হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন – ০২) #লেখিকা__ফিহা_আহমেদ #পর্বসংখ্যা_২১

0
380

#হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন – ০২)
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
#পর্বসংখ্যা_২১
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ ❌]

ডাক্তার ফিহাকে আবার দেখছেন কোনো সমস্যা আছে কিনা।
ডাক্তারঃ হুম। সব ঠিক আছে। আপনারা ওনাকে নিয়ে যেতে পারেন।
ডাক্তার বসা থেকে ওঠে দাঁড়াতেই ফাহাদ ডাক্তারকে জড়িয়ে ধরে…. ধন্যবাদ ডাক্তার সাহেব।
ডাক্তারঃ ঠিক আছে ইয়াং মেন।
ফিহা সবাইকে বিদায় দিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি চলে আসল।
ফাহাদ ফিহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো।

ফিহা বাড়িতে ঢুকতেই…..
মিসেস রাজিয়াঃ কোথায় ছিলে তুমি এতক্ষণ। তোমার তো আরো আগে বাড়িতে আসার কথা।
ফিহা কি বলবে বুঝতে পারছে না হাসপাতালে ছিলাম বললে মা চিন্তায় পরে যাবেন।
ফিহাঃ আ..আসলে আম্মু…….
মিসেস রাজিয়াঃ আসল নকল শুনতে চাইনি তোমার কাছে যেটা বলেছি তুমি সেইটার উওর দেও।
ফিহা কিছু না বলে চুপ করে রইলো।
মিসেস রাজিয়াঃ যাও রুমে যাও।ফ্রেশ হও।তোমার সাথে জরুরি কথা আছে।
ফিহার কলিজাটা ধক করে ওঠলো।
ফিহা মনে মনে…. না জানি কি কথা বলবে।
ফিহা চিন্তায় পরে গেল।

ফিহা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খাটের ওপর বসে বসে দাঁত দিয়ে নখ কাটছে আর চিন্তা করছে…কি বলবে আম্মু।
মিসেস রাজিয়া ফিহার রুমে প্রবেশ করতে করতে… দাঁত দিয়ে নখ কাটা যে খারাপ সেটা কি তুমি ভুলে গেলে ফিহা।
ফিহা মায়ের কথা শুনে মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে মাথা নিচু করে… সরি আম্মু আর এমন হবে না।
মিসেস রাজিয়া গম্ভীর কণ্ঠে… মনে থাকে যেন।
ফিহা নিচু কন্ঠে….হুম।

মিসেস রাজিয়া ফিহার সামনে গোলাপি রঙের একটা প্যাকেট ধরে…..এই শাড়িটি পরে নেও।
ফিহাঃ হঠাৎ শাড়ি কেন পরবো আম্মু।
মিসেস রাজিয়াঃ তোমার বাবা বলেছেন।
ফিহাঃ বাবা হঠাৎ….
মিসেস রাজিয়াঃ আর কোনো প্রশ্ন নয় ফিহা আমি যা বলছি চুপচাপ তাই করো।
ফিহা মায়ের কথায় কষ্ট পেলো।
ফিহা মনে মনে…. মা হঠাৎ এমন ব্যবহার করছে কেন।
ফিহা আর কোনো কথা না বলে চুপচাপ শাড়িটি পরে নিলো।

তাইমুর আহমেদঃ আমি তোমায় যা করতে দিয়েছি তাই করেছো তো রাজিয়া।
রাজিয়াঃ হ্যাঁ করেছি।কিন্তু ওকে না জানিয়ে….
তাইমুর আহমেদঃ বাবা-মা কখনো সন্তানের খারাপ চায় না। আমি ও আমার মেয়ের খারাপ চাই না সেটা তুমি ভালো করেই জানো রাজিয়া।
রাজিয়া নিচু স্বরে বললো.,,,জ্বি।
তাইমুর আহমেদঃ আর পাঁচ মিনিট পরই তারা চলে আসবে।অনেক বড় বাড়ির ছেলে। কোনোরকম কমতি যেন না হয়।সবকিছু ঠিকঠাক হলেই হলো।
মিসেস রাজিয়াঃ জ্বি।কোনো সমস্যা হবে না।
গাড়ির আওয়াজ পেতেই তাইমুর আহমেদ বাড়ির গেইটের সামনে চলে আসলেন।
মেহমানদের বাড়ির ভিতর নিয়ে আসলেন।

