#নিভৃতে_যতনে Part_27
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
রান্নাঘরে আমি আর পলি আন্টি কাজ করছি। রুমেই মা রোয়েনের সারা শরীরে স্পঞ্জ করে দিচ্ছেন। বাবা যোহরের নামাজ পড়ে টিভিতে খবর দেখছেন। বেশ কিছুক্ষণ পর মা রোয়েনকে ফ্রেশ করিয়ে রান্নাঘরে আসেন। আমাকে টেবিলে খাবার সাজিয়ে দিতে বলে তিনি হাতমুখ ধুতে চলে যান। আমিও তার কথামত চটজলদি টেবিলে খাবার সাজিয়ে নিলাম। অতঃপর মা-বাবাকে ডেকে এনে চেয়ারে বসিয়ে দিলাম। নিজে তাদের প্ল্যাটে খাবার তুলে দিয়ে, আরেকটা প্ল্যাটে রোয়েনের জন্য খাবার তুলে নিলাম। খাবারের প্ল্যাটটা নিয়ে রওনা হলাম রুমের উদ্দেশ্যে। রুমে এসে দেখি রোয়েন শুয়ে শুয়ে মোবাইল দেখছে। দৃশ্যটা দেখামাত্র মেজাজ চটে গেল আমার। কাঠ কাঠ গলায় বলে উঠলাম,
— অসুস্থ অবস্থায়ও মোবাইল ছাড়া চলে না আপনার?
আমার কথা শুনে রোয়েন চকিত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকায়। অতঃপর ভ্রু কুঁচকে বলেন,
— তো সারাদিন রুমে শুয়ে বসে থেকে করবোটা কি? বউয়ের সাথে হা-ডু-ডু খেলবো?
কথাটা শোনামাত্র কান গরম হয়ে যায় আমার। তাঁর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলি,
— ছিহ! কথার কি শ্রী। রুমে থেকে থেকে মাথা গিয়েছে নাকি আপনার?
সে এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বলে,
— হ্যাঁ গিয়েছে। কত ভালো লাগে এই রুমে বন্দী হয়ে থাকতে?
কথাটার মর্ম বুঝে আমি হালকা হেসে বলি,
— তিনদিন হলো মাত্র আর তাতেই এই অবস্থা? বাকি পনেরো-বিশ দিন কিভাবে কাটাবেন?
— জানি না।
আমি আর কিছু না বলে এগিয়ে গেলাম তাঁর দিকে। বেডসাইড টেবিলে খাবারের প্ল্যাটটা রেখে রোয়েনকে ধরে উঠে বসালাম। পিঠে পিছনে বালিশ দিয়ে ভালো মত বসিয়ে দিলাম। খাবারের প্ল্যাটটা হাতে নিয়ে তাকে খায়িয়ে দিতে শুরু করলাম। কিছুটা সময় অতিক্রম হতেই রোয়েন শীতল কন্ঠে বলে উঠেন,
— এইসব করতে তোমার বিরক্তি লাগে না?
আমি উনার দিকে কৌতূহল দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলি,
— বিরক্তি কেন লাগবে?
