এক মুঠো রোদ পর্ব-৩৩

0
920

#এক_মুঠো_রোদ
#Writer_নৌশিন_আহমেদ_রোদেলা
#part_33
#collected Sk Galib
রোজারা চট্টগ্রাম পৌঁছুতে পৌঁছুতে সূর্য হেলে পড়েছে পশ্চিমের দীগন্তে। চট্টগ্রাম শহরটা তখন ফ্যাকাশে অন্ধকারে গা ঢাকতে ব্যস্ত। রোজা-মৃন্ময় আর তীর্থ স্টেশন থেকে বেরিয়েই পাশের একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসলো উদরপূর্তির জন্য। দীর্ঘ জার্নিতে তিনজনেই অসম্ভবরকম ক্লান্ত। কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো খাবার মুখে দেওয়ার আগমুহূর্তে। কোথা থেকে একজন চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
—” আরিয়ান মৃন্ময়!”
মৃন্ময় সচেতন চোখে তাকিয়ে নিজেকে আড়াল করার শেষ চেষ্টা চালালো কিন্তু ততক্ষণে রেস্টুরেন্টের আগ্রহী জনতার প্রধান আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছে সে। একজন দু’জন করে ক্রমেই ভীর বাড়তে লাগলো। সেলফি, অটোগ্রাফ, প্রশ্ন এসবের ভীরে খাওয়াটা হয়ে উঠলো না আর৷ এতো ভীড়াভীড়ি আর চেঁচামেচিতে বিরক্ত হয়ে কপাল কুঁচকে তাকালো রোজা। মৃন্ময়কে ঠোঁটে স্মিত হাসি ঝুলিয়ে রাখতে দেখে শরীরটা আরো জ্বলে উঠলো রোজার। আচ্ছা? এটাও কি কোনো জীবন হতে পারে? যে জীবনে মন খুলে চলা যায় না, খাওয়া যায় না, মন ভরে শ্বাস নেওয়া যায় না, এমনকি বিরক্ত হয়ে চিল্লানোও যায় না সে জীবনকে কি আদৌ জীবন বলে? মৃন্ময়কে এই মুহূর্তে চিড়িয়াখানার কোনো এক্সপেন্সিভ জীব মনে হচ্ছে রোজার। রাগ, বিরক্তি আর ক্ষুধাই ডানহাতে কপাল চেপে ধরলো রোজা। বিরবির করে বললো,
—” ইম্পসিবল! এভাবে বাঁচা জাস্ট ইম্পসিবল।”
রোজার কথা তীর্থের কানে যেতেই অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো সে। খাবারের দিকে ইশারা করে ফিসফিস করে বললো,
—“দোস্ত? খাবারগুলো আমার দিকে কেমন প্রেম প্রেম নজরে তাকিয়ে আছে দেখছিস? আমি এবার খাইতে না পাইলে ডিরেক্ট আকাশে উইঠা যামু দোস্ত। একদম আল্লাহ্ পেয়ারা! শালার কপাল…”
তীর্থের ফিসফিসানির জবাব না দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বসে রইলো রোজা। টেবিলে রাখা কাঁচের গ্লাসগুলো ছুঁড়ে মেরে মৃন্ময়ের প্রতিটা ফ্যানের মাথা ফাটিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে তার। রিডিকিউলাস!মৃন্ময় হয়তো রোজার অস্বস্তিটা বুঝতে পারলো। হঠাৎই উঠে দাঁড়িয়ে তীর্থ-রোজাকে ইশারা করে বেরিয়ে যেতে বললো। নিজেও স্মিত হেসে ভীড় ঠেলে বেরিয়ে এলো বাইরে। বিরক্তিতে চোখ-কান লাল হয়ে আছে রোজার। দেখতে পুরো ক্ষেপা বাঘিনীর মতো লাগছে তাকে। মৃন্ময় দ্রুত ফোন বের করে সোহেলকে ফোন লাগালো। দু’বারের মাথায় ফোন তুলতেই রাগ চেপে বলে উঠলো মৃন্ময়,
—” স্টুপিড! ঠিক টাইমে ফোন রিসিভ করতে পারো না তুমি?”