তাইমুর আহমেদঃ কেমন আছিস বন্ধু।
বন্ধুঃ ভালো আছি তুই কেমন আছিস।কাল অফিসে দেখলাম না কেন তোকে।
তাইমুর আহমেদঃ আসলে কিছু দরকারি কাজ ছিলো অনিক।
(ফাহাদের বাবা অনিক চৌধুরী আর ফিহা আর বর্নের বাবা তাইমুর আহমেদ দুজনেই বাল্যকালের বন্ধু)
অনিক চৌধুরীঃ ঠিক আছে কোনো ব্যাপার না।
তো তোর মেয়ে কই নিয়ে আয় দেখি।সেই ছোট্ট ফিহামনি কত বড় হলো।
মিসেস রাজিয়া ফিহাকে নিয়ে আসল।
ফিহা কিছুই বুঝতে পারছে না।
ফিহা সামনে তাকাতেই অবাক হলো।
—— অ.. অনিক চৌধুরী এইখানে কেন।(মনে মনে)
অনিক চৌধুরীঃ ফিহা মামনি কেমন আছো।
ফিহা কি বলবে বুঝতে পারছে না।
ফিহাঃ ভা..ভালো আপনি কেমন আছেন।
অনিক চৌধুরীঃ ভালো মামনি।
মিসেস মেহেরঃ মা-শা-আল্লাহ।আমাদের মামনিটা দেখছি অনেক বড় হয়ে গেছে।
ফিহা লজ্জা পেলো এমন কথায়।লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গেল।
মিসেস মেহেরঃ আহারে আর লজ্জা পেতে হবেনা।
(ফিহার মনটা কেমন করছে।)
অনিক চৌধুরীঃ মেহের তোমার ছেলে আর মেয়ে আসছেনা কেন অনেকসময় তো হলো।
মিসেস মেহেরঃ আসছে।

তক্ষুনি ফারিন আর ফাহাদ এসে হাজির।
ফারিনঃ এইতো বাবাই চলে আসছি।
ফারিন ফিহার পাশে বসলো।
ফারিনঃ বাহ্ ভাবী তো দেখছি ভারী মিষ্টি।
ফিহা ভাবী বলাতে অবাক হলো।
ফিহার সবকিছু মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে।
—-আমাকে ভাবী কেন বললো।
মিসেস মেহেরঃ আরে ফাহাদ তুই দাঁড়িয়ে আছিস কেন বস।
ফাহাদের নাম শুনতেই ফিহা চমকে সামনে তাকালো।
আর অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ফিহার দিকে।
ফাহাদ ফিহাকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে দুষ্ট হাসি দিয়ে চোখ মারলো একটা।
ফাহাদকে চোখ মারতে দেখে ফিহা চোখ বড় বড় করে ফাহাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
ফারিন ফিহার কানে ফিসফিস করে বললো…..আরে ভাবী এখন থেকে ওই হাদাটা তোমারই।সারাক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারবে।
ফিহা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললো।
অনিক চৌধুরীঃ তাহলে আসল কথায় যাওয়া যাক।
তাইমুর আহমেদঃ হ্যাঁ।বল।
অনিক চৌধুরীঃ আমার ছেলের তো তর সইছে নাহ। আজকে ফিহা মামনিকে আমার বাড়ির বউ করে নিতে চাই।
তাইমুর আহমেদঃ তুই যেমনটা বলবি।
অনিক চৌধুরীঃ ফাহাদ কাজী নিয়ে এসেছিস
ফাহাদঃ রওশান,জাহিদ নিয়ে আসছে।

ফিহার সবকিছু স্বপ্নের মতো লাগছে। যাকে ভালোবাসে তাকেই সে নিজের করে পাবে।এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না ফিহার।
রওশান আর জাহিদ বাড়িতে ঢুকতে ঢুকতে কাজী রেডি।
ফিহার লজ্জায় গাল দুটো লাল টমেটোর মতো হয়ে গেল। আর ফাহাদ লজ্জাবতীর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
—-লজ্জা পেলেও বুঝি কাউকে এত সুন্দর লাগে।
°°°আমার লজ্জাবতী°°°।
অবশেষে ফাহাদ আর ফিহার বিবাহ সম্পন্ন হলো।
দুই পরিবার একসাথে…. °°আলহামদুলিল্লাহ°° বললো।
মিসেস রাজিয়ার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরলো।
অনিক চৌধুরীঃ মেয়েকে কি নিয়ে যাবো।নাকি পরে একেবারে অনুষ্ঠান করে নিবো।
ফাহাদ লজ্জা-সরম পিছনে পেলে,,,,, না ও আমার সাথেই যাবে।
ফাহাদের এমন কথা শুনে উপস্থিত সবাই হাসাহাসি শুরু করলো। আর ফিহা লজ্জায় পরে গেল।
ফিহা মনে মনে,,,, এই লোকটা এত ঠোঁট কাঁটা স্বভাবের।
অনিক চৌধুরী তার পুএবধূকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাড়া দিলো।
অনেক কান্নাকাটির পর ফিহাকে সবাই বিদায় দিলো।

চলবে………
[ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here