#নিভৃতে_যতনে Part_29
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
গোধূলির লগ্ন। পশ্চিমাকাশে ছেঁয়ে আছে হলদেটে ভাব। পাখিরা ব্যস্ত ভঙ্গিতে ছুটে চলেছে আপন নীড়ে। আমি বারান্দায় রাখা বেতের মোড়ার উপর বসে আছি। হাতেই ধোঁয়া উঠানো এক কাপ কফি। দৃষ্টি নিবদ্ধ কমলা রাঙ্গা ডুবন্ত সূর্যটির দিকে। কফির কাপে একটু চুমুক দিতেই কোথ থেকে এক জোড়া চড়ুই পাখি এসে বসে বারান্দার কার্নিশে। ক্ষণেই বাতাসে কিচিরমিচির শব্দ তুলে মেতে উঠে খুনসুটিতে। তাদের দেখা মাত্র আমি নিরব হয়ে যাই। মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখতে থাকি তাদের। অতঃপর আমি দৃষ্টি সরিয়ে নিতেই চোখ আটকে যায় বারান্দায় ঝুলিয়ে রাখা রোয়েনের একটি টি-শার্টের দিকে। টি-শার্টটি দেখা মাত্র চোখে ভেসে উঠে রোয়েনের চেহেরা। সেইসাথে মনে পড়ে যায় চৈত্র মাসের অনাকাঙ্ক্ষিত সেই বর্ষণের রাতের কথা। মুহূর্তেই আমার চর্বিযুক্ত গাল দুইটি হয়ে উঠে রক্তিম লাল। লজ্জায় মাথা নুইয়ে ফেলি আমি। চোখ বন্ধ করে লম্বা নিঃশ্বাস নেই।
সেদিন রোয়েনের এহেন প্রস্তাবে আমি ক্ষনিকের জন্য ভড়কে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরমুহূর্তেই লজ্জায় মিইয়ে গিয়েছিলাম। গা মৃদু পরিমাণে কাঁপছিল আমার। যেখানে আমার বিভ্রান্তিতে পড়ার কথা সেখানে সপ্তপর্ণে মুখ লুকিয়ে ছিলাম তাঁর বুকে। তাঁর বুকে মাথা রাখতেই যেন এক আলাদা প্রশান্তি অনুভব করি। সেই সময় আমার মধ্যে না ছিল কোন সংশয়, না ছিল কোন আড়ষ্টতা। ছিল এক অদ্ভুত ভালোলাগা। কোন এক অদৃশ্য কারণে তাঁকে আমি কখনো ‘না’ করতে পারি না, সেইদিনও পারিনি৷ নীরবে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলাম তাঁর মাঝে। সাঁই জানিয়েছিলাম তাঁর প্রস্তাবে। অতঃপর সেই অনাকাঙ্ক্ষিত বর্ষণের অনাকাঙ্ক্ষিত সেই প্রহরে পূর্ণতা পেয়েছিল আমাদের সম্পর্ক। রচিত হয়েছিল নতুন এক জীবনের সূচনা।
হঠাৎ চারদিকে মাগরিবের আযান প্রতিধ্বনিত হতেই আমি উঠে রুমে চলে আসি। ওযু করে মাগরিবের নামাজ আদায় করে রোয়েনের জন্য এক সেট কাপড় বিছানায় রেখে চলে যাই রান্নাঘরে। এক কাপ কফি চুলোয় চড়িয়ে দেই রোয়েনের জন্য। কফি যখন প্রায় হয়ে এসেছে ঠিক তখনই ডোরবেল বেজে উঠে। পলি আন্টি গিয়ে দরজা খুলে দেয়। অতঃপর রোয়েন রুমে চলে যেতেই পলি আন্টি নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে আমায় বলে চলে যায়। আমি দরজাটা আটকে এসে কফিটা কাপে ঢেলে নেই। অতঃপর অগ্রসর হই রুমের দিকে। রুমে আসতেই দেখি রোয়েন মাত্র ফ্রেশ হয়ে বের হচ্ছেন। আমি তাঁর দিকে এক পলক তাকাতেই দৃষ্টি নত করে ফেলি। সেদিনের পর থেকে তাঁর দৃষ্টির সামনে আসতেই লজ্জা আমায় আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে। তাঁর দিকে দৃষ্টি স্থির রাখাটাই দুষ্কর হয়ে পড়ে আমার জন্য। এই যে যেমন এখন হচ্ছে। আমি কফির কাপটা সাইড টেবিলের উপর রেখে চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে আসার জন্য পা চালাতে শুরু করি। এর মাঝেই ডান বাহুতের গভীর টান অনুভব করতে সামনে দিকে এগোনোর বদলে কয়েক কদম পিছিয়ে আসি। আমি কিছু বলতে যাবো তাঁর আগে রোয়েন গম্ভীর কন্ঠে জিজ্ঞেস করে উঠেন,
— দুইদিন ধরে খেয়াল করছি তুমি আমায় এড়িয়ে চলছো, সমস্যা কি?