উনি ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে বলেন,
— আমার কিছু তো এখন তোমাকেই করতে হচ্ছে। মা মাঝে মধ্যে একটু সহযোগিতা করলেও বাকিসব তো তোমাকেই করতে হচ্ছে। রাতও জাগতে হচ্ছে। সেবা করতে হচ্ছে আমার। তাই বিরক্তি আসাটা অস্বাভাবিক কিছু না।
আমি মৃদু হেসে বলি,
— আপনজনদের জন্য কিছু করতে কখনো বিরক্তি আসে না৷
রোয়েন কিছু না বলে শীতল দৃষ্টিতে আমার মুখ পানে তাকিয়ে থাকেন। হঠাৎ আমার ফোনের রিংটোন বেজে উঠতে তিনি চোখ সরিয়ে নেন। তাঁর বা পাশেই আমার ফোনটি থাকায় বলি,
— ফোনটা একটু দেন তো।
রোয়েন ফোনটা হাতে নিয়ে বলে,
— তোমার হৃদিপু ফোন দিয়েছে।
আমি ভাত মাখতে মাখতে বলি,
— তাহলে থাক। আমি পরে কল ব্যাক করে নিব নে।
রোয়েন কিছু বলতে যাবে তার আগেই কল কেটে যায়। তাই তিনি আর কিছু না বলে ফোনটা পাশে রাখতে নেয়, ঠিক এমন সময় পুনরায় রিংটোন বেজে উঠে। তা দেখে তিনি বলেন,
— পরে কথা বলতে হবে না, এখনই বলে নাও। আমি ধরে রাখছি তুমি কথা বলো।
আমি অহেতুক কথা না বাড়িয়ে বলি,
— তাহলে রিসিভ করে স্পিকারে দেন।
রোয়েন আমার কথা মতই কলটা স্পিকারে দিয়ে আমার সামনে ধরেন। আমি ‘হ্যালো’ বলার আগেই অপরপাশ থেকে হৃদিপু বলে উঠেন,
— ওই মাইয়া এতক্ষণ লাগে ফোন ধরতে?
আমি ভেংচি কেটে বলি,
— একবার ফোন দিয়েই এই হাল? আর নিজে যে হাজারবার ফোন দিলেও তুলো না তার বেলায় কি?
— আমার বেলায় সব মাফ।
— কচু! কি জন্য ফোন দিয়েছ তা বলো। হাতে কাজ আছে আমার।
হৃদিপু অভিমানী সুরে বলে,
— বিয়ে করে মেয়ে তুই আমায় ভুলে গেলি। আমার ভালোবাসার এই প্রতিদান দিলি তুই?নাইছ!
হৃদিপুর কথা শুনে রোয়েনের ভ্রু কুঁচকে আসে। তা দেখে আমি হালকা হেসে বলি,
— হ্যাঁ দিলাম এই প্রতিদান। হ্যাপি!
কথা বলে আমি রোয়েনের মুখে ভাত পুরে দিলাম। হৃদিপু দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বলে,
— ভাইয়া কেমন আছে?
কথাটা শুনে আমি রোয়েনের দিকে তাকালাম। অতঃপর হালকা হেসে বলি,
— আপাতত ভালোই আছে। বেড রেস্টে আছে।
— আচ্ছা তাঁর খেয়াল রাখিস আর শুন চাচী কথা বলবে তোর সাথে। নে কথা বল।
আমি নির্বিকার গলায় বলি,
— দাও।
মা ফোনে আসতেই আমি সালাম দিলাম। মা সালামের উত্তর দিয়ে রোয়েনের কথা জিজ্ঞেস করতে লাগলো। অতঃপর মা উদাসীন গলায় বলেন,
— তোর বাবাকে বলেছি একবার ওই বাসায় যাওয়ার কথা। দুই-একদিনের জামাইকে দেখে যাব নে আমরা৷
আমি শীতল কন্ঠেই বলি,
— সেটা তোমাদের ইচ্ছা। আসলে আসবে নাইলে না।
— এমন করিস কেন?
আমি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করি,
— কেমন করলাম?
মা কিছু বলতে যাবে তার আগেই নাসরিন বেগমের কন্ঠ শোনা গেল। তিনি গলা উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করছেন,
— ওই হৃদি তোর চাচী কার লগে কথা কয়?
হৃদিপু অকপটে উত্তর দেয়,
— সিয়ার সাথে দাদি।
— কেল্লা?
— ভাইয়া এক্সিডেন্ট করেছিল তো তাই তাঁর খোঁজ নিচ্ছিল চাচী।
নাসরিন বেগম খ্যাঁক করে বলে উঠেন,
— ওই অপয়ার লিজ্ঞাই তো পোলাডার আজ এই অবস্থা। অপয়া কোনহানকার। যার জীবনে যায় হের জীবনেই শনি ডাইক্কা লইয়া আহে। আমাগো রে তো ধ্বংস করসেই এখন ওই পোলাটার জীবনটাও ধ্বংস করতাসে। বিয়া কইরা বেচারা পোলাডার জীবনটাই নষ্ট।
আমি ফোনে আছি দেখে হৃদিপু দ্রুত তাকে বলে,
— আহা দাদি চুপ করো তো। কি বলছো এইসব?
