#আলো-আঁধার🖤 পর্ব ৩৮
#লেখিকা:সালসাবিল সারা
৩৮.
তীব্র ঠান্ডা অনুভূতিতে পুরো শহরে হাড় কাঁপানো শীত নেমেছে।দিনের বেলায়ও সূর্যের দেখা মিলে খুবই কম।রাণী চাদর মুড়িয়ে বসে আছে বিছানার উপর।তার পাশে তূর্যয় ঘুমিয়ে আছে রাণীর কোমর জড়িয়ে।তূর্যয়ের উদোম পিঠে রাণী কম্বল টেনে দিলেও,একটু পর তূর্যয় ঠিকই নিজের শরীর থেকে কম্বল ফেলে দেয়।এক পর্যায়ে রাণী বিরক্ত হয়ে চুপ করে বসে রইলো।বিড়বিড় করে সে বলতে লাগলো,
–“মানুষ ঠান্ডায় মরে,আর এই দানব কম্বল সরিয়ে রাখছে।এই কেমন মানুষ?দানব সন্ত্রাসী বলে কি তার মাঝে ঠান্ডার অনুভূতি কাজ করে না?”
বাঁকা নয়নে তূর্যয়ের দিকে তাকিয়ে রাণী তূর্যয়ের ঘন চুলের মাঝে হাত রাখলো।রাণীর হাতের স্পর্শে তূর্যয় খানিকটা নড়ে উঠলো। কিন্তু রাণীর হাত থামলো না। সে তূর্যয়ের চুলের গভীরতায় পরম ভালোবাসা দিয়ে হাত বুলিয়ে যাচ্ছে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে রাণী দেখলো এখন মাত্র সকাল ছয়টা বাজে। ফজরের নামাজের পর থেকেই রাণী আর ঘুমাতেই পারলো না। অজানা অস্থিরতায় রাণীর চোখ দুটো বন্ধ হতে নারাজ। কিছুদিন ধরেই রাণীর সাথে এইসব হচ্ছে। মাঝে মাঝে রাণীর ঘুমই আসেনা আর মাঝে মাঝে সে সারাদিন ঘুমায়। রাণী বসে বসে কিছুদিন আগে তাদের ঢাকা ভ্রমণের কথাগুলো চিন্তা করছে। যদিও রাণী এবং তূর্যয়ের কথা ছিলো শান্তি মহলে যাবে তারা। তবে ঢাকা শহরে তূর্যয়ের মিশন পড়ে যাওয়ায় তাদের আর যাওয়া হলো না শান্তি মহলে। তূর্যয়ের সাথে রাণীও ঢাকায় গিয়েছিলো।সেখানে তারা অনেক জায়গায় ঘুরেছে।সে দিনগুলো যেনো রাণীর কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো স্মৃতি হিসেবে রক্ষিত থাকবে তার মনে।কিন্তু সেখান থেকে আসার কিছুদিন পর থেকেই রাণীর এমন অস্থিরতার দেখা মিলছে।তূর্যয়ের নাকি আরো কিছু কাজ আছে,সেসব সেরে একেবারেই নাকি তারা শান্তি মহলে উঠবে।তবে এতেও আরেকটা শর্ত যোগ করেছে তূর্যয়।সেই শর্ত হলো,যখনই তূর্যয়ের গভীর রাতের মিশন থাকবে তখন সে রাণীকে হায়ার সাথে এই বাড়িতে রেখে যাবে।যার অর্থ রাণীকে সেই রাতটুকু তূর্যয়ের বাড়ি তথা ডার্ক হাউজে কাটাতে হবে।এইসব কোন ধরনের নিয়ম, রাণীর জানা নেই।তারপরও তূর্যয় শান্তি মহলে যেতে রাজি হয়েছে,এই নিয়ে খুশির সীমানা নেই রাণীর। অপলক দৃষ্টিতে সামনের দিকে চেয়ে রাণী নানান চিন্তায় মশগুল।
–“বসে আছো কেনো?”
তূর্যয়ের ঘুম জড়ানো কন্ঠে রাণী তার চিন্তা জগৎ থেকে ফিরে এলো।মাথা নিচু করে তূর্যয়ের দিকে তাকাতেই সে দেখলো,তূর্যয় তার মাথা উঠিয়ে রাণীর দিকে চোখ কুঁচকে চেয়ে আছে।তূর্যয়ের কপালে তার চুলগুলো লেপ্টে আছে।রাণী হেসে উঠলো তূর্যয়ের এমন আদুরে চেহারা দেখে।তূর্যয়ের কপালের উপরের চুল সরিয়ে দিয়ে রাণী তূর্যয়কে হেসে জবাব দিলো,
–“কেমন আদুরে আদুরে লাগছে আপনাকে এখন।”
রাণীর কথায় তূর্যয় রাণীর হাত ধরে তাকে বিছানায় শুইয়ে দিলো তার পাশে।রাণীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তূর্যয় ঘুম ঘুম কণ্ঠে তূর্যয়কে বললো,
–“তাই?আজ বুঝেছো তুমি,আমি দেখতে আদুরে?হাহ,দেখো গিয়ে আমার জন্যে কতো মেয়ে কান্নাকাটি করছে!”