সোহেল মুখ কাঁচুমাচু করে বললো,
—“সরি স্যার।”
—” তোমার সরি তোমার কাছেই রাখো। বান্দরবানে যাওয়ার জন্য যে গাড়ি ঠিক করেছিলে তার ড্রাইভারকে ফোন দিয়ে পাঁচ মিনিটের মাঝে স্টেশনের পাশের রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়াতে বলো। ফ্যানদের মাঝে ফেঁসে গেছি। কুইক।”
সোহেল হন্তদন্ত হয়ে বললো,
—“ওকে স্যার।”
মৃন্ময় ফোন কাটার আগেই আবারও ভীরের মাঝে পড়ে গেলো ওরা। এমন ভীর আর হট্টগোলে রোজার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম। কিছুক্ষণ এই দমবন্ধকর অবস্থা চলার পর কাঙ্ক্ষিত গাড়ির দেখা মিললো তাদের। কোনোরকম গাড়িতে উঠে হাফ ছেড়ে বাঁচলো ওরা। গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার পর রোজা প্রথম যে কথাটা বললো তা হলো,
—“কিভাবে সহ্য করেন আপনি? এটা কি আসলেই জীবন নাকি সার্কাস?”
রোজার কথায় মৃদু হাসলো মৃন্ময়। হাসিমুখে বললো,
—” আমার অভ্যাস আছে মিস.রোজা। যখন থেকে বুঝতে শিখেছি তখন থেকে এমন লাইফ স্পেন্ড করতেই অভ্যস্ত আমি। ”
রোজা সিটে গা এলিয়ে ক্লান্ত গলায় বললো,
—“রিডিকিউলাস! এমন লাইফ স্পেন্ড করার চেয়ে সুইসাইড করাটা বেশি পছন্দের হতো আমার।”
মৃন্ময় গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। সে জানে, রোজা পারবে না তাই সে রোজাকে চাইবে না। ছোটবেলা থেকে চাওয়া মাত্রই সবকিছু হাতের নাগালে পেয়েছে মৃন্ময়। হয়তো এবারের চাওয়াটাও চাইলেই পূরণ করতে পারবে সে কিন্তু সে চাইবে না। এই চাওয়াটা অন্যায়। রোজাকে নিজের সাথে জড়ালে রোজা মুষড়ে পড়বে। তার সজীবতা,লাবন্যতা সবকিছুই হারিয়ে যাবে। তা কিছুতেই হতে দিতে পারে না মৃন্ময়। যে টোল হাসিতে বরাবরই আটকে যায় সে সেই হাসিই যদি হারিয়ে যায় তাহলে রোজাকে পেয়েই বা কি লাভ? নিজের সুখের চেয়ে রোজার ভালো থাকাটাই কি বেশি কাম্য হওয়া উচিত নয়?ভালোবাসলে ভালো থাকতে শেখার আগে ভালো রাখতে শেখতে হয়। মৃন্ময় আবারও দীর্ঘশ্বাস ফেলে সিটে গা এলিয়ে দিয়ে নিজেকে বোঝায়, “সবার জীবনেই একটা না পাওয়া থাকতে হয়। সেই না পাওয়াটাকে বিভিন্ন ভাবে পাওয়ার আকুতি নিয়ে সারাটা জীবন বাঁচতে হয়। অবসর বিকেলে সেই না পাওয়াটাকে নিয়েই ঘন্টাময় ভাবতে হয়। এই না পাওয়াটাকে বুকে আগলে ধরে ভালোবাসার আগুনে জ্বলতে হয়। সব পাওয়ার মাঝে জীবনের স্বার্থকতা নেই। মাঝে মাঝে বেদনাময় দীর্ঘশ্বাসও ফেলতে হয়।” মৃন্ময়ের ভাবনার মাঝেই চেঁচিয়ে উঠলো তীর্থ। তীর্থের চিৎকার কানে যেতেই চোখ মেলে তাকালো মৃন্ময়। ঘাড় ঘুরিয়ে তীর্থর দিকে ফিরতেই ফোনের স্ক্রিনে চোখ রেখে চোখ বড় বড় করে বলে উঠলো তীর্থ,