আমি কম্পিত কন্ঠে বলি,
— কোথায় এড়িয়ে চলছি?
— তা না হলে এখন কি করছো?
আমি তাঁর দিকে কিছুটা ঘুরে হাত ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করে বলি,
— আরেহ ধুর! ছাড়েন তো, পড়া আছে আমার।
রোয়েন ভ্রু কুঁচকে বলেন,
— এই কয়েকমাসে একবারও তো ঠিক মত বই ধরতে দেখলাম না আর আজ বলছো পড়া আছে?
আমি দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে বলি,
— আজ আছেই বলেই বলছি।
— অজুহাত দিয়ে কাটিয়ে দিতে চাইছো বিষয়টা?
আমি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলি,
— তেমন না বিষয়টা?
রোয়েন আমার হাতের কব্জি ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এসে দাঁড় করালেন। মুখোমুখি হয়ে বললেন,
— তাহলে কেমন? এড়িয়ে কেন চলছো আমায়?
আমি কিছু না চুপচাপ দৃষ্টি নত করে দাঁড়িয়ে থাকি। আনমনে তাঁর ছুটে পালানোর রাস্তা খুঁজতে থাকি। রোয়েন কিছুক্ষণ উত্তরের আশায় আমার মুখ পানে তাকিয়ে থাকেন। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন আমার আকার-ভঙ্গি। অতঃপর স্বাভাবিক সুরেই বলেন,
— তুমি আমার সামনে আসতে লজ্জা পাচ্ছো?
আমি মাথা নুইয়ে বলি,
— হুম।
রোয়েন এইবার নিঃশব্দে হেসে উঠে। হাসির দুই ধারে বেরিয়ে আসে গজদাঁত দুইটি। বরাবরের মতই অমায়িক সেই হাসিটি৷ আমি একপলক সেই হাসির দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি নত করে ফেলি। সে কি জানে? তাঁর এই হাসিতে আমি বারংবার খুন হই? হঠাৎ রোয়েন নিজের হাতের তর্জনী আর মধ্যমার ফাঁকের মাঝ দিয়ে আমার থুতনি চেপে ধরে মুখটা উঁচিয়ে রসিকতা সুরে বলেন,
— আমি তো তাঁর লজ্জা ভেঙ্গেই দিয়েছি তাহলে সে এত লজ্জায় পায় কিভাবে?
কথাটা শোনা মাত্র আমি রোয়েনের বুকে মুখ লুকিয়ে বলি,
— জানি না।
রোয়েন হেসে ফিসফিসিয়ে বলেন,
— লজ্জা পেলে কিন্তু তাকে চ্যারির মত লাগে। ইচ্ছে করে…
আমি তাঁর কথা শেষ হওয়ার আগেই ছিটকে সরে দাঁড়াই। স্বগতোক্তি কন্ঠে বলে উঠি,
— দিন দিন নির্লজ্জ হচ্ছেন আপনি।
রোয়েন পুনঃরায় নিঃশব্দে হেসে উঠেন। বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসতে বসতে বলেন,
— যার বউ এত লজ্জা পায় তার বরকে তো না চাইতেও নির্লজ্জ হতেই হয়।
__________________
কালকে পহেলা বৈশাখ। সেই উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম খুব সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে। সকলের মধ্যে কাজ ভাগ করে বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছেন টিচাররা। কমনরুমে চলছে গান ও নাচের রিহার্সাল। চেয়ার সাজানোর দায়িত্ব পড়েছে ইফতি,নূরের উপর আর আলপনা করার দায়িত্ব পড়েছে আমার উপর। স্নেহা আর আদিবকে ম্যাম বাহিরে পাঠিয়েছে কি যেন এক কাজে। এইদিকে কাজ করতে হবে বলে সুরাইয়া আগে ভাগেই অসুস্থতার বাহানা দিয়ে ভেগেছে। আস্ত কামচর একটা। আমি আনমনে আলপনা করছি তখন দূর থেকে ইফতি চেঁচিয়ে বলে,
— ওই সিয়া! তোর ফোন বাজতাসে।
আমি চকিত দৃষ্টি ইফতির দিকে তাকিয়ে বলি,
— আমার ফোন কি তোর কাছে?
