#বিবি,পর্ব (৪৩)
#রোকসানা_রাহমান
” আমার হাতে মার খেয়েছিস কখনও? ”
” না। ”
” যদি খেতে না চাস, তাহলে এখনই সব সত্য বলবি আমায়। ”
অনড়া হতচকিত! চোখের চাহনি বিভ্রান্ত। চোয়াল গলার কাছটায় নুয়ে পড়েও উঠে পড়ল। জোর করে দৃষ্টি জোড়া বুবুর দিকে রেখে জিজ্ঞেস করল,
” কোন সত্যি? ”
” যে সত্যি এতগুলো মাস ধরে লুকিয়ে রেখেছিস। ”
” আমি কোনো সত্যি লুকাইনি। ”
” আবার মিথ্যে বলছিস? ”
কোমলের শক্ত কণ্ঠস্বরে মৃদু কেঁপে ওঠল। মুখের আদল কঠিনে রূপ নিতে দৃষ্টি সরিয়ে নিল দ্রুত। বসা থেকে দাঁড়িয়ে পড়ল চট করে। একটুখানি দূরে হেঁটে গিয়ে বলল,
” আমি মিথ্যে বলছি না, বুবু। ”
” বলছিস। এতদিন ধরে বলে এসেছিস। একটু ছাড় দিয়েছি বলে আমাকে বোকা বানাতে উঠে-পড়ে লেগে গেলি? ”
” তুমি ভুল ভাবছ। ”
” তাহলে ঠিকটা ভাবতে সাহায্য কর। সত্যিটা খুলে বল। ”
অনড়া সামান্য বিরক্তের ভাব দেখিয়ে বলল,
” তুমি কী নিয়ে কথা বলছ আমি তো সেটাই বুঝতে পারছি না। ”
কোমলও মূল কথায় যেতে চাইল। প্রশ্ন করল,
” ঐ বাচ্চাটা কার? ”
” কোন বাচ্চা? ”
” যাকে গুরুদক্ষিণা বানাচ্ছিস। ”
অনড়ার কুঁচকানো কপাল মসৃণ হলো। ভ্রূজোড়া স্বাভাবিক হতেই চাহনি ভীত হলো। দাঁড়ানোর ভাব শিথিল হলো। কণ্ঠ সহজ করে বলল,
” আমার। ”
” আট মাসে বেবি হয়ে গেল? ডাক্তারের সহযোগিতা ছাড়াই? ” তুমি কি চাচ্ছিলে বাবুটা সিজারে হোক? ”
” না। তেমনটা চাইব কেন? কিন্তু আমার জানামতে, নরমাল ডেলিভারি হয় নয় মাসের পর। তোর আট মাসে কী করে হলো? কোনো ব্যথা ছাড়াই। ”
” ব্যথা ছাড়া হবে কেন? ”
” ব্যথা হয়েছে? আমি শুনতে পেলাম না কেন? আমার কানের পাশেই তো ছিলি। ”
” তুমি হয়তো গভীর ঘুমে ছিলে। তাই শুনতে পাওনি। আর আমি ডাকিওনি। ”
” নানিকে ডেকেছিলি, তাই তো? ”
” হ্যাঁ। ”
” নানি সেই রাতে পাশের গ্রামে গিয়েছিল। তোর আর আমার সামনেই ডেকে নিয়ে গেল একজন, মনে আছে তো? তুই ব্যথা নিয়ে পাশের গ্রামে গিয়ে ডেকে এনেছিস নাকি রুমে বসে চিৎকার করে ডেকেছিস? কী আশ্চর্য! আমার কানে সেই ডাকও পৌঁছাল না। মরার মতো ঘুমাচ্ছিলাম নাকি? ”
বুবুর সাথে একনাগাড়ে বাদপ্রতিবাদ চালিয়ে গেলেও এবার থমকে গেল। দিশাহারা ভাবে চেয়ে থাকলে কোমল বলল,
” আচ্ছা মেনে নিলাম, তুই কোনোভাবে নানিকে ডেকে এনেছিস। ব্যথা সহ্য করে বাচ্চা প্রসবও করেছিস। কিন্তু আট মাসের বাবু এত হৃষ্টপুষ্ট হলো কী করে? সবকিছু ঠিকঠাক, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। প্রথম রাতেই নাড়ি পড়ে গিয়ে শুকিয়েও গেছে। এ তো অলৌকিক ব্যাপার-স্যাপার! ”