— ঠিকই তো কইতাসি। ওই অপয়াডা যেমনে আমাগো জীবন খাইসে,তেমনই ওই পোলাডারও জীবন খাইবো দেখিস। মুখপোড়া মাইয়া কোনহানকার।
মা এইবার চাপা কন্ঠে বলে উঠেন,
— আহা মা চুপ করুন। ওই সব শুনছে।
— হুনলে হুনুকজ্ঞা।
এতক্ষণ ধরে মোবাইলের অপর পাশের সকল কথাই আমি শুনছিলাম। সেই সাথে শুনছিল রোয়েনও। হয়তো অন্য সময় হলে এইসব আমার মধ্যে ভাবান্তর সৃষ্টি করতো না। গায়েই মাখতাম না কথাগুলো৷ কিন্তু আজ পরিস্থিতি ভিন্ন। আজ রোয়েন আমার সামনে বসা এবং কথাগুলো উনিও শুনেছে। কথাগুলো উনি শুনেছেন বলেই আমি লজ্জায় কুঁকড়ে যাচ্ছি। নয়ন দুইটি ক্ষণে ক্ষণে জ্বালা করে উঠছে। গলা ধরে আসছে। আমি নতজানু হয়ে আছি। সাহস হচ্ছে না মুখ তোলার। আমি কোন মতে বলে উঠি,
— মা পরে কথা বলি।
কথাটা বলেই আমি ভাত মাখা হাতে ফোনটা কেটে দেই। ফোনটা কেটে দিয়ে আমি চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে বাকি ভাতগুলো মাখিয়ে নিতে থাকি। কানে বাজছে নাসরিন বেগমের একটি কথা, ‘রোয়েনের এই অবস্থা নাকি আমার জন্য।’ হঠাৎ আমার কি হলো জানি না আমি নতজানু হয়ে রোয়েনকে জিজ্ঞেস করে বসলাম,
— আপনারও কি তাই মনে হয় আমি অপয়া? আমার জন্যই আপনার এই অবস্থা?
বেশ কিছুক্ষণ এইভাবেই নতজানু হয়ে থাকলাম উত্তরের আশায়। কিন্তু তাও কোন উত্তর না পাওয়ায় আমি মুখ তুলে তাকালাম। তাঁর নয়ন দুইটির দিকে নজর যেতেই দেখলাম তা প্রগাঢ় রক্তিম লাল। চোখে-মুখে কাঠিন্য ভাব বিদ্যমান। আমাকে তাঁর দিকে তাকাতেই উনি কাঠ কাঠ গলায় বলে,
— তোমার ভাগ্য ভালো যে আমার হাতে প্লাস্টার ঝুলছে। নাহলে আজ একটা থাপ্পড়ও মাটিতে পড়তো না।
আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বলি,
— মানে?
রোয়েন বাজ গলায় বলেন,
— নিজেকে অপয়া বলো কোন লজিকে তুমি? মুর্খ তুমি? কেউ তোমায় অপয়া বললো আর তুমি তা মেনে নিলে? আর আমার এই অবস্থার দায়ী তুমি নিজেকে কিভাবে বলে দাবী করো? তখন ছিলে তুমি আমার সাথে?
আমি কিছু না বলে চুপ করে বসে থাকি। তা দেখে রোয়েন বলে উঠেন,
— স্পিক আপ ডেমিট।
আমি তাও কিছু না বলে নতজানু হয়ে যাই। দুই দিকে না সূচক মাথা নাড়াই। তা দেখে উনি কিছুক্ষণ হাঁসফাঁস করে নিজেকে কিছুটা শান্ত করে বলেন,
— আমাদের সাথে কখন কি হবে না হবে তার নির্ধারণ কারী আল্লাহ। মানুষ না। আমাদের ভাগ্যও আল্লাহই লিখেন। যা হয় সব আল্লাহর মর্জিতে। তো সেই হিসাবে আমার সাথে যা হয়েছে তা আল্লাহর ইচ্ছায়৷ এই এক্সিডেন্ট আমার ভাগ্যে ছিল তাই হয়েছে৷ এতে তোমার অবদান কোথায়? বুদ্ধি খাটাও।
— হুম।
— অন্যের কথাকে গুরুত্ব দেওয়ার চেয়ে নির্বোধ থাকাও শ্রেয়। ইচ্ছে তো করছে ঠাডিয়ে দেই কয়েক। তোমাকে তিনি এমন কথা কেন বলেছে তা জানার বিন্দু মাত্র ইচ্ছে নেই কিন্তু এমন ফালতু কথা কানে নিতে কে বলেছে তোমায়?
