#হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন-০২)
#লেখিকা__ফিহা__আহমেদ
#পর্বসংখ্যা__০২
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ ❌]
ভার্সিটির মাঠের মাঝখানে বসে আছে একদল ছেলে মেয়ে। তারা বসে বসে ফাস্ট ইয়ারদের রেগিং করছে।
ফিহা ভার্সিটির গেইট পেরিয়ে ভিতর ঢুকতেই রেগিং করা ছেলেদের মধ্যে একজন ডাক দিল।
ফিহার কলিজাটা ধক করে ওঠলো।
এইরে বুঝে ফেললো না তো।তুই আজ শেষ ফিহা।
ফিহা ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে যেন কিছুই শুনে নি।আসলে ওর হঠাৎ করেই ভয় লাগছে না জানি কি হয়।ধরা পরলে না জানি কি কি করায়।
ছেলেটি আবার ডাক দিল,,, এই চশমিশ শুনতে পাচ্ছ না নাকি।এইদিকে আসো।
ফিহা ধীর পায়ে হেঁটে হেঁটে তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। কলিজা ধুকপুক করছে।
এইভাবে সং সেজে কেন আসলে।তোমাকে তো একদম মেডাম মেডাম লাগছে। ফাস্ট ইয়ার এর এই প্রথম কোনো মেয়েকে কাপড় পরে ভার্সিটি আসতে দেখলাম।বাহ্ ভালোই লাগছে। ততোটাও খারাপ লাগছে না।
ফিহা যেন আকাশ থেকে পড়লো ওর প্লান যে এইভাবে ভেস্তে যাবে।
ফিহার এখন বেশিই ভয় লাগছে। যতই সাহস দেখাই না কেন রেগিং আমার মোটে ও ভালো লাগে না আর ভয় ও লাগে কত কিছু করতে হয়।
কাঁদো কাঁদো চোখে ছেলেটার দিকে তাকালো।
ফিহাঃ কি,,,,কিছু বলবেন ভা,,,ভাইয়া।
ছেলেটার পাশে থাকা মেয়েটা বলে ওঠলো,,, রওশান কি করা যায় বলতো,,,,আমাদের হিরোর কাছে পাঠামু নাকি।
রওশান মুচকি হেসে বললো,,, লারা আমি ও তাই ভাবছি কি করা যায়।
লারাঃ আরে বোকা রওশান বাবু তুই এই গাইয়া মেয়েটাকে প্রপোজ করতে পাঠা আমাদের হিরোর কাছে।
কি বলিস লাবিবা ঠিক বলেছি না আমার আইডিয়াটা কেমন।
লাবিবাঃ একদম ঠিক।
রওশানঃ ও…য়া…ও। আইডিয়াটা দারুন লারা।তবে তাই হোক।
এই জাহিদ তোর হাতের গোলাপটা দে তো।
জাহিদ তার হাতে থাকা গোলাপ ফুলটি রওশানকে দিলো।
রওশান গোলাপটা ফিহাকে নিতে বললো,,ফিহা ভালো মেয়ের মতো গোলাপটা নিলো।
ফিহাঃ এইটা আমি নিয়ে কি করবো ভাইয়া।এইটা আপনি রেখে দেন।আমার গোলাপ ফুলে এলার্জি আছে। হাঁচি হয় ভীষণ (ডাহা মিচা কতা)
রওশানঃ এই মেয়ে চুপ করো।কতক্ষণ ধরে ভাইয়া ভাইয়া করছো।আমার একটা বোন আছে আর বোনের দরকার নাই। তুমি এই গোলাপ ফুলটা নিয়ে সোজা থ্রাড ইয়ারের ক্লাসে যাবে। ক্লাসের ফাস্ট বেঞ্চের ডান সাইডে একটা ছেলেকে দেখতে পাবে তাকে গিয়ে তোমায় প্রপোজ করতে হবে।
ফিহার তো অবস্থা শোচনীয়। সব তো গেলো। কি সাংঘাতিক ছেলেটা একে তো সব বুঝে গেলো এখন প্রপোজ ও করতে হবে।হায় আল্লাহ প্লিজ হেল্প মি।আজ ফিহুর কেউ নাই।
ফিহাঃ অন্য কিছু করতে দেন। এইটা আমি করতে পারবো না।
