প্রেমনোঙর_ফেলে,২৬,২৭

0
343

#প্রেমনোঙর_ফেলে,২৬,২৭
লেখনীতেঃ মিথিলা মাশরেকা

২৬.

সন্ধ্যায় কফি বানাবে বলে কিচেনে ঢুকে খইকে দেখে দরজায়ই দাড়িয়ে গেলো প্রাপ্ত। খই খুব মনোযোগ দিয়ে কাবার্ডগুলো দেখছে। যেনো কিছু খুজছে ও। দিনগুলোর সাথে মিষ্টিঘরে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে খই। আর এ বাসায়ও ওর আসাযাওয়া হয় সাদিক সাহেবের কাছে পড়ার উদ্দেশ্যে। তবে ওর সাথে তেমন কথা বলা হয়ে ওঠেনি প্রাপ্তর। বলা বাহুল্য, খইই সুযোগ দেয়নি এমনটাই মনে হয়েছে ওর। তাই নিজে থেকেও দুরুত্ব বজায় রেখেছে প্রাপ্ত। আজও তাই দরজায় দাড়িয়েই বললো,

-তুমি কিচেনে কেনো?

আঁতকে উঠলো খই। সেদিন সাদিক সাহেবের কথায় ওর মনে প্রাপ্তকে নিয়ে কোনো এক আতঙ্ক ঢুকে গেছে যেনো। কি, কেনো, কোনো উত্তর নেই এসবের। তবে আছে কোনো এক ভয়। তাই প্রাপ্ত যখন বাসায় থাকে না, তখনই ও পড়তে আসে এ বাসায়। তবে আজকে এসময় আসতে বাধ্য হয়েছে ও। সাদিক সাহেব ওর হাতে বানানো খাবার খেতে চেয়েছিলেন। ও কিছু বলার আগেই প্রাপ্তর পাশ থেকে পিয়ালী বললো,

-জানিস ভাইয়া? আজ বাবা ওর হাতের রান্না খেতে চেয়েছে। তাই এভাবে…

প্রাপ্ত বিস্ময়ে বললো,

-ওর হাতের রান্না মানে? তুমি রান্না জানো খই?

-হ। মায়ে করতে না দিলেও সব শিখাইছিলো আমারে।

খই ধীরগলায় বললো। পিয়ালী প্রাপ্তর কানে ফিসফিসিয়ে বললো,

-বাবার পছন্দের তারিফ করতে হয় রে ভাইয়া! দেখনা! জেনেশুনে রান্না জানা বউমা এনেছে একদম!

প্রাপ্ত একপলক ফাকা দৃষ্টিতে তাকালো পিয়ালীর‌ দিকে। পিয়ালী গলা ঝেরে‌ বললো,

-আহারে। বাবা আমার শখ করে খইয়ের হাতের রান্না খেতে চাইলো, খই তো‌ মনে হয় কিছু খুজেই‌ পাচ্ছে না। এক কাজ কর ভাইয়া! আমি তো কিছু পারি না, তো তুইই বরং হেল্প কর ওকে। নিজেই কিছু করতে যাস না আবার! বাবার কিন্তু তোর রান্নার টেস্ট মুখস্ত। সো, নো চিটিং! আমি‌ পড়তে গেলাম। বাইইই!

পিয়ালী চলে গেলো। প্রাপ্ত কোনো উপায় না দেখে কিচেনে ঢুকলো।‌‌ ওকে‌ ভেতরে ঢুকতে দেখেই ইতস্তত করতে করতে ওড়না আঙুলে‌ পেঁচাতে শুরুর করেছে খই। প্রাপ্ত লক্ষ্য করেছে ওর‌ অস্বস্তি। ‌চটজলদি যাবতীয় জিনিস বের করে‌ দিয়ে বললো,

-আমি দুরেই‌ থাকছি। তুমি নিজের মতো করেই‌ রান্না করো।

আস্তেধীরে নিজের কাজ শুরু করলো খই। প্রাপ্ত অনেকটা দুরে দাড়িয়ে ফোন স্ক্রল করছে। কাজ করতে করতে ‌আড়চোখে ওকে লক্ষ্য করছিলো খই। প্রাপ্তর নজর পুরোপুরিভাবে ফোনে। প্রাপ্তকে লক্ষ্য করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত গরম তেলের কিছুটা ছিটে এসে হাতে লাগে খইয়ের। আহ্ শব্দে মৃদ্যু আর্তনাত করে উঠলো ও। ফোন ছেড়ে ছুটে এসে ওর হাত ধরলো প্রাপ্ত।

