#অভ্র_নীল
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_27
______
পরেরদিন সকালে.!
জানালার কাচ ভেদ করে মিষ্টি রোদের দুষ্ট আলো রুমের মধ্যে উঁকি মারছে…!
নীল চোখ খুলে নিজের অভ্রর লোমহীন বুকে উপস্থাপন করলে…!
রোদের আলো অভ্রর মুখের উপর পরছে…!
অভ্রর বড় বড় চুল গুলো কপালের উপর পরে আছে নীল এক হাত দিয়ে চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে অভ্রর কপালে আলতো করে একটা চুমু একে দিয়ে বেড থেকে উঠে গেলো…!
আলমারী থেকে ব্লাক একটা শাড়ি বের করে সোপার উপর রেখে ব্লাউজ আর পেটিকোট নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো…!
৩০মিনিট পর বেরিয়ে আসলো….!
রুমে এসে শাড়িটা সুন্দর করে পরে নিলো।
ভেজা চুল গুলো হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে শুকিয়ে নিচ্ছে…!
চুল শুকাতে শুকাতে নীল এর চোখ পরল অভ্রর উপর অভ্র নড়াচড়া করছে। কারণ সূর্যের আলো এখন একটু বেশি.!
যা অভ্রর ঘুমের ডিস্টার্ব করছে সারারাত অনেক পরিশ্রম করছে…!
নীল সেটা লক্ষ্য করে জানালার সামনে গিয়ে পর্দা লাগিয়ে দেয়। এখন অভ্র আর নড়ছে না।
নীল দুই মিনিট পর আবারও পর্দা সড়িয়ে দেয়।
অভ্র আবারও নড়ে উঠে। নীল তা দেখে শব্দ করে হেসে দেয়। অভ্র মিটমিট করে চোখ খুলে..!
অভ্র- নীল জ্বালাচ্ছো কেনো?
নীল- তুমিই স্টার্ট দিয়েছো…?
অভ্র- মানে?
নীল- পুরো রাত আমাকে জ্বালাইছো তার শোধ নিচ্ছি….!
অভ্র- আচ্ছা! তো কি এখন আবারও জ্বালাবো নাকি?
নীল- এই না..!
অভ্র- মিষ্টি খাবো….! বেডের উপর বসে বসে।
নীল- আচ্ছা তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমি কিচেন থেকে মিষ্টি নিয়ে আসছি…!
অভ্র- আমার নীলপরী ওই মিষ্টি না। অন্য মিষ্টি খাবো।
নীল- কোন মিষ্টি?
অভ্র- তোমার ঠোঁটের মিষ্টি….!
নীল- ইশশশ মামা বাড়ি আবদার নাকি হুহহহহহ আমার ঠোঁট এমনিতেই রাতে কামড় দিয়ে কেটে ফেলছো…!
অভ্র- মামার কাছে নয়, বউয়ের কাছে আবদার…! রাতে কামড় দিছি এখন চুমু দিয়ে শোধ করে দিচ্ছি।
নীল- নাহ…!
অভ্র– হুমমম…!
তারপর অভ্র বেড থেকে নেমে গিয়ে নীল কে জরিয়ে ধরে। নীল এর ঘাড়ে গলায় কপালে গালে চুমু দেয়।
নীল- অনেক হইছে সরো…!
অভ্র নীল এর গালে হাত রেখে নীল এর ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে করে নিলো…!
অভ্র নীলকে ছাড়তেই নীল দৌঁড়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে…!
পেছনে তাকিয়ে দৌঁড়াচ্ছিলো, অভ্র আসছে কিনা দেখছে অভ্র রুমে দাঁড়িয়ে পেটে হাত দিয়ে হাসছে।
নীল দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে এসে তোয়ার সাথে ধাক্কা লাগে…!
তোয়া ঠাসস করে ফ্লোরে পরে যায়।
তোয়া- ওরে বাবা গো ওরে মা গো ওরে দাদা দাদী গো আমার পাছা গেলো গো থুক্কু থুক্কু আমার মাজা গেলো গো….!
নীল- সরি সরি তোয়া আমি দেখতে পাইনি তোমাকে.!