লারাঃ না করলে আর বেশি শাস্তি পাবে। ভেবে দেখো কোনটা করবে তুমি।
ফিহার অন্য কোনো উপায় ও নেই শেষে বাধ্য হয়ে রাজি হলো।
ফিহা কয়েক ধাপ এগিয়ে যেতেই রওশান পিছন থেকে আবার ডাক দিল… ফিহার হাঁটা বন্ধ করে পিছনে তাকালো।
রওশানঃ তোমার নামটা বলে যাও।এত বড় একটা কাজে নেমেছো নাম না জানলে কিভাবে হয় বলো বলে একটা শয়তানি হাসি দিল।
শালা বজ্জাত, খচ্চর, এনাকোন্ডা, হাতি,বান্দর আমার বারটা বাজিয়ে আবার আসছে নাম জানতে। ফিহা রওশানের গুষ্টি উদ্ধার করতে করতে বললো,,,
ফিহাঃ ফিহা আহমেদ।
রওশানঃ বাহ্।নামটা ভালোই। এইবার কাজে লেগে যাও।
লারাঃ রওশান,জাহিদ,লাবিবা চল আমরা লুকিয়ে দেখি কি করে মেয়েটা। নিশ্চিত আমাদের হিরোর থাপ্পড় খেয়ে আসবে।হি হি।চল চল বিনা টিকিটে সিনেমা দেখে আসি।হেব্বি মজা হবে।চল।।
★
ফিহা থ্রাড ইয়ারের ক্লাসে ডুকে ফাস্ট বেঞ্চের সামনে গিয়ে ডান পাশে একজন সুদর্শন যুবক দেখে হা করে তাকিয়ে রইল। তাহলে এই হচ্ছে ওই সুন্দরবন থেকে আসা বান্দরীদের হিরো। বাহ্।হেব্বি আছে তো।কিন্তু যেভাবে গম্ভীর হয়ে আছে নিশ্চিত থাপ্পড় কয়টা পরে ঠিক নাই।
কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো,,,,
ফিহাঃ এই…এই…যে শুনছেন।
ছেলেটি চমকে সামনে তাকালো। কালো রঙের কাপড় পরা মেয়েটার দিকে তাকালো,,,গম্ভীর কন্ঠে বললো,,, জ্বি কিছু বলবেন।
ফিহা হুট করেই ছেলেটির হাত ধরে গোলাপ ফুলটা দিয়ে বললো,, আই লাভ ইউ।
ছেলেটি হতবাক হয়ে ফিহার দিকে তাকালো।
ফিহাঃ দেখুন মশাই আমি আপনাকে ইচ্ছে করে প্রপোজ করি নি। মাঠে বসে কতগুলো বান্দর আর বান্দরীনি বসে রেগিং করছে তাদের শিকার হয়ে আমি এই কাজটা করেছি।
ছেলেটি ফিহার হাতের স্পর্শ পেতেই অদ্ভুত এক শিহরণ জেগে ওঠে ভিতরে।এইসবের সাথে ছেলেটি পরিচিত নয়।মেয়েদের কাছে আসা ও একদম পছন্দ করে না। কিন্তু আজকে তার ব্যতিক্রম হলো।ফিহার স্পর্শে ছেলেটির এক অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করছে।
ছেলেটি কিছু বলতে যাবে তার আগে ফিহা ক্লাস থেকে চলে গেল।
ফিহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।
সবাই অবাক হলো ফাহাদের এই কান্ডে।কত মেয়ে থাপ্পড় খেয়েছে আর এই মেয়ে কিনা,,,,,,,,
লারাঃ এই এইটা কি হলো রে ফাহাদ কিছু বললো না। উল্টো মেয়েটার দিকে কেমন করে তাকিয়ে ছিল।তাও গাইয়া টাইপের একটা মেয়ের দিকে।আর মেয়েটা আমাদের বান্দর বান্দরী বললো।মেয়েটাকে একবার পাই তখন বুঝাবো এই লারা কি চিজ।
ফিহা ক্লাস শেষ করে বাড়ি চলে আসল। খুব ক্লান্ত ফিহা তাই গোসল সেরে খাওয়া শেষ করে ঘুম দিলো।
চলবে……….
[ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]