হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন – ০২) #লেখিকা__ফিহা_আহমেদ #অন্তিম_পর্ব(০১)

0
525

#হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন – ০২)
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
#অন্তিম_পর্ব(০১)
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ ❌]

ফাহাদ চিৎকার করে,,,,, ফি…….হা।
ফাহাদের চিৎকারে উপস্থিত সবাই তার দিকে তাকালো।
ফাহাদ ফিহার কাছে গিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে ফিহাকে স্পর্শ করলো।
ফাহাদ গাড়ি থেকে নামতে নিষেধ করেছিলো। কিন্তু ফিহার একা একা ভালো লাগছিলো না।ফিহা গাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়ির বাম পাশে যেতেই কোথা থেকে একটা ট্রাক এসে ফিহাকে ধাক্কা মারে।

ফিহার পুরো শরীর রক্তে মাখামাখি হয়ে আছে।খুব খারাপ অবস্থা। ফাহাদ যে ফিহাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবে তার সেইদিকে খেয়াল নেই। ফাহাদ নিজের মধ্যে নেই।এই মুহূর্তে ফাহাদকে প্রাণহীন মানুষের মতো মনে হচ্ছে।

ভিরের মধ্যে থেকে মাঝবয়সী একজন লোক এসে,,,,,,, মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ভালো হয়।
লোকটির কথা কানে আসতেই ফাহাদ হুঁশে এলো।
ফাহাদ ফিহার রক্ত মাখা শরীরটি কোলে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসলো।
ফিহাকে নিজের কোলের উপরে রেখে গাড়ি ড্রাইভ করে হাসপাতালে আসলো।

ডাক্তার,,, ডাক্তার…….
ফাহাদের চিৎকারে সব ডাক্তার নার্স এসে হাজির।
ফাহাদঃ ডাক্তার তাড়াতাড়ি কিছু করুন আমার ফিহু কে বাঁচান ডাক্তার।
ডাক্তারঃ মিস্টার ফাহাদ চৌধুরী এইভাবে ভেঙে পরবেন না। আমরা সব রকম চেষ্টা করবো।ওনি কি হয় আপনার।
ফাহাদঃ আমার স্রী।
ডাক্তার সহ সবাই অবাক হলো ফাহাদ চৌধুরী বিয়ে করেছেন অথচ আমরা কেউই জানি না।কেউ আর বিষয়টি নিয়ে ঘাটাঘাটি করলো না।
ফিহাকে ICO তে নিয়ে যাওয়া হলো।
এইদিকে রওশান আর জাহিদ এক্সিডেন্ট এর খবর শুনেই হাসপাতালে চলে আসল।

রওশান আর জাহিদ ফাহাদকে দেয়ালের সাথে পিঠ দিয়ে বসে থাকতে দেখে । কেমন উসকোখুসকো দেখাচ্ছে ফাহাদকে শার্ট রক্তাক্ত হয়ে আছে।পাগলের থেকে কম লাগছে না।
ওদের দুজনের খুব খারাপ লাগলো।
ফিহাকে সারপ্রাইজ দিবে বলে আমাদের দিয়ে অনেক কাজ করিয়েছে। কি থেকে কি হয়ে গেল।
রওশান ফাহাদের পিঠে হাত রাখতেই ফাহাদ সামনে তাকালো।
রওশানকে ফাহাদ জড়িয়ে ধরে,,,,,,, ভাই আমার ফিহুর কিছু হলে আমি বাঁচবো না।
রওশানঃ ভাই ভেঙে পরলে হবে আমি তো জানি তুই অনেক স্ট্রং।
রওশানঃ বাড়ির সবাইকে ফিহার এক্সিডেন্ট এর খবর জানিয়ে দিয়েছি।

ফিহার পরিবার আর ফাহাদের পরিবার হাসপাতালে এসে কান্নাকাটি জুড়ে দিলো।
ফিহার মাকে সামলানো যাচ্ছে না।মিসেস রাজিয়া কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারালেন।
মিসেস মেহের কান্না করতে করতে,,,,,, মেয়েটা কত হাসিখুশি ছিল। এমনটা না হলেও পারতো।
ফারিন ও কান্না করছে।

বর্নের আট মাস চলছে। শরীর খুব বেশি ভালো না।বোনের এক্সিডেন্ট এর কথা শুনে রুহানকে নিয়ে হাসপাতালে এসে কান্নাকাটি শুরু করলো।
রুহানঃ বর্ন ফিহা ঠিক হয়ে যাবে তুমি অসুস্থ কান্না করলে আরো অসুস্থ হয়ে পরবে।

ওটির লাইট বন্ধ হতেই ফাহাদ ওঠে দাঁড়ালো।
ডাক্তার বেরিয়ে আসতেই,,,,,,
ফাহাদঃ ডাক্তার আমার স্রী।
ডাক্তার কোনো কথা না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
ফাহাদঃ কি হলো ডাক্তার কথা বলছেন না কেন।
ডাক্তারঃ সরি মিস্টার ফাহাদ আমরা আপনার স্রীকে বাঁচাতে পারিনি।
ফাহাদ ডাক্তারের কলার ধরে,,,, এই ডাক্তার তুই মিথ্যে বলছিস তাই না আমার ফিহুর কিছু হতে পারে না। ও আমায় ছেড়ে যেতে পারেনা। তুই মিথ্যে বলছিস।
রওশান আর জাহিদ অনেক কষ্টে ছাড়িয়েছে ফাহাদকে।
রওশান ঝিনুককে ফোন দিয়ে সব বললো।আর জাহিদ লাবিবাকে।তারা দুজন হাসপাতালে এসে ফিহার মৃত্যুর কথা শুনে কান্না জুড়ে দিলো।
ফাহাদ একরকম পাগলের মতো ব্যবহার করছে।ফাহাদকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে পাগলামি থামিয়েছে।
ফিহার বাবা তাইমুর আহমেদ একদম পাথর হয়ে গেল।

