#তাসের_ঘরে_তুমি_আমি
#পর্ব_১৪,১৫
#লেখক_আয়াশ
১৪
মৃত্যুকে খুব কাছে থেকে দেখছে শান।
শানকে হাত পা বেধে রাখা হয়েছে এক বন্ধ ঘরে। চাইলেও নড়তে পারছে না। প্রচন্ড পানি পিপাসা পেয়েছে বেচারার।
হঠাৎ বদ্ধ ঘরের দরজাটা খুলে গেলো। শান ভাল করে খেয়াল করে দেখলো এটা কেউ না পুতুল!!!
পুতুল তার গলায় হাত দিয়ে চেপে ধরলো আচমকা। শানের হাত পা বাধা থাকায় সে কিছুই করতে পারছে না। সে দেখলো পুতুল তার হাতটা শানের দিকে এগোচ্ছে। আর হাতটায় মাংস চামড়া কিছু নেই। শুধু কঙ্কালের মত হাড়।
মুহুর্তেই হাতটি শানের গলা জোড়ে চেপে ধরল। হাতে যেন অ’সুরের শক্তি! শ্বাসকষ্ট শুরু হল শানের।
‘ছাড়ো আমাকে, ছাড় বলছি।’
‘হাহাহাহা আমার মৃ’ত্যু বিফলে যাবে কেন? তুই কি ভেবেছিস? তাকে আমি ছেড়ে দিব? আমি মরেছি তোকেও মা”রবো। হাহাহাহাহ” সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ওই কঙ্কালের মত হাত দিয়ে চেপে ধরল শানের গ’লা। এখনি মরে যাবে শান এমন মনে হচ্ছে।
‘না না নায়ায়ায়ায়াহহহহ!!!’
রাত শেষের দিকে,আযান ধ্বনি শোনা যাচ্ছে।। বিছানা থেকে ধরফরিয়ে উঠল শান। কি ভয়ানক স্বপ্ন!! তখনই পাশে থেকে মিথিলা সাথে সাথে শানের হাত আগলে ধরল তার কোমল হাত দুটি দিয়ে।
‘কি কি হয়েছে আপনার?’
‘হ্যা? না না কিছু না।’
‘খারাপ স্বপ্ন দেখেছেন? তাই না?’
‘আসলে আসলে খুব খুব বাজে।’
‘একটু বসুন, ‘ বলেই মিথিলা ঘরের পামি রাগা জগ থেকে পানি গ্লাসে নিয়ে আসলো।
‘পানি খেয়ে নিন, ভালো লাগবে।’ শানের হাতে পানির গ্লাস ধরিয়ে দিয়েছে মিথিলা।
‘শান এক ঢোকে পুরো গ্লাস ফাকা করলো৷। মিথিলা পাশে বসে তার পিঠে হাত বুলাচ্ছে। শান শুধুই অবাক হচ্ছে।
‘নিজে অসুস্থ তারপরও উলটা আমারই সেবা করছে মেয়েটি? মাত্র কিছুদিনের দেখা, তারপরও এত ভালোবেসে ফেললে আমায় মিথিলা? কিভাবে এর ঋণ শোধ করব আমি?’
‘কি হল কি ভাবছেন? শুয়ে থাকুন আরেকটু। আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দেই। ভাল লাগবে।’
‘না না থাক, তুমি ঘুমাও। আমি ঠিক আছি।’
‘আপনি যে ঠিক নেই সেটা আপনি দেখতে না পারলেও আমি পারছি। কেন এত দুশ্চিন্তা করেন? শুয়ে পড়ুন।’
শান বাধ্য স্বামীর মত শুয়ে পড়ল মিথিলার পাশে। মিথিলা তার মাথায় হাত বুলাচ্ছে।
‘শান্ত হয়ে ঘুমান, এমনিতেই অনেক ধকল যাচ্ছে আপনার উপর।’
শান চোখ বন্ধ করে শুনছে আর ভাবছে ‘যদি মিথিলা জানতে পারে সে দেখতে পায় তাহলে? মিথিলা কি তাকে অবিশ্বাস করবে?’