বাসায় ফেরার সময় কিচেনের জানালায় চোখ পরতেই প্রাপ্তকে খইয়ের হাত ধরে থাকতে দেখলো মিষ্টি। তৎক্ষনাৎ চোখ সরিয়ে নিলো ও। সেকেন্ডদুই দাড়িয়ে থেকে জোর করে একটা কৃত্রিম হাসি ফুটালো ঠোটে। ওর এমন ঋনাত্মক অনুভূতি হওয়াটাকে স্বাভাবিকভাবেই নিতে চায় ও। প্রাপ্ত ছেলেটাই এমন, যার প্রতি যে কারো মুগ্ধতা আসা আবশ্যক। ব্যতিক্রম হয়নি ওর ক্ষেত্রেও। তাই সে মুগ্ধতার মানুষটাকে অন্য একটা মেয়ের সাথে দেখে এমন অনুভব হচ্ছে ওর। যেটার কোনো মানে হয়না। প্রাপ্ত তার সাথেই ভালো থাকুক, যাকে ও ভালোবাসে। এটাই হওয়া উচিত।

মৃদ্যু হেসে সাইডব্যাগের ফিতাটা ধরে নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালো মিষ্টি। দরজার লক খুলে ব্যাগ রেখে টেবিলের পানির গ্লাসের পানি শেষ করলো আগে। একটা বড়সর শ্বাস ফেলে সবে বিছানায় বসতে যাবে, বিছানায় থাকা কাগজগুলো দেখে থমকে দাড়িয়ে রইলো মিষ্টি। তিনটে কাগজ পাশাপাশি। মাঝেরটাতে অতি সুন্দরভাবে লেখা, “আই লাভ ইউ মিষ্টি। উইল ইউ ম্যারি মি?” এটা দেখে দু দন্ড থেমে রইলো মিষ্টি। কে লিখেছে এটা ভাবার আগেই ওর চোখ পরলো পাশের কাগজ দুটোতে। ডানপাশে একটা প্রোমোশন লেটার। বা পাশে ট্রান্সফার লেটার। মিষ্টি বিমুঢ়। দুটো কাগজই সাফোয়ানের। কাপাকাপা হাতে ট্রান্সফার লেটার নিতে যাবে, কেউ একজন বললো,

-আগেই‌ কাগজ তুলিস না মিষ্টি!

মিষ্টি থেমে পেছন ফিরলো। দরজার বাইরে থেকে ঘাড় চুলকে ভেতরে ঢুকলো সাফোয়ান। মিষ্টি অবাকচোখে তাকিয়ে রইলো ওর দিকে। সাফোয়ান ওর দিকে তাকিয়ে থেকে স্পষ্টস্বরে বলে উঠলো,

-আই লাভ ইউ।

আরো বড়বড় চোখে তাকালো মিষ্টি। মুচকি হেসে সাফোয়ান পিছিয়ে গেলো। দরজার কাছেই দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে, বুকে হাত গুজে দাড়িয়ে বললো,

-এই লুক দিস না। সেই ছোটবেলা থেকে একসাথে আছি। তোর প্রেমে পরাটা কিন্তু এতো আশ্চর্য হওয়ার মতো কিছু না।

-সাফোয়ান? এসব…

সাফোয়ান সোজা হয়ে দাড়ালো। মিষ্টি থামলো। সাফোয়ান গলা স্বাভাবিক করে বললো,

-ভালোবাসা বুঝতে শেখার পর থেকেই ভালোবাসার মতো একটা মানুষ খুজেছি মিষ্টি। পেয়েও গেছিলাম বলে মনে হয়েছিলো একবার। অনাথ বলে শিক্ষাজীবনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে আরেকটা জিনিস শিক্ষা পেয়েছি। অনাথআশ্রমে বড় হওয়া অনাথকে ভালোবাসা যায় না। জানিস মিষ্টি? কলেজের যে মেয়েটা আমাকে এই শিক্ষা দিয়েছিলো, পুলিশে জয়েন করার পর সে ফিরে আসতে চেয়েছিলো আমার জীবনে। কিন্তু ততোদিনে বুঝলাম, আমার মন অন্যকারো। সে কেনো, কাউকেই ভালোবাসতে পারবো না আর। সে মানুষটা তুই। তোকে ভালোবাসি মিষ্টি।

শ্বাস আটকে দাড়িয়ে রইলো মিষ্টি। প্রাপ্তর প্রতি ওর অনুভূতিগুলো একান্তই ওর অনুভব। সেটা আজোবদি কাউকে জানতে দেয়নি ও। একাএকা একতরফা মুগ্ধতায় কেটেছে ওর দিনগুলো। নিশ্চিত ছিলো, ওর অনুভব পুর্নতা পাবার নয়। তবে আজ সাফোয়ান যা বললো, তাও তেমনই অনাকাঙ্ক্ষিত ওর জন্য। এর বিপরীতে হ্যাঁ বলার পরিস্থিতি যেমন নেই, না বলার সাহসটাও ওর নেই। সাফোয়ান বললো,

