হৃদয়ের_মাঝে_তুই (সিজন-০২) #লেখিকা__ফিহা_আহমেদ #পর্বসংখ্যা_০৪

0
452

#হৃদয়ের_মাঝে_তুই (সিজন-০২)
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
#পর্বসংখ্যা_০৪
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ ❌]

ফিহা সকাল সকাল ভার্সিটির জন্য রেডি হচ্ছে। আজকে সে আগে ভার্সিটি গিয়ে পুরো ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখবে।

বর্ন শ্বশুর বাড়ি চলে গেছে। ফিহার তার বোনের জন্য মন খারাপ লাগছে। আরও কিছু দিন থাকলে কি হতো। ওনার সোয়ামী নাকি পাগল বানাইয়া ফেলতাছে বাড়ি যাওয়ার জন্য। এখন বর্ন আপু নাই তাই একমাত্র সম্বল হলো মোবাইলটা।

ফিহা মিসেস রাজিয়া কে বললো,,,আম্মু আজকে আমি তাড়াতাড়ি ভার্সিটি যামু।তুমি খাবার খেয়ে নিও।আমি কেন্টিন থেকে খেয়ে নিব।

মিসেস রাজিয়াঃ ওইসব তেলে ভাজা খাবার খেয়ে খেয়ে তুমি রোগ বাঁধাও শরীরে। নাস্তা বানিয়েছি খেয়ে যাও।

ফিহাঃ না আম্মু খাব না। তুমি খেয়ে নিও।আমি চললাম।
মিসেস রাজিয়াঃ ফিহা ফিহা… খেয়ে……….
ওনি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।এখনকার ছেলে মেয়েরা কোনো কথা শুনে না।

ফিহা ভার্সিটিতে গিয়ে ক্লাসে তার ব্যগটা রেখে ক্যাম্পাস ঘুরতে চলে আসল।

ক্যাম্পাস ঘুরতে ঘুরতে ক্যাম্পাসের ডান পাশে চোখ গেল তার।ডান পাশটায় বিভিন্ন ফুল রয়েছে। ছোট ফুলের বাগান বললেও চলে।ফিহা ফুলগাছ গুলোর সামনে গিয়ে নিজে নিজেই ফুলগুলোর প্রসংশা করতে লাগলো।

ফিহা যখন ফুলগুলোর সাথে ব্যস্ত তখন কার কন্ঠ শুনে পিছনে ফিরে দেখলো,,,,,, একটা মেয়ে। মেয়েটি তার সামনে এসে বললো ,,,, তুমি কি ফাস্ট ইয়ার।
ফিহাঃ হ্যাঁ আমি ফাস্ট ইয়ার।
মেয়েটিও হাসি মুখে বললো,,,আমি ও ফাস্ট ইয়ার। ফিহাকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো,,, আমি ঝিনুক।
ফিহার ও মেয়েটিকে ভালো লেগেছে। ফিহাও মেয়েটির সাথে হাত মিলিয়ে বললো,,,আমি ফিহা।

ঝিনুকঃ ফিহার হাত ধরে বলে,,,তাহলে আজকে থেকে আমরা বন্ধু।
ফিহা হাসি মুখে সন্মতি জানায়।

ফিহা ঝিনুকের হাত ধরে,,, দেখ কত সুন্দর সুন্দর ফুল।সাদা গোলাপ ফুল গুলো বেশি সুন্দর লাগছে।

ঝিনুকঃ হুম। সাদা গোলাপ ফুল কি তোমার প্রিয় ফুল।
ফিহা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো।
ঝিনুকঃ আজকে থেকে তুমি বলা যাবে না।শুধু তুই করে বলবি। ঠিক আছে।
ফিহা মুচকি হেসে বললো,,, ঠিক আছে।

ফিহা ফুল গুলো হাত দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে দেখছে।আর ঝিনুকের সাথে কথা বলছে।
ফিহা একটি সাদা গোলাপ ফুল ছিঁড়তে যাবে তখন পিছনে থেকে কেউ বলে ওঠে…………….. গাছের ফুল গাছে সুন্দর…. হাতে মানায় না।

ফিহা আর ঝিনুক চমকে উঠে পিছনে তাকালো,,,,, ফিহা ছেলেটিকে দেখে ভয় পেয়ে গেল।
ঝিনুকের হাত ধরে দিলো দৌড়।

ছেলেটি আর কেউ নয়,,,, ফাহাদ ছিল।ফিহাকে ফুল ছিঁড়তে দেখেই এইদিকে আসলো।

ফাহাদঃ অদ্ভুত মেয়ে আমাকে দেখলেই পালায়।মনে হয় আমি পুলিশ আর ও চোর।

আমাকে যথারীতি ইগনোর করে যাচ্ছে। ওর সাথে কথা বলার একটা সুযোগ পাচ্ছি না। দেখলেই দৌড়ে পালিয়ে যাই।
ফাহাদ কিছু একটা ভাবলো তারপর রহস্যময় হাসি দিয়ে ক্লাসে চলে গেল।

ক্লাস শেষে ফিহা আর ঝিনুক লাইব্রেরীতে গেলো।ফিহা হুমায়ুন আহমেদ-(হিমু দশ) এর বই নিয়ে বেঞ্চ এ বসলো।

ঝিনুকঃ তুই এখন গল্প পড়বি।বাড়ি যাবি না। আম্মু আমাকে বলছে খালামনির বাড়ি যাবে তাই তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে বলছে।

ফিহাঃ তাহলে তুই বাড়ি চলে যা।আমি বইটা অর্ধেক শেষ করে যাব।বর্ন আপুও নেই। আম্মু ফুফির বাড়ি গেছে। আব্বু অফিসের কাজে ইউকে গেছে। বাড়িতে আমি সম্পূর্ণ একা।তাই ভাবলাম বই পড়ে কিছু সময় কাটানো যাবে।

