#হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন – ০২)
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
#পর্বসংখ্যা_২২
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ ❌]
ফিহা আর ফাহাদ আলাদা এক গাড়িতে বসলো।
অনিক চৌধুরী, মিসেস মেহের,ফারিন আরেক গাড়িতে রওনা দিলো বাড়ির উদ্দেশ্যে।
আপন গতিতে গাড়ি চলছে।
ফিহা আর ফাহাদ দুজনেই নিরব হয়ে রইলো।
ফিহার ভীষণ মন খারাপ।
—- বর্ন আপু ও ছিলো না হুট করেই বিয়েটা হয়ে গেল। মা-বাবার জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে।
ফিহার মন খারাপ দেখে ফাহাদ,,,,,, ফিহু মন খারাপ করো না। তোমার যখন ইচ্ছে তুমি নিজের বাড়ি আসতে পারবে।
ফিহা মন খারাপ করে,,, হুম।
ফাহাদ দুই ঘন্টা ধরে ড্রাইভ করার পর গাড়ি থামালো।
ফিহাঃ চলে এসেছি আমরা।
ফাহাদঃ না আমরা বাড়ি আসিনি।
ফিহাঃ তাহলে……
ফাহাদ গাড়ি থেকে নামো।তারপর নিজেই দেখতে পাবে।
ফিহা গাড়ি থেকে নেমে ভীষণ অবাক হলো।
ফাহাদঃ কি ভালো লেগেছে।
ফিহাঃ ভালো লেগেছে মানে খুব ভালো লেগেছে।
ফিহার মন হঠাৎ করেই ভালো হয়ে গেল। আর ফাহাদকে মনে মনে অনেক ধন্যবাদ দিলো।
ফিহা গেইট পেরিয়ে ভিতরে ঢুকে তো আরো অবাক।
ফিহাঃ আহ্ কি কিউত। কি সুন্দল বলেই ফাহাদের গালে চুমু দিয়ে বসলো।
ফিহা এত সুন্দর ফুলের বাগান দেখে খুশির ঠ্যালায় কি করছে কি বলছে নিজে ও জানে না।
ফিহার ফুলের বাগান খুব ভালোবাসে।
এইদিকে বেচারা ফাহাদ ফিহার চুমু খেয়ে অবস্থা খারাপ। বাম গালে হাত দিয়ে অসহায় ভাবে ফিহার দিকে তাকিয়ে আছে।
ফিহাঃ কত সুন্দর ফুলের বাগান। আর সব আমার প্রিয় ফুল। বেলীফুলগুলো তো……..
ফাহাদের দিকে তাকাতেই ফিহা ব্রু কুঁচকালো…. একি আপনি এইভাবে ক্যাবলাকান্তের মতো গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কেন।
ফাহাদঃ আমার মতো অসহায় ছেলেকে একা পেয়ে তুমি আমার ইজ্জত হরন করলে।
ফিহা কিছুই বুঝলো না।
ফিহাঃ মানে আমি কি করলাম।
ফাহাদ যেন আকাশ থেকে পরলো।
ফিহা যে খুশির ঠ্যালায় ফাহাদকে চুমু দিয়েছে সেটাও নিজে ও জানে না।
ফাহাদ বুঝলো ফিহা সজ্ঞানে চুমু দেয়নি।
ফাহাদ গালে হাত বুলাতে বুলাতে.,,,,,কিছু না।
ফাহাদঃ বাগানটা ঘুরে দেখা যাক।
ফিহাঃ হুম।এই বাগানটা কি আপনাদের নিজস্ব।
ফাহাদ মুচকি হেসে….. হুম।
ফিহা ঘুরে ঘুরে ফুলের বাগান দেখছে আর ফুল গুলো হাত দিয়ে চুইয়ে দিচ্ছে।
আর নিজে নিজে হাসছে।
আর ফাহাদ ফিহাকে দেখতে ব্যাস্ত।ফিহা যে অল্পতেই এত খুশি ফাহাদের ভীষন ভালো লাগলো ব্যাপারটা।
—– বাড়িতে আরো সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে তোমার জন্য লজ্জাবতী।(মনে মনে বললো ফাহাদ)
ফিহা নিজে নিজে বকবক করছে,,,,, ইস আমার ফুলের বাগানটা এই বাগানটার কাছে কিছুইনা।কত সুন্দর বাগান। ভাবতেই ভীষণ ভালো লাগছে যখন তখন এসে দেখে যেতে পারবো।
মাথায় কারো স্পর্শ পেয়ে ফিহা চমকে পিছনে তাকালো।
ফিহাঃ কি করছেন।
ফাহাদ কিছু না বলে ফিহার খোপায় কিছু পরিয়ে দিলো ।
ফাহাদঃ পারফেক্ট।