-আমি জানি, প্রেম, ভালোবাসা, বিয়ে, সংসার এসব নিয়ে এখনো ভাবিস না তুই। এটাও জানি, আমার এই ভালোবাসা প্রকাশের জন্য আমাদের সম্পর্কটা আগের মতো থাকবে না। তাই উপায়ন্তর দেখতে বাধ্য হলাম। তোর উত্তর হ্যাঁ হলে এই প্রমোশন লেটার আমার হাতে দিস। আমি চাই তোর হাত থেকেই লেটারটা অফিসিয়ালি আমার নামে হোক। আফটার অল, তোকে‌ নিয়েই তো সংসার করতে হবে তাইনা?

সাফোয়ান থামলো। একটা শুকনো কাশি দিয়ে ঠোটের কোনে হাসি ফুটিয়ে আবারো বললো,

-আর যদি উত্তর না হয়, ট্রান্সফার লেটারটা‌ দিয়ে দিস। এই শহর, তোর জীবনে সাফোয়ানের ছায়াটাও থাকবে না। উত্তর এখনই দিতে হবে না। সময় নিয়ে জানাস। আসছি।

একমুহুর্ত দেরি না করে সাফোয়ান বেরিয়ে গেলো। শ্বাস ছেড়ে ধপ করে বিছানায় বসে পরলো মিষ্টি। ট্রান্সফার লেটারের দিকে তাকিয়ে রইলো একাধারে। চোখ থেকে টুপটাপ জল গরাতে লাগলো ওর। আর ভেতরে হয়তো এক নিরব আর্তনাত।

“মেঘের পালক, চাঁদের নোলক, কাগজের খেয়া ভাসছে
বুক ধুকপুক, চাঁদপানা মুখ, চিলেকোঠা থেকে হাসছে
মেঘের বাড়িতে মেঘ ভেজা পায়
তাথৈ তাথৈ বর্ষা
কাক ভেজা মন জল থৈ থৈ
রাত্তির হলো ফরসা
আমি তুমি আজ একাকার হয়ে মিশেছি আলোর বৃত্তে
মম চিত্ত্বে, নিতি নৃত্তে, কে যে নাচে…”

-ইচ্ছে?

রাকীনের গলা শুনে গান থামালো ইচ্ছে। চোখ মেলে তাকালো ও। অনেকক্ষন আগেই রাত নেমেছে ধরনীর বুকে। সুইমিংপুলের পানিতে বাগানের আলোগুলোর প্রতিফলন জ্বলজ্বল করছে। কিন্তু আকাশে মেঘের আনাগোনা। কালো মেঘের আড়ালে থাকা চাঁদ দেখা যাচ্ছে না। ইচ্ছে পানিতে পা ডুবিয়ে বসে আছে অনেকক্ষন হলো। কাগজের নৌকা বানিয়ে সুইমিংপুলের পানিতে ভাসিয়েছে। টমি এতোক্ষন হাটছিলো ওর পাশ দিয়েই। যেইনা ইচ্ছে গিটার নিয়ে গান ধরেছে, ও গিয়ে সুন্দরমতো পাশে শুয়ে পরেছে ইচ্ছের। রাকীনের কন্ঠ শুনে টমিও উশে দাড়ালো। গা ঝাড়া মেরে ইচ্ছের গায়ে গা ঘষে বুঝালো হয়তো, কেউ এসেছে। ইচ্ছে কোল থেকে গিটার সরিয়ে পাশে রাখলো। পেছনে হাত দিয়ে আকাশের দিকে মুখ করে বসে বললো,

-কেমন আছিস?
নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ” নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ” এবং ফলো করে সাথেই থাকুন।
রাকীন ছোট একটা শ্বাস ফেলে বললো,

-বাবা এসেছে।

ইচ্ছের ঠোট টিপে হাসলো। রাজীব মাহমুদ এ বাসায় এসেছে মানেই আবারো ওদের বিয়ের কথা। আর তার মানেই রাকীন ভালো নেই। রাকীন এগোলো। ইচ্ছের পাশে হাটু গেরে প্যান্ট ভাজ দিতে দিতে বললো,

-তারপর? কার সাথে একাকার হয়ে আলোর বৃত্তে মেশার প্লান করছিস তুই?

-নিজেকে ইমাজিন করে নে না। হুম…আমি তুই আজ একাকার হয়ে মিশবো আলোর বৃত্তে!