আমি মাথা উঁচু করে বলি,
— কথাগুলো কখনোই আমলে নেই না। আজও তাই। শুনতে শুনতে সয়ে গিয়েছে এইসব। কিন্তু কেন জানি না আজ আপনাকে কথাটা জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করলো তাই করলাম।
রোয়েন কিছুক্ষণ আমার দিকে নীরব দৃষ্টিতে তাকিয়ে অতি শীতল কন্ঠে বলেন,
— তাঁর কাঁটাযুক্ত বাগানে নিভৃতে ফোটে উঠা পবিত্র ফুল তুমি। যার গায়ে না আছে কোন দাগ, না আছে কোন কলঙ্ক। আছে শুধু প্রগাঢ় স্নিগ্ধতা আর পবিত্রতা।
এইটুকু বলে রোয়েন চুপ থাকে। অতঃপর বলে,
— তাঁর জীবনে আর্শীবাদ তুমি, অভিশাপ নও।
কথাটা বলেই রোয়েন দেয়ালের সাথে মাথা ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে। আর আমি মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি তার দিকে। মনের মাঝে থাকা কালো মেঘের কুন্ডলীকে চিরে খিলে উঠে এক চিলতে রোদ। ঠোঁটের কোনে ফুটে উঠে মিষ্টি হাসি। আনমনে বলে উঠি, “এই মানুষটার তীরেই আমার আসল নীড়।”
______________________
দেখতেই দেখতে মাস খানিক চলে গেল। সেই সাথে বদলে গেল জীবনের ধারাও। রোয়েন সম্পূর্ণভাবে ঠিক হয়ে গিয়েছেন আরও বিশ-পঁচিশ দিন আগেই। আর অফিসে জয়েন দিয়েছিল পা ঠিক হতেই। বাবা-মাও চলে গিয়েছেন গ্রামের বাড়িতে। এইদিকে আমারও ভার্সিটিতে ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। নতুন কিছু বন্ধুও জুটেছে৷ এর মধ্যে পুরোনো বন্ধু হলো সুরাইয়া। কচিং-এ তো একসাথে ছিলামই এখন ভার্সিটিতেও একসাথে। আমার জন্য ভালোই হয়েছে যাতায়াতের সঙ্গী আর ভালো বন্ধু হিসাবেও পেয়েছি তাকে। সেই সাথে আদিব, ইফতি, স্নেহা, নূর এদের সাথেও বেশ ভালো বন্ধুত সম্পর্ক গড়ে উঠেছে আমার। যেমন সবকিছুতেই কিছুটা পরিবর্তন এসেছে তেমনই রোয়েনের প্রতি আমার অনুভূতিগুলোর মধ্যেও পরিবর্তন হয়েছে। আগে তাঁর জন্য আমার অনুভূতি ছিল আবছা কিন্তু এখন তা প্রগাঢ় হয়ে এসেছে। তাঁর জন্য আমার এই প্রগাঢ় অনুভূতির নাম জানা নেই আমার। এইটা তাঁর প্রতি আমার মোহ নাকি ভালোলাগা নাকি ভালোবাসা আমার জানা নেই। শুধু জানি, উনি আমার পাশে থাকলে আমার আর কিছুই চাই না। আমার জন্য তাঁর মনোভাব কি তা এখনো অস্পষ্ট আমার কাছে। অবশ্য যেখানে আমার অনুভূতিগুলাই আমার কাছে অস্পষ্ট সেখানে রোয়েনের অনুভূতি কি করে বুঝি আমি? দুইজনের সম্পর্ক এখন কেমন ভাসমান৷ না আছে সম্পর্কটা বন্ধুত্বের মাঝে আর না আছে সেটা বিবাহ দাম্পত্যের মাঝে। কোন এক জায়গায় সেটা আটকে আছে কিন্তু সেটা কোথায় তা হয়তো দুইজনের কারোই জানা নেই। কিন্তু মজার বিষয় হলো দিন যাচ্ছে ঠিকই আপন নিয়মে।
