#হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন – ০২)
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
#পর্বসংখ্যা_১৩
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ ❌]
ফিহা ঘুমাচ্ছে আর কিছুক্ষণ পর এপাশ ওপাশ করছে ।
ফিহার ঘুম ভেঙে গেল।
ফিহাঃ ধ্যাত। শান্তিতে ঘুমাতেও পারছিনা।পায়ের নিচে কি সুরসুরি দিচ্ছিলো।কই কিছুই তো দেখতে পারছিনা।
হঠাৎ করেই কেউ বলে উঠলো…… সারপ্রাইজ…
ফিহাঃ বর্ন আপু তুমি।
বর্নকে দেখা ফিহা খুশি হয়ে জড়িয়ে ধরলো।
ফিহা লক্ষ করলো বর্ন মুচকি মুচকি হাসছে।
ফিহাঃ আপু হাসছো যে। কিছু কি হয়েছে।
বর্নঃ হুম একটা খুশির খবর আছে।
ফিহাঃ খুশির খবর বল কি।
বর্নঃ বলবো কি…….
ফিহাঃ বল না আপু।কি খুশির খবর।
বর্নঃ তুই খালামনি হতে চলেছিস।
ফিহাঃ কি…….…….সত্যি বলছিস আপু আমি খালামনি হবো।
ফিহা খুশিতে বর্নকে নিয়ে ঘুরা শুরু করল…….ইয়ে……কি মজা আমি খালামনি হবো।
তখনি রুহান ফিহার রুমে প্রবেশ করলো।
রুহানঃ আস্তে আস্তে নাচো আমার শালীসাহেবা।নেও এইবার হা কর।
ফিহা হা করতেই রুহান গোটা একটা মিষ্টি ফিহার মুখে পুরে দিল।
ফিহা অনেক কষ্ট করে মিষ্টিটা খেয়ে শেষ করলো।
ফিহাঃ এইটা কিন্তু ঠিক না দুলাভাই। এত বড় একটা খুশির খবর অথচ আমার আইসক্রিম আর চকলেট নাই।
রুহান দুটো বক্স ফিহার সামনে ধরে বললো,,,,শালীসাহেবা আমি ভালো করেই জানি। এই নিন খুলে দেখুন।
ফিহা বক্স দুটো খুলে ভীষণ খুশি হলো।
একটা চকলেট বক্স আর আইসক্রিম বক্স।
ফিহাঃ ধন্যবাদ ভাইয়া।আমি ভীষণ ভীষণ ভীষন খুশি।
★
ভার্সিটিতে……….
ফিহা আর ঝিনুক মাঠে বসে গল্প করছে।
ফিহাঃ ঝিনুক ওইটা রাফসান ভাইয়া না।
ঝিনুকঃ সামনে তাকাতেই আঁতকে উঠল। ওমা রাফসান ভাইয়ার আবার কি হলো হাত,পা, মাথায় সব ব্যান্ডেজ।চল তো গিয়ে দেখি।
ফিহাঃ চল।।
ঝিনুকঃ ভাইয়া এই আপনার কি হলো।পুরো শরীরের কি হাল করছেন।
রাফসান কাঁদো কাঁদো মুখ নিয়ে ফিহার দিকে তাকিয়ে বললো……. সব ওর জন্য হয়েছে। ওর জন্য আমার এই অবস্থা।
ফিহা যেন আকাশ থেকে পরলো।
ফিহাঃ আমার জন্য মানে।আমি আবার কি করলাম ভাইয়া।
রাফসানঃ তোমার প্রেমিক আমাকে মেরে আমার এই হাল করেছে।
ফিহা আর ঝিনুক একসাথে কিছুটা চিৎকার করে……. প্রে…..মি….ক।।
রাফসানঃ আজব দুজন এইভাবে চিল্লাচ্ছো কেন। আর একটু হলে আমার কানের পর্দা ফেটে যেত।
প্রেমিককে দিয়ে মার খাওয়ালে।এখন কানে যাতে না শুনি সেই প্ল্যান করছো।