ইচ্ছের কৌতুকের সুর। রাকীন একপলক ওর দিকে তাকালো। তারপর পানিতে পা ভিজিয়ে বসে সামনের একটা কাগজের নৌকো হাতে তুলে নিলো ও। একধ্যানে নৌকাটার দিকে তাকিয়ে থেকে নিজেও সুর তুললো,

-মম চিত্তে, নিতি নৃত্যে, সে যে আছে…

-আমার মতো তুইও খেয়াকে মিস করছিস?

খেয়ার নাম শুনে কেউ‌ কলিজা খামচে ধরলো যেনো রাকীনের। নিজেকে সামলে মুখে বললো,

-ও আমাকে মিস করে না ইচ্ছে। তাই আমিও ওকে মিস করি না। ভুলতে চাই।

ইচ্ছে মুগ্ধচোখে তাকিয়ে রইলো। ও জানে, এটা রাকীনের মনের কথা নয়। কথা ঘোরাতে বললো,

-আচ্ছা। আন্টি কেমন আছে?

-আমাদের বিয়ে না হওয়া অবদি বোধ হয় সে পুরোপুরি ভালো থাকবে না।

-আর আমাদের বিয়ে হলে এস এম‌ ভালো থাকবে না!

মনে মেঘ জমলেও ইচ্ছের কথায় রাকীন হেসে দিলো। খানিকক্ষন হেসে আবারো গম্ভীর হয়ে গেলো ও। হাতের কাগজের নৌকা আবারো পানিতে ভাসিয়ে দিলো। ইচ্ছে বললো,

-এভাবে আর কতোদিন রাকীন?

রাকীন পানির দিকে দৃষ্টিস্থির রেখে বললো,

-যতোদিন না নতুন করে দুর্বলতা তৈরী হচ্ছে, ততোদিন। তোর দিক থেকে কোনোদিনও হবে না আমি জানি। তুই তো অনেক শক্ত মনের মানুষ। আমার তো আমাকে নিয়েই যতো অভিযোগ।

-কিন্তু যদি কোনোদিন আমিই দুর্বল হয়ে পরি, তখন কি হবে রাকীন?

রাকীন বিস্ফোরিত চোখে তাকালো ইচ্ছের দিকে। ইচ্ছের শীতল চাওনি। তৎক্ষনাৎ উঠে দাড়ালো রাকীন। উত্তর না দিয়েই চলে যাচ্ছিলো ও। তারপর কি ভেবে পেছন ফিরলো। একটা শুকনো ঢোক গিলে বললো,

-এতোগুলো বছর হলো একসাথে আছি দুজনে। বিশ্বাস কর! বাবাকে হ্যাঁ বলার জন্য যেমন এখনো আমি প্রস্তুত নই, ঠিক তেমনি তোকে বারনের উপায়ও এখনো আমি খুজে পাইনি ইচ্ছে। তাই হয়তো জানিনা তোর সেই দুর্বলতার পরিনতি কি। বলতে পারিস, এদিক দিয়ে আমি নিরুপায়, নিরুত্তর! কিন্তু আমি তো…

কথা শেষ না করেই রাকীন চলে গেলো। ইচ্ছে পা দিয়ে পানিতে নাড়া দিলো। টমি এগিয়ে আসলো ওর দিকে। ওকে কোলে নিয়ে ওর গায়ে হাত বুলাতে লাগলো ইচ্ছে। টমি শব্দ করে হয়তো বুঝালো, “যাই‌ হয়ে যাক, আমি আছি তোমার পাশে।” ইচ্ছে হেসে দিয়ে বললো,

-দ্যাটস্ দ্যা প্রবলেম বাডি। এই পাশে থাকা, দায়িত্ব, এগুলোর বেড়াজালেই আমার জীবন। দেখ? রাকীনও আজ ভাষাহীন। ভয় পেয়ে গেছে বেচারা! ভেবেছে সত্যিসত্যিই আমি ওর প্রেমে পরে যাবো।

দুবার আওয়াজ করে টমি ভাব নিয়ে নামলো ওর কোল থেকে। যেনো বুঝালো, রাকীনই ওর জন্য পার্ফেক্ট। তার প্রেমে পরা উচিত ইচ্ছের। ইচ্ছে ঠোট টিপে হাসি আটকালো। টমি কাকে কাকে পছন্দ করে, তার লিস্ট অনেক লম্বা। কিন্তু কাকে পছন্দ করে না, সে লিস্টে একমাত্র একজনই আছে। টমির উপদেষ্টা ভাবকে ক্ষিপ্ততায় বদলে দেওয়ার জন্য ওই একটা নামই যথেষ্ট। ইচ্ছে মুচকি হেসে ধীর গলায় বললো,

-টমি? হোয়াট আবাউট প্রাপ্ত?