তোয়া- ষাঁড়ের মতো দৌঁড়ালে দেখবা কিভাবে আমার মতো আসতো একটা মানুষকে নাকি দেখে নাই আল্লাহ গো মাজা ডা ভাইঙ্গাই গেছে মনে হয়।
নীল- তোয়া…….! হাত ধরো আর উঠো….!
তোয়া নীল এর হাত ধরে উঠলো আর দু’জনেই হাসতে হাসতে নিচে চলে আসলো…!
নীল তোয়া কিচেনে গিয়ে মিসেস চৌধুরীকে হেল্প করছে ব্রেকফাস্ট বানাতে..!
ব্রেকফাস্টের জন্য সবাই ডাইনিং টেবিলে এসে হাজির….!
মিসেস চৌধুরী, মিস্টার চৌধুরী, তোয়া ওরা কনফিউজড। কালকে অভ্রর সাথে আজকের অভ্রর কোনো মিলই নেই। এত খুশি কেনো অভ্র নীল কিম
এমন করেছে।
মিসেস চৌধুরী- বাবা তুই এত খুশি যে?
অভ্র- খুশি হওয়ার মতোই কথা মা…. আমি আমার সত্যি কারের পরীকে খুঁজে পেয়েছি…!
মিস্টার চৌধুরী- আবার….
তোয়া- কে সে?
অভ্র- এবার রিয়েল।।।।
মিসেস চৌধুরী- কে?
অভ্র নীল এর শক্ত করে ধরে…!
অভ্র- আমার নীল আমার ছোটোবেলার সেই পরী যাকে আমি খুঁজেছি আর এই পরীকেই আল্লাহ আমাকে পাইয়ে দিয়েছেন।
মিসেস চৌধুরী। মিস্টার চৌধুরী তোয়া। কিছুটা অবাক হয় পরে অনেক খুশি হয়। কারণ ওনারা দেখেছে অভ্রকে পরীকে খুঁজতে।
মিসেস চৌধুরী- তোর ছোটো বেলার ভালোবাসা তাই তুই নীলকে প্রথম দেখাতেই ভালোবাসা অনুভব করেছিলি কিন্তু আসল কানেকশন টা বুঝতে পারিসনি। এখন বুঝলি তো কেনো নীল কে তুই এত ভালোবেসে ফেলেছিলি প্রথম দেখাতেই….!
অভ্র- হুমমমমম……
বলেই নীলকে চোখ টিপ মারলো….!
নীল তৎক্ষনাৎ চোখ সরিয়ে নিলো।
নীল- লুচ্চা একটা…!
অভ্র নীলের কথা শুনে শব্দ করে হাসি দিলো।
চৌধুরী হাউজ আগের মতো হাসি খুশিতে ভড়ে উঠলো…..!
অভ্র নীলকে কলেজ ড্রপ করে দেয় দেন অফিস চলে যায়।
কলেজ থেকে নীল ড্রাইবার এর সাথে বাড়ি ফিরে আসে…!
সারাদিন কাজের ফাঁকে ফাঁকে অভ্র নীলকে কল দিয়েছে নীল এর খোঁজ নিয়েছে…..!
রাতে ডিনার কমপ্লিট করে সবাই রুমে চলে যায়…!
নীল আয়নার সামনে বসে চুলে চিরুনি করছিলো।
অভ্র সোফাতে বসে ল্যাবটপে কাজ করছিলো।
নীল- উফফ এই চুলগুলো আমি একদিন ঠিক কেটে ফেলবো।
অভ্র নীল এর কথা শুনে ল্যাবটপ থেকে চোখ সরিয়ে নীল এর দিকে তাকালো।
অভ্র- কেনো চুল তোমাকে কি করছে?
নীল- কি করছে মানে কি এত বড় বড় চুল কি সামলানো যায় না-কি আমার বিরক্ত লাগে আমি জাস্ট কেটে কোমড় পর্যন্ত করে ফেলবো। (নীল এর চুল হাটুর থেকে আর একটু নিচ পর্যন্ত লম্বা + বড় আমার মতো হিহিহি)
অভ্র- খবরদার চুলে হাত দিবা না। বলেই ল্যাপটব বন্ধ করে উঠে গিয়ে পেছন থেকে নীল এর চুলে মুখ গুজে দেয় অভ্র নিজের নাক মুখ নীল এর চুলের সাথে ঘোসাঘাসি করতাছে।
নীল- কি করছো?