—“ওত্তেরি!এই অল্প সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার লোকেশনও ভাইরাল হয়ে গেছে বস! গ্রুপে গ্রুপে আপনার পিক আর বিভিন্ন ধরনের ক্যাপশনে ভর্তি হয়ে গেছে ফেসবুক ওয়াল।”
মৃন্ময় শূন্য দৃষ্টিতে তাকালো। দু’হাতে নিজের মুখ ঢেকে একটা গাঢ় নিঃশ্বাস ফেলে সোহেলকে ফোন লাগালো সে। এবার প্রথমবারেই ফোন তুললো সোহেল,
—“স্যার? স্যার, ফেসবুকে তো নিউজ লিক হয়ে গেছে। টিভিতে…”
সোহেলকে থামিয়ে ক্লান্ত গলায় বলে উঠলো মৃন্ময়,
—” প্রেসদের বলে দাও ব্যস্ততা ছেড়ে ফ্রেন্ডদের টাইম দিতে ওদের সাথে ট্যুরে বেরিয়েছি আমি। সো,এখানে আমাকে ফলো না করে আমাকে পার্সোনাল স্পেস দেওয়া হোক, ওকে? (একটু থেমে) আমি এখানে কোনোরকম ঝামেলা চাচ্ছি না সোহেল। আই হোপ তুমি হ্যান্ডেল করে নিবে।”
—” ইয়েস স্যার। আপনি একদম চিন্তা করবেন না। এর আগেও যেহেতু পেরেছি এবারও পারবো।”
—” থেংকিউ।”
ফোন কেটে ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বললো মৃন্ময়। হঠাৎ গাড়ি থেমে যাওয়ায় অবাক চোখে তাকালো রোজা। ভ্রু কুঁচকে বললো,
—” গাড়ি থামালেন কেন?”
মৃন্ময় স্বাভাবিক গলায় বললো,
—” আপনার না ক্ষুধা পেয়েছে? তীর্থ? এই রেস্টুরেন্ট থেকে কিছু খাবার প্যাক করে আনো। আমি আবারও কোনো ঝামেলায় জড়াতে চাচ্ছি না। এমনিতেও অনেক লেইট হয়ে গেছে। খাবারটা আমরা গাড়িতে বসেই খেয়ে নিবো। কি পারবে না?”
তীর্থ লাফিয়ে নেমে পড়লো। খুশিতে গদগদ কন্ঠে বললো,
—“অবশ্যই পারবো। আপনি যে দয়া করে খাবারের কথা বলেছেন তাতেই আমি কৃতজ্ঞ বস। আমি এক্ষুনি খাবার নিয়ে আসছি। ওয়েট!”
মৃন্ময় হেসে নিজের ওয়ালেটটা এগিয়ে দিয়ে বললো,
—” যত লাগে। তবে আমার জন্য লাইট কিছু এনো প্লিজ।”
তীর্থ ইতস্তত গলায় বললো,
—” আমার কাছে টাকা হবে। এটার দরকার নেই।”
—” আমি জানি হবে বাট দায়িত্বটা আমার। সো, প্লিজ টেইক ইট।”
তীর্থ দ্বিধাভরা চোখে একবার রোজার দিকে তাকালো তারপর ওয়ালেটটা হাতে নিয়ে দ্রুত পায়ে রেস্টুরেন্টে ঢুকে গেলো।
৬২.
—-“নেওয়াজ সাহেব! আপনি খুব ভালো করেই জানেন, আমাকে ঠকানোটা খুব একটা ইজি নয়। এমাউন্ট যত ফাইনাল হয়েছে তার থেকে ৫% বেশি দিতে বাধ্য আপনি। বাংলাদেশ থেকে দুবাই গোল্ড টার্ন্সফার করতে গিয়ে আমার হাত থেকেও যে অনেক টাকা খসে যায় সেটাও তো ভাবতে হবে, মিষ্টার নেওয়াজ। প্রতি চালান পাঠাতে সিভিল এভিয়েশন, বিমানের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের বড় অঙ্কের ঘুষ দিতে হয়। আপনার কি ধারনা সে টাকা এতো সহজে ছেড়ে দেবো আমি? নাহ ! রাফিন চৌধুরী নিজের পাওনা ছেড়ে দিতে শেখে নি আর শেখবেও না। গট ইট?