কিছু সময় পর হঠাৎ মিথিলার আওয়াজ আসলো।
‘আপনাকে আমি কিচ্ছু হতে দিব না। এত বছরের পর অর্জিত ভালোবাসাকে আমি মোটেও হারাতে চাই না।।
তখনই শান চোখ খুলে তাকালো। মিথিলার দিকে তাকালো। কিন্তু দেখলো তার পাশে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতেই ঘিয়ে পড়েছে মিথিলা। আর বিড়বিড় করে কি বলছে। ঘুমের ঘোরে কি বলছে মেয়েটি!! শান সেদিকে বেশি ভ্রুক্ষেপ না করে ঘুমানোতে মনোযোগ দিল। আসলেই মেয়েটির হাতে জাদু আছে। দুস্বপ্ন দেখে শানের মনে যে খারাপ লাগাটা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা নিমষেই ভুলিয়ে দিল।
শান ভাবলো ওই ছলনাময়ী পুতুলের কথা কম ভাববে সে। রাতে ওই কল্পনা আবার এখন এরকম স্বপ্ন!! এভাবে চলতে দেয়া যাবে না। এসব ভেবে ঘুমিয়ে পড়ল শান।
সকালে নাস্তার টেবিলে বসেছে সবাই। শানের মার মুখে মিথিলাকে নিয়ে প্রসংশার ফুলঝুরি উড়ছে।
‘বাবা কি পাগলি মেয়ে এনেছিস আমার জন্য? দেখ আমাকে কিছু করতেই দিচ্ছে না! সকালে উঠে সকল নাস্তা নিজে নিজে করেছে। পরোটা, আলু ভাজি, ডিমের মামলেট, সুজির পায়েশ, আলুর দম আরো কত কি!! কিচ্ছু করতে দিচ্ছে না এখন থেকেই।’
শানের মা শানের পাশে বসে হাসতে হাসতে বলল।
পাশে শানের বাবাকে নাস্তা তুলে দিচ্ছিল মিথিলা। শানের মার কথা শুনে সে বলল,’মা এখন থেকে আমি এসে গেছি না? আমি সব সামলাবো।’
‘সেটা সামলাও কিন্তু নিজের দিকেও তো খেয়াল রাখতে হবে মা! কালকে তোমার অসুখ ছিল না? জ্বর ছিল, আর মুখে ক্রিম দাও একটু, এখনো লাল হয়ে আছে।’
মিথিলার মন একটু খারাপ হয়ে গেল। মা জ্বর কমে গেছে আমার। আর মুখের দাগের কথা বলছেন? মা বাবা যাওয়ার পর থেকে এসব দাগ মুখে পড়ার অভ্যাস হয়ে গেছে।’
‘দেখো কি বলে! মা বাবা গেছে তো আমরা কারা? শানের বাবা বলল।
‘হুম ঠিক বলেছো তুমি, আমরাই এখন থেকে তোমার মা বাবা। বুঝেছো?’
মিথিলা জড়িয়ে ধরল শানের মাকে। আর শানের মা তার মাথায় হাত বুলাচ্ছে। শান চশমার আড়ালে আড়চোখে দেখছে সেই দৃশ্য। এই দুইদিন আগেই তার বাড়ির কি অবস্থা ছিল! আর মিথিলা এসেই
বাড়িটাকে হাসি খুশিতে ভরে দিয়েছে মনে হয়।
‘কিরে বসে আছিস কেন তুই? খাওয়া শুরু কর।’
শানের মা তাকে বলল। মিথিলাও সেদিকে চাইলো।
‘হ্যা হ্যা খাচ্ছি।’
‘হুম আর মিথিলা মা তুমি বসো। খেয়ে ওষুধ খেতে হবে।’
‘হুম।।’
‘যাই বলো আজকে রান্নাটা ফাটাফাটি হয়েছে।’ শানের বাবা বলল।
‘হুম তাইতো, আমার মেয়ের হাতের রান্না। কিরে তুই কিছু বলছিস না?’ শানের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল তার মা।’
‘আমাকে বলছো?’
‘হ্যা তো কাকে বলব, বল বউমার রান্না কেমন হয়েছে?’