বৃহস্পতিবার হওয়ায় আজ আমার হাফ ডে ছিল। যার ফলে আজ আমার দুপুরের মধ্যেই বাসায় অবস্থান করার সৌভাগ্য হলো। নাহলে তো সন্ধ্যার আগে বাসায় আসাটাই দুষ্কর। দুপুরের খাবার খেয়ে রুমে আসতেই দেখি বিছানার এক কোনে রোয়েন কাপড় পড়ে আছে। সেগুলো দেখে আমি কাপড়গুলো ভাঁজ করে নিলাম। অতঃপর রোয়েনের কাবার্ড খুলে কাপড়গুলো রাখতেই দেখি কাবার্ডের কাপড়গুলো আজ এলোমেলো। সচরাচর রোয়েনের কাবার্ড এলোমেলো থাকে না৷ সবসময় পরিপাটি থাকে৷ তাই আজ এমন অবস্থা দেখে বেশ ভড়কেই গেলাম আমি। কিন্তু ক্ষণেই নিজেকে সামলে গুছিয়ে দিতে থাকলাম কাবার্ডটা। গুছানোর এক পর্যায়ে হাতে ডায়েরি মত কিছু একটা পড়ে। আমি সেটা হাতে নিয়ে বুঝতে পারলাম অতি যতনে কালো মলাটে পুরানো থাকা জিনিসটি আসলেই একটি ডায়েরি। যেহেতু রোয়েনের সাইড থেকে ডাইরিটা পাওয়া সেহেতু নিসন্দেহে এইটা তাঁরই। কিন্তু রোয়েন ডায়েরি লিখে জেনে বেশ কৌতূহল হলো আমার। ইচ্ছে হলো খুলে ডায়েরিটা পড়ার। কিন্তু ভদ্রতার জন্য সেই ইচ্ছাটাকে সাই দিলাম না। কারো পারসোনাল জিনিস নিয়ে এত আগ্রহ দেখানো ঠিক না। তাই ডায়েরিটা নিজ জায়গায় রেখে দিতে নিলাম কিন্তু তার আগেই সেটা হাত থেকে ফঁসকে নিচে পড়ে যায়। মেঝেতে পড়ে মাঝের কিছু বদ্ধ পৃষ্ঠা উন্মুক্ত হয়ে আসে আমার সামনে। আমি সেটা উঠাতে গিয়ে না চাইতেও চোখ পড়ে যায় কিছু লাইনের উপর। যা দেখা মাত্র আমি স্তব্ধ হয়ে যাই।
“হয়তো তুমি আমার ভাগ্যে নেই। হয়তো বা তুমি আমার ধরা-ছোয়ার বাহিরে। হয়তো তুমি সেই অমূল্য রত্ন যাকে নিয়ে ভাবাও আমার জন্য বিলাসিতা। কিন্তু আসলেই কি তাই? হয়তো তাই।
— আমি ভেবে নিলাম
তুমি সেই লাল গোলাপ
যাকে নিরন্তর পাহাড়া দেয় এক কাটার বাগান।”
#চলবে
আমি বেশ অসুস্থ তাই উপন্যাসটা দিতে একটু অনিয়ম হচ্ছে৷ কিন্তু তাও চেষ্টা করবো বেশি গ্যাপ না দেওয়ার।
আর সকলকে ইদ মোবারক❤️❤️❤️
[বিঃদ্রঃ রহস্য উন্মোচন হওয়ার উপযুক্ত সময় যখন আসবে তখনই তা উন্মোচিত হবে। এর আগে না।]