ফিহার মুখের সামনে ফাহাদ ছোট্ট একটি আয়না ধরলো।
ফিহা ব্রু কুঁচকে আয়নার দিকে তাকাতেই অবাক হলো।
ফিহাঃ °বেলীফুলের গাজরা°।
ফিহা খুশি হয়ে ফাহাদকে জড়িয়ে ধরলো।
ফিহা ফাহাদকে জড়িয়ে ধরে….. জানেন আমার অনেক ইচ্ছে ছিলো কোনো এক গোধূলি বিকালে আমার প্রিয় মানুষটি আমার খোঁপায় বেলীফুলের গাজরা পরিয়ে দিবে।
আর আপনি সেটা পুরোন করলেন।
ফাহাদঃ ভালোবাস আমায়।
ফিহা কি বলবে বুঝতে পারছে না।
—- আমি তো ওনাকে ভালোবাসি।কিন্তু কিভাবে বলবো।
ফিহা কিছু বললো না।
ফাহাদ ফিহাকে চুপ থাকতে দেখে আবারো বললো,,,,,,ভালোবাস আমায় ফিহু।
ফিহাঃ মুখে বলতেই হবে। আপনি কি বুঝেন না নাকি।
ফাহাদঃ আমি এতকিছু শুনতে চাইনি।তোমার মুখ দিয়ে শুনতে চাই।
ফিহা ফাহাদের বুকেই মাথা রেখে,,,, হুম।
ফাহাদঃহুম কি…
ফিহাঃ 🌺ভালোবাসি🌺
°°এক আকাশ পরিমাণ ভালোবাসি আপনাকে°°।।
🌺ভালোবাসি প্রিয়🌺
ফাহাদ ফিহার মুখ থেকে ভালোবাসি শব্দটা শুনে খুশিতে ফিহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো।
ফিহাঃ কান্না করছেন কেন আমি কি অদ্ভুত কিছু বলেছি নাকি।
ফাহাদঃ আমি কেন কান্না করছি ফিহুপাখি সেটা তুমি বুঝবে না।আজকে আমার সবচাইতে খুশির দিন।আমার ফিহুপাখি আমায় ভালোবাসি বলেছে।
~~ °°এই হৃদয়ে শুধু আমার মায়াপরীর বসবাস°°~~
ফিহা ফাহাদের বুক থেকে সরে এসে,,,,,,মায়াপরীটা আবার কে।আপনার কি আরো ভালোবাসার মানুষ আছে নাকি মুখ ফুলিয়ে বললো ফিহা।
ফাহাদঃ দূর পাগলি। তুৃমি ছাড়া আমার হৃদয়ে কারো জায়গা নেই।আর না কেউ কোনোদিন জায়গা পাবে।
ফিহা মিথ্যে রাগ দেখিয়ে,,,,মনে থাকে যেন।
ফাহাদঃ চলো বাড়িতে যেতে হবে সবাই চিন্তা করবে বেশি দেরি করলে।
ফিহাঃ চলুন।
ফাহাদ গাড়ি ড্রাইভ করছে আর ফিহা গাড়ির জানালায় মাথা দিয়ে বাহিরের দৃশ্য উপভোগ করছে।
হঠাৎ ফিহা চিৎকার করে…. গাড়ি থামান।
ফাহাদ ফিহার এমন চিৎকারে ঘাবড়ে গেলো।তাড়াতাড়ি করে গাড়ি থামালো।
ফাহাদ ভয় জড়িত কন্ঠে…কি হয়েছে ফিহুপাখি কোথাও ব্যাথা লেগেছে।
ফিহাঃ আরে আমি তো এমনি গাড়ি থামাতে বললাম।
ফাহাদের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।
ফাহাদঃ তাই এইভাবে কেউ চিৎকার করে। আমি কতটা ভয় পেয়ে গেছিলাম।
ফিহা জানালা দিয়ে দেখিয়ে,,,, ওই দেখুন ছোট্ট একটা আইসক্রিমের দোকান। আমি আইসক্রিম খাব।প্লিজ প্লিজ এনে দিন আমায়। প্লি,,,,,,,,,,জ।
ফাহাদ মানা করতে পারলো না।
ফাহাদঃ গাড়িতে বসে থাকবে এক পা ও নড়বে না।
ফিহাঃ হুম।
ফাহাদ আইসক্রিম নিয়ে গাড়িতে এসে দেখে ফিহা নেই।
ফাহাদঃ এই মেয়ে এত দুষ্ট। কত করে বললাম কোথাও যাবে না কে শুনে কার কথা।
হঠাৎ ফাহাদের কানে চেঁচামেচির আওয়াজ আসলো।
ফাহাদের কলিজা কেঁপে উঠল।
ফাহাদঃ ফিহুর কিছু হয়নি তো আবার।
ফাহাদ গাড়ি থেকে নেমে উত্তর দিকে তাকাতেই দেখলো অনেক মানুষের ভির।
ফাহাদ ভির ঠেলে ভিতরে যেতেই ফাহাদের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেলো।ফাহাদের পুরো শরীর কেঁপে উঠল……….
চলবে………
[ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]