কথাটা বলে তূর্যয় হেসে উঠলো।রাণীর মেজাজটা যেনো আগুনের গোল্লায় পরিণত হলো তূর্যয়ের কথা শুনে।রাণী নিজের কোমরের উপর থেকে তূর্যয়ের হাত সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে দাঁতে দাঁত চেপে তূর্যয়কে জবাব দিলো,
–“তো আমি কি করবো? আপনি যান তাদের কাছে!আমি তো আপনাকে ধরে রাখিনি।আপনিই আমাকে ধরে রেখেছেন।সরুন তো, আমার অস্বস্থি হচ্ছে।”
রাণীর মুখে বিরক্তি ছেয়ে আছে।তূর্যয় রাণীর দিকে আরো এগিয়ে গেলো।রাণীর গলায় নিজের মুখ গুঁজে দিয়ে হালকা করে ঠোঁট ছুঁয়ে দিলো রাণীর গলায়। এতে রাণীর বকবক মুহূর্তেই থেমে গেলো।রাণী চুপ করে আছে।হাজার কিছু হয়ে গেলেও,তূর্যয়ের এই স্পর্শ যেনো রাণী কিছুতেই উপেক্ষা করতে পারে না।রাণী চোখ বুঁজে আছে।তূর্যয় রাণীর গলায় মুখ ডুবানো অবস্থায় রাণীকে জবাব দিলো,
–“ঘুমাও বউ।এখন যদি আরেকবার চোখ খোলা দেখি,তবে আবারও আমার ভালোবাসার সাগরে ভাসিয়ে নিয়ে যাবো কিন্তু।”
তূর্যয়ের কথায় রাণী দ্রুত চোখ বন্ধ করলো।এই মুহূর্তে রাণীর একটুও তূর্যয়ের সাথে তর্ক করতে ইচ্ছে হচ্ছে না।অগত্য রাণী তূর্যয়ের বুকের উষ্ণতা উপভোগ করছে।রাণী অপলক চোখে তূর্যয়ের বুকের দিকে চেয়ে আছে।তার যেনো আজ চোখের পাতা একত্রে না হওয়ার ওয়াদা করেছে।অজানা অস্থিরতা রাণীর সারা শরীরে কিলবিল করছে। যা রাণীর ঘুম হারাম করেছে এই মুহূর্তে।তূর্যয় রাণী ঘুমিয়েছে কিনা;তা দেখার জন্যে রাণীর গলা থেকে মাথা উঠিয়ে তার তাকাতেই দেখলো,
রাণী এখনো বড় বড় করে চোখ পাকিয়ে রয়েছে।তূর্যয় ভ্রু কুঁচকে নিলো।রাণীর মাথায় হাত রেখে তাকে আদুরে সুরে প্রশ্ন করলো,
–“কি হয়েছে?কখন থেকে জেগে আছো,শরীর খারাপ করবে।”
রাণী কিছু বললো না। নিঃশব্দে চেয়ে রইলো রাণী তার দানব সন্ত্রাসীর দিকে।রাণীর যেনো সবকিছুই অন্যরকম লাগছে।রাণীকে চুপ করতে দেখে তূর্যয় বেশ মোলায়েম ভাবে রাণীকে নিজের সাথে আটকে নিলো।রাণীর মাথায় ধীরে ধীরে হাত বুলিয়ে দিয়ে রাণীকে তূর্যয় বললো,
–“মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।ঘুমিয়ে পড়।শরীর খারাপ করবে।”
রাণী এইবার চোখ বুজলো।তার দানব সন্ত্রাসীর এমন আবেগমাখা কঠোর নির্দেশ যেনো রাণীর পালন করা অনিবার্য। রাণী ধীরে নিজের হাত রাখলো তূর্যয়ের পিঠে।
‘
ঘুম ভাঙতেই রাণী দেখলো হায়া রুমের পর্দা সরাচ্ছে।রাণী দ্রুত উঠতে গিয়েও উঠতে পারলো না।একটা ক্লান্তি রাণীর শরীরকে আঁকড়ে ধরেছে।রাণী বিছানায় এক হাত পিছে ঠেকে নিজেকে সামলে নিলো।ঘড়ি দেখতেই রাণীর বেশ অবাক লাগলো।দুপুর সাড়ে বারোটা বাজে।রাণীর মনে হচ্ছে,এই মাত্রই সে তার দানবের বুকে ঘুমিয়ে পড়েছিল।কিন্তু এখন তো অনেক বেলা হয়ে গিয়েছে। বসা অবস্থায় রাণী হায়াকে প্রশ্ন করলো,
–“তোমার বড় স্যার কি চলে গিয়েছে?”