অনড়ার কপালে ঘাম জমা হতেই সে হেসে বলল,
” এমন ঘামছিস কেন? আমি জানি তো এসবই আল্লাহর কুদরতে হচ্ছে। এমন রহমত প্রাপ্ত সন্তানকে ফেলে আসে কেউ? চল, বাবুর কাছে যাবি। ”
কোমল বোনের হাত চেপে ধরতে সে ছাড়িয়ে নিল ঝটিতে। চাপা চিৎকারে বলল,
” আমি কোথাও যাব না। তোমরা চেয়েছিলে একটা বাচ্চা হোক। হয়েছে। ব্যস, আর কিছু করতে পারব না৷ এখন তাকে পালবে নাকি অন্যকিছু করবে সেটা তোমাদের ব্যাপার। আমাকে এসবে জড়াবে না। আমার বাচ্চা লালন-পালন করা ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। সেগুলো করতে দেও। ”
” সন্তানের চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজও হয়? ”
” হ্যাঁ, হয়। ”
” শুনি কী সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজ? ”
উত্তরে টেবিলে সাজিয়ে রাখা বই-খাতাগুলো এক এক করে ছুঁড়ে মারল বুবুর পায়ের কাছে। দূর থেকেই বলল,
” এসব বিয়ে-সংসার-বাচ্চা নিয়ে পড়াশোনায় অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছি। আমাকে রাত-দিন জেগে সেগুলো পূরণ করতে হবে। ”
কথার ফাঁকে বুবুর কাছে হেঁটে এলো ধীরে ধীরে। হাত ধরে বলল,
” আমি এখন ক্যারিয়ার গঠনে সচেতন হতে চাই। আমার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। একসময় তো তুমিও এটাই চেয়েছিলে, বুবু। তাহলে আজ কেন বাঁধা দিচ্ছ? সেই ছোটবেলার মতো হাতে বই তুলে দেও। দোয়া করে দেও। আমার বাচ্চা না বইয়ের প্রয়োজন। ”
” আমি কখনও তোর শিক্ষক হতে চাইনি। সম্মানির আশায় পড়াইনি। সবসময় ছোটবোনের মতো দেখেছি। তাহলে তুই কেন, আমায় শিক্ষক বানিয়ে দিচ্ছিস? অন্যের বাচ্চাকে আমার হাতে তুলে দিয়ে গুরুদক্ষিণা দিচ্ছিস? ”
” অন্যের বাচ্চা নয়, ওটা আমার বাচ্চা। ”
বাক্যটা শেষ করতেই সজোরে চড় পড়ল অনড়ার বা’গালে। কোমল ক্রুদ্ধ দৃষ্টি ছুঁড়ে বলল,
” তোর একের পর এক মিথ্যে প্রমাণ করে দিচ্ছে, আমাকে যেমন বড় বোন ভাবতে পারিসনি, তেমন শিক্ষকও না। এত বছর ধরে দায়ে পরে বুবু ডেকেছিস আর এখন মিছে নাটক দেখাতে গুরুদক্ষিণা দিচ্ছিস। ”
অনড়ার চোখের শূভ্র অংশ রক্তিম হয়ে ওঠল। অশ্রু জমে টলমল করছে। সেই চোখে চেয়ে থেকে ঘন ঘন নিশ্বাস ছাড়ল কোমল। দ্রুতপদে দরজা আটকে এসে বলল,
” জামা তোল। একজন মেয়ের পেট দেখলেই বোঝা যাবে সে প্রসূতি নাকি। এরজন্য আমায় ডাক্তার হতে হবে না। ”
অনড়ার জন্য অপেক্ষা করল না। সে নিজেই জামায় হাত দিলে অনড়া আচমকা চেঁচিয়ে বলল,
” ওটা আমার বাচ্চা না। ”