টমি তৎক্ষনাৎ শব্দ করতে শুরু করে দিলো। গিটারের পাশে থাকা নৌকা বানানোর সবগুলো রঙিন কাগজ পা দিয়ে সুইমিংপুলে ফেলে‌ দিতে লাগলো ও। শব্দ করে হাসতে লাগলো ইচ্ছে। ওর হাসি প্রতিধ্বনি হয়ে, পুরো বাসায় বাজতে লাগলো বারবার। একসময় মেঘও ডেকে উঠলো ক্ষীনস্বরে। হয়তো ইচ্ছের কথার প্রতিত্তরে বললো, “টমির‌ এই হিংসুক কর্মকান্ডের‌ কারন যেমন প্রাপ্ত, ঠিক তেমনি ইচ্ছের ঠোটের হাসির কারনটাও প্রাপ্ত! সো, ইটস্ অল আবাউট প্রাপ্ত! অনলি প্রাপ্ত!”

#চলবে.

#প্রেমনোঙর_ফেলে
লেখনীতেঃ মিথিলা মাশরেকা

২৭.

মুষুলধারে বৃষ্টি হচ্ছে আজ। মিষ্টিঘরের ছাদে হাটু জড়িয়ে বসে আছে খই। ছাড়া চুলগুলো ঘাড় থেকে মেঝেতে পরে আছে বিস্তৃতভাবে। বৃষ্টির পানির সাথে খইয়ের চোখের পানিও মিলেমিশে একাকার। এ কয়দিনে অনেক কষ্টে নিজেকে পাথর করে রেখেছিলো ও। আজ হঠাৎই মেঘলা আকাশ দুর্বল করে দিয়েছে ওকে। ভাদুলগায়ে কালবৈশাখীর সেই ঝড়ের দিনগুলোতে আম কুড়োনো, পুটিদের সাথে শুকমরায় ঝাপাঝাপি,রাতে বর্জ্রপাতের আওয়াজে প্রতিবার মায়ের বুকে মুখ গোজা সবকিছুই মনে পরছে ওর। নিচে মিষ্টিঘরের বাচ্চারা ভিজছে, আনন্দ করছে। কিন্তু ওর তো আনন্দ নেই। তাই লুকিয়ে‌চুরিয়ে ছাদে চলে এসে ও। হঠাৎই ও
আওয়াজ এলো,

-এভাবে ভিজলে অসুখ করবে কিন্তু!

পুরুষালী গলায় খানিকটা চমকে উঠে পেছন ফিরলো খই। বক্তাকে দেখেই চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম ওর। ঠোটে অমায়িক একটা হাসি ঝুলিয়ে রাকীন দাড়িয়ে। ওর খয়েরী রঙের শার্টটা ভিজে একাকার। ভেজা চুলগুলো থেকে পানি গরাচ্ছে। খইয়ের মনে হলো, হয়তো ভুল দেখছে ও। অস্ফুটস্বরে বললো,

-নকশাদার…

-কেমন আছো?

রাকীনের সুস্পষ্ট কথায় খই‌ টের পেলো, এটা কোনো ভ্রম নয়। রাকীন সত্যিই এসেছে। তৎক্ষনাৎ উঠে দাড়ালো ও। বললো,

-ন্ নকশাদার? তুমি?

রাকীন মুচকি হেসে চুলগুলো উল্টে ধরলো। খইয়ের দিকে এগিয়ে বললো,

-হ্যাঁ আমি। কোনো জ্বী’ন না।

-ত্ তুমি এ…

-আশ্রমের স্কুলের দ্বিতীয়তলা আর নতুন বিল্ডিংয়ের নকশা আমাদের কোম্পানি থেকেই করার প্লান করেছিলেন সাদিক স্যার। এজ এন আর্কিটেক্ট, কোম্পানি আমাকেই পাঠিয়েছে এখানে। তাই এখানে আসা। সামনের বিল্ডিংয়ে বসেই নকশা আকছিলাম। বাবা! ম্যাডাম দেখি এমন তুমুল‌ বৃষ্টিতে এই বিল্ডিংয়ের ছাদে বসে। এমনিতেও এসেছিই যখন, দেখা করতামই তোমার সাথে। এদিকে বৃষ্টিতে ভিজছো, কেউ বারণও করছে না। তাই ভাবলাম এখনই এসে একটু বকে যাই তোমাকে।

খই ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইলো রাকীনের দিকে। একশ্বাসে কথাগুলো বলে রাকীন আবারো বললো,

-বললে না কেমন আছো? পড়শোনা করছো তো ঠিকমতো?
নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ” নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ” এবং ফলো করে সাথেই থাকুন।
সাথেসাথে বাজ পরার শব্দ। খই চমকে উঠেছে। রাকীন ওর হাত টেনে এনে ছাদের সিড়ির দিকটায় দাড় করালো এবার। হাত দিয়ে নিজের মাথার চুল এলোমেলো করতে করতে বললো,

-গ্রামে তো আমাকে জ্বীনই বানিয়ে দিয়েছিলে। আজ তোমার নতুন বাড়িতে এলাম, এবারো সেই ভুত দেখা মোডে আছো। নাকি কথা বলাই ভুলেটুলে গেছো শহরে এসে? কোনটা?