রাফিনের কথার মাঝেই দরজায় টোকা পড়লো। রাফিন ভিডিও কনফারেন্সে দুবাইয়ের এক ডিলারের সাথে গোল্ডের চালান নিয়ে মিটিং করছিলো। এমন অসময়ে দরজার কড়াঘাতে বিরক্তিতে কপাল কুঁচকে এলো তার। চোয়াল শক্ত করে আসিফের দিকে তাকাতেই দৌড়ে গিয়ে দরজা খুললো আসিফ। দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন বুয়া। বুয়াকে দেখেই রাগটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো রাফিনের। নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে ধমকে বলে উঠলো সে,
—“কি সমস্যা কি আপনার? ”
বুয়া ভয়ে কেঁপে উঠে ভীত গলায় বললো,
—” জে, অনেক চেষ্টা করেও বউমনিকে খাওয়াইতে পারি নাই ভাইজান। সারাদিন না খেয়ে থাকায় গ্যাস্টিকের সমস্যা হয়তাছে উনার। এই পর্যন্ত দু’বার বমি করছে। কি করমু এখন?”
রাফিন রেগে ল্যাপটপটাই ছুড়ে মারলো ফ্লোরে। সাথে সাথেই এদিক-ওদিক ছিটকে গেলো ল্যাপটপের বিভিন্ন পার্ট। ঘটনার আকস্মিকতায় আসিফ আর বুয়া দু’জনেই চমকে উঠলো। রাফিন গর্জে উঠে বললো,
—” আপনাকে বলেছি না ডিস্টার্ব করবেন না আমায়। কে খাচ্ছে আর কে খাচ্ছে না সেটাও এবার আমায় দেখতে হবে? শালার বিয়ে করেই মারাত্মক ভুল করেছি আমি। ”
কথাটা শেষ করে পাশের টেবিলটা লাথি দিয়ে উল্টে দিলো রাফিন। আসিফ হন্তদন্ত হয়ে বললো,
—“শান্ত হোন ভাই।”
—” শান্তই হবো এখন। চল আমার সাথে। বুয়া? খাবার নিয়ে আসুন।”
বুয়া মাথা নেড়ে দ্রুত পায়ে নিচে নেমে গেলো। ফ্লোরে বসে বিছানার কোণা আঁকড়ে কাঁদছিলো আরু। ভাই-ভাবি-বাবা সবার কথা খুব মনে পড়ছে তার। কে জানে কেমন আছে তারা? এই মুহূর্তে দৌড়ে ভাইয়ার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়তে ইচ্ছে করছে আরুর। বাবার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে, ভাবির বকা শুনতে শুনতে একগাদা ভাত গিলতে কতোই না ইচ্ছে করছে তার।রাফিন কেন করছে এমন? আরু ওর ভাইয়ার কাছে যাবে। এই বিলাসবহুল ঘর নয় তার ছোট্ট ঘরে শান্তিতে একদন্ড ঘুমাবে। এমনটা কি কখনোই হতে দিবে না রাফিন? আরুর ভাবনার মাঝেই প্রচন্ড শব্দে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো রাফিন। হঠাৎ শব্দে চমকে তাকালো আরু। রাফিনের রাগী চোখ দেখে ভয় কেঁপে উঠলো সে। রাফিন মুখ দিয়ে জোড়ে নিঃশ্বাস ফেলে নিজেকে শান্ত করলো। ধীর পায়ে আরুর সামনে চেয়ার টেনে বসলো। বুয়াকে খাবারটা আরুর সামনে রাখতে ইশারা করে বললো,
—“খাচ্ছো না কেন জানু?”
আরু জবাব দিলো না। ভেতরে ভেতরে রাগে ফুঁসছে সে। কেউ যদি তাকে একটা সুযোগ দিতো তাহলে সে গুলিতে গুলিতে ঝাঝড়া করে দিতো রাফিনের বুক। আরুকে চুপ করে থাকতে দেখে উঠে দাঁড়ালো রাফিন। আসিফকে উদ্দেশ্য করে বললো,
—” সোনাপুকুর এই মুহূর্তে আমাদের গ্যাং এর কজন ছেলে আছে আসিফ?”