কোমল থেমে গেল। জামা ছেড়ে দিয়ে বলল,
” এই তো সত্য কথা বেরুচ্ছে। এবার এক এক করে সব খুলে বল। ”
অনড়ার আটকে থাকা চোখের জল এবার বর্ষার ভারী বর্ষণের মতো বয়তে শুরু করল। ওড়না দিয়ে নাক মুছতে মুছতে বলল,
” তোমার বর আমাকে কখনও স্পর্শই করেনি বাচ্চা আসবে কী করে? ”
কোমল অধৈর্য্য হয়ে বলল,
” আমি প্রশ্ন না উত্তর শুনতে চাই শুধু। ”
অনড়া চোখ মুছে কান্নার গতি কমাল। বিছানায় বসে ধীরে-সুস্থে বলতে লাগল,
” ঐবাড়িতে যাওয়ার পরই জানতে পারি তুমি কখনও মা হতে পারবে না। এ নিয়ে তোমার শাশুড়ির আফসোসের শেষ নেই। সারাক্ষণ আক্ষেপ প্রকাশ করতেন আমার কাছে। সামান্য ব্যাপারে তোমাকে বকা-ঝকা করতেন। তার চালচলন, কথাবার্তা শুনে বুঝে গেছিলাম ছেলের দ্বিতীয় বিয়ের পরিকল্পনা করছেন। কিছুদিন পর তো সেই ইচ্ছে প্রকাশ করেও ফেললেন। তিনি ঠিক জানতেন, তুমি না করতে পারবে না। এজন্যই জোরাজুরি শুরু করলেন। ভুল বুঝ দিতে শুরু করলেন। এসব তো আমার সামনেই ঘটছিল। তখনই আমার মাথায় একটা পরিকল্পনা এলো। তোমাকে বলব সেই সুযোগ পেলাম না। তার আগেই তুমি কী সব কাণ্ড ঘটিয়ে ফেললে। তোমার বরকে দ্বিতীয় বিয়েতে রাজি করে ফেললে। আবার পাত্রী ঠিক করলে আমাকে। আমি সেই সময়ও ভেবেছিলাম, আমার গোপন পরিকল্পনা তোমাকে বলব, ঠিক তখনই মনে পড়ল, এই পরিকল্পনায় অসংখ্য মিথ্যা বলতে হবে, অভিনয় করতে হবে, পরিশেষে একটা ধোঁকা দিতে হবে। এসব জানলে তুমি রাজি হবে না। তাই পিছিয়ে গেলাম। ঠিক করলাম এই পরিকল্পনা আমি বাস্তবায়ন করব। ছোটবেলা থেকে তুমি আমার জন্য অনেক কিছু করেছ তার বিনিময়ে আমি কিছু দিতে পারিনি। এবার যখন সুযোগ পেয়েছি হাতছাড়া করব না। তাই বিয়েতে রাজি হয়ে গেলাম। আমি জানতাম তোমার বর তোমাকে অনেক ভালোবাসে। আমাকে কখনই স্ত্রী হিসেবে মেনে নিবে না। বাচ্চা তো দূর কাছে ঘেষতেই দিবে না। বিয়ের পর তেমনই হলো। আমার ঘরেই আসছিল না। এমন করে তো পরিকল্পনার মতো কাজ হবে না। তাই জেদ ধরে তাকে আমার ঘরে আনতে চেষ্টা করি। একবার ভেবেছিলাম তাকে বলে-কয়ে সব করব। কিন্তু এই ভাবনাও বাদ দিতে হলো। কারণ, সে ঘোষণা দিল, তার জীবনে কোনো গোপনীয় নেই। তারমানে তোমার কাছে গোপন রাখতে হবে এমন কোনো কাজ সে করবেই না। তাই তার কাছেও গোপন রাখতে হলো। আমাকে একাই সবটা করতে হলো। ”
” কী করেছিস? ”
অনড়া বুবুর দিকে এক পলক চেয়ে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে বলল,
” ঘুমের ওষুধ খায়িয়েছি। ”
” সেজন্যই সেদিন তোর রুমে ঘুমিয়েছিল? ”