ঝিনুকঃ আচ্ছা তুই আমার সাথে আমার বাড়িতে চল।

ঝিনুক ফিহাকে অনেক জোর করে কিন্তু ফিহা যাবে না।পরে ঝিনুক ফিহাকে বিদায় দিয়ে বাড়ি চলে গেল।

ফিহা অনেকক্ষন ধরে বসে বই পড়ার কারনে মাজায় ব্যাথা করছে। ফিহার ঘুমও আসছিলো।

ফিহা হাই দিতে দিতে সামনে এগোতেই কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে পরে গেল। সাথে সাথে ঠোঁটে ঠোঁট মিলে গেল।

ফাহাদ সকালে তার এসাইনমেন্ট লাইব্রেরীতে রেখে গিয়েছিলো।সেইটা নিতেই লাইব্রেরীতে এসেছিলো।
এসেই ফিহার সাথে ধাক্কা খেয়ে ফিহা নিচে আর ও ফিহার ওপরে পরে গেল।

ফিহা চোখ বড় বড় করে ফাহাদের দিকে তাকিয়ে আছে।

ফাহাদের ঠোঁটের স্পর্শে ফিহার পুরো শরীর বরফের মতো জমে যাচ্ছে। বুকে যেন কেউ ঢোল পিটছে। আর শরীরে এক অদ্ভুত শিহরন লাগছে।

ফাহাদেরও একই অবস্থা। হার্ট বিট দ্রুত গতিতে ওঠা নামা করছে। শরীরে অদ্ভুত শিহরন খেলে যাচ্ছে। ফিহা ফাহাদের ঠোঁট থেকে ঠোঁট সরিয়ে নিয়ে ফাহাদের বুকে ধাক্কা দিয়ে বললো,,,, কি ওজনরে বাবা মনে হয় কোনা মহিষ আমার ওপর পরেছে।

ফিহা ফাহাদের সামনে হাত নাড়াচাড়া দিয়ে বললো,,,, এই যে শুনছেন আর বেশিক্ষণ এইভাবে থাকলে আমি মরে যাব। উঠুন বলছি,,,,মহিষ কোথাকার।

ফিহার কথায় ফাহাদের ধ্যান ভাঙে।
ফাহাদঃ কিছু বললে কি,,,,
ফিহাঃ আপনাকে আমার ওপর থেকে ওঠতে বলেছি।
ফাহাদ ফিহার ওপর থেকে ওঠে দাঁড়ালো।

ফিহা ব্যাগ হাতে নিয়ে চলে যেতে নিবে তার আগেই ফাহাদ ফিহার বাম হাতটা ধরে ফেলে।
ফিহাঃ সমস্যা কি আমার হাত ছাড়ুন।
ফাহাদ ফিহার দুই হাত দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বললো,,,,,, সুন্দর ছেলে দেখলেই গায়ে পরতে ইচ্ছে করে।

ফিহাঃ কি,,,,,হ্। কি বললেন আপনি আপনাকে দেখতে পেতনির জামাইয়ের মতো দেখা যায়। আমার তো আর কাজ নাই আপনার ওপর পরতে যাবো।দেখে চলতে পারেন না।

ফাহাদঃ এখন আমায় চুমু দিয়ে তুমি আমার ইজ্জত শেষ করে দিলে।এখন আমার কি হবে। আম্মুর এই নিস্পাপ পবিত্র ছেলেকে তুমি চুমু দিয়ে অপবিত্র করে দিলে।এর জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।আমাকে চুমু দেওয়ার অপরাধে তোমায় জেলে যেতে হবে।

ফিহা হাত মুচড়া মুচড়ি করছে,,,,ছাড়ুন আমায়।অসভ্য লোক আপনি কম কিসে আপনি ও তো আমায় চুমু খেলেন।আবার বড় বড় বানী দিচ্ছেন।লুচু লোক।

ফাহাদঃ কি আমি কিছু না করেই লুচু হয়ে গেলাম।ওকে যখন লুচু উপাধি দিলে তাহলে তো কিছু করতেই হয়,,,,,,ফিহার দিকে ঠোঁট এগিয়ে নিচ্ছে,,,,,

ফিহাঃ সরি সরি আর বলবো না। প্লিজ ছাড়ুন আমায় আমি বাড়ি যাব।
ফাহাদ ঠোঁট পিছিয়ে নিল,,,আগে তোমার নাম বলো তাহলে যেতে দিব।না হলে ছাড়ছি না।
ফিহা কোনো উপায় না পেয়ে বললো,,,,,, ফিহা।

ফাহাদ হাত আলগা করতেই ফিহা দৌড়ে পালালো।

ফিহা হাঁপাতে হাঁপাতে ভার্সিটির গেইট পেরিয়ে বাহিরে এসে,,,,,,,,
কি ডেঞ্জারাস লোকরে বাবা আর কিছুক্ষণ থাকলে না জানি কি কি করতো।
ফিহা রিকশায় করে বাড়ি চলে গেল।
ফাহাদ লাইব্রেরীতে বসে কিছুক্ষণ হাসলো।

ফাহাদঃ কি ভয়টা না পেয়েছে মেয়েটা।সত্যি ভয় পাওয়াতে যে কাউকে এত সুন্দর লাগে ওকে না দেখলে কখনো জানতে পারতাম না।
আজকের খয়েরী রঙের থ্রি পিচে মেয়েটিকে খুব সুন্দর লেগেছে।
ফাহাদ এসাইনমেন্ট নিয়ে লাইব্রেরী থেকে বের হয়ে বাড়ি চলে গেল।

চলবে……….
[ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here