আসিফ ভেবে বললো,
—” ৫ জন ভাই।”
—” আচ্ছা। তাহলে এক কাজ কর। ঘড়িতে পাঁচ মিনিটের টাইম সেট কর। এই পাঁচ মিনিটে তোর ভাবি খাওয়া শেষ না করলে ওদেরকে ফোন দিয়ে বল আমার শশুড়ের পায়ের একটা রগ যেন কেটে দিয়ে আসে। মেয়ের না খাওয়ার বদলে বাবার রক্ত… দারুন না?”
আসিফ ঢোক গিলে একবার আরুর দিকে তাকিয়ে বললো,
—“জি ভাই,দারুন।”
—“তাহলে টাইম স্টার্টস নাও। এখানে দাঁড়িয়ে পাঁচ মিনিট ওয়েট কর। একটা খাবারও যেন থেকে না যায়…. ”
—” জি ভাই।”
রাফিনের কথায় চমকে উঠে আরু। একটা মানুষ এতোটা হার্টলেস কি করে হতে পারে? নিজের চাওয়াটা আদায় করে নিতে যে কারো রক্ত ফেলতে হাত কাঁপে না তার? আরু দুই তিনটা ঢোক গিলে খাবারের প্লেটটা হাতে তুলে নিলো।মুখ ভরে খাবার নিয়ে চিবানোর বৃথা চেষ্টা করতে লাগলো। রাফিন বাঁকা হেসে বললো,
—” গুড গার্ল। কাল থেকে টাইমলি না খেলে এমন কিছুই হবে। তোমার ভাবি তো প্রেগনেন্ট তাই না?”
এবার ডুকরে কেঁদে ওঠলো আরু। অসহায় দৃষ্টিতে রাফিনের দিকে তাকালো। সাথে সাথেই গলায় খাবার আটকে কাশতে লাগলো সে। রাফিন শান্ত গলায় বললো,
—” আসিফ? পানি দে।”
আসিফ পানি এগিয়ে দিতেই আরুর দিকে ঝুঁকে পানি এগিয়ে দিলো রাফিন। আরু গ্লাসটা নিতেই আরুর মাথায় হাত রাখলো রাফিন। নরম গলায় বললো,
—” কাঁদছো কেন? কথায় কথায় কান্না করা মেয়ে একদমই পছন্দ নয় আমার। আর এমন মরা কান্নার কারণটাই বা কি? সবই তো দিয়েছি তোমায় আর কি চায়? আমি তোমার সাথে খারাপ বিহেভও করছি না। তাহলে এমন পাগলামোর কারণ কি? দেখো, আমি বিয়েটা মানি বা না মানি তুমি আমার ওয়াইফ। আর আমি আমার স্ত্রীর গায়ে হাত উঠাতে চাই না। তাই ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিও না৷ এই বাড়িটা তোমারও আরু।বাড়িটাকে নিজের মনে করে স্বাভাবিকভাবে থাকতে পারছো না কেন? তাছাড়া আমি আগেও বলেছি, তুমি ঠিকঠাক চললে তোমার ফ্যামিলিকে টাচও করবো না আমি। আমার সমস্যা তোমার ভাইয়ের সাথে তোমার সাথে নয়। (একটু থেমে) সো, মোরাল অফ দ্যা স্টোরি হলো —- কাল থেকে গুড গার্লের মতো টাইমলি খাবে, ঘুমাবে নয়তো….ইউ নো, হোয়াট ক্যান আই ডু!”
কথাটা বলে ডানচোখ টিপে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো রাফিন। আরু ফোলা চোখে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো শুধু৷ রাফিন চোখের আড়াল হতেই চোখ বুজলো আরু। সাথে সাথেই গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়লো জল। নিজের জীবনটাকে খুবই ভারি লাগছে আরুর। খুব বেশিই ভারি।
# চলবে….

#part_34
https://m.facebook.com/groups/459470204903112/permalink/943509219832539/

#part_32
https://m.facebook.com/groups/459470204903112/permalink/943508723165922/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here