জেরিন নিজের রুমে ডান্স করতে করতে,,,,,, আহা আজকে আমার খুশির দিন। আমার পথের কাটাঁ সরিয়ে দিয়েছি। এখন ফাহাদ আমার হবে।
আফজাল সাহেব জেরিনের রুমে এসে চোখ যেন বেরিয়ে আসবে এমন অবস্থা।
আফজাল সাহেবঃ জেরিন এইটা তুমি কি করলে তুমি মেয়েটাকে মেরে ফেললে।আমি তোমায় প্রশ্রয় দিয়েই আজকে এই পর্যায়ে এনেছি।

জেরিন হাসতে হাসতে,,,,, কেন বা,,,,,,,বা তুমিই তো আমাকে সাহায্য করলে।এখন ওই মেয়ের জন্য দরদ উতলে পরছে তাই না।বেশি কথা বললে তোমাকেও ওই মেয়ের মতো সোজা উপরে পাঠিয়ে দিবো। হা হা হা।

আফজাল সাহেবঃ তুমি পাগল হয়ে গেছ জেরিন।আমি তোমাকে বলেছি মেয়েটাকে শাস্তি দিতে মারার কথা বলিনি।আর তুমি নিজের বাবাকে ও মারার কথা ভাবলে।আমি সব বলে দিবো।এমন মেয়ে আমার দরকার নাই।তোমার পাপের শাস্তি তোমায় পেতে হবে।
আফজাল সাহেব জেরিনের রুম থেকে বের হবেন তার আগেই জেরিন নিজের বাবার পেটে চুরি ঢুকিয়ে দিলো।
জেরিন পাগলের মতো হাসতে হাসতে,,,,, স,,,,রি,,,,স,,,রি বাবা আমার পথের কাটাঁ আমি রাখি না।গু,,,,,,,,ড বা,,,ই।

এইদিকে অনিক চৌধুরী আফজাল সাহেবের রেখে আসা ফাইল দিতে এসেছেন তাদের বাড়ি। এসেই তিনি সব দেখে ফেললেন লুকিয়ে। তিনি মোবাইলে সবটা ভিডিও করে চলে গেলেন লুকিয়ে। আফজাল সাহেবর মৃত্যুটা দেখলেননা ওনি তার আগেই চলে গেলেন।
জেরিন ঘর কাঁপিয়ে চিৎকার করে করে হাসছে। এই মুহূর্তে জেরিনকে সাইকো মনে হচ্ছে। নিজের বাবাকে ও মেরে ফেললো।
এরই মধ্যে অনিক চৌধুরী পুলিশ নিয়ে আসলো।
জেরিন পুলিশ ধরে নিয়ে গেলো।

এইদিকে লারা নিজেকে শুধরে ফেলেছে।
লারাঃ ভালোবাসা জোর করে হয় না। রওশান যদি ঝিনুকের সাথে ভালো থাকে তাহলে তাই হোক।
জেরিনের ফাঁদে পরে ফিহা ঝিনুক দুজনকেই মারতে চেয়েছিলাম।কিন্তু দুজনেই বেঁচে গিয়েছিলো।শুধু শুধু একটা নিষ্পাপ মেয়েকে মেরে ফেললাম।
তার জন্য আমি শাস্তি ও পাচ্ছি। আমার ব্রেইন ক্যান্সার। আর কিছুদিন তারপর আমার পাপের শাস্তি শেষ হবে বলে লারা কান্না করতে থাকে। আজকে লারার পাপের কারনে কেউ তার পাশে নেই।

ফিহার দাপনের ব্যাবস্থা করছে তাইমুর আহমেদ, অনিক চৌধুরী, রওশান,জাহিদ, রুহান।
মিসেস রাজিয়া মিসেস মেহেরকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে।
ঝিনুক ফিহার মৃত দেহের পাশে বসে কান্না করছে। উপস্থিত সবাই ফিহার জন্য কান্না করছে।
গাড্ডুর কুকুর টিনির চোখে ও জল।

ফিহাকে যখন কবরে রাখবে ঠিক তখনই ফাহাদ পিছন থেকে ফিহার মৃত দেহটি এক টানে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।
ফাহাদ ফিহাকে নিজের বুকে চেপে ধরে,,,,,, কেন এমন করলে ফিহু।আমাকে ছেড়ে যেতে তোমার একটুও কষ্ট হচ্ছে না । আমি তোমাকে কোথাও যেতে দিবো না।তুমি তুমি আমার সাথে থাকবে। ফাহাদ ফিহাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে করে কান্না করছে।
ফাহাদের জন্য ফিহাকে দাপন করতে পারছে না।
অনিক চৌধুরী ডাক্তার ডেকে এনে আবারো ফাহাদকে ঘুমের ইনজেকশন দিলো।ফাহাদ ঘুমন্ত অবস্থায় ফিহার বাম হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে।
অনেক কষ্টে ফিহার হাত ফাহাদের থেকে ছাড়িয়ে ফিহাকে দাপন করা হলো।

চলবে………
[ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দৃষ্টিতে দেখবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here