খই অবাকচোখে শুধু দেখছে ওকে। কি বলবে, কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। উত্তর না পেয়ে রাকীন হতাশচোখে তাকালো খইয়ের দিকে। মিষ্টিঘরের প্রজেক্টটা লিখনই সামলাচ্ছিলো। আজ হঠাৎ এটার ফাইল চোখ পরতেই থমকে গিয়েছিলো ও। একপ্রকার বাহানা করে চলে এসেছে ও এখানে। মুল উদ্দেশ্য ছিলো খইয়ের খবর নেওয়া। আত এ মেয়ে তো সেই পুরোনো শকিং এক্সপ্রেশনেই সময়পার করে দিচ্ছে। রাকীন এদিকওদিক তাকালো। ওদের ঠিক পাশেই পুরোনো এক কাঠের তাক। তাতে আধভেজা একটা খবরকাগজ। রাকীন মুচকি হেসে কাগজটা তুললো। কিছু একটা পড়ে‌ বললো,

-বাহ্! খইয়ের নাম দেখি খবরকাগজে ছেপেছে!

বড়বড় চোখ করে‌ তাকালো খই। উকি দিলো‌ খবরকাগজটায়। রাকীন মুচকি হাসলো। ইশারায় খইকে জিজ্ঞাসা করলো, দেখবে? খই মাথা নাড়লো তাড়াতাড়ি। রাকীন পেপার উল্টিয়ে তাতে থাকা একটা ছবি বের করে খইকে দেখিয়ে বললো,

-বাচ্চাটাকে‌ দেখেছো? ওর‌ বয়স মাত্র আট বছর বয়স। এরমাঝেই সে চাঁদ-সুর্য মহাকাশের এমনসব তথ্য আবিষ্কার করেছে যে, অনেক বড়বড় বিজ্ঞানীরাও তা আবিষ্কার করতে পারেনি। তাই ওর নাম খবরকাগজে।

খই অবুঝের‌ মতো তাকিয়ে রইলো শুধু। রাকীন পেপারটা মুড়িয়ে ধরে বললো,

-তো ম্যাডাম! ছবিটা আপনারো হতে পারতো! কিন্তু আপনি তো কথা বলা, পড়াশোনা সব ছেড়ে দুঃখবিলাস আর বৃষ্টিবিলাস করছেন। তাই এই ছবিটা আপনার না! দুঃখিত!

খই চোখ নামিয়ে নিলো। ভেজা ওড়না মুঠো করে‌ দাড়িয়ে রইলো‌ শক্তভাবে। রাকীন বুঝলো, এখনো পুরোপুরিভাবে মা হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি খই। ও পেপারটা সরিয়ে রেখে খইয়ের হাত মুঠো‌ করে‌ নিলো। ‌মাথা তুলে তাকালো খই। রাকীন কিঞ্চিত ঝুকে দাড়িয়ে বললো,

-শিক্ষার কোনো বয়স হয়না খই। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা যতোটুকো দরকার,যে কেউ সেটা যেকোনো জায়গা থেকেই‌ পেতে পারে। কিন্তু নিজেকে গড়ার দায়িত্ব সবসময় নিজেকেই‌ নিতে হয়। নিজের স্বপ্নকে ছুতে চাইলে নিজেকে তৈরী করতে হয় সেভাবে। যদি এই মেয়ে এতো অল্পবয়সে হাজারটা ডিগ্রি ছাড়াই এতোকিছু করতে পারে, তবে ওর মতো যে কেউই পারবে চেষ্টা আর অধ্যবসায় দিয়ে পৃথিবীজয় করতে। যে কেউ! তুমিও খই…

খই জলভরা চোখে‌ তাকিয়ে রইলো ওর দিকে। রাকীন এবার ওর গালে একহাত রেখে বললো,

-পারবে না?

গালে থাকা রাকীনের হাতের দিকে তাকালো খই। আকস্মাৎ ঠোটে হাসি ফুটলো‌ ওর। রাকীনের হাতের ওপর হাত রেখে বললো,

-আমি পারবো নকশাদার! পারবো আমি! তুমি এভাবে আমার পাশে থাকলে, আমি সব পারবো! ঠিক পারবো!