মিথিলা কৌতুহলী চোখে শানের দিকে তাকিয়ে আছে। শান রুটির এক লোকমা মুখে দিয়ে বলল,’মা ভাল হয়েছে অনেক।’
শানের এইটুকু কথাই মিথিলার মনে আকাশ সমান আনন্দ দেয়ার জন্য যথেষ্ট।
মিথিলা লজ্জায় মাথা নামিয়ে নিল। শানের মা সেটা লক্ষ করে হাসি মুখে মিথিলার মুখ উচু করলো। ‘আমার পিচ্চি মা টা আবার লজ্জাও পায়!’ এক হাতে জড়িয়ে নিল তাকে। মিথিলা লজ্জায় আরো লাল হয়ে গেলো।
‘আচ্ছা মিথিলা তোমরা আগে কোথায় থাকতে?’ শানের বাবা প্রশ্ন করলো।
‘জি নবাবগঞ্জ।’
‘কি বলো!! শানের আগের অফিসও তো নবাবগঞ্জেই ছিল। আমরা ওখানে কতদিন থেকেছি।’
শান ওদের কথাগুলো শুনছে।
‘ইশশ যদি নবাবগঞ্জেই আমার এই মা টাকে পেতাম
তাহলে ভিতরে এত কিছু ঘটত না আমার ছেলের জীবনে।’ শানের মার আফসোসের গলা।
মিথিলা সে কথা শুনে মুচকি হাসলো। হাসিটার পেছনের মানে কেউ বুঝলো না। কেউ সেদিকে খেয়ালই করেনি হয়ত।
‘আচ্ছা বাবা, কালকে রাতে পানি খাওয়ার সময় মনে হল উপরের রুম থেকে কেউ হাসছে।’
শানের বাবার কথা শুনে শানের মুখে খাবার আটকে গেলো।
মিথিলা শানের মায়ের হাত আরো জোড়ে জড়িয়ে ধরলো।
‘কি বলছো তুমি? উপরের রুমে তো সিল মারা। ওখান থেকে হাসি মানে?এসব আজগুবি কথা বলে মেয়েটাকে ভয় দেখাচ্ছো শুধু শুধু।’
‘হ্যা গো মনে হল একটা মেয়ের হাসির আওয়াজ উপর থেকে। কিন্তু আমার ভুলও হতে পারে তাই আর দেখতে যাইনি।’।
‘হুম তাই বলো বয়স হয়েছে, কি না কি শুনেছো
কোথা থেকে, মনে করেছো উপর থেকে আসছে।’
‘হয়ত, সেটাও হতে পারে।’
শানের মাথায় কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। গতকাল রাতে সে যেটাকে কল্পনা ভাবছিল সেটা কি তাহলে??? না এটা কিভাবে সম্ভব?
কিন্তু তার বাবা সে হাসির শব্দ শুনলো! কারণ উপরে তো পুতুল তার সামনে হেসেছিল। কল্পনা হলে সেটা বাবা কিভাবে দেখবে?
না আজ রাতে আবার যেতে হবে শানকে। কিছুতেই এটা হেলাখেলা করা যাবে না।
অফিসে গেলো শান। সারাদিন ওই চিন্তাতেই সময় গেল। ভিতরে মিথিলা দুপুরে ফোনও করেছিল খেয়েছে নাকি জানতে। বিকেল হতেই শান বাসায় এসেছে।
রাত প্রায় একটা, সবাই ঘুম। ধীরে ধীরে উপরের রুমের দিকে এগোচ্ছে শান। আজ সব জানতে হবে তাকে। শরীরে অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে, এটা ভয় না কৌতূহল জানে না সে। উপরের রুমের দরজার
সামনে পৌঁছালো সে। কাপা কাপা হাতে ধীরে ধীরে দরজা আলতো করে ধাক্কা দিল।
দরজা খুলেই শান যা দেখলো তাতে…….
চলবে,
#তাসের_ঘরে_তুমি_আমি
#পর্ব_১৫
#লেখক_আয়াশ
রুমের দরজা খুলেই যা দেখলো তাতে শানের মাথা ঘুরে গেলো। সে দেখলো রুমের ফ্লোরে তার বাবা পড়ে আছে আর তার মাথা দিয়ে রক্ত পড়ে রুমের ফ্লোর ভেসে যাচ্ছে।
‘বাবা!!!!’ বলে শান চিৎকার দিয়ে উঠল। ছুটে গেল বাবার কাছে। বাবার মাথা কোলে নিল।
ততক্ষন নিচে থেকে মিথিলা আর শানের মা চলে এসেছে। তারাও শানের বাবার অবস্থা দেখে হতবিহ্বল হয়ে পড়ল। শান তাদের দেখে নিজেকে একটু সামলে নিল।
হস্পিটালে বসে আছে শানের মা আর মিথিলা। শানও পাশেই বসে। সে যেন শোকে অয়াথর হয়ে গেছে। ডাক্তাররা বলেছেন তার বাবার মাথা থেকে অনেক রক্তক্ষরণ হওয়ায় অবস্থা ক্রিটিকাল। রক্ত লাগবে এমারজেন্সি। একটু পর এসেই রক্তের গ্রুপ বলবে।
শানের মা জিজ্ঞেস করলো,’বাবা তুই উপরে কি করছিলি? আর তোর বাবা যে পড়ে ছিল সেটা দেখলি কিভাবে?’