ফিহাঃ সত্যি বলছি ভাইয়া আমার কারো সাথে কোনো রকম সম্পর্ক নাই ।
রাফসানঃ তাহলে ছেলেটা যে বললো আমার কলিজায় হাত দিয়েছিস বলে আমার এইখানে কোমরে,,হাতে,, পায়ে খুব মেরেছে।তারপর বলেও দিয়েছে তোমার আশেপাশে দেখলে আবার মারবে।
ফিহাঃ আপনার মতো ছেলেকে কিভাবে নিয়ে গেলো। আপনি কি মারামারি করতে পারেন না।
রাফসানঃ সেই সুযোগ পাই নি।দু-তিন জন মিলে কিডন্যাপ করে একটা গুদামঘরে নিয়ে হাত- পা বেধে মাইর শুরু করলো লাঠি দিয়ে।
ফিহাঃ আপনি কি লোকটাকে দেখেছেন।
রাফসানঃ না সেটাই তো সমস্যা। মুখোশ পরে ছিলো।তাই বুঝতে পারিনি।
ফিহা আর ঝিনুক একে অপরের দিকে তাকিয়ে…… আচ্ছা ভাইয়া যাই।ওষুধ খেয়ে নিয়েন ঠিক মতো।।
ঝিনুকঃ ফিহা সত্যি করে বল লুকিয়ে প্রেম করিস না তো।
ফিহাঃ সত্যি বলছি ঝিনুক। আমি কোনো প্রেম ট্রেম করি না।
দুজনের কথোপকথনের মাঝে পিছন থেকে কেউ ডাক দিল…… পেত্নী…ক্লাস শেষ হলে দাঁড়াবে। বলে ফাহাদ চলে গেল।। …
দু-জনেই পিছনে ফিরে……
ঝিনুকের মুখ তো হা হয়ে গেল…… কিরে ফিহা ফাহাদ চৌধুরী তোকে ডাকলো।আর দাড়াঁতে ও বললো বিশ্বাসই হচ্ছে না।
ফিহা ব্রু কুঁচকে,,,,,, ফাহাদ চৌধুরী মানে এই ফাহাদটা আবার কে?
ঝিনুকঃ তুই কি পাগল হয়ে গেছিস ফিহা চৌধুরী ইন্ডাস্ট্রির মালিক অনিক চৌধুরীর ছেলে ফাহাদ চৌধুরী ওনি।
ফিহা যেন আকাশ থেকে পরলো………কি…….হ্।
তুই আজ বললি এই কথা।আমি কিনা সেই প্রথম দিন থেকেই ওনার সাথে ঝগড়া করে যাচ্ছি।
ফিহা প্রথম থেকে সব ঘটনা খুলে বললো ঝিনুককে।
ঝিনুকঃ বাহ্।। এত কিছু হয়ে গেলো আর আমাকে কিছুই বললি না। আমি তোর কেউ হইনা।
ফিহাঃ সরি সরি মেরি জান। আর এমন হবে না।
ঝিনুকঃ আচ্ছা ঠিক আছে ক্লাসে চল। স্যার এসে গেছে।
ফিহাঃ চল।
ক্লাস শেষে ফিহা আর ঝিনুক দাঁড়িয়ে আছে।
ফিহাঃ ঝিনুক আমার ভীষণ ভয় লাগছে। মারবে টারবে নাতো।আমি সত্যিই জানতাম না ওনি অনিক চৌধুরীর ছেলে।না হলে জীবনেও লাগতে যেতাম না।
ঝিনুকঃ ভয় পাস না কিছু করবে না।
করার হলে আগেই করতো।
তখনই একটা ছেলে এসে….. এইখানে ফিহা কে ফাহাদ ভাইজান বলছে লাইব্রেরীতে যাইতে।
ফিহাঃ আমিই ফিহা তুমি যাও আমি আসছি।
ফিহা ঝিনুকের দিকে অসহায় ভাবে তাকালো।
ঝিনুকঃ কিছু হবে না যা।আমি আছি।
ফিহা মাথা নাড়িয়ে লাইব্রেরীর দিকে চললো।
ফিহা লাইব্রেরীতে গিয়ে কাউকে দেখতে ফেলো না।
ফিহাঃ আজব তো এখানে তো কেউ নেই। তাহলে কি………..
আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই কেউ তাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো। সামনে তাকাতেই ফাহাদকে দেখে ফিহা ভীষণ ভয় পেয়ে গেল।।
ফিহা মনে মনে……. আমি ওনার সাথে যা করেছি ওনি আমাকে মেরে গুম করে দিতে এক সেকেন্ড ও লাগবে না।।
ফিহা ভীতু চেহারা নিয়ে ফাহাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
ফাহাদঃ কি হলো পেত্নী আজকে এমন ভয় পেয়ে আছো।আগে তো দেখলেই ঝগড়া করার জন্য ওঠে পরে লাগতে।
ফিহাঃ আ….আসলে। আমি আগে জানতাম না আপনি অনিক চৌধুরীর ছেলে।যা হয়েছে ভুলে যান।আর সব কিছুর জন্য সরি……(কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো)।।
ফাহাদঃ আমার কাছে কোনো ক্ষমা নেই তোমার জন্য। এমনিতেও অনেক অপরাধ করে বসে আছো।
ফিহা চোখ বড় বড় করে…… কি….কি…ক..করেছি।
ফাহাদঃ সেইটা তুমি নিজেই খুঁজে বের করো।
ফিহা আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই ফাহাদ নিজের আঙুল ফিহার ঠোঁটে চেপে ধরলো।
ফিহার কাধেঁর কাছে মুখ নিয়ে ফিহার কাঁধে একটা কামড় বসিয়ে দিলো।
ফিহাঃ আ……হ্।
ফাহাদের মুখের গরম নিশ্বাস ফিহার কাঁধে পরছে।ফিহার পুরো শরীর বরফের মতো জমে গেছে।
নড়তে পারছে না। তার ওপর কামড়টাও জোরে দিয়েছে।
ফাহাদ আবারও কামড় বসিয়ে দিল।
ফিহাঃ আ….হ্।আরে আপনি কি ভাম্পায়ার নাকি এইভাবে কামড় দিচ্ছেন কেন।
ফাহাদঃ তুমি যেটা মনে করো সেটাই।
ফিহা স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
ফাহাদঃ আর কামড় খাওয়ার ইচ্ছে আছে নাকি তাইলে দেই।
ফিহা মাথা নাড়িয়ে না বলে।লাইব্রেরী থেকে দৌড়ে চলে আসল।
ফিহাঃ আরে ঝিনুক কই গেলো।এইখানে থাকবে আমাকে বলেছিলো।
ফিহা ঝিনুকের নাম্বারে ফোন দিলো।কিন্তু বন্ধ দেখাচ্ছে।
ফিহাঃ হয়তো চার্জ শেষ হয়ে গেছে।
কিন্তু আমি তো ক্লাসে দেখলাম ওর ফোনে চার্জ ছিলো।
ফিহার কলিজাটা ধক করে ওঠলো। ঝিনুক কোনো বিপদে পরলো না তো।
আন্টির কাছে ফোন দিয়ে দেখি।
ঝিনুকের মা ফোন রিসিভ করে,,,,,,,,হ্যালো ফিহা কেমন আছে মা।
ফিহাঃ ভালো আছি আন্টি।আন্টি ঝিনুক কি বাসায় আছে।
আন্টিঃ না মা ওর ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। তোমার সাথে নাই।
ফিহাঃ আমার সাথেই ছিল।কিন্তু আমাকে না বলে কই চলে গেলো। আন্টি চিন্তা করবেন না আমি দেখছি।
ফিহা ফোন কেটে দিল।
ফিহাঃ এখন কি করবো।ও কোনো বিপদে পরে নি তো।
আচ্ছা রওশান ভাইয়ার সাথে আবার ঝগড়া করছে না তো।ওনাদের ক্লাসে গিয়ে দেখা যাক।
চলবে………
[ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]