ইফতি আমার ব্যাগ উঁচিয়ে বলে,
— হো। আলপনা করার আগে না তুই আমাকে দিয়ে গেসিলি৷
আমি আলপনা ঠিক করতে করতে বলি,
— তাইলে মোবাইলটা এইদিকে নিয়ে আয়। এখন উঠতে পারবো না।
ইফতি ফোন বের আমার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলে,
— ওই মাইয়া! এই ‘খারুশ’ কেডা? দশবারের উপরে ফোন দিসে তোরে।
কথাটা কর্ণধার পর্যন্ত পৌঁছাতে দেরি কিন্তু আমার লাফ মারতে না। মূহুর্তেই আমি ভড়কে গিয়ে বলি,
— কয়বার ফোন দিসে?
ইফতি আমার দিকে ফোনটা এগিয়ে বলে,
— কানে কি কম শুনোস? বলসি না একবার?
আমি ফোনটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থাকি। অতঃপর উঠে রঙ লাগানো হাতেই ইফতির পিঠে ধুপধাপ দুইটা কিল মেরে বলি,
— এতবার ফোন আসার পর তুই এখন এসে বলছিস আমার ফোন এসেছে? তোকে রাখতে দিসিলাম কেন ফোন তাইলে আমি? কানে আমি কম শুনি না তুই?
ইফতি নিজের পিছনের শার্টের অংশটুকু টেনে সামনে এনে ধরে কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে,
— এইটা কি করলি তুই? দুইদিন আগেই শার্টটা নামাইসিলাম। ঘামের গন্ধও লাগে নাই ঠিক মত শার্টে তার আগেই তুই এইটা নষ্ট করে দিলি? আল্লাহ গজব ফালাইবো তোর উপরে দেখে নিস।
আমি বিরবির করে বলি,
— আমার উপরে যে এখন কোন গজব পড়বো আল্লাহই জানে।
এর মাঝে নূর এসে বলে,
— কি বিরবির করছিস?
আমি চোখ মুখ বিরক্তি ঘুচে বলি,
— আন্ডা বলছি। বলবি তুই আমার সাথে?
নূর এইবার স্মিত হেসে বলে,
— ওইদিকে শোরগোল বেশি ছিল তাই হয়তো শুনে নাই ওই। এত প্যারা কেন নিচ্ছিস?
আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই আমার ফোন বেজে উঠে। স্ক্রিনে ভেসে উঠে ‘খারুশ’ নামটি। আমি কিছু না বলে ওদের থেকে সরে এসে ফোনটা রিসিভ করতেই উনি গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠেন,
— ফোন কই থাকে তোমার? কয়বার কল দিয়েছি দেখেছো?
আমি আমতা আমতা করে বলি,
— খেয়াল করি নি।
— বাইরে এসো।
আমি অকপটে জিজ্ঞেস করে উঠি,
— কেন?
— আসতে বলেছি আসবে। কোন কথা না আর সন্ধ্যা কয়টা বাজে সেই খেয়াল আছে কি তোমার?
আমি একবার ফোনে সময় দেখে নিলাম। সাড়ে ছয়টার মত বাজে। তা দেখামাত্র আমি বিনয়ী সুরে বলি,
— কাজ করছিলাম তাই খেয়াল ছিল না। হাতের কাজটা সেরেই আমি দ্রুত আসছি৷
— হারি আপ!
কথাটা বলেই তিনি ফোন কেটে দেন আর আমি হাফ ছেড়ে বাঁচি। ভেবেছিলাম মহাপ্রলয় শুরু হবে কিন্তু তা হয়নি। আমি দ্রুত নিজের কাজটা শেষ করে হাত না ধুয়েই ইফতি আর নূরকে বলে চলে আসি বাইরে। গেটের বাইরেই আসতে দেখি রোয়েন বাইকের সাথে হেলান দিয়ে পা দুইটি আড়া-আড়িভাবে ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে আছেন। দৃষ্টি তার নিবদ্ধ মুঠোফোনের উজ্জ্বল স্ক্রিনের দিকে। আমি নিঃশব্দে তাঁর দিকে এগিয়ে যাই। তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে হালকা কেশে উঠতেই তিনি আমার দিকে চোখ তুলে তাকান। আমি স্মিত হেসে বলি,
— হঠাৎ এইদিকে আসলেন যে?
রোয়েন নিজের মুঠোফোন বন্ধ করে পকেটে ভরতে ভরতে বলেন,
— একটা মেয়েকে লিফট দিয়েছিলাম এইদিকটায়। তো তাকে নামিয়ে যাওয়ার পথে ভাবলাম তোমায়ও লিফট দেই।
কথাটা শোনামাত্র আমার ঠোঁটের কোনে ঝুলে থাকা হাসিটি উধাও হয়ে গেল। চোখে-মুখে নেমে এলো অন্ধকার। আমি চোখ মুখ শক্ত করে বলি,
— বাজে বকা বন্ধ করুন।
রোয়েন আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলেন,
— কি বাজে বকলাম?
