এক মুঠো রোদ পর্ব-৪

0
1159

#এক_মুঠো_রোদ
#Writer_নৌশিন_আহমেদ_রোদেলা
#part_4
#collected Sk Galib
হোয়াট?চুম্মাচুম্মি, জড়াজড়ি বলতে কি বুঝাতে চাইছেন আপনি?মাইন্ড ইউর ল্যাংগুয়েজ মিস.(রাগী গলায়)
.
হুহ। দেখুন….আপনার সাথে আমি ঝগড়া করতে চাচ্ছি না। নিউজ লিখা আমার প্রফেশন তাই লিখেছি। সো লেট মি গো।
.
আপনার প্রফেশন নিয়ে আমার কোনো প্রবলেম নেই মিস.রোজা। বাট আমাকে নিয়ে যে ফেইক নিউজটা ছাঁপিয়েছেন, প্রবলেমটা আমার সেখানে। আপনি নতুন করে আরেকটা নিউজ লিখুন এবং এটা যে ভুল ছিলো সেটা স্বীকার করুন। ব্যস আপনাকে ছেড়ে দিবো।
.
হোয়াট? ভুল!! নো ওয়ে। আই হেভ আ প্রুভ।
.
রোজার কথায় ভ্রু কুঁচকালো মৃন্ময়। এমনিতে খুব শান্ত স্বভাবের মানুষ সে কিন্তু এই মুহূর্তে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারছে না কিছুতেই। নিউজ ছাপানোর অলরেডি ৪ ঘন্টা হয়ে গেছে। তা নিয়ে সমালোচনার ঝড়ও বয়ে যাচ্ছে জোড়েসুরে আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছে রুজি। এখনই এসব স্টপ না করতে পারলে …. উফফ আর ভাবতে পারছে না সে।।চোখ বন্ধ করে একটা দীর্ঘশ্বাস টেনে নিয়ে নিজেকে শান্ত করলো মৃন্ময়। শান্ত স্বরে বলে উঠলো –
.
কি প্রুভ আছে আপনার কাছে?
.
রোজা ঝটপট ফোন বের করে রকর্ডিং অন করে বললো-“শুনুন। ” মৃন্ময় শুনলো। রেকর্ডিং শেষ হতেই ভ্রু কুঁচকে রোজার দিকে তাকালো। রোজা বিজয়ী স্বরে বলে উঠলো –
.
ফামহাউসে একা একা মিস রুজির সাথে ক্রিকেট খেলতে যান নি নিশ্চয়? আর আপনার এসিসট্যান্ডের বলা “ডেট” এর অর্থ কি?(ভ্রু নাচিয়ে)
.
মৃন্ময় নিজেকে কন্ট্রোল করে বলে উঠলো –
.
ডাফার!! এটুকু বুদ্ধি নিয়ে জার্নালিজম! হে বিধাতা রক্ষা করো। (জোড়ে শ্বাস টেনে) দেখুন, কাজটা আমার পার্সোনাল ছিলো। ব্যাপারটাকে আমি পাব্লিক করতে চাইনি বলেই সোহেলকে সাথে নেওয়া হয় নি। মিস রুজির সাথে আমার একটা ডিল কনফার্ম হচ্ছে আর সোহেল সেই ডেটের কথায় বলেছে। অন্যকিছু নয়। এই ডিলটা আমার ইমোশনের সাথে জড়িয়ে আছে আর আপনার এই নিউজে রুজি সেটা বাজে ভাবে ছড়ানোর একটা ওয়ে পেয়ে যাচ্ছে। প্লিজ স্টপ দিস ননসেন্স।
.
সোহেল এবার অপরাধী স্বরে বলে উঠলো –
.
ম্যাম প্লিজ। স্যার কাউকে কিডন্যাপ করে এতো ভালো বিহেভ করে না। এতোক্ষণে উড়াধুরা মাইর শুরু করতো কিন্তু আপনি মেয়ে আর বিষয়টা সত্যি সেনসেটিভ বলে উনি চুপ। এটা উনার পারিবারিক বিষয়। রুজি ম্যাম উনার গার্লফ্রেন্ড নন। ওই মহিলা তো এমন খবরের জন্য মুখিয়ে থাকে। আপনি নিউজ লিক করে তাকে আরো সুযোগ করে দিলেন।
.
আমি আপনাদের কথা বিশ্বাস করবো কিভাবে?হাও?মিথ্যাও তো বলতে পারেন।
.