‘আমি পানি খেতে গিয়ে উপরের রুম থেকে কিছুর আওয়াজ পাই। উপরে গিয়ে রুমের ভিতরে গেলেই পায়ে কারো স্পর্শ অনুভব করি। নিচে বসে হাত হাত দিলে টের পাই আমার বাবা শুয়ে রয়েছে। অনেক ডাকার পরও আমার ডাকে সাড়া না দিলে আর মাথায় হাত দিলে ভেজা ভেজা লাগায় বুঝতে পারলাম এটা রক্ত। তখনই তোমরা চিৎকারের আওয়াজ শুনেছো।’
‘কি হচ্ছে এসব বাবা? আমাদের উপর কে বদলা নিচ্ছে?’
‘জানি না মা, আমিও কিচ্ছু বুঝতে পারছি না।’
‘তোর বাবার আবার কিছু হবে না তো?’
‘মা এসব কথা বলো না। দেখো বাবা ঠিক সুস্থ হয়ে যাবে।’
শান আর শানের এতসময় কথা বললেও মিথিলা শানের বাবা যে রুমে আছে সেদিকে চেয়ে আছে। চোখে মুখে অস্থিরতা।’ শান আড়চোখে চশমার আড়ালে সেটা দেখেছে।
হঠাৎ মিথিলা তাদের দিকে তাকিয়ে কেদে উঠলো। শানের মা মিথিলাকে জড়িয়ে ধরল।
‘মা দেখেছো আমি অপয়া, নিজের বাবা মাকে হারালাম। আজ যে বাবা মাথায় হাত দিয়ে বলল সে আজ থেকে আমার বাবা, দিন না পেড়োতেই এত বড় বিপদ আসল। আমি আসলেই অলক্ষী!!’
‘না মা এমন বলতে নেই। কিচ্ছু হবে না তোর বাবার।’
তখনই ডাক্তার বের হল,’তাড়াতাড়ি এ পজিটিভ রক্তের ব্যবস্থা করুন দুই ব্যাগ। ইটস এমারজেন্সি। দেরি হলে পেশেন্টের অবস্থা আরো গুরুতর হবে।’
মিথিলা সাথে সাথে উঠে দাড়াল,’আমার রক্ত এ পজিটিভ। আমার থেকে নিন।’
‘আচ্ছা আসুন। কিন্তু দুই ব্যাগ লাগবে যে!!’
‘আমিই দিব। সমস্যা নেই।’
শানের মা বলে উঠল,’ না মা দুই ব্যাগ দিলে তুই নিজেই আরো অসুস্থ হয়ে পড়বি। এমনিতেই মাত্র জ্বর থেকে উঠলি। আমরা দেখছি। কি করা যায়।’
মিথিলাকে ডক্টর ভিতরে নিয়ে গেল রক্ত নিতে শানের মাও সাথে গেলো।
শান রিয়াদ ভাই আর তার বসের কাছে ফোন দিল রক্ত ম্যানেজ করার জন্য।
কিছু সময়ের ভিতরেই রিয়াদ ভাই আর তার বস চলে আসলো। সব শুনে সবাই অবাক হল। কিন্তু আশার খবর হল রিয়াদ ভাইয়েরও রক্ত এ পজিটিভ। তাই শানকে আর টেনশন করতে হল না।
এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ এসেছে শানের বাসায়। শানকেও ফোন করে নিয়ে আসা হয়েছে।
ডিআইজি সাহেব বললেন,’এটা কি হল শান! আজ আবার রি ইনভেস্টিগেশন হওয়ার কথা ছিল রুমে আরো কোনো তথ্য পাওয়া যায় নাকি খুজতে আর তার আগেই এরকম টা হয়ে গেলো?