তুমি পাশে থাকলে কথাটা শুনে রাকীন আটকে গেলো। হাত সরিয়ে নিলো খইয়ের গাল, হাত থেকে। অসম্ভব তৃপ্ত এক হাসি উপহার দিয়ে, উচ্ছ্বাস নিয়ে একছুটে নিচে চলে আসলো খই। ওর কথার ভঙিমা, আনন্দে কিছু তো আলাদাই ছিলো। আর তা হয়তো রাকীনের ভয় বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিলো। হাত মুঠো করে শক্ত হয়ে দাড়িয়ে রইলো রাকীন। কাকে দোষারোপ করবে ও? বারবার খইয়ের প্রতি দুর্বল করে দেওয়া পারিপার্শ্বিককে? নাকি দুর্বল হয়ে পরার জন্য দায়ী ওই মায়াবিনীকে? নাকি অতীতকে ভুলতে চলা অসহায় নিজেকে? কাকে?

ক্ষুদে গায়েন একাডেমি। বাচ্চাকাচ্চা আর সংগীতযন্ত্রের কলরবে মুখরিত এক পরিবেশ। গাড়ি থেকে নেমে ফুটপাতে দাড়ালো ইচ্ছে। পরনে থাকা সাদা-নীলের সংমিশ্রিত শাড়ীটার শুভ্র আঁচল সামনে হাতে ধরলো। আরেকবার চোখ বুলিয়ে নিলো একাডেমির নেমপ্লেটটায়। ওর আবেগ। এখান থেকেই গান নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলো ও। ওর মা গানের শিক্ষিকা ছিলেন এই একাডেমিতে। মায়ের সাথে, খেয়াকে নিয়ে কতো এসেছে ও এই একাডেমিতে, হিসেবছাড়া। আর এজন্য নাফিজা বেগমের কম ধমকিধামকিও শুনতে হয়নি খেয়াকে। তবুও লুকিয়ে চুরিয়ে আসতো দুজনে এখানে। অতীত মনে করে মৃদ্যু হাসলো ইচ্ছে। সময়ের সাথে যে বদলে গেছে সবটা। সবটাই!

ইচ্ছে একাডেমির ভেতরে ঢুকলো। আজ পুরো দিনটাই এখানে বাচ্চাগুলোর সাথে কাটাবে ও। ওকে ঢুকতে দেখেই একাডেমির অন্য দুজন শিক্ষিকা এগিয়ে এসে স্বাগতম জানালো ওকে। দেশে থাকলে প্রতিবছর এ দিনটায় ইচ্ছে এখানে আসবে, এমনটা জানে তারা। ইচ্ছে সবার সাথে কথা বললো। কয়েকটা গার্ডিয়ানও এসে কথাবার্তা বললো বেশ অনেকক্ষন। হারমোনিয়ামে বেশ কিছু বাচ্চাকে সুরও‌ শেখালো ইচ্ছে। তারপর চলে এলো একামেডির পেছনদিকটার গার্ডেনে। ওর মা, খেয়ার অনেক স্মৃতি জরিয়ে আছে এ জায়গাটায়। একাডেমির বাকিসব বাচ্চাদের কেউ দোলনায়, কেউ রাইডে, কেউ সাইকেল নিয়ে ব্যস্ত। ইচ্ছে ওদের সাথেও সময় কাটালো। বেশ অনেকক্ষন থাকার পর সবে চলে আসবে বলে পাশ ফিরতে যাচ্ছিলো ও। আচমকাই কেউ দ্রুতগতিতে এসে একহাতে ওর হাত, আরেকহাতে কোমড় জরিয়ে ধরে সরিয়ে নিয়ে আসলো আগের দাড়ানো জায়গা থেকে।

শার্ট খামচে ধরে দু সেকেন্ডের জন্য হলেও সে পুরুষ অবয়বটার বুকে মুখ গুজে রইলো ইচ্ছে। খিচে বন্ধ করে নিলো‌ চোখজোড়া। আকস্মিক এমন ঘটনায় এটুকো ভয় না হওয়া নারীস্বভাব বিরুদ্ধ। সে বিরুদ্ধাচারনে ব্যর্থ কঠোর মানবীর থেকে চোখ ফেরাতে ব্যর্থ হলো প্রাপ্ত নিজেও। নিস্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো ইচ্ছের দিকে। মিষ্টিঘরের কিছু ছেলেমেয়ে এই একাডেমিতে আসে গান শিখতে। কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে ওদেরই দেখতে এসেছিলো ও। কিন্তু আসার পর শুভ্রনীল শাড়িতে ইচ্ছেকে দেখে আর কিছুই চোখে পরেনি ওর। একধ্যানে শুধু ওর দিকে তাকিয়ে থেকেই এগিয়েছে বাগানে। হঠাৎই খেয়াল হলো, ইচ্ছের ঠিক পাশ দিয়ে একটা বাচ্চা সাইকেল নিয়ে এগোচ্ছে। বৃষ্টির জন্য পানি জমে কাদা হয়ে গেছে জায়গাটায়। সাইকেল কাদার মধ্যে দিয়ে গেলে শাড়ি নষ্ট হবে ইচ্ছের। তাই ওভাবে ছুটে এসে সরিয়ে নিলো ও ইচ্ছেকে। ঘটনা বুঝে উঠতেই মাথা তুলে তাকালো ইচ্ছে। প্রাপ্তকে দেখে বিস্ময়ে দৃষ্টি প্রসারিত হলো ওর। অবাককন্ঠে বললো,

-তুমি?