মৃন্ময় এবার মুখ খুললো। পকেটে হাত ঢুকিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলে উঠলেন –
.
মিস রোজা! আপনার কাছে এই মুহূর্তে দুটো অপশন আছে। ১. আমাদের কথা মেনে নিয়ে নিউ নিউজ ক্রিয়েট করেন। ২. সারাজীবনের জন্য গুম হয়ে যান।
.
ম ম ম মানে?কি বলতে চাইছেন আপনি?গুম হয়ে যাবো মানে?
.
মৃন্ময় বাঁকা হাসলো। এক আঙ্গুলে ভ্রু চুলকিয়ে বলে উঠলো –
.
মানেটা সিম্পল। আপনি আমার কথামতো নিউজ লিখবেন তো চুপচাপ যেখান থেকে আনা হয়েছিলো সেখানে ফিরিয়ে দিয়ে আসা হবে আর যদি…যদি রাজি না হোন তাহলে ফিরে যাওয়ার কথাটা ভুলে যান। আপনার বাবাকে আপনার ফোন থেকে অলরেডি ম্যাসেজ করে দেওয়া হয়েছে যে আপনি ২ দিনের জন্য বান্দরবান ভ্রমনে চলে গেছেন। এভাবে হুটহাট পালিয়ে বেড়ানো নাকি আপনার স্বভাব?সো আপনার বাবা আপনাকে খুঁজতে আসছেন না। আমাদের ডিলে রাজি হলে আপনার বাবার ভাষ্য মতো বান্দরবান থেকে ফিরে আসবেন আপনি নয়তো….
.
আআআপনি…. আপনি এমনটা করতে পারেন না।( বিস্মিত হয়ে)
.
পারি মিস রোজা। আপনি জানেনও না কোথায় আঘাত করেছেন আপনি। এটা আমার ক্যারিয়ারের ব্যাপার হলেও কিচ্ছু বলতাম না আপনাকে কিন্তু….এনিওয়
ে আপনাকে ২ দিনের সময় দেওয়া হলো নাও ডিসিশন ইজ ইউরস্…..
.
রোজা বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে আছে। একটা ছোট্ট নিউজের জন্য এতোকিছু হয়ে যাবে ভাবতেই পারে নি রোজা। মাত্র এইচএসসি শেষ করে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে সে। বাবার সাথে জেদের বশেই একটা আর্টিকেল ছাপিয়েছে আর সেই ডিসিশনটা যে তার জীবনে এমন একটা দিন ডেকে আনবে ভাবতেই পারে নি রোজা। সুপারস্টাররা বুঝি এতোটা ডেঞ্জারাস হয়?? মাথার এতোসব খারাপ চিন্তাকে উড়িয়ে দিলো রোজা। জার্নালিস্ট হলে তো একটু আধটু বিপদে পড়তেই হয়। বাবাও তো কিছুদিন পর পর কতো কাঁটাছেড়া নিয়ে ঘরে ফিরে…. রোজাকে ভাবাচ্ছে মৃন্ময়ের কথাগুলো। কি এমন ইমোশন জড়িয়ে আছে এতে?যার জন্য এতোকিছু করছে মৃন্ময়? মৃন্ময়ের কথায় ভাবনায় ছেদ পড়লো রোজার। সচেতন চোখে তাকালো মৃন্ময়ের মুখের দিকে। হালকা ব্রাউন একঝাঁক চুল তার মাথায়, ফর্সা মুখে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি, ঠোঁট দুটো ডার্ক রেড, খাঁড়া নাকের উপর একটা ছোট্ট কালো তিল,,রোজার ছোট ভাই রিদ মৃন্ময়ের খুব ভক্ত…ওর লেখা লিরিক্স,ওর গাওয়া গান আর ওর মুভিগুলোও একদম গিলে খায় সে। তাই প্রতিবার রোজাকে একরকম বাধ্য হয়েই রিদকে সঙ্গ দিতে হয়েছে। মৃন্ময় সুইট। টিভিতেও লাগতো কিন্তু সামনে যতটা ততটা লাগে নি কখনোই। মৃন্ময়ের গায়ে ব্লু শার্ট । গায়ের কালারের সাথে নীল রংটা যেনো মিশে একাকার। মৃন্ময় হাতা ফোল্ড করতে করতে সোহেলকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো –
.