হায়া পর্দা থেকে চোখ সরিয়ে রাণীর দিকে চেয়ে বললো,
–“হ্যাঁ,ভাবী।অনেক আগেই চলে গিয়েছে।”
–“নাস্তা খেয়েছেন উনি?”
রাণীর কথায় হায়া হেসে উঠলো,
–“আরে না।উনি আমাদের হাতে বানানো নাস্তা খাবেন বুঝি?শুধু নিজ হাতে প্রোটিন শেইক বানিয়ে খেয়েছেন।উনাকে কিছু বলার সাহস না আমার আছে,না আছে রুসা খালার।আপনি ঘুম ছিলেন আর আমরা ভয়ে কাঁপছিলাম নিচে।এতো সুদর্শন মানুষটা এতো হিংস্র হবে,এটা আমি কখনো জানতাম না ভাবী।”
হায়ার কথায় এইবার রাণী হুহু করে হেসে উঠলো।
মুহূর্তেই রাণীর চোখে ভেসে এলো ঢাকায় কাটানো তাদের সেইসব দিনের কথা।রাণী আর তূর্যয়ের সাথে হায়াও গিয়েছিল তাদের সাথে ঢাকায়।সেখানে একজনের ফার্ম হাউজ ভাড়ায় নিয়েছিল তূর্যয়।বাড়িতে চলে আসার দুইদিন আগে তূর্যয় কাজের জন্যে বের হলে সেদিন রাণী আর হায়া দুইজন মিলে বেশ কিছুক্ষণ ফার্ম হাউজের চারদিকে ঘুরে দেখছিল।এরমধ্যেই হায়া আর রাণী খেয়াল করলো তাদের কেউ আড় পেতে দেখছে। হায়াই প্রথমে এইটা খেয়াল করে রাণীকে বলেছিল।রাণী প্রথমে বুঝতে পারেনি।কিন্তু,যখন সে ব্যাপারটা বুঝতে পারলো,তৎক্ষণাৎ সে ব্যাপারটা জানিয়েছে তূর্যয়কে ফোন করে।তূর্যয় তখন ফার্ম হাউজে ফিরছিল।রাণীর কথা শুনে তূর্যয় রাণীকে বেশ বকাঝকা করলো,বাড়ির ভেতর থেকে বের হওয়ার অপরাধে।ফার্ম হাউজের আয়তন বড় হওয়ায়,রাণী আর হায়া মিলে কবে সেই আয়তনে মিশে গিয়েছিল নিজেরাই বুঝেনি।সন্ধ্যা নামার আগেই রাণী আর হায়া ফেরার সময় খেয়াল করলো,তাদের কেউ ফলো করছে।ততক্ষণে রাণীর বার্তা পেয়ে তূর্যয় বেশ দ্রুত গাড়ি চালিয়ে ফার্ম হাউজের কাছাকাছি চলে এসেছিল।গার্ডদের মধ্যে একজনই খারাপ লোক ছিলো, যে রাণীর ক্ষতি করতে চেয়েছিল।রাণী আর হায়ার কাছে আসার পূর্বেই লোকটিকে অন্য গার্ডরা ধরে ফেলে।সেই মুহূর্তেই সেখানে পৌঁছে তূর্যয়। সেই গার্ডকে তূর্যয় তার বড় ছুরি দিয়ে হায়া,রাণী এবং বাকি সবার সামনেই কুপিয়ে মেরে ফেললো।সেদিনই হায়া জানলো,তূর্যয় ঠিক কতটা হিংস্র।মেরে ফেলার আগে গার্ডটিকে বহুবার জিজ্ঞেস করেছিল তূর্যয়ের গার্ডের প্রধান,কেনো সে রাণীর ক্ষতি করতে চাই।কিন্তু গার্ড কিছুতেই মুখ খুলেনি।এইদিকে গার্ড রাণীকে মারতে চেয়েছিল সেই ভয়ে রাণী সেখানেই কান্না করা শুরু করেছিল।যার দরুণ,তূর্যয় আর কিছুই জানতে চায়নি গার্ড থেকে।তার রৌদ্রের দিকে চোখ তুলে তাকানোর শাস্তি তৎক্ষণাৎ দিয়ে দিয়েছিল সেই গার্ডকে।পরবর্তীতে তূর্যয় খোঁজ নিয়ে সেই গার্ডের প্রধান বসকে খুঁজে তাকেও পরপারে পাঠিয়ে দিয়েছিল।
রাণীর এইসব ভাবনার মাঝে হায়া রাণীকে ডেকে উঠলো জোরে,
–“ও ভাবী!”