অভ্র- তুমি জানো না তোমার চুল আমার অনেক প্রিয় এই চুল কখনো কাটার কথা চিন্তাও করবে না।
আজ থেকে তোমার চুলের দায়িত্ব আমার আমি তেল দিয়ে দিবো আঁচড়ে দিবো বেনি করে দিবো। বুড়ো হয়ে গেলেও তোমার চুল আমিই আঁচড়ে দিবো. কি চলবে নীলপরী?
নীল- শুধু চলবে না দৌঁড়াবে ও…! হিহিহি..!
অভ্র- দরকার হলে গোসল করার আগে চুলে স্যাম্পু ও করে দেবো। (আয়নার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দিয়ে)
নীল- না থাক ওইটা আমিই করতে পারবো.!
বলে দু’জনেই হাসতে শুরু করে। অভ্র হাসি থামিয়ে নীল এর টোল পরা গালে আলতো করে একটা চুমু দিলো।
নীল আয়নাতে অভ্রকে দেখছে।
অভ্র তেলের বোতল হাতে নিয়ে তেল হাতের তালুতে ঢেলে নীল এর চুলে দিয়ে দিচ্ছে…!
নীল অন্য মনস্ক হয়ে অভ্রকে দেখছে।
অভ্র নীল এর সম্পূর্ণ চুলে তেল দিয়ে দেয় দেন চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে বেনি করে দেয়।
অভ্র- কমপ্লিট….!
অভ্রর কথায় নীল এর ধ্যান ভাঙ্গে নীল আয়নাতে নিজেকে দেখে চিৎকার দিয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়।
নীল- অভ্র এই কি করছো?
অভ্র- কি করছি?
নীল- পেত্নী পেত্নী লাগছে আমাকে এত তেল দিছো কেন চুল চিপচিপা করে ফেলছো। এত তেল কেউ দেয় পুরো বোতলের তেল সব দিয়ে দিছো নাকি?
অসভ্য…….
অভ্র- কোই পেত্নী লাগছে খুব সুন্দর লাগছে পুরো পরীর মতো। আমার নীলপরী আমার কাছে সুন্দর লাগলেই হবে আর তুমি পেত্নী হলেও আমার কাছে বিশ্বসুন্দরী…..
আর হ্যাঁ আমি ইচ্ছে করেই তেল বেশি দিয়েছি কারণ তুমি যখন কলেজ যাও ছেলেরা তোমাকে এভাবে ওভাবে দেখে যেটা আমার সহ্য হয় না। আর এইভাবে গেলে কেউ তোমার দিকে তাকাবে না। তো আমি একলাই দেখতে চাই আমার বউকে অন্য কেউ কেনো দেখবে।
বলেই নীল এর কপালে একটা চুমু দেয়।
নীল- এই সব না করে একটা বোরকা কিনে দাও বোরকা পরে গেলে আর কেউই দেখবে না।
অভ্র- গুড আইডিয়া! এটা তো আমি ভেবেই দেখিনি। কালই কিনে আনবো বোরকা!
নীল- কিহহহহহ…?
অভ্র- হুম! আমি চাই আমার নীল শুধু আমার সামনেই সুন্দর লাগুন আর কারো সামনে না। বলেই নীল এর ঠোঁটে কিস করে বসলো….!
তারপর আর কি রুমের লাইট অফ হয়ে গেলো।
আর এভাবেই চলছে অভ্র নীল এর ভালোবাসা খুনসুটি ভালোবাসা রাগ অভিমান দুষ্টামিতে ভরপুর…!
১ মাস পর……!
.
.
.
#চলবে …..?
.
রি-চেইক করা হয়নি ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন!
ভালো থাকবেন সবাই!
“হ্যাপি রিডিং”………
.
“কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ”……… ❌