স্টুডিও তে কাজ আছে আমার। মিস.রোজা আমার রুমেই থাকুক। কাজের লোকদের উপরের তলায় আসা একদমই নিষেধ করে দাও। কেউ যেন উনার উপস্থিতি বুঝতে না পারে।
.
ওকে স্যার। বাট ম্যাম আপনার রুমে থাকলে, আপনি কোথায়? না মানে…
.
আমি আমার রুমেই থাকবো।। আই উইল ম্যানেজ সোহেল। ডোন্ট ওয়ারি। এন্ড ইউ?মিস রোজা! আপনি চিৎকার করতেই পারেন… রুমটা সাউন্ডপ্রোফ সো ইউ ক্যান ডু ইট।
.
কথাটা বলেই একটা ফাইল হাতে বেরিয়ে গেলো মৃন্ময়। সোহেলও তার পিছু পিছু বেরিয়ে দরজাটা বাইরে থেকে পাকাপোক্ত ভাবে লাগিয়ে দিয়ে গেলো। রোজা মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। সে সত্যিই ভেবেছিলো মৃন্ময় চলে গেলে চিৎকার করে মানুষ জড়ো করবে সে….কিন্তু রুমটা সাউন্ডপ্রোফ হওয়ায় সেই ডিসিশন চেঞ্জ। এমনি ক্ষুধায় পেটে ইঁদুর নাচছে এর মধ্যে চিৎকার চেচামেচি করে এনার্জি ওয়েস্ট করার কোনো মানেই হয় না। শালা…নায়াক,,ফায়ক,, পায়ক জীবনে বিয়ে হবে না তোর। রোজার মতো লক্ষ্মী একটা মেয়ের ফোন বাজেয়াপ্ত করার অপরাধে তোমাকে চিরজীবন চিরকুমার থাকার সাজা দেওয়া হলো।। আমিন। কথাটা ভেবেই ফিক করে হেসে উঠলো রোজা। এই নায়ক সাহেবকে তো চরম জ্বালানো জ্বালাবে সে। রোজার সাথে পাঙ্গা?আগে আগে দেখো বস হতা হে কিয়া!! মনে মনে কথাটা আওড়াতে আওড়াতে বাথরুমে ঢুকে গেলো সে। মাথা ঠান্ডা করা অতিব জরুরি এবার….
.

.
নিউ মার্কেটের রাস্তা ধরে হাঁটছে আরু। কলেজ থেকে ফেরার সময় কি কি আনতে হবে তার এক লম্বা লিস্ট ধরিয়ে দিয়েছে ভাবি। আরুর খুব ঘুম পাচ্ছে…ইচ্ছে করছে রাস্তার পাশের ফুটপাতে বা পার্কের বেঞ্চে শুয়ে কিছুক্ষন ঘুমিয়ে নেয় সে।ছেলে হলে অবশ্যই এই কাজটা করতো সে। কিন্তু মেয়েদের কি এমন করা সাজে? একদমই না। এদিকে আরুর মনটাও বেশ খারাপ আজ। কাল সারারাত সে ওই মিষ্টার গ্যাংস্টারের আইডি খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে কিন্তু সে তার হাতে ধরা দিলে তো?আচ্ছা?এই গ্যাংস্টাররা কি ফেসবুক ইউজ করে না? তাদের কি পিক তোলে ফেসবুকে আপলোড দিতে ইচ্ছে করে না? এসব ভাবতে ভাবতেই এগিয়ে গেলো আরু। কিছুটা সামনে যেতেই একটা সুপার মলের সামনে রাফিনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো। তার সামনে একটা মধ্যবয়স্ক লোক হাতজোড় করে কিছু একটা বলছে কিন্তু রাফিনের সেদিকে কোনো ভাবাবেগ নেই। একদম শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে। আরু দৌড়ে সেখানে গিয়েই হাঁফাতে লাগলো। কয়েকবার জোড়ে শ্বাস নিয়েই গলায় জোড় দিয়ে ডেকে উঠলো –
.
এইযে মিষ্টার ভিলেন??এই যে এদিকে এদিকে…
.
রাফিন সেদিকে পাত্তা না দিয়ে বামহাতে সানগ্লাসটা খুলে বাঁকা হেসে লোকটিকে কিছু একটা বললো। আর লোকটি মুহূর্তেই যেনো ফ্রিজড হয়ে গেলো।। তার মুখটিতে অসহায় ভাব স্পষ্ট। আরু আবারও ডাকলো। এবার পাশ থেকে এক চেলা বলে উঠলো –
.
