাঁচবো আমার জানপাখি কে ছাড়া ও আল্লাহ আমার কলিজা আমার জানপাখি আমার নীলপরী আমাকে ছেড়ে চলে গেলে কেনো নীল আমি বলেছিলাম আমার বাচ্চা চাই না আমি শুধু আমার নীলকে চাই আমার নীলপরী নীললললল 😭
অভ্রকে ভেঙ্গে পরতে দেখে আকাশ শুভ মিস্টার চৌধুরী ও তোয়া অভ্রর কাছে এসে অভ্রকে শান্তা দেওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত, তানজু তানিয়া কাজল মিসেস ও মিস্টার সরকার কে শান্তা দিচ্ছেন।
মিসেস চৌধুরী ও মিসেস সরকার নাতনিদের বুকের সাথে জরিয়ে কাঁদতে শুরু করে।
মিস্টার রায়হান সরকার- আমার নীল আমার একমাত্র মেয়ে আমাকে ছেড়ে চলে গেলো আমরা বাঁচবো কিভাবে?
অভ্র- আমার নীল নীল নীল… কেনো চলে গেলে তুমি নীল.? (বলেই আবার চিৎকার দেয়)
মিসেস চৌধুরী- বাবা অভ্র দেখ তোর মেয়েদের দিকে একটু তাকা.!
অভ্র- ওই বাচ্চাদের আমার কাছে আনবে না আজ ওদের দুইজনের জন্য আমার নীল আমাকে ছেড়ে চলে গেছে আমি ওদের দুইজনকে কখনো আপন করে নিবো না আমি কখনো ওদের ক্ষমা করবো না ওরা আমার মেয়ে না ওদের কখনো আমার মেয়ে বলে পরিচয় দেবো না আমি ওদের মুখও জীবনে দেখবো না আমি সারাজীবনের জন্য লন্ডন চলে যাবো ওরা আমার জীবনের অভিশাপ ওদের জন্য আজ আমার নীল আমার জানপাখি আমাকে ছেড়ে চলে গেছে।
সকালে অফিস যাওয়ার সময় নীল আমাকে বলেছিলো প্লিজ আজ অফিস যেও না কিন্তু আমি শুনিনি মিটিংয়ের জন্য চলে যাই দুইদিন আগে আমার জানপাখি বলেছিলো ডেলিভারির সময় যদি ওর কিছু হয়ে যায় আমি কি ওকে ভুলে যাবো নাকি কিন্তু ও পরে নীল পরে আমার নীল আমাকে ছুঁয়ে প্রমিজ করেছিলো আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না। আমার নীল নীল তুমি প্রমিজ করে প্রমিজ ভঙ্গ করেছো নীল কেনো আমাকে একা করে চলে গেলে নীল কেনো নীল আল্লাহ কেনো কেঁড়ে নিলে আমার নীলকে আমার কাছ থেকে নীললললল।
(বলতে বলতে ফ্লোরে ইচ্ছা মতো ঘুসি মারছে অভ্রর হাত ফেটে থেকে রক্ত বের হচ্ছে)
আকাশ, শুভ- অভ্রকে সামলাতে প্রায় সব রকম চেষ্টা করছে কিন্তু অভ্র কোনো কিছুতেই শান্ত হচ্ছে না কেনোই বা হবে ওর আত্মা ওর কলিজা ওর জানপাখি যে ওকে ছেড়ে চলে গেছে। পাগলের মতো করছে অভ্র কেঁদেই যাচ্ছে চোখের পানি জেনো কোনো বাঁধাই মানছে না ঝড়ছে তো ঝড়ছেই।
আমি তখন নীল এর কথা শুনে কেনো থেকে গেলাম না আমার নীলপরী.!
.
.
#চলবে …..?
(জানি এই পর্ব টা সবার ভালো লাগবে না কারণ নীল । আর গল্পটা পরবর্তী পর্বে শেষ করে দিবো সো সবাই আপনাদের গুরত্বপূর্ণ মন্তব্যজানাতে ভুলবেন না)
“হ্যাপি রিডিং”………
.
“কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ”……… ❌