হায়ার ডাক শুনে চমকে উঠলো রাণী।
–“তোমার কথায় সেদিনের ঘটনা মনে চলে এসেছিল।”
রাণীর শান্ত জবাব।
–“আরে,বড় স্যার ঢাকায় যেদিন ঐ লোককে কুপিয়ে মেরেছিল সেদিনের ঘটনা?”
হায়া বেশ চমকে প্রশ্ন করলো।
রাণী হায়ার প্রশ্নে মাথা নাড়িয়ে “হ্যাঁ” বললো।হায়া এসে রাণীর পাশে বসলো।
–“সেদিনই আমি বড় স্যারের চোখে হিংস্রতা দেখেছি।অথচ উনি নরমাল অবস্থায় থাকলে যে কেউ উনার প্রেমে পড়তে বাধ্য হবে।কিন্তু ভালই হয়েছে,আপনি এমন একটা হিংস্র আর ভালোবাসাময় বর পেয়েছেন।আপনার জীবনের সুরক্ষার হার একশো পার্সেন্ট।”
হায়ার হাস্যোজ্বল জবাব।
–“হয়েছে হয়েছে,বড় স্যারের ফ্যান।এইবার বন্ধ করো বড় স্যারের গুণ গাওয়া।তুমি খেয়েছিলে নাস্তা?”
রাণী চুলে খোঁপা করতে করতে প্রশ্ন করলো হায়াকে।
–“হ্যাঁ,করেছি।আপনার জন্যে রুসা খালাকে বলছি চা বানিয়ে দিতে।নাস্তা টেবিলে সাজাচ্ছি আমি।”
কথা বলে দেরী না করেই হায়া নাচতে নাচতে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।
রাণী নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে প্রথমে তূর্যয়কে ফোন করলো।লোকটা এখনো কিছু খেয়েছে কিনা,এই নিয়ে রাণীর সংশয়ের শেষ নেই।দুইবার রিং বাজতেই তূর্যয় ফোন ধরলো,
–“হ্যাঁ,বলো রৌদ্র!”
–“কিছু খেয়েছেন আপনি?আমাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেননি কেনো সকালবেলা?”
রাণীর আহত সুরে প্রশ্ন।
–“কিভাবে ডাকবো বলো?এতো সুন্দর ঘুমন্ত বউয়ের ঘুম কিভাবে ভাঙাতে পারতাম আমি?আমার মনেও তো দয়া হয় আমার রৌদ্রের জন্যে।আর তোমার প্রথম প্রশ্নের উত্তর হলো,হ্যাঁ খেয়েছি।একটা সিগারেট।”
তূর্যয়ের কথায় রাণী তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো,
–“বাহ্,এতো ভালো খাবার কিভাবে হজম করেছেন আপনি?”
–“আহ্ বউ!এমন করো কেনো?তুমি নিজে গিয়ে খেয়ে নাও।ঘুম থেকে উঠে আমাকেই ফোন লাগিয়েছো আমি জানি।আমি হ্যারির সাথে রেস্টুরেন্টে ছিলাম মিটিং এ।সেখানেই নাস্তা সেরেছি।”
–“এতো ঢং না করে আগেই বলতে পারতেন।সাবধানে থাকবেন আর হ্যাঁ,ভালোবাসি দানবকে।”
কথাটা বলে রাণী মুহূর্তেই ফোন রেখে দিলো।হাত মুখ ধুয়ে নিচে নামতেই দেখলো টেবিলে হালকা নাস্তা সাজানো আছে।চেয়ারে বসতেই রুসা খালা তার জন্যে গরম গরম চা নিয়ে হাজির হলো। ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ দেখে রাণীর মনটা খুশি হয়ে গেলো নিমিষেই।কারণ,তার মাথা ব্যাথা এখন ফটাফট চলে যাবে এই চা খেলে।রাণী নাস্তা খেতে বসে পড়লো।
সারাদিন আজ রাণী হায়ার সাথেই ছিলো।তূর্যয় ব্যস্ত তার কাজে।আসরের নামাজ পড়ে উঠে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালো রাণী। আকাশটা যেনো আরো বেশি কুয়াশায় ছেয়ে গিয়েছে এখন।অতিরিক্ত ঠান্ডা পড়ার কারণে রাণীর দুপুর থেকে সর্দি লেগে গেলো হঠাৎ। সেদিকটা উপেক্ষা করে রাণী দুপুরেই ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল সেরেছিল।যার কারণে,এখন রাণীর শরীরের তাপমাত্রা যেনো হালকা বাড়ছে।তবে সেদিকে রাণীর পাত্তা নেই।সে তার পড়নে শাড়ির আঁচল গায়ের সাথে জড়িয়ে রেখেছে।এই করুণ ঠান্ডায় রাণীর গায়ে গরম কাপড়ের চিহ্ন নেই।রাণীর গায়ের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে সে একটু অসুস্থবোধ করছে।রাণী রুমে এসে ব্যালকনির দরজা বন্ধ করে দিলো।হায়া তার রুমে ঘুমিয়ে আছে।রাণী আর হায়ার কাছে গেলো না।তার শরীরটা দুর্বল লাগার কারণে সে মোটা কম্বলের নিচে তলিয়ে গেলো।দুর্বলতায় রাণীর চোখজোড়া বটে এলো।
.