এই মেয়ে? সমস্যা কি? যাও এখন থেকে। নয়তো…
.
আরু ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে দিলো এক ধমক। আরুর ধমকে ছেলেটা যেনো বোকা বনে গেলো। আরু এবার যেনো সাহস পেয়ে বসলো। গলার স্বর চড়া করে বলে উঠলো –
.
এই এই কালো কিচমিচ জাস্ট শাট আপ। আমাকে ধমক দাও?আমি তোমার সাথে কথা বলতে আসছি? মেয়ে দেখলেই কথা বলতে ইচ্ছে করে না?অামি তো তোমার বসের সাথে কথা বলবো সো সাইডে কাটো…হুহ(হাত নেড়ে)
.
কথাটা বলেই ছেলেটাকে পাশ কাটিয়ে দৌড়ে রাফিনের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো সে। খুশিতে গদগদ হয়ে বলে উঠলো – “হ্যালো মিষ্টার গ্যাংস্টার!” রাফিন এবার ভ্রু কুঁচকে তাকালো। এটাই যে কালকের মেয়েটা তা একবার তাকিয়েই বুঝতে পারলো সে। পাশে দাঁড়ানো লোকটাও অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। রাফিন দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো –
.
হুয়াট ডু ইউ ওয়ান্ট? বলেছিলাম না? নেক্সট টাইম সামনে পড়লে খবর করে দিবো।
.
এই আপনি এভাবে কথা বলেন কেন?সুইট করে কথা বলুন। জানেন না? মেয়েদের সাথে সুইট করে কথা বলতে হয়….এনিওয়ে চকলেট খাবেন?আমার কাছে আছে দিবো?
.
আরুর কথায় সবাই হতবাক। পাশে দাঁড়ানো কাঁদো কাঁদো আঙ্কেলটাও “হা” করে তাকিয়ে আছেন। রাফিনের রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে। এইটুকুন একটা মেয়ের এতো সাহস হয় কি করে? ইচ্ছে করছে ধরে এক আছাড় মারে…কিন্তু নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত করে বলে উঠলো সে-
.
এই চারপাশে যে চেহারাগুলো দেখছো। সবগুলোই আমার লোক….এদের মাঝে কোনো মায়া মমতা নেই। এরা শুধু টাকা আর নেশা চিনে। এই হিংস্র চোখগুলো যে তোমায় গিলে খাচ্ছে,, বুঝতে পারছো না? তোমাকে ছিঁড়ে খেতে তাদের বেশি সময় লাগবে না। (একটু এগিয়ে এসে) আর আমি একটু বেশিই হিংস্র। ওদের হিংস্রতা জেগে উঠলে কে বাঁচাবে তোমায়?ভয় লাগে না?
.
আরু ফট করে বলে উঠলো –
.
নাহ! লাগে না। ভয় লাগবে কেনো? আপনি তো আছেন। আপনিই বাঁচাবেন। সব কটাকে ধরে একদম হিরোর মতো টপকাবেন…ওয়াও।
.
রাফিন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো মেয়েটা নিতান্তই বাচ্চা। সে জানেই না যে রাফিন ঠিক কতোটা খারাপ। কতোটা হিংস্র! কতোটা হার্টলেস। রাফিন বামহাতে সানগ্লাসটা পড়ে নিয়ে ডানহাতে হুট করেই চড় বসালো আরুর গালে। তারপর ভ্রু নাচিয়ে বলে উঠলো –
.
আমি ভালো মানুষ নই। মাইন্ড ইট!!নিজের ভালো বুঝো আর কেটে পড়ো….নয়তো…আই উইল ডেসট্রয় ইউ।
.