আমি মুখ ঘুরিয়ে অভিমানী সুরে বলি,
— কিছু না। আর আপনি চলে যান চাই না আপনার লিফট আমি। একাই চলে যেতে পারবো আমি।
— তা তো হচ্ছে না। আমি যেহেতু এসেছি সেহেতু যেতে তো তোমায় আমার সাথেই হবে।
আমি নাকছ করে বলি,
— যাব না আমি।
— তোমার থেকে কেউ তোমার মতামত চায়নি।
কথাটা বলে তিনি আমার হাতের কব্জি ধরে টান দিতেই তাঁর নজরে পড়ে বিভিন্ন রঙে মাখা আমার হাতটি। তা দেখে তিনি বলেন,
— হাত ধুয়ো নি কেন?
আমি স্বগতোক্তি কন্ঠে বলে উঠি,
— ইচ্ছা।
রোয়েন কিছু না বলে বাইকের সিট উঠিয়ে ভিতর থেকে পানির বোতল বের করে আমায় টেনে নিয়ে যায় রাস্তার ধারে। নিজেই খুব সপ্তপর্ণে ধুয়ে দেন আমার হাত। আমি কিছু না বলে চুপ করে থাকি। কেন যেন সবকিছুই আমার অসহ্য লাগছে। আমার হাত ধুয়ে দিয়ে তিনি আমায় টেনে নিয়ে নিজের বাইকের কাছে নিয়ে যান। আগে নিজে বাইকে উঠে বাইক স্টার্ট দিয়ে আমায় উঠে বসতে বলেন। আমি বিনাবাক্যে উঠে পড়ি তার বাইকে। টু শব্দ পর্যন্ত করিনা। কারণ জানি সে যে পরিমাণে ঘাড়ত্যাড়া আমাকে না নিয়ে সে যাবেই না। কিন্তু তাই বলে নিজের অভিমান ফেলে দেইনি আমি। তাঁর থেকে বেশ দূরত্ব বজায় রেখে চুপটি মেরে বসি যাতে তাঁর শরীরের সাথে আমার স্পর্শ না লাগে। রোয়েন কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে যখন দেখলেন আমি তাঁকে ধরছি না তখন তিনি নিজেই তাঁর হাত পিছিয়ে নিয়ে আমার হাত দুইটি টেনে নিজের পেটের দুই পাশে রাখলেন। আমি হাত সরিয়ে নিতে গেলে তিনি আমার হাত দুটি চেপে ধরে বলেন,
— আমার ব্যক্তিগত বাইক ছোঁয়ার উঠার অধিকার শুধুমাত্র আমার একান্ত ব্যক্তিগত মানুষটার আছে। এর বাইরে কল্পনাতেও আমার বাইকে উঠার সাধ্য কারো নেই।
কথা বলেই তিনি একটানে বাইক চালাতে শুরু করেন। রোয়েনের কথা শুনা মাত্র আমার ঠোঁটের কোনে ফুটে উঠে মিষ্টি হাসি। আমি জানি মানুষটা কেমন। যে নাকি কখনোই কোন মেয়েকে নিজের কাছেও ঘেষতে দেয় না সে আবার লিফট দিবে অন্য কোন মেয়েকে? প্রশ্নই আসে না। কিন্তু ওই যে বাঙালি নারীর মন। আপন মানুষটার মুখে অন্য কোন মেয়ের কথা উচ্চারিত হতে না হতেই নিখিল জাহানের সকল ঈর্ষা এসে ভর করে তখন। বড্ড অভিমান জাগ্রত হয় তখন মনের মাঝে৷ অতঃপর যতক্ষণ না আপন মানুষটি অভিমানটি ভাঙ্গাচ্ছে ততোক্ষণ পর্যন্ত অভিমান প্রগাঢ় হতেই থাকে। রোয়েন জানতো আজ আমার বাসায় যেতে রাত হবে তাই তো সে নিজে এসেছেন আমায় নিতে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে মানুষটা প্রচন্ড ক্লান্ত। অথচ তিনি বিনা বিরক্তি প্রকাশ করে ক্লান্ত শরীরটাই টেনে নিয়েই এসে হাজির হয়েছেন আমার সামনে। আসলেই মানুষটা আমার নির্মল প্রেমিক। আমি নিঃশব্দে খানিক্ষন হেসে তাঁর পেট জড়িয়ে ধরে পিঠে মাথা এলিয়ে দেই৷ এইটাই আমার নির্ভরতার সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান। আমি নয়ন দুইটি বন্ধ করে নিতেই রোয়েন বলে উঠেন,
— অভিমানিনী কে অভিমানেই ভালো মানায়।
#চলবে
অধর অর্থ ঠোঁট। অনেকেই শব্দটার মানে জানতেন না তাই বলে দিলাম।
রি-চেক করা হয়নি। ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।