” হ্যাঁ। সেইরাতে তার কী মনে হয়েছিল কে জানে! আমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছিল। শাস্তি চাচ্ছিল। আমিও সুযোগ পেয়ে শাস্তি দিলাম। পানির সাথে ওষুধ মিশিয়ে খায়িয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলাম। তোমরা সবাই ভাবলে সে দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে রাত কাটাচ্ছে। আমার এইটুকুই দেখানোর দরকার ছিল। নাহলে তোমার শাশুড়ি বিশ্বাস করত না যে আমার পেটে তার ছেলের সন্তান। ”
” বাড়ি ছাড়লি কেন? ”
” ভয়ে। তুমি ডিগ্রি ছাড়া ডাক্তার, তোমার বর ডিগ্রি প্রাপ্ত ডাক্তার। যদি ধরে ফেল? হাসপাতালে নিয়ে টেস্ট-ফেস্ট করাও? তাই ইচ্ছে করে হোস্টেলে যাই। সেখানে গিয়েও শান্তি নেই। তোমার বর ক্যাম্পাসে এসে পাগলামি শুরু করল। সবাই জেনে গেল আমি প্রেগন্যান্ট! এখন এত মানুষের সামনে নিজেকে প্রেগন্যান্ট হিসেবে প্রমাণ করি কী করে? তারমধ্যে তোমরাও যদি চলে আসো আমাকে ফিরিয়ে নিতে? সেজন্য কাউকে না বলে গ্রামে চলে যাই। নানির সাথে আমার আগেই কথা হয়েছিল। একটা বাচ্চা যোগাড় করে দিলে তোমার দুঃখ ঘুচে যাবে এটা শুনে সে খুব খুশি হলো। তোমাকে তো ভীষণ পছন্দ করে। ভালোবাসে। নিজেকে ঋণী মনে করে। তাই গ্রামে গ্রামে খোঁজ নিয়ে একজন মাকে পেল। যার চারটা মেয়ে। একটাও ছেলে নেই। স্বামীর আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। একটা ছেলের আশায় স্ত্রীর দিকে চেয়ে আছেন। এমতাবস্থায় আর মেয়ে চান না। নানি দেখেই বুঝেছিল মেয়ে হবে। তাই আগে থেকে বলে রেখেছে বাচ্চাটা তাকে দিয়ে দিতে। প্রয়োজনে কিছু টাকাও দিবে। সেই হিসেব মতোই সব চলছিল। সমস্যা করলে তুমি। আচমকা আমার বাড়ি চলে এলে। আবার থাকতেও শুরু করলে। আমাকে তোমার সামনে পোয়াতি সেজে অভিনয় করতে হলো। প্রথম দিকে কষ্ট হলেও একসময় মানিয়ে নিয়েছিলাম। তারপরেই সেই রাত এলো। বলা নেই, কওয়া নেই নানি বাচ্চা নিয়ে চলে এলো। সময়ের হিসেবে ভুল হয়েছে আমি তখনই বুঝে গেছিলাম। সামনাসামনি ধরা পড়ার ভয়ে আবার পালালাম। আর তুমি এবারও ধরে ফেললে! ”
অনড়া যে এমনটাই ঘটিয়েছে আগেই অনুমান করেছিল। তাই খুব একটা অবাক হয়নি। সব ছেড়ে জিজ্ঞেস করল,
” ও তোকে সত্যিই স্পর্শ করেনি? ”
” করলে কি আমাকে এত কষ্ট করতে হতো? ”
কোমল ধপ করে বিছানায় বসে পড়ল। দৈবকর্ণে স্বামীর যন্ত্রণায় জর্জরিত কণ্ঠস্বরে বারংবার শুনতে পেল, ‘ আমাকে অবিশ্বাস করছ? ‘
অনড়া বুবুর পাশ থেকে উঠে গেল। টেবিলের সংলগ্ন ড্রয়ার থেকে কতগুলো চিঠির খাম নিয়ে এসে বুবুর কোলে রেখে বলল,