তূর্যয়ের কাজ শেষ করে রাত আটটার দিকে গেলো মমতা এতিম খানায়।নানান কাজের ব্যস্ততায় তার যাওয়া হয়নি সালেহার কাছে।হ্যারিকে বলে মোল্লা সাহেবকেও আসতে বলেছে সে এইখানে।তূর্যয়কে এইখানে দেখে সিমি বেশ অবাক হলো।সে সাথে সাথে ফোন দিলো সাবিনাকে।তূর্যয় আর রাণীর বিয়ে ভালোই ভালোই হয়ে যাওয়াতে সেদিনই হ্যারি এতিম খানার সবার মোবাইলের ট্র্যাকিং করা বন্ধ করে দিয়েছিল।তাই,সিমি তার জঘন্য প্ল্যান খুব সহজেই করে ফেলে সাবিনার সাথে।সাবিনা সিমিকে নির্দেশ দিলো তূর্যয়ের উপর নজর রাখতে।সেই হিসেবে সিমি আড় পাতলো সালেহার অফিসের সামনে।
প্রথমত সালেহা তূর্যয়কে এইখানে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো।সালেহাকে উত্তেজিত হতে দেখে তূর্যয় দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললো।সালেহা বিচলিত হয়ে তূর্যয়কে বলে উঠলো,
–“বাবা!তুমি হঠাৎ?রাণী ঠিক আছে তো?”
তূর্যয় সালেহাকে শান্ত হতে ইশারা করে তাকে জবাব দিল,
–“সবাই ঠিক আছে।আসলে আমি কিছু বলতে এসেছি।”
সালেহা তার পূর্বের করা কাজের জন্যে তূর্যয়ের দিকে লজ্জায় তাকাতে পারছে না।তাও সে ভাঙ্গা কণ্ঠে বললো,
–“হ্যা, বলো বাবা।”
–“সবকিছুর জন্যে খুবই আফসোস হচ্ছে।আপনার আর আমার মায়ের সম্পর্কটা কেমন ছিলো তা আমরা দুইজন ভালো জানি।শুধুমাত্র কিছু খারাপ লোকের পাল্লায় পড়ে আমাদের জীবনটা একদম বাজে মোড় নিয়েছিল।”
তূর্যয় থামলো।এর মাঝে এলো হ্যারি আর মোল্লা সাহেব।দুইজনই চেয়ারে বসলে,তূর্যয় ঘাড় বাঁকিয়ে মোল্লা সাহেবের দিকে তাকিয়ে তাকে বলে উঠলো,
–“দেখুন,আপনাদের দুজনের মধ্যকার সবকিছু ঠিক করে নিন। এতে আমি আর রাণী দুইজন বেশ খুশি হবো।তাছাড়া আমার জন্যেই আপনাদের সম্পর্কের টানা পোড়া হয়েছিল।তাই আমি এখন চাই সবকিছু আগের মতো হয়ে উঠুক আপনাদের মাঝে।”
মোল্লা সাহেব মুচকি হাসলো।সালেহা তূর্যয়কে বলতে চেয়েছে,
–“বাবা,আমি অনেক দুঃখিত।আমি জানতাম না তোমার মা!”
তূর্যয় সালেহাকে কিছু বলতে না দিয়ে থামিয়ে দিলো নিজের হাত দেখিয়ে,
–“এইসব কথা টানবেন না আর।নতুন করে আমাদের সবার পথ চলা শুভ হোক।আসি তাহলে।আগামীকাল আপনারা দুজন একবার আমার বাড়ি আসবেন।অবশ্যই আমার বাড়ি,শান্তি মহলে না।রাণী খুশি হবে আপনাদের দেখলে।”
তূর্যয় কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে উঠে পড়লো।তূর্যয় আর হ্যারি হাঁটতে লাগলো গাড়ির দিকে।আর মোল্লা সাহেবের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো সালেহা।মোল্লা সাহেব পরম ভালোবাসার তার সহধর্মিণীকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করলো।তাদের এতদিনের অপেক্ষা আজ ফুরিয়েছে।
এইদিকে সিমি হ্যারিকে দূর থেকে দেখেই পালিয়েছে।যার কারণে তার সম্পূর্ণ ঘটনা দেখা হলো না।সাবিনাকে এইসব ঘটনা জানাতে না পেরে সিমি সাবিনার অকথ্য ভাষায় গালির শিকার হলো।সিমি মাথা চুলকিয়ে ভাবছে,কিসের আলোচনা করলো তূর্যয় সালেহার সাথে।
.