শান চুপ করে আছে। সেও কিছু বুঝতে পারছে না।
‘স্যার আমার পরিবারের উপর কার নজর লেগেছে, কেন করছে এসব সে কিছুই তো বুঝতে পারছি না!!’
‘তোমার বাবা উপরের রুমে কেন এসেছিল?’
‘সেটা তো আমিও জানি না স্যার।’
‘হুম, তার জ্ঞান ফিরলেই আমরা বুঝতে পারব হয়ত।’
শান অন্য ঘরে বসে বসে সব কিছু আবার মিলাচ্ছে, ওইদিকে তার রুমে ফরেন্সিক বিভাগ এসেছে আবার সকল কিছু খতিয়ে দেখতে।
শানের মাথায় একটাই কথা বারবার আসছে। যদি তার বাবাকে মাথায় আঘাত করা হবে তাহলে তখন তার বাবা ব্যাথায় চিৎকার করলো না কেনো? এই কথাটা সে বারবার ভাবছে। তাহলে কি পরিচিত কেউ?
এসবের উত্তর হয়ত তার বাবা সুস্থ হলেই পাওয়া যাবে।
রুমের সকল জিনিস আবার খুটিয়ে খুটিয়ে দেখা হল। অবশেষে দুইটা অবাক করা জিনিস পাওয়া গেল।
ফ্লোর থেকে পাওয়া গেল কিসের যেন একটা ছোট টুকরা। মনে হচ্ছে মানুষের হাতের যে হাড় থেকে তার আগার অংশ। সেই অংশ দেখে তো সবাই অবাক। কারন পুতুলের পিছ করা লাশ খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়েছিল। আর সেটা থাকলেও তো পোড়া অবস্থায় থাকবে, কিন্তু এটা তো একটু ভাঙা অংশ মনে হচ্ছে।
ফরেনসিক ডাক্তাররা ছিল সেখানে, তারা বলল এটা ফলস হাড়। অর্থাৎ মানুষের অরিজিনাল
হাড় নয়। বাজারে অনেক সৌখিন জিনিস পাওয়া যায় এমন৷ যেমন- কঙ্কালের হাত, মাথা; এটা সেরকমই একটা জিনিস।
আর দ্বিতীয় জিনিসটা আরো চাঞ্চল্যকর। কাপড়ের ছোট্ট একটা ছেড়া অংশ। অংশটা শাড়ির হবে হয়ত। ঘরের দরজার কোনায় ধারালো কিছু একটা অংশের সাথে লেগে ছিল।
শানকে সামনে বসিয়ে এসব জিনিসের নাম বলা হচ্ছে সে অন্ধ বলে। কিন্তু শান দুটোই চোখে দেখতে পাচ্ছে।
প্রথম কঙ্কালের হাড়ের টুকরা দেখে শান সিওর হল যে সেদিন সে সত্যি পুতুলকেই দেখেছিল। সেটা তার কোনো কল্পনা ছিল না। কিন্তু আসলেই পুতুল নাকি পুতুলের বেশ ধরে অন্য কেউ! সকল চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে তার৷
‘পুতুল হলে পালাবে কেনো? না সেটা পুতুল রুপী আর কেউ যে পুতুলের মৃত্যুর সুযোগ উঠাচ্ছে।’ এটাই ভাবতে বাধ্য হল শান।
দ্বিতীয় কাপড়ের টুকরাটা দেখা মাত্রই তার যেন শরীরে আগুন জ্বলে উঠল। কারণ এটা অন্য কারো নয়। মিথিলার শাড়ির!!!!
সেদিন এই একই রঙের শাড়ি পরিহিতা নববধূকেই শান বিয়ে করে এনেছিল। শানের বুঝতে বাকি রইলোনা মিথিলা সেদিন যে শাড়িটি পড়ে ছিল এই কাপড়ের টুকরা সেম সেই শাড়িটারই।
ডিআ’ইজি স্যারকে বলে সে হাসপাতালে ছুটল। তার আজ অনেক কিছু জানার আছে। কাকে রেখে কার উপর ভরসা করবে শান? সে কি জীবনে দ্বিতীয়বারের মত বি’শ্বাসঘাতকতার স্বীকার হল!!! এবারও একটা মেয়েকে বিশ্বাস করবে এই আশাটা যখনই মনে মনে ঠিক করেছিল, তার আগেই ভেঙে গেলো!!!!
চলবে,