কথাটা বলেই গাড়িতে উঠে গেলো রাফিন…. সাথে উঠলো তার সাঙ্গ পাঙ্গরা। সাই সাই করে একের পর এক গাড়ি আরুকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। আরু স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওর খুব কান্না পাচ্ছে…খুব বেশি কান্না। কেন মারলো ওকে রাফিন?ও তো শুধু চকলেটই অফার করেছিলো। তাই বলে এভাবে চড় মারবে? কিছুক্ষণ ঠাঁই দাঁড়িয়ে থেকে কান্নামাখা চোখ নিয়ে হাঁটা দিলো সে। বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে না তার। কোথায় যাবে সে?আচ্ছা হিমুর মতো আজ সারা শহরটা পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়ালে কেমন হয়? সে হবে হিমুর মহিলা ভার্সন…ব্যাপারটা কি খারাপ হবে? আচ্ছা মার্কেট থেকে কি একটা হলুদ শাড়ি কিনে নিবে সে…আর জুতোগুলো?এগুলো কি করবে?ছুঁড়ে ফেলে দিবে?? এমন সময় মেঘ ডেকে উঠলো। আরু মেঘমাখা চোখে আকাশের দিকে তাকালো। বাহ্ আজ আকাশেও কেমন ঘন কালো মেঘ। আকাশও বুঝি কাঁদবে আজ?কাঁদুক! আরুর সাথে সেও কাঁদুক! মন উজাড় করে কাঁদুক।
.

.
রাত প্রায় ১২ টা। মৃন্ময় কাজ শেষ করে রুমে এসে দরজা লাগিয়ে ওয়াশরুমের দিকে পা দিতেই হুড়মুড়িয়ে পড়ে গেলো সে। সাথে সাথেই কানে এলো খিলখিল হাসির শব্দ।
.
ওরে ব্যস্! আপনার মতো হিরো প্রজাতির লোকরাও ফ্লোরে গড়াগড়ি খায় নাকি?তবে লুকিং গুড হ্যা? ক্যারি অন বস…ক্যারি অন (চোখ টিপে)
.
কথাটা বলেই দাঁত কেলিয়ে একটা হাসি দিলো রোজা। মৃন্ময়ের দিকে তাকিয়ে চোখটা টিপে দিয়ে বসে পড়লো সোফায়। মৃন্ময় অবাক চোখে মেয়েটিকে দেখছে। এই সাধারণ একটা পুচকি মেয়ে একদিনেই কি নাজেহাল অবস্থা করেছে তার!! এই মেয়ের কি ভয় ডর নেই? তাকে যে এমন একটা নির্জন বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে তাতে কি তার আত্মা কাঁপে না? মৃন্ময় ফ্লোর থেকে উঠে দাঁড়িয়ে শার্ট ঠিক করতে করতে রাগী গলায় বলে উঠলো –
.
মিস রোজা! আপনার সাহস দেখে আমি হতবাক। আপনার সাহস কি করে হয় আমাকে ল্যাং দিয়ে ফেলে দেওয়ার?ইউউউ….
.
কিহ?আমি আর ল্যাং?অবিশ্বাস্য!!তাছাড়া মিষ্টার মৃগী রোগী (মৃন্ময় রেগে তাকাতেই) উপপস্ আই মিন মিষ্টার মৃন্ময় , আমি আপনাদের মতো হিরো প্রজাতির লুচু মানুষকে টাচ করি না। পা দিয়ে তো আরো না। এক্চুয়েলি আমার ঘেন্না লাগে…..
.
রোজার কথায় মৃন্ময় হতবাক! তাকে দূূর থেকে একবার দেখার জন্যও যেখানে মেয়েরা হা-হুতাশ করে মরে সেখানে এই মেয়ে তার এতো কাছে দাঁড়িয়ে বলছে সে তাকে ঘৃণা করে!! আজ শুধুমাত্র এই মেয়েটার জন্য তার মনে হচ্ছে সুপারহিট নায়ক হয়ে সে ভীষণ রকম ভুল করেছে। অসম্ভব রকম ভুল। মৃন্ময় এবার রোদের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। রোজার গায়ে অসম্ভব রকম ঢোলা একটি টি-শার্ট যা তার হাঁটুর নিচ পর্যন্ত নেমে গেছে। পরনে তার থেকে ডবল সাইজের একটি টাওজার। টাওজারটা একহাত পরিমান গোটানোর পরও পায়ের পাতা ছুঁই ছুঁই। গলায় ঝুলছে বড়সড় একটা তোয়ালে। কিছুক্ষণ বিস্তারিত চোখে তাকিয়ে থাকার পর হঠাৎই কপালের রগ ফুলে উঠলো মৃন্ময়ের। কোনোরকম রাগ কন্ট্রোল করে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো সে-
.
আপনি আমার টি-শার্ট আর টাওজার পড়ার সাহস কোথায় পেলেন?
.
# চলবে

#part_5
https://m.facebook.com/groups/459470204903112/permalink/943485889834872/

#part_3
https://m.facebook.com/groups/459470204903112/permalink/943485169834944/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here