#হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন – ০২)
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
#পর্বসংখ্যা_১৭
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ ❌]
পাঁচ দিন পর……..
ঝিনুক নিজের বাড়িতে আসলো।
মীরা বেগম কিচেনে রান্নার কাজে ব্যাস্ত।
ঝিনুক চুপিচুপি মায়ের পিছনে গিয়ে জড়িয়ে ধরে…. মা কি করছো।
মীর বেগমঃ তুই কি দেখতে পাচ্ছিস না কি করছি।
ঝিনুকঃ মা এখনো রেগে আছো আমার ওপর।
মীরা বেগমঃ আমি রাগ করার কে।
ঝিনুকঃ সরি আর তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাব না।এইবার তো ঠিকমতো কথা বলো।
মীরা বেগমঃ সত্যি তো।
ঝিনুকঃ হুম।তো কি রান্না করছো।
মীরা বেগমঃ গরুর গোশত, মুরগীর গোশত, ইলিশ মাছ , চিংড়ি মাছ আর….
ঝিনুকঃ ওমা এত খাবার কেন আমরা দুজন এত খাবার কি করে খাব।
মীরা বেগমঃ আমাদের দুজনের জন্য এত খাবার নয়।আজকে মেহমান আসবে।
ঝিনুকঃ কারা আসবে।
মীরা বেগমঃ আসলেই দেখতে পারবে।
ঝিনুকঃ কিন্তু মা….
মীরা বেগমঃ কোনো কথা নয়। রুমগুলো গুছিয়ে রাখ।আর ফিহাকে ফোন দিয়ে বল আমাদের বাড়িতে আসতে।
ঝিনুক কিছুই বুঝতে পারছে না হ্যাঁ বলে কিচেন থেকে বের হয়ে গেল।
ঝিনুককে মন খারাপ করে বের হয়ে যেতে দেখে…..
মীরা বেগম মুচকি হাসলেন।
ঝিনুক রুমে গিয়ে ফিহাকে আসতে বললো।
সবগুলো রুম গুছিয়ে….. আহ্ কত কাজ করেছি পুরো শরীর ব্যাথা হয়ে গেছে। এত কাজ কোনোদিন করিনি।
দুপুরে……
ফিহা চলে আসল ঝিনুকদের বাড়িতে।
মীরা বেগম ফিহার সাথে আলাদা কিছুসময় কথা বললেন।
★
ফিহা মেরুন রঙের একটা শাড়ি ঝিনুকের সামনে রেখে….. ঝিনুক চটপট পরে পেল শাড়িটা।
ঝিনুকঃ তুই কি পাগল হলি ফিহা আমি এই ভর দুপুরে শাড়ি পরবো কোন দুঃখে।
ফিহাঃ এত কথা না বলে শাড়িটা পর।
ঝিনুকঃআমি পরবো না।তুই যদি ভেবে থাকিস আমি তোর সাথে শাড়ি পরে ঘুরতে যাব তাহলে সরি।কুর্তি পরে যাব।
ফিহা ঝিনুকের কথায় তাজ্জব বনে গেল।
ফিহাঃ আজব আমি তোকে বলেছি কোথাও ঘুরতে যাব।
তখনই মীরা বেগম ঝিনুকের রুমে প্রবেশ করতে করতে বললেন… ফিহা মা ছেলেপক্ষ চলে এসেছে ঝিনুককে তৈরি করেছো।
মায়ের কথা শুনে ঝিনুকের মাথায় বাজ পরলো।
ঝিনুকঃ মা তুমি আমাকে না বলে…..
মীরা বেগমঃ কোনো কথা শুনতে চাই না আমি যেটা বলছি সেটা করো।শাড়িটা তাড়াতাড়ি পরে নেও।
ঝিনুকঃ মা কিন্তু…..
মীরা বেগমঃ কোনো কিন্তু নয় যা বলছি তাই করো।তুমি নিশ্চয়ই চাও না আমি কার কাছে ছোট হই।
ঝিনুক ফিহার দিকে অসহায় ভাবে তাকালো।
ফিহা ও অসহায় ভাবে তাকিয়ে …. কিছুই করার নেই।
ঝিনুক শাড়ি পরছে আর রওশান এর কথা ভাবছে।রওশান এর কথা ভাবতেই ঝিনুকের চোখ চলচল করছে।
— ধানিলংকা ডাকটা আর শুনতে পারবো তো.. কথাটি ভাবতেই ঝিনুকের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরলো।
ফিহাঃ এই পাগলি কান্না করিস কেন।আন্টি যা করবে তোর ভালোর জন্য করবে।
ঝিনুক ফিহাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়।
মীরা বেগম আবার আসলেন…..ফিহা হলো তোমাদের।
ফিহাঃ আন্টি হয়ে গেছে।
ফিহা আর মীরা বেগম পাএপক্ষের সামনে ঝিনুককে নিয়ে গেলো।
পাএের বাবাঃ মেয়ের ঘোমটাটা তুলুন। চাঁদ মুখখানি দেখি।
ফিহা ঘোমটা তুলে দিলো।
পাএের বাবাঃ মা- শা- আল্লাহ। মেয়ে পছন্দ হয়েছে।
এইদিকে ফিহা ঝিনুকে গুঁতা মারছে।
ঝিনুক পাশে তাকিয়ে বিরক্ত নিয়ে ফিসফিস করে …. কি হলো গুতাগুতি করছিস কেন।
ফিহাঃ সামনে তাকা।
ঝিনুকঃ কেন।
ফিহাঃ আরে পাগল তাকা।
ঝিনুক সামনে তাকাতেই বড় সড় এক ঝটকা খেলো।
চোখ অটোমেটিক বড় বড় হয়ে গেল।
আর রওশান ঝিনুককে এইভাবে তাকাতে দেখে মুচকি মুচকি হাসছে।
[ রওশান আর তার বাবা বজলুর রহমান ফিহাকে দেখতে এসেছে ]
ঝিনুক মনে মনে .. বজ্জাত ছেলে আমি টেনশনে মরে যাচ্ছি আর তুই হাসছিস। একবার একা পাই তোরে দেখবি তোর কি হাল করি।
রওশানের বাবা বজলুর রহমান বলে উঠলো… তাহলে ছেলে আর মেয়ে কে আলাদা কথা বলতে দেওয়া যাক। তাঁদের ও তো মত চাই।
মীরা বেগমঃ না ভাইসাব দরকার নাই। আমি রাজি মানি আমার মেয়েও রাজি।
বজলুর রহমানঃ বাহ্ এমন মেয়ে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। মায়ের কথা মান্য করে।ঠিক আছে তাহলে এখনই আংটি বদলটা সেরে ফেলি।
মীরা বেগমঃ অবশ্যই ভাইসাব আপনি যেমনটা বলবেন।
রওশানের সাথে ঝিনুকের এনগেজমেন্ট শেষ হলো।
দু পরিবার মিষ্টি মুখ করলো।
যাওয়ার আগে ঝিনুক রওশানকে জোরে একটা চিমটি দিলো হাতে।একদম নখ বসে গেছে।
রওশানঃ আহ্।রাক্ষসী একটা।
মীরা বেগমঃ বাবা কিছু হয়েছে।
রওশান মলিন হাসি দিয়ে… না শাশুড়ী আম্মা কিছু হয় নাই।
শাশুড়ী আম্মা ডাক শুনে মীরা বেগম হেসে দিলেন।
যাওয়ার আগেনঝিনুক ফিসফিস করে রওশানকে বললো…..আপনাকে আমি দেখে নিব।
চলবে………
[ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]