প্রাপ্তর ধ্যান ভাঙলো। ইচ্ছেকে না ছেড়ে ইশারায় ওর আগের দাড়ানোর জায়গার পাশের খাঁদটার দেখালো। তারপর গম্ভীরভাব দেখিয়ে বললো,

-ওখানে দাড়িয়ে ছিলে, বাচ্চাটা সাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় কাদা ছিটিয়ে দিয়ে যেতো শাড়িতে।

-হ্যাঁ তো?

ইচ্ছের স্পষ্ট প্রশ্নবাণে প্রাপ্ত হচকিয়ে গেলো। কোনোমতে বললো,

-ত্ তো তোমার শাড়ি নষ্ট হয়ে যেতো না? ত্ তাই সরিয়ে এনেছি।

-ও। তাই বুঝি? তো এখানে আমি সেইফ। বাট তুমি সেইফ তো? মিস্টার গ্যাংস্টার?

ইচ্ছে ঠোট টিপে হাসি আটকে বললো। ওর বলার ভঙিমায় সন্দিহান দৃষ্টি ছুড়লো প্রাপ্ত। কিছু বলে উঠতে যাবে, ঠিক ওর পেছন দিয়ে আরেকটা বাচ্চা সাইকেল নিয়ে যাওয়ায় কদর্মাক্ত পানি ছিটে এসে একদম পায়ে লাগলো ওর। ইচ্ছে নিজেকে ছাড়িয়ে পিছিয়ে দাড়ালো তৎক্ষনাৎ। শাড়ির কুচি খানিকটা উচিয়ে ধরে দেখে নিলো কোথাও‌ কাদা লেগেছে কি-না। সবটা ঠিক আছে দেখে শ্বাস ছাড়লো ইচ্ছে। তারপর চোখ তুলে তাকালো প্রাপ্তর দিকে। তার নিষ্পলক চাওনি। ইচ্ছে ভ্রু নাচিয়ে আগে প্রাপ্তর পায়ের দিকে ইশারা করলো। তারপর মাথা নাড়িয়ে বুঝালো, কাদা লেগে গেছে। মুখে একটা কথা না বলে, শব্দ করে হেসে দিলো ইচ্ছে। ওর ইশারা বুঝে উঠে রোবটের মতো নিজের পায়ের দিকে তাকালো প্রাপ্ত। প্যান্টের নিচের দিকে সত্যিই কাদা লেগেছে। একজনের সাজ ঠিক রাখতে নিজের কাপড়ে নিজেই কাদা লাগিয়ে নিলো। তৎক্ষনাৎ তীক্ষ্মদৃষ্টিতে ইচ্ছের দিকে তাকালো প্রাপ্ত। ইচ্ছে তখনও হাসছে। প্রাপ্তর চাওনি পরিবর্তন হলো এবার। ইচ্ছের হাসিতে ওর মনপ্রানে শীতল বাতাস ছুয়ে দিয়ে গেলো যেনো। ইচ্ছে একটু এগিয়ে এসে হাসতে হাসতেই বললো,

-এটা কি ছিলো জনাব? আমার শাড়িতে কাদা লাগতে দিলে না ঠিক আছে, কিন্তু তোমার নিজের ড্রেসআপই তো নষ্ট হয়ে গেলো।

প্রাপ্তের চাওনিতে তখনো মুগ্ধতা। ইচ্ছে দুহাত পেছনে গুজে আরো খানিকটা এগিয়ে মাথা উচু করে বললো,

-এখন যদি বলি তবুও তোমাকে থ্যাংকস দেবো না, তো?

-যদি বলি তোমার হাসিতে ষোলোআনাই উশুল, তো?

আনমনে বলে দিয়ে প্রাপ্ত নিজেই থমকে গেলো। হাসি থেমে গেলো ইচ্ছেরও। স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে প্রাপ্তর কথার মানে খুজতে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো নিষ্পলকভাবে। কিন্তু বুঝে ওঠার সুযোগ, সময় কোনোটাই প্রাপ্ত ওকে দেয়নি। একমুহুর্ত না দাড়িয়ে বেরিয়ে এলো গার্ডেন থেকে।

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here