রাণীর জ্বর বেড়েছে। সন্ধ্যায় হায়া রাণীকে ডাকতে এলে দেখে রাণী জ্বরে কাঁপছিলো।রাণীর অনুরোধে সে তূর্যয়কে ফোন করেনি। হায়া রাণীকে জ্বরপট্টি দিলে রাণীর একটু জ্বর কমেছিল।কিন্তু এখন আবার হন হন করে যেনো রাণীর জ্বর বাড়ছে।হায়া এইবার অস্থির হয়ে পড়লো।তূর্যয়কে ফোন করতে গেলেই হায়া রুমে কারো প্রবেশ টের পেলো।হায়া কিছু না বলে মাথা নিচু করে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।বুকে হাত দিয়ে কাঁপছে সে।রাণীর এমন জ্বর আর সে তূর্যয়কে কিছু জানায়নি,
এই নিয়ে ভয়ে প্রাণ চলে যাচ্ছে হায়ার।
এইদিকে রাণীর এমন লাল মুখমণ্ডল দেখে তূর্যয়ের বুকটা ধ্বক করে উঠলো।রাণী মলিন হাসছে তূর্যয়ের দিকে তাকিয়ে।রাণী যেনো চাইছে না তূর্যয় রাণীর ব্যাপারটা বুঝে উঠতে পারে।তূর্যয় নিজের ভারী জ্যাকেট খুলে নিয়ে রাণীর পাশে বসে রাণীর মাথায় হাত রাখলো।রাণী একটু নড়ে উঠলো।রাণী বিড়বিড় করে তূর্যয়কে বলছে,
–“আপনি এসেছেন?আমি খাবার তৈরি করছি।আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন।”
রাণীর গায়ের তীব্র গরম ভাব তূর্যয় অনুভব করতে পারলেই তূর্যয় বেশ বেশামাল হয়ে পড়লো। হায়াকে ডাকতে গিয়েও ডাকতে পারলো না তূর্যয়।এর আগেই রাণী তূর্যয়ের হাত ধরে তাকে আটকিয়ে নিলো।রাণী ছলছল চোখে বলতে লাগলো,
–“হায়ার দোষ নেই।আমার দোষ সব।সরি।আমি ঠিক আছি সত্যি।”
তূর্যয় এইবার রেগে রাণীকে জবাব দিলো,
–“এক চড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিবো।ঠকঠক করে কাঁপছে সে আর সে নাকি ঠিক আছে।আমাকে কি অশিক্ষিত মনে হয়?”
রাণীর চোখে পানি চলে এলো তূর্যয়ের ধমকে।তূর্যয় নিজের মাঝে নেই।দ্রুত দাঁড়িয়ে সে হ্যারিকে বললো ডাক্তার পাঠাতে তাদের বাসায়।হ্যারির জবাব পেয়ে তূর্যয় আবারও বসে পড়লো রাণীর পাশে।পাশের টেবিলে জ্বর পট্টির কাপড় নিয়ে রাণীর কপালে জ্বর পট্টি দিতে লাগলো তূর্যয়।রাণী দূর্বল কণ্ঠে তূর্যয়কে অনুরোধ করলো,
–“একটু জড়িয়ে ধরুন না,প্লিজ।কেমন যেনো লাগছে আমার।”
তূর্যয়ের মনটা অশান্ত হয়ে গেলো নিমিষেই।রাণীর উপর ঝুঁকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো সে রাণীকে।রাণীর গালে ভালোবাসার পরশ দিয়ে তূর্যয় রাণীর কানে ফিসফিস করে বলতে লাগলো,
–“সরি,রৌদ্র বকা দেওয়ার জন্যে।ভালোবাসি তো অনেক বেশি।”
রাণী মলিন হাসলো।এই জ্বরের ঘোরেও তূর্যয়ের মুখে “ভালোবাসি” কথাটা শুনে রাণীর বুকে উথাল পাথাল শুরু হলো।