” তুমি নিশ্চয় আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করছ? ভাবছ, তোমার ভালোর জন্য আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছি? তাহলে বলব, একদম চিন্তা করো না। আমার জীবনেও তোমার বরের মতো একজন এসেছে। যে আমার সবটা জেনেও আমাকে ভালোবাসে। বিয়ে করতে চায়। আমি বলে দিয়েছি, তোমার অনুমতি ছাড়া বিয়ে করতে পারব না। আর তুমি তো পড়াশোনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুমতি দিবেও না, তাই না? তাই অপেক্ষা করতে বলেছি। সে তাতেও রাজি। ”
কোমল চিঠিগুলো নেড়ে-চেড়ে দেখল। খাম খোলা আছে এমন একটা পড়লও। তারপর সব ফেলে উঠে চলে যেতে চেয়েও ফিরে এলো। ঠাণ্ডা স্বরে বলল,
” তোর উদ্দেশ্য ভালো হলেও কার্যপ্রক্রিয়া অনৈতিক ছিল। অসংখ্য মিথ্যার বুনন ছিল। যার জন্য একটা ভালো ও সৎ মানুষ কষ্ট পেয়েছে। প্রকাশ করলে আরেকজনও পাবে। এর দায়ভার কার? আমি একা দুটো মানুষকে কীভাবে সামলাব? ”
অনড়া বুবুকে ধরতে এলে সে পিছিয়ে গিয়ে বলল,
” আমি সত্যিটা মেনে নিয়েছিলাম। আমার অক্ষমতাকে গ্রহণ করেছিলাম। তুই কেন পারলি না? তোর এই অপরাগতার জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে গেছে। ”
” আমাকে ক্ষমা করে দেও, বুবু। ”
” হয়তো মুখে বলছি, ক্ষমা করে দিয়েছি। কিন্তু মন থেকে করেছি এই মিথ্যাটা বলতে পারলাম না। ”
সুমনা রুমের এককোণে বসে দুইবোনের কাণ্ডকারখানা অবলোকন করছিল। কোমল বেরিয়ে যেতেই বলল,
” তুই আবারও মিথ্যা বলেছিস? ঐ চিঠিগুলো তো তুই পড়েই দেখিসনি। এর মালিক ছেলে নাকি মেয়ে তাও জানিস না। অথচ বুবুকে বলে দিলি, সে তোকে বিয়ে করতে চায়! ”
অনড়া ছোট্ট নিশ্বাস ছেড়ে বলল,
” এই মিথ্যাটা না বললে হয়তো মুখের বলা ক্ষমাটাও পেতাম না। এই মানুষটা শুধু অন্যের কষ্টে কাঁদতে পারে, অন্যের হাসিতেই হাসতে পারে। ”
____________
কোমল শ্বশুরবাড়িতে না গিয়ে সোজা পৌঁছাল নিবিড় যে হাসপাতালে রোগী দেখে সেখানে। তার কেবিনের সামনে অসংখ্য রোগীদের ভীড়। সকলে সিরিয়াল নাম্বারের টোকেন নিয়ে বসে আছে। সে সবাইকে অগ্রাহ্য করে সরাসরি দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতে চাইলে ওয়ার্ডবয় আটকাল। টোকেন চাইলে সে নেই বলে দিতে রোগীসহ গার্ডিয়ানরা চিল্লাপাল্লা শুরু করে দিল। এই শব্দ শুনে নিবিড় বাইরে বেরিয়ে আসে। কোমল তাকে দেখতে পেয়ে সকলের সামনে ঝাপটে ধরল। চোখের অশ্রু ঝরিয়ে সিক্ত স্বরে বলল,
” আমাকে ক্ষমা করে দাও। ”
চলবে