রাণীর জ্বর সারলো পুরো দুইদিনে।সালেহা,মোল্লা সাহেব,হ্যারি,রাণীর সখীরা সবাই দেখতে এসেছিল রাণীকে।সেদিন রাণী খুব বেশি খুশি হয়েছিল তার সব প্রিয় মানুষকে একসাথে দেখতে পেয়ে।রাণী সুস্থ হতেই তূর্যয়কে মানিয়ে নিলো “শান্তি মহলে” যাওয়ার উদ্দেশ্যে। তূর্যয়ও কিছু একটা ভেবে রাণীর মতে সাড়া দিলো।আজই তারা বেরিয়ে পড়লো “শান্তি মহলের” পথে।যতদিন তারা শান্তি মহলে থাকবে,তূর্যয়ের নির্দেশ ততদিন রাণী সেখান থেকে বাহিরে যেতে পারবে না।এমনকি তার দোকানেও না।রাণী শান্ত ভাবে সবটা মেনে নিলো তূর্যয়ের কথা।তার ধারণা তূর্যয় সবকিছু ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।রাণীর জ্বর সারলেও তার মধ্যে দুর্বলতার কোনো কমতি নেই।কিন্তু তারপরও রাণী মুখ বুজে রয়েছে।তূর্যয় জানতে পারলে তাকে এই বাড়ি থেকে আবারও নিয়ে যাবে।কিন্তু এই আলো আঁধারের খেলা রাণীর আর ভালো লাগছে না।রাণীর ধারণা,
–“যতো দ্রুত এই ঝামেলা দূর হবে,তত দ্রুত আমি আর তূর্যয় একটা স্বাভাবিক জীবন পাবো।এই মানুষগুলোকে মায়ের ওয়াদার জন্যে কিছু করতে পারছে না তূর্যয়।আমার বিশ্বাস,খুব জলদি আমি এইখানে থেকে সবটা উদঘাটন করে আমার তূর্যয়কে জানিয়ে দিবো।হাহা,
এইবার কোথায় পালাবি সাবিনা ভুটকি আর তোর বংশধরেরা?”
রাণীর মুখে চাপ হাসি।
তূর্যয়ের গাড়ির পাশাপাশি আরো দুইটা গাড়ি থামলো।অতিরিক্ত গার্ড দেখে রাণী নিশ্চিত হলো,এইসব তূর্যয়ের কাজ।
তূর্যয় রাণীর হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে।ভেতরে যেতেই সাবিনা,মনি আর হাসানকে দেখলো তারা।তিনজনই সমান অবাক হলো রাণী আর তূর্যয়কে দেখে।সাবিনা তাদের দেখে হচকিয়ে বলতে শুরু করলো,
–“এই তো চলে এসেছে এই ঘরের ধ্বংসকারী।সাথে তো তার বৌকেও নিয়ে এসেছে।কেনো রে?কেনো এসেছিস তোরা?”
সাবিনার কথায় তূর্যয় চিল্লিয়ে উঠলো,
–“দ্বিতীয় বউদের এইভাবে চিল্লানো ভালো না।আমি এই ঘরের প্রথম বউয়ের সন্তান।তাই আমার এইখানে অধিকার তোর চেয়েও বেশি।আর শেষ কথা হলো,
আমার বউয়ের দিকে চোখ তুলে তাকানো নিষিদ্ধ।আমার বউ এর দিকে তাকানোর সাহস করলে মৃত্যুর সাথে দেখা করার জন্যে তৈরি হয়ে নে।”
কথাটা বলে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকালো তূর্যয় হাসান এবং সাবিনার দিকে।দুইজনই তূর্যয়ের অগ্নিচক্ষু দেখে অন্যদিকে ফিরে গেলো। একটু পরে কিছু মহিলা গার্ড এলো ঘরের ভেতর।তারা এসে প্রত্যেকেই একেকটা পিলারের পাশে দাঁড়ালো।হায়া তূর্যয়ের নির্দেশে সিঁড়ির পাশে থাকা কাজের মহিলার জন্যে নির্ধারিত রুমে চলে গেলো।রাণীর হাত ধরে তূর্যয় রুমে চলে যেতে নিলে সাবিনা খেঁকিয়ে উঠলো,
–“ঘরটারে কিসব মানুষ দিয়ে ভই…”
সাবিনা কিছু বলতে পারলো না।এর আগেই তূর্যয়ের চোখ তার চোখে পড়তেই সাবিনা ফুঁস হয়ে গেলো।
রাণী এবং তূর্যয় তাদের রুমে চলে যেতেই সাবিনা সাথে সাথে ফোন দিলো সিমিকে।
বিকালের দিকে তূর্যয় মিটিং এ যাওয়ার জন্যে তৈরী হয়ে রাণীর কাছে গেলো।রাণী শুয়ে আছে।শরীরটা তার মোটেও ভালো লাগছে না।তূর্যয় রাণীর ঠোঁটে দীর্ঘ চুমু দিয়ে রাণীর কপালে তার কপাল ঠেকিয়ে বলে উঠলো,
–“আসছি আমি।প্লিজ,সাবধানে থাকবি।আমার মোটেও ভালো লাগছে না এইখানে তোকে একা রেখে যেতে।”
রাণী তূর্যয়ের ঘাড়ে দুই হাত রেখে তাকে আশ্বাস দিয়ে বললো,
–“হায়া আছে,মনি আছে,গার্ড আছে। এরপরও এতো ভয় কিসের?আল্লাহ্ ভরসা।আমরা আমাদের কাজ শেষ করে দ্রুত আবার আমাদের ঘরে ফিরে যাবো।”
তূর্যয় আবারও শব্দ করে করে ঠোঁট ছোঁয়ালো রাণীর ঠোঁটে।রাণী আবেশে চোখ বন্ধ করলো।তূর্যয় রাণীকে নির্দেশ দিল,
–“মোবাইল হাতের কাছে রাখবে।ভুলেও একা থাকবে না।”
–“জ্বী,সন্ত্রাসী।”
তূর্যয় হেসে উঠলো।রাণীর গালে হাত বুলিয়ে বেরিয়ে পড়লো তূর্যয়।সাথে সাথেই রাণীর রুমে এলো হায়া আর মনি।তারা যেনো তূর্যয়ের বেরিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলো।
মনির অনুরোধে হায়া,মনি আর রাণী মিলে লিভিং রুমে গেলো।রাণী শাড়ির উপর দিয়ে মোটা চাদর দিয়ে রেখেছে। লিভিংরুমে মধ্যখানে বসে তারা লুডো খেলছে।রাণীর দুর্বল শরীরটাও এখন ভালো অনুভব করছে।খেলার মধ্যে রাণী আর বাকি সবাই এতটাই ডুবে গিয়েছে তারা খেয়াল করেনি আহমেদ দুই তলা থেকে অবাক নয়নে রাণীর দিকে চেয়ে আছে।আহমেদ এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে যেখান থেকে গার্ডরা তাকে দেখছে না।সাবিনার কথায় রাণীকে দেখতে এসেই চোখ থমকে গেলো আহমেদের। নেশাহীন আহমেদ যেনো রাণীতে ডুবে গেলো।বুকের বা পাশে এক প্রকার অনুভূতি অনুভব করছে সে।আহমেদ বুকে হাত দিয়ে আপনমনে বলে উঠলো,
–“কি সুন্দর তুমি!সেদিন তো ছিলে একটা রোগা পাতলা মেয়ে।আর এখন যেনো এক পরিপূর্ণ নারী!এই রূপেই বুঝি তূর্যয় ঘায়েল হয়েছে তোমায় দেখে?ইস,
তোমাকে তো আমার নষ্ট করতে ইচ্ছা করছে না।ইচ্ছা করছে সারাদিন আমার সামনে রেখে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতে।বিয়ের পরে কি হলো তোমার?এতো চোখ ধাঁধানো,পরিপুষ্ট লাগছে তোমায়! উম,প্ল্যান চেঞ্জ।এখন মরবে তূর্যয় আর রাণী হবে আমার।হাহাহা।মাদকতা কাজ করছে আমার বুকে।হায়!তূর্যয়ের বউ, রাণীর মাদকতা জেঁকে ধরেছে আমায়।”
কথাটা বলেই আহমেদ ভয়ংকর হেসে উঠলো।
চলবে….
কপি করা নিষেধ।দ্রুত শেষ করে দিবো গল্পটা।অসুস্থতার কারণে গল্প রেগুলার দিতে পারছি না,এর জন্যে দুঃখিত।এই গল্প শেষ হলে আর ফিরবো কিনা এই গল্পের জগতে,জানা নেই আমার।পরবর্তী পার্ট দ্রুত দেওয়ার চেষ্টা করবো।এখন আমার একমাত্র উদ্দেশ্য দ্রুত এই গল্প শেষ করা।আমার অসুস্থ অবস্থা ভালো হলে রেগুলার দিবো এই গল্প।আর গল্প কেনো দেরীতে দিই,গল্প দেওয়ার কথা হলেও যদি গল্প না দিই;তাহলে কেউ আমার সাথে বাজে ব্যবহার করতে পারবেন না।আজ খুবই বাজে এক্সপেরিয়েন্স হয়েছে আমার সাথে।ঘটনা আমি আমার গ্রুপে দিয়েছি।জানতে হলে সেখানে গিয়ে দেখে নিবেন।গল্প লিখি বলে যা তা ব্যাবহার করতে পারবেন না।সম্মান দিলে তবেই সম্মান পাবেন,এটা সবার জেনে রাখা ভালো।আজকের মতো হতাশ আমি কখনো হইনি।ভালো থাকবেন সবাই।